আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সুরা আল মোমতাহেনা’এর বাংলা অনুবাদ | সুরা আল মোমতাহেনা | Surah Al Mumtahinah | الممتحنة


সুরা আল মোমতাহেনা’এর বাংলা অনুবাদ

সুরা আল মোমতাহেনা, মদীনায় অবতীর্ণ আয়াত ১৩, রুকু ২

সুরা আল মোমতাহেনা


রহমান রহীম আল্লাহ তা'আলা র নামে


১. হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, তোমরা (কখনো) আমার ও তোমাদের দুশমনদের নিজেদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না। (এটা কেমন কথা যে) তোমরা তাদের প্রতি বন্ধুত্ব দেখাচ্ছো, (অথচ) তোমাদের কাছে যে সত্য (দ্বীন) এসেছে তারা তা অস্বীকার করছে, তারা আল্লাহর রসূল এবং তোমাদের (তোমাদের জন্মভূমি থেকে) বের করে দিচ্ছে শুধু এ কারণে, তোমরা তোমাদের মালিক আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছো; যদি তোমরা (সত্যিই) আমার পথে জেহাদ ও আমার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে (ঘরবাড়ি থেকে) বেরিয়ে থাকো, তাহলে কিভাবে তোমরা চুপে চুপে তাদের সাথে (আবার) বন্ধুত্ব পাতাতে পারো! তোমরা যে কাজ গোপনে করো আর যে কাজ প্রকাশ্যে করো আমি তা সম্যক অবগত আছি; তোমাদের মধ্যে যদি কেউ (দুশমনদের সাথে গোপনে বন্ধুত্ব গড়ার) এ কাজটি করে, তাহলে (বুঝতে হবে) সে (দ্বীনের) সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে।

২. অথচ এরা যদি তোমাদের কাবু করতে পারে, তাহলে এরা তোমাদের শত্রুতে পরিণত হবে (শুধু তাই নয়), এরা নিজেদের হাত ও কথা দিয়ে তোমাদের অনিষ্ট সাধন করবে, (আসলে) এরা তো এটাই চায় যে, তোমরাও তাদের মতো কাফের হয়ে যাও;

৩. কেয়ামতের দিন তোমাদের আত্মীয় স্বজন ও সন্তান সন্ততি তোমাদের কোনোই উপকারে আসবে না, সেদিন আল্লাহ তা'আলা তোমাদের মাঝে বিচার ফয়সালা করে দেবেন; তোমরা যা করো আল্লাহ তা'আলা তার সব কিছুই দেখেন।

৪. তোমাদের জন্যে ইবরাহীম ও তার অনুসারীদের (ঘটনার) মাঝে রয়েছে (অনুকরণযোগ্য) আদর্শ, যখন তারা তাদের জাতিকে বলেছিলো, তোমাদের সাথে এবং তোমরা যাদের আল্লাহর বদলে উপাসনা করো তাদের সাথে আমাদের কোনোই সম্পর্ক নেই, আমরা তোমাদের এ সব দেবতাদের অস্বীকার করি| (একারণে) আমাদের ও তোমাদের মাঝে চিরদিনের জন্যে এক শত্রুতা ও বিদ্বেষ শুরু হয়ে গেলো যতোদিন তোমরা একমাত্র আল্লাহ তা'আলা কে মাবুদ (বলে) স্বীকার না করবে, কিন্তু (এ ব্যাপারে) ইবরাহীমের পিতার উদ্দেশে বলা এ কথাটি (ব্যতিক্রম, যখন সে বলেছিলো), আমি তোমার জন্যে (আল্লাহর দরবারে) অবশ্যই ক্ষমা প্রার্থনা করবো, অবশ্য আল্লাহর কাছে থেকে (ক্ষমা আদায় করার) আমার কোনোই এখতিয়ার নেই; (ইবরাহীম ও তার অনুসারীরা বললো,) হে আমাদের মালিক, আমরা তো কেবল তোমার ওপর ভরসা করেছি এবং আমরা তোমার দিকেই ফিরে এসেছি এবং (আমাদের) তো তোমার দিকেই ফিরে যেতে হবে ।

৫. হে আমাদের মালিক, তুমি আমাদের (জীবনকে) কাফেরদের নিপীড়নের নিশানা বানিয়ো না, হে আমাদের মালিক, তুমি আমাদের গুনাহ খাতা ক্ষমা করে দাও, অবশ্যই তুমি পরাক্রমশালী ও পরম কুশলী।

৬. তাদের (জীবন চরিত্রের) মাঝে অবশ্যই তোমাদের জন্যে এবং সে লোকের জন্যে (অনুকরণযোগ্য) আদর্শ রয়েছে, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা'আলা এবং শেষ বিচারের দিনে কিছু পাবার আশা করে; আর যদি কেউ আল্লাহ তা'আলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় (সে যেন জেনে রাখে), আল্লাহ তা'আলা কারো মুখাপেক্ষী নন এবং তিনি সকল প্রশংসার মালিক।

৭. এটা অসম্ভব কিছু নয়, আল্লাহ তা'আলা তোমাদের এবং যাদের সাথে আজ তোমাদের শত্রুতা সৃষ্টি হয়েছে তাদের মাঝে (একদিন) বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেবেন; আল্লাহ তা'আলা তো (সবই) করতে পারেন; আল্লাহ তা'আলা ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।

৮. যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং কখনো তোমাদের নিজেদের বাড়িঘর থেকেও বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি দয়া দেখাতে ও তাদের সাথে ন্যায় আচরণ করতে আল্লাহ তা'আলা কখনো নিষেধ করেন না; অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।

৯. আল্লাহ তা'আলা কেবল তাদের সাথেই বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেছে এবং (একই কারণে) তোমাদের তারা ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে এবং তোমাদের উচ্ছেদ করার ব্যাপারে একে অন্যকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে, (এর পরও) যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে তারা অবশ্যই যালেম।

১০. হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, যখন কোনো ঈমানদার নারী হিজরত করে তোমাদের কাছে আসে, তখন তোমরা তাদের (ঈমানের ব্যাপারটা ভালো করে) পরখ করে নিয়ো; (যদিও) তাদের ঈমানের বিষয়টা আল্লাহ তা'আলা ই ভালো জানেন, অতঃপর একবার যদি তোমরা জানতে পারো তারা (আসলেই) ঈমানদার, তাহলে কোনো অবস্থায়ই তাদের তোমরা কাফেরদের কাছে ফেরত পাঠাবে না; কারণ (যারা ঈমানদার নারী) তারা তাদের (কাফের স্বামীদের) জন্যে (আর কোনো অবস্থায়ই) হালাল' নয় এবং (যারা কাফের) তারাও তাদের (ঈমানদার স্ত্রীদের) জন্যে হালাল নয়; (তবে এমন হলে) তোমরা তাদের (আগের স্বামীদের দেয়া) মোহরানার অংশ ফেরত দিয়ে দিয়ো; অতঃপর তোমরা (কেউ) যদি তাদের বিয়ে করো, তাহলে এতে তোমাদের কোনো গুনাহ হবে না, অবশ্য তোমাদের (এ জন্যে) তাদের মোহর আদায় করে দিতে হবে; (একইভাবে) তোমরাও কাফের নারীদের সাথে (দাম্পত্য) সম্পর্ক বজায় রেখো না, (এ ক্ষেত্রে) তোমরা তাদের যে মোহর দিয়েছো তা তাদের থেকে চেয়ে নাও, একই নিয়মে (যারা কাফের স্বামী) তারা তাদের (মুসলমান স্ত্রীদের) যে মোহর দিয়েছে তাও ফেরত চেয়ে নেবে; এটাই হচ্ছে আল্লাহর বিধান; এভাবেই তিনি তোমাদের মাঝে (এ বিষয়টির) ফয়সালা করে দিয়েছেন; আর আল্লাহ তা'আলা মহাজ্ঞানী ও পরম কুশলী।

১১. তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে কেউ যদি তোমাদের হাতছাড়া হয়ে কাফেরদের কাছে চলে যায় (পরে যখন সুযোগ আসবে), তখন যারা তাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে তাদের তারা যে পরিমাণ মোহর দিয়েছে তোমরাও তার সমপরিমাণ মোহর আদায় করে দেবে; তোমরা সে আল্লাহ তা'আলা কে ভয় করো, যাঁর ওপর তোমরা ঈমান এনেছো।

১২. হে নবী, যখন কোনো ঈমানদার নারী তোমার কাছে আসবে এবং এই বলে তোমার কাছে আনুগত্যের শপথ করবে, তারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তানদের হত্যা করবে না, নিজ হাত ও নিজ পায়ের মাঝখান সংক্রান্ত (বিষয় তথা অন্যের ঔরসজাত সন্তানকে নিজের স্বামীর বলে দাবী করার) মারাত্মক অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে আসবে না এবং কোনো সৎকাজে তোমার নাফরমানী করবে না, তাহলে তুমি তাদের আনুগত্য গ্রহণ করো এবং তাদের (আগের কার্যকলাপের) জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো; আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।

১৩. হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, আল্লাহ তা'আলা যে জাতির ওপর গযব দিয়েছেন তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না, তারা তো শেষ বিচারের দিন সম্পর্কে সেভাবেই নিরাশ হয়ে পড়েছে, যেমনিভাবে কাফেররা (তাদের) কবরের সাথীদের ব্যাপারে হতাশ হয়ে গেছে।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url