দোয়া || শুধুমাত্র দোয়ার মাধ্যমেই ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে
দোয়া ব্যতিত অন্য কোন কিছুই ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারে না
দোয়ার গুরুত্ব
আপনার সকল কথা আল্লাহ তা'য়ালা
শুনেন, জানেন। আপনার অভিমান, আপনার আর্তনাদ, আপনার দুঃখ কষ্ট, আপনার গোপন যত ইচ্ছা,
স্বপ্ন সমস্ত কিছু মহান আল্লাহ জানেন। যা কিছু ঘটছে তা হয় আপনার ভাগ্যে পূর্বলিখিত
না হয় সেটা আপনার কর্মের প্রতিদান স্বরূপ ঘটছে। আর এই দু,টোই পরিবর্তন করা যায়
শুধুমাত্র দোয়ার দ্বারা। একমাত্র দোয়ার দ্বারাই দূর্ভাগ্য পরিবর্তন করা যায় এবং
শুধুমাত্র দোয়ার দ্বারাই আপনার কর্মের ফল স্বরূপ আপতিত হওয়া কোন খারাপী থেকে
পরিত্রাণ পাওয়া যায়। আলহামদুল্লিাহ।
আল্লাহ বলেছেন, আমি তো নিশ্চয়
নিকটবর্তী। আমি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং আমার বান্দারাও
যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে। আশা করা যায় তারা সঠিক পথে চলবে।
(সূরা বাকারাহ:১৮৬)
কিছু বিষয়ে আপনি না জেনে না বুঝে
মন খারাপ করেন, কিছু বিষয়ে আপনি খুশি হন, আনন্দিত হন, উভয়ই আল্লাহ জানেন। কোনটা আপনার
জন্য অধিক ভালো, কল্যাণকর তা আল্লাহ তা'য়ালা ই ভালো জানেন এবং বুঝেন।
আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তা'য়ালা
বলেছেন, হতে পারে কোন বিষয় তোমরা অপছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হতে
পারে কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন তোমরা
তা জান না। (সূরা বাকারাহ:২১৬)
জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে আল্লাহ
কে স্মরণ করুন, আবেগ দিয়ে ভালবেসে কেঁদেকেটে আল্লাহ কে ডাকুন। আপনার প্রতিটি ডাকে আল্লাহ
তা'য়ালা সাড়া দেবেন বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
আল্লাহ তা'য়ালা বলেছেন, তোমরা
আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। (সূরা মু'মিন/গাফির:৬০)
দোয়ার কতিপয় ফজিলত ও উপকারিতা
১। দু’আকারী ব্যক্তি নিজেকে অপরাধী
স্বীকার করে বিশুদ্ধ নিয়তে দু’আর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য ও পুরস্কার প্রাপ্ত হয়। নিয়তের
বিশুদ্ধতাই প্রত্যেকটি কাজ কবুলের পূর্বশর্ত।
২। দু’আর মধ্যে রয়েছে স্রষ্টার আনুগত্য ও হীনতা-দীনতার
প্রকাশ। মহান আল্লাহ সুরা আ’রাফের ৫৫ ও ৫৬ নং আয়াতে বলেন, তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে
ডাক কাকুতি মিনতি করে এবং অতিগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না। পৃথিবীকে
কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে ডাক, ভয় ও আশা সহকারে।
নিশ্চয় আল্লাহর দয়া/করুনা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।
৩। ইখলাছ তথা একাগ্রতার সঙ্গে আল্লাহ ডাক। আল্লাহ
বলেন, তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত আর কোনো ইলাহ নেই। অতএব তাকে ডাক একনিষ্ট ইবাদতের
মাধ্যম (সুরা মু’মিন আয়াত-৬৬)
৪। ধৈর্য এবং নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর সুন্দরতম নামের
উসিলায় বিনয়ে সহিত নীরবে দু’আ করা। আল্লাহ বলেন, তোমরা নামাজ এবং ধৈর্যের মাধ্যমে আমার
কাছে সাহায্য চাও।
৫। অযুর করে ক্বিবলামুখী হয়ে নেক আমলের মাধ্যমে দু’আ
করা এবং দু’আ কবুলের জন্য ব্যস্ত না হওয়া।
৬। দু’আর আবেদনের পাশাপাশি হারাম খাদ্য, পানীয়, বস্ত্র
বর্জন করে দু’রাকা’আত নামাজের পর আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের ওপর দুরূদ পড়ে দু’আ করা।
৭। সংকল্প ও আকুতির মাধ্যমে দু’আ কবুলের প্রবল
আশাবাদী হওয়া। হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন তোমরা দু’আ করবে তখন প্রার্থিত বিষয়টি লাভের বিষয়ে সুদৃঢ়
বিশ্বাস রাখবে এবং বলবে হে আল্লাহ! যদি তুমি চাও আমাকে প্রদান কর, কেননা আল্লাহকে বাধ্যকারী
কেউ নেই। (ছহীহ বুখারী)
কখন কোথায় কিভাবে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়
১। নামাজের সিজদায় এবং শেষ বৈঠকে তাশাহহুদের (আত্তাহিয়াতু)
পর
২। আযানের সময়, আযান ও ইক্বামতের
মধ্যবর্তী সময়
৩। নিরাপরাধ ব্যক্তি অত্যাচারিত
হওয়ার সময়
৪। জুমা’আর দিনে ইমামের মিম্বরে
বসা হতে নামাজ শেষ করার পর্যন্ত সময়
৫। শেষ রাতে এবং ফরয নামাজের পর
৬। রমযান মাস
৭। পবিত্র ক্বদরের রাত্রিতে
৮। সফরের সময়
৯। হজের সময়
১০। আরাফাতের দিন
১১। পবিত্র কা’বা শরীফ তাওয়াফের
সময়
১২। সাফা ও মারওয়া সায়ী করার সময়
১৩। আল্লাহর কাছে অত্যন্ত নিীতভাবে
ধর্না দেয়া এবং নিজের দুর্বলতা, অসহায়ত্ব ও বিপদের কথা আল্লাহর কাছে প্রকাশ করা।
১৪। পবিত্রাবস্থায় কেবলামুখী হয়ে
হাত তুলে দু’আ করা । এবং দু’আর শুরু ও শেষে আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামে ওপর সালাত ও ছালাম প্রদান করা।
আল্লাহ আমাদের তাঁর শেখানো ভাষা ও নিয়মে, দুনিয়া ও
আখেরাতে কল্যাণে লাভে আশ্রয় প্রার্থণা করার তৌফিক দান করুন আমীন। ছুম্মা আমীন
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url