শিক্ষনীয় - ৩ || পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ঈসা (আ:) এর জন্মের বিস্মকর কাহিনী
কুরআনের গল্পঈসা (আ:) এর জন্ম, আল্লাহর কুদরতের নির্দশন
قَالَ کَذٰلِکِ ۚ قَالَ
رَبُّکِ هُوَ عَلَیَّ هَیِّنٌ ۚ وَ لِنَجۡعَلَهٗۤ اٰیَۃً لِّلنَّاسِ وَ رَحۡمَۃً مِّنَّا
ۚ وَ کَانَ اَمۡرًا مَّقۡضِیًّا ﴿۲۱﴾
সে বলল, ‘এভাবেই। তোমার রব বলেছেন, এটা আমার জন্য সহজ। আর যেন আমি তাকে করে দেই মানুষের জন্য নিদর্শন এবং আমার পক্ষ থেকে রহমত। আর এটি একটি সিদ্ধান্তকৃত বিষয়’।
সুরা মারিয়াম, আয়াত- ২১
মারইয়াম বললোঃ তুমি যদি আল্লাহকে ভয় কর - তবে আমি তোমা হতে দয়াময়ের আশ্রয় নিচ্ছি। সে বললোঃ আমি তো শুধু তোমার প্রতিপালক প্রেরিত তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করবার জন্য। মারইয়াম বললোঃ কেমন করে আমার পুত্র হবে! যখন আমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করে নাই ও আমি ব্যভিচারিণীও নই। সে বললোঃ এই রূপই হবে; তোমার প্রতিপালক বলেছেনঃ এটা আমার জন্য সহজসাধ্য এবং তাকে আমি এই জন্যে সৃষ্টি করবো, যেন সে হয় মানুষের জন্যে এক নিদর্শন ও আমার নিকট হতে এক অনুগ্রহ; এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার।
قَالَتۡ اَنّٰی یَکُوۡنُ
لِیۡ غُلٰمٌ وَّ لَمۡ یَمۡسَسۡنِیۡ بَشَرٌ وَّ لَمۡ اَکُ بَغِیًّا ﴿۲۰﴾
মারইয়াম বলল, ‘কিভাবে আমার পুত্র সন্তান হবে? অথচ কোন মানুষ আমাকে স্পর্শ করেনি। আর আমি তো ব্যভিচারিণীও নই’।
সুরা মারিয়াম, আয়াত- ২০
অতঃপর সে গর্ভে সন্তান ধারন করলো ও তৎসহ এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেলো। প্রসব বেদনা তাকে এক খেজুর বৃক্ষ তলে আসন নিতে বাধ্য করলো; সে বললোঃ হায়! এর পূর্বে আমি যদি মরে যেতাম ও লোকের স্মৃতি হতে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হতাম। ফেরেশতা তার নিম্ন পার্শ্ব হতে আহ্বান করে তাকে বললোঃ তুমি দুঃখ করো না, তোমার পাদদেশে তোমার প্রতিপালক এক নহর সৃষ্টি করেছেন। তুমি তোমার দিকে খেজুর গাছের কাণ্ড নাড়া দাও, ওটা তোমাকে সুপক্ক তাজা খেজুর দান করবে। সুতরাং আহার করো, পান করো ও চক্ষু জুড়িয়ে নাও; মানুষের মধ্যে কাউকেও যদি তুমি দেখো তখন বলোঃ আমি দয়াময়ের উদ্দেশ্যে মৌনতাবলম্বনের মানত করেছি; সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সাথে বাক্যালাপ করবো না।
فَاَجَآءَهَا الۡمَخَاضُ
اِلٰی جِذۡعِ النَّخۡلَۃِ ۚ قَالَتۡ یٰلَیۡتَنِیۡ مِتُّ قَبۡلَ هٰذَا وَ کُنۡتُ نَسۡیًا
مَّنۡسِیًّا ﴿۲۳﴾
অতঃপর প্রসব-বেদনা তাকে খেজুর গাছের কান্ডের কাছে নিয়ে এলো। সে বলল, ‘হায়! এর আগেই যদি আমি মরে যেতাম এবং সম্পূর্ণরূপে বিস্মৃত হতাম’!
সুরা মারিয়াম, আয়াত- ২৩
অতঃপর সে সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের নিকট উপস্থিত হলো; তারা বললোঃ হে মারইয়ম (আঃ) তুমি তো এক অদ্ভূত কাণ্ড করে বসেছো! হে হারুন ভগ্নী, তোমার পিতা অসৎব্যক্তি ছিল না এবং তোমার মাতাও ছিল না ব্যভিচারিণী। অতঃপর মারইয়ম (আঃ) ইঙ্গিতে সন্তানকে দেখালো; তারা বললোঃ যে কোলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলবো?
শিশুটি বললোঃ আমি তো আল্লাহর দাস; তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন, আমাকে নবী করেছেন। যেখানেই আমি থাকি না কেন, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যত দিন জীবিত থাকি, তত দিন নামাজ ও যাকাত আদায় করতে। আর আমার মাতার প্রতি অনুগত থাকতে এবং তিনি আমাকে করেন নাই উদ্ধত (অহংকারী) ও হতভাগ্য। আমার প্রতি ছিল শান্তি, যেদিন আমি জন্ম লাভ করেছি ও শান্তি থাকবে যেদিন আমার মৃত্যু হবে ও যেদিন আমি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবো।
فَکُلِیۡ وَ اشۡرَبِیۡ وَ قَرِّیۡ عَیۡنًا ۚ فَاِمَّا تَرَیِنَّ مِنَ
الۡبَشَرِ اَحَدًا ۙ فَقُوۡلِیۡۤ اِنِّیۡ نَذَرۡتُ لِلرَّحۡمٰنِ صَوۡمًا فَلَنۡ اُکَلِّمَ
الۡیَوۡمَ اِنۡسِیًّا ﴿ۚ۲۶﴾
‘অতঃপর তুমি খাও, পান কর এবং চোখ জুড়াও। আর যদি তুমি কোন লোককে দেখতে পাও তাহলে বলে দিও, ‘আমি পরম করুণাময়ের জন্য চুপ থাকার মানত করেছি। অতএব আজ আমি কোন মানুষের সাথে কিছুতেই কথা বলব না’।
সুরা মইরয়াম, আয়াত-২৬
এই মারইয়ম তনয় ঈসা (আঃ) ; আমি বললাম সত্য কথা, যে বিষয়ে তারা বিতর্ক করে। সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়, তিনি পবিত্র, মহিমাময়; তিনি যখন কিছু স্থির করেন তখন বলেনঃ 'হও' এবং তা হয়ে যায়। আল্লাহই আমার প্রতিপালক এবং তোমাদের প্রতিপালক, সুতরাং তাঁর ইবাদত করো, এটাই সরল পথ।
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url