আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আল জ্বিন’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা আল জ্বিন | Surah Al-Jinn | الجنّ


সূরা আল জ্বিন’এর বাংলা অনুবাদ

সূরা আল জ্বিন, মক্কায় অবতীর্ণ আয়াত ২৮, রুকু ২

সূরা আল জ্বিন



রহমান রহীম আল্লাহ তা'আলার নামে

১. (হে নবী) তুমি বলো, আমার কাছে এ মর্মে ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, জ্বিনদের একটি দল (কোরআন) শুনেছে, অতঃপর তারা (নিজেদের লোকদের কাছে গিয়ে) বলেছে, আমরা এক বিস্ময়কর কোরআন শুনে এসেছি,

২. যা (তার শ্রোতাকে) সঠিক ( ও নির্ভুল) পথ প্রদর্শন করে, তাই আমরা তার ওপর ঈমান এনেছি এবং আমরা আর কখনো আমাদের মালিকের সাথে কাউকে শরীক করবো না,

৩. আর (আমরা বিশ্বাস করি,) আমাদের মালিকের মানমর্যাদা সকল কিছুর ঊর্ধ্বে, তিনি কাউকে স্ত্রী কিংবা পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেননি,

৪. (আমরা আরো জানি,) আমাদের (কতিপয় ) নির্বোধ আল্লাহ তা'আলার ওপর অসত্য ও বাড়াবাড়িমূলক কথাবার্তা আরোপ করে,

৫. (অথচ) আমরা মনে করেছিলাম, মানুষ ও জ্বিন (এ দুই জাতি তো) আল্লাহ তা'আলার ওপর মিথ্যা আরোপ করতেই পারে না,

৬. মানুষদের মাঝে কতিপয় (মূর্খ) লোক (বিপদে আপদে) জ্বিনদের কিছু সদস্যের কাছে আশ্রয় চাইতো, (এতে করে) অতঃপর (যারা মানুষ) তারা তাদের গুনাহ আরো বাড়িয়ে দিতো,

৭. এ জ্বিনরা মনে করতো যেমনি মনে করতে তোমরা মানুষরা যে, (মৃত্যুর পর) আল্লাহ তা'আলা কখনো কাউকে পুনরুজ্জীবিত করবেন না,

৮. (জ্বিনরা আরো বললো,) আমরা আকাশমন্ডল ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি, আমরা একে কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা ভরা পেয়েছি,

৯. আমরা আগে তার বিভিন্ন ঘাঁটিতে কিছু (একটা) শোনার প্রত্যাশায় বসে থাকতাম; কিন্তু এখন আমাদের কেউ যদি (এসব ঘাঁটিতে বসে) কিছু শোনার চেষ্টা করে, তাহলে সে প্রতিটি জায়গায় আগে থেকেই তার জন্যে (পেতে রাখা এক) একটি জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড (দেখতে) পায়,

১০. আমরা বুঝতে পারছিলাম না, পৃথিবীর মানুষদের কোনো অনিষ্ট সাধনের উদ্দেশেই কি এসব (উল্কাপিন্ড বসিয়ে রাখা) হয়েছে? না (এর মাধ্যমে) তাদের মালিক (মূলত) তাদের সঠিক ( কোনো পথ দেখাতে চান,

১১. (মানুষদের মতো) আমাদের মধ্যেও কিছু আছে সৎকর্মশীল আর কিছু আছে এর ব্যতিক্রম; (পাপ পুণ্যের দিক থেকে) আমরা ছিলাম দ্বিধাবিভক্ত,

১২. আমরা বুঝে নিয়েছি, এ ধরার বুকে (কোথাও) আমরা আল্লাহ তা'আলা কে ( কোনো অবস্থায়ই) অক্ষম করতে পারবো না না আমরা (কখনো তাঁর রাজ্য থেকে) পালিয়ে গিয়ে তাঁকে পরাভূত করে দিতে পারবো,

১৩. আমরা যখন হেদায়াতের বাণী ( সম্বলিত কোরআন) শোনলাম, তখন আমরা তার ওপর ঈমান আনলাম; কেননা যে ব্যক্তি তার মালিকের ওপর ঈমান আনে, তার নিজের পাওনা কম পাওয়ার আশংকা থাকে না, (পরকালেও) তাকে লাঞ্ছনা ও অপমান) পেতে হবে না,

১৪. আমাদের মধ্যে কিছু আছে যারা (আল্লাহর অনুগত) মুসলিম, আবার কিছু আছে যারা সত্যবিমুখ (কাফের); যারা (আল্লাহর) আনুগত্যের পথ বেছে নিয়েছে তারা মুক্তি ও সৎপথই বাছাই করে নিয়েছে ।

১৫. যারা সত্যবিমুখ তারা অবশ্যই জাহান্নামের ইন্ধন (হবে),

১৬. (আসলে) লোকেরা যদি সত্য (ও নির্ভুল) পথের ওপর সুদৃঢ় থাকতো, তাহলে আমি তাদের (আসমান থেকে) প্রচুর পানি পান করাতাম,

১৭. যেন আমি এর দ্বারা তাদের (ঈমানের) পরীক্ষা নিতে পারি; যদি কোনো মানুষ তার মালিকের স্মরণ (ঈমান ও আনুগত্য) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার মালিকতাকে অবশ্যই কঠোর আযাবে প্রবেশ করাবেন,

১৮. হে রসূল, আমার ওপর এ মর্মে ওহী পাঠানো হয়েছে যে,) মাসজিদসমূহ (একান্তভাবে) আল্লাহ তা'আলার এবাদাতের জন্যে (নির্দিষ্ট), অতএব তোমরা আল্লাহর পাশাপাশি অন্য কাউকে ডেকো না,

১৯. যখন আল্লাহর এক বান্দা তাকে ডাকার জন্যে দাঁড়ালো, তখন (মানুষ কিংবা জ্বিনের) অনেক সদস্যই তার আশেপাশে ভীড় জমাতে লাগলো;

২০. (এদের) তুমি বলো, আমি শুধু আমার মনিবকেই ডাকি, আর আমি তো (কখনো) তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না ।

২১. তুমি বলো, আমি তোমাদের কোনো ক্ষতিসাধনের যেমন ক্ষমতা রাখি না, তেমনি আমি তোমাদের কোনো ভালো করার ক্ষমতাও রাখি না।

২২. তুমি (তাদের) বলো, (কোনো সংকট দেখা দিলে) আমাকে আল্লাহর পাঁকড়াও থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না? তিনি ছাড়া আর কোনো আশ্রয়স্থলও তো আমি (খুঁজে) পাবো না,

২৩. (আমার কাজ) এ ছাড়া আর কি যে, আমি আল্লাহর কাছ থেকে তাঁর বাণী ও হেদায়াত পৌঁছে দেবো, (পৌঁছে দেয়ার পর) তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আল্লাহ তা'আলা এবং তাঁর রসূলকে অমান্য করে, তার জন্যে রয়েছে জাহান্নামের (কঠিন) আগুন, যেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে;

২৪. এভাবে সত্যি সত্যিই যখন (সে দিনটি চোখের সামনে) দেখতে পাবে যার প্রতিশ্রুতি (তাদের) বার বার দেয়া হচ্ছে, তখন তারা অবশ্যই জানতে পারবে কার সাহায্যকারী কতো দুর্বল এবং কার বাহিনী সংখ্যায় কতো নগণ্য !

২৫. তুমি (এদের) বলো, আমি (নিজেই) জানি না, তোমাদের (কেয়ামত দিবসের) যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে তা কি (আসলেই) সন্নিকটে, না আমার প্রতিপালক তার (আগমনের) জন্যে কোনো (দীর্ঘ) মেয়াদ ঠিক করে রেখেছেন ।

২৬. তিনি (সমগ্র) অদৃশ্য জগতের (জ্ঞানের একক) জ্ঞানী, তাঁর সে অদৃশ্য জগতের কোনো কিছুই তিনি কারো কাছে প্রকাশ করেন না,

২৭. অবশ্য তাঁর রসূল ছাড়া যাকে তিনি (এ কাজের জন্যে) বাছাই করে নিয়েছেন, কিন্তু তার আগে-পিছেও তিনি (অতন্দ্র) প্রহরী নিযুক্ত করে রেখেছেন,

২৮. এ (প্রহরা) দিয়ে আল্লাহ তা'আলা এ কথাটা জেনে নিতে চান, তাঁর নবী রসূলরা (মানুষের কাছে) তাদের মালিকের পক্ষ থেকে হেদায়াতের বাণী (ঠিক ঠিক) পৌঁছে দিয়েছে কিনা, অথচ আল্লাহ তা'আলা এমনিই তাদের সব কিছু পরিবেষ্টন করে রয়েছেন এবং (এ সৃষ্টি জগতের) সবকিছুর গুনতি একমাত্র তিনিই অবগত রয়েছেন |



💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url