গাজা যুদ্ধে ইসরাইলের পরাজয়ের সূচনা


ইরাকে মার্কিন হামলার জের

আমেরিকার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার


ইরাকের প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর জোট পপুলার মোবিলাইজেশন ইউনিট বা হাশদ আশ-শাবির যোদ্ধারা অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেছেন, যেসব জায়গায় মার্কিন সেনাদের ঘাঁটি রয়েছে এবং যেখানে তারা প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য কথিত ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে সেসব জায়গায় তাদের হামলা অব্যাহত থাকবে।

প্রতিরোধকামী জোট সুস্পষ্ট করে বলছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসনের প্রতি আমেরিকা সমর্থন দেয়া বন্ধ না করা পর্যন্ত মার্কিন অবস্থানে হামলা চলতেই থাকবে।

পপুলার মোবিলাইজেশন ইউনিটের অন্যতম শরীক সংগঠন কাতাইব সাঈদ আশ-শুহাদার মহাসচিব আবু আলা আল-ওয়ালাই বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, তাদের অবস্থানের ওপর মার্কিন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তার সহযোদ্ধারা অপারেশনের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করেছে।

তিনি বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত গাজার ওপর থেকে অন্যায় অবরোধ না উঠে যাবে এবং চলমান বর্বর গণহত্যা বন্ধ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের হামলা চলবে।”

এদিকে, কাতাইব হিজবুল্লাহর মুখপাত্র জাফর আল-হোসাইনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “গাজায় আমাদের ভাইয়েরা বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত ইরাকের প্রতিরোধকমী যোদ্ধারা হামলা অব্যাহত রাখবে।”

তিনি বলেন, “ইসরাইলের যুদ্ধ-যন্ত্রগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের হামলা চলতেই থাকবে। এটি স্বাধীনতাকামী জনগণের কাছে একটি গৌরবময় প্রতিশ্রুতি।”

মর্কিন হামলা প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এক বিবৃতিতে বলেন, মার্কিন সামরিক বাহিনী গতকাল ইরাকে বিমান হামলা চালিয়েছে। কাতাইব হিজবুল্লাহ এবং ইরাকের অন্য প্রতিরোধকামী সংগঠন ব্যবহার করে -এমন তিনটি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় বলে তিনি জানান।


ইসরাইলের প্রতি মার্কিন সমর্থনের প্রতিবাদে

ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে আবারো হামলা


ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলীয় আল-আনবার প্রদেশে মার্কিন নিয়ন্ত্রণাধীন আইন আল-আসাদ সামরিক ঘাঁটিতে নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইরাকের ইসলামী প্রতিরোধ সংগঠনের যোদ্ধারা। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইল যে বর্বর আগ্রাসন, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চালাচ্ছে তার প্রতি আমেরিকার অকুন্ঠ সমর্থনের প্রতিবাদে মার্কিন সেনাদের ওপর এই হামলা হলো।

ইরাকের ইসলামী প্রতিরোধ যোদ্ধারা ড্রোন দিয়ে ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। এর দুই দিন আগে প্রতিরোধ যোদ্ধারা একই ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাদের ওপর অন্তত ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছিল। ওই হামলায় আইন আল-আসাদ ঘাঁটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং বহু মার্কিন সেনা ব্রেইন ইনজুরির শিকার হয়েছে। অনেক সেনা এতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ট্রমাটাইজড হয়েছেন বলে খবর বেরিয়েছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ড বা সেন্টকম শনিবার সন্ধ্যায় হামলার কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছিল যে, ব্রেইন ইনজুরির শিকার সেনাদের আহত হওয়ার মাত্রা মূল্যায়ন করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে, ইরাকের মুসলিম প্রতিরোধ আন্দোলনের যোদ্ধারা গতকাল আরো জানিয়েছে যে, সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দেইর আজ-জাওয়ার প্রদেশের কনিকো এলাকায় মোতায়েন মার্কিন সেনাদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে। ইরাকি প্রতিরোধ যোদ্ধারা জানিয়েছে, গতকাল দুপুরের মধ্যে কোনিকো ঘাঁটিতে দুই দফা হামলা চালানো হয়।

ইরাকের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলনে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে অংশ নেয়া কয়েকটি সংগঠন রয়েছে যাদেরকে সরকার দেশের বৈধ সামরিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত জোটকে পপুলার মবিলাইজেশন ইউনিট বা হাশদ আশ শাবি বলা হয়। এই জোট ইরাক এবং মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির বিরুদ্ধে এখন বিশেষভাবে সক্রিয় রয়েছে।


ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য

আমেরিকা না থাকলে নেতানিয়াহু ১০ মিনিটও টিকতে পারবে না


ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আমেরিকা সমর্থন দেয়া বন্ধ করলে ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ১০ মিনিটও টিকতে পারবে না।

একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইল যে বর্বর হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে তার প্রতি আমেরিকার অকুণ্ঠ সমর্থনের কারণে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কা দিন দিন বেড়ে চলেছে।

মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এবিসি নিউজকে গতকাল (মঙ্গলবার) দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আমির আবদুল্লাহিয়ান। গাজায় যখন ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্বর ও রক্তক্ষয়ী আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে এবং তা অবসানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না তখন তিনি মার্কিন গণমাধ্যমের কাছে এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করলেন।

আবদুল্লাহিয়ান বলেন, এরইমধ্যে যুদ্ধের ক্ষেত্র বিস্তৃত হয়েছে যার অর্থ হচ্ছে এই যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে বাইরের অঞ্চলেও বিস্তৃত হতে পারে।

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমেরিকা যদি আজকে ইসরাইলকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামসহ রাজনৈতিক এবং গণমাধ্যমের সমর্থন দেয়া বন্ধ করে তাহলে আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে পারি যে, নেতানিয়াহু দশ মিনিট টিকতে পারবে না। ফলে তেল আবিব থেকে সংকট মেটার আগে ওয়াশিংটন থেকে এই সমস্যার সমাধান হতে হবে।”

আমির আব্দুল্লাহিয়ান আরো বলেন, “এই যুদ্ধ থেকে কেউ লাভবান হবে না, আমরা কখনো যুদ্ধকে সমাধান মনে করি না বরং ইরান পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সব সময় শান্তি চায়।”

ইরানি কমান্ডারের হুঁশিয়ারি

ইরানের যুদ্ধজাহাজ সামরিক প্রস্তুতির বার্তা


ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র নৌ শাখার কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী রেজা তাংসিরি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আইআরজিসি’র নৌ শাখায় সম্প্রতি আবু মাহদি আল-মুহান্দিস নামে যে যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হয়েছে সেটি শত্রু দেশগুলোর জন্য ইরানের সামরিক প্রস্তুতির বার্তা বহন করছে। ইরানের আরবি ভাষার স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আল-আলমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গতকাল (মঙ্গলবার) এসব কথা বলেন তিনি।

চলতি মাসের প্রথম দিকে জাহাজটি আইআরজিসি’র নৌ শাখায় যুক্ত হয়েছে যাতে অত্যন্ত উন্নতমানের রাডার ফাঁকি দেয়ার প্রযুক্তি রয়েছে। এছাড়া ২০০০ নটিক্যাল মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে এই জাহাজটিকে কেউ সনাক্ত করতে পারবে না। জাহাজটি একটানা ১৪ দিন চলতে পারে।

রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী রেজা তাংসিরি বলেন, আবু মাহদি মুহান্দিস জাহাজটি পারস্য উপসাগরীয় মুসলিম দেশগুলোর জন্য শান্তি ও বন্ধুত্বের বার্তা বহন করছে কিন্তু চক্রান্তকারীরা যদি কোনো সমস্যা তৈরি করতে চায় তাহলে এই জাহাজ তাদের জন্য ইরানের সামরিক প্রস্তুতির বার্তা বহন করছে।

আইআরজিসি’র এ সামরিক কমান্ডার বলেন, “আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত এবং সব সময় প্রস্তুত থাকবো। একইভাবে এই অঞ্চলে আমরা যে সমস্ত সামরিক মহড়া পরিচালনা করছি তার মধ্যদিয়ে আমাদের প্রস্তুতির ইঙ্গিতই প্রকাশ পাচ্ছে।”

সাক্ষাৎকারে আলী রেজা তাংসিরি আরো বলেন, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল ইরান ও প্রতিবেশী দেশগুলোর নিজস্ব এলাকা। বিদেশিদের এখানে সামরিক উপস্থিতির মাধ্যমে সংকট সৃষ্টি করতে চায় এবং তারা অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রাখতে চায়। সে কারণে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে বিদেশি সামরিক উপস্থিতির কোনো যুক্তি নেই বরং বিদেশীদেরকে এই অঞ্চলে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।

যুদ্ধের ১০৯-তম দিনে ইসরাইলের ৩৮ সেনা নিহত

চরম হতাশায় ইসরাইলের শাসক গোষ্ঠী


গাজা উপত্যকার আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরের দু’টি বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একসঙ্গে ৩৮ ইসরাইলি সেনাকে হতাহত করেছে প্রতিরোধাকামী যোদ্ধারা। তাই যুদ্ধের ১০৯তম দিনটি ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনীর জন্য সবচেয়ে কঠিন দিন হিসেবে অতিক্রম করেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

গাজা উপত্যকার কেন্দ্রে অবস্থিত আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর সমন্বিত অভিযানের ফলে ২১ জন ইহুদিবাদী সৈন্য নিহত হয়। গাজা উপত্যকায় স্থল হামলা শুরুর পর এক দিনে এত বেশি সংখ্যক ইসরাইলি সৈন্য আর নিহত হয়নি। এছাড়াও, ইসরাইলি সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে যে গত ২৪ ঘন্টায় গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর আরও ১৭ সৈন্য আহত হয়েছে। 

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগেরি বলেছেন, মধ্য গাজায় ওইসব সৈন্য নিহত হয়। হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলি সৈন্যদের অবস্থানরত দুটি দোতলা ভবনের মাঝখানে থাকা একটি ট্যাংকে রকেট-চালিত গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায়। ইসরাইলি সৈন্যরা তখন ভবন দুটি গুঁড়িয়ে দিতে সেখানে মাইন বসাচ্ছিল। ঠিক ওই সময়ই হামাসের গ্রেনেডটি আঘাত হানে। এতে সেখানে থাকা মাইনগুলোও বিস্ফোরিত হয়। আর দ্রুত ভবন দুটি ধসে পড়ে। এতে ইসরাইলি সৈন্যরা দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারায়। ঘটনাটি ঘটে মধ্য গাজায় সোমবার বিকেল ৪টার দিকে। এই হামলায় ১৯ ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়। আরেকটি হামলায় ইসরাইলের একটি ট্যাংককে টার্গেট করে হামাস।

"কঠিন, বেদনাদায়ক এবং অসহনীয় সকাল", "যুদ্ধ শুরুর পরে সবচেয়ে কঠিন দিন", "বেদনাদায়ক সকাল" এবং "আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে"; গতকালের ভয়াবহ ঘটনা সম্পর্কে ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীর নেতারা যে বর্ণনাগুলো প্রকাশ করেছেন সেগুলো তারই অংশ। ইসরাইলি সেনাবাহিনী গতকালকে (যুদ্ধের ১০৯তম দিন) গাজা যুদ্ধের সবচেয়ে কঠিন দিন বলে অভিহিত করেছে। এছাড়া গতকাল গাজা যুদ্ধে সবচেয়ে কঠিন দিন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, চলমান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে কঠিন দিন ছিল গতকাল। 

গাজায়  একদিনে নিহত ৩৮ ইসরাইলি সেনা


এই ইস্যুটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল গাজা যুদ্ধের ১০৯তম দিনটি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জন্য সবচেয়ে ভয়ানক দিন ছিল। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা এর আগে একদিনে কয়েক ডজন সৈন্যকে হত্যা করলেও ইসরাইলি সেনাবাহিনী তা স্বীকার করেনি। সেনাবাহিনী আগের দিনের হতাহতের কথা স্বীকার করেছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তর ও কেন্দ্রে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরে প্রতিরোধ অভিযান চালানো হয়। ইসরাইলি সেনাবাহিনী ভেবেছিল যে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের কাছ থেকে তারা তেমন মারাত্মক প্রতিরোধের মুখোমুখি হবে না, কিন্তু আল-মাগাজি অভিযান এই ধারণাটিকে ভুল প্রমাণ করেছে এবং আবারও অধিকৃত জেরুজালেম সরকারের গোয়েন্দা ব্যর্থতা সবার সামনে এসেছে ।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরে অভিযান অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে বেশি প্রমাণ করেছে যে গাজা ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর জন্য একটি চোরাবালিতে পরিণত হচ্ছে। গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধের চতুর্থ মাস শেষ হতে চলেছে। তবুও, ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী তার সামরিক লক্ষ্য অর্জনে সফল হয়নি, অর্থাৎ বন্দীদের মুক্তি এবং হামাসকে ধ্বংস করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় নি। আল-মাগাজি অভিযান প্রমাণ করেছে যে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ অদৃশ্যৃ তো হয় নিই বরং ১০৯ দিন পর প্রতিরোধকামী যোদ্ধারা এখনো ইসরাইলি সেনাবাহিনীর উপর প্রচণ্ড আঘাত হানতে সক্ষম। তাই ইসরাইল যদি গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যায় তবে তাদেরকে আরও ভয়াবহ প্রতিঘাতের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। 

রাজনৈতিক অঙ্গনে নেতানিয়াহু যখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তখন সামরিক ক্ষেত্রে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর উপর এই আঘাাত এসেছে। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার পাশাপাশি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও তার পদত্যাগের দাবি বেড়েছে। যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সদস্য আইজেনকোট যুদ্ধ থামানোর মূল্যে বন্দি বিনিময়ের দাবি করেছেন। তবে যুদ্ধবিরতি বিষয়ে সর্বশেষ খবরে জানা গেছে যে হামাস ইসরাইলের সব বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে দুই মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। হামাস গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও অপরাধের সম্পূর্ণ অবসান দাবি করেছে।

মুসলিম দেশগুলোর প্রতি সর্বোচ্চ নেতার আহ্বান

ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ ধমনীগুলো কেটে ফেলুন


ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ ধমনীগুলো কেটে ফেলার জন্য মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ ধমনী বলতে তিনি ইসরাইলের সাথে মুসলিম দেশগুলোর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের কথা বলেছেন।

আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী আজ (মঙ্গলবার) তেহরান প্রদেশের ২৪,০০০ শহীদের কংগ্রেসের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের সাথে বৈঠকের সময় একথা বলেন। 

সর্বোচ্চ নেতা গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসন ও গণহত্যা সম্পর্কে "ভুল" বিবৃতি দেয়ার জন্য মুসলিম কর্মকর্তাদের সমালোচনা করে বলেন, তারা যুদ্ধবিরতির মতো বিষয়গুলো উত্থাপন করে যা তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং কুচক্রী ইহুদিবাদী শত্রুর হাতে রয়েছে। তবে মুসলিম দেশগুলোর কর্মকর্তাদের হাতে যে ইস্যুটি রয়েছে তা হলো ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর অত্যাবশ্যকীয় লাইফলাইন কেটে ফেলার ব্যবস্থা।”

তিনি বলেন, মুসলিম দেশগুলোর উচিত ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং দখলদার সরকারকে কোনভাবে সাহায্য না করা।

গাজা যুদ্ধ প্রসঙ্গে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, অনেক দুঃখ দুর্দশা এবং কষ্ট পেলেও ফিলিস্তিনি জনগণই সেখানে প্রকৃতপক্ষে বিজয়ী। নিশ্চিতভাবে তারা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করবে এবং সেটি খুব বেশি দূরের বিষয় নয়।

দখলদারদের বিপর্যয় তবু বাগাড়ম্বর কমেনি 

হামাসের বিস্ফোরণে দুটি ভবন ধ্বংস, ২১ ইসরাইলি সেনা নিহত


গাজা উপত্যকায় ইহুদবাদী ইসরাইলি জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটেছে। গতকাল (সোমবার) গাজার খান ইউনুস শহরে দুটি ভবনে হামাস যোদ্ধারা বিস্ফোরণ ঘটালে ভবন দুটি ধ্বংস হয় এবং একুশ জন সেনা নিহত হয়েছে। এই ২১ সেনা নিহত হওয়ার পর গাজায় স্থল অভিযান চালাতে গিয়ে ইসরাইলের স্বীকারোক্তি মতে নিহত দখলদার সেনার সংখ্যা ২১৯ এ পৌঁছালো।  গতকাল যেসব সেনা নিহত হয়েছে তার মধ্যে কয়েকজন সার্জেন্ট মেজর পদমর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছে।

ইসরাইলের ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, ওই এলাকায় ইহুদিবাদী সেনারা একটি বাফার জোন প্রতিষ্ঠার চেষ্টার সময় হামাস সেখানে বিস্ফোরণ ঘটায়। বাফার জোন প্রতিষ্ঠার জন্য ওই এলাকায় ইসরাইলের বহু সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল এবং নিরাপত্তা দেয়ার কাজে দায়িত্ব পালনরত একটি ট্যাংকে হামাস যোদ্ধারা আরপিজি দিয়ে হামলা চালালে এই ভবন দুটি ধ্বসে পড়ে।

ইসরাইলের সন্ত্রাসী সেনারা বলেছে, ওই ভবন দুটি ধ্বংস করার জন্য ইসরাইলি সেনারা মাইন পেতে রেখেছিল। হামাস ট্যাংকে গোলা ছোড়ার পরপরই ভবন দুটিতে বিস্ফোরণ ঘটে।

গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে খোদ ইসরাইলের ভেতরে যখন প্রচণ্ড রকমের বিক্ষোভ সমাবেশ হচ্ছে তখন ইসরাইলি সেনাদের জন্য এই বড় ধরনের বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটলো। এতে যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার আরো চাপে পড়লো বলে মনে করা হচ্ছে। তবে উগ্রবাদী এই সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী বেনজাভির দাবি করেছেন, ২১ জন সেনা মৃত্যুর মধ্যদিয়ে একথা পরিষ্কার হয়েছে যে, গাজায় হামলা অব্যাহত রাখা জরুরি।


‘স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ ও ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের শর্তে ছাড় নয়’

২ মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস


দুই মাসের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে গাজায় আটক ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি দেয়ার প্রস্তাব পত্রপাঠ নাকচ করে দিয়েছে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। দখলদার ইসরাইল সরকার প্রস্তাব দিয়েছিল যে, গাজায় দুই মাস আগ্রাসন বন্ধ থাকবে এবং এই সময়ে ইসরাইলি কারাগারে আটক কিছু ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলি পণবন্দিদের ছেড়ে দেবে হামাস।

কিন্তু গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠনটি কঠোর ভাষায় এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অন্যতম মধ্যস্থতাকারী মিশরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে বলেছেন, ওই দুই মাস সময়ের মধ্যে হামাস নেতাদেরকে গাজা ছেড়ে চলে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার যে প্রস্তাব তেল আবিব দিয়েছিল তাও প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। সংগঠনটি বলেছে, পণবন্দিদের মুক্ত করতে হলে ইসরাইলকে গাজা উপত্যকা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করতে হবে এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের ঘরবাড়িতে ফিরে যেতে দিতে হবে।

ইসরাইলের প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারসহ অন্যান্য হামাস নেতাকে গাজা থেকে ভিন্ন কোনো দেশে চলে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হবে। অথচ যুদ্ধের শুরুতে ইসরাইলি যুদ্ধমন্ত্রী বলেছিলেন, সিনওয়ার এখন একজন মৃত ব্যক্তি যিনি টানেলের মধ্যে হেঁটে বেড়াচ্ছেন।  এই বক্তব্যের মাধ্যমে গ্যালান্ট বুঝিয়েছিলেন, সিনওয়ারকে হত্যা করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু সে হুমকির পর ১১০ দিন পেরিয়ে গেলেও সিনওয়ারের অবস্থান এখন শনাক্তই করতে পারে নি তেল আবিব।

হামাস শুরু থেকেই তাদের এক দফা দাবিতে অটল রয়েছে। ইসরাইল যুদ্ধ বন্ধ করে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত পণবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে না।

হামাস ইসরাইলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মিশর খবর দিলেও মধ্যস্থতাকারী অপর দেশ কাতার বলেছে, তারা উভয় পক্ষের সঙ্গে কঠিন আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি এখনও ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে একটি চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী। তবে হামাসের প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি ইহুদিবাদী ইসরাইলি কর্মকর্তারা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানেন না বলে টাইমস অব ইসরাইল দাবি করেছে।

গড়ে প্রতিদিন ৬০ ইসরাইলি সেনা আহত হচ্ছে


ইহুদিবাদী ইসরাইলের গণমাধ্যম স্বীকার করেছে, ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলের সাড়ে চার হাজারের বেশি সেনা আহত হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিনই গড়ে ৬০ জন ইসরাইলি সেনা আহত হচ্ছে।

ইসরাইলের যুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসন বিভাগের নানা পরিসংখ্যান ও ইসরাইলি গণমাধ্যমের খবর বিশ্লেষণ করে আল মায়াদিন টিভি চ্যানেল এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে হিব্রু নিউজ সাইট ‘ওয়াল্লা’ জানিয়েছে, ইসরাইল নানা ভাবে এ পর্যন্ত প্রায় চার হাজার সেনা সদস্য পঙ্গু হওয়ার কথা স্বীকার করেছে।

ঐ সাইটের খবরে আরো বলা হয়েছে, মনোবল হ্রাস হওয়ার ভয়ে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জনসাধারণের কাছে আহতদের সম্পর্কে সকল তথ্য সরবরাহ করে না। তবে পঙ্গু সেনাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্সেস অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান ইদান কালিমানকে উদ্ধৃত করে এই মিডিয়া বলেন, ‘আমি ৩০ বছর ধরে সংস্থায় রয়েছি এবং এত বিপুল সংখ্যক গুরুতর আহত ব্যক্তির মুখোমুখি হইনি। বিচ্ছিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, অন্ধত্ব বা পক্ষাঘাতে আহত অনেকেই আছেন।’

‘দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক সমাধান মেনে নেয়া হবে না’

ইসরাইলকে ধ্বংস করার প্রত্যয় হামাস নেতার


ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলেছে, তাদের চালানো ৭ অক্টোবরের আল-আকসা তুফান অভিযান প্রমাণ করেছে, ‘নদী থেকে সাগর পর্যন্ত’ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড মুক্ত করা এখন আর কোনো স্বপ্ন নয় বরং বাস্তবসম্মত ধারনা। সংগঠনটি ইহুদিবাদী ইসরাইলকে স্বীকৃতি না দিতে নিজের অনমনীয় অবস্থানও পুনর্ব্যক্ত করেছে।

হামাসের সিনিয়র নেতা খালেদ মিশাল কুয়েতের প্রখ্যাত পডকাস্টার আম্মার তাকিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। দখলদার ইসরাইল যখন গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে এবং তেল আবিব মনে করছে এভাবে বর্বরতা চালিয়ে হামাসকে ধ্বংস করে ফেলা যাবে তখন হামাস নেতা প্রকারান্তরে ইসরাইলকে ধ্বংস করার প্রত্যয় জানালেন।

তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে এ বিষয়ে প্রায় পুরোপুরি ঐক্যমত্য রয়েছে যে, জর্দান নদীর পশ্চিম তীর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত পুরো ভূমি ফিলিস্তিনের এবং এ ব্যাপারে ছাড় দেয়া যাবে না। মিশাল যে ভূমির কথা বলেছেন তা জর্দান নদীর পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও গোটা ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত।  হামাস নেতা ইসরাইলের সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সমাধান বিশেষ করে দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনা সুস্পষ্টভাবে নাকচ করে দেন। মিশাল বলেন, ইসরাইল নামক রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেয়া হামাসের ‘কঠোর রেড লাইন’ এবং তা অতিক্রম করা যাবে না।

সাক্ষাৎকারে খালেদ মিশালকে বলা হয়, ৭ অক্টোবরের আগে গাজাবাসীর জীবন অনেক সুখের ছিল। তারা স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছিল এবং স্বাধীনভাবে বাজারে, স্কুলে এবং হাসপাতাল যেতে পারত। কিন্তু এখন সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে এবং গাজাবাসী না খেয়ে মারা যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০০৭ সালে গাজার ওপর ইসরাইল ও মিশর অবরোধ আরোপ করার পর থেকে গাজাবাসী ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। দৃশ্যত, গাজার জনগণ গত ১৭ বছর যাবত ভালো ছিলেন কিন্তু আসলে তারা অবরুদ্ধ অবস্থায় কারাগারের মতো জীবন কাটাচ্ছিলেন। তারা দখলদারিত্বের অধীনে থেকে নিজেদের জীবনমানের উন্নতি পছন্দ করেন না।

হামাসের সাবেক শীর্ষ নেতা মিশাল বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য জানমালের ক্ষতি এবং ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের পক্ষে এসব ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে তারা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে বদ্ধপরিকর যেখানে ফিলিস্তিনি জনগণ সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যত গঠন করতে পারবে।

এর আগে ৭ অক্টোবরের অভিযানের পর এক সাক্ষাৎকারে মিশাল বলেছিলেন, প্রচুর প্রাণ বিসর্জনের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়। তিনি ফরাসি উপনিবেশবাদের হাত থেকে আলজেরিয়ার স্বাধীনতা অর্জনের প্রতি ইঙ্গিত করেছিলেন যেখানকার স্বাধীনতা যুদ্ধে ৬০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ন্যামের প্রতি নামিবিয়ার আহ্বান

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হোন


ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইল যে বর্বর আগ্রাসন চালাচ্ছে তা বন্ধের জন্য জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন বা ন্যামের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নামিবিয়া। গতকাল (মঙ্গলবার) উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে দেয়া বক্তৃতায় এই আহ্বান জানান নামিবিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী নিতুম্ব নন্দি-এনদাইতোয়া।

তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধাপরাধের মামলা দায়ের করেছে তার প্রতি ন্যামের শীর্ষ সম্মেলন থেকে বেশিরভাগ সদস্য দেশ সমর্থন দিয়েছে। এর পাশাপাশি নামিবিয়া, মালদ্বীপ এবং পাকিস্তান এই মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ায় সমর্থন দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে। নন্দী এনদাইতোয়া গত রোববার এই মামলার প্রতি তার দেশের সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছিলেন।

তিনি বলেন, ন্যামের সদস্য দেশের সংখ্যা ১২০টি এবং এর জনসংখ্যাও বিশাল। তারা যদি তারা একসাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয় তবে‌ অনেক কিছু করতে পারে।

গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইল বর্বর আগ্রাসন শুরু করেছে এবং এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ৫০০  ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। এছাড়া, আহত হয়েছেন ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। ইসরাইলের এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সারা বিশ্ব সোচ্চার হলেও আমেরিকা, ব্রিটেন ও কানাডাসহ কিছু পশ্চিমা দেশ ইসরাইলকে অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url