আয়েশা (রাঃ) -এর প্রতি অন্যান্য স্ত্রীদের ঈর্ষা





রাসূল (সাঃ) -এর সবচেয়ে প্রিয় স্ত্রী

ইমাম তিরমিযী সহীহ সূত্রে আমর ইবনে গালেব থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন সম্পর্কে সমালোচনা করতে আম্মার (রাঃ) -এর সামনে আয়েশা (রাঃ) সম্পর্কে সমালোচনা করতে লাগলেন। তখন তিনি বললেনঃ তুমি লাঞ্ছনা ও বঞ্ছনার মধ্যে পতিত হও । তুমি কি রাসূল (সাঃ)- এর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে কষ্ট দিচ্ছ?


রাসূল (সাঃ) -এর সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন আয়েশা

আমর ইবনে আস (রাঃ) বর্ণনা করেন । একদা রাসূল (সাঃ) কে বলা হলো, আপনার নিকট সবচেয়ে প্রিয় মানুষ কে? তিনি বললেনঃ আয়েশা। অতঃপর বলা হলো, পুরুষদের মধ্যে কে? তিনি বললেন, তার পিতা অর্থাৎ আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)।
   
ইমাম তাবারানী একটি হাসান সনদে আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন । তিনি বলেন, আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপনার নিকট সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি কে? তখন তিনি বললেন, কেন? আমি বললাম, যাতে করে আপনি যাকে ভালোবাসেন আমিও তাকে ভালোবাসতে পারি। তখন তিনি বললেনঃ আয়েশা।

বর্ণিত আছে, আয়েশা (রাঃ) -এর মৃত্যুর দিন কেউ বললঃ আজ রাসূল (সাঃ) -এর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটি মৃত্যুবরণ করেছে। দারাকুতনী আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূল (সাঃ) -কে বললাম, আপনি আমাকে কিরূপ ভালোবাসেন? তিনি বললেনঃ রশ্মির গিঁটের মতো । আমি বললাম, কিরূপ গিঁটের মতো? তখন তিনি বললেনঃ বিপরীতমুখী দুই গিটের বন্ধনের ন্যায় ।


নবী (সাঃ) এর চোখে ঝাড় ফুঁক দেন আয়েশা (রাঃ)

ইমাম মুসলিম আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদা রাসূল (সাঃ) আমাকে তার চোখে ঝাঁড়ফুঁক দেয়ার জন্য আদেশ করেন।
   
রাসূল (সাঃ) এর সকল স্ত্রীদের কাছে পরিভ্রমণ করতেন এবং আয়েশা (রাঃ) এর মাধ্যমে শেষ করতেন । উমর আল মালা আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন । তিনি বলেন, যখন রাসূল (সাঃ) আসরের নামায আদায় করতেন, তখন প্রতিটি স্ত্রীর কাছে গমন করতেন এবং আমাকে দিয়ে শেষ করতেন। যখন তিনি আমার ঘরে প্রবেশ করতেন, তখন তিনি তার হাঁটু আমার রানের ওপর রাখতেন এবং তার হাত আমার কাঁধের ওপর রাখতেন। অতঃপর তিনি আমার প্রতি ঝুঁকে পড়তেন এবং আমিও তার প্রতি ঝুঁকে পড়তাম।


নবী (সাঃ) -এর প্রতি ভালোবাসায় উৎসাহ প্রদান

আবু ইয়ালা এবং বাযযার একটি হাসান সূত্রে আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন । তিনি বলেন, একদা আমার ঘরে প্রবেশ করে দেখলেন যে, আমি কাঁদতেছি। তখন তিনি বললেনঃ কিসে তোমাকে কাঁদাল? আমি বললাম, ফাতেমা আমাকে গালি দিয়েছে। অতঃপর তিনি ফাতেমাকে ডাকলেন এবং বললেনঃ হে ফাতেমা। তুমি কি আয়েশাকে গালি দিয়েছ? ফাতেমা বললঃ হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! তখন তিনি বললেনঃ হে ফাতিমা! আমি যাকে ভালোবাসি তুমি কি তাকে ভালোবাস না? ফাতেমা বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ আমি যার ওপর রাগান্বিত হই তুমি কি তার ওপর রাগান্বিত হও না? ফাতেমা বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ আমি আয়েশাকে ভালোবাসি। সুতরাং তুমি আয়েশাকে ভালোবাস। অতঃপর ফাতেমা বলল, আমি আর কখনো আয়েশাকে এমন কথা বলব না, যার দ্বারা তিনি কষ্ট পান ।


আয়েশা (রাঃ) -কে বিজয়ের প্রতি উৎসাহ দান

ইমাম নাসাঈ আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদা না জেনে আমি বিনা অনুমতিতে যায়নাবের ঘরে প্রবেশ করে ফেলি। তখন তিনি আমার ওপর রাগান্বিত হয়ে রাসূল (সাঃ) -কে বলেন, যখন আমি আপনাকে গ্রহণ করেছি, তখন আবু বকরের মেয়ে কোন অযুহাতে এখানে প্রবেশ করে? অতঃপর তিনি আমাকে চুম্বন করেন এবং তিনি মুখ ফিরিয়ে নেন। তখন রাসূল (সাঃ) বলেন, তোমাকে ছাড়া আমি আর কাকে সাহায্য করব? অতঃপর তিনি তাকে চুম্বন করেন। তারপর আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখলাম তার চেহারা লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। ফলে সে আর কোনো প্রতিউত্তর করল না। তারপর আমি রাসূল (সাঃ) -এর দিকে তাকিয়ে দেখলাম, তার চেহারা নুতন চাঁদের মতো উজ্জ্বল হয়ে আছে ।


আয়েশা (রাঃ) -এর প্রতি অন্যান্য স্ত্রীদের ঈর্ষা

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) -এর স্ত্রীগণ ফাতেমাকে রাসূল (সাঃ)-এর নিকট প্রেরণ করলেন। অতঃপর তিনি রাসূল (সাঃ) -এর নিকট অনুমতি চাইলেন। এমতাবস্থায় রাসূল (সাঃ) আমার সাথে আমার চাদরে চিত হয়ে শুয়ে ছিলেন । অতঃপর রাসূল (সাঃ) তাকে অনুমতি দিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আপনার স্ত্রীগণ আমাকে আপনার নিকট এ বিষয়ে প্রেরণ করেছেন যে, তারা আপনার নিকট আবু কুহাফার মেয়ের ব্যাপারে ইনসাফ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে এবং এরকম এরকম কথা বলেছে। তখন আমি চুপ থেকেছি।

আয়েশা (রাঃ) বলেন, তখন রাসূল (সাঃ) তাকে বললেনঃ হে আমার মেয়ে! তুমি কি ভালোবাস না যা আমি ভালোবাসি। তখন তিনি বললেন, হ্যাঁ ভালোবাসি। রাসূল (সাঃ) বললেনঃ তবে তুমি এটাই ভালোবেসে যাও ।

আয়েশা (রাঃ) বলেন, যখন তিনি রাসূল (সাঃ) থেকে এসব কথা শুনলেন তখন তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন এবং স্ত্রীদের কাছে ফিরে গেলেন। অতঃপর তিনি যা বললেন, তা তাদেরকে জানিয়ে দিলেন এবং রাসূল যা বললেন তাও তাদেরকে সংবাদ দিলেন।
   
অতঃপর তারা তাকে বললেন, আমরা তোমাকে দেখি না যে, তুমি আমাদেরকে কোনো কিছুর অমুখাপেক্ষী করতে পারলে। সুতরাং তুমি রাসূল (সাঃ) -এর নিকট আবার ফিরে যাও এবং বল, নিশ্চয় আপনার স্ত্রীগণ আবু কুহাফার মেয়ের ব্যাপারে আপনার নিকট ইনসাফ চায়। তখন ফাতেমা বললেন, আমি আর এ কথাগুলো বলতে পারব না।

আয়েশা (রাঃ) বলেন, তারপর নবী (সাঃ) -এর স্ত্রীগণ যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ)কে প্রেরণ করলেন। অতঃপর তিনি রাসূল (সাঃ) -এর কাছে প্রবেশের জন্য অনুমতি চাইলেন। এমতাবস্থায় রাসূল (সাঃ) আয়েশার (রাঃ) সাথে একই চাদরে শুয়ে ছিলেন, যে অবস্থায় ফাতেমা (রাঃ) তাকে পেয়েছিলেন । অতঃপর রাসূল (সাঃ) তাকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। অতঃপর যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীগণ আমাকে আপনার নিকট এ বিষয়ে প্রেরণ করেছেন যে, তারা আপনার নিকট আবু কুহাফার মেয়ের ব্যাপারে ইনসাফ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। নবী (সাঃ) বললেনঃ শুন সে তো আবু বকরের মেয়ে ।




***************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url