যে ১৫টি স্থান ও সময়ে দোয়া কবুল হয় || দোয়া কবুলের সময় ও স্থান







দোয়ার বিভিন্ন অর্থ


 دعاء ও دعـــوة অর্থ চাওয়া, প্রার্থনা করা ইত্যাদি। অর্থাৎ সাধারণ ব্যক্তি কর্তৃক বড় কোন ব্যক্তির নিকট ভয়-ভীতি সহকারে বিনয়ের সাথে নিবেদন করা। দোয়া অর্থ ডাকা। আল্লাহ বলেন, “তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব (মুমিন ৬০)। দোয়া অর্থ ইবাদত করা। আল্লাহ বলেন, “তুমি আল্লাহ ব্যতীত এমন কারো ইবাদত করো না, যে তোমার ভাল-মন্দ কিছুই করতে পারে না” (ইউনুস ১০৬)। দোয়া অর্থ বাণী। আল্লাহ বলেন, “সেখানে তাদের বাণী হ'ল, 'হে আল্লাহ! আপনি পবিত্র; আর তাদের শুভেচ্ছা হ'ল সালাম” (ইউনুস ১০)। দোয়া অর্থ আহ্বান করা। আল্লাহ বলেন, “যেদিন তিনি তোমাদেরকে আহ্বান করবেন, অতঃপর তোমরা তাঁর প্রশংসা করতে করতে চলে আসবে” (ইসরা ৫২)। দোয়া অর্থ অনুনয়- বিনোনয় করা। আল্লাহ বলেন, “তোমরা তোমাদের সাহায্যকারীদেরকে বিনয়ের সাথে ডাক” (বাকারাহ ২৩)। দোয়া অর্থ প্রশংসা সহকারে ডাকা। আল্লাহ বলেন, “হে নবী! আপনি বলুন, আমি আল্লাহ্র প্রশংসা করি অথবা রহমানের প্রশংসা করি” (ইসরা ১১০২ মির'আত, ৩য় খণ্ড, পৃঃ ৩৯৪)।

দোয়া কবুলের সময় ও স্থান

পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে দোয়া করা ও কবুলের বিভিন্ন সময় ও স্থান পরিদৃষ্ট হয়। আল্লামা নওয়াব ছিদ্দীক হাসান খান ভূপালী (রহঃ) তাঁর 'নুযূলুল আবরার' গ্রন্থে ২২টি স্থান ও সময় উল্লেখ করেছেন' (নুযুলুল আবরার, ৪৩-৫৪ পৃঃ)। অনুরূপভাবে ছাহেবে কানযুল উম্মালও ১৮টি স্থান ও সময় উল্লেখ করেছেন।

লাইলাতুল কদর দো'আ কবুলের অন্যতম সময়

আল্লাহ তা'আলা লাইলাতুল কদরকে এক হাযার মাসের চেয়ে উত্তম বলেছেন (ক্বদর ৩)। রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) ইবাদতের জন্য লাইলাতুল কদরকে খুঁজতে বলতেন এবং নিজে লাইলাতুল কদরে সিজদা করতেন (বুখারী, আলবানী, মিশকাত, হা/২০৮৬ ছিয়াম' অধ্যায়, 'লাইলাতুল কদর' অনুচ্ছেদ)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আয়েশা (রাঃ)-কে লাইলাতুল কদরে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তে বলেন,

اللهم إنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّى.

(আল্ল-হুম্মা ইন্নাকা আফুব্বুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু 'আন্নী)

'হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল এবং ক্ষমাকে ভালবাসেন, কাজেই আমাকে
ক্ষমা করুন' (আহমাদ, তিরিমিযী, ইবনু মাজাহ, সনদ ছহীহ, তাহক্বীক্ব মিশকাত, হা/২০৯১)। রাসূল (ছাঃ) লাইলাতুল কদরে ইবাদত করতেন এবং স্বীয় পরিবারকে ইবাদতের জন্য জাগিয়ে দিতেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত, হা/২০৯০)।

   

আরাফার মাঠে দোয়া কবুল হয়

উসামা বিন যায়েদ (রাঃ) বলেন, আমি আরাফার মাঠে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সওয়ারীর পিছনে ছিলাম, তিনি সেখানে দু'হাত তুলে দোয়া করলেন' (ছহীহ নাসাঈ, হা/৩০১১ 'আরাফার মাঠে দু'হাত তুলে দোয়া করা' অনুচ্ছেদ, 'হজ্জ' অধ্যায়)। অন্যত্র বর্ণিত আছে, আল্লাহ তা'আলা আরাফার দিন মানুষকে সবচেয়ে বেশী জাহান্নাম থেকে মুক্ত করেন এবং ফেরেশতাগণের সামনে গৌরব করে বলেন, 'এ সকল মানুষ (আরাফার মাঠে) কি চায়? অর্থাৎ যা চায় তাই প্রদান করা হবে' (মুসলিম, ছহীহ ইবনু মাজাহ, হা/২৪৫৮, মিশকাত হা/২৫৯৪, 'আরাফার মাঠে অবস্থান' অনুচ্ছেদ)।

ছাফা-মারওয়া পাহাড়ের উপর

জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছাফা পাহাড়ের উপর উঠে তিনবার বললেনঃ

لا إله إلا الله وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَ هُوَ عَلَىكُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

উচ্চারণ : লা-ইলা-হা ইল্লার-হু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হাম্‌দু ইউহ:ই ওয়া ইউমীতু ওয়াহুয়া 'আলা কুল্লি শাইইং ক্বদীর।

অর্থ : 'আল্লাহ ব্যতীত কোন হজ্ব মা'বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁর হাতে, প্রশংসা একমাত্র তাঁর। তিনি জীবন দান করেন এবং তিনি মরণ দান করেন, তিনি সকল ক্ষমতার অধিকারী'।

অতঃপর আল্লাহু আকবার বললেন ও আল-হামদুলিল্লাহ বললেন এবং তাঁর শক্তি- সামর্থ্য অনুপাতে দোয়া করলেন। অনুরূপ মারওয়া পাহাড়ে উঠে বললেনঃ

لا إله إلا الله وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.

(লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হাম্‌দু ওয়াহুয়া 'আলা কুল্লি শাইইং ক্বদীর।)

তারপর سُبْحَانَ اللَّهِ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ  এবং  الْحَمْدُ لله বললেন। অতঃপর আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী দোয়া করলেন (ছহীহ নাসাঈ, হা/২৯৭৪, অনুচ্ছেদ ১৭২, 'হজ্জ' অধ্যায়, সনদ ছহীহ)।

'বায়তুল্লাহ'র সামনে দোয়া কবুল হয়

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মক্কায় প্রবেশ করে 'হাজারে আসওয়াদ' বা কাল পাথরের পাশে এসে পাথরটিকে চুম্বন করলেন, বায়তুল্লাহ ত্বাওয়াফ করলেন এবং ছাফা পাহাড়ে উঠে বায়তুল্লাহর দিকে মুখ করে হাত তুলে দোয়া, যিকির ও প্রার্থনা করতে লাগলেন (ছহীহ আবুদাউদ, হা/১৮৭২, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২৫৭৫ 'হজ্জ' অধ্যায়)।

সিয়াম বা রোজা অবস্থায় দোয়া কবুল হয়

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, “তিন শ্রেণীর লোকের দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। তন্মধ্যে একজন হচ্ছে সিয়াম পালনকারী, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে ইফতার করে' (ছবীহ ইবনু মাজাহ, হা/১৪৩২ হিরাম' অধ্যায় ।

জুম'আর দিনে দোয়া কবুল হয়

আবু লুবাবা ইবনু আব্দুল মুনযের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, 'জুম'আর দিন এমন একটি সময় আছে, যে সময়ে বান্দা কিছু চাইলে আল্লাহ তাকে তা প্রদান করেন' (ছহীহ ইবনু মাজাহ, হা/৮৯৫, সনদ হাসান, মিশকাত হা/১৩৬৩, 'ছালাতুল জুম'আ' অনুচ্ছেদ)। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর কিতাবে জুম'আর দিনে এমন একটি সময় পাই, যে সময়ে বান্দা ছালাত আদায় করে প্রার্থনা করলে আল্লাহ তার প্রার্থনা কবুল করেন (ছহীহ আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, হা/৯৪১; সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/১৩৫৯)।

ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত যে, দো'আ কবুলের চূড়ান্ত সময় হচ্ছে ইমাম ছাহেবের মিম্বরে বসা হ'তে ছালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত (মুসলিম, বুলূগুল মারাম হা/১৩৫৯)। অন্য বর্ণনায় আছে, আছর হ'তে সূর্যাস্ত পর্যন্ত (ইবনু মাজাহ, বুলূগুল মারাম হা/৪৫৪)।

হজ্জ পালনকালে পাথর নিক্ষেপের পর দোয়া কবুল হয়

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) শেষের দু'দিন পাথর নিক্ষেপের পর দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতেন এবং অনুনয়-বিনয় করে দোয়া করতেন' (ছহীহ আবুদাউদ, হা/১৯৭৩ : 'মানাসিক' অধ্যায়, সনদ ছহীহ)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিনি পশ্চিম মুখী হয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে হাত উঠিয়ে প্রার্থনা করতেন (বুখারী হা/১৭৫৩; নাসাঈ হা/৩০৮৩ 'হজ্জ' অধ্যায়)।

রাতের দোয়া কবুল হয়

মু'আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, 'কোন ব্যক্তি যদি ওযু করে দোয়া পড়ে রাতে শয্যা গ্রহণ করে, তারপর শেষ রাতে উঠে সে আল্লাহর নিকট যা চায়, আল্লাহ তাকে তা প্রাদান করেন' (আহমাদ, আবুদাউস, সনদ ছহীহ, মিশকাত, হা/১২১৫ 'রাতে জাগ্রত হয়ে কি বলবে' অনুচ্ছেদ)।

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, 'আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক রাতের দুই-তৃতীয়াংশের পর প্রথম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, 'যে আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দিব, যে আমার নিকট চাইবে আমি তাকে দান করব, যে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করব' (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, হা/১২২৩)।

জাবির (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, 'নিশ্চয়ই রাতে একটি সময় রয়েছে, যে সময়ে কোন মুসলমান ইহকাল ও পরকালের কিছু চাইলে আল্লাহ তাকে তা প্রদান করেন এবং এটা প্রতি রাতে হয়ে থাকে' (মুসলিম, মিশকাত, হা/১২২৪)।

ছালাতের শেষে দোয়া কবুল হয়

প্রকাশ থাকে যে, ছালাতের শেষ বলতে সালামের আগে ও পরের সময়কে বুঝানো হয়। আবু উমামা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কোন্ সময় দোয়া সবচেয়ে বেশী কবুল হয়? রাসূল (ছাঃ) বললেন, 'শেষ রাতে এবং ফরয ছালাতের পরে' (তিরমিযী, মিশকাত, হা/৯৬৮, সনদ হাসান 'ছালাতের পর যিকির' অনুচ্ছেদ)। উল্লেখ্য যে, ফরয ছালাতের পর দো'আ কবুল হয় অর্থ হাত তুলে দোয়া নয়; বরং সালামের পর যে সকল দোয়া পাঠের কথা ছহীহ হাদীছ সমূহে এসেছে, সেগুলি পাঠ করা। এ সম্পর্কে যথাস্থানে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ ।

আযান ও ইকামতের মাঝের দোয়া, আযান চলাকালীন ও আযানের পরে দোয়া কবুল হয়

আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, 'আযান এবং ইকামতের মাঝের দো'আ ফেরত দেওয়া হয় না' (আহমদ ৩/১৫৫: অনুদাউদ হা/৬২১: সমন হজ্বীহ, তাহক্বীত্ব মিশকাত হা/৬৭১-এর টীকা নং- সুবুলুস সালাম, তাতী আলবানী হা/১৭০-এর টীকা প্রঃ)। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)! মুয়াযযিনদের মর্যাদা যে আমাদের চেয়ে বেশী হয়ে যাবে, তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, 'তুমিও তাই বল, মুয়াযযিন যা বলে। তারপর আযান শেষে চাও, যা চাইবে প্রদান করা হবে' (ছহীহ আবুদাউদ, হা/৫২৪, সনদ হাসান, মিশকাত হা/৬৭৩ 'আযানের ফযীলত ' অনুচ্ছেদ)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, মুয়াযযিনের সাথে সাথে আযানের শব্দগুলি যে বলবে সে জান্নাতে যাবে (মুসলিম, আবুদাউদ, হা/৫২৭, মিশকাত হা/৬৫৮)। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, যে ব্যক্তি আযান শুনে বলবে,

أَشْهَدُ أَنْ لا إله إلا الله وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنْ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رَضِيْتُ باللهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَّسُوْلاً وَبِالْإِسْلَامِ دِيْنَا.

উচ্চারণ : আশহাদু আললা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্দাহু লা- শারীকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহূ ওয়া রসূলুহ, রযীতু বিল্লা-হি রব্বাওঁ ওয়া বিমুহাম্মাদির রসূলাওঁ ওয়া বিল ইসলামি দ্বীনা।

অর্থ : 'আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং তাঁর কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল। আমি আল্লাহকে রব হিসাবে, মুহাম্মাদকে রাসূল হিসাবে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে মেনে নিয়েছি'। তাহ'লে তার পাপ সমূহ ক্ষমা করা হবে (মুসলিম, আবুদাউদ, হা/৫২৫, মিশকাত হা/৬৬১)।

যুদ্ধের মাঠে শত্রুর সাথে মোকাবেলার সময় দোয়া কবুল হয়

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, 'হে জনগণ! তোমরা যখন শত্রুর সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন আল্লাহর নিকট নিরাপত্তা চাও, ধৈর্যধারণ কর এবং জেনে রেখ, নিশ্চয়ই জান্নাত তরবারীর ছায়ার নীচে' (বুখারী, মুসলিম, আবুদাউদ, হা/২৬৩১, মিশকাত হা/৩৯৩০ 'কাফেরদের পত্রের মাধ্যমে ইসলামের দিকে আহ্বান' অনুচ্ছেদ, 'জিহাদ' অধ্যায়)। 

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, দু'সময় দো'আ ফেরত দেওয়া হয় না। ( ১ ) আযানের সময় এবং (২) যুদ্ধের সময় (ছহীহ আবুদাউদ, হা/২৫৪০, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৬৭৩ 'আযানের ফযীলত' অনুচ্ছেদ)।

সিজদার সময় দোয়া কবুল হয়
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, 'তোমরা সিজদায় বেশী বেশী দোয়া কর, কেননা সিজদা হচ্ছে দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়' (মুসলিম, মিশকার ৮৭৩ 'ক'র বর্ণনা অনুচ্ছেদ)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, মানুষ সিজদা অবস্থায় তার প্রতিপালকের সবচেয়ে বেশী নিকটবর্তী হয়। অতএব তোমরা সিজদায় বেশী বেশী দোয়া কর' (মুসলিম, মিশকাত ৬৯৪ 'সিজদাহ ও তার বর্ণীত' অনুচ্ছেদ)। তবে সিজদায় কুরআনের আয়াত দ্বারা দো'আ করা যাবে না' (মুসলিম, মিশকাত হা/৮৭৩)। 

ছালাতের মধ্যে তাশাহ্হুদের পর দোয়া কবুল হয়

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, 'তাশাহহুদের পর যার যা ইচ্ছা দোয়া করবে' (বুখারী ১/২৫২ পৃঃ, হা/৮৩৫ 'ছালাতের মধ্যে তাশাহহুদের পর ইচ্ছানুযায়ী দো'আ করা' অনুচ্ছেদ, 'আযান' অধ্যায়)।
অত্র হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ছালাতের শেষ বৈঠকে সালাম ফিরানোর পূর্বে যে কোন ধরনের দোয়া করা যায়। চাই তা কুরআনের আয়াত হৌক অথবা হাদীছে বর্ণিত দোয়া হৌক।

কারো অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া কবুল হয়

কারো অনুপস্থিতিতে তার জন্য দো'আ করলে দোয়া কবুল হয়' (তিরমিযী, আবুদাউদ হা/ ১৫৩৬! মিশকাত হা/২২৫০, সনদ হাসান, 'দো'আ' অধ্যায়)।

তিন শ্রেণীর লোকের দোয়া অবশ্যই কবুল হয়

তিন শ্রেণীর লোকের দোয়া কবুল হওয়া অবশ্যম্ভাবী : ১. পিতামাতার দোয়া ২. মুসাফিরের দোয়া এবং ৩. মাযলূমের দোয়া' (আবুদাউদ, হা/১৫৩৬ মিশকাত হা/২২৫০, সনদ হাসান)।

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিন শ্রেণীর লোকের দোয়া ফেরত দেয়া হয় না। ১. আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণকারীর দোয়া, ২. মাযলূমের দোয়া, ৩. ন্যায়পরায়ন শাসকের দোয়া (সিলসিলা ছহীহা হা/১২১১/২৮৪৬)। 

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিন শ্রেণীর দোয়া রয়েছে, যা ফেরত দেওয়া হয় না। ১. পিতামাতার দোয়া, ২. সিয়াম পালনকারীর দোয়া ও ৩. মুসাফিরের দোয়া (সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৭৯৭/১৮৪৫)।



****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url