ইসরাইলি মেয়েরা কি সেদেশের নৃশংস সেনাদের ভালোবাসে?
পার্সটুডে-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নিরপেক্ষ গবেষকের মতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ইসরাইলিদের অদ্ভুত আচরণ থেকে বোঝা যায় ইসরাইলি সমাজ সমষ্টিগতভাবে মনোবিকারগ্রস্ত।
সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীরা যখন সাধারণভাবে ইসরাইলি ডেটিং অ্যাপে ক্লিক করে, তখন তারা প্রায়ই গাজার নৃশংস জায়নবাদী সেনাদের ছবি দেখতে পায়। ছবিগুলোতে ইউনিফর্ম পরিহিত হাস্যোজ্জ্বল সেনাদেরই বেশি দেখতে যাওয়া যায়। তাদের বেশিরভাগ ছবিই সূর্যাস্তের পটভূমিতে বন্দুক হাতে দেখতে পাওয়া যায়।
বেশিরভাগ প্রোফাইলে দেখা যাচ্ছে সামরিক ইউনিফর্ম পরা পুরুষদের বুকে বন্দুক এবং কেউ কেউ যুদ্ধক্ষেত্রে গোলাগুলিতে ব্যস্ত। স্নাইপাররা ক্যামেরার সামনে অকপটে পোজ দিচ্ছে এবং কিছু সেনা ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক সেনা একটি জ্বলন্ত ভবনের সামনে ইসরাইলি পতাকা মাটিতে গেড়ে হাসছে।
অন্য একটিতে, একজন সেনা ফিলিস্তিনিদের একটি বাড়ির দেয়ালে ঝোলানো মহিলাদের অন্তর্বাসের সামনে পোজ দিচ্ছেন। ওই বাড়ির বাসিন্দাদের সম্ভবত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে অথবা তাদেরকে সবচেয়ে খারাপভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ইসরাইলিরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের সামরিক কার্যকলাপগুলি ডেটিং অ্যাপস টিন্ডার এবং হিঞ্জে পোস্ট করে আসছে। তবে গাজা আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে।
যে কোনো হিংসাত্মক বিষয়বস্তু যেমন রক্ত, মৃত্যু, সহিংসতার চিত্র (মানুষ বা প্রাণীর বিরুদ্ধে) কিংবা অস্ত্রের ব্যবহার ইত্যাদির ছবি গ্রহণযোগ্য নয়।
"আক্রমনাত্মক বা হয়রানিমূলক, বিরক্তিকর, বিব্রতকর, ... সন্ত্রাস, অবমাননা, জাতিগত ঘৃণার উস্কানি ইত্যাদিসহ যে-কোন অবৈধ কার্যকলাপে সহায়তা করবে-এমন সব বিষয় পোস্ট করা নিষিদ্ধ।
আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরাও বিশ্বাস করেন যে, বেসামরিক ভবনে ইচ্ছাকৃত বোমা হামলা করা, ভাঙচুর করা, চুরি করা ইত্যাদির যেসব ছবি এই ডেটিং প্রোফাইলগুলোতে দেখানো হয়েছে তা যুদ্ধাপরাধের শামিল।
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলের রাস্তায় রাস্তায় অস্ত্রে ঢল নেমে এসেছে। ৭ অক্টোবরের পর থেকে অন্তত ১ লাখ ইসরাইলি অস্ত্র বহনের অনুমতি পেয়েছে। আরও প্রায় ২ লাখ মানুষ অস্ত্র বহনের অনুমতি লাভের অপেক্ষায় রয়েছে।
অনলাইন ডেটিং অ্যাপেও এই চরম সামরিকীকরণের ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে যুদ্ধের ইউনিফর্ম পরাকে ইসরাইলিদের গর্ব ও সম্মানের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ইসরাইলিদের অদ্ভুত সব আচরণ দেখে মনে হয় ইসরাইলি সমাজ একটি সমষ্টিগত মনোবিকারের মধ্যে রয়েছে।
গাজা কিংবা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম যেখানেই হোক না কেন ইসরাইলিদের মধ্যে এইসব হিংসাত্মক আচরণ লক্ষণীয়। একটি যুদ্ধ অঞ্চল থেকে সহিংসতার ভিডিও পোস্ট করা কিংবা দেখা এখন কেবল স্বাভাবিক ব্যাপার নয় বরং বিনোদনের মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধকে যখন স্বাভাবিক মনে করা হবে এবং যুদ্ধাপরাধীদেরকে যুদ্ধের নায়ক বা বীরে পরিণত করা হয় তখন তারা অবশ্যই ইসরাইলি মেয়েদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url