রাতে ঘুমানোর সময় বা ঘুম ভেঙ্গে গেলে, ঘুম না আসলে, দুঃস্বপ্ন দেখলে বা রাতে ভয় পেলে করণীয় আমলসমূহ







(শাইখুল ইসলাম মুহিউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবনে শারফ আন-নববী রহ. রচিত “আল আযকার” গ্রন্থ অবলম্বনে)

জিকির-আজকার না করে ঘুমানো মাকরুহ 


*  হজরত আবু হুরায়রা থেকে নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

مَنْ قَعَدَ مَقْعَدًا لَمْ يَذْكُرِ اللهَ فِيْهِ كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللَّهِ تِرَةٌ وَمَنِ اضْطَجَعَ مَضْجَعًا لَا يَذْكُرُ اللهَ فِيْهِ كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللَّهِ تِرَةٌ.

অর্থ: যে ব্যক্তি কোন স্থানে বসে আল্লাহকে স্মরণ করল না, তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে লাঞ্ছনা। আর যে কোথাও শয়ন করে আল্লাহকে স্মরণ করল না, তার জন্যও লাঞ্ছনা ।০১

ঘুম থেকে জেগে উঠে পুনরায় ঘুমালে যে দুআ পড়বে


রাতে জাগ্রত হওয়া দুই ধরনেরঃ
১. উঠার পর আর না ঘুমানো। এ প্রসঙ্গে পূর্বের অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে।
২. উঠার পর আবার ঘুমানো। এমন ব্যক্তির জন্য জিকির করা মুস্তাহাব । যতক্ষণ না ঘুম চলে আসে। এ প্রসঙ্গে অনেক জিকির-আজকার রয়েছে-

*  হজরত উবাদা বিন সামেত রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে ঘুম থেকে উঠে এ দুআ পড়ে। অতঃপর বলে, হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করো অথবা অন্য কোন দুআ করে, তার দুআ কবুল করা হয়। অতঃপর অজু করে নামাজ পড়লে, তার নামাজও কবুল করা হয়। দুআটি হল-

لا إلهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرُ، الْحَمْدُ لِلَّهِ، وَسُبْحَانَ اللهِ، وَلَا إِلهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়া সুবহানাল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ ।

অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। রাজ্য ও প্রশংসা কেবল তারই। তিনি সবকিছুর ওপর শক্তিমান। যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই। তিনি পবিত্র। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি বড় । তাঁর সাহায্য ছাড়া গুনাহ হতে বাঁচার ও নেক আমল করার শক্তি-সামর্থ নেই।০২

*   হজরত আয়েশা রাদি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) যখন রাতে ঘুম থেকে উঠতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-

لا إلهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ أَسْتَغْفِرُكَ لِذَنْبِي، وَأَسْأَلُكَ رَحْمَتَكَ، اللَّهُمَّ زِدْنِي عِلْمًا، وَلَا تُرعُ قَلْبِي بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنِي، وَهَبْ لِي مِنْ لَدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা, আল্লাহুম্মা আসতাগফিরুকা লিযাম্বি, ওয়া আসআলুকা রহমাতাকা, আল্লাহুম্মা যিদনি ইলমা, ওয়ালা তুযিগ কালবি বা'দা ইয হাদাইতানি, ওয়াহাবলি মিন লাদুনকা রাহমাহ, ইন্নাকা আনতাল ওয়াহহাব ।

অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। আপনি পবিত্র, আমার গুনাহের জন্য আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, আপনার রহমত কামনা করছি, আমার ইলম বৃদ্ধি করে দিন, হেদায়াত দান করার পর আমার মনকে বাঁকা করে দিবেন না। আপনার পক্ষ থেকে আমাকে রহমত দান করুন। আপনিই সবচেয়ে বড় দাতা।০৩

*  হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে জাগ্রত হতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-

لا إلهَ إِلَّا اللهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ، رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الْعَزِيزُ الْغَفَّارِ

উচ্চারণ: লাইলাহা ইল্লাল্লাহুল ওয়াহিদুল কাহ্যার, রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়াল আরজ ওয়া মা বাইনা হুমাল আযিযুল গাফ্ফার ।

অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি একক ও ক্ষমতাধর। আসমান- যমিন এবং উভয়ের মাঝে যা আছে, সব কিছুর মালিক। তিনি ক্ষমতাধর ও ক্ষমাশীল ।০৪

* হজরত আবু হুরায়রা থেকে দুর্বল সনদে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন-

إذَا رَدَّ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلَى الْعَبْدِ الْمُسْلِمِ نَفْسَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَسَبَّحَهُ وَاسْتَغْفَرَهُ وَدَعَاهُ تَقَبَّلَ مِنْهُ.

অর্থ: যখন মুসলিম বান্দাকে আল্লাহ তাআলা রাতের বেলা তার রূহ ফিরিয়ে দেন, তার উচিত হল তাসবিহ পড়া, ক্ষমা চাওয়া ও আল্লাহর কাছে দুআ করা। আল্লাহ তার দুআ কবুল করবেন। ০৫

*  হজরত আবু হুরায়রা রাদি থেকে নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ তার বিছানা হতে উঠার পর আবার বিছানায় শুতে গেলে সে যেন তার চাদরের কিনারা দিয়ে বিছানা তিনবার পরিষ্কার করে নেয়। কারণ, সে জানে না তার অনুপস্থিতিতে তাতে কী পতিত হয়েছে? আর শুয়ার পর যেন এ দুআটি পড়ে-

بِاسْمِكَ اللهُمَّ وَضَعْتُ جَنْبِي، وَبِكَ أَرْفَعُهُ، إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا، وَإِنْ رَدَدْتَها فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِيْنَ.

উচ্চারণ: বিসমিকা আল্লহুম্মা ওয়া দা'তু যাম্বি ওয়াবিকা আরফাউহু, ইন আমসাকতা নাফসি ফারহামহা, ওয়া ইন রাদাত্তাতাহা ফাহফাজহা বিমা তাহফাজু বিহি ইবাদাকাস সালিহিন ।

অর্থ: আপনার নামে হে পালনকর্তা! আমি আমার পার্শ এলিয়ে দিলাম, আপনার নামেই তা উঠাবো। আমার রুহ আটকে দিলে রহম করো এবং ছেড়ে দিলে হেফাজত করো, যেভাবে আপনার নেক বান্দাদের হেফাজত করে থাকেন । ০৬

*   হজরত আবু দারদা রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি রাতের মধ্যভাগে সজাগ হয়ে বলতেন-

نَامَتِ الْعُيُونُ، وَغَارَتِ النُّجُوْمُ، وَأَنْتَ حَيُّ قَيُّومُ.

উচ্চারণ: নামাতিল উয়ুনু ওয়া গারাতিনুজুমু ওয়া আনতা হাইয়ুন কাইয়ুম । অর্থ: সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে এবং তারকারাজি অস্তমিত হয়েছে। আর হে রব, আপনি শাশ্বত চিরঞ্জীব । ০৭

রাতে বিছানায় ছটফট করলে বা ঘুম না আসলে যা পড়বে


*  হজরত যায়েদ বিন সাবেত রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে অভিযোগ করলাম, আমাকে অনিদ্ৰা পেয়ে বসেছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তুমি এই দুআটি পড়বে। যায়েদ বিন সাবেত রাদি. বলেন, উক্ত দুআটি পড়লে আমার অনিদ্রা রোগ দূর হয়ে যায়। দুআটি হল-

اللهم غارَتِ النُّجُوْمُ وَهَدَأَتِ الْعُيُونُ وَأَنْتَ حَيُّ قَيُّوْمُ لَا تَأْخُذُكَ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ، يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ أَهْدِئُ لَيْلِي، وَأَنِمْ عَيْنِي.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা গারাতিনুজুমু ওয়া হাদাআতিল উয়ুনু ওয়া আনতা হাইয়ুন কাইয়ুম, লা তা'খুজুহু সিনাতুন ওয়ালা নাউম, ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইয়ুম, আহদি লাইলি ওয়া আনিম আইনি।

অর্থ: হে আল্লাহ, তারকারাজি অস্তমিত হয়ে গেছ এবং সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। আর আপনি শাশ্বত চিরঞ্জীব। আসে না আপনার কোন তন্দ্রা কিংবা ঘুম, হে শাশ্বত চিরঞ্জীব! এই রাতকে শান্ত করে দিন এবং চোখে ঘুম পাড়িয়ে দিন ।০৮

*  মুহাম্মাদ বিন হাব্বান থেকে বর্ণিত-

أَنَّ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيدِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَصَابَهُ أَرْقُ، فَشَكَا ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَمْرُهُ أَنْ يَتَعَوّذُ عِنْدَ مَنَامِهِ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَمِنْ شَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونَ.

অর্থ: হজরত খালেদ বিন ওয়ালিদ রাদি. এর অনিদ্রার রোগ হলে তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জানালেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ঘুমের সময় এ দুআ পড়বে-

أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَمِنْ شَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِالشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنَ.

উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজাবিহি ওয়া মিন শাররি ইবাদিহ। ওয়া মিন হামাজাতিশ শাইয়াতিনি ওয়া আন ইয়াহদুরুন। 

অর্থ: আমি আল্লাহর পূর্ণ-দৃঢ় উক্তিসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি তার ক্রোধ থেকে, তার সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুস্পর্শ ও উপস্থিতি থেকে।০৯

*  হজরত বুরাইদা রাদি থেকেদুর্বল সনদে বর্ণিত আছে, হজরত খালেদ বিন ওয়লিদ রাদি. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি রাতে ঘুমাতে পারি না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যখন বিছানায় যাবে তখন এ দুআ পড়বে-

اللهُمَّ رَبَّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ وَمَا أَظَلَّتْ، وَرَبَّ الْأَرَضِينَ وَمَا أَقَلَّتْ، وَرَبَّ الشَّيَاطِينِ وَمَا أَضَلَّتْ، كُنْ لِيْ جَارًا مِنْ شَرِّ خَلْقِكَ كُلِّهِمْ جَمِيْعًا ؛ أَنْ يَفْرُطَ عَلَيَّ أَحَدٌ مِنْهُمْ، أَوْ أَنْ يَبْغِي عَزَّ جَارُكَ، وَجَلَّ ثَنَاؤُكَ، وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বাস সামাওয়াতিস সাবয়ি ওয়ামা আজাল্লাত, ওয়া রাব্বাল আরাদিনা ওয়ামা আকাল্লাত, ওয়া রাব্বাশ শাইয়াতিনি ওয়ামা আদাল্লাত, কুন লি যারান মিন শাররি খালকিকা কুল্লিহিম যামিআ; আন ইয়াফরুতা আলাইয়া আহাদুন মিনহুম আও আন ইয়াবগিয়া, আজ্জা যারুকা ওয়া জাল্লা সানাউকা, ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা, ওয়া লা ইলাহা ইল্লা আনতা ।

অর্থ: হে আল্লাহ, সাত আসমান ও তার ছায়া প্রাপ্ত সকল বস্তুর হে মালিক! যমিসমূহ ও তার সমুদয় আরোহীর হে প্রতিপালক! শয়তান ও তার দ্বারা ভ্রষ্টদের হে অধিকর্তা! আপনার সমস্ত সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে সুরক্ষা লাভে আপনি আমার সাহায্যকারী হন। যেন তাদের কেউ আমার ওপর সীমালঙ্ঘন ও অবচার করতে না পারে। আপনার আশ্রয় গ্রহণকারীর জয় হোক এবং আপনার মহিমা সমুচ্চ হোক । আপনি ছাড়া কোন সত্য মাবুদ নেই। ১০

ঘুমে ভয় পেলে যা পড়বে


*  হজরত আমর বিন শুআইবের সনদে বর্ণিত আছে যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে ভয়ের সময় এই দুআ পড়তে শিখিয়েছেন-

أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنِ.

উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহ। ওয়া মিন হামাজাতিশ শাইয়াতিনি ওয়া আন ইয়াহদুরুন । 

অর্থ: আমি আল্লাহর পূর্ণ-দৃঢ় উক্তিসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি তার ক্রোধ থেকে, তার সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুস্পর্শ ও উপস্থিতি থেকে। 

আবদুল্লাহ বিন আমর রাদি, তাঁর বুঝমান সন্তানদেরকে এ দুআ মুখস্ত করাতেন। আর অবুঝ বাচ্চাদের গলায় কাগজে লেখে ঝুলিয়ে দিতেন।- ইমাম তিরমিজি বলেন, হাদিসটি হাসান।

অন্য বর্ণনায় আছে- এক ব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে ঘুমে ভয় পাওয়ার অভিযোগ করলো। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি যখন ঘুমুতে যাবে, এই দুআ পড়বে। উক্ত সাহাবি এ দুআ পড়লে তাঁর ভয় কেটে যায়। দুআটি হল-

أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهِ وَمَنْ شَرْ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وأَنْ يَحْضُرُونِ

উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজাবিহি ওয়া মিন শাররি ইবাদিহ। ওয়া মিন হামাজাতিশ শাইয়াতিনি ওয়া আন ইয়াহদুরুন।

অর্থ: আমি আল্লাহর পূর্ণ-দৃঢ় উক্তিসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি তার ক্রোধ থেকে, তার সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুস্পর্শ ও উপস্থিতি থেকে ।১১

স্বপ্নে ভালো-মন্দ দেখলে যা পড়বে


*   হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا،وَلْيُحَدِّثُ بِهَا.

অর্থ: ভালো স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে। তোমাদের মধ্যে যে ভালো স্বপ্ন দেখে সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে এবং তা মানুষের কাছে প্রকাশ করে। -অন্য বর্ণনায় আছে-

فَلا يُحَدِّثُ بِها إِلا مَنْ يُحِبُّ، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ فَإِنَّمَا هِيَ مِنَالشَّيْطَانِ فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِهَا وَلَا يَذْكُرْهَا لِأَحَدٍ فَإِنَّهَا لَا تَضُرُّهُ.

অর্থ: সে যেন এ স্বপ্ন তার প্রিয় ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারও কাছে প্রকাশ না করে। আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। যে ব্যক্তি মন্দ স্বপ্ন দেখে সে যেন তার অনিষ্ট থেকে পানাহ চায়। এমন স্বপ্ন কারও কাছে যেন প্রকাশ না করে। কারণ, স্বপ্ন তাকে কোন ক্ষতি করতে পারবে না। ১২

*  হজরত আবু কাতাদা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

"الرُّؤْيا الصَّالِحَةُ وَفِي رِوَايَةُ الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَمَنْ رَأَيْ شَيْئًا يَكْرَهُهُ فَلْيَنْفُتْ عَنْ شِمَالِهِ ثَلَاثًا وَلْيَتَعَوَّذُ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَإِنَّهَا

অর্থ: নেক স্বপ্ন বা ভালো স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে। কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। যে ব্যক্তি অপ্রিয় স্বপ্ন দেখে, সে যেন বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলার মতো করে ফুঁ দেয় এবং যেন আউজুবিল্লাহ পড়ে। কারণ, স্বপ্ন তাকে কোন ক্ষতি করতে পারবে না।১৩

*   হজরত জাবের রাদি থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

إِذَا رَأَى أَحَدُكُمُ الرُّؤْيَا يَكْرَهُهَا فَلْيَبْصُقُ عَنْ يَسَارِهِ ثَلَاثًا، وَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ ثَلَائًا، وَلْيَتَحَوَّلُ عَنْ جَنْبِهِ الَّذِي كَانَ عَلَيْهِ.

অর্থ: তোমাদের কেউ যখন মন্দ স্বপ্ন দেখে সে যেন বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলার ন্যায় ফুঁ দেয়। তিনবার আউজুবিল্লাহ পড়ে। আর সে যে পাশে শুয়ে ছিলো তা পরিবর্তন করে অন্য পাশে শুয়ে যেন (পাশ পরিবর্তন করে) ১৪

*  হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يَكْرَهَهَا فَلَا يُحَدِّثُ بِهَا أَحَدًا وَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِ.

অর্থ: তোমাদের কেউ মন্দ স্বপ্ন দেখলে সে যেন তা কারও কাছে প্রকাশ না করে । বিছানা থেকে উঠে নামাজ পড়ে।১৫

*   ইবনুস সুন্নির কিতাবে এই বর্ণনায় আরো আছে-

إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يَكْرَهُهَا فَلْيَتْقُلْ عَن يَسَارِهِ ثَلَاثُ مَرَّاتٍ، ثُمَّ لِيَقُلِ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ وَسَيِّئَاتِ الْأَحْلَامِ؛ فَإِنَّهَا لَا تَكُوْنُ شَيْئًا.

অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ মন্দ স্বপ্ন দেখলে সে যেন বাম দিকে তিনবার হালকা থুথু ফেলে এ দুআটি পড়ে-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ وَسَيِّئَاتِ الْأَحْلَامِ.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আমালিশ শাইতানি ওয়া সাইয়িআতিল আহলাম ।

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে শয়তের ফাঁদ ও মন্দ স্বপ্ন থেকে আশ্রয় চাই৷১৬

স্বপ্নের বিবরণ শুনে যা বলবে


*   ইবনুস সুন্নির কিতাবে বর্ণিত আছে-

أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ قَالَ لَهُ رَأَيْتُ رُؤْيَا، قَالَ: خَيْرًا رَأَيْتَوَخَيْرًا يَكُونُ.

অর্থ: এক ব্যাক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললো, আমি স্বপ্ন দেখেছি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ভালো স্বপ্ন দেখেছো। তোমার স্বপ্ন ভালো হবে। ১৭

অপর বর্ণনায় রয়েছে-

خَيْرًا تَلْقَاهُ، وَشَرًا تَوَفَّاهُ، خَيْرًا لَنَا، وَشَرًا عَلى أَعْدَائِنَا، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ

অর্থ: নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি কল্যাণ লাভ করবে এবং অকল্যাণ থেকে রক্ষা করা হবে। আমাদের কল্যাণ হোক, আর আমাদের শত্রুদের অকল্যাণ হোক। আর সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি বিশ্বজগতের পালনকর্তা। ১৮

রাতের দ্বিতীয়ভাগে ইস্তেগফার ও দুআ পড়বে


*   হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

يَنْزِلُ رَبُّنَا كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا، حِيْنَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ، فَيَقُولُ: مَنْ يَدْعُوْنِي فَأَسْتَجِيْبَ لَهُ؟ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ؟ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ؟

অর্থ: যখন শেষ রাতের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকে, তখন আমাদের প্রভু আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ডাকতে থাকেন, ‘কে আছো যে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেবো। কে আছো, যে আমার নিকট চাইবে, আমি তাকে দান করব। কে আছো, যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। ১৯

মুসলিম শরিফের অপর এক বর্ণনায় রয়েছে-

يَنْزِلُ اللهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا كُلَّ لَيْلَةٍ حِيْنَ يَمْضِي ثُلُثُ اللَّيْلِ الْأَوَّلُ، فَيَقُولُ: أَنَا الْمَلِكُ أَنَا الْمَلِكُ؛ مَنْ ذَا الَّذِي يَدْعُوْنِي فَأَسْتَجِيْبَ لَهُ، مَنْ ذَا الَّذِي يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ ذَا الَّذِي يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ، فَلَا يَزَالُ كَذَلِكَ حَتَّى يُضِيءَ الْفَجْرُ

অর্থ: যখন রাতের এক তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হয়, তখন আল্লাহ তাআলা প্রতি রাতে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, আমি রাজাধিরাজ। এমন কে আছো, যে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেবো। এমন কে আছো, যে আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দান করব । এমন কে আছো, যে আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। আল্লাহ তাআলা এভাবেই ফজর পর্যন্ত ডাকতে থাকেন। ২০

অপর এক বর্ণনায় রয়েছে-

إِذَا مَضَى شَطْرُ اللَّيْلِ أَوْ ثُلُثَاهُ.

অর্থ: যখন অর্ধ রজনী অথবা রাতের দুই তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হয়...। ২১ 

*  হজরত আমর বিন আবাসা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি রাসুল কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন-

أَقْرَبُ مَا يَكُوْنُ الرَّبُّ مِنَ الْعَبْدِ فِي جَوْفِ اللَّيْلِ الْآخِرِ؛ فَإِنِ اسْتَطَعْتَ أَنْ تَكُوْنَ مِمَّنْ يَذْكُرُ اللهَ فِي تِلْكَ السَّاعَةِ فَكُنْ.

অর্থ: আল্লাহ তাআলা শেষ রাতের মধ্যভাগে বান্দার অধিক নিকটবর্তী হন। সুতরাং যদি সম্ভব হয় তোমারা সেসব লোকের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও, যারা এ সময় আল্লাহ তাআলার জিকির করে। -ইমাম তিরমিজি বলেন, হাদিসের মান হাসান সহিহ ।২২

রাতে দুআ কবুলের মুহূর্তটি পাওয়ার আশায় দীর্ঘ সময় দুআ করা 


*  হজরত জাবের রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, আমি নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-

إِنَّ فِي اللَّيْلِ لَسَاعَةً لَا يُوَافِقُهَا رَجُلٌ مُسْلِمُ يَسْأَلُ اللهَ تَعَالَى خَيْرًا مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ إِلَّا أَعْطَاهُ اللَّهُ إِيَّاهُ ، وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ.

অর্থ: রাতের বেলা এমন একটা সময়ে রয়েছে যে সময় কোন মুসলমান আল্লাহ তাআলার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের যে কোন কল্যাণ কামনা করে, আল্লাহ তাআলা তাকে তা দান করেন। আর এটা অর্থাৎ ঐ মূহুর্তটি প্রতি রাতেই রয়েছে।২৩

আল্লাহ তাআলার সুন্দর নামসমূহ ও অর্থ


আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوْهُ بِهَا.

অর্থ: আল্লাহ তাআলার রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব, তোমরা এগুলোর মাধ্যমে তাকে ডাকো। ২৪

*  হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

إِنَّ لِلَّهِ تَعَالَى تِسْعَةً وَتِسْعِيْنَ اسْمًا مِائَةً غَيْرَ وَاحِدَةٍ، مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ ؛ هُوَ اللهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ الْغَفَّارُ الْقَهَّارُ الْوَهَّابُ الرَّزَّاقُ الْفَتَّاحُ الْعَلِيمُ الْقَابِضُ الْبَاسِطُ الْخَافِضُ الرَّافِعُ الْمُعِزُ الْمُذِلُّ السَّمِيْعُ الْبَصِيرُ الحَكَمُ الْعَدْلُ اللَّطِيفُ الخَبِيرُ الحَلِيمُ الْعَظِيمُ الْغَفُوْرُ الشَّكُورُ الْعَلِيُّ الكَبِيرُ الحفيظ الْمُقِيْتُ الحَسِيْبُ الجَلِيلُ الْكَرِيمُ الرَّقِيْبُ الْمُجِيْبُ الْوَاسِعُ الْحَكِيمُ الْوَدُودُ الْمَجِيْدُ الْبَاعِثُ الشَّهِيدُ الحَقُّ الْوَكِيْلُ الْقَوِيُّ الْمَتِينُ الْوَلِيُّ الحَمِيدُ الْمُحْيِي الْمُبْدِئُ الْمُعِيدُ الْمُحْيِي الْمُمِيْتُ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ الْوَاجِدُ الْمَاجِدُ الْوَاحِدُ الصَّمَدُ الْقَادِرُ الْمُقْتَدِرُ الْمُقَدِّمُ الْمُؤَخِّرُ الْأَوَّلُ الْآخِرُ الظَّاهِرُ الْبَاطِنُ الْوَالِي الْمُتَعَالِي الْبَرُّ التَّوَّابُ الْمُنْتَقِمُ الْعَفُو الرَّءُوفُ مَالِكُ الْمُلْكِ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ الْمُقْسِطُ الْجَامِعُ الْغَنِيُّ الْمُغْنِي الْمَانِعُ الضَّارُّ النَّافِعُ النُّوْرُ الْهَادِي الْبَدِيعُ الْبَاقِي الْوَارِثُ الرَّشِيدُ الصَّبُوْرُ.

অর্থ: নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার ৯৯টি (এক কম ১০০টি) নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি তা মুখস্ত করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। নিশ্চয় তিনি বেজোড়, তিনি বেজোড়কে ভালোবাসেন। তিনি আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আর-রহমানু (পরম দয়াময়), আর-রাহিমু (অত্যন্ত দয়ালু), আল- মালিকু (বাদশাহ), আল-কুদ্দুসু (অতি পবিত্র), আস-সালামু (শান্তিদাতা), আল-মুমিনু (নিরাপত্তা দানকারী), আল-মুহাইমিনু (রক্ষণাবেক্ষণকারী), আল-আযিযু (মহাপরাক্রমশালী), আল-জাব্বারু (সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী), আল-মুতাকাব্বিরু (সর্বাপেক্ষা বড় ও মহান), আল-খালিকু (সর্বস্রষ্টা), আল-বারিউ (সৃষ্টিকর্তা), আল-মুসাওয়িরু (আকৃতি দানকারী), আল-গাফফারু (অসীম ক্ষমাকারী), আল-কাহহারু (সর্বশক্তির অধিকারী), আল-ওয়াহহাবু (সীমাহীন দানকারী), আররাজ্জাকু (রিযিকদাতা), আল- ফাত্তাহু (বিজয় দানকারী), আল-আলিমু (সর্বজ্ঞ) আল-কাবেদু (আয়ত্তকারী), আল-বাসিতু (প্রশস্তকারী), আল-খাফিদু (অবনতকারী), আররাফে্যু (উন্নতি দানকারী), আল-মুয়িজ্জু (সম্মানদানকারী), আল-মুযিল্লু

(অপমানকারী), আসসামীয়ু (সর্বশ্রোতা), আল-বাসিরু (সর্বদ্রষ্টা), আল- হাকামু (বিধানকারী), আল-আদলু (ন্যায়বিচারকারী), আল-লাতিফু (সূক্ষ্ম দয়ালু), আল-খাবিরু (সর্বজ্ঞ), আল-হালিমু (অত্যন্ত ধৈর্যশীল), আল-আযিমু (অতি মহান) আল-গাফুরু (ক্ষমাশীল), আশ-শাকুরু (যথাযথ মূল্যায়নকারী), আল-আলিয়্যু (মহান), আল-কাবিরু (অতি বড়), আল- হাফিজু (রক্ষাকারী), আল-মুকিতু (অন্নদানকারী), আল-হাসিবু (হিসাব গ্রহণকারী), আল-জালিলু (অত্যন্ত মর্যাদাশীল), আল-কারিমু (অত্যন্ত সম্মানী), আররাকিবু (নিরীক্ষণকারী), আল-মুজিবু (প্রার্থনা গ্রহণকারী), আল-ওয়াসেতু (অসিম), আল-হাকিমু (মঙ্গলময়), আল-ওয়াদুদু (অত্যন্ত স্নেহময়), আল-মাজিদু (অত্যন্ত মর্যাদাশীল), আল-বায়িসু (পুনর্জীবনদাতা), আশশাহিদু (সর্বদা বিদ্যমান), আল-হাক্কু (চির সত্য), আল-ওয়াকিলু (সমাধানকারী), আল-কাবিয়্যু (অপরিমেয় শক্তিশালী), আল-মাতিনু (অত্যন্ত মজবুত), আল-ওয়ালিয়া (তত্ত্বাবধানকারী), আল-হামিদু (সর্বতোভাবে প্রশংসিত), আল-মুহসি (হিসাব রক্ষাকারী), আল-মুবদিউ (আদি সৃষ্টিকারী), আল-মুয়িদু (পুনরায় সৃষ্টিকারী), আল-মুহয়ি (জীবন দানকারী), আল-মুমিতু (মৃত্যু দানকারী), আল-হাইয়ু (চিরঞ্জীব), আল-কাইয়্যুমু (চির প্রতিষ্ঠিত), আল-ওয়াজিদু (সর্বপ্রাপক), আল-মাজিদু (মর্যাদাবান), আল-ওয়াহিদু (অদ্বিতীয়), আল-আহাদু (একক), আসসামাদু (অমুখাপেক্ষী), আল-কাদিরু (সর্বশক্তিমান), আল-মুকতাদিরু (সর্বময় ক্ষমতাবান), আল-মুকাদ্দিমু (পূর্বের হিসাব গ্রহণকারী), আল-আউওয়ালু (আদি), আল-আখিরু (অন্ত) ) আযযাহিরু (প্রকাশ্য), আল-বাতিনু (গুপ্ত), আল-ওয়ালি (মহাশাসক), আল- মুতায়ালি (উচ্চ থেকে উচ্চ), আল-বাররু (পরম উপকারী), আততাওয়া (তাওবা গ্রহণকারী), আল-মুনতাকিমু (প্রতিশোধ গ্রহণকারী), আল-আফুয় (ক্ষমাকারী), আর রাউফু (স্নেহময়), মালিকুল মুলকি (সমগ্র পৃথিবীর মালিক), যুল জালালি ওয়াল ইকরাম (সম্মান ও প্রতিপত্তিশালী), আল- মুকসিতু (ন্যায় বিচারকারী), আল-জামেয়ু (একত্রকারী), আল-গানিয় (ধনী), আল-মুগনি (ধন-সম্পদ দানকারী), আল-মানিয়ু (নির্ধানকারী), আদদাররু (লোকসানে পতিতকারী), আন-নাফেয়ু (লাভবান করার মালিক), আন-নুরু (আলো দানকারী), আল-হাদি (হেদায়াত দানকারী), আল-বাদিয়ু (বিনা নমুনাতে সৃষ্টিকারী), আল-বাকি (চিরস্থায়ী), আল-ওয়ারেসু (উত্তরাধিকারী), আর রাশিদু (পথপ্রদর্শক), আসসাবুরু (ধৈর্যধারণকারী)।

হাদিসটি ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিম যৌথভাবে يُحِبُّ الوِتْرَ পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন। পরবর্তী অংশ ইমাম তিরমিজি ও অন্যান্যরা হাসান সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

উক্ত হাদিসের শুরুর অংশে مَنْ أَحْصَاهَا (যে তা সংরক্ষণ করে) এর অর্থ হল, ‘যে মুখস্থ করে', এই ব্যাখ্যাটি করেছেন ইমাম বুখারি ও অধিকাংশ মুহাদ্দিসিনে কেরাম। সমর্থন করে সহিহ বর্ণনায় আছে- যে ব্যক্তি তা মুখস্ত করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আবার কেউ কেউ বলেন, مَنْ أَحْصَاهَا এর অর্থ হল- ‘যে ব্যক্তি তার অর্থ জেনেছে এবং তার প্রতি ঈমান এনেছে। আবার কেহ বলেন, مَنْ أَحْصَاهَا : অর্থ হল- যে ব্যক্তি যত্নসহকারে এগুলো আয়ত্ত করে এবং এর অর্থ অনুযায়ী যথাসম্ভব আমল করে। ২৫

তথ্যসূত্রঃ

০১. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৫৯, আমাল: ৪০৪, নাসাঈ।
০২. সহিহ বুখারি: ১১৫৪, সুনানে আবু দাউদ: ৫০৬০, সুনানে তিরমিজি: ৩৪১১, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৩৮৭৮।
০৩. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৬১, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫৪0 1
০৪. ইবনুস সুন্নি: ৭৫৭, আমাল: ৮৬৪, নাসাঈ, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫৪০।
০৫. ইবনুস সুন্নি: ৭৫৩। হাদিসটি খুবই দুর্বল।
০৬. সুনানে তিরমিজি: ৩৩৯৮, সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮৭৪, আমাল: ৭৭০, ইবনুস সুন্নি, আমাল ৭৯০, নাসাঈ ।
০৭. মুয়াত্তা মালেক ১/২১৯। 
০৮. ইবনুস সুন্নি: ৭৪৯ ।
০৯. ইবনুস সুন্নি: ৭৫০ ।
১০. সুনানে তিরমিজি: ৩৫১৮। হাদিসটি খুবই দুর্বল।
১১. সুনানে আবু দাউদ: ৩৮৯৩, সুনানে তিরমিজি: ৩৫১৯, ইবনুস সুন্নি: ৭৫৩, মুসনাদে আহমাদ ২/১৮১, আমাল: ৭৬৫, নাসাঈ, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫৪৮।
১২. সহিহ বুখারি: ৬৯৮৫, সুনানে তিরমিজি: ৩৪৪৯, মুসনাদে আহমাদ ৩/৮, আমাল : ৭৯৩, নাসাঈ, আমাল: ৭৬৮, ইবনুস সুন্নি।
১৩. সহিহ বুখারি: ৫৭৪৭, সহিহ মুসলিম: ২২৬১।
১৪. সহিহ মুসলিম: ২২৬২, সুনানে আবু দাউদ: ৫০২২, সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৯০৮, মুসনাদে
আহমাদ ৩/৩৫০, আমাল: ৯১১, নাসাঈ ।
১৫. সুনানে তিরমিজি: ২২৯২।
১৬. আমাল: ৭৭০, ইবনুস সুন্নি। হাদিসটি খুবই দুর্বল। 
১৭. আমাল: ৭৭৩, ইবনুস সুন্নি। হাদিসটি খুবই দুর্বল। 
১৮. ইবনুস সুন্নি: ৭৭২। হাদিসটি খুবই দুর্বল।
১৯. সহিহ বুখারি: ৭৪৯৪, সহিহ মুসলিম: ৭৫৮ ।
২০. সহিহ মুসলিম: ৭৫৮ / ১৬৯।
২১. সহিহ মুসলিম: ৭৫৮।
২২. সুনানে আবু দাউদ: ১২৭৭, সুনানে তিরমিজি: ৩৫৭৯। 
২৩. সহিহ মুসলিম: ৭৫৭, মুসনাদে আহমাদ ৩/৩১৩। 
২৪. সুরা আরাফ : ১৮০।
২৫. সহিহ বুখারি: ৬৪১০, সহিহ মুসলিম: ২৬৭৭ ।





******************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url