মা’আরেফুল কোরআন-১০ || সূরা আল-বাকারাহ্, আয়াতঃ ৬-৭ || বাকারাহ্ ৬-৭ আয়াতের অর্থ ও তাফসীর ||








بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
سورة البقرة

সূরা আল-বাকারাহ্, আয়াতঃ ৬-৭

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا سَوَاء عَلَيْهِمْ ، أَنْذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنْذِرُهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ خَتَمَ اللهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ وَعَلَى سَمْعِهِمْ وَعَلَى ابصَارِهِمْ غِشَاوَةٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمُن

সূরা আল বাকারাহ্ ৬-৭ আয়াতের অর্থ

(৬) নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন তাতে কিছু আসে যায় না, তারা ঈমান আনবে না। (৭) আল্লাহ তাদের অন্তঃকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।

সূরা বাকারাহ’র ৬ ও ৭ আয়াতের তফসীরের সার-সংক্ষেপ

নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে, তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন, তাতে কিছু যায় আসে না; তারা ঈমান আনবে না। (এ কথা সমস্ত কাফেরদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ্ তা'আলা অবগত যে, তাদের মৃত্যু কুফরীর মধ্যেই ঘটবে। এখানে সাধারণ অবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলা হয়নি। কেননা, সাধারণ অবিশ্বাসীদের মধ্যে অনেক লোক পরে মুসলমান হয়েছেন) আল্লাহ্ তা'আলা তাদের অন্তঃকরণ বন্ধ করে দিয়েছেন এবং তাদের কানসমূহ ও তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।

সূরা বাকারাহ’র ৬ ও ৭ আয়াতের আনুষঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়

পূর্বাপর সম্পর্ক ও সংক্ষিপ্ত বিষয়বস্তু সূরা বাকারাহর প্রথম পাঁচটি আয়াত কোরআনকে হেদায়েত বা পথপ্রদর্শনের গ্রন্থরূপে ঘোষণা করে সকল সন্দেহ ও সংশয়ের উর্ধ্বে স্থান দেওয়ার পর সে সমস্ত ভাগ্যবান ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যারা এ গ্রন্থের হেদায়েতে পরিপূর্ণভাবে উপকৃত ও লাভবান হয়েছে এবং যাদেরকে কোরআনের পরিভাষায় মু'মিন ও মুত্তাকী উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। সে সমস্ত লোকের বৈশিষ্ট্য, গুণাবলী এবং পরিচয়ও বর্ণনা করা হয়েছে। পরবর্তী পনেরটি আয়াতে সে সমস্ত লোকের কথা আলোচিত হয়েছে, যারা এ হেদায়েতকে গ্রহণ করেনি, বরং অস্বীকার করে বিরুদ্ধাচরণ করেছে।

তারা দু'টি দলে বিভক্ত। একদল প্রকাশ্যে কোরআনকে অস্বীকার করে বিরুদ্ধাচরণের পথ অবলম্বন করেছে। কোরআন তাদেরকে কাফের বলে আখ্যায়িত করেছে। অপর দল হচ্ছে সেই সব ব্যক্তি, যারা হীন পার্থিব উদ্দেশ্য সাধন করার জন্য অন্তরের ভাবধারা ও বিশ্বাসের কথাটি খোলাখুলিভাবে প্রকাশ করতে সাহস পায়নি, বরং প্রতারণার পথ অবলম্বন করেছে; মুসলমানদের তারা বলে, আমরা মুসলমান, কোরআনের হেদায়েত মানি এবং আমরা তোমাদের সাথে আছি। অথচ তাদের অন্তরে লুক্কায়িত থাকে কুফর ও অস্বীকৃতি। আবার কাফেরদের নিকট গিয়ে বলে, আমরা তোমাদের দলভুক্ত, তোমাদের সাথেই রয়েছি। মুসলমানদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য এবং তাদের গোপন কথা জানার জন্য তাদের সাথে মেলামেশা করি। কোরআন তাদেরকে 'মুনাফিক' বলে আখ্যায়িত করেছে। এ পনেরটি আয়াত যারা কোরআনকে অমান্য করে তাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। তন্মধ্যে উল্লিখিত দু'টি আয়াতে প্রকাশ্যে যারা অস্বীকার করে তাদের কথা ও স্বরূপ তুলে ধরা হয়েছে। আর পরবর্তী তেরটি আয়াতেই মুনাফিকদের সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে। এতে তাদের স্বরূপ, নিদর্শন, অবস্থা ও পরিণাম বর্ণনা করা হয়েছে।

এ আয়াতগুলোর বিস্তারিত আলোচনায় মনোনিবেশ করলে বোঝা যায় যে, কোরআন সূরা বাক্বারাহর প্রথম বিশটি আয়াতে একদিকে হেদায়েতের উৎসের সন্ধান দিয়ে বলেছে যে, এ উৎস হচ্ছে আল্লাহর কিতাব এই কোরআন। অপরদিকে বিশ্ববাসীকে এ হেদায়েত গ্রহণ করা ও না করার নিরিখে দু'টি ভাগে বিভক্ত করে দিয়েছে। যারা গ্রহণ করেছে, তাদেরকে মু'মিন-মুত্তাকী বলেছে, আর যারা অগ্রাহ্য করেছে তাদেরকে কাফের ও মুনাফিক বলে আখ্যা দিয়েছে।

প্রথমে রয়েছে সে দলের কথা, যাদের পথ صِرَاطَ الَّذِیۡنَ اَنۡعَمۡتَ عَلَیۡهِمۡ ۬ۙ এ চাওয়া হয়েছে। আর দ্বিতীয় দল যাদের পথ হতে غَیۡرِ الۡمَغۡضُوۡبِ عَلَیۡهِمۡ পানাহ চাওয়া হয়েছে। কোরআনের এ শিক্ষা হতে একটি মৌলিক জ্ঞাতব্য বিষয় এও প্রমাণিত হয় যে, বিশ্ববাসীকে এমনভাবে দু'টি ভাগ করা যায়, যা হবে আদর্শভিত্তিক। বংশ, গোত্র, দেশ, ভাষা ও বর্ণ এবং ভৌগোলিক বিভক্তি এমন কোন ভেদরেখা নয়, যার ভিত্তিতে মানবজাতিকে বিভক্ত করা যেতে পারে। এ সম্পর্কে সূরা তাগাবুন-এ পরিষ্কার মীমাংসা দেওয়া হয়েছে -

خَلَقَكُمْ فَمِنْكُمْ كَافِرٌ ومِنْكُمْ مُؤْمِنٌ . 

অর্থ—আল্লাহ তা'আলা তোমাদের সকলকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তোমাদের মধ্যে কিছুসংখ্যক মু'মিন এবং কিছুসংখ্যক কাফের হয়েছে।

আলোচ্য দু'টি আয়াতে আল্লাহ তা'আলা সেসব কাফের সম্পর্কে আলোচনা করেছেন, যারা তাদের কুফরীর দরুন বিরুদ্ধাচরণ ও শত্রুতার পথ বেছে নিয়েছে। আর যারা এ বিরুদ্ধাচরণে বশীভূত, তারা কোন সত্য কথা শুনতে এবং কোন সুস্পষ্ট দলীল-প্রমাণের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে প্রস্তুত ছিল না। এ সমস্ত লোকের জন্য আল্লাহর বিধান হচ্ছে যে, তাদেরকে দুনিয়াতেই একটি নগদ শাস্তিস্বরূপ তাদের অন্তঃকরণে সীলমোহর এঁটে দেওয়া হয়েছে। তাদের চোখ-কান থেকে হক বা সত্য গ্রহণের যোগ্যতা রহিত করে দেওয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা এই দাঁড়িয়েছে যে, সত্যকে বুঝবার মত বুদ্ধি, দেখবার মত দৃষ্টিশক্তি এবং শ্রবণ করার মত কান আর তাদের অবশিষ্ট নেই। শেষ আয়াতে এ সমস্ত লোকের জন্য কঠোর শান্তির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

কাফেরের সংজ্ঞা

کٰفِرُ - এর শাব্দিক অর্থ গোপন করা। না-শোকরীকেও কুফরী বলা হয়। কেননা, এতে এহসানকারীর এহসানকে গোপন করা হয়। শরীয়তের পরিভাষায় কুফর বলতে বোঝায়—যে সমস্ত বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করা ফরয, এর যে কোনটিকে অস্বীকার করা ।

যথা—ঈমানের সারকথা হচ্ছে যে, রাসূল (সা) আল্লাহ তা'আলার কাছ থেকে ওহীপ্রাপ্ত হয়ে উম্মতকে যে শিক্ষাদান করেছেন এবং যেগুলো অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়েছে সেগুলোকে আন্তরিকভাবে স্বীকার করা এবং হক বলে জানা। কোন ব্যক্তি যদি এ শিক্ষামালার কোন একটি হক বলে না মানে, তা হলে তাকে কাফের বলা যেতে পারে ।

'এনযার' শব্দের অর্থ

'এনযারاَنۡذَرۡ শব্দের অর্থ হচ্ছে এমন সংবাদ দেওয়া, যাতে ভয়ের সঞ্চার হয়। ‘এবশার’  এমন সংবাদকে বলা হয়, যা শ্রবণে আনন্দ লাভ হয়। সাধারণ অর্থে 'এনযার' বলতে ভয় প্রদর্শন করা যেতে পারে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শুধু ভয় প্রদর্শনকে 'এনযার' বলা হয় না; বরং শব্দটি দ্বারা এমন ভয় প্রদর্শন বোঝায়, যা দয়ার ভিত্তিতে হয়ে থাকে। যেভাবে মা সন্তানকে আগুন, সাপ, বিষ্ণু এবং হিংস্র জীবজন্তু হতে ভয় দেখিয়ে থাকেন। “নাযীর” বা ভয়-প্রদর্শনকারী ঐ সমস্ত ব্যক্তি, যাঁরা অনুগ্রহ করে মানবজাতির যথার্থ ভয়ের খবর জানিয়ে দিয়েছেন। এজন্যই নবী-রাসূলগণকে ঘাসভাবে 'নাযীর' বলা হয়। কেননা, তাঁরা দয়া ও সতর্কতার ভিত্তিতে অবশ্যম্ভাবী বিপদ হতে ভয় প্রদর্শন করার জন্যই প্রেরিত হয়েছেন। নবীগণের জন্য 'নাযীর' শব্দ ব্যবহার করে একদিকে ইশারা করা হয়েছে যে, যাঁরা তবলীগের দায়িত্ব পালন করবেন' তাঁদের কর্তব্য হচ্ছে- সাধারণ মানুষের প্রতি যথার্থ মমতা ও সমবেদনা সহকারে তাদের সামনে কথা বলা।

এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ (সা)-কে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে যে, এ সমস্ত জেদী অহংকারী লোক, যারা সত্যকে জেনে-শুনেও কুফরী ও অস্বীকৃতির উপর দৃঢ় অনড় হয়ে আছে অথবা অহংকারের বশবর্তী হয়ে কোন সত্য কথা শ্রবণ করতে কিংবা সুস্পষ্ট দলীল-প্রমাণ দেখতে প্রস্তুত নয় তাদের পথে এনে ঈমানের আলোকে আলোকিত করার উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সা) যে বিরামহীন চেষ্টা করেছেন তা ফলপ্রসূ হওয়ার নয়। এদের ব্যাপারে চেষ্টা করা না করা একই কথা। এর কারণস্বরূপ পূর্ববর্তী আয়াতে বলা হয়েছে যে, তাদের অন্তর এবং চোখ-কানে সীলমোহর এঁটে দেওয়া হয়েছে। আর তাদের চোখে পর্দা বা আবরণ পড়ে রয়েছে। চিন্তা করা ও অনুধাবন করার মত যেসব রাস্তা বা পথ রয়েছে তা সবই তাদের জন্য রুদ্ধ। তাই তাদের সংশোধনের আশা করাও বৃথা। কোন কিছুতেই সীলমোহর এজন্যই ব্যবহার করা হয় যাতে তার মধ্যে বাইরের কোন বস্তু প্রবেশ করতে না পারে। তাদের অন্তর এবং কানে মোহর মেরে দেওয়ার উদ্দেশ্যও তাই যে, তাদের মধ্যে হক বা সত্য গ্রহণের কোন সম্ভাবনা নেই। তাদের এ অবস্থাকেই অন্তর ও কানে সীলমোহর এঁটে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর চক্ষু সম্পর্কে সীলমোহরের পরিবর্তে পর্দা বা আবরণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর তাৎপর্য হচ্ছে এই যে, অন্তরে প্রবেশের মত কোন বিষয় বা কোন চিন্তা ও অনুভূতি কোন একদিক হতে আসৈ না; বরং সব দিক হতে আসে। অনুরূপভাবে কানে পৌঁছাবার শব্দও চতুর্দিক হতে আসতে পারে, তা একমাত্র সীলমোহর করা হলেই রহিত হতে পারে। কিন্তু চোখের ব্যাপার স্বতন্ত্র। চোখের দৃষ্টি শুধু সামনের দিকে, তাই যখন সামনে পর্দা পড়ে, তখন দৃষ্টিশক্তি রহিত হয়ে যায়।

পাপের শাস্তি জাগতিক সামর্থ্য থেকে বঞ্চিত হওয়া

এ দু'টি আয়াতের দ্বারা বোঝা গেল, কুফর ও অন্যান্য সব পাপের আসল শান্তি তো পরকালে হবেই; তবে কোন কোন পাপের আংশিক শান্তি দুনিয়াতেও হয়ে থাকে। দুনিয়ার এ শান্তি ক্ষেত্র বিশেষে নিজের অবস্থা সংশোধন করার সামর্থ্যকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। শুভবুদ্ধি লোপ পায়। মানুষ আখেরাতের হিসাব-নিকাশ সম্পর্কে গাফেল হয়ে গোমরাহীর পথে এমন দ্রুততার সাথে অগ্রসর হতে থাকে; যাতে অন্যায়ের অনুভূতি পর্যন্ত তাদের অন্তর হতে দূরে চলে যায়, এ সম্পর্কে কোন বুযুর্গ মন্তব্য করেছেন-

إِنَّ مِنْ جَزَاءِ السَّيِّئَةِ سَيِّئَةَ بَعْدَهَا وَإِنْ مِنْ جَزَاءِ الْحَسَنَةِ حَسَنَةً

অর্থাৎ—পাপের শাস্তি এরূপও হয়ে থাকে যে, একটি পাপ অপর একটি পাপকে আকর্ষণ করে, অনুরূপভাবে একটি নেকীর বদলায় অপর একটি নেকী আকৃষ্ট হয়। হাদীসে আছে, মানুষ যখন কোন একটি গোনাহের কাজ করে, তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ লাগে। সাদা কাপড়ে হঠাৎ কালো দাগ লাগার পর যেমন তা খারাপ লাগে, তেমনি প্রথমাবস্থায় অন্তরে পাপের দাগও অস্বস্তির সৃষ্টি করে। এ অবস্থায় যদি সে ব্যক্তি তওবা না করে, আরো পাপ করতে থাকে, তবে পর পর দাগ পড়তে পড়তে অন্তঃকরণ দাগে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় তার অন্তর থেকে ভাল-মন্দের পার্থক্য সম্পর্কিত অনুভূতি পর্যন্ত লুপ্ত হয়ে যায়। অন্তরের মধ্যে সৃষ্ট এ অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থাকে কোরআনে رَنَ বা رَیۡنَ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরশাদ হয়েছে -

كَلَّا بَلْ رُنَ عَلَى قُلُوبِهِمْ ما كَانُوا يَكْسِبُونَ .

তিরমিযী শরীফে আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণনা করেছেন যে, হুযূর (সা) এরশাদ করেছেন--মানুষ যখন কোন পাপ করে, তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে এবং সে যখন তওবা করে, তখন তা পরিষ্কার হয়ে যায়।

উপদেশ দান করা সর্বাবস্থায় উপকারী

এ আয়াতে সনাতন কাফেরদের প্রতি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নসীহত করা না করা সমান বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এ সাথে..... এর বাধ্যবাধকতা আরোপ করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এ সমতা কাফেরদের জন্য, রাসূলের জন্য নয়। তবে তাদেরকে জানানোর এবং সংশোধন করার চেষ্টা করার সওয়াব অবশ্যই পাওয়া যাবে। ভাই সমগ্র কোরআনের কোন আয়াতেই এসব লোককে ঈমান ও ইসলামের দিকে দাওয়াত দেওয়া নিষেধ করা হয়নি। এতে বোঝা যাচ্ছে যে, যে ব্যক্তি ঈমান ও ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার কাজে নিয়োজিত তা ফলপ্রসূ হোক বা না হোক সে এ কাজের সওয়াব পাবেই ।

একটি সন্দেহের নিরসন: এ আয়াতের বিষয়বস্তুর অনুরূপ ভাষা সূরায়ে মুতাফিফীনের এক আয়াতেও উল্লেখিত হয়েছে। যথা:

كَلَّا بَلْ دُنَ عَلَى قُلُوبِهِمْ ما كَانُوا يَكْسِبُونَ .

অর্থাৎ 'কখনও এমন নয়; বরং তাদের অন্তরে তাদের কর্মের মরিচা গাঢ় হয়ে গেছে।' তাতে বোঝানো হয়েছে যে, তাদের মন্দ কাজ ও অহংকারই তাদের অন্তরে মরিচার আকার ধারণ করেছে। এ মরিচাকে আলোচ্য আয়াতে 'সীলমোহর' বা 'আবরণ' শব্দের দ্বারা উল্লেখ করা হয়েছে। তাই এরূপ সংশয় সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক নয় যে, যখন আল্লাহ্ই তাদের অন্তরে সীলমোহর এঁটে দিয়েছেন এবং গ্রহণ-ক্ষমতাকে রহিত করেছেন, তখন তারা কুফরী করতে বাধ্য। কাজেই তাদের শান্তি হবে কেন? এর জওয়াব হচ্ছে যে, তারা নিজেরাই অহংকার ও বিরুদ্ধাচরণ করে নিজেদের যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে, তাই এজন্য তারাই দায়ী। যেহেতু বান্দাদের সকল কাজের সৃষ্টি আল্লাহ্ই করেছেন, তাই তিনি এস্থলে সীলমোহরের কথা বলে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারা নিজেরাই যখন সত্য গ্রহণের ক্ষমতাকে রহিত করতে উদ্যত হয়েছে, তখন আমি আমার কর্ম-পদ্ধতি অনুযায়ী তাদের এ খারাপ যোগ্যতার পরিবেশ তাদের অন্তরে সৃষ্টি করে দিয়েছি।





*******************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.

Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url