যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ইসরাইল সেনারা

সমুদ্রের পানি দিয়ে গাজার টানেলগুলো ভরে দেবে ইসরাইল


ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা হামাসের টানেলগুলো সমুদ্রের পানি দিয়ে ভরে দেয়ার পরিকল্পনা করেছে ইহুদিবাদী ইসরাইল। দখলদারদের দাবি, এসব টানেল ব্যবহার করে হামাসের যোদ্ধারা। ফলে এগুলো ধ্বংস করতে পারলে হামাসকে ধ্বংস করা যাবে। 

এই চক্রান্ত বাস্তবায়নের জন্য গাজা সীমান্তে বেশ বড় আকারের পাঁচটি পাম্প জড়ো করেছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। মার্কিন ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরাইল এ খবর দিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গাজার আল-শাতি শরণার্থীশিবির থেকে মাইলখানেক দূরে এসব পাম্প বসানো হয়েছে। এসব পাম্প ব্যবহার করে প্রতি ঘণ্টায় হাজার হাজার ঘনমিটার পানি টানেলগুলোতে ঢোকানো সম্ভব। পুরো কাজ শেষ করতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল চেষ্টা করলেও ইসরাইলের যুদ্ধ মন্ত্রণালয় কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি। 
ইসরাইলের পক্ষ থেকে গত মাসে এই পরিকল্পনার কথা আমেরিকাকে জানানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল। তবে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কত দূর এগিয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন তারা। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যাপারে ইসরাইল এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।

২০০৭ সাল থেকে গাজা উপত্যকা অবরুদ্ধ রয়েছে। সেখানে পণ্য ও ব্যক্তির প্রবেশ কিংবা সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য ইসরাইলের অনুমতি নিতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইলকে এড়িয়ে এসব টানেলের মাধ্যমে গাজায় পণ্য আনা-নেয়া করা হয়।

সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ইসরাইল সেনারা

ইসরায়েলি সেনা কমান্ডার বলেছেন, তাঁর বাহিনী যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে 'সবচেয়ে তীব্র’ প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছে। এবং গতকালের দিনটি ছিল তাদের জন্য একটি কঠিন পরিস্থিতির দিন।

একজন জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কমান্ডার বলেছেন, গাজায় স্থলযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সেনাবাহিনীর বাহিনী সবচেয়ে ভারী লড়াইয়ে নিযুক্ত রয়েছে।

সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান জেনারেল ইয়ারন ফিঙ্কেলম্যান বলেন, স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে আমরা সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। স্বাধীনতাকামী প্রতিরোধ বাহিনীর তীব্র আক্রমণে নাজেহাল হয়ে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সেনারা চরমভাবে বিপর্যস্ত।

এটি এসেছে যখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীও বলেছে যে তাদের সৈন্যরা দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের ভিতরে স্থল যুদ্ধে নিযুক্ত ছিল।

প্রবাসে অবস্থান করা হামাস নেতাদের হত্যা করা হবে

ইসরাইলের কুখ্যাত অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারের একটি রেকর্ড করা বক্তব্য প্রচারিত হয়। ওই বক্তব্যে বার বলেন, লেবানন, তুরস্ক ও কাতারের মতো দেশগুলোতে যেসব হামাস নেতা অবস্থান করছেন তাদেরকে হত্যা করা হবে। তিনি বলেন, বছরের পর বছর সময় লাগলেও এ কাজ করবে তেল আবিব। 

ইসরাইল-বিরোধী যুদ্ধে বহির্বিশ্বের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে হামাসের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা গাজা উপত্যকার বাইরে অবস্থান করছেন। ৭ অক্টোবরের হামলার বহু আগে থেকে হামাস এই নীতি অনুসরণ করে আসছিল।

হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়ার মূল দপ্তর কাতারে। তবে তুরস্কেও হামাসের দপ্তর রয়েছে এবং হানিয়ে গত দুই মাসে কয়েকবার তুরস্ক সফর করেছেন। কাতারে হানিয়ার দপ্তর অবস্থিত হওয়ায় দেশটির পক্ষে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করার কাজ সহজ হয়েছে।

প্রবাসী হামাস নেতাদের হত্যা করলে কঠোর জবাব দেবে তুরস্ক

গাজা উপত্যকার বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী হামাস নেতাদের হত্যা করা হলে ইসরাইলকে তুরস্কের কঠোর পদক্ষেপের সম্মুখীন হতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আঙ্কারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুরস্কের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরাইলকে এই বলে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, প্রবাসী হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হলে তেল আবিবকে চড়া মূল্য দিতে হবে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান সাম্প্রতিক সময়ে গাজা উপত্যকার ওপর ইসরাইলের পাশবিক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন যদিও তেল আবিবের সঙ্গে আঙ্কারার পূর্ণ কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বহাল রয়েছে।

>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url