হজ্জ ও উমরা সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর ৩





ইফরাদের নিয়ত হলে এবং তওয়াফে কুদুম না করলে করনীয়

তাওয়াফ সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর

ইফরাদের নিয়ত হলে এবং তওয়াফে কুদূম না করলে

ইফরাদের নিয়ত হলে তওয়াফে কুদূম না করতে পারলে কোন ক্ষতি হবে কি?

ইফরাদের নিয়ত হলে তওয়াফে কুদূম না করতে পারলেও কোন ক্ষতি নেই। ৩৫০ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৩৮) কেবল হজ্জের তওয়াফই যথেষ্ট। এ ক্ষেত্রে সে সরাসরি মিনায় যেতে পারে।

তওয়াফ করতে করতে ওযু নষ্ট

তওয়াফ করতে করতে ওযু নষ্ট হলে কি করতে হবে?

তওয়াফ করতে করতে ওযু নষ্ট হলে তওয়াফ ছেড়ে ওযু করে পুনরায় তওয়াফ করতে হবে।

তওয়াফ করতে করতে পরনারীর দেহে স্পর্শ

তওয়াফ করতে করতে ভিড়ের চাপে পরনারীর দেহ স্পর্শ হলে করণীয় কি?

তওয়াফে নারীদেহ স্পর্শ হলে যদি লজ্জাস্থানে তরল পদার্থ অনুভূত না হয়, তাহলে কোন ক্ষতি হবে না। অবশ্য সকলের উচিৎ, বেগানা নারীর স্পর্শ থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করা। ৩৫১ (ফাতাওয়া ইবনে উষাইমীন ২/৬৩১)

কাউকে বহন করে তওয়াফ সাঈ করালে

কাউকে বহন করে তওয়াফ সাঈ করালে নিজের তওয়াফও কি যথেষ্ট হবে?

তওয়াফ ও সাঈ এর জন্য যদি কেউ কাউকে বহন করে, তবে বাহকের জন্যও তা যথেষ্ট হবে। বাহককে আর নতুন করে পৃথকভাবে তওয়াফ ও সাঈ করতে হবে না। ৩৫২ (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ২৩/ ৯৫)

তাহিয়্যাতুত তাওয়াফ পড়তে ভুলে গেলে

তাহিয়্যাতুত তাওয়াফ পড়তে যদি কেউ ভুলে যায়, তাহলে কি করবে?

তাওয়াফের পর ২ রাকাআত নামায সুন্নত। কেউ ভুলে তা না পড়লে কোন ক্ষতি নেই। ৩৫৩ (ফাতাওয়া মুহিম্মাহ ৪০ পৃঃ)

তওয়াফের সময় কথা বলা

তওয়াফ করতে করতে কথা বলা কি বৈধ?

তওয়াফ করাকালে জরুরী কথাবার্তা বলা দূষণীয় নয়। মহানবী (সঃ) বলেছেন, “তওয়াফ হল নামায। তবে আল্লাহ তাতে কথা বলা বৈধ করেছেন। সুতরাং কেউ কথা বললে, সে যেন ভাল কথা বলে।”(তিরমিযী, দারাক্বত্বনী, হাকেম, ইবনে খুযাইমা) তিনি আর বলেছেন, “তওয়াফ হল নামায। সুতরাং তোমরা তওয়াফ করলে কথা কম বলো।” ৩৫৪ (আহমাদ ৩/২১৪, সহিহুল জামে ৩৯৫৬ নং)

তাওয়াফ ও সাঈ’তে একটু বিশ্রাম নেওয়া

তাওয়াফ ও সাঈ করতে করতে একটু বিশ্রাম নেওয়া, পানি পান করা যায় কি?

তওয়াফ ও সাঈ করতে করতে বৈধ কথা বলা, পানি পান করা, ক্লান্ত হয়ে পড়লে একটু আরাম নেওয়া বৈধ। ৩৫৫ (ঐ ২/৬২০)

হাজারে আসওয়াদ চুম্বন করা

হজ্জের সময় হাজারে আসওয়াদ চুম্বন করা বড় কঠিন। সুতরাং ধাক্কাধাক্কি করে অথবা কাউকে ঘুস দিয়ে চুম্বন করলে কি সওয়াব হবে কি?

হাজারে আসওয়াদ চুম্বন করা সুন্নত। তা চুমতে গিয়ে লড়াই করা বা কাউকে ঘুস দেওয়া মহাপাপ। ৩৫৬ (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ১৩/১৭)

তওয়াফ সাঈ করা 

ভিড়ের কারণে দ্বিতীয় বা তৃতীয় তলে কি তওয়াফ সাঈ করা যায়?

ভিড়ের কারণে দ্বিতীয় বা তৃতীয় তলায় উঠে তওয়াফ বা সাঈ করা যায় তাতে কোন সমস্যা নেই। ৩৫৭ (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ১/১৯৪)

তওয়াফ করার পর অসুস্থ হওয়া

তওয়াফ করার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। অতঃপর হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে সাঈ করি। এতে কোন ক্ষতি হবে কি?

কারনবশতঃ তওয়াফের ২/৩ দিন পরেও সাঈ করতে পারা যায়। যেহেতু তা তওয়াফের পরপরই করা কোন শর্ত নয়। ৩৫৮ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৫২)

তওয়াফের আগে সাঈ

তওয়াফের আগে যদি কেউ সাঈ করে নেয়, তাহলে তাঁতে কোন ক্ষতি আছে কি?

হজ্জের তওয়াফের আগে সাঈ করে নেওয়া যায়। অবশ্য উত্তম হল, তওয়াফের পর সাঈ করা। তবে উমরার তওয়াফের পূর্বে সাঈ করা যায় না; করলে তওয়াফের পর পুনরায় সাঈ করতে হবে। ৩৫৯ (ফাতাওয়া ইবনে উষাইমীন ২/৬২২, ৬২৪)

সাঈ এর একটি চক্কর ছুটে গেলে

ভুলক্রমে সাঈ এর একটি চক্কর ছুটে গেলে এবং পরে মনে পড়লে করণীয় কি?হালাল হয়ে সফর করার পর বাড়ীতে এসে মনে পড়লে কি করা যাবে?

সাঈ এর একটি চক্কর ছুটে গেলে এবং বহু পরে মনে পড়লে অথবা সুযোগ হলে পুনরায় নতুনভাবে ৭ চক্কর সাঈ করবে। ৩৬০ (ঐ ২/৬২৩) হালাল হয়ে সফর করে থাকলে মনে পড়া মাত্র পুনরায় ইহরাম বেঁধে মক্কায় এসে নতুনভাবে সাঈ করে চুল কাটবে। ৩৬১ (ঐ ২/৬২৮)

তওয়াফের মত সাঈও ৭ চক্কর

না জেনে ঠিক তওয়াফের মত সাঈও ৭ চক্কর (অর্থাৎ ১৪ বার যাতায়াত) করে ফেললে সাঈ শুদ্ধ হবে কি?

না জেনে ঠিক তওয়াফের মত সাঈও ৭ চক্কর (অর্থাৎ ১৪ বার যাতায়াত) করে থাকলেও ৭ বারই গণ্য হবে এবং অজান্তে বাড়তি করায় কোন ক্ষতি হবে না। ৩৬২ (ঐ ৬২৬)

মারওয়া থেকে সাঈ শুরু করলে

সাফার পরিবর্তে মারওয়া থেকে সাঈ শুরু করলে শুদ্ধ হবে কি?

সাফার পরিবর্তে মারওয়া থেকে সাঈ শুরু করলে সাঈ শুদ্ধ হবে না। পুনরায় সাফা থেকে শুরু করে সাঈ করতে হবে। ৩৬৩ (ঐ ২/৬২৮)

মিনায় রাত্রি বাস না করলে

যুল-হজ্জের ৮ তারিখে মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামায না পড়লে এবং রাত্রি বাস না করলে হজ্জের কোন ক্ষতি হয় কি?

যুল হজ্জের ৮ তারিখে মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামায না পড়লে এবং রাত্রি বাস না করলে কোন ক্ষতি হয় না। অবশ্য তা সুন্নত। মতান্তরে ওয়াজেব। ৩৬৪ (মানাসিকুল হাজ্জ, আলবানী ৭ পৃঃ)

আরাফায় হাত তুলে দু'য়া করা

আরাফার ময়দানে হাত তুলে দু'য়া করা যায় কি?

আরাফার ময়দানে হাত তুলে দু’আ করা যায়। জামাআতের একজন দু’আ ও বাকী ‘আমীন আমীন’ করলেও দোষ নেই। তবে একাকী দুআই এখানে শরীয়ত সম্মত ও উত্তম। ৩৬৫ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৬৭-২৬৮, আল-মুমতে ৭/৩২৯-৩৩০)

সূর্য ডোবার পূর্বেই আরাফার সীমা থেকে বের হয়ে এলে

আরাফার সীমা থেকে সূর্য ডোবার পূর্বেই বের হয়ে এলে কোন ক্ষতি হবে কি?

আরাফার সীমা থেকে সূর্য ডোবার পূর্বেই বের হয়ে এলে ফিদয়্যাহ লাগবে; যা মক্কায় যবেহ করে সেখানকার গরীবদের মাঝে বিতরণ করতে হবে। দেশে ফিরে গেলে এবং পুনরায় মক্কায় যাওয়া সম্ভব না হলে মক্কার মুসাফির বা পরিচিত কাউকে এ দায়িত্বভার সমর্পণ করবে। কেউ না থাকলে দেশেই যবেহ করে গোশত গরীবদের মাঝে বণ্ঠন করে দেবে। ৩৬৬ (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ৬/২৫৪, ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৬৪)

মুযদালিফায় রাত্রিবাস না করলে

মুযদালিফায় রাত্রিবাস না করতে পারলে করণীয় কি?

মুযদালিফায় রাত্রিবাস ওয়াজেব। ত্যাগ করলে দম লাগবে। মুযদালিফায় ফজরের নামায পেলে সেটুকুই যথেষ্ট।৩৬৭ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৭১)

মুযদালিফা আসতে দেরি হলে

নিয়ম হল মুযদালিফায় পৌঁছে মাগরিব ও এশা জমা করে পড়া। কিন্তু ভিড়ের চাপে আরাফা থেকে মুযদালিফা আসতে আসতে যদি অর্ধরাত্রি পার হওয়ার আশঙ্কা হয়, তাহলে করণীয় কি?

আরাফা থেকে মুযদালিফা আসতে আসতে যদি অর্ধরাত্রি পার হওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে মাগরিব এশার নামায চলার পথে মুযদালিফার বাইরে হলেও পড়ে নেবে। ৩৬৮ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৭০)

ভিড়ের কারণে মাশআরুল হারামের নিকট গিয়ে দুআ করা যদি সম্ভভ না হয়, তাহলে কোন ক্ষতি হবে কি?

মাশআরুল হারামে গিয়ে দুআ করা ওয়াজেব নয়; করা ভাল। ৩৬৯ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৭১)



****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url