আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আদ দাহর’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা আদ দাহর | Surah Al Insan (Dahr) | الإٍنسان


সূরা আদ দাহর’এর বাংলা অনুবাদ

সূরা আদ দাহর, মদীনায় অবতীর্ণ আয়াত ৩১, রুকু ২

সূরা আদ দাহর



রহমান রহীম আল্লাহ তা'আলা র নামে

১. কালের (পরিক্রমায়) কোনো একটি সময় মানুষের ওপর দিয়ে এমন অতিবাহিত হয়েছে কি যখন সে (এবং তার অস্তিত্ব) উল্লেখ করার মতো কোনো বিষয়ই ছিলো না!

২. আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি (নারী পুরুষের) মিশ্রিত শুক্র থেকে, যেন আমি তাকে (তার ভালো মন্দের ব্যাপারে) পরীক্ষা করতে পারি, অতঃপর (এর উপযোগী করে তোলার জন্যে) তাকে আমি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন করে পয়দা করেছি।

৩. আমি তাকে (চলার) পথ দেখিয়ে দিয়েছি, সে চাইলে (আল্লাহর) কৃতজ্ঞ হবে, না হয় কাফের হয়ে যাবে ।

৪. কাফেরদের (পাঁকড়াও করার) জন্যে আমি শেকল, বেড়ি ও (শান্তির জন্যে) আগুনের লেলিহান শিখার ব্যবস্থা করে রেখেছি ।

৫. নিঃসন্দেহে যারা সৎকর্মশীল তারা (জান্নাতে) এমন সুরা পান করবে যার সাথে (সুগন্ধযুক্ত) কর্পূর মেশানো থাকবে,

৬. এ (কর্পূর মেশানো) পানি হবে প্রবাহমান (এক) ঝর্ণা, যার (প্রবাহ) থেকে আল্লাহর নেক বান্দারা সদা পানীয় গ্রহণ করবে, তারা (যেদিকে যখন ইচ্ছা) এ (ঝর্ণাধারা)-টা প্রবাহিত করে নেবে।

৭. (এরা হচ্ছে সেসব লোক) যারা মানত' পূরণ করে এবং এমন এক দিনকে ভয় করে, যে দিনের ধ্বংসলীলা হবে (ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী ।

৮. এরা শুধু আল্লাহর ভালোবাসায় (উদ্বুদ্ধ হয়েই ফকীর), মেসকীন, এতীম ও কয়েদীদের খাবার দেয়।

৯. (খাবার দেয়ার সময় এরা বলে,) আমরা শুধু আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্যেই তোমাদের খাবার দিচ্ছি, (বিনিময়ে) আমরা তোমাদের কাছ থেকে কোনো রকম প্রতিদান চাই না না (চাই) কোনো রকম কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন।

১০. আমরা তো সে দিনটির ব্যাপারে আমাদের প্রতিপালককে ভয় করি, যেদিনটি হবে অতীব ভয়ংকর।

১১. (এরা যেহেতু এ দিনটিকে বিশ্বাস করেছে তাই) আল্লাহ তা'আলা আজ তাদের সে দিনের যাবতীয় অনিষ্ট ও ক্ষতি থেকে রক্ষা করবেন, তিনি তাদের সজীবতা ও আনন্দ দান করবেন,

১২. এরা যে কঠোর ধৈর্য্য (ও সহিষ্ণুতা) প্রদর্শন করেছে (তার পুরস্কার হিসেবে আল্লাহ তা'আলা) তাদের জান্নাত ও রেশমী বস্ত্র দান করবেন,

১৩. (সেই মনোরম জান্নাতে) তারা (সুসজ্জিত) আসনে হেলান দিয়ে বসবে, সেখানে সূর্যের (তাপ) যেমন তারা দেখবে না, তেমনি দেখবে না কোনোরকম শীত (-এর প্রকোপ),

১৪. তাদের ওপর (জান্নাতে) তার গাছের ছায়া ঝুঁকে থাকবে, তার ফলপাকড়াকে তাদের আয়ত্তাধীন করে দেয়া হবে।

১৫. তাদের (সামনে খাবার) পরিবেশন করা হবে রৌপ্য নির্মিত পাত্রে আর কাচের পেয়ালায় এবং তা হবে স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ,

১৬. রূপালী স্ফটিক পাত্র, (যার সবটুকুই) পরিবেশনকারীরা যথাযথভাবে পূর্ণ করে রাখবে ।

১৭. সেখানে তাদের এমন এক (অপূর্ব) সুরা পান করানো হবে, যার সাথে মেশানো হবে যানজাবীল' (নামের এক মূল্যবান সুগন্ধ),

১৮. তাতে রয়েছে (জান্নাতের) এক (অমিয়) ঝর্ণা, যার নাম রাখা হয়েছে সালসাবীল'।

১৯. তাদের চারদিকে ঘোরাঘুরি করবে একদল কিশোর বালক, যারা (বয়সের ভারে বৃদ্ধ হয়ে যাবে না,) চিরকাল কিশোর থাকবে, যখনি তুমি তাদের দিকে তাকাবে মনে হবে এরা বুঝি কতিপয় ছড়ানো ছিটানো মুক্তা।

২০. সেখানে যখন যেদিকে তুমি তাকাবে, দেখবে শুধু নেয়ামতেরই সমারোহ, আরও দেখবে (নেয়ামতে উপচে পড়া) এক বিশাল সাম্রাজ্য।

২১. বেহেশতবাসীদের পরনের কাপড় হবে অতি সূক্ষ্ম সবুজ রেশম ও মোটা মখমল, তাদের পরানো হবে রূপার কংকণ, (তদুপরি) তাদের মালিক সেদিন তাদের শরাবান তহুরা' (মহাপবিত্র উৎকৃষ্ট পানীয়) পান করাবেন ।

২২. (তাদের মালিক বলবেন, হে আমার বান্দারা,) এ হচ্ছে তোমাদের জন্যে (আমার) পুরস্কার এবং তোমাদের (যাবতীয়) চেষ্টা সাধনার স্বীকৃতি!

২৩. (হে নবী,) আমি (এ মহাগ্রন্থ) কোরআন ধীরে ধীরে তোমার ওপর নাযিল করেছি,

২৪. সুতরাং (এদের ব্যাপারেও ধীরে ধীরে) তুমি ধৈর্য্য এর সাথে তোমার মালিকের নির্দেশের অপেক্ষা করো, আর এদের মধ্যে যারা পাপী ও সত্যের পথ প্রত্যাখ্যানকারী, কখনো তাদের আনুগত্য করবে না,

২৫. তুমি সকাল সন্ধ্যা শুধু তোমার মালিকের নাম স্মরণ করতে থাকো,

২৬. রাতের একাংশ তাঁর সামনে সাজদাবনত থাকো এবং রাতের দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করতে থাকো।

২৭. এরা বৈষয়িক স্বার্থের এ (সহজলভ্য) পার্থিব জগতকেই বেশী ভালোবাসে এবং পরে যে তাদের ওপর একটা কঠিন দিন আসছে তা (এরা) উপেক্ষা করে!

২৮. (অথচ) আমিই এদের সৃষ্টি করেছি এবং এদের জোড়াগুলো ও তার বাঁধন আমিই মযবুত করেছি, আবার আমি যখন ইচ্ছা করবো তখন এদের (এ শক্ত বাঁধন শিথিল করে তাদের) আকৃতিই বদলে দেবো।

২৯. এটা হচ্ছে অবশ্যই একটি উপদেশ বিশেষ, অতএব যার ইচ্ছা সে (একে আঁকড়ে ধরে) নিজের মালিকের কাছে যাওয়ার (একটা) পথ করে নিতে পারে।

৩০. আর আল্লাহ তা'আলা যা চেয়েছেন সেটা ছাড়া তোমরা তো কিছুই চাইতে পারো না; অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা সব কিছু জানেন এবং তিনি প্রজ্ঞাময়।

৩১. তিনি যাকে চান তাকে তাঁর অফুরন্ত রহমতের মাঝে প্রবেশ করান; যালেমদের জন্যে আল্লাহ তা'আলা কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url