আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা ইয়াসীন’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা ইয়াসীন | Surah Ya-Sin | سورة يس


সূরা ইয়াসীন’এর বাংলা অনুবাদ


সূরা ইয়াসীন, মক্কায় অবতীর্ণ আয়াত ৮৩ রুকু ৫

সূরা ইয়াসীন


রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে


১. ইয়াসীন,

২. (এ) জ্ঞানগর্ভ কোরআনের শপথ,

৩. তুমি অবশ্যই রসুলদের একজন,

8. নিঃসন্দেহে তুমি সরল পথের ওপর (প্রতিষ্ঠিত) রয়েছো,

৫. পরাক্রমশালী ও পরম দয়ালু আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকেই এ (কোরআনের) অবতরণ;

৬. যাতে করে (এর মাধ্যমে) তুমি এমন একটি জাতির (লোকদের) সতর্ক করে দিতে পারো, যাদের বাপদাদাদের (ঠিক এভাবে) সতর্ক করা হয়নি, ফলে তারা গাফেল (হয়ে রয়েছে) ।

৭. তাদের অধিকাংশ লোকের ওপরই (আল্লাহ তায়ালার শাস্তি) বিধান অবধারিত হয়ে গেছে, তাই তারা (কখনো) ঈমান আনবে না।

৮. আমি ওদের গলদেশসমুহে (মোটা মোটা) বেড়ি পরিয়ে দিয়েছি, যা ওদের চিবুক পর্যন্ত (ঢেকে দিয়েছে), ফলে তারা ঊর্ধ্বমুখীই হয়ে আছে।

৯. আমি তাদের সামনে পেছনে (জাহেলিয়াতের) প্রাচীর দাঁড় করিয়ে দিয়েছি এবং তাদের (দৃষ্টি) ঢেকে দিয়েছি, ফলে তারা (কিছুই) দেখতে পায় না ।

১০. (এ অবস্থায়) তুমি তাদের (আল্লাহর আযাব সম্পর্কে) সাবধান করো বা না করো, উভয়টাই তাদের জন্যে সমান কথা, তারা (কখনোই) ঈমান আনবে না।

১১. তুমি তো কেবল এমন লোককেই সতর্ক করতে পারো যে (আমার) উপদেশ মেনে চলে এবং (সে অনুযায়ী) দয়াময় আল্লাহ তায়ালাকে না দেখে ভয় করে, (হ্যাঁ, যে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে) তাকে তুমি ক্ষমা ও মহা প্রতিদানের সুসংবাদ দান করো।

১২. আমিই মৃতকে জীবিত করি, যা কিছু তারা নিজেদের (কর্মকান্ডের) চিহ্ন (হিসেবে এ পৃথিবীতে) ফেলে আসে, সেগুলো সবই আমি (যথাযথভাবে) লিখে রাখি; প্রতিটি জিনিস আমি একটি সুস্পষ্ট কেতাবে গুনে গুনে (সংরক্ষিত করে) রেখেছি।

১৩. (হে নবী,) এদের কাছে তুমি একটি জনপদের দৃষ্টান্ত পেশ করো, যখন তাদের কাছে আমার পক্ষ থেকে কয়েকজন রসুল এসেছিলো।

১৪. যখন আমি তাদের কাছে দু'জন রসুল পাঠিয়েছি তখন তারা এদের উভয়কেই অস্বীকার করেছে, এরপর আমি তৃতীয় একজন (নবী) দিয়ে তাদের সাহায্য করেছিলাম, অতঃপর তারা (সবাই তাদের কাছে এসে) বললো, আমরা অবশ্যই তোমাদের কাছে রসুল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছি ।

১৫. (এ কথা শুনে) তারা বললো, তোমরা তো দেখছি আমাদের মতো কতিপয় মানুষ ছাড়া আর কিছুই নও, (আসলে) দয়াময় আল্লাহ তায়ালা (আমাদের জন্যে) কিছুই পাঠাননি, তোমরা (অযথাই) মিথ্যা কথা বলছো!

১৬. তারা বললো, আমাদের মালিক এ কথা ভালো করেই জানেন, আমরা হচ্ছি অবশ্যই তোমাদের কাছে (তাঁর পাঠানো) কয়েকজন রসুল।

১৭. তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট করে (আল্লাহর বাণী) পৌঁছে দেয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো দায়িত্ব নেই।

১৮. তারা বললো, (কিন্তু) আমরা তো তোমাদেরই (আমাদের সব) অমংগলের কারণ মনে করি, যদি তোমরা (এখনো এসব কাজ থেকে) ফিরে না আসো তাহলে আমরা অবশ্যই তোমাদের পাথর মারবো, (উপরন্তু) তোমাদের অবশ্যই আমাদের কাছ থেকে (আরো) কঠিন শাস্তি স্পর্শ করবে।

১৯. তারা বললো, তোমাদের দুর্ভাগ্য (অকল্যাণ) তো তোমাদের সাথেই লেগে আছে; এটা কি তোমাদের (কোনো অমংগলের কাজ) যে, তোমাদের (ভালো কাজের কথা) স্মরণ করিয়ে দেয়া হচ্ছে, (আসলে) তোমরা হচ্ছো একটি সীমালংঘনকারী জাতি।

২০. (এমন সময়) নগরীর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি (এদের কাছে) ছুটে এলো এবং (সবাইকে) বললো, হে আমার জাতির লোকেরা, তোমরা (আল্লাহর) এ রসুলদের অনুসরণ করো,

২১. অনুসরণ করো এমন এক রসুলের, যে তোমাদের কাছে (হেদায়াতের বিনিময়ে) কোনো প্রকার প্রতিদান চায় না, আসলে (যারাই তার অনুসরণ করবে) তারাই হবে হেদায়াতপ্রাপ্ত।

২২. আমার জন্যে এমন কি (অজুহাত) থাকতে পারে যে, যিনি স্বয়ং আমাকে পয়দা করেছেন এবং যাঁর দিকে তোমাদের সবাইকে (একদিন) ফিরে যেতে হবে, আমি তাঁর এবাদাত করবো না!

২৩. আমি কি তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো মাবুদ গ্রহণ করতে যাবো? (অথচ) দয়াময় আল্লাহ তায়ালা যদি (আমার) কোনো ক্ষতি করতে চান তাহলে ওদের কোনো সুপারিশই তো আমার কোনো কাজে আসবে না, না তারা কেউ আমাকে (ক্ষতি থেকে) উদ্ধার করতে পারবে!

২৪. (এ সত্ত্বেও) যদি আমি এমন কিছু করি তাহলে আমি সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত হয়ে যাবো।

২৫. আমি তো (এ গোমরাহীর বদলে) তোমাদের মালিকের ওপরই ঈমান এনেছি, অতএব তোমরা আমার কথা শোনো;

২৬. (এ ব্যক্তি আল্লাহর পথে নিহত হওয়ার পর) তাকে বলা হলো, যাও, তুমি গিয়ে (এবার) জান্নাতে প্রবেশ করো; (সেখানে গিয়ে জান্নাতের নেয়ামত দেখে) সে বললো, আফসোস, যদি আমার জাতি (এ কথাটা) জানতে পারতো,

২৭. আমার মালিক আমাকে মাফ করে দিয়েছেন এবং আমাকে তিনি সম্মানিত (মানুষ) -দের দলে শামিল করে নিয়েছেন।

২৮. তার (হত্যাকান্ডের) পর (তাদের শায়েস্তা করার জন্যে) আমি তার জাতির ওপর আসমান থেকে কোনো বাহিনী পাঠাইনি, না (এ ক্ষুদ্র কীটদের শাস্তি দেয়ার জন্যে) আমার ( তেমন) কোনো বাহিনী পাঠানোর প্রয়োজন ছিলো!

২৯. (আমি যা করেছি) তা ছিলো একটিমাত্র বিকট গর্জন, (তাতেই) ওরা সবাই নিথর নিঃস্তব্ধ হয়ে গেলো!

৩০. বড়োই আফসোস (এমন সব) বান্দাদের ওপর, তাদের কাছে এমন একজন রসুলও আসেনি, যাদের তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করেনি!

৩১. তারা কি (এ বিষয়টি) লক্ষ্য করেনি যে, তাদের আগে আমি কতো জাতিকে বিনাশ করে দিয়েছি, যারা (কোনোদিনই আর) তাদের দিকে ফিরে আসবে না;

৩২. বরং তাদের সবাইকে (একদিন) আমার সামনে এনে হাযির করা হবে ।

৩৩. তাদের (শিক্ষার) জন্যে আমার (কুদরতের) একটি নিদর্শন হচ্ছে (এই) মৃত যমীন, যাকে আমি (আসমান থেকে পানি বর্ষণ করে) জীবন দান করি এবং তা থেকে শস্যদানা বের করে আনি, তা থেকেই তারা (নিজ নিজ অংশ) ভক্ষণ করে।

৩৪. আমি তাতে (আরো) সৃষ্টি করি (নানা প্রকার) খেজুর ও আংগুরের বাগান, উদ্ভাবন করি অসংখ্য (নদীনালার ) প্রস্রবণ,

৩৫. যাতে করে তারা এর ফলমুল উপভোগ করতে পারে, (আসলে) এগুলোর কোনোটাই তো তাদের হাতের সৃষ্টি নয়, (এতদসত্ত্বেও) কি তারা কৃতজ্ঞতা আদায় করবে না?

৩৬. পবিত্র ও মহান সে সত্তা, যিনি সবকিছুকে জোড়ায় জোড়ায় পয়দা করেছেন, (চাই তা) যমীনের উৎপন্ন উদ্ভিদ থেকে হোক, কিংবা (হোক) স্বয়ং তাদের নিজেদের থেকে, অথবা এমন সব সৃষ্টি থেকে হোক, যাদের (সম্পর্কে) মানুষ (এখনো) আদৌ (কিছু) জানেই না।

৩৭. তাদের জন্যে (আমার আরেকটি) নিদর্শন হচ্ছে (এই) রাত, আমি তা থেকে দিনকে অপসারিত করি, ফলে এরা সবাই (এক সময়) অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে,

৩৮. সুর্য তার জন্যে নির্ধারিত সুনির্দিষ্ট গন্ডির মাঝে আবর্তন করে; এটা হচ্ছে মহাপরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ আল্লাহ তায়ালারই সুনির্ধারিত (নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা);

৩৯. (আরো রয়েছে) চাঁদ, তার জন্যে আমি বিভিন্ন কক্ষ নির্ধারণ করেছি, (কক্ষ পরিক্রমণের সময় ছোট হতে হতে তা এক সময়) এমন (ক্ষীণ) হয়ে পড়ে, যেন তা পুরনো খেজুরের একটি (পাতলা) ডাল।

৪০. সুর্যের এ ক্ষমতা নেই যে, সে চাঁদকে নাগালের মাঝে পাবে, না রাত দিনকে ডিঙিয়ে আগে চলে যেতে পারবে; (মুলত চাঁদ সুরুজসহ) এরা প্রত্যেকেই শূন্যলোকে সাঁতার কেটে চলেছে ।

৪১. তাদের জন্যে (আরেকটি) নিদর্শন হচ্ছে, আমি তাদের বংশধরদের (এক সময় একটি) ভরা নৌযানে আরোহণ করিয়েছিলাম;

৪২. তাদের (নিজেদের) জন্যে সে নৌকার মতো যানবাহন আমি সৃষ্টি করেছি, যাতে (মাল সম্পদসহ) তারা আরোহণ করছে।

৪৩. অথচ আমি চাইলে (মাল সামানাসহ) এদের সবাইকে ডুবিয়ে দিতে পারি, সে অবস্থায় তাদের ফরিয়াদ শোনার মতো কেউই থাকবে না, না এদের (তখন) উদ্ধার করা হবে।

৪৪. (হ্যাঁ, একমাত্র) আমার অনুগ্রহই ছিলো, (যা তাদের নিজ নিজ মনযিলে পৌঁছে দিয়েছিলো) এবং এটা ছিলো এক সুনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত (এ বৈষয়িক) সম্পদ (উপভোগ করার সুযোগ)।

৪৫. যখন তাদের বলা হয়, তোমরা তোমাদের সামনে যে (আযাব) রয়েছে তাকে ভয় করো, (ভয় করো) যা (কিছু) পেছনে আছে (তাকেও), আশা করা যায় তোমাদের ওপর দয়া করা হবে।

৪৬. তাদের মালিকের নিদর্শনসমূহ থেকে তাদের কাছে এমন কোনো নিদর্শন আসেনি যা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়নি!

৪৭. (এমনিভাবে) যখন তাদের বলা হয়, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের যে জীবনোপকরণ দিয়েছেন তা থেকে (কিছু অংশ অন্যদের জন্যে) ব্যয় করো, তখন (এ) কাফেররা ঈমানদারদের বলে, আমরা কেন তাদের খাওয়াতে যাবো যাদের আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করলে নিজেই খাবার দিতে পারতেন, (হে নবী, তুমি বলো), আসলেই তোমরা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে (নিমজ্জিত) আছো!

৪৮. তারা বলে, তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে (বলো, কেয়ামতের) এ প্রতিশ্রুতি কবে (পুর্ণ) হবে?

৪৯. (এসব প্রশ্নের মাধ্যমে) এরা (আসলে) যে বিষয়টির জন্যে অপেক্ষা করছে, তা তো হবে একটি মহাগর্জন, তা এদের (হঠাৎ করে) পাকড়াও করবে এবং (তখনো দেখা যাবে) তারা (এ ব্যাপারে) বাকবিতন্ডা করেই চলেছে ।

৫০. (এ সময়) তারা (শেষ) অসিয়তটুকু পর্যন্ত করে যেতে সক্ষম হবে না, না তাদের আপন পরিবার পরিজনদের কাছে (আর) কোনোদিন ফিরিয়ে আনা হবে।

৫১. যখন (দ্বিতীয় বার) শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে তখন মানুষগুলো সব নিজেদের কবর থেকে বেরিয়ে নিজেদের মালিকের দিকে ছুটতে থাকবে।

৫২. তারা (হতভম্ব হয়ে একে অপরকে) বলবে, হায় (কপাল আমাদের)! কে আমাদের ঘুম থেকে (এমনি করে ) জাগিয়ে তুললো (এ সময় ফেরেশতারা বলবে), এ হচ্ছে তাই (কেয়ামত), দয়াময় আল্লাহ তায়ালা (তোমাদের কাছে) যার ওয়াদা করেছিলেন, নবী রসুলরাও (এ ব্যাপারে) সত্য কথা বলেছিলেন।

৫৩. (মুলত) এ (কেয়ামত অনুষ্ঠান)-টি (শিঙ্গার) এক মহাগর্জন ছাড়া আর কিছুই নয়, এ গর্জনের পর সাথে সাথে সবাইকে (হাশরের ময়দানে) আমার সামনে এনে হাযির করা হবে।

৫৪. অতঃপর (ঘোষণা হবে), আজ কারও প্রতি (বিন্দুমাত্রও) যুলুম করা হবে না, (আজ) তোমাদের শুধু সেটুকুই প্রতিদান দেয়া হবে যা তোমরা (দুনিয়ায়) করে এসেছো ।

৫৫. (সেদিন) অবশ্যই জান্নাতের অধিবাসীরা মহা আনন্দে বিভোর থাকবে,

৫৬. তারা এবং তাদের সংগী-সংগিনীরা (আরশের) সুশীতল ছায়ায় সুসজ্জিত আসনের ওপর হেলান দিয়ে (বসে) থাকবে।

৫৭. সেখানে তাদের জন্যে (মজুদ) থাকবে (নানা প্রকারের) ফলমুল, (আরো থাকবে) তাদের জন্যে তাদের কাঙ্ক্ষিত (ও বাঞ্ছিত) সব কিছু,

৫৮. পরম দয়ালু মালিকের পক্ষ থেকে তাদের (স্বাগত জানিয়ে) বলা হবে, (তোমাদের ওপর) সালাম ( বর্ধিত হোক)।

৫৯. (অপরদিকে পাপীদের বলা হবে,) হে অপরাধীরা, তোমরা (আজ আমার ঈমানদার বান্দাদের কাছ থেকে) আলাদা হয়ে যাও।

৬০. হে বনী আদম, আমি কি তোমাদের (এ মর্মে) নির্দেশ দেইনি যে, তোমরা শয়তানের গোলামী করো না, কেননা সে হচ্ছে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন,

৬১. (আমি কি তোমাদের একথা বলিনি,) তোমরা শুধু আমারই এ বাদাত করো, (কেননা) এটিই হচ্ছে সহজ সরল পথ।

৬২. (আর শয়তান) সে তো (তোমাদের আগেও) অনেক লোককে (এভাবে) পথভ্রষ্ট করে দিয়েছিলো; (তা দেখেও) তোমরা কি বুঝতে পারলে না?

৬৩. (হ্যাঁ,) এ (হচ্ছে) সেই জাহান্নাম, যার ওয়াদা তোমাদের সাথে (বার বার ) করা হয়েছিলো ।

৬৪. আজ (সবাই মিলে) তাতে গিয়ে প্রবেশ করো, যা (দুনিয়ার জীবনে) তোমরা অস্বীকার করছিলে!

৬৫. আজ আমি তাদের মুখের ওপর সীলমোহর দেবো, (আজ) তাদের হাতগুলো আমার সাথে কথা বলবে, তাদের পা-গুলো (আমার কাছে) সাক্ষ্য দেবে, এরা কি কাজ করে এসেছে ।

৬৬. (অথচ) আমি যদি চাইতাম, (দুনিয়ায়) আমি এদের (চোখ থেকে) দৃষ্টিশক্তি বিলোপই করে দিতাম, তেমনটি করলে (তুমিই বলো) এরা কিভাবে (তখন চলার পথ) দেখে নিতো!

৬৭. (তাছাড়া) যদি আমি চাইতাম তাহলে (কুফরীর কারণে) তাদের নিজ নিজ জায়গায়ই তাদের আকৃতি বিনষ্ট করে দিতে পারতাম, সে অবস্থায় এরা সামনের দিকেও যেতে পারতো না, আবার পেছনেও ফিরে আসতে পারতো না!

৬৮. যাকেই আমি দীর্ঘ জীবন দান করি, তাকেই আমি সৃষ্টিগত (দিক থেকে) তার প্রাথমিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাই; (এটা দেখেও) কি তারা বুঝতে পারে না (কে তাদের দেহে এ পরিবর্তনগুলো ঘটাচ্ছে)?

৬৯. (তোমরা এও জেনে রেখো,) আমি এ (রসুল)-কে কাব্য (রচনা) শেখাইনি এবং এটা তাঁর (নবী মর্যাদার) পক্ষে শোভনীয়ও নয়; (আর তাঁর আনীত গ্রন্থ) তা তো হচ্ছে একটি উপদেশ ও সুস্পষ্ট কোরআন,

৭০. যাতে করে সে তা দ্বারা যে (অন্তর) জীবিত তাকে (জাহান্নামের ব্যাপারে) সতর্ক করে দিতে পারে এবং (যা দ্বারা) কাফেরদের ওপর শাস্তির ঘোষণা সাব্যস্ত হয়ে যায়।

৭১. এরা কি লক্ষ্য করে না, আমার নিজের হাত দিয়ে বানানো জিনিসপত্রের মধ্য থেকে আমি তাদের (কল্যাণের) জন্যে পশু পয়দা করেছি, আর (এখন) তারা (নাকি) এগুলোর মালিক হয়ে বসেছে!

৭২. (অথচ) আমি এগুলো তাদের বশীভূত করে দিয়েছি, এর কিছু হচ্ছে তাদের বাহন আর কিছু এমন যার (গোশত) থেকে তারা খাদ্য গ্রহণ করে।

৭৩. তাদের জন্যে তার মধ্যে (আরো) উপকারিতা রয়েছে। রয়েছে পানীয় বস্তুও; তবুও কি তারা (তার) শোকর আদায় করে না (যিনি তাদের এগুলো দান করেছেন)!

৭৪. (এ সত্ত্বেও) তারা আল্লাহ তায়ালার বদলে অন্যদের মাবুদ বানায়, (তাও) এ আশায়, (তাদের পক্ষ থেকে) এদের সাহায্য করা হবে!

৭৫. (অথচ) তারা তাদের কোনো রকম সাহায্য করার ক্ষমতাই রাখে না, বরং (কেয়ামতের দিন তাদের) সবাই দলবদ্ধভাবে (জাহান্নামে এসে) জড়ো হবে।

৭৬. (অতএব, হে নবী,) এদের (এসব জাহেলী) কথাবার্তা যেন তোমাকে উদ্বিগ্ন না করে। অবশ্যই আমি জানি যা কিছু এরা গোপন করে এবং যা কিছু প্রকাশ্যে বলে বেড়ায়।

৭৭. এ মানুষগুলো কি দেখে না, আমি তাদের একটি (ক্ষুদ্র) শুক্রকীট থেকে পয়দা করেছি, অথচ (সৃষ্টি হতে না হতেই ক্ষুদ্র কীটের) সে (মানুষটিই আমার সৃষ্টির ব্যাপারে) খোলাখুলি বিতন্ডাকারী হয়ে পড়লো!

৭৮. সে আমার (সৃষ্টি ক্ষমতা) সম্পর্কে (নানা) কথা রচনা করতে শুরু করলো (এবং এক সময়) সে (লোকটি) তার নিজ সৃষ্টি (কৌশলই) ভুলে গেলো; সে বললো, কে (মানুষের এ) হাড় পুনরায় জীবিত করবে যখন তা পচে গলে যাবে!

৭৯. (হে নবী,) তুমি (এদের) বলো, হ্যাঁ, তাতে প্রাণ সঞ্চার তিনিই করবেন যিনি প্রথম বার এতে জীবন দিয়েছিলেন; এবং তিনি সমস্ত কিছুর সৃষ্টি (কৌশল) সম্পর্কে সম্যক অবগত রয়েছেন,

৮০. তিনি তোমাদের জন্যে সবুজ (সতেজ) বৃক্ষ থেকে আগুন উৎপাদন (প্রক্রিয়া সম্পন্ন) করেছেন এবং তা দ্বারাই তোমরা (আজ) আগুন জ্বালাচ্ছো ।

৮১. যিনি নিজের ক্ষমতাবলে (একবার) আকাশমন্ডল ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি (পুনরায়) তাদেরই মতো কিছু সৃষ্টি করতে সক্ষম নন? (হ্যাঁ) নিশ্চয়ই তিনি মহাস্রষ্টা ও সর্বজ্ঞ |
৮২. তিনি যখন কিছু একটা (সৃষ্টি) করতে ইচ্ছা করেন তখন কেবল এটুকুই বলেন 'হও' অতঃপর তা সাথে সাথে (তৈরী) হয়ে যায়।

৮৩. অতএব, পবিত্র ও মহান সে আল্লাহ তায়ালা, যিনি প্রত্যেক বিষয়ের ওপর সার্বভৌম ক্ষমতার একচ্ছত্র মালিক এবং তাঁর কাছেই (একদিন) তোমাদের সবাইকে ফিরে যেতে হবে।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url