প্রাত্যহিক জীবনে “আল্লাহ’র স্মরণ” || দৈনন্দিন বিভিন্ন দুআ এবং এর ফজিলত ||







(শাইখুল ইসলাম মুহিউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবনে শারফ আন-নববী রহ. রচিত “আল আযকার” গ্রন্থ অবলম্বনে)

ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার দুআ


(০১) সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلَاثَ عُقَدِ، يَضْرِبُ كُلَّ عُقْدَةٍ مَكَانَهَا عَلَيْكَ لَيْل طَوِيلٌ فَارْقُدْ، فَإِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللهَ اغْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ تَوَضَّأَ الْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ صَلَّى الْحَلَّتْ عُقَدُهُ كُلُّهَا، فَأَصْبَحَ نَشِيطا طَيِّبَ النَّفْسِ، وَإِلَّا أَصْبَحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلَانَ.

অর্থ: মানুষ যখন ঘুমায় তখন শয়তান তার মাথার পেছনে তিনটি গিট্টু দেয়। প্রত্যেক গিট্টুর স্থানে এই বলে ফুঁক দেয় যে, তুমি ঘুমিয়ে থাকো, রাত্রি এখনো অনেক লম্বা। এরপর যখন সে উঠে আল্লাহর জিকির করে, তখন তার একটি গিট্টু খুলে যায়। যখন অজু করে তখন আরো একটি গিট্টু খুলে যায়। এরপর যখন নামাজ আদায় করে তখন তার সব গিট্টু খুলে যায়। ফলে সে সকালে সুন্দর মনের অধিকারী ও ফুরফুরে থাকে। অন্যথায় সে সকাল করে খারাপ মন ও অলসতা নিয়ে। ০১

(০২) সহিহ বুখারিতে হজরত হুজায়ফা বিন ইয়ামান ও হজরত আবু জর রাদি. থেকে বর্ণিত, তাঁরা বলেন-

كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ، قَالَ: بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ أَمُوتُ وَأَحْيَا وَإِذَا قَامَ قَالَ: الحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانًا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ.

অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমানোর জন্য বিছানায় যেতেন তখন তিনি এই দুআ পড়তেন:

بِاسْمِكَ أَمُوْتُ وَأَحْيَا.

উচ্চারণ: বিসমিকা আল্লাহুম্মা আমুতু ওয়া আহইয়া ।

অর্থ: হে আল্লাহ, তোমার নামে ঘুমাই এবং তোমার নামে জাগ্রত হই।

আর যখন তিনি ঘুম থেকে জাগতেন এই দুআ পড়তেন:

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانًا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُوْرُ.

উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লা হিল্লাহিযি আহয়ানা বা'দামা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর ।

অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য যিনি মৃত্যুর পর পুনরায় আমাদের জীবিত করেন এবং পরিশেষে তাঁর দিকেই ফিরে যেতে হবে। ০২

(০৩) ইমাম আবু বকর ইবনুস সুন্নি রহ. হজরত আবু হুরায়রা রাদি, থেকে সহিহ সনদে বর্ণনা করেন, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِذَا اسْتَيْقَظَ أَحَدُكُمْ، فَلْيَقُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي رَدَّ عَلَيَّ رُوْحِيْ، وَعَافَانِي فِيجَسَدِيْ، وَأَذِنَ لِي بِذِكْرِهِ.الحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي رَدَّ عَلَيَّ رُوْحِي، وَعَافَانِيْ فِي جَسَدِيْ، وَأَذِنَ لِيْ بِذِكْرِهِ.

অর্থ: তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে জাগ্রত হয়, সে যেন বলে:

উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি রাদ্দা আলায়্যা রুহি, ওয়া আফানি ফি জাসাদি, ওয়া আজিনা লি বিজিকরিহি।

অর্থ: সকল প্রশংসা ঐ সত্তার জন্য যিনি আমাকে আমার রূহ ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমার শরীর হেফাযত করেছেন। আমাকে তাঁর জিকিরের অনুমতি দিয়েছেন ৷ ০৩

(০৪) ইবনুস সুন্নির কিতাবে হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত যে, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

مَا مِنْ عَبْدٍ يَقُولُ حِيْنَ رَدَّ اللهُ إِلَيْهِ رُوحَهُ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، إِلَّا غَفَرَ اللَّهُ لَهُ ذُنُوبَهُ وَلَوْ كَانَتْ مِثْل زَبَدِ الْبَحْرِ.

অর্থ: আল্লাহ তাআলা ঘুমের পর রূহ ফিরিয়ে দিলে যখন কোন বান্দা এ দুআটি পড়ে-

لا إلهَ إِلَّا اللهُ، وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍقَدِيرٌ.

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির

অর্থ: এক আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই। তিনি এক, তার কোন শরিক নেই। সকল রাজত্ব তাঁরই এবং তাঁরই জন্য সকল প্রশংসা। আর তিনি সর্বশক্তিমান। ০৪

আল্লাহ তাআলা তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন যদিও তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনা পরিমাণও হয় । ০৫

(০৫) ইবনুস সুন্নির কিতাবে হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

مَا مِنْ رَجُلٍ يَنْتَبِهُ مِنْ نَوْمِهِ فَيَقُولُ: الحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَ النَّوْمَ وَالْيَقْظَةَ، الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي بَعَثَنِي سَالِمًا سَوِيًّا، أَشْهَدُ أَنَّ اللَّهَ يُحْيِ الْمَوْتَى، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرُ، إِلَّا قَالَ اللهُ: صَدَقَ عَبْدِي.

অর্থ: যে ব্যক্তি ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে এই দুআ পড়বে-

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَ النَّوْمَ وَالْيَقْظَةَ، الحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي بَعَثَنِيْ سَالِمًا سَوِيًّا، أَشْهَدُ أَنَّ اللهَ يُحْيِي الْمَوْتَ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.

উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লা হিল্লাযি খালাকান নাউমা ওয়াল ইয়াকাযাহ, আলহামদুলিল্লা হিল্লাযি বাআসানি সালিমান সাভিয়্যান, আশহাদু আন্নাল্লাহা ইয়ুহয়িল মাউতা, ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির ।

অর্থ: সমস্ত প্রশংসা ঐ সত্তার যিনি ঘুম ও জাগরণকে সৃষ্টি করেছেন। সমস্ত প্রশংসা ঐ সত্তার যিনি সুস্থ ও নিরাপদে আমাকে প্রেরণ করেছেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয় আল্লাহই মৃতকে জীবিত করেন। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান ।

তখন আল্লাহ তাআলা শুধু এই কথাই বলেন যে, আমার বান্দা সত্য বলেছে। ০৬

(০৬) আবু দাউদ শরিফে হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি
বলেন-

كَانَ إِذَا هَبَّ مِنَ اللَّيْلِ كَبَّرَ عَشْرًا، وَحَمَّدَ عَشْرًا، وَقَالَ: سُبْحَانَ اللَّهِ، وَبِحَمْدِهِ عَشْرًا وَقَالَ: سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْقُدُّوسِ عَشْرًا وَاسْتَغْفَرَ عَشْرًا، وَهَلَّلَ عَشْرًا، ثُمَّ قَالَ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنْ ضِيْقِ الدُّنْيَا، وَضِيْقِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ عَشْرًا ثُمَّ يَفْتَتِحُالصَّلاةَ.

অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুম থেকে জাগতেন তখন দশবার ‘আল্লাহু আকবার' বলতেন, দশবার 'আলহামদুলিল্লাহ' বলতেন, দশবার 'সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি' বলতেন, দশবার 'সুবহানাল মালিকিল কুদ্দুস' বলতেন, দশবার ‘ইস্তেগফার' করতেন, দশবার ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলতেন। এরপর এই দুআটি দশবার পড়তেন-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنْ ضِيْقِ الدُّنْيَا، وَضِيْقِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন যিকিদ দুনইয়া ওয়া যিকি ইয়াওমাল কিয়ামাহ ।

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুনিয়ার সঙ্কীর্ণতা থেকে মুক্তি চাই এবং কেয়ামতের সঙ্কীর্ণতা থেকে মুক্তি চাই। এরপর তিনি নামাজ শুরু করতেন। ০৭

(০৭) আবু দাউদ শরিফে হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুম থেকে উঠতেন তখন তিনি এই দুআটি পড়তেন:

لا إله إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ أَسْتَغْفِرُكَ لِذَنْبِي، وَأَسْأَلُكَ رَحْمَتَكَ، اللَّهُمَّ زِدْنِي عِلْمًا، وَلَا تُزِغْ قَلْبِي بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنِي، وَهَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةٌ، إِنَّكَ أَنْتَ

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা, আল্লাহুম্মা আসতাগফিরুকা লিযাম্বি, ওয়া আসআলুকা রহমাতাকা, আল্লাহুম্মা যিদনি ইলমা, ওয়ালা তুযিগ কালবি বা'দা ইয হাদাইতানি, ওয়াহাবলি মিন লাদুনকা রাহমাহ, ইন্নাকা আনতাল ওয়াহহাব

অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। আপনি পবিত্র, আমার গুনাহের জন্য আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, আপনার রহমত কামনা করছি, আমার ইলম বৃদ্ধি করে দিন, হেদায়াত দান করার পর আমার মনকে বাঁকা করে দিবেন না। আপনার পক্ষ থেকে আমাকে রহমত দান করুন। আপনিই সবচেয়ে বড় দাতা। ০৮

কাপড় পরিধানের দুআ


প্রথমে বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব। অবশ্য সব কাজের শুরুতেই বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব ।

(০৮) ইবনুস সুন্নির কিতাবে হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদি. থেকে বর্ণিত-

النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا لَبِسَ ثَوْبًا سَمَّاهُ قَمِيْصًا أَوْ رِدَاءً أَوْ أَنَّ عِمَامَةً يَقُولُ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِهِ وَخَيْرِ مَا هُوَ لَهُ، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهوَشَرَّ مَا هُوَ لَهُ

অর্থ: নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কাপড় পরিধান করতেন, চাই তা জামা, চাদর বা পাগড়ী যাই হোক না কেন, তিনি এই দুআটি পড়তেন-

اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِهِ وَخَيْرِ مَا هُوَ لَهُ، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّ مَا هُوَ لَهُ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন খায়রিহি ওয়া খয়রি মা হুয়া লাহু, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহি ওয়া শাররি মা হুয়া লাহু ।

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি এর যত কল্যাণ আছে এবং এর যত কল্যাণ হতে পারে তাও আমি তোমার কাছে চাই। আর এর মধ্যে যে অকল্যাণ আছে এবং এর যত অকল্যাণ হতে পারে তার থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। ০৯ 

(০৯) হজরত মুআজ বিন আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত আছে-

أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ لَبِسَ ثَوْبًا فَقَالَ: "اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَسَانِي هَذَا التَّوْبَ وَرَزَقَنِيْهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلَا قُوَّةٍ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.

অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি নতুন কাপড় পরিধান করার সময় এই দুআটি পড়বে-

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَسَانِي هَذَا التَّوْبَ وَرَزَقَنِيْهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلَا قُوَّةٍ.

উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লা হিল্লাযি কাসানি হাযাছ ছাউবা, ওয়া রাযাকানিহি মিন গায়রি হাউলিম মিন্নি ওয়ালা কুওয়াহ ।

অর্থ: সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে এই পোশাক পরিধান করিয়েছেন, আমার শক্তি ও সামর্থ্য ব্যতিরেকে আমাকে রিযিক দান করেছেন।

আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন । ১০

নতুন কাপড়, জুতা ও এজাতীয় পোশাক পরার দুআ পোশাক পরিধানের সময় পূর্বের অধ্যায়ে বর্ণিত দুআসমূহ পড়া চাই । 

(১০) হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদি. থেকে বর্ণিত-

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اسْتَجَدَّ ثَوْبًا سَمَّاهُ بِاسْمِهِ، عِمَامَةً، أَوْ قَمِيصًا، أَوْ رِدَاءً، ثُمَّ يَقُولُ: اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ كَسَوْتَنِيهِ، أَسْأَلُكَ خَيْرَهُ وَخَيْرَ مَا صُنِعَ لَهُ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرَّ مَا صُنِعَ لَهُ.

অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন নতুন কাপড় পরিধান করতেন, চাই তা পাগড়ি হোক, বা জামা হোক অথবা চাদর হোক তখন তিনি এই দুআটি পড়তেন-

اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ كَسَوْتَنِيْهِ، أَسْأَلُكَ خَيْرَهُ وَخَيْرَ مَا صُنِعَ لَهُ، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهُ.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু আনতা কাছাউতানিহি, আসআলুকা খাইরাহু ওয়া খইরা মা সুনি'আ লাহু, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহি ওয়া শাররি মা সুনি'আ লাহু ।

অর্থ: হে আল্লাহ, সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য। কারণ, তুমি আমাকে এই কাপড় পরিধান করিয়েছো। এর যত কল্যাণ আছে এবং এটিকে যে কল্যাণের জন্য তৈরি করা হয়েছে, তা আমি তোমার কাছে চাই। আর এর যত অকল্যাণ আছে এবং এটিকে যে অকল্যাণের জন্য তৈরি করা হয়েছে, তার থেকে আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রর্থনা করি। ইমাম তিরমিজি রহ. হাদিসটিকে হাসান বলেছেন। ১১

(১১) হজরত উমর রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ: مَنْ لَبِسَ ثَوْبًا جَدِيْدًا فَقَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَسَانِي مَا أُوَارِيَ بِهِ عَوْرَتِي، وَأَتَجَمَّلُ بِهِ فِي حَيَاتِي ثُمَّ عَمَدَ إِلَى النَّوْبِ الَّذِي أَخْلَقَ فَتَصَدَّقَ بِهِ كَانَ فِي كَنَفِ اللَّهِ وَفِي حِفْظِ اللَّهِ، وَفِي سَتْرِ اللَّهِ

অর্থ: আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে ব্যক্তি নতুন কাপড় পরিধান করার পরে এই দুআ পড়ে। অতঃপর পুরাতন কাপড়টি

দান করে দিবে সে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকবে, আল্লাহর নিরাপত্তার মধ্যে থাকবে, জীবিত-মৃত উভয় অবস্থায় সে আল্লাহর হেফাজতে থাকবে। দুআটি এইঃ

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ كَسَانِي مَا أُوَارِي بِهِ عَوْرَتِيْ، وَأَتَجَمَّلُ بِهِ فِي حَيَاتِي.

উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লা হিল্লাযি কাসানি মা উয়ারি বিহী আউরতি, ওয়া আতাজাম্মালু বিহি ফি হায়াতি ।

অর্থ: সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে পোশাক পরিয়েছেন, যা দ্বারা আমার গোপনস্থান আবৃত করি। এবং আমার জীবনকে সুন্দর করি ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি গারিব। ১২

সঙ্গীর গায়ে নতুন কাপড় দেখলে পড়ার দুআ


(১২) হজরত উম্মে খালেদ বিনতে খালেদ রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

أُتِيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِثِيَابٍ فِيْهَا خَمِيْصَةٌ سَوْدَاءُ، قَالَ: مَنْ تَرَوْنَ نَكْسُوْهَا هَذِهِ الْخَمِيْصَةَ فَأُسْكِتَ القَوْمُ، قَالَ: ائْتُونِي بِأُمَّ خَالِدٍ فَأُتِيَ بِي النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَلْبَسَنِيْهَا بِيَدِهِ، وَقَالَ: أَبْلِيْ وَأَخْلِقِي مَرَّتَيْنِ.

অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য কিছু কাপড় হাদিয়া এলো। এর মধ্যে কারুকাজ করা একটি কালো চাদর ছিলো। তিনি বললেন, আমরা এ পোশাকটি কাকে পরিধান করাবো তোমরা বলোতো দেখি? উপস্থিত সবাই চুপ রইলেন। তখন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা উম্মে খালেদকে আমার কাছে নিয়ে এসো ।
অতঃপর আমাকে নবিজির কাছে নিয়ে যাওয়া হল। তখন তিনি সেটা নিজ হাতে আমাকে পরিধান করিয়ে দিলেন। এবং বললেন, এটা পুরাতন করো এবং দীর্ঘদিন পরিধান করো? কথাটি দুবার বললেন। ১৩

(১৩) হজরত ইবনে উমর রাদি. থেকে বর্ণিত-

أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: رَأَى عَلَى عُمَرَ قَمِيصًا أَبْيَضَ فَقَالَ: ثَوْبُكَ هَذَا غَسِيْلُ أَمْ جَدِيْدٌ؟ قَالَ: لَا ، بَلْ غَسِيْلُ. قَالَ: الْبَسْ جَدِيدًا، وَعِشْ حميدًا، وَمُتْ شَهِيدًا وَسَعِيدًا.

অর্থ: নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর রাদি.-এর গায়ে একটি কাপড় দেখে বললেন, এটি কি ধোয়া না কি নতুন? উত্তরে তিনি বললেন, ধোয়া। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'নতুন কাপড় পরিধান করো, সুখময় জীবনযাপন করো। শহিদি ও সৌভাগ্যের মৃত্যুবরণ করো । ১৪

জামা-জুতা পরিধান ও খোলার পদ্ধতি


কাপড়, জুতা, পাজামা ইত্যাদি পরিধান করার মুস্তাহাব পদ্ধতি হল, জামায় ডান হাত আর পাজামা ডান পা দিয়ে পরিধান করা। খোলার সময় প্রথমে বাম এরপরে ডানদিক খোলা। অনুরূপভাবে সুরমা, মিসওয়াক, নখ কাটা, বগলের চুল ছাঁটা, মাথা মুণ্ডানো, মসজিদে প্রবেশ করা, বাথরুম থেকে বের হওয়া, অজু, গোসল, পানাহার, মুসাফাহা, হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করা, কুলুখ ব্যবহার করা ইত্যাদি কাজ ডান দিক দিয়ে শুরু করবে। আর শেষ করবে, বের হবে বা খুলবে বামদিক দিয়ে ।

(১৪) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحِبُّ التَّيَمُّنَ مَا اسْتَطَاعَ فِي شَأْنِهِ كُلِّهِ، فِي ظُهُورِهِ وَتَرَجُلِهِ وَتَنَعُلِهِ.

অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেয়াকে পছন্দ করতেন। এমনকি পবিত্রতা অর্জন, সিঁথি কাটা, ও জুতা পরিধান করার সময়ও ডানদিককে প্রাধান্য দিতেন। ১৫

(১৫) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

كَانَتْ يَدُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْيُمْنَى لِطُهُوْرِهِ وَطَعَامِهِ، وَكَانَتْ يَدُهُ الْيُسْرَى لِخَلَائِهِ، وَمَا كَانَ مِنْ أَذًى.

অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্রতা ও আহারের ক্ষেত্রে ডান হাত ব্যবহার করতেন। আর শৌচকার্য ও প্রত্যেক কষ্টদায়ক কাজের ক্ষেত্রে বামহাত ব্যবহার করতেন। ১৬

(১৬) সুনানে আবু দাউদ ও সুনানে বায়হাকিতে হজরত হাফসা রাদি. থেকে বর্ণিত-

النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَجْعَلُ يَمِينَهُ لِطَعَامِهِ وَشَرَابِهِ وَثِيَابِهِ، أَنَّ وَيَجْعَلُ شِمَالَهُ لِمَا سِوَى ذَلِكَ.

অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানাহার ও পরিধান করার ক্ষেত্রে তাঁর ডানহাত ব্যবহার করতেন। আর অন্যান্য কাজে বামহাত ব্যবহার করতেন। ১৭

(১৭) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِذَا لَبِسْتُمْ وَإِذَا تَوَضَّأْتُمْ فَابْدَءُوا بِأَيَا مِنكُمْ.

অর্থ: যখন তোমরা পোশাক পরিধান করো ও অজু করো তখন তোমরা ডান দিক থেকে শুরু করো। ১৮ এ অধ্যায়ে এ ছাড়াও আরো অনেক হাদিস আছে। আল্লাহ তাআলা ভালো জানেন ।

গোসল, ঘুম ইত্যাদির জন্য কাপড় খোলার সময় যে দুআ পড়বে আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ গ্রন্থে হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

سَتْرُ مَا بَيْنَ أَعْيُنِ الْجِنِّ وَعَوْرَاتِ بَنِي آدَمَ أَنْ يَقُوْلَ الرَّجُلُ الْمُسْلِمُ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَطْرَحَ ثِيَابَهُ: بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ.

অর্থ: বনি আদমের সতর ও জিনদের দৃষ্টি মাঝে অন্তরায় হল যখন মুসলমান ব্যক্তি কাপড় খোলার ইচ্ছা করবে তখন এ দুআটি পড়বে-

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ.

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইলাহা ইল্লা হু। ১৯

অর্থ: ঐ সত্ত্বার নামে শুরু করছি, যিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই।


ঘর থেকে বের হওয়ার দুআ


(১৮) হজরত উম্মে সালামা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন-

مَا خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ بَيْتِي قَطُّ إِلَّا رَفَعَ طَرْفَهُ إِلَى السَّمَاءِ فَقَالَ: اللَّهُمَّ أَعُوْذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ، أَوْ أَضَلَّ، أَوْ أَزِلَّ، أَوْ أَزَلَّ، أَوْ أَظْلِمَ، أَوْ أُظْلَمَ، أَوْ أَجْهَلَ، أَوْ يُجْهَلَ عَلَيَّ.

অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই আমার ঘর থেকে বের হতেন, তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে এই দুআ পড়তেন-

اللَّهُمَّ أَعُوْذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ، أَوْ أَضَلَّ أَوْ أَزِلَّ، أَوْ أَزَلَّ، أَوْ أَظْلِمَ، أَوْ أَظْلَمَ، أَوْ أَجْهَلَ، أَوْ يُجْهَلَ عَلَيَّ.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা আন আদিল্লা আউ উদাল্লা আউ আযিল্লা আউ উযাল্লা আউ আযলিমা আউ উলামা আউ আজহালা আউ ইয়ুজহালা আলাইয়্যা ।

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট পথভ্রষ্ট হওয়া বা পথভ্রষ্ট করা, গুনাহ করা বা গুনাহের দিকে ধাবিত করা, যুলুম করা বা যুলুমের শিকার হওয়া, অজ্ঞতা প্রকাশ করা বা অজ্ঞত প্রকাশের পাত্র হওয়া থেকে আশ্রয় চাইছি। - ইমাম তিরমিজি রহ. হাদিসটিকে 'হাসান সহিহ' বলেছেন। সুনানে তিরমিজির আরেক বর্ণনায় বহুবচনের শব্দ যোগে আছে। ২০

نَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ نَزِلَّ، أَوْ نَضِلَّ ، أَوْ نَظْلِمَ، أَوْ نُظْلَمَ، أَوْ نَجْهَلَ، أَوْ يُجْهَلَ عَلَيْنَا.

(১৯) হজরত আনাস রাদি থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

إِذَا خَرَجَ الرَّجُلُ مِنْ بَيْتِهِ، فَقَالَ: بِاسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ قَالَ: يُقَالُ حِينَئِذٍ : هُدِيتَ وَكُفِيْتَ وَوُقِيْتَ، فَتَتَنَحَّى لَهُ الشَّيَاطِينُ.بِاسْمِ اللهِ، تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ .

অর্থ: যে ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এ দুআটি পড়ে-

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ ।

অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি, আল্লাহর ওপর ভরসা করছি। আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন ক্ষমতা ও শক্তি নেই।

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তখন তাকে বলা হয়, ‘তোমাকে হেদায়েত দেয়া হয়েছে, যথেষ্ট করা হয়েছে এবং হেফাজত করা হয়েছে।' এ ঘোষণা শোনে শয়তান তার থেকে দূরে সরে যায় । ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান। সুনানে আবু দাউদের বর্ণনায় আছে-

فَيَقُولُ: يَعْنِي الشَّيْطَانُ لِشَيْطَانٍ آخَرَ كَيْفَ لَكَ بِرَجُلٍ قَدْ هُدِيَ وكُفِيَ وَوَتِي؟

অর্থ: এক শয়তান আরেক শয়তানকে বলে, যাকে হেদায়েত দেয়া হয়েছে, নিরাপত্তা দান করা হয়েছে ও হেফাজত করা হয়েছে, তার ওপর তুমি কিভাবে আধিপত্য বিস্তার করবে? ২১

(২০) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে-

أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا خَرَجَ مِنْ بَيْتِهِ قَالَ: بِسْمِ اللَّهِ ، التَّكْلَانُعلى اللهِ ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ .

অর্থ: প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘর হতে বের হতেন তখন এ দুআটি পড়তেন-

بِسْمِ اللهِ ، التَّكْلَانُ عَلَى اللهِ ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ .

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ, আত্তুকলানু আলাল্লাহ, লা হওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ ।

অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি, ভরসা আল্লাহর ওপর। আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন ক্ষমতা ও শক্তি নেই। ২২

ঘরে প্রবেশের দুআ


ঘরে প্রবেশের সময় বিসমিল্লাহ বলা, বেশি বেশি জিকির করা, ঘরে কোন মানুষ থাকুক বা না থাকুক সর্বাবস্থায় সালাম দেয়া মুস্তাহাব। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

فَإِذَا دَخَلْتُمْ بُيُوتًا فَسَلِّمُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ تَحِيَّةٌ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ، مُبَارَكَةً طَيِّبَةً.

অর্থ: যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ করতে চাও তখন তোমরা আপন লোকদের দুআ স্বরূপ সালাম করো, আল্লাহর পক্ষ থেকে এটা কল্যাণময় ও বরকত। ২৩ 

(২১) হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন-

يَا بُنَيَّ إِذَا دَخَلْتَ عَلَى أَهْلِكَ فَسَلَّمْ يَكُوْنُ بَرَكَةً عَلَيْكَ وَعَلَى أَهْلِ بَيْتِكَ.

অর্থ: হে বৎস, যখন তুমি তোমার পরিবার পরিজনের কাছে প্রবেশ করবে, তখন তাদের সালাম দেবে। এটা তোমার ও তোমার পরিবার পরিজনের জন্য বরকত হবে।২৪ ইমাম তিরমিজি রহ. হাদিসটিকে হাসান সহিহ বলেছেন।

(২২) হজরত আবু মালেক আশআরি রাদি. (তাঁর নাম হারিস, কারো মতে- উবাইদ, কেউ বলেন, কাব, কেউ বলেছেন- আমর) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

إِذَا وَلَجَ الرَّجُلُ بَيْتَهُ، فَلْيَقُلْ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلَجِ، وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ، بِسْمِ اللهِ، وَلَجْنَا، وَبِسْمِ اللهِ، خَرَجْنَا، وَعَلَى اللهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا، ثُمَّ لِيُسَلَّمْ عَلَى أَهْلِهِ.

অর্থ: যখন তোমাদের মধ্যে কেউ ঘরে প্রবেশ করবে তখন সে যেন এ দুআ পড়ে-

اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلَج، وَخَيْرَ الْمَخْرَج، بِسْمِ اللهِ، وَلَجْنَا، وَبِسْمِ اللهِ، خَرَجْنَا، وَعَلَى اللَّهِ، رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খায়রাল মাউলাজি ওয়া খায়রাল মাখরাজি, ওয়া আলাল্লাহি রাব্বানা তাওয়াক্কালনা ।

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট প্রবেস্থলের কল্যাণ এবং বের হওয়ার স্থানের মঙ্গল কামনা করছি। আমরা আল্লাহ তাআলার নামে প্রবেশ করলাম, আল্লাহ তাআলার নামে বের হলাম এবং আমরা আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার ওপর ভরসা করলাম। অতঃপর পরিবারের লোকদের সালাম দিবে।২৫ 

ইমাম আবু দাউদ রহ. এ হাদিসটির সনদকে দুর্বল বলেননি। সুতরাং এটি সহিহ বলে বিবেচিত।

(২৩) হজরত আবু উমামা বাহেলি রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

ثَلَاثَةُ كُلُّهُمْ ضَامِنٌ عَلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ: رَجُلٌ خَرَجَ غَازِيًا فِي سَبِيْلِ اللَّهِ ، فَهُوَ ضَامِنٌ عَلَى اللهِ، حَتَّى يَتَوَفَّاهُ فَيُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ، أَوْ يَرُدَّهُ بِمَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ وَغَنِيْمَةٍ، وَرَجُلٌ رَاحَ إِلَى الْمَسْجِدِ، فَهُوَ ضَامِنٌ عَلَى اللهِ، حَتَّى يَتَوَفَّاهُ فَيُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ، أَوْ يَرُدَّهُ بِمَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ وَغَنِيْمَةٍ، وَرَجُلٌ دَخَلَ بَيْتَهُ بِسَلَامٍ فَهُوَ ضَامِنٌ عَلَى اللَّهِ، عَزَّ وَجَلَّ.

অর্থ: তিন ব্যক্তির প্রত্যেকেই আল্লাহর নিরাপত্তার মধ্যে থাকে-

১. ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে বের হয়। শহিদ হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করা অথবা কাঙ্ক্ষিত সওয়াব ও গনিমত নিয়ে ফিরে আসা পর্যন্ত তিনি আল্লাহর নিরাপত্তার মধ্যে থাকেন।

২. ঐ ব্যক্তি যিনি মসজিদে গমন করেন। মৃত্যুবরণ করে জান্নাতে প্রবেশ করা অথবা কাঙ্ক্ষিত সওয়াব ও উপহার নিয়ে ফিরে আসা পর্যন্ত তিনি আল্লাহর নিরাপত্তার মধ্যে থাকেন।

৩. ঐ ব্যক্তি যিনি সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করেন, তিনিও আল্লাহ তাআলার নিরাপত্তা বেষ্টনীতে থাকেন ।

ইমাম আবু দাউদ রহ. সহ অন্যান্যরা এ হাদিসটি হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন। এখানে ‘নিরাপত্তার মধ্যে থাকা’র অর্থ হল, আল্লাহ তাআলা তার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে নেন।

(২৪) হজরত জাবের বিন আবদুল্লাহ রাদি. থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি-

إِذَا دَخَلَ الرَّجُلُ بَيْتَهُ، فَذَكَرَ اللهَ عِنْدَ دُخُولِهِ وَعِنْدَ طَعَامِهِ، قَالَ الشَّيْطَانُ: لَا مبِيتَ لَكُمْ، وَلَا عَشَاءَ، وَإِذَا دَخَلَ، فَلَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ عِنْدَ دُخُولِهِ، قَالَ الشَّيْطَانُ: أَدْرَكْتُمُ الْمَبِيْتَ، وَإِذَا لَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ عِنْدَ طَعَامِهِ، قَالَ: أَدْرَكْتُمُ الْمَبِيْتَ وَالْعَشَاءَ.

অর্থ: যখন কোন ব্যক্তি ঘরে প্রবেশের সময় জিকির করে (তথা সালাম দেয়) এবং খাবারের সময় জিকির করে (তথা বিসমিল্লাহ বলে,) তখন শয়তান বলে, তোমাদের ঘরে রাত্রিযাপন ও রাতের খাবারে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। আর যখন ঘরে প্রবেশের সময় জিকির করে না, তখন শয়তান বলে তোমাদের এখানে রাত্রিযাপনের সুযোগ হয়ে গেল। আর খাবারের সময় জিকির না করলে শয়তান বলে, তোমাদের এখানে রাত্রিযাপন ও খাবারে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হল। ২৭

(২৫) হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا رَجَعَ مِنَ النَّهَارِ إِلَى بَيْتِهِ يَقُولُ: الحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَفَانِي وَآوَانِي، اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي وَسَقَانِي، اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي مَنَّ عَلَيَّ فَأَفْضَلَ، أَسْأَلُكَ أَنْ تُحِيرَنِيْ مِنَ النَّارِ.

অর্থ: যখন দিনের বেলায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে ফিরতেন তখন এ দুআ পড়তেন-

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَفَانِي وَآوَانِي، اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي وَسَانِي، اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي مَنَّ عَلَيَّ فَأَفْضَلَ، أَسْأَلُكَ أَنْ تُجِيرَنِي مِنَ النَّارِ.

উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি কাফানি ওয়া আওয়ানি আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি আত‘আমানি ওয়া সাকানি আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি মান্না আলাইয়া ফাআফ্যালা আসআলুকা আন তুজিরানি মিনান-নার। ২৮

অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহ পাকের, যিনি আমার জন্য যতেষ্ট এবং আমাকে বাসস্থান দিয়েছেন। সকল প্রশংসা আল্লাহ পাকের, যিনি আমাকে খাদ্য খেতে দিয়েছেন এবং পান করতে দিয়েছেন। সকল প্রশংসা আল্লাহ পাকের, যিনি আমার ওপর অনেক অনুগ্রহ করেছেন। আমি আপনার কাছ মিনতি করছি যেন, আমাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।

মুয়াত্তা মালেক কিতাবে বর্ণিত আছে যে, কোনো বিরাণ ঘরে ঢুকলেও এভাবে বলা মুস্তাহাব-

السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ.

উচ্চারণ: আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন ।

অর্থ: আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক । ২৯


রাতে ঘুম থেকে জেগে ঘর থেকে বের হওয়ার দুআ


রাতের বেলায় ঘুম থেকে জেগে ঘর থেকে বের হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ থেকে নিয়ে সুরা আলে ইমরানের শেষ পর্যন্ত (১৯০-২০০ আয়াত) তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। ৩০

(২৬) সহিহ বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এমনটি করতেন। তবে বুখারি শরিফে আকাশের দিকে তাকানোর বিষয়টি আছে, কিন্তু মুসলিম শরিফে নেই। ৩১

(২৭) হজরত ইবনে আব্বাস রাদি. থেকে বর্ণিত আছে যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের জন্য জাগতেন তখন এ দুআটি পড়তেন:

اللهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيِّمُ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَنْ فِيْهِنَّ، وَلَكَ الْحَمْدُ لَكَ مُلْكُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيْهِنَّ وَلَكَ الحَمْدُ أَنْتَ نُوْرُ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَنْ فِيْهِنَّ، وَلَكَ الحَمْدُ أَنْتَ مَلِكُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ الْحَقُّ وَوَعْدُكَ الْحَقُّ، وَلِقَاؤُكَ حَقٌّ، وَقَوْلُكَ حَقٌّ، وَالْجَنَّةُ حَقٌّ، وَالنَّارُ حَقٌّ، وَالنَّبِيُّوْنَ حَقٌّ، وَمُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَقٌّ، وَالسَّاعَةُ حَقٌّ، اللَّهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ، وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ، وَبِكَ خَاصَمْتُ، وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ، فَاغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ، وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ، أَنْتَ المُقَدِّمُ، وَأَنْتَ المُؤَخِّرُ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু আনতা কইয়িমুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া মান ফি হিনা, ওয়া লাকাল হামদু লাকাল মুলকুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া মান ফি হিন্না, ওয়া লাকাল হামদু আনতা নুরুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া মান ফি হিন্না, ওয়া লাকাল হামদু আনতা মালিকুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি, ওয়া লাকাল হামদু আনতাল হাক্কু ওয়া ওয়া‘দুকাল হাক্কু, ওয়া লিকাউকা হারুন, ওয়া কাওলুকা হাক্কুন, ওয়াল জান্নাতু হাক্কুন, ওয়ান নারু হাক্কুন, ওয়ান নাবিনয়ুনা হাক্কুন, ওয়া মুহাম্মাদুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হারুন, ওয়াস সা‘আতু হাক্কুন, আল্লাহুম্মা লাকা আসলামতু, ওয়াবিকা আমানতু, ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু, ওয়া ইলাইকা আনাবতু, ওয়াবিকা খাসামতু, ওয়া ইলাইকা হাকামতু, ফাগফির লি মা কাদ্দামতু ওয়া মা আখখারতু, ওয়া মা আসরারতু ওয়া মা আ'লানতু, আনতাল মুকাদ্দিমু ওয়া আনতাল মুয়াখখিরু, লা ইলাহা ইল্লা আনতা 

অর্থ: হে আল্লাহ আমার রব, সমস্ত প্রশংসা আপনার জন্য, আপনিই আসমান-যমিন এবং মধ্যবর্তী সবকিছুর তত্ত্বাবধায়ক। সকল প্রশংসা আপনারই। আসমান-যমিন এবং মধ্যবর্তী সবকিছুর রাজত্ব আপনারই। আপনিই আসমান-যমিন এবং মধ্যবর্তী সবকিছু উজ্জ্বলকারী। সকল প্রশংসা আপনারই। আপনিই সত্য, আপনার অঙ্গীকার সত্য, আপনার সাক্ষাৎ সত্য । আপনার কথা সত্য, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। নবিগণ সত্য, মুহাম্মাদ সত্য এবং কেয়ামত সত্য। হে আল্লাহ, আমি আপনার সমীপে আত্মসমৰ্পণ করলাম, আপনার প্রতি ঈমান আনয়ন করলাম, আপনার ওপরই ভরসা করলাম, আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন করলাম এবং আপনাকেই বিচারক সাব্যস্ত করলাম। হে আল্লাহ, আমার পূর্বের-পরের, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য এবং আপনার জ্ঞাত পাপসমূহ ক্ষমা করে দিন। আপনিই শুরু আপনিই শেষ এবং আপনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই । কোন কোন বর্ণনাকারী এর সাথে... (লা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) বৃদ্ধি করেছেন। ৩২


তথ্যসূত্রঃ
০১. সহিহ বুখারি: ১১৪২, সহিহ মুসলিম: ৭৭৬, সুনানে আবু দাউদ: ১৩০৬, সুনানে নাসাঈ ৩/২০৩, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ১৩২৯।
০২. সহিহ বুখারি: ৬৩১২, সুনানে আবু দাউদ: ৫০৪৯, সুনানে তিরমিজি: ৩৪১৩, সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮৮০
০৩. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৯, ইবনুস সুন্নি, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৮৬৬, নাসাঈ, সুনানে তিরমিজি: ৩৩৯৮।
০৪. উবায়দুল্লাহ
০৫. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১০, ইবনুস সুন্নি।
০৬. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৩, ইবনুস সুন্নি।
০৭. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৮৫; সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৩৫৬, সুনানে নাসাঈ ৩ /২০৯, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৮৭১, নাসাঈ।
০৮. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৬১, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৮৬৫, নাসাঈ, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫৪০, সহিহ ইবনে হিব্বান: ২৩৫৯।
০৯. সুনানে আবু দাউদ: ৪০২০, সুনানে তিরমিজি: ১৭৬৭, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৪, ইবনুস সুন্নি ।
১০. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ২৭২, ইবনুস সুন্নি।
১১. সুনানে তিরমিজি: ১৭৬৭, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৩০৯, নাসাঈ।
১২. সুনানে তিরমিজি: ৩৫৫৫।
১৩. সহিহ বুখারি: ৫৮২৩।
১৪. সুনানে ইবনু মাজাহ: ৩৫৫৮, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ২৬৯, ইবনুস সুন্নি, মুসনাদে আহমাদ ২/৮৯, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৩১১, নাসাঈ ।
১৫. সহিহ বুখারি: ৪২৬; সহিহ মুসলিম: ২৬৮।
১৭. সুনানে আবু দাউদ: ৩২; সুনানে বায়হাকি ১/১১৩।
১৮. সুনানে আবু দাউদ: ৪১৪১; সুনানে তিরমিজি: ১৭৬৬; সুনানে বায়হাকি ১/৮৬। ৭৫. সুনানে আবু দাউদ: ৩৩।
১৯. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ২৭৪।
২০. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৯৪; সুনানে তিরমিজি: ৩৪২৭; সুনানে নাসাঈ : ২৬৮; সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮৮, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৮৫, নাসাঈ ।
২১. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৯৫; সুনানে তিরমিজি: ৩৪২৬; সুনানে নাসাঈ : ৯৮৩৭।
২২. সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮৮৫; আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৭৬, ইবনুস সুন্নি। 
২৩. সুরা নূর: ৬১।
২৪. জামে তিরমিজি: ২৬৯৯।
২৫. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৯৬।
২৬. সুনানে আবু দাউদ: ২৪৯৪, আল আদাবুল মুফরাদ: ১০৯৪, সহিহ ইবনে হিব্বান : ৪১৬, মুসতাদরাকে হাকেম ২/৭৩।
২৭. সহিহ মুসলিম: ২৪৯৪, সহিহ আবু দাউদ: ৩৭৬৫, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৫৭, ইবনুস সুন্নি, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৭৮, নাসাঈ ।
২৮. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৫৮, ইবনুস সুন্নি । 
২৯. মুয়াত্তা মালেক: ২/৯৬২। দুআর অনুবাদ: উবায়দুল্লাহ
৩০. সুরা আলে ইমরান: ১৯০-২০০ আয়াতগুলো হল-

إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَانِ  ِالَّيْلِ وَالنَّهَارِ لايت لأولى الْأَلْبَابِ ﴿۱۰﴾ الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللَّهَ قِيمًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَوتِ وَالْأَرْضِ رُبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذَا بَاطِلًا سُبُحْنَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿19﴾ رَبَّنَا إِنَّكَ مَنْ تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهُ وَمَا لِلظَّلِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ ﴿١٩٢) رَبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِى لِلْإِيمَانِ أَنْ آمِنُوا بِرَبِّكُمْ فَأَمَنَّا رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفَرُ عَنَّا سَيَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ ﴿١٩٣) رَبَّنَا وَاتِنَا مَا وَعَدْتَنَا عَلَى رُسُلِكَ وَلَا تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيِّمَةِ إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ البيْعَادَ (١) فَاسْتَجَابَ لَهُمْ رَبُّهُمْ اَنّي لَا أَضِيعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِنْكُمْ مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى بَعْضُكُمْ مِنْ بَعْضٍ فَالَّذِينَ هَاجَرُوا وَأَخْرِجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ وَأُوذُوا فِي سَبِيلِي وَقَتَلُوا وَقُتِلُوا لَا كَفَرَنَ عَنْهُمْ سَيَأْتِهِمْ ولادخِلَنَّهُمْ جَنَّتٍ تَجْرِى مِنْ تَحْتِهَا الأَنْهرُ ثَوَابًا مِّنْ عِنْدِ اللهِ وَاللهُ عِنْدَهُ حُسْنُ الثَّوَابِ (190) لا يَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي الْبِلادِ (191) مَتَاعٌ قَلِيلٌ . ثُمَّ مَأْويهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمِهَادُ ﴿١٩﴾ لكن الَّذِينَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ لَهُمْ جَنَّتٌ تَجْرِى مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهُرُ خُلِدِينَ فِيهَا نُزُلًا مِّنْ عِنْدِ اللَّهِ وَمَا عِندَ اللهِ خَيْرٌ لِلْابَرَارِ ﴿١٨﴾ وَ إِنَّ مِنْ اَهْلِ الْكِتَبِ لَمَنْ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْكُمْ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِمْ لحشعِينَ لِلَّهِ لَا يَشْتَرُونَ بِأَيْتِ اللهِ ثَمَناً قَلِيلاً أُولئِكَ لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ إِنَّ اللَّهَ سَرِيعُالْحِسَابِ ﴿19﴾ يَأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا وَرَابِطُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ (۲۰۰)

তরজমা: নিশ্চয় আসমান এবং জমিনের সৃষ্টিতে এবং রাত-দিনের পরিবর্তনে বোধসম্পন্ন লোকদের জন্য (তওহিদের) নিদর্শন রয়েছে। (বুদ্ধিজীবী তারা) যারা আল্লাহকে (সর্বাবস্থায়) স্মরণ করে: দাঁড়িয়ে, বসে এবং শায়িত অবস্থায়। যারা আসমান-জমিন সৃষ্টির বিষয়ে গবেষণা করে। (যখন তারা জগৎসমূহের উদ্দেশ্য বুঝে ফেলে, তখন বলে) হে আমাদের পরওয়ারদেগার! আপনি এই জগৎসমূহ অনর্থক সৃষ্টি করেননি— বরং পরকালের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন। আপনার সত্তা পবিত্র! অতএব, আমাদিগকে আপনি দোজখের শাস্তি থেকে বাঁচান (এবং জান্নাতে প্রবেশ করান)। হে আমাদের পালনকর্তা। আপনি যাকে দোজখে নিক্ষেপ করলেন, নিশ্চয় তাকে অপদস্ত করলেন (এবং যাকে জান্নাতে দাখিল করালেন, নিশ্চয় তাকে সম্মানিত করলেন)। আর জালেমদের (মুশরিকদের) জন্য কোন সাহায্যকারী নেই (মুমিনদের সাহায্যকারী হলেন ফেরেশতাগণ এবং সুপারিশকারীগণ। আর সবচেয়ে বড় সুপারিশ হবে, আল্লাহ তাআলার) (দ্বিতীয় দুআ:) হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা নিশ্চিতরূপে শুনেছি একজন আহবানকারীকে (রসুল অথবা কুরআন) ঈমানের প্রতি আহবান করতে যে, তোমাদের পালনকর্তার প্রতি ঈমান আনয়ন কর: তাই আমরা ঈমান এনেছি! হে আমাদের পালনকর্তা! অতএব, আমাদের পাপসমূহ মাফ করুন এবং আমাদের দোষ-ত্রুটি মিটিয়ে দিন। আর নেক লোকদের সাথে আমাদের মৃত্যু দিন! (তৃতীয় দুআঃ) হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি যা ওয়াদা করেছেন নিজের রসুলগণের মাধ্যমে: তা আমাদেরকে দাও! আর কেয়ামতের দিন আমাদিগকে অপমানিত করবেন না! নিশ্চয় আপনি ওয়াদা খেলাপি করেন না! অতঃপর তাদের পালনকর্তা তাদের কল্যাণার্থে তাদের দুআ (এই বলে) কবুল করে নিলেন যে, আমি কোন পরিশ্রমকারীর পরিশ্রম বিনষ্ট করি না, সে পুরুষ হোক কিংবা নারী। তোমাদের একজন অপরজন থেকে!
তারপর যারা হিজরত করেছে, যাদেরকে নিজেদের দেশ থেকে বের করে হয়েছে, যাদের প্রতি আমার পথে (দীনের কারণে) উৎপীড়ন করা হয়েছে এবং যারা লড়াই করেছে এবং নিহতও হয়েছে: অবশ্যই আমি তাদের পাপসমূহ ক্ষমা করব। আর তাদেরকে অবশ্যই প্রবিষ্ট করব এমন জান্নাতে, যাতে প্রবাহিত হয় নহরসমূহ। এটা বিনিময়স্বরূপ আল্লাহর তরফে। আর আল্লাহর নিকট রয়েছে (আরো) উত্তম বিনিময় !
নগরীতে কাফেরদের চাল-চলন যেন আপনাকে ধোঁকা না দেয়। এটা হল সামান্য দিনের ভোগসামগ্রী। এরপর তাদের ঠিকানা হবে দোজখ। আর তা হল অতি নিকৃষ্ট বিছানা। হ্যাঁ, যারা ভয় করে নিজেদের পালনকর্তাকে (অর্থাৎ নিষিদ্ধ বস্তু থেকে বেঁচে থাকে এবং আদেশ মান্য করে)। তাদের জন্য রয়েছে এমন জান্নাত, যাতে প্রবাহিত হয় তটিনীসমূহ, তারা তাতে সর্বক্ষণ থাকবে। এটা আল্লাহর তরফে আতিথেয়তা। আর যা আল্লাহর নিকট রয়েছে, তা সৎকর্মশীলদের জন্য উত্তম!
আর আহলে কিতাবের মধ্যে কেউ কেউ এমনও রয়েছেন, যারা নিশ্চতরূপে আল্লাহর ওপর ঈমান আনেন এবং ঐ কিতাবের প্রতি, যা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে। আর সে কিতাবের প্রতি, যা তাদের ওপর অবতীর্ণ করা হয়েছিল। যারা আল্লাহর সামনে বিনয়াবন থাকেন এবং আল্লাহর আয়াতসমূহকে (ভবিষ্যদ্বাণী এবং আহকাম) স্বল্পমূল্যের বিনিময়ে সওদা করেন না। তাদেরই জন্য রয়েছে তাদের পারিশ্রমিক পালনকর্তার নিকট। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা যথা শীঘ্র হিসাব চুকিয়ে দিবেন। হে ঈমানদানগণ! (কোন বিপদের সম্মুখীন হলে) ধৈর্যধারণ কর (অর্থাৎ সাহসীকতা প্রদর্শন কর) এবং (দুশমনের) মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আর মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাক এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা সফল হতে পার! - আয়াতগুলোর তাফসিরসহ অনুবাদ: অধমের অনূদিত তাফসিরে হেদায়াতুল কুরআন থেকে। চমৎকার এই তাফসিরটি মোট ৯ খণ্ডে মাদানী কুতুবখানা থেকে প্রকাশিত ।
৮৮. সহিহ বুখারি: ৪৫৬৯; সহিহ মুসলিম: ৭৬৩ ।
৩২. সহিহ বুখারি: ১১২০; সহিহ মুসলিম: ৭৬৯ ।



****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url