বহু ইসরাইলি সেনাকে হত্যা, সামরিক যান ও ট্যাঙ্ক ধ্বংসের দাবি করেছে হামাস ও ইসলামি জিহাদ
বহু ইসরাইলি সেনাকে হত্যার দাবি করেছে হামাস ও ইসলামি জিহাদ
ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ও ইসলামি জিহাদ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে বহু ইসরাইলি সেনাকে হত্যা করেছে। হামাসের সামরিক বাহিনী ইজ্জাদ্দিন কাসসাম ব্রিগ্রেড দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে একটিমাত্র হামলায় ১০ ইসরাইলি সেনাকে হত্যা করার কথা ঘোষণা করেছে। এছাড়া আরো বেশ কয়েকটি হামলায় আরো বহু ইসরাইলি সেনা হতাহত হয়েছে।
তবে ইহুদিবাদী ইসরাইল গতকাল (মঙ্গলবার) তাদের সাত সেনার নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। ইসরাইলি সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর দক্ষিণ কমান্ডের প্রধান জেনারেল ইয়ারোন ফিংকেলম্যান বলেছেন, গাজায় গত দুই মাসের মধ্যে মঙ্গলবার সবচেয়ে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে।
ইজ্জাদ্দিন কাসসাম ব্রিগেড বলেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে তাদের যোদ্ধারা গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলি সন্ত্রাসী সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন। ব্রিগেড এক বিবৃতিতে বলেছে, শুধুমাত্র খান ইউনিস শহরে তারা ১০ ইসরাইলি সেনাকে হত্যা ও ২৪টি ইসরাইলি সামরিক যান আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংস করেছেন।
ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনারা গত দু’দিন ধরে খান ইউনিসে ব্যাপকভাবে ট্যাংক মোতায়েন করেছে।
কাসসাম ব্রিগেডের বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, তাদের যোদ্ধারা খান ইউনিসের একটি ভবনে অবস্থান গ্রহণকারী সকল ইসরাইলি সেনাকে হত্যা করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, জনমানব শূন্য ভবনটিতে আগে থেকে বিস্ফোরক বসানো ছিল। দখলদার সেনারা সেখানে প্রবেশ করা মাত্র বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভবনটি ধ্বংস করে দেয়া হয়।
এদিকে, ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের সামরিক বাহিনী আল-কুদস ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু হামজা বলেছেন, তাদের যোদ্ধারা মঙ্গলবার শত্রু সেনাদের বহু ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছেন। টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, খান ইউনিস শহরের পূর্ব অংশে, গাজা সিটিতে এবং আল-কারারা শহরে আল-কুদস যোদ্ধারা ইসরাইলি সন্ত্রাসী সেনাদের অগ্রাভিযান রুখে দিয়েছেন। যোদ্ধাদের হামলায় ‘শত্রু সেনাদের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি’ হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ইহুদিবাদী ইসরাইলি রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি সামরিক কর্মকর্তারা গাজায় ব্যাপক সামরিক অর্জনের দাবি করলেও হামাস নেতাদের বক্তব্য মনে হচ্ছে, তাদের খুব কমই ক্ষতি করতে পেরেছে ইসরাইলি সন্ত্রাসী সেনারা।
হামাসকে ধ্বংস করার বহু যোজন দূরে রয়েছে ইসরাইল
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনারা নতুন একটি ফ্রন্ট খুললেও তারা এখন পর্যন্ত ‘হামাসকে ধ্বংস’ করার সামরিক লক্ষ্য থেকে বহু যোজন দূরে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট।
দৈনিকটি বলেছে, তিনজন ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তার হাস্যকর দাবি অনুযায়ী যদি ধরেও নেয়া হয় হামাসের ৫,০০০ যোদ্ধা নিহত হয়েছে তারপরও ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ সদস্যের এই বাহিনীর বিশাল একটি অংশ এখনও অক্ষত রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইসরাইলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন দৈনিকটি হামাস সম্পর্কে এই বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী এমন সময় দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে নতুন ফ্রন্ট খুলেছে যখন উত্তর গাজার অভিযান শেষ হতে এখনও বহু কিছু বাকি রয়েছে। বিমান হামলা চালিয়ে উত্তরে অবস্থিত গাজা সিটির বেশিরভাগ এলাকা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া সত্ত্বেও ইসরাইলি স্থলবাহিনী এখন পর্যন্ত সেখানে হামাসের শক্ত ঘাঁটিগুলোতে ঢুকতে পারেনি।
ইসরাইলি সেনা মুখপাত্র লে. কর্নেল রিচার্ড হেচ বলেন, “এখনও আমাদের বহু পথ বাকি। আমাদের সময় প্রয়োজন।” তবে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ব্যাপক প্রাণহানির কারণে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তেল আবিবের ওপর আন্তর্জাতিক যে কূটনৈতিক চাপ রয়েছে তাতে ইসরাইলি বাহিনী আর কতটা সময় পাবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট।
যুদ্ধে ইসরাইলের জয় নিয়ে ইমানুয়েল ম্যাকরনের সন্দেহ প্রকাশ
ইসরাইলের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন গত সোমবার এক বক্তব্যে বলেছেন, “ইসরাইলি কর্তৃপক্ষকে আরো স্পষ্ট করে বলতে হবে গাজায় তারা চূড়ান্তভাবে কী লক্ষ্য অর্জন করতে চায়।” তিনি ইহুদিবাদী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, “হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংস করা? হামাসকে ধ্বংস করা যায়-এমন বক্তব্য কি কেউ বিশ্বাস করবে? যদি লক্ষ্য তাই হয় তাহলে এ যুদ্ধ ১০ বছর দীর্ঘায়িত হবে।”
এরইমধ্যে গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় গতকাল পর্যন্ত ১৬,২০০ মানুষ নিহত হয়েছেন যাদের অন্তত ৬,০০০ শিশু।
ইসরাইলি সেনারা এখনও গাজা সিটির এক তৃতীয়াংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি। ওই এক-তৃতীয়াংশেই হামাস যোদ্ধাদের শক্ত অবস্থান রয়েছে বলে মনে করছেন ইসরাইলি সেনা গোয়েন্দা সংস্থার ফিলিস্তিন ডিপার্টমেন্টের সাবেক প্রধান মিশেল মিলষ্টেইন। তার মতে, সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির সময় এই গাজা সিটিরই একটি প্রধান স্কয়ারে মুখোশ পরিহিত হামাস যোদ্ধারা রেড ক্রসের কাছে পণবন্দিদের হস্তান্তর করেছে। এর মাধ্যমে হামাস শুধু পণবন্দি হস্তান্তর করেনি সেইসঙ্গে গাজা সিটিতে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থানের জানান দিয়েছে।
নেতানিয়াহু আমেরিকার কাছে তিনটি জিনিস চায়- অস্ত্র, অস্ত্র এবং অস্ত্র
নেতানিয়াহু বলেছেন হামাসকে পরাজিত করার জন্য আমরা আমেরিকার কাছে তিনটি জিনিস চাই। অস্ত্র, অস্ত্র এবং অস্ত্র।
আজ ২০০ নম্বর যুদ্ধবিমান আমেরিকা থেকে ইসরাইলে পৌঁছেছে।
অন্যদিকে হামাসের কাছে নতুন করে কিছু আসছে না। আগে থেকে যা কিছু মজুদ ছিল তাই দিয়ে চলছে।
হামাসের রকেট হামলা থেকে বাঁচাতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন
ইহুদিবাদী ইসরাইলের কেন্দ্রীয় শহর তেলআবিবের অধিবাসীরা ফিলিস্তিনী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রকেট হামলা থেকে প্রাণে বাঁচতে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন জানিয়েছে। ওই আবেদনে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ বাহিনীর রকেট মোকাবেলায় তাদের জীবন রক্ষার্থে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে জুয়া খেলছেন নেতানিয়াহু
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান বলেছেন, পুরো মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে জুয়া খেলছেন ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গতকাল (মঙ্গলবার) পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের বৈঠকে অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url