ইয়েমেনে ইঙ্গ-মার্কিন হামলা ও গাজায় ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের সকল খবরাখবর


ইয়েমেনে ইঙ্গ-মার্কিন হামলা আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াবে: চীন


জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুন বলেছেন, ইয়েমেনের ওপর আমেরিকা এবং ব্রিটেনের সেনারা যে হামলা চালাচ্ছে তাতে অবধারিতভাবে আঞ্চলিক উত্তেজনা বেড়ে যাবে। এই হামলার মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কেও তিনি সতর্ক করেন।

গতকাল (শুক্রবার) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এসব কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। এর আগের দিন রাতে আমেরিকা ও ব্রিটিশ বাহিনী ইয়েমেনের ওপর টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর ইসরাইল যে বর্বর আগ্রাসন ও গণহত্যা চালাচ্ছে তার প্রতিবাদে ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলন সমর্থিত সামরিক বাহিনী লোহিত সাগর ও বাব আল-মান্দেব প্রণালীতে ইসরাইলের মালিকানাধীন কিংবা ইসরাইল অভিমুখী জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে। এই অজুহাতে আমেরিকা এবং ব্রিটেন ইয়েমেনের ওপর হামলা চালিয়েছে।

হামলার বিষয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, “আমরা সব পক্ষকে জাতিসংঘের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইন কার্যকরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানাই। একই সাথে তাদের লোহিত সাগরে এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার প্রচেষ্টা চালানো উচিত।”

প্রচণ্ড যুদ্ধের মধ্যে গাজার মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা দিতে না পারার কারণে জাতিসংঘের বিরুদ্ধে ইসরাইলের কপট অভিযোগ সম্পর্কেও কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, "ইসরাইলই গাজার ওপর নির্বিচারে বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে এবং মানবিক ত্রাণ প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করেছে।”

২ মার্কিন সেনা নিখোঁজ


সোমালিয়া উপকূলের কাছাকাছি এলাকা থেকে দুই মার্কিন মেরিন সেনা নিখোঁজ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড বা সেন্টকম এ তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ডের বিবৃতি তুলে ধরে গণমাধ্যম 'ইউএসএনআই নিউজ' জানিয়েছে, সোমালিয়া উপকূলে সাগরে অবস্থানকালে মার্কিন নৌবাহিনীর দুই সেনা হারিয়ে গেছে। এ বিষয়ে  অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চলছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তারা নিখোঁজ হলেও শুক্রবার বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে। 

নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও মেরিন সেনারা কোন জাহাজে ছিলেন বা তাদের নাম কী তা প্রকাশ করেনি সেন্টকম। তবে এটুকু বলা হয়েছে যে, নিখোঁজ মেরিন সেনারা ৫ম নৌবহরে মোতায়েন ছিল।

মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড বলছে, তল্লাশি চালানোর কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিখোঁজ দুই মেরিন সেনা সম্পর্কে আর কোনো তথ্য দেওয়া হবে না।

গত ১৭ অক্টোবর থেকে ইয়েমেনের প্রতিরোধ সংগঠন হুথি আনসারুল্লাহ সমর্থিত সেনাবাহিনী দখলদার ইসরাইল অভিমুখী জাহাজগুলো আটকে দেওয়ার পদক্ষেপ নেয়ার পর থেকেই লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে সামরিক জাহাজের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসবাদী মার্কিন সামরিক বাহিনী।

ইয়েমেন ইঙ্গ-মার্কিন হামলা প্রতিরোধ করেছে


ইয়েমেনে আগ্রাসন চালানোর জন্য আমেরিকা ও ব্রিটেনের তীব্র সমালোচনা করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। তিনি বলেছেন, ওই দুই দেশ লোহিত সাগরকে ‘রক্তের সাগরে’ পরিণত করতে চায়।


এরদোগান শুক্রবার ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের বলেন, ইঙ্গো-মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ শক্তি প্রয়োগ করেছে।  তিনি গাজা উপত্যকায় একই ধরনের শক্তি প্রয়োগের জন্য ইহুদিবাদী ইসরাইলকে অভিযুক্ত করেন।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, শুক্রবার ভোররাতে যে হামলা হয়েছে তার বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ইয়েমেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে। এরদোগান বলেন, “আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর পেয়েছি যে, হুথিরা আত্মরক্ষা করার জন্য অত্যন্ত সফল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। তারা আমেরিকা ও ব্রিটেন উভয়ের হামলা সাফল্যের সঙ্গে প্রতিহত করেছে।”

এর আগে শুক্রবার ভোররাতে যুদ্ধবিমান, রণতরী ও সাবমেরিন থেকে ইয়েমেনের বিভিন্ন স্থানে একযোগে হামলা চালায় মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী।

গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিক গণহত্যার জবাবে ইয়েমেনের সেনাবাহিনী ইসরাইলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে যে হামলা চালিয়ে আসছিল তার জবাব দিতে আমেরিকা ও ব্রিটেন এ হামলা চালিয়েছে।  হুথি কর্মকর্তা আব্দুল কাদের আল-মোর্তজা এক্স পোস্টে জানিয়েছেন, “ইঙ্গো-মার্কন-ইহুদিবাদী চক্র ইয়েমেনের রাজধানী সানা, হুদায়দা, সা’দা ও ধামার শহরে হামলা চালিয়েছে।”

হুথি নেতারা বলেছেন, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলগামী ও ইসরাইলি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক জাহাজগুলো হামলা চলতে থাকবে। এসব নেতা তাদের বিরুদ্ধে আমেরিকার নেতৃত্বে গঠিত টাস্কফোর্স প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, আমেরিকার সম্ভাব্য যেকোনো হামলার জবাব দেয়া হবে।

ইসরাইল নিজের ‘রক্তপিপাসু’ চরিত্র প্রকাশ করছে


ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজা উপত্যকায় প্রায় ১০০ দিন ধরে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ চালিয়েও কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। তিনি আরো বলেছেন, দখলদার সরকার এখন পর্যন্ত বিশ্ববাসীর সামনে শুধু তার ‘রক্তপিপাসু ও ঘাতক’ চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে মাত্র।



কাতারের রাজধানী দোহায় গতকাল (মঙ্গলবার) ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্সের এক সম্মেলনে দেয়া বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন। হানিয়া বলেন, গাজার জনগণের দৃঢ় মনোবলের কারণে ইসরাইল তার ঘোষিত একটি লক্ষ্যও অর্জন করতে পারেনি।

হামাসের পলিটব্যুরো প্রধান বলেন, ইহুদিবাদীরা হামাসকে ধ্বংস করা, তাদের পণবন্দিদের মুক্ত করা এবং গাজাবাসীকে স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুত করার ঘোষণা দিয়ে আগ্রাসন শুরু করেছিল। তিনি বলেন, “আমি আপনাদেরকে এই বলে আশ্বস্ত করতে পারি যে, ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ও ব্যাপক গণহত্যা চালানো সত্ত্বেও এসব লক্ষ্যের একটিও অর্জন করতে পারেনি ইসরাইল।”

হামাস প্রধান আরো বলেন, প্রতিরোধ আন্দোলনকে নির্মূল করা সম্ভব নয় কারণ, এটি যে শুধু ফিলিস্তিনে বিরাজ করছে তাই নয় বরং বহির্বিশ্বেও এর অস্তিত্ব রয়েছে এবং গোটা মুসলিম উম্মাহ ও স্বাধীনতাকামী প্রতিটি মানুষের অন্তরে প্রতিরোধ ফ্রন্ট জাগরুক রয়েছে।

ইসমাইল হানিয়া বলেন, প্রায় ১০০ দিন ধরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েও ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজা থেকে তাদের একজন পণবন্দিকেও জীবিত উদ্ধার করতে পারেনি। তিনি প্রত্যয় জানিয়ে বলেন, এসব পণবন্দিকে জীবিত উদ্ধারের একমাত্র উপায় ইসরাইলি কারাগারে আটক সকল ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়া।  গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধারা বহুদিন ধরে দখলদার শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে বলেও তিনি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ও ব্রিটিশ ঘাঁটিগুলোতে হামলা করবে ইয়েমেন


ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত সেনা অবস্থানগুলোর ওপর ইঙ্গো-মার্কিন হামলার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী। ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর নৈতিক দিকনির্দেশনা বিভাগের উপ প্রধান আব্দুল্লাহ বিন আমের বলেছেন, "আমাদের অবস্থানগুলোতে আকস্মিক হামলা চালানো হয়েছে এবং আমরা এর জবাব দিতে দ্বিধা করব না।



তিনি আজ (শুক্রবার) সকালে আল-জাজিরা নিউজ চ্যানেলকে বলেন, “আত্মরক্ষা করার মতো সামর্থ্য ও বৈধতা আমাদের রয়েছে। লোহিত সাগরকে সামরিকীকরণের দায় ওয়াশিংটন ও লন্ডনকেই নিতে হবে।”

আজ ভোররাতে চালানো ইঙ্গো-মার্কিন হামলায় রাজধানী সানা ও হুদায়দা বন্দরের নিকটবর্তী সামরিক অবস্থানগুলোকে টার্গেট করা হয়। আমের বলেন, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত লোহিত সাগরে আমাদের অভিযান চলবে।

এদিকে হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলনের পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য মোহাম্মাদ আল-বুখাইতি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ওয়াশিংটন ও লন্ডন যদি যুদ্ধের বিস্তার ঘটাতে চায় তাহলে আমরা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের ঘাঁটিগুলোতে হামলা করব। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আল্লাহর ইচ্ছায় এ যুদ্ধে ইয়েমেন বিজয়ী হবে। যারা ফিলিস্তিনে আমাদের ভাইদের সমর্থন জানাতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের ছাড়া আমাদের আর কাউকে ভয় নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ইয়েমেনের এই হুথি নেতা বলেন, আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার লক্ষ্যে নিজেদের উৎসর্গ করেছি। আমরা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ যে, এখন আমরা আরব ও মুসলিম বিশ্বের শত্রুদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়েছি।

ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে ভুল করেছে আমেরিকা, বলেছে সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা


ইয়েমেনে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন উপ রাষ্ট্রদূত নাবিল খুরি বলেছেন, ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে ‘মারাত্মক ভুল’ করেছে ওয়াশিংটন। তিনি এ হামলাকে ‘মার্কিন কূটনীতির ব্যর্থতা’ বলেও অভিহিত করেছেন।  

খুরি কাতার-ভিত্তিক নিউজ চ্যানেল আল-জাজিরাকে বলেছেন, ইয়েমেনের হুথি অবস্থানগুলোতে আমেরিকা ও ব্রিটেন বোমাবর্ষণ করার ফলে বাইডেন প্রশাসন কার্যকরভাবে ‘সরাসরি গাজা যুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়ল।  তিনি বলেন, ‘এখান থেকে যুদ্ধ নতুন করে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমি মনে করছি, এটি একটি মারাত্মক ভুল। হুথিদের থামানোর জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেয়া যেত।’

সাবেক এই মার্কিন কূটনীতিক আরো বলেন, ‘আমেরিকা ও ব্রিটেন ভেবেছে হামলা চালিয়ে হুথিদের দমিয়ে রাখা যাবে। কিন্তু আমার মতে, এখান থেকে বড় আকারের যুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে।’

গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিক গণহত্যার জবাবে ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত সেনাবাহিনী গত কয়েক মাস ধরে লোহিত সাগর ও বাব আল-মান্দাব প্রণালিতে ইসরাইলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছিল।

হুথি নেতারা বলছেন, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলগামী ও ইসরাইলি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক জাহাজগুলো হামলা চলতে থাকবে। এসব নেতা তাদের বিরুদ্ধে আমেরিকার নেতৃত্বে গঠিত টাস্কফোর্স প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, আমেরিকার সম্ভাব্য যেকোনো হামলার জবাব দেয়া হবে।

ইয়েমেনে ইঙ্গো-মার্কিন সামরিক হামলা সম্পর্কে বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়া


ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইয়েমেনে ইঙ্গো-মার্কিন সামরিক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। নাসের কানয়ানি তাদের হামলাকে স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ, ইয়েমেনের সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক বিধিবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করেন।
আমেরিকা এবং ব্রিটেন আজ (শুক্রবার) ভোররাতে ইয়েমেনের উত্তর এবং পশ্চিমের আনসারুল্লাহর অন্তত ১২টি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। ইয়েমেনের প্রতিরোধ ফ্রন্টের ঘোষণা অনুযায়ী সানআ, আল-হুদাইদা, সা'দা এবং জুমার শহরে ওই হামলা হয়েছে।

নাসের কানয়ানি আরও বলেছেন: ফিলিস্তিনি জাতি বিশেষ করে গাজা উপত্যকার অবরুদ্ধ ও নিপীড়িত জনগণের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও ব্রিটেনের পূর্ণ সমর্থনে ইহুদিবাদী ইসরাইলি যুদ্ধাপরাধ চলাকালে ইয়েমেনে ওই সামরিক হামলা চালানো হয়েছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন: এই হামলা এ অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা ছাড়া আর কোন ফল বয়ে আনবে না। ফিলিস্তিনে ইসরাইলি গণহত্যায় মদদ অব্যাহত রেখে আমেরিকা এবং ব্রিটেন চাচ্ছে বিশ্বদৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে। সে কারণেই ইয়েমেনে এই হামলা চালিয়েছে তারা।

ওই নির্বিচার হামলার পুনরাবৃত্তি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কানয়ানি। সে কারণে তিনি বিশ্ব সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুদ্ধ বিস্তার বন্ধে যেন দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখে।

এরইমধ্যে রাশিয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি ইয়েমেনে ইঙ্গো-মার্কিন হামলা বিষয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বানের দাবি জানিয়েছেন।

ইয়েমেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে: রিয়াদ উদ্বেগের সঙ্গে ওই সামরিক অভিযানের প্রতি নজর রাখছে। একইসঙ্গে লোহিত সাগরে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখাসহ উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ফিলিস্তিনের হামাস ইয়েমেনে ইঙ্গো-মার্কিন বিমান হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলেছে এই হামলা থেকে প্রমাণ হয় গাজায় ইসরাইলি জাতিগত শুদ্ধি অভিযানে আমেরিকার পরিপূর্ণ অংশগ্রহণ ছিল।

ইসরাইলের নিন্দায় জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি


ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনাদের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দখলদার সরকারের নিন্দা জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রান্সিস্কা আলবানিজ। নতুন প্রকাশিত একটি বইয়ে তিনি এই নিন্দাবাদ জানান।



বৃহস্পতিবার ফ্রান্সিস্কা আলবানিজ ইতালির রাজধানীর রোমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধির কার্যালয়ে এই বই উপস্থাপন করেন। তিনি বইটির ইংরেজি নাম দিয়েছেন “আই অ্যাকিউজ বা আমি অভিযুক্ত করছি”।

বইয়ে ফ্রান্সিস্কা ফিলিস্তিনের ওপর ইহুদিবাদী ইসরাইলের ৭০ বছরের নির্যাতন, নিপীড়ন এবং হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। এছাড়া, গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের চলমান গণহত্যার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কথা বলেছেন।

ফ্রান্সিস্কা তার বইয়ে লিখেছেন, “জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধিদের প্রায় সবাই, জাতিসংঘের নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ ও আইন বিশেষজ্ঞ- যারা প্রথমে নিন্দা করেছেন, তারপর গণহত্যার ঝুঁকি এবং গণহত্যার গুরুতর ঝুঁকি নিয়ে কথা বলেছেন এবং তারপর এক মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় হামলা চলছে এবং প্রকৃত সত্য হচ্ছে- সেখানে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে।”

২০২২ সালে ফ্রান্সিস্কা আলবানিজ ফিলিস্তিনের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পান। তখন থেকেই মূলধারার বেশিরভাগ গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক ইহুদিবাদী সম্প্রদায় তাকে বিশেষ নজরদারির মধ্যে রেখেছিল। এছাড়া ইহুদিবাদী ইসরাইল তাকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি চরম পক্ষপাতপূর্ণ ব্যক্তি বলে অভিযুক্ত করেছে।

💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url