মা’আরেফুল কোরআন - ৫৪ || সূরা আল-বাকারাহ, ১৫৪-১৫৭ || শহীদগণের মর্যাদা এবং মানুষের বিপদাপদ সম্পর্কে আলোচনা







بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
سورة البقرة

সূরা আল-বাকারাহ আয়াতঃ ১৫৪-১৫৭


 وَ لَا تَقُوۡلُوۡا لِمَنۡ یُّقۡتَلُ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ اَمۡوَاتٌ ؕ بَلۡ اَحۡیَآءٌ وَّ لٰکِنۡ لَّا تَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۵۴  وَ لَنَبۡلُوَنَّکُمۡ بِشَیۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَ الۡجُوۡعِ وَ نَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوَالِ وَ الۡاَنۡفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ ؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۵۵  الَّذِیۡنَ اِذَاۤ اَصَابَتۡهُمۡ مُّصِیۡبَۃٌ ۙ قَالُوۡۤا اِنَّا لِلّٰهِ وَ اِنَّاۤ اِلَیۡهِ رٰجِعُوۡنَ ﴿۱۵۶  اُولٰٓئِکَ عَلَیۡهِمۡ صَلَوٰتٌ مِّنۡ رَّبِّهِمۡ وَ رَحۡمَۃٌ ۟ وَ اُولٰٓئِکَ هُمُ الۡمُهۡتَدُوۡنَ ﴿۱۵۷

সূরা বাকারা ১৫৪-১৫৭ নং আয়াতের অর্থ

(১৫৪) আর যারা আল্লাহর রাস্তার নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা' বোঝ না। (১৫৫) এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের  (১৫৬) যখন তারা বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাব। (১৫৭) তারা সে সব লোক যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েতপ্রাপ্ত।

   

সূরা বাকারা ১৫৪-১৫৭ নং আয়াতের সাথে পূর্বাপর আয়াতের যোগসূত্র

যোগসুত্র
পূর্ববর্তী আয়াতে একটা বিশেষ প্রতিকূল অবস্থায় সবর করার তালীম এবং ধৈর্য ধারণকারীদের ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছিল। এ আয়াতে অনুরূপ আরো কতিপয় অসুবিধাজনক অবস্থার বিবরণ দিয়ে সেসব অবস্থাতেও সবর করার উৎসাহ দান এবং সে পরিস্থিতিতেও সবর করার ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। সে অবস্থাগুলোর মধ্যে কাফিরদের সাথে যুদ্ধ-বিগ্রহের বিষয়টি সর্বপ্রথম উল্লেখ করা হচ্ছে এ কারণে যে, পরীক্ষার এ অবস্থাটাই সর্বাপেক্ষা বেশি বিপজ্জনক ও গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং যারা এ অবস্থার মোকাবেলা করতে পারবে, তারা স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তী অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র ও হালকা বিপদে ধৈর্যধারণ করতে সমর্থ হবে। দ্বিতীয়ত যারা মুসলমানদের সাথে কেবলা পরিবর্তনের ব্যাপারে বিতর্কের অবতারণা করছিল, এ বিপদ তাদের মোকাবেলাতেই যেহেতু দেখা দেবে, সেহেতু এটি সর্বপ্রথম উল্লিখিত হয়েছে।

সূরা বাকারা ১৫৪-১৫৭ নং আয়াতের তাফসীর

তাফসীরের সার সংক্ষেপ
আর যেসব লোক আল্লাহর পথে (অর্থাৎ দীনের জন্য) নিহত হয় (তাদের ফযীলত এমন যে,) তাদের মৃত বলো না। বরং এসব লোক (একটা বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ জীবনের সাথে) জীবিত, কিন্তু তোমরা (তোমাদের বর্তমান অনুভূতিতে সে জীবন সম্পর্কে) অনুভব করতে পার না। এবং আমি (আল্লাহর প্রতি তোমাদের সন্তুষ্টি এবং আত্মসমর্পণের গুণ সম্পর্কে যা ঈমানেরই লক্ষণ) তোমাদের পরীক্ষা গ্রহণ করব, কিছুটা ভয়ে নিপতিত করে (যা তোমাদের শত্রুদের সংখ্যাধিক্য অথবা উপর্যুপরি আপদ-বিপদের মাধ্যমে) এবং কিছুটা (দারিদ্র্য ও) ক্ষুধায় নিপতিত করে (কিছুটা) জান-মাল ও ফল-ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে (যথাঃ পশুমড়ক, মানুষের মৃত্যু, রোগজরা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফল-ফসলের ক্ষতি সাধন করে। এমতাবস্থায়) তোমরা ধৈর্য অবলম্বন কর। (যারা এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় এবং অটল থাকে,) আপনি সে সব সবরকারীকে সুসংবাদ শুনিয়ে দিন (যাদের রীতি হচ্ছে যে,) তাদের উপর যখন কোন বিপদ আসে, তখন তারা (অন্তরে অনুভব করে এরূপ) বলে যে, আমরা (আমাদের ধন-সম্পদ সন্তান-সন্ততিসহ প্রকৃতপক্ষে) আল্লাহ্ তা’আলারই মালিকানাধীন। (প্রকৃত মালিকের তো তাঁর সম্পদে যে কোন হস্তক্ষেপ করার অধিকার রয়েছে, এতে মালিকানাধীনদের পক্ষে উদ্বিগ্ন হওয়া অর্থহীন।) এবং আমরা সবাই (এ দুনিয়া থেকে) আল্লাহর নিকটই ফিরে যাবো ( এখানকার ক্ষতির বদলা সেখানে গিয়ে অবশ্যই আমরা পাবো)। বস্তুত সুসংবাদের যে কথা তাদের শোনানো হবে, তা হচ্ছে এই যে, এসব লোকের প্রতি (স্বতন্ত্রভাবে) তাদের পরওয়ারদিগারের তরফ থেকে বিশেষ রহমত (প্রদত্ত) হবে এবং সবার প্রতিই (সমষ্টিগতভাবে) ব্যাপক রহমত হবে। আর এসব লোকই তারা, যারা (প্রকৃত অবস্থায়) হেদায়েতের (যথার্থ মর্যাদার) স্তরে পৌঁছতে সক্ষম হবে। কেননা আল্লাহ্ তা’আলাই যে প্রকৃত মালিক এবং সমস্ত ক্ষতি পূরণ করার অধিকারী একথা তারা অন্তর দিয়ে অনুভব করতে সক্ষম হয়েছে।

সূরা বাকারা ১৫৪-১৫৭ নং আয়াতের বিষয় বস্তু


আনুষঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়

আলমে-বরযখে নবী এবং শহীদগণের হায়াত

ইসলামী রেওয়ায়েত মোতাবেক প্রত্যেক মৃত ব্যক্তি আলমে বরযখে বিশেষ ধরনের এক হায়াত বা জীবন প্রাপ্ত হয় এবং সে জীবন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কবরের আযাব বা সওয়াব অনুভব করে থাকে—একথা সবাই জানেন। এই জীবন প্রাপ্তির ব্যাপারে মু’মিন, কাফির এবং পুণ্যবান ও গোনাহগারের কোন পার্থক্য নেই। তবে বরযখের এ জীবনের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। এক স্তরে সর্বশ্রেণীর লোকই সমানভাবে শরীক। কিন্তু বিশেষ এক স্তর নবী-রাসূল এবং বিশেষ নেককার বান্দাদের জন্য নির্ধারিত। এ স্তরেও অবশ্য বিশেষ পার্থক্য এবং পরস্পরের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে আলিমগণ বিস্তর আলোচনা করেছেন। তবে এ ব্যাপারে কোরআন ও সুন্নাহর তথ্যের সাথে সর্বাপেক্ষা সামঞ্জস্যপূর্ণ বক্তব্য পেশ করেছেন হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (র)। সুতরাং তাঁর রচিত বয়ানুল-কোরআনের আলোচনাটুকু উদ্ধৃত করাই যথেষ্ট বলে মনে করছি।

নবী-রাসুল এবং শহীদগণের মর্যাদা

যেসব লোক আল্লাহর রাস্তায় নিহত হন তাঁদেরকে শহীদ বলা হয়। সাধারণভাবে অবশ্য তাঁদের মৃত বলাও জায়েয। তবে তাঁদের মৃত্যুকে অন্যদের মৃত্যুর সমপর্যায়ভুক্ত মনে করতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা মৃত্যুর পর প্রত্যেকেই বরযখের জীবন লাভ করে থাকে এবং সে জীবনের পুরস্কার অথবা শাস্তি ভোগ করতে থাকে। কিন্তু শহীদগণকে সে জীবনে অন্যান্য মৃতের তুলনায় একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ মর্যাদা দান করা হয়। তা হলো অনুভূতির বৈশিষ্ট্য, অন্যান্য মৃতের তুলনায় তাঁদের বেশি অনুভূতি দেওয়া হয়। যেমন, মানুষের পায়ের গোঁড়ালি ও হাতের আঙ্গুলের অগ্রভাগ—উভয় স্থানেই অনুভূতি থাকে; কিন্তু গোঁড়ালির তুলনায় আঙ্গুলের অনুভূতি অনেক বেশি তীব্র, তেমনি সাধারণ মৃতের তুলনায় শহীদগণ বরযখের জীবনে বহু গুণ বেশি অনুভূতিপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। এমন কি শহীদের এ জীবনানুভূতি অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের জড়দেহেও এসে পৌছিয়ে থাকে। অনেক সময় তাঁদের হাড়-মাংসের দেহ পর্যন্ত মাটিতে বিনষ্ট হয় না, জীবিত মানুষের দেহের মতই অবিকৃত থাকতে দেখা যায়। হাদীসের বর্ণনা এবং বহু প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় এর যথার্থতা প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণেই শহীদগণকে জীবিত বলা হয়েছে এবং সাধারণ মৃত বলতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে সাধারণ নিয়মে তাঁদেরকেও মৃতই ধরা হয় এবং তাঁদের পরিত্যক্ত সম্পদ ওয়ারিসগণের মধ্যে বণ্টিত হয় এবং তাঁদের বিধবাগণ অন্যের সাথে পুনর্বিবাহ করতে পারে।

এ আয়াতের ক্ষেত্রে নবী-রাসূলগণ শহীদগণের চাইতেও অনেক বেশি মর্তবার অধিকারী হয়ে থাকেন। তাঁদের পবিত্র দেহ সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় থাকার পরও বাহ্যিক হুকুম-আহকামে তার কিছু প্রভাব অবশিষ্ট থাকে। যথা—যাদের পরিত্যক্ত কোন সম্পদ বণ্টন করার রীতি নেই, তাদের স্ত্রীগণ দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনেও আবদ্ধ হতে পারেন না।

মোটকথা, বরযখের এ জীবনে সর্বাপেক্ষা শক্তিসম্পন্ন হচ্ছেন নবী-রসূলগণ, অতঃপর শহীদগণ এবং তারপর অন্যান্য সাধারণ মৃত ব্যক্তি। অবশ্য কোন কোন হাদীসের দ্বারা জানা যায় যে, ওলী-আউলিয়া এবং নেককার বান্দাগণের অনেকেই বরযখের হায়াতের ক্ষেত্রে শহীদগণের সমপর্যায়ভুক্ত হয়ে থাকেন। কেননা আত্মশুদ্ধির সাধনায় রত অবস্থায় যাঁরা মৃত্যুবরণ করেন, তাঁদের মৃত্যুকেও শহীদের মৃত্যু বলা যায়। ফলে তাঁরাও শহীদগণেরই পর্যায়ভুক্ত হয়ে যান। আয়াতের মর্মার্থ অনুযায়ী নিঃসন্দেহে অন্যান্য নেককার সালেহগণের তুলনায় শহীদগণের মর্যাদা বেশি, তবে নেককারগণও শহীদের পর্যায়ভুক্ত হতে পারেন।

যদি কোন শহীদের লাশ মাটিতে বিনষ্ট হতে দেখা যায়, তাহলে এমন ধারণা করা যেতে পারে যে, আল্লাহর পথে সে নিহত হয়েছে সত্য, তবে হয়তো তার নিয়ত বিশুদ্ধ না থাকায় তার সে মৃত্যু যথার্থ শহীদের মৃত্যু হয়নি। কিন্তু এমন কোন শহীদের লাশ যদি মাটির নিচে বিনষ্ট অবস্থায় পাওয়া যায়, আল্লাহর পথে শহীদ হওয়ার ব্যাপারে যার নিষ্ঠায় কোন সন্দেহ নেই, তবে সেক্ষেত্রে অবশ্য এমন ধারণা করা উচিত হবে না যে, তিনি শহীদ নন অথবা কোরআনের আয়াতের মর্মার্থ এখানে টিকছে না। কেননা মানুষের লাশ যে কেবল মাটিতেই বিনষ্ট হয় তাই নয়। অনেক সময় ভূনিম্নস্থ অন্যান্য ধাতু কিংবা অন্য কোন কিছুর প্রভাবেও জড়দেহ বিনষ্ট হওয়া সম্ভব। নবী-রসূল ও শহীদগণের লাশ মাটিতে ভক্ষণ করে না বলে হাদীসে যে বর্ণনা রয়েছে, তাতে একথা বোঝা যায় না যে, মাটি ছাড়া তাদের লাশ অন্য কোন ধাতু কিংবা খনিজ পদার্থের প্রভাবেও বিনষ্ট হতে পারে না।

নবী-রাসূলগণের পবিত্র দেহও যে সাধারণ মানব দেহের মত বিভিন্ন উপকরণের দ্বারাই সৃষ্টি হয়েছে এ কথার প্রমাণ পাওয়া যায়। সুতরাং তাঁদের দেহও অস্ত্রের আঘাত কিংবা ওষুধের প্রভাবে স্বাভাবিকভাবেই প্রভাবান্বিত হয়েছে। এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার যে, নবী-রসূলগণের মৃত্যু-পূর্ববর্তী জীবনের তুলনায় শহীদগণের মৃত্যু-পূর্ববর্তী জীবন বেশি শক্তিসম্পন্ন হতে পারে না। নবী-রসূলগণের জীবিত দেহে অস্ত্র এবং অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদানের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার নির্ভরযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। সুতরাং মাটির সাথে মিশ্রিত অন্য কোন রাসায়নিক পদার্থ কিংবা অন্য কোন উপাদানের প্রভাবে যদি শহীদের লাশে কোন প্রকার বিকৃতি ঘটে যায়, তবে এর দ্বারা ‘মাটি শহীদের লাশে বিকৃতি ঘটাতে পারে না’—এ হাদীসের যথার্থতা বিঘ্নিত হয় না।

সাধারণ মৃতের তুলনায় শহীদের লাশ অধিককাল পর্যন্ত মাটির দ্বারা প্রভাবান্বিত না হওয়াকে তাঁদের একটা অনন্য বৈশিষ্ট্য বলা যেতে পারে। সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম দু’অবস্থাতেই হতে পারে। প্রথমত, চিরকাল জড়দেহ অবিকৃত থাকার মাধ্যমে এবং দ্বিতীয়ত, অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি দিন অবিকৃত থাকার মাধ্যমে। যদি বলা হয় যে, তাঁদের দেহও সাধারণ লোকের দেহের তুলনায় আশ্চর্যজনকভাবে বেশি দিন অবিকৃত থাকে এবং হাদীসের দ্বারা এ কথাই বোঝানো হয়েছে, তবে তাও অবাস্তব হবে না। যেহেতু বরযখের অবস্থা মানুষের সাধারণ পঞ্চেন্দ্রিয়ের মাধ্যমে অনুভব করা যায় না, সেহেতু কোরআনে শহীদের সে জীবন সম্পর্কে لَا يَشْعُرُونَ (তোমরা বুঝতে পার না,) বলা হয়েছে। এর মর্মার্থ হলো এই যে, সে জীবন সম্পর্কে অনুভব করার মত অনুভূতি তোমাদের দেওয়া হয়নি।

বিপদে ধৈর্যধারণ

আল্লাহ্ তা’আলার তরফ থেকে বান্দাদের যে পরীক্ষা নেওয়া হয়, তার তাৎপর্য কোরআন وَإِذِ ابْتَلَى إِبْرَاهِيمَ رَبُّهُ আয়াতের তফসীরে বর্ণিত হয়েছে। কোন বিপদে পতিত হওয়ার আগেই যদি সে সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে দেওয়া হয়, তবে সে বিপদে ধৈর্য ধারণ সহজতর হয়ে যায়। কেননা, হঠাৎ করে বিপদ এসে পড়লে পেরেশানী অনেক বেশি হয়। যেহেতু আল্লাহ্ তা’আলা সমগ্র উম্মতকে লক্ষ্য করেই পরীক্ষার কথা বলেছেন, সেহেতু সবার পক্ষেই অনুধাবন করা উচিত যে, এ দুনিয়া দুঃখ-কষ্ট সহ্য করারই স্থান। সুতরাং এখানে যেসব সম্ভাব্য বিপদ-আপদের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোকে অপ্রত্যাশিত কিছু মনে না করলেই ধৈর্যধারণ করা সহজ হতে পারে। এ উম্মত পরীক্ষায় সমগ্র উম্মত সমষ্টিগতভাবে উত্তীর্ণ হলে পর সমষ্টিগতভাবেই তার পুরস্কার দেওয়া হবে; এ ছাড়াও সবরের পরীক্ষায় ব্যক্তিগত পর্যায়ে যারা যতটুকু উত্তীর্ণ হবেন, তাদের ঠিক ততটুকু বিশেষ মর্যাদাও প্রদান করা হবে।

বিপদে ’ইন্নালিল্লাহ্’ পাঠ করা

আয়াতে সবরকারিগণের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা বিপদের সম্মুখীন হলে ’ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করে। এর দ্বারা প্রকৃতপক্ষে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে যে, কেউ বিপদে পড়লে যেন এ দোয়াটি পাঠ করে। কেননা, এরূপ বলাতে একাধারে যেমন অসীম সওয়াব পাওয়া যায়, ঠিক তেমনি যদি অর্থের প্রতি যথাযথ লক্ষ্য রেখে পাঠ করা হয়, তবে বিপদে আন্তরিক শান্তিলাভ এবং তা থেকে উত্তরণও সহজতর হয়ে যায়।






*******************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url