মা’আরেফুল কোরআন - ৬৯ || সূরা আল-বাকারাহ, ১৮৬ || আল্লাহ বান্দার খুব সন্নিকটে রয়েছেন- বিষয়ে সন্দেহের নিরসন







بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
سورة البقرة

সূরা আল-বাকারাহ আয়াতঃ ১৮৬


 وَ اِذَا سَاَلَکَ عِبَادِیۡ عَنِّیۡ فَاِنِّیۡ قَرِیۡبٌ ؕ اُجِیۡبُ دَعۡوَۃَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ ۙ فَلۡیَسۡتَجِیۡبُوۡا لِیۡ وَ لۡیُؤۡمِنُوۡا بِیۡ لَعَلَّهُمۡ یَرۡشُدُوۡنَ ﴿۱۸۶

সূরা আল-বাকারাহ ১৮৬ নং আয়াতের অর্থ


(১৮৬) আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে –বস্তুত আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য, যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে।

সূরা আল-বাকারাহ ১৮৬ নং আয়াতের তাফসীর

   

যোগসূত্র
পূর্ববর্তী আয়াতগুলোতে রমযানের হুকুম-আহ্কাম ও ফযীলতের বর্ণনা করা হয়েছে। তারপর একটি সুদীর্ঘ আয়াতে রোযা ও ই’তিকাফের বিবরণ বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে মাঝখানে বর্তমান সংক্ষিপ্ত আয়াতটিকে বান্দাদের অবস্থার প্রতি মহান পরওয়ারদেগারের অনুগ্রহ এবং তাদের প্রার্থনা শ্রবণ ও কবূল করার বিষয় আলোচনা করে নির্দেশ পালনে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কারণ রোযা-সংক্রান্ত ইবাদতে অবস্থা বিশেষে অব্যাহতি দান এবং বিভিন্ন সহজতা সত্ত্বেও কিছু কষ্ট বিদ্যমান রয়েছে। এ কষ্টকে সহজ করার উদ্দেশ্যে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, আমি আমার বান্দাদের সন্নিকটে রয়েছি, যখনই তারা আমার কাছে কোন বিষয় প্রার্থনা বা দোয়া করে, আমি তাদের সে দোয়া কবূল করে নেই এবং তাদের বাসনা পূরণ করে দেই।

ইফতারের সময় দোয়া কবূল হয়

এমতাবস্থায় আমার হুকুম-আহ্কাম মেনে চলা বান্দাদেরও একান্ত কর্তব্য- তাতে কিছুটা কষ্ট হলেও তা সহ্য করা উচিত। ইমাম ইবনে কাসীর দোয়ার প্রতি উৎসাহ দান সংক্রান্ত এই মধ্যবর্তী বাক্যটির তাৎপর্য বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেছেন যে, এ আয়াতের দ্বারা রোযা রাখার পর দোয়া কবূল হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। সে জন্যই রোযার ইফতারের পর দোয়ার ব্যাপারে বিশেষ তৎপরতা অবলম্বন করা উচিত। মহানবী (সা) ইরশাদ করেছেনঃ

لِلصَّائِمِ عِنْدَ فِطْرِهِ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ

অর্থাৎ রোযার ইফতার করার সময় রোযাদারের দোয়া কবূল হয়ে থাকে। (আবু দাউদ)

সেজন্যই হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রা) ইফতারের সময় বাড়ির সবাইকে সমবেত করে দোয়া করতেন। 

আয়াতের তফসীর হলো এই-
আর [হে মুহাম্মদ (সা)] ! যখন আপনার কাছে আমার বান্দাগণ আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে (যে, আমি তাদের নিকটে কি দূরে,) তখন (আমার পক্ষ থেকে তাদেরকে বলে দিন,) আমি তো নিকটেই রয়েছি। (আর অসঙ্গত প্রার্থনা ছাড়া সমস্ত) প্রার্থনাকারীর প্রার্থনাই গ্রহণ করে নেই, যখন সে নিবেদন করে আমার দরবারে। সুতরাং (যেভাবে আমি তাদের আবেদন নিবেদন মঞ্জুর করে নেই, তেমনিভাবে) আমার হুকুম-আহকামগুলো (আনুগত্য সহকারে) মেনে নেওয়াও তাদের কর্তব্য। আর যেহেতু আমার সে সমস্ত হুকুম-আহ্কামের কোনটিই অসঙ্গত নয়, সেহেতু তাতে কোন একটিও বাদ দেওয়ার মত নেই। আর (তাদেরকে বলে দিন, তারা যেন) আমার উপর নিঃসংশয়ে বিশ্বাস রাখে। (অর্থাৎ আমার সত্তাই যে একচ্ছত্র হাকেম সে ব্যাপারেও।) আশা করা যায়, (এভাবে) তারা হেদায়েত ও সরল পথ লাভে সমর্থ হবে।

দোয়ার মাস’আলা

মাস’আলাঃ এ আয়াতে إِنِّي قَرِيبٌ (আমি নিকটেই রয়েছি) বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, ধীরে-সুস্থে ও নীরবে দোয়া করাই উত্তম, উচ্চৈঃস্বরে দোয়া করা পছন্দনীয় নয়। ইমাম ইবনে কাসীর (রা) এ আয়াতের শানে-নুযুল বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেছেন, কোন গ্রামের কিছু অধিবাসী রসূলে করীম (সা)-কে জিজ্ঞেস করেছিল, “যদি আমাদের পরওয়ারদেগার আমাদের নিকটেই থেকে থাকেন, তবে আমরা আস্তে আস্তে দোয়া করব। আর যদি দূরে থেকে থাকেন, তবে উচ্চৈঃস্বরে ডাকব।” এরই প্রেক্ষিতে পরবর্তি আয়াতটি নাযিল হয়েছে।






**********************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url