গত চারদিনে ৫০ ইহুদী সেনা নিহত, ৩৫টি গাড়ি ধ্বংস | ফিলিস্তিনি বন্দিদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে ইসরায়েল


গত চারদিনে ৫০ ইহুদী সেনা নিহত, ৩৫টি গাড়ি ধ্বংস

ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা জানিয়েছেন গত চার দিনের সংঘর্ষে তাদের হাতে ৫০ জন দখলদার সেনা নিহত হয়েছে। এর পাশাপাশি ট্যাংকসহ অন্তত ৩৫টি সামরিক যান আংশিক কিংবা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।

আবু উবাইদা বলেন, “আমাদের মুজাহিদরা নিশ্চিতভাবে ইসরাইলের ৪৮ জন সেনাকে হত্যা করেছে এবং বিভিন্ন মাত্রায় বহু ডজন সেনা আহত হয়েছে। হামাসের ২৪টি সামরিক অভিযানে এ সমস্ত সেনা নিহত হয়।

আবু উবাইদা জানান, প্রতিরোধ যোদ্ধাদের পাতা ফাঁদে পড়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ ইসরাইলের ইয়াহালোম স্পেশাল অপারেশনস ফোর্স। প্রতিরোধ যোদ্ধারা স্থলমাইন পেতে এবং ছয়টি স্নাইপার অভিযান চালিয়েও বহু ইসরাইলি সেনা হতাহত করেছে এবং বেশ কিছু সাময়িক যান ধ্বংস হয়।

আবু উবাইদা জানান, তার সংগঠনের যোদ্ধারা ইসরাইলের কয়েকটি সেনা দপ্তর, কমান্ড সেন্টার এবং কনসেনট্রেশন পয়েন্টে মর্টার ও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে। এছাড়া, গত কয়েকদিনে হামাস যোদ্ধারা তেল আবিবের বিভিন্ন স্থানে কয়েক দফা বহু সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে।

এ পর্যন্ত ইসরাইলের ৭৪০টি ট্যাংক ও সামরিক যান ধ্বংস

হামাস মুখপাত্র আবু উবাইদার বরাত দিয়ে কোনো কোনো সূত্র বলছে, ২৭ অক্টোবর গাজায় ইসরাইলের স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত হামাস যোদ্ধারা দখলদার ইসরাইলের ইহুদী সেনাদের ৭৪০টি ট্যাংক ও সামরিক যান ধ্বংস করেছে।


ইসরাইলি সেনারা ফিলিস্তিনি বন্দিদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলি গণহত্যার মধ্যেই উপত্যকা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া একদল ফিলিস্তিনি বলেছেন, তাদের ওপর ইহুদিবাদী সেনারা অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। এসব ফিলিস্তিনিকে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দিয়েছে দখলদার বাহিনী।

গতকাল (রোববার) ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে গাজায় ফিরে এসে নিজেদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা দেন ২২ বছর বয়সি নায়েফ আলী ও ৫৫ বছর বয়সি খামিস আল-বারদিনি।

গাজা সিটির পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত জয়তুন এলাকা থেকে নায়েফ আলীকে ধরে নিয়ে যায় দখলদার সেনারা। ইসরাইলি বন্দিশিবির থেকে ফিরে আসার পর নায়েফের পায়ে চাবুকের আঘাতের পাশাপাশি কয়েক স্থানে বড় বড় কাটা দাগ দেখতে পাওয়া যায়। তার হাতের কবজিও কেটে গেছে।

এই ফিলিস্তিনি যুবক বলেন, তারা আমাদের পিঠমোড়া করে বেঁধে দুই দিন ফেলে রেখেছিল। ওই দুই দিন যেমন আমাদেরকে কিছু খেতে দেয়া হয়নি তেমনি আমাদের টয়লেট ব্যবহার করারও কোনো সুযোগ ছিল না। তারা শুধু আমাদেরকে ধরে ধরে মারছিল।

গাজা উপত্যকার সীমান্তবর্তী কোনো একটি এলাকায় তাদেরকে রাখা হয়েছিল জানিয়ে নায়েফ বলেন, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে আমাদের ফেলে রাখা হয়েছিল। শীতের মধ্যে আমাদের শরীরে ঠাণ্ডা পানি ঢেলে দেয়া হয়। দু’দিন পর আমাদেরকে একটি কারাগারে পাঠানো হয় এবং সেখানেও চলে নির্যাতন।

মুক্তিপ্রাপ্ত অপর বন্দি বারদিনি বলেন, দখলদার সেনারা সারারাত আমাদের মাথায় ঠাণ্ডা পানি ঢেলেছে এবং সারাদিন প্রহার করেছে।

গাজা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর এমন সময় এ নির্যাতন চালানো হলো যখন গাজার ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে আটক ইসরাইলি বন্দিরা মুক্তি পেয়ে তাদের সঙ্গে সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের বর্ণনা দিয়েছেন। তারা বলেছেন, ফিলিস্তিনি রক্ষীরা তাদেরকে সেই খাবার খেতে দিয়েছেন যা তারা নিজেরা খেয়েছেন। ইসরাইলি নারী বন্দিরা বলেছেন, তাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা সর্বোচ্চ সম্মানজনক আচরণ করেছেন।

ইসরাইলের কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেই

লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর নিয়ন্ত্রণে এমন সুড়ঙ্গ ব্যবস্থা রয়েছে যা দিয়ে ইসরাইলের ওপর হামাসের চেয়েও বৃহৎ পরিসরে হামলা চালানো সম্ভব। ইসরাইলের একজন সরকারি কর্মকর্তা একটি এফএম রেডিও চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আজ (রোববার) এ কথা বলেছেন।

ইসরাইলের আপার গ্যালিলি রিজিওনাল কাউন্সিলের প্রধান গিয়োরা যেল্‌জ নামের এই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন, হিজবুল্লাহ তার সুড়ঙ্গ ব্যবস্থা ব্যবহার করে ইসরাইলের ওপরে হামাসের চেয়ে বড় হামলা চালাতে পারে। ইসরাইলের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রকৃতপক্ষে উত্তর ইসরাইলে হামাস এবং হিজবুল্লাহ ভালো অবস্থানে রয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের কার্যকর কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেই।

আপার গ্যালিলি অঞ্চলের সাথে গোলান মালভূমি এবং দক্ষিণ লেবাননের সীমান্ত রয়েছে। সম্প্রতি ইসরাইলের ইয়েদিয়োথ আহরোনোথ পত্রিকা বলেছে, গ্যালিলি অঞ্চলে বেশ কয়েকটি ইহুদি বসতি রয়েছে যেগুলো লেবাননের ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় রয়েছে।

সম্প্রতি দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরাইলের ভেতরে হিজবুলাহর যোদ্ধারা হামলা জোরদার করেছে এবং প্রায় দিন তারা ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনাদের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি, ব্যারাক ও অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। গাজার জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইল যে আগ্রাসন চালাচ্ছে তার প্রতিবাদে হিজবুল্লাহ এই হামলার পথ বেছে নিয়েছে।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url