আল আকসার ইতিকথা-১৬ | ইহুদী ও খ্রীষ্টানদের ষড়যন্ত্র | জেরুজালেমের উপর ইহুদী দাবী | ফিলিস্তিনী ইন্তেফাদা

আল আকসা মসজিদের ইতিকথা শীর্ষক এই প্রবন্ধগুলো এ এন এম সিরাজুল ইসলামের লেখা “আল আকসা মসজিদের ইতিকথা” গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। সুন্দর তথ্যবহুল এই গ্রন্থটি বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত।

বিদেশী ইহুদী পুনর্বাসন ষড়যন্ত্র

ইসরাইল ১৯৯০ সালের এপ্রিল মাসে সোভিয়েট ইউনিয়ন থেকে ৪০ লাখ ইহুদীকে ইসরাইল পুর্বাসন করার কর্মসূচী ঘোষণা করে। ১৯৯১ সালের জুন মাসে ইথিওপিয়া থেকে ২৬ হাজার ফালাসা ইহুদীকে ইসরাইলে পুনর্বাসিত করা হয়। ইসরাইল গোটা দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে ইহুদীদেরকে ইসরাইলে পুনর্বাসনের জন্য ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।

ইসরাইল সরকার অধিকৃত আরব এলাকা ইহুদীকরণের উদ্দেশ্যে ইহুদী বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। একমাত্র পূর্ব জেরুজালেম শহরেই ৭০ হাজার ইহুদীকে পুনর্বাসনের জন্য ২০ হাজার আবাসিক ইউনিট তৈরির পরিকল্পন নিয়েছে। যাতে করে পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদীর সংখ্যা ১ লাখ ৯০ হাজারে পৌঁছে এবং মুসলমানেরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে পরিণত হয়। কেননা, সেখানে মুসলমানদের সংখ্যা হচ্ছে দেড় লাখ। এছাড়াও ইসরাইল উত্তর জেরুজালেমে ১২ হাজার আবাসিক ইউনিট এবং দক্ষিণ জেরুজালেমে সাড়ে ৭ হাজার আবাসিক ইউনিট তৈরি করার কথা ঘোষণা করেছে।
ইসরাইল সরকারের ইহুদী বসতি স্থাপনের অর্থ যোগান দিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন ইহুদী সংস্থা এবং সবচাইতে বড় অর্থ যোগাদানকারী দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে ৩ বিলিয়ন ডলার অর্থ সাহায্য দিচ্ছে। ফলে, এত বিরাট পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে তার কোন অসুবিধে হচ্ছে না ।

হাইকালে সুলাইমানী তৈরির জন্য ইসরাইলের সকল আয়োজন শেষ পর্যায়ে। এ জন্য মসজিদে আকসার চারপাশে যা যা করা দরকার সবকিছু তারা করেছে। মুসলিম বসতি উচ্ছেদ করে ইহুদী বসতি স্থাপন, মুসলমানের চাইতে ইহুদী জনসংখ্যা বৃদ্ধি করা, মুসলমানদের জমিন হকুম দখল করা, মোট ১১ বার খনন কাজ করা, মুসলিম কবরস্থান উচ্ছেদ করা, হাইকালে সুলাইমানীর নতুন ভিত্তি স্থাপন করা ইত্যাদি। সেজন্য যে বাধা আসবে, গুলীর মাধ্যমে তার মোকাবিলা করা এবং মুসলমানদের রক্তে হোলি খেলাও শুরু হয়ে গেছে। এছাড়াও মসজিদে আকসা ধ্বংসের চেষ্টা ক্রমান্বয়ে জোরদার হচ্ছে । যে কোন সময় বড় ধরনের একটি উদ্যোগ নেয়াই যথেষ্ট এবং এটাই তাদের অবশিষ্ট কাজ ৷

জেরুজালেমের উপর ইহুদী দাবীর ভ্রান্তি

জেরুজালেমের সর্বোচ্চ ইসলামী কমিটির প্রেসিডেন্ট এবং ফিলিস্তিন জাতীয় সংসদের স্পীকার আবদুল হামীদ আস-সায়েহ বলেছেন, “জেরুজালেমের উপর ইসরাইলীদের কোন ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় অধিকার নেই।”৩৮

আল্লাহর বিশেষ কুদরত হল, হযরত দাউদ ও সুলাইমান (আ) হযরত মূসা (আ)-এর পরবর্তী নবী ছিলেন। ইসলাম সকল নবীর উপর ঈমান আনার নির্দেশ দিয়েছে। তাই হযরত সুলাইমান (আ) কর্তৃক নির্মিত মসজিদে আকসা আজ মুসলমানদেরই স্বাভাবিক উত্তরাধিকার। সেখানে ইহুদী জাতির ধর্মীয়, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক অধিকার কিংবা ঐতিহ্যের আবদার চলে না। কেননা হযরত দাউদ ও সুলাইমান (আ) ইহুদীদের সরাসারি নবী নন। বরং মুসলমানরাই হযরত দাউদ ও সুলাইমান (আ)-এর যথার্থ উত্তরাধিকারী । উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, হযরত মূসা (আ)-এর উপর তূর পাহাড়ে তাওরাত নাজিল হলেও তিনি ফিলিস্তিনে বাস করেননি এবং ইহুদীদের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য সম্ভবও হয়নি। সেই কারণে 'জেরুজালেম তাওরাত কিংবা ইহুদীদের ভূমি' সংক্রান্ত ইসরাইলী দাবী অর্থহীন। বরং হযরত মুহাম্মাদ (সা) বাইতুল মাকদিস থেকে মেরাজে যাওয়ার কারণে তা ইসলামেরই পবিত্র স্থান ও পুণ্যভূমি ।

মসজিদে আকসার বর্তমান প্রয়োজন

সম্প্রতি অধিকৃত আরব এলাকার 'লাজনাতুল কুদ্‌স ওয়াদ দেফা আনিল মুকাদ্দাসাত' (জেরুজালেম ও পবিত্র স্থান প্রতিরক্ষা কমিটি) এক মারাত্মক রিপোর্ট প্রকাশ করে বলেছে, মসজিদে আকসা এবং সাখরা ধ্বংসের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তাই মসেিজদ আকসাকে রক্ষা করা খুবই জরুরী। কমিটি যে সকল ক্ষেত্রে কাজ করার চেষ্টা করছে সেগুলো হচ্ছেঃ

১. পুরাতন জেরুজালেম শহরের ভূমির প্রতিরক্ষা কেননা, পুরাতন জেরুজালেম শহরকে ইহুদীকরণ এবং সেখানে পরিকল্পিত ইহুদী বসতি স্থাপনের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। তাই প্রতিদিন পুরাতন শহরের মুসলিম সম্পত্তি ও জায়গার উপর ইহুদী আগ্রাসন চলছে। ইহুদীরা মুসলিম সম্পত্তি দখল করার উদ্দেশ্যে বিরাট তহবিল সৃষ্টি ও পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এবং আইনের আশ্রয়ে সেগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। কোর্টে ইহুদীদের বিরুদ্ধে মামলা ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিরাট অংকের অর্থের প্রয়োজন ।

২. পুরাতন শহরের মুসলিম ঘর-বাড়ীর হেফাজত করা । রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঐ সকল ঘরগুলোর বয়স শত শত বছর। ঐগুলোর প্রতি কোন গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে না। অনেক বিল্ডিং-এর ইট খসে যাচ্ছে, দেয়াল ফেটে যাচ্ছে এবং ইহুদীদের ব্যাপক খননকার্যের ফলে ভবনগুলোর ভিত্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেই ঘরগুলোকে ঠিক করার জন্য নিম্নোক্ত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে : (ক) কমিটির প্রকৌশলীদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ঘরগুলোর মেরামত করা। এ জন্য বিরাট অংকের অর্থ প্রয়োজন। স্থানীয় জনগণের সেই রকম আর্থিক সামর্থ্য নেই যে, এত টাকা খরচ করে তারা নিজেদের ঘর মেরামত করতে পারে। (খ) ঘরের ফাটল সংস্কারের জন্য মালিকদেরকে নির্মাণসামগ্রীর সাহায্য দেয়া (গ) প্রতিরক্ষামূলক বেষ্টনী দেয়াল, জানালা ও দরজা পুনঃনির্মাণ এবং সেগুলোতে লোহা ব্যবহার করা। (গ) পরিত্যক্ত বাড়ীঘরগুলো আবাদ করা, এই সকল বাড়ী-ঘরের মালিকেরা এগুলো সংস্কার করতে না পেরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রেখে দিয়েছে। কমিটি সেই সকল বাড়ী-ঘরের মালিকদের সাথে যোগাযোগ করে মেরামত করছে এবং চুক্তির ভিত্তিতে গরীব-মিসকীনদেরকে তাতে বাস করার সুযোগ দিচ্ছে কিংবা সেগুলো ভাড়া দিচ্ছে। এগুলোর উপর ‘জেরুজালেম ওয়াকফ কমিটির' তদারকীর চুক্তির শর্ত রয়েছে। এই কাজের জন্য কমিটির বিরাট অংকের টাকা দরকার। (ঘ) বড় বড় ঐতিহাসিক ভবনগুলোর সংস্কার ও মেরামত করে তা বসবাসের উপযুক্ত করা হচ্ছে।

৩. পুরাতন শহরের যে সকল জমিন ইহুদী বসতির হুমকির সম্মুখীন, এর মোকাবিলায় কমিটি সে সকল জমিন কিনে তা মুসলমানদের কবজায় রাখার চেষ্টা করছে। এ জন্যও বিরাট তহবিল প্রয়োজন ।

৪. পুরাতন শহরে বসবাসরত মুসলিম পরিবারগুলোকে সমাজকল্যাণমূলক সেবা দান করতে হচ্ছে। তাদেরকে শহরে টিকিয়ে রাখার জন্য এই সেবা অত্যন্ত জরুরী ।

৫. কমিটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করে, পুরাতন শহরের লোকদেরকে জেরুজালেমের বেষ্টনী দেয়ালের ভেতর প্রতিষ্ঠিত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। শহরে এক মিটার জায়গাও এমন নেই, যেখানে হয় ইসরাইলী পুলিশ কিংবা একজন পুনর্বাসিত ইহুদী নেই। কমিটি বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে চিকিৎসা কেন্দ্রে রূপান্তরিত করেছে এবং মুসলিম নাগরিকদেরকে চিকিৎসা প্রদান করছে।

৬. চিকিৎসা সেবাঃ কমিটি পৃথক চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং মুসলিম নাগরিকদেরকে বিনামূল্যে কিংবা প্রতীকী মূল্যে চিকিৎসা সেবা দান করছে। 

৭. মসজিদে আকসা ও সাখরার রক্ষীদের সাংসারিক প্রয়োজন পূরণের উপযোগী বেতন-ভাতা দেয়া দরকার। সেজন্য কমিটি চেষ্টা করছে তবে এ ব্যাপারে কমিটিকে সহযোগিতা করা দরকার ।

জেরুজালেম ও মসজিদে আকসা উদ্ধারের সঠিক উপায়

জেরুজালেম ও ফিলিস্তিন মুক্ত করার আন্দোলন চলছে। ফিলিস্তিনীরা প্রতিরোধ আন্দোলন করছে। কিন্তু তাদের মুক্তি আন্দোলনগুলো সবই ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের কথা বলছে। অনেকগুলো পৃথক পৃথক মুক্তিসংস্থা সম্মিলিত প্রতিরোধ আন্দোলনের ধারা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গড়ে তুলেছে ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশন। এটি একটি ফেডারেশন। সকল মুক্তিসংগঠনগুলো এর সদস্য। কিন্তু তারা সবাই ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের ভিত্তিতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। সাথে রয়েছে জেরুজালেমকে রাজধানী করার ঘোষণা। ১৯৬৭ সালের জুন যুদ্ধে জর্দান থেকে ইসরাইলের কেড়ে নেয়া জর্দান নদীর পশ্চিমতীর ও গাজ্জা এলাকা নিয়ে জেরুজালেমকে রাজধানী করে তারা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে চায় ।

প্রশ্ন হল, যদি ধর্মনিরপেক্ষতা কায়েম করাই উদ্দেশ্য হয়, তাহলে ইসরাইল থেকে পৃথক হয়ে খুব একটা লাভ হবে না । আলোচনা করলে ইসরাইল ফিলিস্তি নীদের জন্য ধর্মনিরপেক্ষ শাসন ব্যবস্থা কায়েম করবে। সেক্ষেত্রে পৃথক ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সত্যিকার প্রয়োজন থাকে না ।
ইসলামের লালনভূমি ফিলিস্তিনে অবশ্যই ইসলাম কায়েম করতে হবে। কেননা, সেখানেই হযরত ইবরাহীম, ইসহাক, ইয়াকুব, মূসা, হারুন, ইউশা, দাউদ, সুলাইমান, যাকারিয়া এবং ঈসা (আ)-এর আগমন ঘটেছে। সেই জমিনের প্রতিটি বালুকণা ইসলামী আদর্শের বাস্তব স্বাক্ষর। স্বয়ং মহানবী মুহম্মাদ (সা)- এর মে'রাজের কারণে যে বাইতুল মাকদিস ধন্য হয়েছে, সেই জেরুজালেম ভিত্তিক ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আদর্শ হবে ইসলাম, অন্য কোন মতবাদ নয় । সকল ফিলিস্তিনী এবং বিশ্বের সকল মুসলমানের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া দরকার ।

পক্ষান্তরে ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনীদের প্রতিরোধ আন্দোলন ৪০ বছর যাবত চলছে। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ উক্ত মুক্তি আন্দোলনগুলোর মাধ্যমে জেরুজালেম ও ফিলিস্তিনের মুক্তি আসেনি।

তাই আজ ফিলিস্তিনীদের দ্বীনি অংশের মধ্যে ইসলামের পুনর্জাগরণের অনুভূতি এসেছে এবং ইসলামকে তারা মুক্তি আন্দোলনের আদর্শ হিসেবে ঘোষণা করেছে। হামাস নামক মুক্তি সংস্থা দলীয় আদর্শ হিসেবে ইসলামের কথা ঘোষণা করায় অধিকৃত ফিলিস্তিনের জনগণের মধ্যে সাড়া পড়েছে। হামাসের আহ্বানে ১৯৮৭ সালের ৮ই ডিসেম্বর থেকে গোটা অধিকৃত ফিলিস্তিনে চলছে ইসরাইল বিরোধী গণ-আন্দোলন বা ইন্তেফাদা। এই ইন্তেফাদার কারণে বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনী সমস্যার প্রতি সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মধ্যপ্রাচ্য তথা ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানের জন্য আর্ন্তজাতিক শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। 

ইসলামী সম্মেলন সংস্থার উদ্যোগ

ইসলামী সম্মেলন সংস্থার উদ্যোগে জেরুজালেম কমিটি গঠিত হয়েছে। তারা জেরুজালেমকে রক্ষার বিষয়ে মুসলিম বিশ্বের প্রচেষ্টা ও ভূমিকার সমন্বয় সাধন করছে। মুসলিম রাষ্ট্রগুলো দুর্বল বলে জেরুজালেম কমিটি নিন্দা প্রস্তাব ও দুঃখ প্রকাশ ছাড়া বাস্তবে তেমন কিছুই করতে পারছে না। ফিলিস্তিন ও বাইতুল মাকদিসকে পুনরুদ্ধারের জন্য আপাততঃ যে সকল চেষ্টা চলছে সেগুলো হচ্ছে নিম্নরূপঃ

ফিলিস্তিনী ইন্তেফাদা বা গণ-আন্দোলন

ফিলিস্তিনী মুসলমানগণ হানাদার ইহুদীদের বিরুদ্ধে জোর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। তারা গোটা অধিকৃত ফিলিস্তিনে, ফিলিস্তিনী গণ-জাগরণ বা ইন্তেফাদা গড়ে তুলেছে। ইহুদীদের প্রতি পাথর নিক্ষেপ করা থেকে শুরু করে বোমা নিক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু শত্রুর কঠোর নির্যাতন ও প্রতিরোধের মুখে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনী জনগণ সামরিক সাফল্য লাভ করতে পারছে না। উল্লেখ্য যে, ৫০ লাখ ফিলিস্তিনী মুসলিম নাগরিকের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ হচ্ছে অধিকৃত ফিলিস্তিনে। আর অবশিষ্টরা ফিলিস্তিনের বাইরে বিভিন্ন শরণার্থী শিবির ও দেশে বাস করছে।

আমেরিকা ও জাতিসংঘের একচোখা নীতিকে উপেক্ষা করতে হবে

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ইহুদীদের প্রভাবান্বিত। কেননা, এর সদস্যদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েট ইউনিয়ন বৃটেন এবং ফ্রান্স নির্লজ্জভাবে ও প্রকাশ্যে ইহুদীদের সকল অন্যায় কাজ অব্যাহত রাখার সুযোগ দিয়ে যাচ্ছে।

তবে সর্বাগ্রে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সে ইসরাইলের অত্যাচার, নির্যাতন ও হত্যার বিরুদ্ধে কোন নিন্দা প্রস্তাব পাশ হতে দেয় না। তাতে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে। নিরাপত্তা পরিষদের ২৪২ নং ও ৩৩৮ নং প্রস্তাবে, অধিকৃত ফিলিস্তিন থেকে ইসরাইলী জবরদখল প্রত্যাহারের লক্ষ্যে ইসরাইলী বাহিনী প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তাব বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিরাপত্তা পরিষদের। নিরাপত্তা পরিষদ তা করছে না ।

এমতাবস্থায় নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজস্ব শক্তি-সমন্বিত করে ইসলামের ভূমি উদ্ধারের জন্য অগ্রসর হওয়াই মুসলিমের কর্তব্য। মুসলমানদের আরো করণীয় হল, জেরুজালেম মুক্ত করার জন্য ইহুদীদের বিরুদ্ধে জেহাদের ডাক দেয়া। জেহাদ ছাড় অন্য কোন উপায়ে মসজিদে আকসাকে মুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। গত ৪০ বছর যাবত বিভিন্ন উপায়ে বহু চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু কোন ফলোদয় হয়নি। তাই আজ মুসলিম দেশ সমূহের সরকারগুলোর উচিত, ওলামায়ে কেরাম এবং ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে জেহাদের কর্মসূচী হাতে নেয়া ।

এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সা) এর একটি ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। তিনি বলেছেন, এমন একদিন আসবে যখন ইহুদীদেরকে পাইকারীভাবে হত্যা করা হবে। এমনকি গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ইহুদীকে গাছ দেখিয়ে দিয়ে বলবে, তাকে হত্যা কর।'


তথ্যসূত্রঃ
৩৮. দৈনিক আল-মদীনাহ, জেদ্দা- ২৫ মে, ১৯৯২।


>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url