দ্বীনি বিষয়ে জিজ্ঞাসা ও জবাব || ইসলামিক প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব - ০৬)

নামায, রোযা, যাকাত, ব্যবসা ও সুদ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর 



সালামের সঠিক উচ্চারণ

প্রশ্ন-৫০: আমাদের সমাজে অনেক রকম সালামের প্রচলন আছে। একেকজন একেক রকম উচ্চারণ করে। সালামের উচ্চারণ কোনটা সঠিক?

উত্তর: সালাম মানব সভ্যতায় অত্যন্ত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সম্ভাষণ । প্রত্যেক জাতিই অন্যকে দেখলে সম্ভাষণ করে। মনের মহাব্বত প্রকাশ করে। যেমন: নমস্তে, আদাব, হাই- ইত্যাদি। এগুলোতে মনের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ প্রকাশ পায়। আর ইসলাম যেটা দিয়েছে সেটা স্পেশাল দুআও বটে । শ্রদ্ধাবোধের পাশাপাশি সবচে' বড় দুআ: তোমার উপর শান্তি হোক, রহমত হোক, বরকত হোক। আমরা যখন সেলামালাইকুম বলি, এতে মনের ভালোবাসা প্রকাশ পেলেও কোনো দুআ হল না। বরং বদদুআ হতে পারে । কারণ, সেলাম বললে পাথর বোঝায়। তোমার উপর পাথর টাথর কিছু একটা পড়ুক । এজন্য আমি অনুরোধ করব, আমরা সুন্দর করে আসসালামু আলাইকুম বলব । যদি কেউ বাঙালি হওয়ার কারণে মাখরাজ না হয়, সমস্যা নেই। কিন্তু শব্দটা সুন্দর করে উচ্চারণ করব । আসসালামু আলাইকুম বলব । তাহলে আমরা ছওয়াব পাব । দুআ হবে । আমাদের পারস্পরিক সম্ভাষণও হবে । আল্লাহ কবুল করুন । আমীন ।

ছোট বাচ্চাদের রোযা রাখা

প্রশ্ন-৫১: আমার ৮/৯ বছরের দুইটা বাচ্চা। গত বছর রোযা রাখছিল। আমি ভেঙে ভেঙে কয়েকটা রাখতে দিয়েছিলাম। কিন্তু এই বছর একেবারেই মানে না। রোষা থাকবেই। সাহরির আগ পর্যন্ত ঘুমায়ও না। যদি না ডাকি! সাহরি খেয়ে তারপর ঘুমায় । অনেকে আমাকে বলে, এতটুকু বাচ্চার রোযা রাখাচ্ছি এতে আমার গোনাহ হবে । আসলে এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?

উত্তর: প্রথম কথা আপনার কোনো গোনাহ হচ্ছে না। তবে ওদের শরীরের কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে । পনেরো ঘণ্টার রোযা, ওদেরকে ছোট থেকেই অভ্যস্ত করাতে হবে। সাত বছর থেকে সালাতে অভ্যস্ত করা এবং রোযাও মাঝে মাঝে থাকলে কোনো দোষ নেই। তবে ওদের শরীরে কোনো ক্ষতি না হয়, খেয়াল রাখতে হবে । প্রচুর লিকুইড খাওয়াতে হবে । মাঝে মাঝে রাখবে মাঝে মাঝে ভাঙবে । ওরা যদি জিদ করে রাখে আর শারীরিকভাবে অসুস্থ না হয়, দিনের বেলা ক্লান্ত না হয়, দৌড়াদৌড়ি না করে তাহলে ইনশাআল্লাহ কোনো অসুবিধা নেই । আপনার কোনো গোনাহ হচ্ছে না ।

আপন ভাইবোনকে যাকাত দেয়া

প্রশ্ন-৫২: আমার থেকে দরিদ্র আপন ভাইবোনকে যাকাত দেয়া যাবে কি না?

উত্তর: আপনার বোন অথবা ভাই আপনার থেকে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল এটা বড় কথা নয় । বড় কথা হল যাকাতের যোগ্য কি না! যাকাতের যোগ্য বলতে যা আয় করেন তাতে সংসার চলে না, সবসময় অভাব লেগে থাকে, অস্বচ্ছল এবং ব্যাংকে ব্যালেন্স না থাকে তাহলে অবশ্যই তাকে যাকাত দেয় যাবে। বরং ভাইবোন, আপন আত্মীয়স্বজন, রক্তসম্পর্কের আত্মীয়দের আগে যাকাত দেয়া দরকার। তাদেরকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে দিলে বরং যাকাত কবুল না হওয়ার অনেক ভয় দেখিয়েছেন সাহাবি এবং তাবেয়িগণ । তাদের অধিকার বেশি। তবে সন্তান, সন্তানের সন্তান, পিতামাতা- এদেরকে যাকাত দেয়া যাবে না । ভাইবোন অন্যান্য আত্মীয়দেরকে দেয়া যাবে ।

প্রতিবন্ধীর সালাতের হুকুম

প্রশ্ন-৫৩: আমি প্রতিবন্ধী। জামাআতে সালাত আদায় করতে পারি না। আমার জন্য সালাত আদায়ের উত্তম সময় কোনটি?

উত্তর: আল্লাহর ওলি হওয়া, আল্লাহর প্রেম পাওয়া মানুষের জন্য সবচে' সহজ । কারণ এখানে কোনো যোগ্যতা লাগে না। কাজেই একজন প্রতিবন্ধী একজন সুস্থ মানুষের চেয়ে অনেক আগে আরো বেশি আল্লাহর প্রিয় বান্দা হয়ে যেতে পারে। তিনি তার সাধ্যের ভেতরে আল্লাহর ইবাদত করবেন। মসজিদে যাওয়া তার জন্য যদি অসম্ভব হয়, তিনি প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায়ের চেষ্টা করবেন। রাসূল (সাঃ) বলেছেন:

أفضل الأعمال الصَّلَاةُ فِي أَوَّلِ وَقْتِهَا

প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা উত্তম (সুনান আবু দাউদ- ৪২৬)। তবে কোনো কোনো সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে রাসূল সা. শেষ সময়ের কথা বলেছেন । যেমন ইশার সালাত । ইশার সালাত যদি সুযোগ থাকে একটু দেরি করে, রাতের এক তৃতীয়াংশ পার হওয়ার পরে, দ্বিতীয়-তৃতীয়াংশের শুরুতে, অর্থাৎ রাত দুঘণ্টা হয়ে গেলে পড়া- এটা তিনি মাঝে মাঝে পড়তেন এবং এটাকে উত্তম বলেছেন । বলেছেন, মানুষের কষ্ট না হলে এটাকে আমি ওয়াক্ত হিসেবে ঠিক করে দিতাম । এটা বাদে বাকি সালাতগুলো আপনি প্রথম ওয়াক্তে পড়বেন ।

তাহাজ্জুদ নামায সুন্নাত না নফল?

প্রশ্ন-৫৪: তাহাজ্জুদ নামায সুন্নাত না কি নফল?

উত্তর : আসলে আমরা অনেক অস্পষ্টতায় ভুগি। মূলত আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে যত বিধান দিয়েছেন তা দুই রকম। একটা হল ফরয। আরেকটা নফল । ফরযের বাইরে যা আছে সবই নফল । সুন্নাত, ওয়াজিব, মুস্তাহাব - সবকিছুই নফলের অন্তর্ভুক্ত । একটা ইবাদত যখন ফরয না হয়, সেটা নফল। নফলের ভেতর যেগুলো রাসূল (সাঃ) নিয়মিত করতেন এগুলোকে আমরা বলি নফল সুন্নাত । কাজেই তাহাজ্জুদ নফল । ফরয নয় । তবে সুন্নাত নফল। অর্থাৎ রাসূল (সাঃ) নিয়মিত এটা পালন করতেন । কুরআন সুন্নাহর আলোকে সবচে' গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত এবং মুআক্কাদ সুন্নাত হল তাহাজ্জুদের সালাত । রাসূল (সাঃ) কখনো ছাড়তেন না । ছাড়লে আপত্তি করতেন । এবং কুরআনে বারবার বলা হয়েছে, কিছু হলেও অন্তত কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদ পড়া । এটা নফল কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নফল ।

সিজদা করতে অক্ষম ব্যক্তির নামাজ

প্রশ্ন-৫৫: আমার তিনবার মেজর অপারেশন হয়েছে। আমি দাঁড়াতে পারি ঠিকই, কিন্তু যখন বসি, তাশাহ্হুদ পড়তে যাই, সিজদা করতে যাই, তখন আমার পা প্রচণ্ড ব্যথা করে, এজন্য আমি সিজদা করতে অক্ষম । কীভাবে নামায পড়লে আমার নামাযটা সহীহ হবে?

উত্তর: যদি মাটিতে বসে উঠে দাঁড়াতে খুব বেশি কষ্ট হয় এবং সিজদা করতে অক্ষম হন তাহলে আপনি ফরয সালাত দাঁড়িয়ে পড়বেন । দাঁড়িয়ে সূরা কিরাআত পড়বেন । রুকু করবেন ইশারায় । সিজদাও করবেন ইশারায় । 'আত্তাহিয়্যাতু' আপনি দাঁড়িয়েই পড়বেন। তবে শেষ বৈঠকে যেহেতু আর ওঠা লাগে না তাই শেষ বৈঠক আপনি বসে পড়তে পারেন। বান্দা তার সাধ্যের ভেতরে আল্লাহর ইবাদত করবে। সাধ্যের বাইরে নয়। দাঁড়ানো একটা ফরয। রুকু একটা ফরয। সিজদা একটা ফরয। প্রত্যেকটাকে পরিপূর্ণ আদায় করতে পারলে ভালো । নইলে যতটুকু পালন করা যায়। ফরয সালাত ছাড়া অন্যান্য সকল সালাত আপনি মাটিতে বসে অথবা চেয়ারে বসে উঁচু জায়গায় বসে ইশারায় পড়বেন । এতে সালাত আদায় হয়ে যাবে ।

বিতর নামাজের বৈঠক

প্রশ্ন-৫৬: বিতরের নামায আমরা ছোটবেলা থেকে পড়ে আসছি, দ্বিতীয় রাকআতে বসি এবং তৃতীয় রাকআতে আরেকটা তাকবীর দিই । কিন্তু এখন শুনছি ওই বৈঠকটা নাকি নাই। এখন আমি এক বছর যাবত এই আমলটা করছি। আমার মনের ভেতর অনেক সন্দেহ। আসলে সঠিক কোনটা ?

উত্তর: দুঃখজনক হলেও সত্য, জ্ঞান অনেক সময় আমাদেরকে বিতর্কে নিপতিত করে । রাসূল সা. প্রায় তেরো প্রকারে বিতর পড়তেন । তাহাজ্জুদসহ বিতর । কখনো একবারে আট রাকআত পড়ে নয় রাকআতে সালাম ফেরাতেন । মোটেও বসতেন না। কখনো একবারে সাত রাকআত পড়তেন । কখনো একবারে পাঁচ রাকআত পড়তেন। তিনি তিন রাকআত বিতির পড়তে নিষেধ করেছেন । তিনি বলেছেন:

لا تُوتِرُوا بِثَلَاثٍ، أَوْتِرُوا بِخَمْسٍ، أَوْ بِسَبْعٍ، وَلَا تَشَبَّهُوا بِصَلَاةِ الْمَغْرِبِ

তোমরা মাগরিবের মতো তিন রাকআত বিতর পড়ো না। পাঁচ বা সাত রাকআত পড়ো' । এই হাদীসের অর্থ এই নয় যে তিন রাকআত পড়ব, মাঝখানে বসব না, এতেই হয়ে যাবে । তিনি নিশ্চিত বলেছেন পাঁচ বা সাত পড়ো । এর অর্থ হল বিতর তোমরা একটু বেশি করে পড়ো । তবে তিনি নিজে তিন রাকআত পড়েছেন । সাহাবিরা পড়েছেন । এজন্য বিতরের আগে কিছু পড়লে এই হাদীস অনুযায়ী কর্ম করা হবে। বিতর যখন আমরা তিন রাকআত পড়ব, তিনভাবে পড়তে পারি। প্রথম পদ্ধতি হল দুই রাকআত পড়ে সালাম ফিরিয়ে আবার উঠে দাঁড়িয়ে নতুন করে আরেক রাকআতের নিয়ত করে এরপরে সূরা ফাতিহা, সুরা ইখলাস পড়ে আল্লাহু আকবার বলে হাত মুনাজাতের মতো তুলে অথবা হাত বেঁধে কুনুত পড়ে এরপরে রুকু করব। দ্বিতীয় পদ্ধতি হল, আমরা যেভাবে বাংলাদেশে সচারচর পড়ে থাকি। এটা হাদীসে মোটামুটি বোঝা যায়। সাহাবিদের কর্ম দ্বারা প্রমাণিত। এভাবে পড়লে হবে না, অবৈধ, নিষিদ্ধ- এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। বরং এটা বললে একটা বিশুদ্ধ পদ্ধতিকে অস্বীকার করা হয়। তৃতীয় পদ্ধতি হল, দুই রাকআত পড়ে মোটেও না বসে সরাসরি উঠে দাঁড়িয়ে তিন রাকআত একবারে পড়ে একইভাবে কুনুত পড়ে এরপরে রুকু করে সালাত শেষ করা। এটাও সাহাবিরা আমল করেছেন। এবং তাবেয়িনদের আমল আছে । এটাও প্রমাণিত । কাজেই আমার মনে হয় এই ধরনের বিতর্ক- এটা হবেই না, ওটা হবেই না, এক রাকআত বিতির পড়লে হলই না, তিন রাকাত পড়লে হলই না- এই বিতর্ক ঠিক না। হাদীস যতটুকু প্রশস্ত আমরা নিজেদেরকে অতটুকু প্রশস্ত করে নিই। নফল, সুন্নাত, মুস্তাহাব, ওয়াজিব ইবাদতগুলো রাসূল (সাঃ) নিজেই বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে পড়েছেন। যেন আমাদের ভেতরে ইবাদতের একাগ্রতা আসে । সবসময় এক রকম পড়লে কম্পিউটার অটোরুটের মতো হয়ে যায়। 'আল্লাহু আকবার' বলে শুরু করি, সালাম ফিরিয়ে দিই- হুশ থাকে না ।

* সহীহ ইবন হিব্বান ৬/১৮৫; সুনান দারাকুতনি ৪/৩৫৮; মুসতাদরাক হাকিম ১/৪৪৬; সুনান বাইহাকি ৩/৩১

সুদ গ্রহণকারীর দুআ কবুল হয় না

প্রশ্ন-৫৭: সুদ গ্রহণ করলে নাকি দুআ কবুল হয় না । কথাটা কতটুকু সঠিক?

উত্তর: জি, খুবই সঠিক কথা। তবে শুধু সুদ নয়, যে কোনো হারাম ভক্ষণ করলে দুআ কবুল হয় না। বিভিন্ন হাদীসে বিষয়টা রয়েছে। সহীহ মুসলিমে রাসূল (সাঃ) বলেছেন: অনেক মানুষ আছে যারা আল্লাহর অনেক ইবাদত করে। হজ্জ-উমরাহ করে। আল্লাহর কাছে হাত তুলে দুআ করে। কিন্তু তার খাবার হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পোশাক হারাম, হারাম দিয়ে তার দেহ গঠন হয়েছে। তাই আল্লাহ তার দুআ কবুল করেন না। এতে সকল হারাম শামিল। হারাম মানেই মানুষের ক্ষতি। যৌতুক, চাঁদাবাজি, সুদ, ঘুষ, ফাঁকি দেয়া, পরের জমি দখল করা সকল হারাম উপার্জন আমাদেরকে আল্লাহ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়। এজন্য সুদ আমরা গ্রহণ করব না। জেনেশুনে সুদ নেব না। আল্লাহ সুদের উপার্জন থেকে আমাদের মুক্ত রাখুন।

শেয়ার ব্যবসা হালাল না হারাম?

প্রশ্ন-৫৮: শেয়ার ব্যবসা হালাল না হারাম জানতে চাই ।

উত্তর: আসলে ব্যবসা তো হালাল । এবং ব্যবসার বড় দিক হল শেয়ার । আরবিতে যাকে মুশারাকাহ বলে । শেয়ার ব্যবসা মূলত নীতিগতভাবে বৈধ । ইসলাম এগুলোকে অনুমোদন করে । তবে আপনি কোন ব্যবসার শেয়ার করছেন, ব্যবসার প্রকৃতি কী, এবং শেয়ারের ধরন কী- এগুলো আপনাকে বিস্তারিত আলেমদের থেকে জেনে নিতে হবে । শেয়ার ব্যবসা মূলত জায়েয; যদি মূল ব্যবসা বৈধ হয় এবং শেয়ার গ্রহণের পদ্ধতিটা শরীআত সম্মত হয় ।

ব্যবসার টাকার যাকাত

প্রশ্ন-৫৯: আমার কাছে দশ লাখ টাকা আছে যেটা আমি ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছি। ওটা থেকে যা ইনকাম হয় সেটা দিয়ে আমার পরিবারের খরচটা চলে আর কি । আমার প্রশ্ন হল এক বছর পূর্ণ হওয়ার পরে এই টাকার যাকাত দিতে হবে কি না ? 

উত্তর: জি ভাই, অবশ্যই যাকাত আসবে। এটা আল্লাহ তাআলার পাওনা। আপনার অন্যান্য পাওনাদারের খরচের সাথে প্রতি মাসে এক দুই হাজার টাকা আল্লাহর পাওনা হিসাবে বরাদ্দ করতে হবে । ওই দশ লাখের উপার্জন থেকে দরকার হলে নিজেদের খাওয়াদাওয়া একটু কমিয়ে হলেও আল্লাহর পাওনা যেটা আপনি আল্লাহকে ঋণ দিচ্ছেন- ওটা আদায় করতে হবে। এটা কর্যে হাসানা দিচ্ছেন আল্লাহকে। আল্লাহর কাছে ওটা জমা থাকবে। দুনিয়াতেও আল্লাহ বরকত হিসেবে ফিরিয়ে দেবেন।

বেহুশ ও প্যারালাইজড রোগীর নামায

প্রশ্ন-৬০: আমার দাদি ছয়মাস ধরে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আছেন। কখনো তার হুশ ফিরে আসে কখনো আসে না । কখন আসে কখন যায় সেটাও আমরা অনেক সময় টের পাই না । তিনি প্যারালাইসডও বটে । এই অবস্থায় তার নামাযের বিধান কী?

উত্তর: সালাতের সম্পর্ক চেতনার সাথে । হুশের সাথে । মানুষ যখন বেহুশ হয়ে যায়, চেতনা লুপ্ত হয়, তার সালাত থাকে না । অনেকেরই বৃদ্ধ বয়সে এমন হয়, আমরা উকণ্ঠিত হই- তার সালাতের কী হবে! অথবা কাফ্ফারা দেয়ার চেষ্টা করি । বিষয় হল, মানুষের যখন চেতনা থাকে কিন্তু অক্ষম, তখন চোখের ইশারায়ও সালাত আদায় করতে পারেন । কিন্তু যখন উনি অচেতন হয়ে যান তার আর সালাত ফরযই থাকে না । কাজেই আপনার দাদির এখন আর সালাত ফরয নেই । যদি কখনো হুশ হয়, বুঝতে পারেন, সালাতের কথা বলবেন । যদি অনুভব করতে পারেন, তাহলে উনি পড়বেন । আপনি তায়াম্মুম করে দেবেন। না হলে তার কোনো সালাত ফরয নয় । আপনারা দুশ্চিন্তা করবেন না । তার সেবা করুন । তার শেষ জীবন যেন সুন্দর হয় দুআ করুন । আমরাও দুআ করি ।



>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url