দিনের বিভিন্ন সময়ের আমল || সকাল-দুপুর-বিকাল-সন্ধ্যা ও রাতের দুআসমূহ
(শাইখুল ইসলাম মুহিউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবনে শারফ আন-নববী রহ. রচিত “আল আযকার” গ্রন্থ অবলম্বনে)
জুমুআর দিন সকালের আমল
অন্যান্য দিন যে সকল আমল করবে, জুমুআর দিনও সেই আমলই করবেন। তবে এ দিন অন্য দিনের তুলনায় বেশি জিকির-আজকার করবেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর অধিক পরিমাণে দরূদ পাঠ করবেন।
* হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমুআর দিন ফজরের নামাজের পূর্বে এ দুআ তিন বার পড়বে, তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও আল্লাহ তাআলা তা মাফ করে দিবেন। দুআটি হল-
أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ.
উচ্চারণ: আসতাগফিরুল্লাহাল্লাযি লা-ইলাহা ইল্লাহুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম ওয়া আতুবু ইলাইহি। ০১
অর্থ: আমি ঐ আল্লাহর কাছে মাগফিরাত কামনা করি, যিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই । তিনি চিরজীবি শাশ্বত। আমি তার কাছে তাওবা করি।০২
জুমুআর দিন ফজর থেকে নিয়ে সূর্য অস্তমিত হওয়া পর্যন্ত পুরো দিনেই দুআ করা চাই। জুমুআর দিন দুআ কবুলের একটি মুহূর্ত রয়েছে। যেন সে মুহূর্তে দুআটি হয়। উক্ত মুহূর্তটির ব্যাপারে অনেক অভিমত রয়েছে। যেমন- কেউ বলেন, ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর। কেউ বলেন, সূর্যোদয়ের পূর্বে। কেউ বলেন, সূর্যোদয়ের পরে। কেউ বলেন, সূর্য ঢলে যাওয়ার পর। কেউ বলেন, আছরের পর। আবার কেউ অন্য সময়ের কথাও বলেন।
তবে সঠিক বাস্তবসম্মত কথা হল, যা মুসলিম শরিফে হজরত আবু মুসা আশআরি রাদি. থেকে বর্ণিত আছে- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সে মুহূর্তটি হল, ইমাম সাহেব মিম্বরে বসা থেকে নিয়ে নামাজের সালাম ফেরানো পর্যন্ত মুহূর্তটি। ০৩
সূর্যোদয়ের সময়ের দুআ
* হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, সূর্যোদয়ের সময় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দুআটি পড়তেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي جَلَّلَنَا الْيَوْمَ عَافِيَتَهُ، وَجَاءَ بِالشَّمْسِ مِنْ مَطْلَعِهَا، اللهُمَّ أصْبَحْتُ أَشْهَدُ لَكَ بِمَا شَهِدْتَ بِهِ لِنَفْسِكَ، وَشَهِدَتْ بِهِ مَلائِكَتُكَ وحَمَلَةُ عَرْشِكَ وَجَمِيعُ خَلْقِكَ إِنَّكَ أَنْتَ اللهُ لا إلهَ إِلَّا أَنْتَ الْقَائِمُ بِالْقِسْطِ، لَا إِلَهَ إِلَّا أنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ اكْتُبْ شَهَادَتِي بَعْدَ شَهَادَةِ مَلَائِكَتِكَ وَأُوْلِي الْعِلْمِ، اللهُمَّ أنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ وَإِلَيْكَ السَّلَامُ، أَسْأَلُكَ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ أَنْ تَسْتَجِيْبَ لَنَا دَعْوَتَنَا، وأنْ تُعْطِيَنَا رَغْبَتَنَا، وَأَنْ تُغْنِيْنَا عَمَّنْ أَغْنَيْتَهُ عَنَّا مِنْ خَلْقِكَ، اللَّهُمَّ أَصْلِحْ لِي دِينِي الَّذِي هُوَ عِصْمَةُ أَمْرِي، وَأَصْلِحْ لِي دُنْيَايَ الَّتِي فِيْهَا مَعِيشَتِي، وَأَصْلِحْ لِيْ آخِرَتِي الَّتِي إِلَيْهَا مُنْقَلَيْ.
উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি জাল্লালানাল ইয়াউমা আফিয়াতাহ, ওয়া যাআ বিশ শামসি মিন মাতলায়িহা, আল্লাহুম্মা আসবাহতু আশহাদু লাকা বিমা শাহিদতা বিহি লি নাফসিকা, ওয়া শাহিদাত বিহি মালায়িকাতুকা ওয়া হামালাতু আরশিকা ওয়া জামিউ খালকিক। ইন্নিকা আনতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল কায়িমু বিল কিসতি, লা ইলাহা ইল্লা আনতাল আজিজুল হাকিম। উকতুব শাহাদাতি বা'দা শাহাদাতি মালায়িকাতিকা ওয়া উলিল ইলম। আল্লাহুম্মা আনতাস সালামু ওয়া মিনকাস সালামু ওয়া ইলাইকাস সালাম, আসআলুকা ইয়া যালজালালি ওয়াল ইকরাম, আন তাসতাজিবা লানা দাওয়াতানা। ওয়া আন তু’তিয়া না রাগবাতা না, ওয়া আন তুগনিনা আম্মান আগনাইতাহু আন্না মিন খালকিক। আল্লাহুম্মা আসলিহ লি দীনিয়াল্লাজি হুয়া ইসমাতু আমরি, ওয়া আসলিহ লি দুনয়াইয়াল্লাতি ফিহা মায়িশাতি, ওয়া আসলিহ লি আখিরাতিয়াল্লাতি ইলাইহা মুনকালাবি ।
অর্থ: সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য, যিনি আজকে আমাদেরকে সুরক্ষা দ্বারা আচ্ছাদিত করেছেন, সুর্যকে করেছেন উদীত। হে আল্লাহ, আমি এই সকালে সাক্ষ্য দিচ্ছি সে বিষয়ের, যা আপনি নিজের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিয়েছেন, আর যার সাক্ষ্য দিয়েছেন ফেরেশতা, আরশ বহনকারী এবং আপনার সৃষ্টিকুল যে, আপনিই আল্লাহ। আপনি ছাড়া কোন সত্য মাবুদ নেই, আপিন ন্যায়পরায়ণ। আপনার মতো পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। ফেরেশতা ও জ্ঞানীদের সাক্ষ্যের সাথে আমার এ সাক্ষ্য কবুল করুন। হে আল্লাহ, আপনি দোষ-ত্রুটি থেকে চির মুক্ত, নিরাপত্তার মালিক। আপনার কাছ থেকেই আসে নিরাপত্তা। মিনতি করি হে মহিমাময় ও প্রতাপের অধিকারী, আমাদের দুআ করুন। আমাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করুন। আপনার সৃষ্টির যাদেরকে আমাদের থেকে অমুখাপেক্ষী রেখেছেন, আমাদেরকেও তাদের থেকে অমুখাপেক্ষী রাখুন। হে আল্লাহ, আমাকে আমার দীনে উন্নতিসাধন করুন, যে দীনকে আমার রক্ষাকবজ বানিয়েছেন। হে আল্লাহ, আমাকে দুনিয়াতেও উন্নতিসাধন করুন, যেখানে আমার জীবিকা রেখেছেন। হে আল্লাহ, আমার জন্য আমার পরকাল সংশোধন করে দিন, যেদিকে আমার প্রত্যাবর্তন নির্ধারিত | ০৪
* হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি এক ব্যক্তিকে সূর্যদয়ের মুহূর্তটি দেখার জন্য নিযুক্ত করেন। সে ব্যক্তি তাকে সূর্যদয়ের সংবাদ দিলে তিনি এ দুআ পড়েন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي وَهَبَ لَنَا هَذَا الْيَوْمَ وَأَقَالَنَا فِيْهِ مِنْ عَثَرَاتِنَا.
উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহিল লাযি ওয়াহাবা লানা হাযাল ইয়াওমু ওয়া আকালানা ফিহি মিন আসারাতিনা ।
অর্থ: সকল প্রশংসা ঐ সত্তার যিনি আমাদেরকে আজকের দিনটি দিয়েছেন এবং এ দিনে আমাদের গুনাহ সমূহকে মাফ করে দিয়েছেন।০৫
সূর্য পরিপূর্ণ উদিত হওয়ার পরের দুআ
* হজরত আমর বিন আবাসা রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَا تَسْتَقِلُ الشَّمْسُ فَيَبْقَى شَيْءٍ مِنْ خَلْقِ اللَّهِ تَعَالَى إِلَّا سَبَّحَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ وَحَمِدَهُ إِلَّا مَا كَانَ مِنَ الشَّيْطَانِ وَأَعْتَاءِ بَنِي آدَمَ، فَسَأَلَتْ عَنْ أَعِتَاءِ بَنِي آدَمَ؟ فَقَالَ: شَرَارُ الْخَلْقِ.
অর্থ: যখন সূর্য পূর্ণাঙ্গভাবে উদিত হয়, তখন শয়তান ও অবাধ্য-নিকৃষ্ট বনি আদম ছাড়া সবকিছুই আল্লাহর মহত্ত ও বড়ত্বের ঘোষণা দেয়। ০৬
সূর্য ঢলে যাওয়া থেকে আসর পর্যন্ত যে দুআ পড়বে
পূর্বে যতগুলো অধ্যায় গেছে প্রায় সবগুলোই নামাজ কেন্দ্রিক। সূর্য ঢলে যাওয়ার পরও বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি ও জিকির-আজকার করা চাই ।
* হজরত আবদুল্লাহ বিন সায়েব রাদি. থেকে বর্ণিত আছে-
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي أَرْبَعًا بَعْدَ أَنْ تَزُولَ الشَّمْسُ، قَبْلَ الظُّهْرِ. وَقَالَ : إِنَّهَا سَاعَةُ تُفْتَحُ فِيهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ، وَأُحِبُّ أَنْ يَصْعَدَ لِي فِيْهَا عَمَلُ صَالِحٌ.
অর্থ: তিনি বলেন, রাসুল যোহরের পূর্বে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর চার রাকাত নামাজ পড়তেন এবং বলতেন, এটা এমন মুহূর্ত যখন আকাশের দরজা খোলা হয়। তাই এসময় আমার নেক আমল ওপরে উঠুক- তা আমি কামনা করি। -ইমাম তিরমিজি বলেন, হাদিসটি হাসান। ০৭
জোহরের নামাজের পরও বেশি পরিমাণ জিকির-আজকার করা চাই। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ.
অর্থ: তুমি সকাল-সন্ধ্যায় তোমার রবের সপ্রশংস তাসবিহ পাঠ করো । ০৮
অভিধান প্রণেতাগণ বলেন, لْعَشِيِّ হল- সূর্য হেলে যাওয়া থেকে নিয়ে সূর্য অস্তমিত হওয়া পর্যন্ত সময় ।
ইমাম আবু মনসুর আল আযহারি বলেন, لْعَشِيِّ হল- আরবদের নিকট সূর্য হেলে যাওয়া থেকে নিয়ে সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর্যন্ত সময়।
আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্তের দুআ
আসরের পর আরো বেশি দুআ করা চাই। কারণ, আসরের নামাজ অনেকই আয়াতে বর্ণিত الْوُسْطَى শব্দের উদ্দেশ্য বলেছেন। অনুরূপভাবে সকালেও বেশি বেশি জিকির করা চাই। শব্দের ব্যাখ্যায় যা কিছু বলা হয়ে থাকে তার মাঝে ফজর ও আসরের নামাজের ব্যাখ্যাটিই বেশি সঠিক। আসরের পর দিনের শেষভাগেও বেশি বেশি জিকির করা চাই। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَ قَبْلَ غُرُوبِهَا.
অর্থ: সূর্যদয়ের ও সূর্যঅস্তমিত হওয়ার পূর্বে আল্লাহর প্রশংসায় তাসবিহ পাঠ করো ।০৯
وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ.
অর্থ: সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর সপ্রশংস তাসবিহ পাঠ করো ।১০
وَاذْكُرْ رَبَّكَ فِي نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَ خِيفَةً وَدُوْنَ الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ.
অর্থ: তোমার প্রভুর জিকির করো সকাল-সন্ধ্যায় বিনয় ও ভীতির সাথে মনে মনে এবং অনুচ্চস্বরে মুখে । ১১
يُسَبِّحُ لَهُ فِيهَا بِالْغُدُوِّ وَالْأَصَالِ رِجَالٌ لَّا تُلْهِيْهِمْ تِجَارَةٌ وَّلَا بَيْعٌ عَنْ ذِكْرِ
অর্থ: সে ঘরে সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর মহিমা বর্ণনা করে এমন কিছু লোক যাদেরকে ব্যাবসায়-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর জিকির থেকে গাফেল করতে পারে না। ১২
* হজরত আনাস রাদি. এর সূত্রে দুর্বল সনদে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لأَنْ أَجْلِسَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ صَلَاةِ الْعَصْرِ إِلَى أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ، أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَعْتِقَ ثَمَانِيَةً مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ.
অর্থ: আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জিকিরকারীদের সাথে বসা, হজরত ইসমাঈল আলাইহিস সালামের বংশের আটজন গোলাম আযাদ করা থেকেও উত্তম । ১৩
মাগরিবের আজান শুনে যে দুআ পড়বে
* হজরত উম্মে সালামা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে মাগরিবের আজানের সময় নিচের দুআটি পড়তে শিখিয়েছেন-
اللَّهُمَّ إِنَّ هَذَا إِقْبَالُ لَيْلِكَ، وَإِدْبَارُ نَهَارِكَ، وَأَصْوَاتُ دُعَاتِكَ ؛ فَاغْفِرْ لِي.
উচ্চারণ: আল্লহুম্মা হাযা ইকবালু লাইলিকা ওয়া ইদবারু নাহারিকা ওয়া আসওয়াতু দুআইকা ফাগফিরলি ।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনার দেয়া রাতের আগমন, দিনের প্রস্থান ও মুআজ্জিনের আহ্বানের এই শুভ সন্ধিক্ষণ, এর উসিলায় আমাকে ক্ষমা করে দিন। ১৪
মাগরিবের নামাজের পরের দুআ
ইতিপূর্বে ফরজ নামাজের পর যে সকল দুআ পড়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো পড়বে। এর সাথে মাগরিবের সুন্নাত নামাজ আদায়ের পর নিম্নে বর্ণিত দুআগুলোও পড়বে-
* হজরত উম্মে সালামা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের নামাজ শেষ করে রুমে এসে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। এরপর তিনি এ দুআ করতেন-
يَا مُقَلبَ الْقُلُوْبِ وَالْأَبْصَارِ ثَبِّتْ قُلُوْبَنَا عَلَى دِينِكَ.
উচ্চারণ: ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুবি ওয়াল আবসারি, সাব্বিত কুলুবানা আলা দীনিক ।
অর্থ: হে অন্তর ও চোখের মালিক, আপনি আমার কলবকে আপনার দীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখুন। ১৫
* হজরত উমারা বিন শাবিব রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর দশবার নিম্নোক্ত দুআ পড়বে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য প্রহরী পাঠাবেন, যারা তাকে সকাল পর্যন্ত শয়তান থেকে হেফাজতে রাখবেন। তার জন্য দশটি নেকি লেখা হবে। দশটি ধ্বংসাত্মক বড় গুনাহ মাফ করা হবে। দশজন মুমিন দাসী আযাদ করার সমপরিমাণ সওয়াব দেয়া হবে। দুআটি হল-
لا إلهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ইয়ুহয়ি ওয়া ইয়ুমিতু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির ।
অর্থ: আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তার কোন অংশীদার নেই। সকল আধিপত্য তারই, তারই সকল প্রশংসা। তিনি জীবন-মরণ দিয়ে থাকেন। তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান। -ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উমারা হাদিস শোনেছেন বলে আমাদের জানা নেই। ১৬
বিতর নামাজে ও তার পরবর্তীতে পড়ার দুআ
বিতর নামাজের প্রথম রাকাতে সুরা আলা, দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সুরা এখলাস ও সুরা ফালাক ও নাস পড়া সুন্নাত। যদি প্রথম রাকাতে সুরা আলা পড়তে কেউ ভুলে যায়, তাহলে দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কাফিরুনের সাথে তা পড়বে। আর যদি দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কাফিরুন পড়তে ভুলে যায়, তাহলে সুরা এখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাসের সাথে তা পড়ে নিবে ।
* হজরত উবাই বিন কাব রাদি থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত আছে যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামাজ শেষ করে এ দুআ পড়তেন-
سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْقُدُّوْسِ.
উচ্চারণ: সুবহানাল মালিকিল কুদ্দুস ।
অর্থ: আমরা মহান মালিকের পবিত্রতা ও গুণকীর্তন করি। ইমাম নাসাঈ ও ইবনুস সুন্নির এক বর্ণনায় তিনবারের কথা বর্ণিত আছে। ১৭
* হজরত আলি রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামাজের শেষ রাকাতে এ দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ، وَأَعُوْذُ بِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْكَ، لَا أُحْصِي ثَنَاءٌ عَلَيْكَ، أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বি রিজাকা মিন সাখাতিকা, ওয়া আউজু বি মুআফাতিকা মিন উকুবাতিক। ওয়া আউজুবিকা মিনকা, লা উহসি সানাআন আলাইকা, আনতা কামা আসনাইতা আলা নাফসিক ।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনার সন্তুষ্টি চাই। ক্রোধ থেকে পানাহ চাই। শাস্তি থেকে মুক্তি চাই। আপনার কাছে আশ্রয় চাই। আমি আপনার প্রশংসা করে শেষ করতে পারবো না। আপনি তেমনই মহিমান্বিত যেমন আপনি নিজের প্রশংসা করেছে।
তথ্যসূত্রঃ
০১. ইবনুস সুন্নি: ৮৩। হাদিসটি খুবই দুর্বল। বর্ণনাকারী ইসহাক বিন খালিদের কারণে। তবে হাদিসটি জুমুআর দিনের কয়েদ ছাড়া সহিহ সনিদে বর্ণিত হয়েছে। দেখুন: সুনানে তিরমিজি: ৩৫৭৭, সুনানে আবু দাউদ: ১৫১৭।
০২. আমালুল ইয়াউম: ৮৩, ইবনুস সুন্নি।
০৩. সহিহ মুসলিম: ৮৫৩।
০৪. ইবনুস সুন্নি: ১৪৭। হাদিসটি আমলযোগ্য দুর্বল।
০৫. আমালুল ইয়াউম: ১৪৮, ইবনুস সুন্নি। মাওকুফ হাদিস ।
০৬. আমালুল ইয়াউম: ১৪৯, ইবনুস সুন্নি।
০৭. সুনানে তিরমিজি: ৪৭৮।
০৮. সুরা গাফির: ৫৫।
০৯. সুরা তাহা: ১৩।
১০. সুরা গাফির: ৫৫।
১১. সুরা আরাফ: ২০৫।
১২. সুরা নুর: ৩৬-৩৭।
১৩. ইবনুস সুন্নি: ৬৭০ ।
১৪. সুনানে আবু দাউদ: ৫৩০, সুনানে তিরমিজি: ৩৫৮৩।
১৫, ইবনুস সুন্নি: ৬৫৮। হাদিসটি দুর্বল।
১৬. সুনানে তিরমিজি: ৩৫৩৪, আমালুল ইয়াউম: ৫৭৭, নাসাঈ।
১৭. সুনানে আবু দাউদ: ১৪৩০, আমাল : ৭১১, ইবনুস সুন্নি।
****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url