হঠাৎ ভালবাসাঃ একটি মোটিভেশনাল স্টোরী


হঠাৎ ভালবাসা


বনের রাজা সিংহ শিয়ালকে বলল: যা আমার জন্য খাবার নিয়ে আয়। শিয়াল রাজার হুকুম পালন করতে পথে নেমে পড়ল।

শিয়াল ঘোড়ার কাছে গিয়ে বলল: ভাইজান কেমন আছেন? শিয়ালের এমন সুন্দর ব্যবহারে ঘোড়া তো অবাক! ঘোড়া চিন্তা করছে, যে শিয়াল খ্যাক খ্যাক করা ছাড়া কোনো কথা বলে না- সে আজ এতো মধুর স্বরে ডাকছে কেন? নিশ্চয়ই কোনো বদ মতলব আছে। 
ঘোড়া শিয়ালের ডাকে সাড়া দেয় না। 

শিয়াল এবার ময়ুরীর কাছে গিয়ে বলে- আপুমনি, আপুমনি কেমন আছো? দেখতে খুবই মিষ্টি  লাগছে তোমাকে। ময়ুরীও  বুঝতে পারে- শিয়ালের মুখে মিষ্টি বচন।  নিশ্চয়ই লক্ষণ ভালো  না। 

ময়ুরীও  সাড়া দেয় না।
শিয়াল এবার গাধার কাছে গিয়ে বলে- বাহ! তোমাকে খুবই হ্যান্ডসাম মনে হচ্ছে। এরকম হ্যান্ডসাম একটা প্রাণী  খেটে খেটে জীবনটা নষ্ট করে দিলো। তোমাকে আর কষ্ট করতে হবেনা। রাজার বয়স হয়ে গেছে। তিনি অবসরে যাবেন। আর তোমাকে রাজা বানাবেন। চলো আমার সাথে সিংহাসনে চলো।

গাধা খুব খুশি হয়। শিয়ালের সাথে সিংহাসনের কাছে আসে।

সিংহাসনে বসা সিংহের কাছে আসা মাত্রই সিংহের এক থাবায় গাধা তার কান দুটো হারালো। 
কিন্তু কোনো রকমে সে পালিয়ে বাঁচল।

শিয়াল গাধার কাছে এসে  বলে: এতো বোকা হলে রাজা হবে কিভাবে? রাজা তোমার মাথায় মুকুট পরাবেন। কিন্তু দুপাশে দুটো কান থাকলে কি রাজমুকুট ঠিকমতো মাথায় বসবে?
তাইতো তোমার কান দুটো তোলে নেয়া হয়েছে। কিছু বুঝনা অবুঝ প্রাণী- এটাকে গ্রুমিং বলে। 

চলো চলো আমার সাথে চলো। দেরি হলে অন্য কেউ আবার রাজা হয়ে যাবে।

গাধা আবার সিংহের কাছে আসে। এবার সিংহের আরেক থাবায় তার লেজখানা খসে পড়ে।
কিন্তু এবারও সে পালিয়ে বাঁচল। শিয়াল যথারীতি গাধার কাছে এসে বলে- আবারও তুমি ভুল করলে! লেজ থাকলে রাজ সিংহাসনে বসবে কিভাবে? তাই তোমার লেজটা খসানো হয়েছে।
অবুঝ প্রাণী  দূরদর্শী চিন্তা করতেই পারোনা। এটা হলো আলট্রা গ্রুমিং। মানে একেবারে ফাইনাল টাচ।

চলো চলো তাড়াতাড়ি সিংহাসনে চলো। গাধা আবারও সিংহাসনে আসে। এবার আর সে বাঁচতে পারে না। 

সিংহের থাবায় তার  ক্ষত বিক্ষত দেহ খানা মাটিতে পড়ে আছে। সিংহের দাঁতে মুখে রক্তের দাগ।

শিয়াল সিংহকে বলে - মহারাজ এতো কষ্ট করে আপনি খাবেন। মাথাটা আমাকে দেন। সুন্দর করে প্লেটে সাজিয়ে দেই। শিয়াল গাধার ব্রেণটুকু খেয়ে মাথার অবশিষ্ট অংশ সিংহকে  দিল।

সিংহ  বলল: এটার ব্রেণ কোথায়?

শিয়াল বলল: মহারাজ, যে বারবার ধোকা খেয়েও আপনার কাছে এসেছে, আপনি কি মনে করেন তার ব্রেণ বলে কিছু আছে?

গাছের ডালের উপর থেকে ময়ুর বলে-
তার ব্রেণ ঠিকই আছে। কিন্তু অতি সহজ সরল হওয়ায় প্রতারকদের বুঝতে পারেনি।

প্যাঁচা তার সন্তানকে গল্পটা বলার পর জিজ্ঞেস করলো- এই ঘটনা থেকে তোমরা  কি শিখলে।

সন্তানরা বলল, শিখলামঃ 
* হঠাৎ করে কেউ যদি বড় আপন হয়ে ওঠে, বুঝতে হবে তার গোপন দূরভিসন্ধি আছে। 
* এটাও শিখলাম- যার যে কাজ তাকে সেটাই করতে হয়। অন্যের কুমন্ত্রণা শুনতে হয়না।
* লোভের ফল কখনো মিষ্টি হয়না।
* সাদাসিদা হওয়া ভালো। কিন্তু বোকা হওয়া ভালো না।
* সবচেয়ে বড় জিনিস যেটা শিখলাম তা হলো- প্রতারকদের একবার বিশ্বাস করা যায়। কিন্তু বারবার বিশ্বাস করা যায় না।

অতি বিশ্বাস করে সে  ঠকেছে। আর নিজের জীবন দিয়ে তার বিশ্বাসের মর্মন্তুদ পরিসমাপ্তি ঘটেছে।

>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url