মা আয়েশা ও বিশ্বনবীর বিবাহ নিয়ে নুপুর শর্মার সকল আপত্তিকর প্রশ্নের জবাব





মা আয়েশা ও বিশ্বনবীর বিবাহ নিয়ে বিতর্কের জবাব


বিয়ের সময় মা আয়েশার বয়স নিয়ে বিতর্ক

মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে আয়েশা (রা.)-এর বিয়ের সময় তাঁর বয়স কত ছিল, ইতিহাসবিদদের মধ্যে এ নিয়ে মতানৈক্য দেখা যায়। একদল ইতিহাসবিদের অভিমত হলো, বিয়ের সময় আয়েশা (রা.)-এর বয়স ছিল ১৪ বছর। আর যখন তাঁর সঙ্গে মহানবী (সা.)-এর দৈহিক সম্পর্ক হয়, তখন তাঁর বয়স ছিল ১৭ থেকে ১৮ বছর। (দেখুন—আরবি পত্রিকা ‘আশ্ শিরকুল আওসাত’ : ৬-৯-২০০৮; আরবি সাহিত্যিক শওকি জইফের গ্রন্থ ‘মুহাম্মদ খাতামুল মুরসালীন’ : পৃষ্ঠা ১৭১)
তবে হাদিসগ্রন্থে এ বিষয়ে ভিন্নমত পাওয়া যায়।

হাদিসের আলোকে মা আয়েশার বিয়ে

হিশাম ইবনে উরওয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী করিম (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের তিন বছর আগে খাদিজা (রা.)-এর ইন্তেকাল হয়। তারপর দুই বছর বা এর কাছাকাছি সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি আয়েশা (রা.)-কে বিয়ে করেন। তখন তিনি ছিলেন ছয় বছরের বালিকা। তারপর ৯ বছর বয়সে বাসর যাপন করেন। ’(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৮৯৬)

আয়েশা (রা.)-এর মাতা-পিতা  স্বপ্রণোদিত হয়ে তাঁকে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। সে সময়ের কোনো মুসলিম কিংবা অমুসলিম এ বিয়ের প্রতিবাদ করেনি। কারণ সে সময় মেয়েদের এ বয়সেই সাধারণত বিয়ে দেওয়া হতো। এর কারণ হলো, সে সময় আরবের মানুষদের আয়ু ছিল কম। মানুষ ৪০-৬০ বছর বয়সেই সাধারণত মারা যেত। তাই প্রাকৃতিকভাবে ৯ বা ১০ বছরের মেয়েকে বিয়ে করাই ছিল সে সময়ের স্বাভাবিক ঘটনা। মহানবী (সা.) আয়েশা (রা.)-কে প্রধানত তিনটি কারণে বিয়ে করেছিলেন। এক. আবু বকর (রা.)-এর সঙ্গে মহানবী (সা.)-এর বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আত্মীয়তার বাঁধনে আবদ্ধ করা।

দুই. সব ইতিহাসবিদ এ ব্যাপারে একমত যে আয়েশা (রা.) ছিলেন তৎকালীন আরবের অন্যতম মেধাবী নারী। তাই মহানবী (সা.) তাঁর মাধ্যমে ইসলামের বিধিবিধান, বিশেষ করে নারীদের একান্ত বিষয়াদি উম্মতকে শিক্ষা দিতে চেয়েছেন। তিন. মহানবী (সা.) তাঁকে বিয়ে করেছেন ওহির নির্দেশ অনুসরণ করে। ওহির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁকে বিয়ে করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) তাঁকে বলেছেন, দুইবার তোমার চেহারা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। আমি দেখলাম, তুমি একটি রেশমি কাপড়ে আবৃতা এবং (জিবরাইল) আমাকে বলছেন, ইনি আপনার স্ত্রী, আমি ঘোমটাটা সরিয়ে দেখলাম। দেখি ওই নারী তো তুমিই। তখন আমি ভাবছিলাম, যদি তা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন। (বুখারি, হাদিস নং : ৩৮৯৫, ৫০৭৮, ৫১২৫, ৭০১১; মুসলিম, হাদিস নং : ২৪৩৮)

ভিন্ন ভিন্ন ধর্মে বিয়ের ন্যূনতম বয়স ভিন্ন

ইসলাম ধর্মমতে, অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের অভিভাবক যদি তাঁদের সন্তানকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন, তাহলে বিয়ে বৈধ হয়ে যাবে। কিন্তু সন্তান প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার পর এ বিয়ে ভেঙে দেওয়ার এখতিয়ার রাখবে, যদি পিতা ও দাদা ছাড়া অন্য কেউ বিয়ে দিয়ে থাকে। (হেদায়া : ১/১৯৩)

রোমান ক্যাথলিকরা বিশ্বাস করে যে মরিয়ম (আ.)-এর বয়স ছিল ১১-১৪ বছর, যখন তিনি ঈসা (আ.)-কে জন্ম দিয়েছিলেন।

তাওরাত বা ওল্ড টেস্টামেন্টের বর্ণনা অনুসারে ইসহাক (আ.) ৪০ বছর বয়সে মাত্র তিন বছরের কন্যাশিশুকে বিয়ে করেছেন। সেখানে আছে : ‘ইসহাক ৪০ বছর বয়সে রেবেকাকে বিয়ে করেছেন। রেবেকা ছিলেন পদ্দম-ইরাম দেশের সিরীয় বথুয়েলের মেয়ে এবং সিরীয় লাবনের বোন। ’ (তাওরাত, সৃষ্টি অধ্যায়, ২৫ : ২০)

ইহুদিদের ধর্মীয় বিধানশাস্ত্র বিষয়ের গ্রন্থ হলো ‘তালমুদ’। তালমুদের সানহাদরিনের বর্ণনা মোতাবেক উপদেশ নম্বর ৫৫-তে উল্লেখ করা আছে : ‘ইহুদিদের জন্য তিন বছরের মেয়েকে বিয়ে করা বৈধ। ’

আর তালমুদের খুসুবুসের বর্ণনা অনুযায়ী উপদেশ নম্বর ৫৬-তে উল্লেখ করা হয়েছে : ‘শিশুর ৯ বছর হওয়া পর্যন্ত তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা ইহুদিদের জন্য বৈধ। ’

তালমুদের বর্ণনাকারী সাইদ রাবি জুসেফ লিখেছেন : ‘এ কথা তোমার কাছে রেজিস্ট্রার করে নাও যে কন্যাশিশুর বয়স তিন বছর একদিন হলে তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব। ’ (বিস্তারিত দেখুন : : Neusner, The Talmud of Babylonia, vol.B, Tractate Sanherdrin 1984)

উপমহাদেশে হিন্দুদের সমাজ জীবন নিয়ন্ত্রিত হয়েছে প্রধানত মনুর বিধান অনুসারে। মনুসংহিতায় বলা হয়েছে, মেয়েদেরে আট বছর বয়সের মধ্যেই বিয়ে দিতে হবে। মনুশাস্ত্রে বলা হয়েছে-
‘কালেহদাতা পিতা বাচ্যো বাচ্যশ্চানুপযন্ পতিঃ। /মৃতে ভর্তরি পুত্রস্তু বাচ্যো মাতুররক্ষিতা। ’ 
অর্থাৎ বিবাহযোগ্য সময়ে (ঋতুদর্শনের আগে) পিতা যদি কন্যাকে পাত্রস্থ না করেন, তাহলে তিনি মানুষের কাছে নিন্দনীয় হন। স্বামী যদি ঋতুকালে পত্নীর সঙ্গে সঙ্গম না করেন, তবে তিনি লোকসমাজে নিন্দার ভাজন হন। স্বামী মারা গেলে পুত্ররা যদি তাদের মাতার রক্ষণাবেক্ষণ না করে, তাহলে তারাও অত্যন্ত নিন্দাভাজন হয়। (মনুসংহিতা : ৯/৪)

বাল্মিকী রামায়ণের তৃতীয় খণ্ডের ৪৭ শ অধ্যায়ে সীতার বিবৃতি থেকে আমরা জানতে পারি যে সীতা অষ্টাদশ বছর বয়ঃক্রমকালে বিবাহের ত্রয়োদশ বছরে রামের বনগমনকালে তাঁর সঙ্গে অযোধ্যা ত্যাগ করেছিলেন। পাটিগণিতের সহজ হিসাব মতে, বিবাহের সময় সীতার বয়স পাঁচ-ছয় বছর ছিল। (মোহাম্মদ মতিয়র রহমান, প্রাচীন ভারতে বাল্যবিয়ে)

যাঁরা মহানবী (সা.) ও আয়েশা (রা.)-এর বিয়ে নিয়ে আপত্তি করেন, তাঁরা কিন্তু রাম আর সীতার বিয়ে নিয়ে টুঁশব্দও করেন না। কারণ কী?

দেশ ও সভ্যতা ভেদে নারীর বিয়ের বয়স ভিন্ন


বিয়ের ক্ষেত্রে দেশ-জাতিভেদে আলাদা বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। একজন মানুষ কোন বয়সে বিয়ে করছেন, তা নির্ভর করে ওই দেশের গড় আয়ের ওপর। দেখা যায়, ধনী দেশ যেমন—সুইডেনের মানুষ তিরিশের আগে বিয়ে করেন না। কিন্তু সেন্ট্রাল আফ্রিকায় বিয়ের গড় বয়স ২০। আমাদের এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে মহানবী (সা.)-এর সময়ে আরবের লোকদের গড় আয়ু ছিল ৪০ থেকে ৬০ বছর। তাই সে সময় তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা ছিল প্রথাসিদ্ধ।

১৪০০ বছর তো অনেক দূরে, এই গত ১৮৮০ সাল থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের দেলোয়ারে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ছিল ৭ বছর। মাত্র ১৩০ বছর আগে পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স কত ছিল? দেখুন—ডেনমার্ক ১২, ইংল্যান্ড ১৩, ফ্রান্স ১৩ পর্তুগাল ১২, রাশিয়া ১০, স্কটল্যান্ড ১২, স্পেন ১২, কানাডা ১২, আমেরিকার ফ্লোরিডা ১০, ক্যালিফোর্নিয়া ১০ বছর। লিস্টটা আরো অনেক বড়। আপনি চাইলে এখানে গিয়ে আরো দেখতে পারেন। 


বর্তমান পৃথিবীতেও এমন বহু দেশ আছে, যেখানে মেয়েদের বেশ কম বয়সে বিয়ে করা হয়। নিচের লিঙ্কগুলোতে দেখুন—


তথাকথিত সভ্য লোকেরা আয়েশা (রা.)-এর বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বৈধ পথ বাদ দিয়ে অবৈধ উপায়ে ঠিকই শিশুকন্যাদের ভোগ করছে। পরিসংখ্যান বলছে : যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের শিকার হওয়াদের মধ্যে ৯১ শতাংশ নারী ও বাকি ৯ শতাংশ পুরুষ। সেখানে প্রতি তিনজনে একজন নারী ধর্ষিত হয়। ১৮ বছরের আগে ৪০ শতাংশ নারী এখানে ধর্ষণের শিকার হয়। (দৈনিক ইত্তেফাক, ৭ জুলাই, ২০১৫)

শুধু ধর্ষণ নয়, শিশুকন্যাদের বিয়েও রীতিমতো সিদ্ধ আধুনিক পৃথিবীতে। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের ৪০ শতাংশ কন্যাশিশুর বিয়ে হয় ভারতে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতে বাল্যবিয়ের সংখ্যা দুই কোটি ৩০ লাখের মতো, যা বিশ্বের মোট বাল্যবিয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ। (ভয়েচে ভেলের বরাতে দৈনিক সংগ্রাম : ২৪-১১-২০১৬)

বর্তমান বিশ্বে ন্যূনতম কত বছর বয়সের নারীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করা বৈধ, দেখুন—মেক্সিকোতে ১২, কুরিয়ায় ১৩, কানাডায় ১৪, সুইডেনে ১৫ বছর বয়সী মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করা রীতিমতো আইনসিদ্ধ। 


এ ছাড়া আর্জেন্টিনায় ১৩, নাইজেরিয়ায় ১৩, প্যারাগুয়ে ও পেরুতে ১৪, সেনেগালে ১৩, স্পেনে ১৩, পোপের শহর ভ্যাটিকান সিটিতে ১২ বছর বয়সী মেয়েদের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা আইনসিদ্ধ।

এবিষয়ে আরও পড়ুন-

বাঙালি সংস্কৃতিতে নারীদের বিয়ের বয়স

১৯ শতকেও বাঙালি নারীদের ছোট বেলায় বিয়ে দেওয়া হতো। বাঙালির বিয়ের ইতিহাস বিষয়ে ‘বাংলাপিডিয়া’ লিখেছে : ‘১৯২১ সালের আদমশুমারিতে বিয়ের গড় বয়স মেয়েদের ১২ এবং ছেলেদের ১৩ বছর উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯২৯ সালে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন (Child Marriage Restraint অপঃ) পাস হয়। এ আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের নিচের পাত্রী এবং ১৮ বছরের নিচের পাত্রের বিবাহ ছিল শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ’ (বিবাহ, বাংলাপিডিয়া)

‘হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি’ নামে একটি বই লিখেছেন গোলাম মুরশিদ। হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতিতে নারীদের বিয়ে কত বছর বয়সে হতো? তিনি লিখেছেন : ‘দ্বারকানাথ ঠাকুর (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা) বিয়ে করেছিলেন ১৫ বছর বয়সে। চিন্তার দিক দিয়ে তিনি সে যুগের তুলনায় খুব আধুনিক থাকলেও তাঁর পুত্র দেবেন্দ্রনাথের বিয়ে দিয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সে, পাত্রীর বয়স ছিল ১১। ’

বাঙালি জাতির সবচেয়ে প্রাগ্রসর শিক্ষাবিদ হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়, তাঁরা কত বছর বয়সী নারীদের বিয়ে করেছিলেন, ড. মুরশিদ লিখেছেন : বঙ্কিমচন্দ্র যাঁকে বিয়ে করেছিলেন, তাঁর বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর। দেবেন্দ্রনাথ ও বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর স্ত্রীর বয়স ছিল ছয় বছর। সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রীর বয়স ছিল সাত বছর, ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের স্ত্রীর বয়স আট বছর, কেশব সেন এবং জ্যোতিরিন্দ্রনাথের ৯, শিবনাথ শাস্ত্রীর ১০ আর রাজনারায়ণ বসুর স্ত্রীর বয়স ছিল ১১ বছর। ’ (দেখুন : হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি, পৃষ্ঠা-২২০)

যাঁরা আয়েশা (রা.)-এর বিয়ের বয়স নিয়ে আপত্তি করেন, তাঁদের অনেকের কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেবতাতুল্য। রবীন্দ্রনাথ তাঁদের কাছে সবক্ষেত্রে আদর্শ পুরুষ। তিনি কিন্তু ২৩ বছর বয়ছে মাত্র ১১ বছরের মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। ড. গোলাম মুরশিদই সে তথ্য উল্লেখ করেছেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১২ বা ১৩ বছর বয়সে তিন বছর বয়সী রেণুকে (বঙ্গমাতা) বিয়ে করেছেন। অবশ্য এটা ছিল পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী। (দেখুন—অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ৭)

বাংলাদেশে নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার বিয়ে কত বছর বয়সে হয়েছিল? ১৮৯৬ সালে ১৬ বছর বয়সে রোকেয়ার বিয়ে হয় ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে। বিয়ের পর তিনি ‘বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন’ নামে পরিচিত হন। তাঁর স্বামীও ‘মুক্তমনা’ মানুষ ছিলেন।

উপমহাদেশে ১৮৬০ সালে ‘এজ অফ কন্সেন্ট’ আইনে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স স্থির করা হয় ১০। ১৮৯২ সালে এই বয়স বেড়ে দাঁড়ায় ১২। ১৯২৯ সালে এটা আবার বেড়ে দাঁড়ায় ১৪। ১৯৫৫ সালে এটা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ বছর। সে আইন এখনো বলবৎ আছে। তার মানে যুগে যুগে নারীদের গড় আয়ু ও পরিবেশ পরিস্থিতিতে বিয়ের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে তারতম্য দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে পরের আইনের আলোকে আগের আইনসিদ্ধ বিষয়কে বিচার করা অজ্ঞতা, মূর্খতা ও জ্ঞানপাপিতা ছাড়া আর কিছুই নয়।

ধরুন, আজ আপনি ২১ বছর বয়সে একটি ১৮ বছরের মেয়েকে বিয়ে করলেন। ঠিক ১০০০ বছর পর আইন হলো যে ছেলেদের বিয়ের বয়স ২৮ আর মেয়েদের ২৫। তখন কি ৩০১৬ সালের মানুষ আপনাকে বাল্যবিয়ে আইন ভঙ্গ করেছেন—এমন অভিযোগে অভিযুক্ত করতে পারবে? কেন পারবে না? যদি না পারে, তাহলে আপনি কেন ১৪০০ বছর আগের আইনের আলোকে সংগঠিত হওয়া আয়েশা (রা.)-এর বিয়ে নিয়ে চিল্লাচিল্লি করছেন? নতুন আইনের আলোকে কেন পুরনো আইনের বিষয়কে বিচার করছেন?



****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url