প্রাত্যহিক জীবনে “আল্লাহ’র স্মরণ” || নামাজের সঠিক পদ্ধতি-৩ || নামাজের শেষ বৈঠকে তাশাহুদ ও দরুদ পাঠের বিস্তারিত নিয়ম








(শাইখুল ইসলাম মুহিউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবনে শারফ আন-নববী রহ. রচিত “আল আযকার” গ্রন্থ অবলম্বনে)

নামাজে তাশাহুদ পাঠ


নামাজ দুই রাকাত বিশিষ্ট হলে যেমন ফজরের নামাজ বা অন্য কোন নফল নামাজ তাহলে তাশাহুদ একবার পড়বে। যদি নামাজ তিন রাকাত বা চার রাকাত বিশিষ্ট হয় তাহলে তাতে দুইবার তাশাহুদ পড়তে হয়, প্রথমবার ও দ্বিতীয়বার ।

মাসবুক ব্যক্তির ক্ষেত্রে তিনবার তাশাহুদ পড়বে। মাসবুক ব্যক্তির মাগরিবের নামাজে চারবার তাশাহুদ পড়তে হতে পারে। যেমন দ্বিতীয় রাকাতে রুকুর পর যদি ইমামের সাথে নামাজে শরিক হয় তাহলে প্রথম ও দ্বিতীয় তাশাহুদে ইমামে সঙ্গে শরিক হবে। এঅবস্থায় মাসবুক ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে কেবল এক রাকাত পেয়েছে। ইমাম সালাম ফেরানোর পর মাসবুক তার ছুটে যাওয়া দুই রাকাত আদায় করবে। প্রথম রাকাতের পর তাশাহুদ পড়বে, কেননা এটা তার জন্য দ্বিতীয় রাকাত। এভাবে তার চারবার তাশাহুদ পড়তে হবে। 

নফল নামাজ যদি চার রাকাতের বেশি পড়ে চাই একশত রাকাতই হোক না কেন দুইবার তাশাহুদ পড়বে। দুই রাকাত পড়ে এক তাশাহুদ। আর দুই রাকাত পড়ে আরেক তাশাহুদ পড়ে সালাম ফেরাবে।

শাফেয়ি উলামায়ে কেরাম বলেন, প্রতি দুই রাকাতে একবারের বেশি তাশাহুদ পড়া জায়েজ নেই। অনুরূপভাবে প্রথম ও দ্বিতীয় তাশাহুদের মাঝে দুই রাকাতের বেশি পড়া জায়েজ নেই। তবে দুটির মাঝে এক রাকাত হলে বৈধ আছে ।

যদি দুই দুই তাশাহুদের বেশি পড়ে বা দুই তাশাহুদের মাঝে দুয়ের অধিক রাকাত থাকে তাহলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। কেউ কেউ বলেন, প্রতি রাকাতে তাশাহুদ পড়া জায়েজ আছে। তবে সঠিক কথা হল, প্রতি দুই রাকাতের পর তাশাহুদ জায়েজ; এক রাকাতের পরে নয়।

শেষ বৈঠকে তাশাহুদ পড়া ইমাম শাফেয়ি রহ. ও আহমদ রহ. এর মতে ওয়াজিব। আবু হানিফা ও মালেক রহ. এর মতে সুন্নাত ।

প্রথম বৈঠকে তাশাহুদ পড়া শাফেয়ি, আহমদ ও ইমাম আবু হানিফা সহ অধিকাংশ ইমামের মতে সুন্নাত। ইমাম আহমদ রহ. এর মতে ওয়াজিব। ছেড়ে দিলে শাফেয়ি রহ. এর মাজহাব অনুযায়ী নামাজ সহিহ হবে। তবে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে । চাই ইচ্ছা করে ছাড়ুক বা ভুলক্রমে।০১

নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তিনটি তাশাহুদ বর্ণিত হয়েছে: 

*  হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাদি. এর সূত্রে নিম্নোক্ত তাশাহুদ বর্ণিত আছে-

التَّحِيَّاتُ لِلهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ، وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ.

উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত্তায়্যিবাত, আস্সালামু আলাইকা আইউহান্নাবিয়্য ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ।

অর্থ: সকল মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য। হে নবি, আপনার ওপর রহমত, শান্তি ও বরকত অতবীর্ণ হোক। আমাদের ও নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসুল। ০২

* হজরত ইবনে আব্বাস রাদি. এর সূত্রে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে নিম্নবর্ণিত তাশাহুদ বর্ণিত আছে-

التَّحِيَّاتُ الْمُبَارَكَاتُ الصَّلَوَاتُ الطَّيِّبَاتُ لِلَّهِ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ الله .

উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতুল মুবারাকাত, আসালাওয়াতু তায়্যিবাত লিল্লাহ, আস্সালামু আলাইকা আইউহান্নাবিয়্য ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়া আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ।

অর্থ: সকল বরকতময় মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য। হে নবি, আপনার ওপর রহমত, শান্তি ও বরকত অতবীৰ্ণ হোক। আমাদের ও নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার রাসুল ।০৩

* হজরত আবু মুসা আশআরি রাদি. এর সূত্রে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে নিম্নোক্ত তাশাহুদ বর্ণিত হয়েছে-

التَّحِيَّاتُ الطَّيِّبَاتُ الصَّلَوَاتُ لِلَّهِ السَّلامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ،وَبَرَكَاتُهُ، السَّلامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ.

উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতু তায়্যিবাত ওয়াস সালাওয়াতু লিল্লাহ, আস্সালামু আলাইকা আইউহান্নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ।

অর্থ: সকল মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য। হে নবি, আপনার ওপর রহমত, শান্তি ও বরকত অতবীর্ণ হোক। আমাদের ও নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসুল। ০৪

*  হজরত কাসেম এর সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়েশা রাদি. নিচের তাশাহুদটি আমাকে শিখিয়েছেন এবং বলেছেন, এটি ছিল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাশাহুদ-

التَّحِيَّاتُ لِلهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ، وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ.

উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত্তায়্যিবাত, আস্সালামু আলাইকা আইউহান্নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ।

অর্থ: সকল মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য। হে নবি, আপনার ওপর রহমত, শান্তি ও বরকত অতবীর্ণ হোক। আমাদের ও নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসুল।

এসব রেওয়ায়েতের একটি সুন্দর ফায়দা হল, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাশাহুদের শব্দ আমাদের তাশাহুদের শব্দের মতই । ০৫

*  হজরত আবদুর রহমান বিন আবদুল কারি (কারাহ গোত্রের দিকে সম্বন্ধিত) রহ. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আমি উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলতে শোনেছি, তিনি মিম্বারে বসে লোকদেরকে তাশাহুদ শিক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি বলছিলেন, তোমরা বলো-

التَّحِيَّاتُ لِلهِ ، الزَّاكِيَاتُ لِلهِ الطَّيِّبَاتُ الصَّلَوَاتُ لِلَّهِ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إلهَ إِلَّا اللهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ.

উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহ, আজ্জাকিয়াতু লিল্লাহ, আত্তায়্যিবাতুস সালাওয়াতু লিল্লাহ । আস্সালামু আলাইকা আইউহান্নাবিয়্য ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ।

অর্থ: সকল মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য। হে নবি, আপনার ওপর রহমত, শান্তি ও বরকত অতবীর্ণ হোক। আমাদের ও নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসুল। ০৬ 

*  হজরত আয়েশা রাদি থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত আছে, তিনি নিম্নবর্ণিত তাশাহুদ পড়তেন-

التَّحِيَّاتُ الطَّيِّبَاتُ الصَّلَوَاتُ الزَّاكِيَاتُ لِلهِ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ، وَبَرَكَاتُهُ، اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وعلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ.

উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতু তায়্যিবাতুস সালাওয়াতু জ্জাকিয়াতু লিল্লাহ। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ। আস্সালামু আলাইকা আইউহান্নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ । আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন।

অর্থ: সমস্ত মৌখিক, আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসুল। হে নবি, আপনার ওপর রহমত, শান্তি ও বরকত অতবীৰ্ণ হোক । আমাদের ও নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।

উক্ত কিতাবগুলোতে হজরত আয়েশা রাদি থেকে আরেকটি রেওয়ায়েতে আছে-

التَّحِيَّاتُ الصَّلَوَاتُ الطَّيِّبَاتُ الزَّاكِيَاتُ لِلَّهِ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ، وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ.

উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতুস সালাওয়াতু ত্তায়্যিবাতু জ্জাকিয়াতু লিল্লাহ। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ। আস্সালামু আলাইকা আইউহান্নাবিয়্য ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন।

অর্থ: সমস্ত মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। তিন একক, তার কোন শীরক নেই। আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসুল। হে নবি, আপনার ওপর রহমত, শান্তি ও বরকত অতবীর্ণ হোক। আমাদের ও নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক । ০৮

*  হজরত আবদুল্লাহ বিন উমর রাদি থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত আছে যে, তিনি নিম্ন বর্ণিত তাশাহুদ পড়তেন-

بِاسْمِ اللهِ ، التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ، اَلصَّلَوَاتُ لِلَّهِ، اَلزَّاكِيَاتُ لِلَّهِ، اَلسَّلَامُ عَلَى النَّبِيِّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، شَهِدْتُ أَنْ لَا إلهَ إِلَّا اللهُ، شَهِدْتُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللَّهِ .

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ, আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহ, আস সালাওয়াতু লিল্লাহ, আজ্জাকিয়াতু লিল্লাহ। আস্সালামু আলান্নাবিয়্যি ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। শাহিদতু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, শাহিদতু আন্না মুহাম্মাদান রাসুলুল্লাহ ।

অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করলাম। সমস্ত মৌখিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য, সমস্ত শারীরিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য এবং সমস্ত আর্থিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য। হে নবি, আপনার ওপর রহমত, শান্তি ও বরকত অতবীর্ণ হোক। আমাদের ও নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসুল । ০৯

এই হল তাশাহুদের বিভিন্ন ধরন। ইমাম বাইহাকি রহ. বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তিনটি হাদিস প্রমাণিত:

এক. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাদি. এর হাদিস।

দুই. আবদুল্লাহ বিন আব্বাস রাদি. এর হাদিস। তিন. আবু মুসা আশআরি রাদি. এর হাদিস।

অন্যরা বলেন, উক্ত তিন তাশাহুদই সহিহ। তবে আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাদি. থেকে বর্ণিত তাশাহুদ অধিক বিশুদ্ধ ।

পূর্বোল্লেখিত যে কোন তাশাহুদ পড়া জায়েজ আছে। ইমাম শাফেয়ি রহ. ও অন্যান্য উলামায়ে কেরাম এমনটিই বলেন। ইমাম শাফেয়ি রহ. এর মতে আবদুল্লাহ বিন আব্বাস থেকে বর্ণিত তাশাহুদ পড়া উত্তম। কারণ, এতে المُبَارَكَاتُ (আমুবারাকাত) শব্দটি অতিরিক্ত আছে। ইমাম শাফেয়ি রহ, ও অন্যান্য উলামায়ে কেরাম বলেন, রাবীদের শব্দের ভিন্নতার কারণে এক্ষেত্রে বিষয়টি অনেক ব্যাপক। যে কোন তাশাহুদ পড়া যাবে।

প্রথমে বর্ণিত তিন তাশাহুদের যে কোনা একটি তাশাহুদ পুরা পড়া। যদি তাশাহুদের আংশিক বাদ দেয় তাহলে জায়েজ হবে কি না- এ ব্যাপারে বিস্তৃত আলোচনা রয়েছে।

তাশাহুদের المُبَارَكَاتُ وَالصَّلَواتُ وَالطَّيِّبَاتُ وَالزَّاكِيَاتُ (আলমুবারাকাত, ওয়াস সালাওয়াত, ওয়াত্তায়্যিবাত, ওয়াজ্জাকিয়াত) এই শব্দগুলো তাশাহুদের জন্য শর্ত নয়। যদি এই সবগুলো শব্দ বাদ দিয়ে শুধু التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ (আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি, আস্‌সালামু আলাইকা আইউহান্নাবিয়্যু) থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে তাহলেও তাশাহুদ জায়েজ হবে। এ ব্যাপারে শাফেয়ি উলামায়ে কেরামের নিকট কোন এখতেলাফ নেই।

আর খোলে এক السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ (আস্সালামু আলাইকা আইউহান্নাবিয়্যু) থেকে শেষ পর্যন্ত শব্দগুলো ওয়াজিব। কোন শব্দ বাদ দেয়া জায়েজ নেই। তবে وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ (ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ) এর ব্যাপারে তিনটি অভিমত রয়েছে। সবচেয়ে বিশুদ্ধ অভিমত হল, এগুলোও বাদ দেয়া যাবে না। কারণ সকল হাদিসে এশব্দগুলো এসেছে। দুই. এদুটি শব্দকে বাদ দেয়া যাবে। তিন. وَبَرَكَاتُهُ (ওয়া বারাকাতুহ) বাদ দেয়া যাবে। তবে  وَرَحْمَةُ اللهِ (ওয়া রাহমাতুল্লাহি) বাদ দেয়া যাবে না। আবুল আব্বাস বিন সুরাইজ রহ. বলেন, এতটুকু বলা জায়েজ আছে-

التَّحِيَّاتُ لِلهِ ، سَلَامٌ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ ، سَلَامٌ عَلى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللَّهِ.

উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহ, সালামুন আলাইকা আইয়ুহা ন্নাবিয়্যু, সালামু আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়া আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ ।

অর্থ: সমস্ত মৌখিক ইবাদত আল্লাহ তাআলার জন্য, হে নবি, আপনার ওপর শান্তি অতবীৰ্ণ হোক । শান্তি বর্ষিত হোক নেক বান্দাদের ওপর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসুল ।

سَلَامٌ (সালামুন) শব্দটি অধিকাংশ হাদিসে এভাবে এসেছে- السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ [আসালামু আলাইকা আইয়ুহা ন্নাবিয়্যু] এবং اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا উভয় জায়গায় আলিফ-লামের সাথেও এসেছে। তবে কিছু কিছু হাদিসে আলিফ- লাম ছাড়া سَلَامٌ  [সালামুন] এসেছে।

শাফেয়ি উলামায়ে কেরাম বলেন, উভয়টি জায়েজ আছে। তবে উত্তম হল, আলিফ-লামসহ বলা। কারণ, অধিকাংশ হাদিসে এভাবেই আসছে। এতে বেশি অক্ষর রয়েছে, আর এতেই সতর্কতা।

তাশাহুদের আগে বিসমিল্লাহ পড়ার বিষয়টি পূর্বে এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু ইমাম বুখারি ও নাসাঈ রহ. বলেন, বিসমিল্লাহ যুক্ত রেওয়ায়েতগুলো সঠিক নয়। তাই অধিকাংশ শাফেয়ি উলামায়ে কেরাম বলেন, বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব নয়। তবে কেউ কেউ বলেন, বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব। তবে পছন্দনীয় মত হল, বিসমিল্লাহ না বলা। কারণ, যেসব সাহাবায়ে কেরাম তাশাহুদ রেওয়ায়েত করেছেন, তাদের বেশির ভাগই বিসমিল্লাহ রেওয়ায়েত করেননি ।

তাশাহুদের শব্দের মধ্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়। জমহুর উলামায়ে কেরামের মতে শব্দের আগ-পিছ হলে নামাজে কোন সমস্যা হবে না।

শাফেয়ি রহ. কিতাবুল উম্মে এ বিষয়টি স্পষ্টভাবে বলেছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, শব্দের মধ্যেও ধারাবাহিকতা জরুরি যেমন সুরা ফাতিহার শব্দের মাঝে ধারাবাহিকতা জরুরি। সালাম শব্দটি কোন রেওয়ায়েতে আগে এসেছে আবার কোন রেওয়ায়েতে পরে এসেছে-এর থেকে বোঝা যায় যে, শব্দের আগ-পিছ করা জায়েজ।

আর সুরা ফাতেহার শব্দ ও বিন্যাস ওহি প্রদত্ত। তাই এতে আগ-পিছ করা জায়েজ নেই ৷

যে আরবি ভাষায় তাশাহুদ পড়তে সক্ষম তার জন্য অনারবি ভাষায় তাশাহুদ পড়া জায়েজ নয়। আর যদি কেউ আরবি ভাষায় পড়তে না পারে, তাহলে সে নিজের ভাষায় তাশাহুদ পড়বে। আর আরবি ভাষায় শিখতে থাকবে। যেমনটি পূর্বে তাকবিরে তাহরিমার অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে । 

সকল উলামায়ে কেরামের মতে তাশাহুদ আস্তে পড়া সুন্নাত। এ ব্যাপারে নিচের হাদিসটি দলিল-

*  হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সুন্নাত হল তাশাহুদ আস্তে আস্তে পড়া । ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান। ইমাম হাকেম রহ. বলেন, এটি সহিহ। ১০

কোন সাহাবি যখন বলেন- 'এটা সুন্নাত’, তাহলে সেটি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্য বলে ধরা হয়। এটাই জমহুর উলামায়ে কেরামের বিশুদ্ধ মত ।

যদি কেউ উচুঁ আওয়াজে পড়ে তাহলে মাকরুহ হবে। তবে এজন্য তার নামাজ নষ্ট হবে না । সিজদায়ে সাহুও দিতে হবে না ।

নামাজে তাশাহুদের পর দরুদ পাঠ


ইমাম শাফেয়ি রহ. এর মতে শেষ বৈঠকে তাশাহুদের পর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরুদ শরিফ পড়া ওয়াজিব। ছেড়ে দিলে নামাজ হবে না। নবিজির পরিবারবর্গের ওপর দরুদ পড়া ওয়াজিব নয় বিশুদ্ধ মাজহাব অনুযায়ী। তবে এটা মুস্তাহাব। আর কেউ কেউ বলেছেন ওয়াজিব। নিম্নোক্ত দরুদ শরিফ পড়া উত্তম:

اللهُمَّ صَلَّ عَلَى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُولِكَ النَّبِيِّ الْأُتِي، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا صَلَّيْتَ على إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الأتي، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ فِي الْعَالَمِينَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন আবদিকা ওয়া রাসুলিকা ন্নাবিয়্যিল উম্যিয়্যি ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন ওয়া আজওয়াজিহি ওয়া জুররিয়্যাতিহ। কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম। ওয়া বারিক আলা মুহাম্মাদি ন্নাবিয়্যিল উম্যিয়্যিয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন ওয়া আজওয়াজিহি ওয়া জুররিয়্যাতিহ, কামা বারাকতা আলা আলি ইবরাহিমা, ওয়া আলা আলি ইবরাহিমা ফিল আলামিন। ইন্নাকা হামিদুন মাজিদ । ১১


অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি রহমত নাজিল করুন আপনার বান্দা মুহাম্মাদ ও উম্মি রাসুলের ওপর। আর তার পরিআর-পরিজন, স্ত্রীগণ ও বংশধরগণের প্রতি। যেমন রহমত নাজিল করেছেন ইবরাহিম ও তার পরিবারের প্রতি। হে আল্লাহ, আপনি বরকত নাজিল করুন উম্মি রাসুল মুহাম্মাদের ওপর এবং তার পরিআর-পরিজন, স্ত্রীগণ ও বংশধরগণের প্রতি। যেমন বরকত নাজিল করেছেন বিশ্ববাসীর মধ্যে ইবরাহিম ও তার পরিবারের প্রতি। নিশ্চয় আপনি প্রশংসনীয় ও মর্যাদাবান।

দরুদ প্রসঙ্গে সামনে বিস্তারিত আলোচনা আসবে “নবিজির ওপর দরুদ বর্ষণ” অধ্যায়ে ।
উক্ত দরুদ শরিফে ওয়াজিব অংশ হল-   للهُمَّ صَلَّ عَلَى النَّبِيِّ   (আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা ন্নাবিয়্যি)। চাইলে এই বাক্যগুলোও বলা যাবে- 

صَلَّى اللهُ عَلَى مُحَمَّدٍ. 

উচ্চারণ: সাল্লাল্লাহু আলা মুহাম্মাদ । 

অর্থ: আল্লাহ পাক মুহাম্মাদের ওপর রহমত বর্ষণ করুন।

صَلَّى اللهُ عَلَى رَسُولِهِ.

উচ্চারণ: সাল্লাল্লাহু আলা রাসুলিহ।

অর্থ: আল্লাহ পাক তার রাসুলের ওপর রহমত বর্ষণ করুন।

صَلَّى اللهُ عَلَى النَّبِيِّ.

উচ্চারণ: সাল্লাল্লাহু আলা নাবিয়্যি ।

অর্থ: আল্লাহ পাক নবিজির ওপর রহমত বর্ষণ করুন।

কোন কোন শাফেয়ি উলামায়ে কেরাম বলেন, এই বাক্যটিই বলতে হবে- اللهُمَّ صَلَّ عَلَى مُحَمَّدٍ (আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ: হে আল্লাহ, মুহাম্মাদের ওপর রহমত বর্ষণ করুন) অন্যথায় জায়েজ হবে না। আবার কেউ কেউ বলেন, এটি বলা জায়েজ আছে- (ওয়া সাল্লাল্লাহু আলা আহমাদ: আল্লাহ পাক, আহমাদ নবির ওপর রহমত বর্ষণ করুন) আবার কেউ কেউ বলেন, এটি বলা জায়েজ আছে- (সাল্লাল্লাহু আলাইহি: আল্লাহ তার ওপর রহমত বর্ষণ করুন) ১২

প্রথম বৈঠকে তাশাহুদের পর দরুদ পড়া কারও মতে ওয়াজিব নয়। তবে মুস্তাহাব কিনা? এ ব্যাপারে দুই ধরনের মত রয়েছে। বিশুদ্ধ মত হল মুস্তাহাব। পরিবারবর্গের ওপর মুস্তাহাব নয়। কেউ কেউ বলেছেন সেটাও মুস্তাহাব। প্রথম বৈঠকে দুআ পড়া মুস্তাহাব নয়। বরং কেউ কেউ বলেছেন প্রথম বৈঠকে দুআ পড়া মাকরুহ। কেননা প্রথম বৈঠক বেশি দীর্ঘ করা যাবে না। কিন্তু দ্বিতীয় বৈঠক এর ব্যতিক্রম।


তথ্যসূত্রঃ
০১. ইমাম আবু হানিফা রহ. এর নিকটে উভয় বৈঠকে তাশাহুদ পড়া ওয়াজিব। অনিচ্ছাকৃত ছেড়ে দিলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। (হেদায়া: ১/১১২)
০২. সহিহ বুখারি: ৮৩১, সহিহ মুসলিম: ৪০২, সুনানে আবু দাউদ: ৯৬৮, সুনানে তিরমিজি: ২৮৯, সুনানে নাসাঈ ২/২৩৭।
০৩. সহিহ মুসলিম: ৪০৩, সুনানে আবু দাউদ: ৯৭৪, সুনানে নাসাঈ ২/২৪২-২৪৩। 
০৪. সহিহ মুসলিম: ৪০৪, সুনানে আবু দাউদ: ৯৭২, সুনানে নাসাঈ ২/২৪২।
০৫. সুনানে বাইহাকি ২/১৪৪।
০৬. মুয়াত্তা মালেক ১/৯০, সুনানে বাইহাকি ২/১৪২। 
০৭. মুয়াত্তা মালেক: ২০৭, সুনানে বায়হাকি ২/১৪৪।
০৮. মুয়াত্তা মালেক ১/৯১, সুনানে বাইহাকি ২/১৪২, আলফুতুহাতুর রাব্বানিয়াহ ২/৩২৮।
০৯. মুয়াত্তা মালেক ১/৯১, সুনানে বাইহাকি ২/১৪২।
১০. সুনানে তিরমিজি: ২৯১, সুনানে আবু দাউদ: ৯৮৬, মুসতাদরাকে হাকেম ২/২৩০, ২৬৭, সুনানে বাইহাকি ২/১৪৬।
১১. হানাফি উলামায়ে কেরামের মতে শেষ বৈঠকে তাশাহুদের পর দরুদ শরিফ পড়া সুন্নাত। ছেড়ে দিলে নামাজ নষ্ট হবে না। তাদের মতে নিচের দরুদ শরিফটি পড়া উত্তম-
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اَللَّهُمَّ
بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ. 
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম, ইন্নাকা হামিদুন মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন, ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইবরাহিমা, ওয়া আলা আলি ইবরাহিম। ইন্নাকা হামিদুন মাজিদ। অর্থ: হে আল্লাহ, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার পরিবারের ওপর রহমত বর্ষণ করুন। যেমন রহমত নাজিল করেছিলেন ইবরাহিম ও তার পরিবারের প্রতি। নিশ্চয় আপনি প্রশংসনীয় ও মর্যাদাবান। হে আল্লাহ, আপনি বরকত নাজিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার পরিবারের প্রতি। যেমন বরকত নাজিল করেছিলেন ইবরাহিম ও তার বংশধরের প্রতি। নিশ্চয় আপনি প্রশংসনীয় ও মর্যাদাবান।
১২. সহিহ বুখারি: ৮৩১, সহিহ মুসলিম: ৪০২।




****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url