মা’আরেফুল কোরআন - ৬৩ || সূরা আল-বাকারাহ, ১৭৪-১৭৬ || স্বার্থের জন্য ধর্ম বিক্রি করা ও ধর্মকে বিকৃত করার শাস্তি







بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
سورة البقرة

সূরা আল-বাকারাহ আয়াতঃ ১৭৪-১৭৬


  اِنَّ الَّذِیۡنَ یَکۡتُمُوۡنَ مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰهُ مِنَ الۡکِتٰبِ وَ یَشۡتَرُوۡنَ بِهٖ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ۙ اُولٰٓئِکَ مَا یَاۡکُلُوۡنَ فِیۡ بُطُوۡنِهِمۡ اِلَّا النَّارَ وَ لَا یُکَلِّمُهُمُ اللّٰهُ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَ لَا یُزَکِّیۡهِمۡ ۚۖ وَ لَهُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۱۷۴  اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ اشۡتَرَوُا الضَّلٰلَۃَ بِالۡهُدٰی وَ الۡعَذَابَ بِالۡمَغۡفِرَۃِ ۚ فَمَاۤ اَصۡبَرَهُمۡ عَلَی النَّارِ ﴿۱۷۵  ذٰلِکَ بِاَنَّ اللّٰهَ نَزَّلَ الۡکِتٰبَ بِالۡحَقِّ ؕ وَ اِنَّ الَّذِیۡنَ اخۡتَلَفُوۡا فِی الۡکِتٰبِ لَفِیۡ شِقَاقٍۭ بَعِیۡدٍ ﴿۱۷۶

সূরা আল-বাকারাহ ১৭৪-১৭৬ নং আয়াতের অর্থ

(১৭৪) নিশ্চয় যারা গোপন করে, কিতাবে যা আল্লাহ্ নাযিল করেছেন এবং সেজন্য গ্রহণ করে অল্প মূল্য, তারা আগুন ছাড়া নিজের পেটে আর কিছুই ঢুকায় না। আর আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের সাথে না কথা বলবেন, না তাদের পবিত্র করা হবে। বস্তুত তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। 
(১৭৫) এরাই হলো সে সমস্ত লোক, যারা খরিদ করেছে হেদায়েতের বিনিময়ে গোমরাহী এবং (খরিদ করেছে) ক্ষমা ও অনুগ্রহের বিনিময়ে আযাব। অতএব, তারা দোযখের উপর কেমন ধৈর্য ধারণকারী। 
(১৭৬) আর এটা এ জন্য যে, আল্লাহ্ সত্যসহ কিতাব নাযিল করেছেন। আর যারা কিতাবের মাঝে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছে, নিশ্চিতই তারা জেদের বশবর্তী হয়ে অনেক দূরে গেছে ।

সূরা আল-বাকারাহ ১৭৪-১৭৬ নং আয়াতের তাফসীর

   

এর পূর্ববর্তী আয়াতসমূহে সেসব হারাম বস্তু-সামগ্রীর আলোচনা করা হয়েছিল, যেগুলো ছিল স্থূল বস্তু সম্পর্কিত যা ধরা-ছোঁয়া বা অনুভব করা যায়। পরবর্তীতে এমন কতকগুলো হারাম বিষয়ের আলোচনা করা হচ্ছে, যেগুলো ধরা-ছোঁয়ার মত স্থূল বস্তু নয়। সেগুলো হচ্ছে কতকগুলো গোপন অভিসন্ধি সম্পর্কিত প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য মন্দ কাজ। যেমন, ইহুদী আলেমদের মাঝে একটি রোগ ছিল যে, তারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে তাদের মনমত ভুল ফতোয়া দিত, এমনকি তাওরাতের আয়াতসমূহকেও বিস্তৃত করে তাদের মতলবমত বানিয়ে দিয়ে দিত। এ ক্ষেত্রে উম্মতে মুহাম্মদীর আলেমদের জন্যও সতর্কতা বিদ্যমান, তারা যেন এহেন গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকেন। রিপুর কামনা-বাসনা চরিতার্থের উদ্দেশ্যে যেন সত্য বিধি-বিধান প্রকাশে ত্রুটি না করেন।

ধর্মকে বিক্রি করার শাস্তি

এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই যে, আল্লাহ্ কর্তৃক নাযিলকৃত কিতাবের বিষয়বস্তুকে যেসব লোক গোপন করে এবং এহেন খেয়ানতের বিনিময়ে সামান্য (পার্থিব) সম্পদ আদায় করে, তারা নিজেদের উদরকে আগুনের দ্বারাই ভর্তি করে চলছে। আর আল্লাহ্ তা’আলা কিয়ামতের দিন না তাদের সাথে (সদয়ভাবে) কথা বলবেন, আর নাইবা (তাদের পাপ মোচন করে) তাদেরকে পবিত্রতা দান করবেন। বস্তুত তাদের শাস্তি হবে অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এরা এমন সব লোক, যারা (দুনিয়াতে তো) হেদায়েত পরিহার করে পথভ্রষ্টতা অবলম্বন করছেই, (তদুপরি আখেরাতের) মাগফেরাত পরিত্যাগ করে (নিজেদের মাথায় চাপিয়ে নিয়েছে) আযাব। অতএব, (তাদের দোযখে গমনের সৎসাহসকে ধন্যবাদ) কতই না সাহসী এরা। বস্তুত (উল্লিখিত সমস্ত) আযাব (তাদের উপর এজন্য এসেছে) যে, আল্লাহ্ তা’আলা এ কিতাবকে সঠিকভাবেই পাঠিয়েছিলেন। পক্ষান্তরে যেসব লোক (এমন যথার্থভাবে প্রেরিত গ্রন্থে) পথভ্রষ্টতা (আরোপ) করে, (তারা যে,) অতি সুদূরপ্রসারী বিরোধিতায় লিপ্ত (হবে, তা বলাই বাহুল্য। আর এমন বিরোধিতার দরুন অবশ্যই তারা কঠিন শাস্তির যোগ্য হবে)।


মাস’আলাঃ আলোচ্য আয়াতের দ্বারা বোঝা যাচ্ছে যে, যে ব্যক্তি ধন-সম্পদের লোভে শরীয়তের হুকুম-আহকামকে পরিবর্তিত করে এবং তার বিনিময়ে যে হারাম ধন-সম্পদ খায়, তা যেন সে নিজের পেটে জাহান্নামের আগুন ভরছে। কারণ, এ কাজের পরিণতি তা-ই। কোন কোন বিজ্ঞ আলেমের মতে প্রকৃতপক্ষে হারাম মাল বা ধন-সম্পদ সবই দোযখের আগুন। অবশ্য তা যে আগুন, সেকথা পার্থিব জীবনে উপলব্ধি করা যায় না, কিন্তু মৃত্যুর পর তার সে কর্মই আগুনের রূপ ধরে উপস্থিত হবে।






******************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url