রাসূল (সা:) এর জন্ম || মা আমিনার স্বপ্ন || প্রিয় নবীর নামকরণ ||
মরুর বুকে ফুটলো যে ফুল
হযরত মোহাম্মদ (সা:) এর জীবনীর উপর তথ্যবহুল ধারাবাহিক আলোচনা
আজ থাকছে ৩য় পর্ব
(দ্বিতীয় পর্বের পর ....)
দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে হারেস ফিরে গেলেন মক্কায়। বাবাকে আর সদ্যবিধবা আমিনাকে জানালেন আব্দুল্লাহর মৃত্যুর খবর। শোকের কালো ছায়া নেমে এলো মক্কায়। ভবিষ্যৎ অন্ধকার আমিনার, কী হবে তাঁর অনাগত সন্তানের? দুনিয়াতে আসার আগেই বাবাকে হারিয়ে ফেলল সে! আব্দুল্লাহ রেখে যান ৫টি উট, কিছু ভেড়া আর ছাগল, কিছু গৃহস্থালি দ্রব্য আর একজন দাসী, যার নাম ছিল উম্মে আয়মান, অনাগত শিশুর পরিচর্যা করার কথা ছিল তাঁর। এ সম্পদ তখনকার সময়ের জন্য মোটেও বেশি ছিল না, কম বলা যায়; তবে মারা যাবার আগে আব্দুল্লাহ সবে মাত্র ব্যবসায় উন্নতি শুরু করেছিলেন। তাই তখনও দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন নি। আর উত্তরাধিকারসূত্রেও তখনও কিছু পাননি, কারণ বাবা বেঁচে ছিলেন। কারণ তখন প্রথা ছিল যে, নিজের কামাই নিজেকেই আনতে হবে।
আব্দুল্লাহ মারা যাবার পর পুত্রবধূ
আমিনার দায়িত্ব নিলেন আব্দুল মুত্তালিব। একটা বড় ‘কিন্তু’ সেখানে রয়ে যায়। তৎকালীন আরবে
বিধবাদের সুযোগ সুবিধা মোটেও ভালো ছিল না, যদি না তাঁর আবার বিবাহ হয়ে থাকে। অনেকটা
অবহেলাতেই কাটে তাদের জীবন। আইয়ামে জাহিলিয়ার এরকম অনেক প্রথাই পরে দূর হয়, কিন্তু
সেটা ইসলামের আবির্ভাবের পরের কাহিনী। প্রচলিত বেশ কিছু ঘটনা শুনে বা পড়ে অনেকের বদ্ধমূল
ধারণা হয় যে, আব্দুল মুত্তালিবের কল্যাণে আমিনা বা পিতৃহীন মুহাম্মাদ (সা) এর খুবই
আরাম আয়েশের জীবন কেটেছিল। কিন্তু আসল ঘটনা
অতটা আরাম আয়েশ তাদের ছিল না।
প্রিয় নবী মোহাম্মদ (সা:) এর জন্ম:
দুঃখ
ভারাক্রান্ত মন নিয়ে হারেস ফিরে গেলেন মক্কায়। বাবাকে আর সদ্যবিধবা আমিনাকে জানালেন আব্দুল্লাহর মৃত্যুর খবর। শোকের কালো ছায়া নেমে এলো মক্কায়। ভবিষ্যৎ অন্ধকার আমিনার, কী হবে তাঁর অনাগত সন্তানের? দুনিয়াতে আসার আগেই বাবাকে হারিয়ে ফেলল সে! আব্দুল্লাহ রেখে যান ৫টি উট, কিছু ভেড়া আর ছাগল, কিছু গৃহস্থালি দ্রব্য আর একজন দাসী, যার নাম ছিল উম্মে আয়মান, অনাগত শিশুর পরিচর্যা করার কথা ছিল তাঁর। এ সম্পদ তখনকার সময়ের জন্য মোটেও বেশি ছিল না, কম বলা যায়; তবে মারা যাবার আগে আব্দুল্লাহ সবে মাত্র ব্যবসায় উন্নতি শুরু করেছিলেন। তাই তখনও দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন নি। আর উত্তরাধিকারসূত্রেও তখনও কিছু পাননি, কারণ বাবা বেঁচে ছিলেন। কারণ তখন প্রথা ছিল যে, নিজের কামাই নিজেকেই আনতে হবে।
আব্দুল্লাহ মারা
যাবার পর পুত্রবধূ আমিনার দায়িত্ব নিলেন আব্দুল মুত্তালিব। একটা বড় ‘কিন্তু’ সেখানে রয়ে যায়। তৎকালীন আরবে বিধবাদের সুযোগ সুবিধা মোটেও ভালো ছিল না, যদি না তাঁর আবার বিবাহ হয়ে থাকে। অনেকটা অবহেলাতেই কাটে তাদের জীবন। আইয়ামে জাহিলিয়ার এরকম অনেক প্রথাই পরে দূর হয়, কিন্তু সেটা ইসলামের আবির্ভাবের পরের কাহিনী। প্রচলিত বেশ কিছু ঘটনা শুনে বা পড়ে অনেকের বদ্ধমূল ধারণা হয় যে, আব্দুল মুত্তালিবের কল্যাণে আমিনা বা পিতৃহীন মুহাম্মাদ (সা) এর খুবই আরাম আয়েশের জীবন কেটেছিল। কিন্তু আসল ঘটনা অতটা আরাম আয়েশ তাদের ছিল না।
মোহাম্মদ (সা:) এর জন্মের আগে মা আমিনার স্বপ্ন:
এটা সত্য এবং ইবনে হিশামেও আছে যে, আমিনা স্বপ্নে দেখেন, তাঁর ভেতর থেকে একটি আলো বেরিয়ে সিরিয়ার বসরার প্রাসাদ আলোকিত করে দিচ্ছে। তিনি প্রায়ই গর্ভবতী অবস্থায় স্বপ্নে দেখতেন, তাঁকে কেউ বলছে,
“তোমার গর্ভে এ জাতির নেতা। তাঁর জন্মের সময় সকল ঈর্ষা করা ব্যক্তির নষ্টামি থেকে আশ্রয় চাবে তাঁর জন্য। তাঁর নাম রাখবে মুহাম্মাদ।”
ইবনে হিশাম নিশ্চিত করে লিখেছেন যে, মুহাম্মাদ (সা) এর আগে মাত্র তিনজন ছিলেন যাদের নাম ছিল মুহাম্মাদ। মুহাম্মাদ ইবনে সুফিয়ান, মুহাম্মাদ ইবনে উহায়হাহ এবং মুহাম্মাদ ইবনে হিমরান। মজার বিষয়, এ তিনজনের বাবারা এক অঞ্চলের ধার্মিক রাজার কাছ থেকে শুনেছিলেন যে, সেই রাজা আগের কিতাবে পড়েছেন হিজাজ থেকে নাকি ‘মুহাম্মাদ’ নামের একজন নবী আসবেন। তাঁরা তিনজনই তখন ওয়াদা করলেন যে, যদি তাদের স্ত্রীদের পুত্র সন্তান হয় তবে সুফিয়ান, উহায়হাহ এবং হিমরান তিনজনই তাদের পুত্রদের নাম রাখবেন মুহাম্মাদ। এবং তাঁরা সেটাই রেখেছিলেন। তবে মুহাম্মাদ (সা) এর জন্ম, ৫৬৯, ৫৭০ নাকি ৫৭১ সেটা সন্দেহের বিষয়, তবে হাতির ঘটনা যে বছর হয়েছিল সে বছরই তাঁর জন্ম। হাসান ইবনে সাবিত (রা) বলেছিলেন,
“আমার বয়স তখন সবে সাত কি আট। সেদিন ইয়াসরিবের দুর্গ থেকে এক ইহুদীকে এত জোরে চিৎকার করতে শুনেছিলাম। সে বলছিল, আজ রাতে তো আহমাদের তারকা উঠে গেছে! তাঁর জন্ম হয়েছে!”
আহমাদ মুহাম্মাদ (সা) এর আরেক নাম।
আমিনা তাঁর পুত্রের জন্ম দিলেন, কিন্তু আব্দুল মুত্তালিব কিন্তু তখন আশেপাশে ছিলেন না। তিনি খবর পাঠালেন এই বলে যে, উনার এক নাতি হয়েছে। তাঁকে যেন তিনি দেখতে আসেন। আব্দুল মুত্তালিব এলেন নাতিকে দেখতে। কথিত আছে, তিনি দৌড়ে কাবা ঘরে নিয়ে গেলেন তাঁকে; তাঁর মঙ্গলের জন্য দোয়া করলেন। সেই ভোরবেলা তেমন কেউ ছিল না সেখানে। তবে এ ঘটনা আসলেই ঘটেছিল কিনা সেটার ব্যাপারে ইবনে হিশাম নিশ্চয়তা দেননি। হয়ত নিজের প্রিয় পুত্র হারাবার বেদনা যেন ভুলতে চাইলেন নাতিকে জড়িয়ে ধরে। তবে এসব কিছুই উল্লেখ নেই। তবে এটা নিশ্চিত করে লেখা আছে যে, আমিনা তাঁকে স্বপ্নের কথা বলেছিলেন।
মোহাম্মদ (সা:) এর জন্মের পরদিন সকালে ইহুদির ঘটনা:
কাবা প্রাঙ্গণে কুরাইশ সরদাররা সবাই জমায়েত হয়ে আছেন। তখন ভবিষ্যত সম্পর্কে জ্ঞান আছে এমন এক ইহুদী ছুটে এলো সেখানে, “আচ্ছা, তোমাদের কারও ঘরে কি আজকে সন্তান জন্মেছে?”
সবাই বলল, “জানি না তো!”
তখন ইহুদী বিস্ময়ের সাথে বললেন, “হায় হায়! তোমরা কোন খবরই রাখ না! আজকে রাতে এক শিশু জন্ম নিয়েছে, যিনি হবেন শেষ নবী, তাঁর কাঁধে নবুয়তের নিদর্শন থাকবে। দুদিন পর্যন্ত তিনি দুধ পান করবেন না।”
সবাই শুনে অবাক হয়ে গেল। তবে পৌত্তলিক আরবদের কাছে কোন নবীর জন্ম ব্যাপারটা তেমন আহামরি কোন কিছু না। তাই এটা কোন গুরুত্ব পেল না। পাত্তাই দিল না কেউ। কিন্তু খোঁজ নিতে ভুললো না তারা নতুন শিশুটা কে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারল, আব্দুল মুত্তালিবের ঘরে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ছেলে আব্দুল্লাহর ঔরসে এক শিশু জন্মেছে। কিছু লোক গিয়ে সেই ইহুদীকে নিয়ে আসতে গেল। ইহুদী এলেন।
সদ্যজাত শিশুর কাছে গিয়ে তিনি কাঁধ পরীক্ষা করলেন, দেখলেন, কাঁধে লোমে আবৃত কয়েকটা তিল এক জায়গায় হয়ে জমে আছে, ঠিক যেমনটা ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী হবার কথা। এটা দেখে সাথে সাথে ইহুদী অজ্ঞান হয়ে গেলেন।
কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে তিনি পরিতাপ করে বললেন, “হায় হায়! বনী ইসরাইল থেকে নবুয়ত বিদায় নিল! কুরাইশরা! তোমরা এর জন্মে আনন্দ করছ? খবরদার! আল্লাহ্র কসম করে বলছি, এই ছেলে তোমাদের একদিন আক্রমণ করবে!”
সেই ইহুদি হয়ত তাঁর তাওরাতের এক আয়াতের কথা বলছিল যেখানে লেখা ছিল, ১০,০০০ মানুষ নিয়ে মক্কায় ফিরবেন নবী। আর, কাঁধের যে তিলগুচ্ছের কথা বলা হচ্ছে, সেটা আজীবন ছিল তাঁর। এটাকে বলা হত “মোহরে নবুয়ত”।
বরাবরের মতো, এটাও পাত্তা পেল না কুরাইশদের কাছে। প্রলাপ হিসেবে এড়িয়ে গেল তারা ঐ ইহুদির কথাগুলো।
পরবর্তী জীবনে নবীর বড় শত্রু হবেন যিনি, সেই চাচা আবু লাহাব পর্যন্ত ভাতিজার জন্মের খবর শুনে পরম আনন্দে তাঁর দাসীকে মুক্ত করে দিলেন। সেই দাসীর নাম ছিল সুওয়াইবা। আর তিনি ছিলেন নবীর একজন দুধমা। তিনি সপ্তাহকাল দুধ খাওয়ান নবীকে।
"মোহাম্মদ" নাম করণ:
জন্মের দিনই দাদা আব্দুল মুত্তালিব
শিশুর নাম রেখে দিলেন “মুহাম্মাদ” (প্রশংসিত)। কিন্তু, মা আমিনা শিশুর
আরেকটি নাম রাখলেন “আহমাদ” [প্রশংসাকারী]। এ দুটোই ছিল তাঁর
নাম।
হযরত মুহাম্মাদ (স) এর জন্মের সাত দিন পর আব্দুল মুত্তালিব এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন নবজাতকের সম্মানে। অনেক গণ্যমান্য লোকেরা আসলেন সেখানে। একটা প্রশ্ন করলেন তারা, “নাতির নাম মুহাম্মাদ রাখলেন কেন?” এ প্রশ্নটা স্বাভাবিক ছিল। কারণ এ নামটা তখনকার সময় ছিল বিরল।
আব্দুল মুত্তালিব স্বপ্নের কথা বললেন না, ঘুরিয়ে উত্তর দিলেন, “কারণ আমি চাই, আমার নাতি সবার কাছে প্রশংসিত হোক, দুনিয়াতে মানুষদের কাছে, আর উপরে আল্লাহ্র কাছে।”
এরপর আর কোন প্রশ্ন করেননি তারা। নবজাতককে দোয়া করে চলে গেলেন। এ সময়ই সম্ভবত মুহাম্মাদ (স) এর খৎনা করা হয়, আরবি রীতি অনুযায়ী।
এরপর অপেক্ষা করতে লাগলেন আমিনা আর
আব্দুল মুত্তালিব। ধাত্রীরা আসবে মক্কায়। তখন তো ছিলই, এমনকি এখনও আরবে কোন কোন জায়গায়
এমন ঐতিহ্য আছে যে, জন্মের পর পর সম্ভ্রান্ত বংশের শিশুদেরকে গ্রামে ধাত্রীদের কাছে
পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে তারা প্রকৃতির সংস্পর্শে বড় হবে। আর বিশুদ্ধ আরবি শিখবে।
শিশু মোহাম্মদ (সা:) কে দুধ মা হালিমার কাছে সমর্পন:
মক্কা থেকে ৭০ মাইল দূরে তায়েফের
পাশের এক গ্রাম। সেখানের বেদুইন সাদ গোত্রের নারীরা ধাত্রীর কাজ করত।
যা-ই হোক, তারা মক্কায় গিয়ে হাজির
হল। তারা সবাই শহরে প্রবেশ করেই দ্রুত বাড়ি বাড়ি ঘুরতে থাকে শিশু সংগ্রহের জন্য। যে
যত ধনী লোকের সন্তান নিতে পারে সে তত লাভবান। বলতে গেলে সবাই নিজ নিজ পছন্দ মতো সন্তান
পেয়ে গেল। কিন্তু আমিনার ঘরে যেতেই কেউ শিশু মুহাম্মাদকে নিতে চাইল না, কারণ এতে লাভের
মুখ দেখা যাবে না। শিশুর বাবাই তো বেঁচে নেই! তাই অবহেলিত ধরে নিয়েই কোনো ধাত্রী তাঁকে
গ্রহণ করল না।
ধাত্রীদের দলেই ছিলেন হালিমা বিনতে
আবু জুয়াব। কিন্তু তাঁর আবার উল্টো কাহিনী। তিনি এত রোগা ছিলেন, যে কেউই তাঁকে সন্তান
দিতে চাচ্ছিল না। কারণ তিনি তো পর্যাপ্ত দুধ খাওয়াতে পারবেন না।
অন্য সবার মতো আমিনার বাসাতেও গেলেন
হালিমা। কিন্তু যখনই শুনলেন, শিশুর বাবা নেই, তখনই তিনি বেরিয়ে আসলেন। আরও কয়েকটা বাড়ি
ঘুরে খালি হাতে ফিরে আসলেন নিজের তাঁবুতে। তিনি হতাশ। কোন শিশুই পেলেন না।
পরদিন ভোর বেলা যখন কাফেলা গ্রামে
ফিরে যাবার জন্য রওনা হচ্ছিল তখন, হঠাৎ করে হালিমার মনে হল খালি হাতে ফিরে যাওয়া ঠিক
হবে না। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন, শিশু মুহাম্মাদ (স)-কেই তিনি গ্রহণ করবেন।
এই ভেবেই তিনি ছুটে গেলেন শহরে। আমিনার বাড়িতে এসে উপস্থিত হলেন। কোলে তুলে নিলেন শিশুকে।
সাথে সাথে তাঁর মনে হল, কী যেন এক পরিবর্তন তাঁর মধ্যে আসলো। অবাক বিস্ময়ে খেয়াল করলেন,
তাঁর রোগা দেহের শূন্য স্তন দুধে ভরে উঠেছে। তিনি ডান স্তন মুখে পুরে দিতেই পান করা
শুরু করে দিল শিশু।
শিশু মুহাম্মাদ (সা)-কে নিয়ে রওনা দিলেন হালিমা। এ দু’সপ্তাহ মুহাম্মাদ (স) পান করেছেন আমিনা আর সুওয়াইবার দুধ। আর এরপর দু’বছর পান করবেন মা হালিমার দুধ। তখনই নাটকীয়ভাবে ঘুরে গেল হালিমার পরিবারের ভাগ্য। এ কাহিনীগুলো বেশ পরিচিত বিধায় একটু ভিন্ন ব্যাপারে কথা বলা যাক।
মুহাম্মাদ (স) এর পালক বাবা ছিলেন হারিস ইবনে আব্দুল উজ্জা। নাম থেকেই বোঝা যায়, তাঁরা উজ্জাহ দেবতার উপাসনা করতেন প্রধানত।
মহানবী (সা) এর দুধভাই ছিল আব্দুল্লাহ। মুহাম্মাদ (স) কখনও হালিমার বাম স্তন থেকে দুধ পান করতেন না। বাম স্তন মুখে পুরে দিলেও খেতেন না, মুখ সরিয়ে নিতেন। তাই হালিমা নিয়ম করে নিয়েছিলেন, ডান স্তন মুহাম্মাদ (স) আর বাম স্তন আব্দুল্লাহর জন্য। আব্দুল্লাহ পরে সাহাবী হন এবং তাঁর বর্ণিত অনেক হাদিস আছে বুখারি শরিফে। হযরত মুহাম্মাদ (স) এর দুধবোন ছিল দুজন, আনিসা এবং সাইমা।
এই লেখাতে ওয়ারাকা আর রুকিইয়ার কথা বলা হয়েছে। রুকিইয়া কীভাবে আব্দুল্লাহকে নিজের করে নিতে চেয়েছিলেন সে ঘটনা বলা হয়েছে। কিন্তু রুকিইয়া কি ঘুণাক্ষরেও ভেবেছিলেন যে, ভবিষ্যতে তাঁরই চাচাতো বোন খাদিজা হবেন এই আব্দুল্লারই পুত্র মুহাম্মাদ (সা) এর স্ত্রী? তখন রুকিইয়া কোথায় কী করছিলেন, সে খবর কিন্তু ইতিহাস আমাদের দেয় না।
ওয়ারাকা খ্রিস্টান আর রুকিইয়া জিন-ভক্ত হলেও খাদিজা দুটোর কোনোটাই ছিলেন না, পৌত্তলিকও ছিলেন না, ছিলেন হানিফ।হানিফ বলতে বোঝায় তাদেরকে যারা ইব্রাহিম (আ) এর ধর্ম পালন করতেন এবং একেশ্বরবাদী ছিলেন, কোনো দেবদেবীতে বিশ্বাস রাখতেন না। আর ওহী আসার আগ পর্যন্ত মুহাম্মাদ (স) নিজেও হানিফ ছিলেন। মক্কায় হানিফ খুবই কম ছিল। মুহাম্মাদ (সা) প্রাপ্তবয়স্ক হবার আগে তো আরো কম। সত্যি বলতে, মক্কায় চারজন স্বঘোষিত হানিফ ছিলেন যার মাঝে তিনজন মক্কা ছেড়ে চলে যান। আর একজন, অত্যাচারিত হয়ে মক্কার অদূরে পাহাড়ে গিয়ে একা বাস করতেন। তিনি জোর গলায় বলতেন, তিনি মক্কার একমাত্র হানিফ। বাকি সবাই বিপথগামী। একদম শিশু বয়সে হযরত মুহাম্মাদ (সা) এর সাথে তাঁর দেখা হয়েছিল। পরে ডাকাতের হাতে তিনি খুন হয়ে যান। এসব ঘটনাগুলো আমরা সামনের দিকে আলোচনা করব ইন শা আল্লাহ।
|| ★★সমাপ্ত★★ ||
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। মোহাম্মদীয়া
ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায়
অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে
ক্লিক করুন।
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url