আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আল ক্বেয়ামাহ’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা আল ক্বেয়ামাহ | Surah Al Qiyamah | القيامة
সূরা আল ক্বেয়ামাহ’এর বাংলা অনুবাদ
সূরা আল ক্বেয়ামাহ, মক্কায় অবতীর্ণ আয়াত ৪০, রুকু ২
সূরা আল ক্বেয়ামাহ
রহমান রহীম আল্লাহ তা'আলার নামে
১. আমি শপথ করছি রোজ কেয়ামতের,
২. আরও আমি শপথ করছি সে নফসের, যে (এটি বিচ্যুতির জন্যে) নিজেকে ধিক্কার দেয়;
৩. মানুষ কি ধরে নিয়েছে, (সে মরে গেলে) আমি তার অস্থিমজ্জাগুলো আর কখনো একত্রিত করতে পারবো না;
৪. অবশ্যই (আমি তা পারবো), আমি তো বরং তার আংগুলের গিরাগুলোকেও পুনর্বিন্যস্ত করে দিতে পারবো ।
৫. এ সত্ত্বেও মানুষ তার সম্মুখের দিনগুলোতে পাপাচারে লিপ্ত হতে চায়,
৬. সে জিজ্ঞেস করে, (তোমার প্রতিশ্রুত) কেয়ামত কবে আসবে?
৭. (তুমি বলো,) যেদিন (সবার) দৃষ্টি ধাঁধাযুক্ত হয়ে যাবে,
৮. (যেদিন) চাঁদ নিষ্প্রভ হয়ে যাবে, ৯ (যেদিন) চাঁদ ও সুরুজ একাকার হয়ে যাবে,
১০. (সেদিন) মানুষগুলো সব বলে উঠবে (সত্যিই তো! কেয়ামত এসে গেলো), কোথায় আজ পালানোর জায়গা (আমাদের)?
১১. (ঘোষণা আসবে) না, (আজ পালাবার জায়গা নেই,) কোনো আশ্রয়স্থল নেই;
১২. (আজ) আশ্রয়স্থল ও ঠাঁই আছে (একটাই এবং তা) শুধু) তোমার মালিকের কাছে,
১৩. সেদিন প্রতিটি মানুষকে (খুলে খুলে) জানিয়ে দেয়া হবে, কি (কাজ) নিয়ে সে আজ হাযির হয়েছে, আর কি (কি কাজ) সে পেছনে রেখে এসেছে;
১৪. মানুষরা (মূলত) নিজেদের কাজকর্মের ব্যাপারে নিজেরাই সম্যক অবগত,
১৫. যদিও সে নিজের (সপক্ষে) বিভিন্ন অজুহাত পেশ করতে চাইবে;
১৬. (ওহীর ব্যাপারে হে নবী) তুমি তাতে তাড়াহুড়ো করার উদ্দেশ্যে তার সাথে তোমার জিহ্বা নাড়িয়ো না ;
১৭. এর একত্র করা ও (ঠিকমতো তোমাকে) পড়িয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমার ওপর,
১৮. অতএব আমি (জিবরাঈলের মাধ্যমে তোমার কাছে) যখন কোরআন পড়তে থাকি, তখন তুমি সে পড়ার (দিকে মনোযোগ দাও এবং এর) অনুসরণ করার চেষ্টা করো,
১৯. অতঃপর (তোমাকে) এর ব্যাখ্যা বলে দেয়ার দায়িত্বও আমার ওপর;
২০. কক্ষনো না, তোমরা পর্থিব জগতকেই বেশী ভালোবাসো
২১. এবং পরকালীন জীবনকে তোমরা উপেক্ষা করো!
২২. সেদিন কিছু সংখ্যক (মানুষের) চেহারা উজ্জ্বল আলোয় ভরে উঠবে,
২৩. এ (ভাগ্যবান) ব্যক্তিরা তাদের মালিকের দিকে তাকিয়ে থাকবে,
২৪. আবার এদিন কিছু (মানুষের) চেহারা হয়ে যাবে (উদাস ও বিবর্ণ,
২৫. তারা ভাবতে থাকবে, (এক্ষুণি বুঝি) তাদের সাথে কোমর বিচূর্ণকারী (আযাবের) আচরণ (শুরু) করা হবে;
২৬. কখনো নয়, মানুষের প্রাণ (যখন) তার কণ্ঠনালী পর্যন্ত এসে যাবে,
২৭. তাকে বলা হবে, এ (বিপদের) সময় (যাদুটোনা ও) ঝাড় ফুঁক দেয়ার মতো কেউ কি আছে?
২৮. সে (তখন ঠিকমতোই) বুঝে নেবে, (পৃথিবী থেকে এখন) তার বিদায় নেয়ার পালা),
২৯. (আর এভাবেই) তার (এ জীবনের শেষ) পা' (পরের জীবনের প্রথম) পা'র সাথে জড়িয়ে যাবে,
৩০. আর সে দিনটিই হবে তোমার মালিকের দিকে (তার অনন্ত) যাত্রার (প্রথম) সময়!
৩১. (আসলে) এ (জাহান্নামী) ব্যক্তিটি সত্য স্বীকার করেনি এবং (সত্যের দাবী মোতাবেক)সে নামায প্রতিষ্ঠা করেনি,
৩২. বরং (তার বদলে) সে (সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং (সত্য থেকে) সে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে,
৩৩. সে অত্যন্ত দম্ভ ও অহমিকাভরে নিজের পরিবার পরিজনের কাছে ফিরে গেলো,
৩৪. (আল্লাহ তা'আলা বলবেন,) হ্যাঁ, (এ পরিণাম ঠিক) তোমাকেই মানায় এবং এটা তোমারই প্রাপ্য।
৩৫. অতঃপর এ আচরণ তোমারই সাজে, (এটা) তোমার জন্যেই মানায়;
৩৬. মানুষ কি ধরে নিয়েছে যে তাকে এমনি (লাগামহীন অবস্থায়) ছেড়ে দিয়ে রাখা হবে;
৩৭. সে কি (এক সময়) এক ফোঁটা স্খলিত শুক্রবিন্দুর অংশ ছিলো না,
৩৮. তারপর (এক পর্যায়ে) তা হলো রক্তপিন্ড, অতঃপর আল্লাহ তা'আলা করলেন,
৩৯. এরপর আল্লাহ তা'আলা সে থেকে নারী পুরুষের জোড়া পয়দা করেছেন । (তাকে দেহ সৃষ্টি করে) সুবিন্যস্ত,
৪০. এরপরও তোমরা কি মনে করো, আল্লাহ তা'আলা রমৃতদের পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হবেন না?
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url