আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আল মোদ্দাসসের’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা আল মোদ্দাসসর | Surah Al Muddaththir | المدثر


সূরা আল মোদ্দাসসের’এর বাংলা অনুবাদ

সূরা আল মোদ্দাসসের মক্কায় অবতীর্ণ আয়াত ৫৬, রুকু ২

সূরা আল মোদ্দাসসের



রহমান রহীম আল্লাহ তা'আলার নামে

১. হে কম্বল আবৃত (মোহাম্মদ),

২. (কম্বল ছেড়ে) ওঠো এবং মানুষদের (পরকালের আযাব সম্পর্কে) সাবধান করো,

৩. তোমার মালিকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো,

৪. আর তোমার পোশাক আশাক পবিত্র করো,

৫. এবং (যাবতীয়) মলিনতা ও অপবিত্রতা পরিহার করো,

৬. কখনো বেশী পাওয়ার লোভে কাউকে কিছু দান করো না,

৭. তোমার মালিকের (খুশীর) উদ্দেশে ধৈর্য্য ধারণ করো;

৮. যেদিন (সবকিছু ধ্বংস করে দেয়ার জন্যে) শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে,

৯. সেদিনটি (হবে) সত্যিই বড়ো সাংঘাতিক,

১০. (বিশেষ করে এ দিনকে) যারা অস্বীকার করেছে তাদের জন্যে এ (দিন)-টি মোটেই সহজ (বিষয়) হবে না ।

১১. র(তার সাথে বুঝাপড়া করার জন্যে) তুমি আমাকেই ছেড়ে দাও, যাকে আমি অনন্য ধরনের (করে) পয়দা করেছি,

১২. তাকে আমি বিপুল পরিমাণ ধনসম্পদ দান করেছি,

১৩. (তাকে দান করেছি) সদা সংগী (এক দল) পুত্র সন্তান,

১৪. আমি তার জন্যে (যাবতীয় সচ্ছলতার উপকরণ) সুগম করে দিয়েছি,

১৫. (তারপরও) যে লোভ করে, তাকে আমি আরো অধিক দিতে থাকবো,

১৬. না, তা কখনো হবে না; কেননা সে আমার আয়াতসমূহের বিরুদ্ধাচরণে বদ্ধপরিকর;

১৭. অচিরেই আমি তাকে (শাস্তির) চূড়ায় আরোহণ করাবো;

১৮. সে তো (সত্য গ্রহণের ব্যাপারে কিছুটা) চিন্তা-ভাবনাও করেছিলো, তারপর (আবার নিজের গোঁড়ামিতে নিমজ্জিত থাকার) একটা সিদ্ধান্ত করলো,

১৯. তার ওপর অভিশাপ, (সত্য চেনার পরও) কেমন করে সে (পুনরায় বিরোধিতার) সিদ্ধান্ত করলো!

২০. আবারও তার ওপর অভিশাপ (নাযিল হোক), কিভাবে সে এমন সিদ্ধান্ত করতে পারলো,

২১. সে একবার (উপস্থিত লোকদের প্রতি) চেয়ে দেখলো,

২২. (অহংকার ও দম্ভভরে) সে তার ভ্রুকুঞ্চিত করলো, (অবজ্ঞাভরে নিজের) মুখটা বিকৃত করে ফেললো,

২৩. অতঃপর সে (একটু) পিছিয়ে গেলো এবং সে অহংকার করলো,

২৪. সে (আরো) বললো, এ তো (আসলে) আগের লোকদের থেকে প্রাপ্ত যাদু (-বিদ্যার খেল) ছাড়া আর কিছুই নয়,

২৫. এ তো মানুষের কথা ছাড়া আর কিছুই নয়;

২৬. অচিরেই আমি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবো ।

২৭. তুমি কি জানো জাহান্নাম (এর আগুন) কি ধরনের?

২৮. (এটা এমন ভয়াবহ আযাব) যা (এর অধিবাসীদের জ্বালিয়ে অক্ষত অবস্থায়ও) ফেলে রাখবে না, আবার (শাস্তি থেকে) রেহাইও দেবে না,

২৯. বরং তা মানুষদের গায়ের চামড়া জ্বালিয়ে দেবে,

৩০. তার ওপর (আছে) উনিশ ;

৩১. আমি ফেরেশতাদের ছাড়া দোযখের প্রহরী হিসেবে (অন্য কাউকেই) নিযুক্ত করিনি এবং তাদের সংখ্যাকে আমি অবিশ্বাসীদের জন্যে একটি পরীক্ষার মাধ্যম বানিয়ে দিয়েছি, যেন এর মাধ্যমে যাদের ওপর আমার কেতাব নাযিল হয়েছে তারা (আমার কথায়) দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে এবং যারা (আগে থেকেই আমার ওপর ) ঈমান এনেছে তাদের ঈমানও এতে করে বৃদ্ধি পেতে পারে, (সর্বোপরি) এর ফলে আহলে কেতাব এবং মোমেনরাও যেন কোনোরকম সন্দেহে নিমজ্জিত না হতে পারে, (অবশ্য) যাদের মনে সন্দেহের ব্যাধি রয়েছে এর ফলে তারা এবং সত্য প্রত্যাখ্যানকারী ব্যক্তিরা বলবে, এ (অভিনব ) উক্তি দ্বারা আল্লাহ তা'আলা কী বুঝাতে চান? (মূলত) এভাবেই আল্লাহ তা'আলা যাকে চান তাকে গোমরাহ করেন, (আবার একইভাবে) তিনি যাকে চান তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন; তোমার মালিকের (বিশাল) বাহিনী সম্পর্কে তিনি ছাড়া আর কেউই জানে না, (আর দোযখের বর্ণনা) এ তো শুধু মানুষদের উপদেশের জন্যেই ।

৩২. না, তা কখনো নয়, (আমি) চাঁদের শপথ (করে বলছি),

৩৩. (আরো) শপথ (করছি) রাতের, যখন তা অবসান হতে থাকে,

৩৪. শপথ (করছি) প্রভাতকালের যখন তা (দিনের) আলোয় উদ্ভাসিত হয়,

৩৫. নিঃসন্দেহে তা হবে (মানুষের জন্যে) কঠিনতম বিপদসমূহের মধ্যে একটি (বিপদ),

৩৬. মানুষের জন্যে (তা হবে) ভয় প্রদর্শনকারী,

৩৭. তোমাদের মধ্যকার সে ব্যক্তির জন্যে, যে (কল্যাণের পথে) অগ্রসর হতে চায় এবং (অকল্যাণের পথ থেকে) পিছু হটতে মনস্থ করে;

৩৮. (এখানে) প্রত্যেক মানুষই নিজের কর্মফলের হাতে বন্দী হয়ে আছে,

৩৯. অবশ্য ডান দিকে অবস্থানকারী (নেক) লোকগুলো ছাড়া;

৪০. তারা অবস্থান করবে (চিরস্থায়ী ) জান্নাতে | (সেদিন) তারা পরস্পরকে জিজ্ঞেস করবে,

৪১. (জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত)পাপিষ্ঠদের সম্পর্কে,

৪২.(তারা বলবে, হে জাহান্নামের অধিবাসীরা,) তোমাদের আজ কিসে এ ভয়াবহ আযাবে উপনীত করেছে?

৪৩. তারা বলবে, আমরা নামাযীদের দলে শামিল ছিলাম না,

৪৪. (ক্ষুধার্ত ও) অভাবী ব্যক্তিদের আমরা খাবার দিতাম না,

৪৫. (সত্যের বিরুদ্ধে)যারা অন্যায় অমূলক আলোচনায় উদ্যত হতো আমরা তাদের সাথে যোগ দিতাম,

৪৬. (সর্বোপরি) আমরা আখেরাতকেও মিথ্যা প্রতিপন্ন করতাম,

৪৭.এমনকি চূড়ান্ত সত্য মৃত্যু (একদিন) আমাদের কাছে হাযির হয়ে গেলো।

৪৮. তাই (আজ) কোনো সুপারিশকারীর সুপারিশই তাদের কোনো উপকারে আসবে না;

৪৯. (বলতে পারো) এদের কি হয়েছে, এরা এ (সত্য) বাণী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কেন?

৫০. (অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়) এরা যেন বনের কতিপয় পলায়নপর (ভীত সন্ত্রস্ত) গাধা,

৫১. যা গর্জনকারী বাঘের আক্রমণ থেকে পালাতেই ব্যস্ত;

৫২. কিন্তু তাদের প্রতিটি ব্যক্তিই চায়, (স্বতন্ত্রভাবে) উন্মুক্ত গ্রন্থ তাকে দেয়া হোক,

৫৩. এটা কখনো সম্ভব নয়, (আসলে) এ লোকেরা শেষ বিচারের দিনক্ষণকে মোটেই ভয় করে না;

৫৪. না, কখনো তা (অবজ্ঞার বিষয়) নয়, এটি একটি নসীহত মাত্র,

৫৫. অতএব (এক্ষণে) যার ইচ্ছা সে যেন (এ থেকে) শিক্ষা গ্রহণ করে;

৫৬. (সত্যি কথা হচ্ছে) আল্লাহ তা'আলা র ইচ্ছা ব্যতিরেকে তারা কখনো (এ থেকে) শিক্ষা গ্রহণ করবে না; একমাত্র তিনিই ভয় করার যোগ্য এবং একমাত্র তিনিই হচ্ছেন ক্ষমার মালিক |


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url