আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা ফাতের’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা ফাতের | Surah Fatir | سورة فاط


সূরা ফাতের’এর বাংলা অনুবাদ


সূরা ফাতের, মক্কায় অবতীর্ণ আয়াত ৪৫ রুকু ৫

সূরা ফাতের’এর বাংলা অনুবাদ



রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে

১. সব তারীফ আল্লাহ তায়ালার জন্যে, যিনি আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিকর্তা, যিনি (স্বীয়) বাণীবাহক (ফেরেশতা)-দের সৃষ্টিকর্তা, (যারা) দু'দুই, তিন তিন ও চার চার পাখাবিশিষ্ট (শক্তির প্রতীক); তিনি চাইলে (এ) সৃষ্টির মাঝে (তাদের ক্ষমতা) আরো বাড়িয়ে দিতে পারেন; অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সব বিষয়ের ওপর সর্বময় ক্ষমতার মালিক ।

২. তিনি মানুষের জন্যে কোনো অনুগ্রহের পথ খুলতে চাইলে কেউই তার (সে) পথরোধকারী নেই, (আবার) তিনি যা কিছু বন্ধ করে রাখেন তারপর তা কেউই তার জন্যে (পুনরায়) পাঠাতে পারে না, তিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রবল প্রজ্ঞাময় ।

৩. হে মানুষ, তোমরা তোমাদের ওপর আল্লাহ তায়ালার নেয়ামতসমুহের কথা স্মরণ করো; আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কি তোমাদের আর কোনো স্রষ্টা আছে যে তোমাদের আসমান ও যমীন থেকে রেযেক সরবরাহ করে; তিনি ছাড়া (তোমাদের) আর কোনোই মাবুদ নেই, তারপরও তোমরা কোথায় কোথায় ঠোকর খাচ্ছো?

৪. (হে নবী,) যদি এরা তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে (তাহলে উদ্বিগ্ন হয়ো না, কেননা), তোমার আগেও নবীদের (এভাবে) মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়েছিলো; আর সব কিছু তো আল্লাহ তায়ালার কাছেই প্রত্যাবর্তিত হবে ।

৫. হে মানুষ, (আখেরাত সম্পর্কিত) আল্লাহ তায়ালার ওয়াদা অবশ্যই সত্য, সুতরাং দুনিয়ার এ জীবন যেন তোমাদের কোনোদিনই প্রতারিত করতে না পারে | কোনো প্রতারক যেন তোমাদের আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে কখনো ধোকায় ফেলতে না পারে (সে বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকবে) ।

৬. শয়তান হচ্ছে তোমাদের শত্রু, অতএব তোমরা তাকে শত্রু হিসেবেই গ্রহণ করো; সে তার দলবলদের এ জন্যেই আহ্ববান করে যেন তারা (তার আনুগত্য করে) জাহান্নামের বাসিন্দা হয়ে যেতে পারে;

৭. যারা (আল্লাহ তায়ালাকে) অস্বীকার করে তাদের জন্যে এক কঠিন শাস্তি রয়েছে, (অপরদিকে) যারা (তাঁর ওপর) ঈমান আনে এবং ভালো কাজ করে, তাদের জন্যে রয়েছে (তোমার মালিকের) ক্ষমা ও মহান প্রতিদান।

৮. অতঃপর সে ব্যক্তি, যার খারাপ কর্মকান্ড (তার চোখের সামনে) শোভন করে রাখা হয়েছে, সে অবশ্য তাকে উত্তম (কাজ) হিসেবেই দেখতে পায়; নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা যাকে চান (তাকে) গোমরাহ করেন, আবার যাকে চান (তাকে) তিনি হেদায়াত দান করেন, তাই (হে নবী,) তাদের ওপর আক্ষেপ করতে গিয়ে (দেখো,) তোমার জীবন যেন বিনষ্ট হয়ে না যায় (তুমি ধৈর্য ধারণ করো, কেননা); ওরা যা কিছু করছে আল্লাহ তায়ালা তা ভালো করেই জানেন।

৯. আল্লাহ তায়ালাই সেই মহান সত্তা, যিনি (তোমাদের জন্যে) বায়ু প্রেরণ করেন, অতঃপর তা মেঘমালাকে উড়িয়ে নিয়ে যায়, পরে তা আমি (এক) নির্জীব ভূখন্ডের দিকে নিয়ে যাই, এরপর (এক পর্যায়ে) তা দিয়ে যমীনকে তার নির্জীব হওয়ার পর পুনরায় আমি জীবন্ত করে তুলি; ঠিক এভাবেই (একদিন মানুষেরও) পুনরুত্থান (হবে) ।

১০. (অতএব) যদি কেউ মান মর্যাদা কামনা করে (তার জানা উচিত), যাবতীয় মান মর্যাদা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্যেই; তাঁর দিকে শুধু পবিত্র বাক্যই উঠে আসতে পারে, আর নেক কাজই তা (উচ্চাসনে) ওঠায়; যারা (সত্যের বিরুদ্ধে) নানা ধরনের মন্দ কাজের ফন্দি আঁটে, তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর আযাব; তাদের সব চক্রান্ত চুড়ান্তভাবে ব্যর্থ হবে ।

১১. আল্লাহ তায়ালাই তোমাদের মাটি থেকে পয়দা করেছেন, অতঃপর একবিন্দু শুক্র থেকে (তিনি জীবনের সুত্রপাত ঘটিয়েছেন), এরপর তোমাদের তিনি (নর নারীর) জোড় বানিয়েছেন; (এখানে) কোনো নারীই গর্ভবতী হয় না এবং সে কোনো সন্তানও প্রসব করে না, যার জ্ঞান আল্লাহ তায়ালার কাছে (পুর্বাহ্নেই মজুদ) থাকে না; (আবার) কারো বয়স একটু বাড়ানো হয় না এবং একটু কমানোও হয় না, যা কোনো গ্রন্থে (সংরক্ষিত) নেই; নিঃসন্দেহে এটা আল্লাহ তায়ালার জন্যে নিতান্ত সহজ ব্যাপার।

১২. দুটো (পানির) সমুদ্র এক সমান নয়, একটির পানি সুমিষ্ট ও সুপেয়, অন্যটি হচ্ছে লোনা ও বিস্বাদ; তোমরা (এর) প্রত্যেকটি থেকেই (মাছ শিকার করে তার) তাজা গোশত আহার করো এবং (মুক্তার) অলংকার বের করে আনো এবং তোমরা আরও দেখতে পাও কিভাবে সেখানে জলযানসমুহ পানি চিরে চলাচল করে, যাতে করে তোমরা আল্লাহ তায়ালার দেয়া রেযেক অনুসন্ধান করতে পারো এবং যাতে করে (তাঁর প্রতি) তোমরা কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারো।

১৩. তিনিই রাতকে দিনের ভেতর এবং দিনকে রাতের ভেতর প্রবেশ করান, তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে নিয়ন্ত্রণ করেন, এরা সবাই এক সুনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত আবর্তন করবে; আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন তোমাদের সবার মালিক, সার্বভৌমত্ব তাঁর জন্যেই, তাঁকে বাদ দিয়ে তোমরা অন্য যেসব ( মাবুদ)-কে ডাকো তারা তো তুচ্ছ একটি (খেজুরের) আঁটির বাইরের ঝিল্লিটির মালিকও নয়।

১৪. যদি তোমরা তাদের ডাকো (প্রথমত ) তারা তো শুনবেই না, যদি তারা তা শোনেও তবে তারা তোমাদের ডাকের কোনো উত্তর দেবে না; (উপরন্তু) কেয়ামতের দিন তারা (নিজেরাই) তোমাদের এ শেরেক (-এর ঘটনা) অস্বীকার করবে; (এ সম্পর্কে) একমাত্র সুবিজ্ঞ আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কেউই তোমাকে কিছু অবহিত করতে পারবে না ।

১৫. হে মানুষ, তোমরা সবাই আল্লাহ তায়ালার সামনে অভাবগ্রস্থ, আর আল্লাহ তায়ালা সম্পূর্ণ অভাবমুক্ত, (যাবতীয়) প্রশংসার মালিক।

১৬. তিনি যদি চান তাহলে (দুনিয়ার বুক থেকে) তোমাদের (ওঠিয়ে নিয়ে যেতে পারেন এবং তোমাদের জায়গায় নতুন এক সৃষ্টিকেও তিনি নিয়ে আসতে পারেন,

১৭. আর এ (কাজ)-টি আল্লাহ তায়ালার জন্যে মোটেই কঠিন নয়।

১৮. (কেয়ামতের দিন) কেউ কারো (গুনাহের) বোঝা বইবে না, কোনো ব্যক্তির ওপর (গুনাহের) বোঝা ভারী হলে সে যদি (অন্য কাউকে) তা বইবার জন্যে ডাকে, তাহলে তার কাছ থেকে বিন্দুমাত্রও তা সরানো হবে না, (যাকে সে ডাকলো) সে (তার) নিকটাত্মীয় হলেও নয়; (হে নবী,) তুমি তো কেবল সে লোকদেরই (জাহান্নাম থেকে) সাবধান করতে পারো যারা না দেখেই তাদের মালিককে ভয় করে, (উপরন্তু) যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে; কেউ নিজের পরিশুদ্ধি সাধন করতে চাইলে সে তা করবে সম্পুর্ন তার (নিজস্ব কল্যাণের) জন্যে; চুড়ান্ত প্রত্যাবর্তন তো আল্লাহ তায়ালার দিকেই হবে।

১৯. একজন চক্ষুষ্মান ব্যক্তি ও একজন অন্ধ ব্যক্তি কখনো সমান হতে পারে না।

২০. না (কখনো) আঁধার ও আলো (সমান হতে পারে),

২১. ছায়া এবং রোদও (তো সমান) নয়,

২২. (একইভাবে) একজন জীবিত মানুষ এবং একজন মৃত মানুষও সমান নয়; আল্লাহ তায়ালা যাকে ইচ্ছা তাকে (ভালো কথা) শোনান, তুমি কখনো এমন মানুষদের কিছু শোনাতে পারবে না যারা কবরের অধিবাসী (হওয়ার মতো ভান করে)।

২৩. (আসলে) তুমি তো (জাহান্নামের) একজন সতর্ককারী বৈ আর কিছুই নও।

২৪. অবশ্যই আমি তোমাকে সত্য (দ্বীন)-সহ একজন সুসংবাদদাতা ও (জাহান্নামের) সতর্ককারীরূপেই পাঠিয়েছি; কখনো কোনো উম্মত এমন ছিলো না, যার জন্যে কোনো না কোনো একজন) সতর্ককারী অতিবাহিত হয়নি!

২৫. এরা যদি তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে তবে (এর জন্যে তুমি উৎকণ্ঠিত হয়ো না,) এদের আগের লোকেরাও (নবীদের) মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলো, যদিও তাদের নবীরা তাদের কাছে (নবুওতের) দীপ্তিমান গ্রন্থ নিয়ে এসেছিলো!

২৬. অতঃপর যারা (নবীদের) অস্বীকার করেছে, আমি তাদের কঠোরভাবে পাকড়াও করেছি, কতো ভয়ংকর ছিলো আমার আযাব!

২৭. হে (মানুষ,) তুমি কি (এ বিষয়টি কখনো) চিন্তা করো না, আল্লাহ তায়ালা (কিভাবে) আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর এ (পানি) দ্বারা আমি ( যমীনের বুকে) রং-বেরংয়ের ফলমুল উদগত করি, (এখানে) পাহাড়সমুহও রয়েছে (নানা রংয়ের, কোনোটা) সাদা (আবার কোনোটা) লাল, এর রংও (আবার) বিচিত্র রকমের, কোনোটা (সাদাও নয়, লালও নয়; বরং) নিকষ কালো।

২৮. একইভাবে মানুষ, (যমীনের ওপর) বিচরণশীল জীবজন্তু এবং পশুসমুহও রয়েছে নানা রংয়ের; আল্লাহ তায়ালাকে তার বান্দাদের মঝে সেসব লোকেরাই বেশী ভয় করে যারা (এ সৃষ্টি নৈপুণ্য সম্পর্কে ভালো করে) জানে, আল্লাহ তায়ালা মহাপরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।

২৯. যারা আল্লাহ তায়ালার কেতাব পাঠ করে, নামায প্রতিষ্ঠা করে, আমি তাদের যে রেযেক দিয়েছি তা থেকে যারা (আমারই উদ্দেশ্যে) গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে দান করে, (মুলত) তারা এমন এক ব্যবসায় (নিয়োজিত) আছে যা কোনোদিন (তাদের জন্যে) লোকসান বয়ে আনবে না;

৩০. কেননা, আল্লাহ তায়ালা তাদের কাজের পুরোপুরি বিনিময় দান করবেন, নিজ অনুগ্রহে তিনি তাদের (পাওনা) আরো বাড়িয়ে দেবেন; অবশ্যই তিনি ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।

৩১. (হে নবী,) যে কেতাব আমি তোমার ওপর ওহী করে পাঠিয়েছি তাই একমাত্র সত্য, এর আগের যেসব (কেতাব) রয়েছে (এ কেতাব) তার সমর্থনকারী; অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের ভালো করেই জানেন (এবং তাদের ভালো করেই) তিনি দেখেন।

৩২. অতঃপর আমি আমার বান্দাদের মাঝে তাদের সে কেতাবের উত্তরাধিকারী বানিয়েছি, আমি যাদের এ কাজের জন্যে বাছাই করে নিয়েছি, তারপর তাদের কিছু লোক নিজেই নিজের ওপর যালেম হয়ে বসলো, তাদের মধ্যে কিছু মধ্যপন্থীও ছিলো, তাদের মাঝে আবার এমন কিছু লোক (ছিলো) যারা আল্লাহর মেহেরবানীতে নেক কাজে ছিলো অগ্রগামী; (আসলে) এটাই হচ্ছে (আল্লাহর) সবচেয়ে বড়ো অনুগ্রহ।

৩৩. (সেদিন) তারা এক চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশ করবে, যেখানে তাদের সোনায় বাঁধানো ও মুক্তাখচিত কাঁকন পরানো হবে, সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের।

৩৪. (সেদিন) তারা বলবে, আল্লাহর শোকর, যিনি আমাদের কাছ থেকে (যাবতীয় দুঃখ) কষ্ট দুরীভূত করে দিয়েছেন; অবশ্যই আমাদের মালিক ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী,

৩৫. যিনি তাঁর একান্ত অনুগ্রহ দিয়ে আমাদের (এতো সুন্দর) নিবাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, যেখানে আমাদের কোনো রকম কষ্ট স্পর্শ করবে না, স্পর্শ করবে না আমাদের কোনো রকম ক্লান্তি ও অবসাদ)!

৩৬. (অপরদিকে) যারা (দুনিয়ায়) আল্লাহ তায়ালাকে অস্বীকার করেছে তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন, (তখন) তারা মরে যাবে তাদের প্রতি এমন আদেশও কার্যকর হবে না, তাছাড়া তাদের আযাবও কোনো রকম লঘু করা হবে না; আমি প্রতিটি অকৃতজ্ঞ ব্যক্তিকে এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি,

৩৭. (আযাবের কষ্টে) তারা সেখানে আর্তনাদ করে বলবে, হে আমাদের মালিক, তুমি (আজ) আমাদের এ (আযাব থেকে) বের করে দাও, আমরা ভালো কাজ করবো, (আগে) যা কিছু করতাম তা আর করবো না; (আল্লাহ তায়ালা বলবেন,) আমি কি তোমাদের দুনিয়ায় এক দীর্ঘ জীবন দান করিনি? সাবধান হতে চাইলে কেউ কি সাবধান হতে পারতো না? (তাছাড়া) তোমাদের কাছে তো সতর্ককারী (নবী)-ও এসেছিলো; সুতরাং (এখন) তোমরা আযাবের মজা উপভোগ করো, (মুলত) যালেমদের (সেখানে) কোনোই সাহায্যকারী নেই।

৩৮. নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা আসমানসমূহ ও যমীনের (যাবতীয় দেখা) অদেখা বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবগত রয়েছেন, (এমনকি মানুষের) মনের ভেতরে যা কিছু লুকিয়ে আছে সে সম্পর্কেও তিনি ভালো করে জানেন।

৩৯. তিনিই (এ) যমীনে তোমাদের (তাঁর) প্রতিনিধি বানিয়েছেন; (এখন) যে কোনো ব্যক্তিই কুফরী করবে, তার কুফরী (ও কুফরীর ফলাফল) তার নিজের ওপরই (পড়বে); কাফেরদের জন্যে (এ) কুফরী কেবল (তাদের প্রতি) তাদের মালিকের ক্রোধই বৃদ্ধি করে, (তদুপরি) কাফেরদের এ কুফরী (তাদের নিজেদের) বিনাশ ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করে না ।

৪০. (হে নবী,) তুমি (এদের) বলো, তোমরা (সেসব) শরীকদের কথা ভেবে দেখেছো কি? যাদের তোমরা আল্লাহর বদলে ডাকো, আমাকে দেখাও তো তারা এ যমীনের কিছু সৃষ্টি করেছে কিনা কিংবা আকাশমণ্ডল সৃষ্টির (পরিকল্পনার) মাঝে তাদের কোনো অংশ আছে কিনা না আমি তাদের কোনো কেতাব দান করেছি যে, (এ জন্যে ) তার থেকে কোনো দলীল প্রমাণের ওপর তারা নির্ভর করতে পারে, বরং এরা হচ্ছে যালেম, এরা একে অপরকে প্রতারণামুলক প্রতিশ্রুতিই দিয়ে থাকে।

৪১. (বস্তুত) আল্লাহ তায়ালাই আসমানসমূহ ও যমীনকে স্থির করে (ধরে) রেখেছেন, যাতে করে ওরা (স্বীয় কক্ষপথ থেকে) বিচ্যুত না হতে পারে, যদি (কখনো) ওরা কক্ষচ্যুত হয়েই পড়ে তাহলে (তুমিই বলো), আল্লাহ তায়ালার পর এমন কে আছে যে এদের উভয়কে (পুনঃ) স্থির করতে পারবে, অবশ্যই তিনি মহা সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।

৪২. এরাই (এক সময়) সুদৃঢ় কসম করে বলতো, যদি তাদের কাছে (আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে) কোনো সতর্ককারী (নবী) আসে, তাহলে তারা অন্য সকল জাতি অপেক্ষা (তার প্রতি) অধিকতর আনুগত্যশীল হবে, অতঃপর (সত্যিই) যখন তাদের কাছে সতর্ককারী (নবী) এলো, তখন (দেখা গেলো, তার আগমন) এদের (সত্য-) বিমুখতাই শুধু বাড়িয়ে দিলো,

৪৩. বৃদ্ধি পেলো (আল্লাহর) যমীনে এদের অহংকার প্রকাশ ও (তাতে) কুটিল ষড়যন্ত্র, কুটিল ষড়যন্ত্র (জাল অবশ্য ) ষড়যন্ত্রকারী ছাড়া অন্য কাউকে স্পর্শ করে না, তবে কি তারা অতীতে (ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে) যা কিছু ঘটেছে (এখনও) তেমন ধরনের কিছুর প্রতীক্ষা করছে? (যদি তাই হয়, তবে শুনে রাখো,) তুমি (এদের বেলায়ও) আল্লাহর বিধানের কোনো পরিবর্তন দেখবে না, না কখনো তুমি (এ ব্যাপারে) আল্লাহর বিধান নড়াচড়া অবস্থায় (দেখতে) পাবে ।

৪৪. তারা কি যমীনে পরিভ্রমণ করেনি, তারা কি তাদের আগের (বিদ্রোহী) লোকদের পরিণাম দেখেনি, তা কেমন (ভয়াবহ) ছিলো! অথচ তারা এদের তুলনায় ছিলো অনেক বলশালী; (কিন্তু আল্লাহর সিদ্ধান্ত যখন এলো, তখন) আসমানসমুহ ও যমীনের কোনো কিছুই তাঁকে ব্যর্থ করে দিতে পারলো না; অবশ্যই তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।

৪৫. আল্লাহ তায়ালা মানুষকে তার (বিদ্রোহমূলক) আচরণের জন্যে পাকড়াও করতে চাইলে ভূপৃষ্ঠের কোনো একটি জীব জন্তুকেও তিনি রেহাই দিতেন না, কিন্তু তিনি তাদের একটি সুনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দিয়ে থাকেন, অতঃপর একদিন যখন তাদের (নির্দিষ্ট) সময় আসবে (তখন তিনি তাদের পাকড়াও করবেন), আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই তাঁর বান্দাদের যাবতীয় কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করেন।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url