আল আকসার ইতিকথা-১১ | ইহুদীরা অভিশপ্ত | ইহুদীরা সকল ধর্ম এবং মানবতার শত্রু | ইসলামের দুশমন

আল আকসা মসজিদের ইতিকথা শীর্ষক এই প্রবন্ধগুলো এ এন এম সিরাজুল ইসলামের লেখা “আল আকসা মসজিদের ইতিকথা” গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। সুন্দর তথ্যবহুল এই গ্রন্থটি বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত।

ইহুদীরা আল্লাহর অভিশপ্ত



আল্লাহ ইহুদীদের উপর স্থায়ীভাবে লাঞ্ছনা, অপমান ও নির্যাতন নির্ধারিত করে দিয়েছেন। আল্লাহ যুগে যুগে, ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায়ে তাদেরকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেছেন। মিসরের ফেরআউন শাইশাক ইসরাইল দখল করে এবং ইহুদীদেরকে তাড়িয়ে দেয়। তারপর ব্যাবিলনের রাজা বখতে নসর জেরুজালেম দখল করে ইহুদীদেরকে বন্দী করে নিয়ে আসে এবং তাদেরকে দাস বানিয়ে রাখে। পরে পারস্য সম্রাট আরতাখসাসনার ইহুদী দাসদেরকে ইসরাইলে ফেরত পাঠান সত্য, কিন্তু তা তখন পারস্য সম্রাটেরই অধীন ছিল। ৬৬ খৃঃ রোমান সম্রাট তাইতুস জেরুজালেম দখল করে এবং ইহুদীদেরকে ব্যাপকহারে হত্যা করে। উপরন্তু ৭০ খৃঃ রোমান বাহিনী হাজার হাজার ইহুদীকে বন্দী করে নিয়ে যায় এবং তাদেরকে দাস বানায়।

২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মুহূর্তে তারা বিরাট সমস্যার সম্মুখীন হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই ইহুদীরা ঐ সময় পর্যন্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বাস করে। এটাও তাদের জন্য বিরাট অপমান ছাড়া আর কিছু নয়। যাই হোক, ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদীদের দেশত্যাগ প্রয়োজন। কিন্তু কোন ইহুদী ইসরাইল রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিল না। তখন ইহুদী নেতারা জার্মানীর নাৎসী নেতা হিটলারের সাথে এক গোপন ইহুদী হত্যা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। যাতে করে, বিশ্বব্যাপী ইহুদীদের মধ্যে ভয়-ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা যায় এবং তারা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে বাধ্য হয়। চুক্তি অনুযায়ী ৪ লাখ ৫০ হাজার ইহুদীর মধ্যে মাত্র ৭ হাজারকে ইসরাইল পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় এবং অবশিষ্টদেরকে হত্যার নীল নকসা তৈরী করা হয় । হিটলার ইহুদীদেরকে গ্যাস চেম্বারে জড়ো করে গ্যাস বোমা মেরে হত্যা করে। সংখ্যার দিক থেকে এত বিপুল পরিমাণ ইহুদীকে ইতিপূর্বে আর কেউ হত্যা করেনি। এটা যদি আল্লাহর অভিশাপ বা গযব না হয়, তাহলে অভিশাপ আর কাকে বলে?

এরপরও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইহুদীরা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করতে রাজী না হওয়ায় ইহুদী নেতারা বিশ্বের সর্বত্র ইহুদী হত্যার গোপন পরিকল্পনা হাতে নেয়। উদ্দেশ্য একই, আর তা হল তাদের মধ্যে ভয়-ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা।
ইহুদী রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা হার্জল একবার রাশিয়ার ৩য় জার আলেকজান্ডারকে বলেছিলেন, ‘যদি ৬ থেকে ৭ মিলিয়ন ইহুদীকে কৃষ্ণ সাগরে ডুবিয়ে দেয়া সম্ভব হয়, তাতে আমার কোন আপত্তি থাকবে না ।

তাই দেখা যায়, ইসরাইল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা, প্রথম ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী এবং ইহুদী নেতা ডেভিড গুরিওন ইহুদীরা ইসরাইলের হাইফা বন্দরে এসেও জাহাজ থেকে নামতে রাজী না হওয়ায় ইহুদী বোঝাই জাহাজটিকে বোমা মেরে সাগরে ডুবিয়ে দেয় ।

ইহুদীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-

واذْ تَأَذَّنَ رَبُّكَ لَيَبْعَثَنَّ عَلَيْهِمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَن يسومهم سوء

অর্থ : ‘আরো স্মরণ কর, যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, তিনি কেয়মাত পর্যন্ত সব সময় বনি ইসরাইলের উপর এমন লোককে প্রভাবশালী করবেন যারা তাদেরকে নিকৃষ্টতম শাস্তি দান ও নির্যাতন করতে থাকবে।' (আরাফ-১৬৭) ২৯

আল্লাহ আরো বলেন-

ضُرِبَتْ عَلَيْهِمُ الذلَّةُ وَالْمَسْكَنَةُ وَبَاتُوْا بِغَضَبٍ مَنْ اللَّهِ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَانُوا يَكْفُرُونَ بِايَاتِ اللهِ وَيَقْتُلُونَ النَّبِيِّينَ بِغَيْرِ حَق ذَلِكَ بِمَا عَصَوْ كَانُوا

অর্থঃ তাদের উপর অপমান ও অভাব লাগিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও গযবের শিকার হয়েছে। কেননা, তারা আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরী করেছে এবং নবীদেরকে হত্যা করেছে, এটা ছিল তাদের নাফরমানী এবং তারা ছিল সীমালংঘনকারী।' (সূরা আল বাকারা) 

 তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন :

إِنَّ الَّذِينَ يَكْفُرُونَ بِآيَاتِ اللهِ وَيَقْتُلُونَ النَّبِيِّينَ بَغَيْرِ حَقٌّ وَيَقْتُلُونَ الَّذِينَ يَأْمُرُونَ بِالْقِسْطِ مِنَ النَّاسِ فَبَشِرْهُمْ بَعَذَابٍ أَلِيمٍ أُولئِكَ الَّذِينَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَمَالَهُمْ مِّنْ نَاصِرِينَ .

অর্থ : ‘যারা আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরী করে, নবীদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারীদেরকেও হত্যা করে, তাদেরকে কষ্টদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও। তারাই ঐ সকল লোক যাদের আমল দুনিয়া এবং আখেরাতে ব্যর্থ- বেকার এবং যাদের কোন সাহায্যকারী নেই ।

মহান আল্লাহ ইহুদীদের ব্যাপারে আরো বলেন-

كَانُوا لَا يَتَنَا هَوْنَ عَنْ مُّنْكَرٍ فَعَلُوهُ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ

অর্থ : ‘তারা মন্দ কাজ থেকে বিরত হয় না, যা তারা ইতিপূর্বে করেছে এবং তারা যা করে, তা কতইনা খারাপ।' এই হচ্ছে, ইহুদীদের উপর আল্লাহর গযবের কারণ।

ইহুদীরা ইসলামের দুশমন

ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থে শেষনবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর আগমনের সুসংবাদ রয়েছে। অন্যান্য সকল আসমানী কিতাবগুলোতেও সেই একই সুসংবাদ আছে। আগের সকল আম্বিয়ায়ে কেরাম তাদের অনুসারীদেরকে নির্দেশ দিয়ে গেছেন, শেষনবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) যখন নবুয়ত লাভ করবেন তখন আগের সকল ধর্ম বাতিল হয়ে যাবে। তাই তাদেরকে শেষনবী আনীত কিতাব ও জীবন ব্যবস্থার অনুসরণ করতে হবে। তাদের নবী ও আসমানী কিতাবের নির্দেশ অনুযায়ী যুক্তির দাবী ছিল, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর অনুসরণ করে মুসলিম হয়ে যাওয়া। কিন্তু তারা মুসলমান তো হয়ইনি, বরং ইসলাম ও শেষ নবীর বিরুদ্ধে হিংসা ও ক্রোধে জ্বলে-পুড়ে মরতে থাকে। কেননা, তাদের ধারণা ছিল, তাদের কাওম বনি ইসরাইলে শেষ নবীর আগমন ঘটবে। তাই তারা কিছুতেই মক্কার কুরাইশ বংশে আরবী নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর অস্তিত্ব সহ্য করতে পারল না। তারা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে হাজারো যড়যন্ত্র শুরু করে দিল। তাদের সেই ষড়যন্ত্র আজ পর্যন্ত অব্যাহত আছে। মুসলমানদের সবচাইতে বড় দুশমন হচ্ছে ইহুদী সম্প্রদায় ।

এ সম্পর্কে আল্লাহ কুরআনে মজীদে বলেছেন-

لَتَجِدَنْ أَشَدَّ النَّاسِ عَدَاوَةً لِلَّذِينَ امَنُوا الْيَهُودَ وَالَّذِينَ أَشْرَ كُوا

অর্থঃ ‘তুমি মুমিনদের বিরুদ্ধে ইহুদী ও মুশরিকদের কঠোরতম দুশমন হিসেবে দেখতে পাবে।' 

এই আয়াতে মুসলমানদের যে ২টা ঘোর শত্রুর কথা আল্লাহ বাতলিয়ে দিয়েছেন, তার মধ্যে প্রথম হচ্ছে ইহুদী, আর দ্বিতীয় হচ্ছে মুশরিক। কুরআন মজীদের বিভিন্ন সূরা ও আয়াতে বনি ইসরাইল তথা ইহুদীদের সম্পর্কে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বহু আয়াত নাযিল হয়েছে। কুরআনের মোট ১১৪টি সূরার মধ্যে ৫০টিতেই ইহুদীদের সম্পর্কে সরাসরি এবং পরোক্ষ ইশারা ইঙ্গিতে আলোচনা করা হয়েছে। তাদের সম্পর্কে এত বেশী আলোচনার উদ্দেশ্য হল, মুসলমানগণ তাদের ব্যাপারে যেন যথেষ্ট সতর্ক থাকে ।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মক্কা থেকে হিজরাত করে মদীনায় যাওয়ার পরপরই একের পর এক ইহুদীদের শত্রুতা প্রকাশিত হতে থাকে। তারা শেষ পর্যন্ত ইসলাম, মুসলমান ও শেষ নবীকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদে অবতীর্ণ হন এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। মদীনার জীবনের ১ম চতুর্থাংশে তাদের ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাদেরকে মদীনা থেকে বহিষ্কার করেন।

ইহুদী কবি আবি ইফক নিজ কবিতার মাধ্যমে রাসূলুল্লাহর বিরুদ্ধে লোকদেরকে উত্তেজিত করতে থাকে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার ইসলাম দুশমনীর জন্য তাকে হত্যার নির্দেশ দেন। তারপর ইহুদী কাইনুকা গোত্রকে মদীনা থেকে বহিষ্কার করেন। এই গোত্রটি ইসলামের অসম্মান করে এবং একজন মুসলিম মহিলার ইজ্জত নষ্ট করে। এরপর ইহুদী কবি কাব বিন আশরাফকে হত্যা করা হয়। সেও নিজ কবিতার মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও ইসলামের বিরুদ্ধে লোকদের উত্তেজিত করতে থাকে। তারপর ইহুদী বনি নাদীর গোত্র রাসূলুল্লাহকে (সাঃ) নিজেদের ঘরের দেয়ালের পার্শ্বে বসায় এবং ছাদ থেকে বড় পাথর নিক্ষেপ করে তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এই অপরাধের কারণে তাদেরকেও মদীনা থেকে বহিষ্কার করেন। তারপর আহযাব যুদ্ধে ইহুদী বনি কুরাইজাহ মুসলমানদের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গ করে যুদ্ধের ঘোষণা দেয়ায় তিনি তাঁদেরকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দান করেন। এইভাবে মদীনা থেকে ইহুদীদেরকে বিতাড়িত করার পর তিনি মদীনার বাইরের ইহুদীদের প্রতি দৃষ্টি দেন। কেননা, বিশৃংখলা ও গোলযোগ সৃষ্টিতে তাদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। তিনি ইসলামের বিরুদ্ধে খায়বারে ইহুদীদের সংগঠক আবু রাফে সালাম বিন আবিল হাকীক নাদারীকে হত্যা করেন। তারপর ইহুদীরা আসীর বিন রাযেমকে আবু রাফের পরিবর্তে নেতা নির্বাচিত করে ইসলামের বিরুদ্ধে পুনরায় সংগঠিত হয়। পরে আসীরকেও হত্যা করা হয়। হোদায়বিয়ার সন্ধির দুইমাস পর খায়বার ও পার্শ্ববর্তী ইহুদী গ্রামগুলো মুসলমানদের দখলে আসে।

ইহুদীদের ষড়যন্ত্র এখানে এসেই থেমে যায়নি। পূর্বে নবী হত্যাকারী এই সম্প্রদায় প্রথম পর্যায়ে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে হত্যা করতে চেয়েছিল। কয়েকদফা ব্যর্থ চেষ্টার পর তারা শেষ পর্যায়ে আংশিক সফল হয়। খায়বারে একজন ইহুদী মহিলা একটি বিষমাখা ভেড়া রান্না করে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে খেতে দেন। মহিলাটি জানত যে, তিনি উপহার গ্রহণ করেন। তাই সে ঐ ভেড়াটি উপহার দেয়। তিনি একটু খেয়ে খানা বন্ধ করেন এবং বলেন, আমার মনে হচ্ছে তা বিষাক্ত। এই বিষমাখা ভেড়ার গোশত খেয়ে একজন সাহাবী ইনতিকাল করেন। তাঁর নাম হচ্ছে বিশর বিন বারা (রাঃ)। রাসূলুল্লাহর (সাঃ) পরবর্তী জীবনে ঐ বিষের প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এমন কি মৃত্যুকালীন রোগে তিনি বিষের ক্রিয়া অনুভব করেন। তিনি তখন বিশর বিন বারার বোনকে বলেন, তোমার ভাইয়ের সাথে যে বিষাক্ত খানা খেয়েছি তার ফলে এখন আমার হৃদনালী কেটে গেছে বলে মনে হচ্ছে। সাহাবায়ে কেরামের মতে, তিনি ভেড়ার বিষক্রিয়ার ফলে সাধারণ মৃত্যু নয়, বরং শাহাদাত বরণ করেছেন। এছাড়াও ইহুদী যাদুকর লবীদ বিন আসেম যাদুর মাধ্যমে রাসূলুল্লাহকে (সাঃ) হত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু আল্লাহ তাদের সেই পরিকল্পনা নস্যাত করে দেন। কূপ থেকে যাদু আবিষ্কার করে তা নষ্ট করে দেয়া হয়। ইহুদীরা হচ্ছে এমন এক জাতি, যারা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ নবী-রাসূলদেরকে হত্যা করেছে এবং এ যাবত বিশ্বের সকল যুদ্ধ ও গোলযোগের পেছনে ইন্ধন যুগিয়ে যাচ্ছে। তারা হচ্ছে রক্তপিপাসু জাতি । তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন-

كُلَّمَا أَوْقَدُوا نَارًا  ِللْحَرْبِ أَطْفَأَهَا اللهُ وَيَسْعَونَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا وَاللَّهُ لا يُحِبُّ الْمُفْسِدِينَ .

অর্থ : ‘তারা যখন যুদ্ধের আগুন জ্বালায়, আল্লাহ্ তা নিভিয়ে দেন। তারা যমীনে বিশৃংখলা ও গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করে। আল্লাহ ফাসাদ সৃষ্টিকারীদেরকে ভালবাসেন না।'

ইহুদীরা সকল ধর্ম এবং মানবতার শত্রু

ইহুদীদের ঐ সকল ষড়যন্ত্র ইতিহাসের কাল অধ্যায়ে লিখিত আছে। রাসূলুল্লাহর (সাঃ) জীবদ্দশায় উল্লেখিত ইহুদী ষড়ন্ত্রের পর ইসলামী খেলাফতের সময়ও তাদের বিষাক্ত ছোবল অব্যাহত থাকে। প্রখ্যাত ইহুদী ষড়যন্ত্রকারী আবদুল্লাহ বিন সাবার প্ররোচনায় মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। যার ফলে, তাদের একটা অংশ হযরত ওসমান (রাঃ) কে শহীদ করে। তাদের ষড়যন্ত্রের ফল হিসেবে হযরত আলীর পর ইসলামী খেলাফতের অবসান হয়। তুরস্কের ওসমানী খেলাফতের পতনের জন্য মাদহাত পাশা নামক ইহুদীর ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কামাল আতাতুর্ক ছিল ইহুদীদের প্রতিনিধি। তার হাতে উসমানী খেলাফতের অবসান হয়। অপরদিকে ইহুদী কালমার্ক্স ছিল কুফরী মতবাদের আবিষ্কর্তা। তার তৈরি সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদের নির্যাতনে সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন ও অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক দেশে কোটি কোটি মুসলমান নিগৃহীত হয়েছে। এরপর ইহুদী বিজ্ঞানী ফ্রয়েড মানুষের মধ্যে পাশবিক চিন্তার উন্মেষ ঘটিয়ে ইসলামের মানবিক আদর্শকে চ্যালেঞ্জ করে। ইহুদী সমাজবিজ্ঞানী দূরকায়েম ইসলামের পারিবারিক প্রথার বিরুদ্ধে কলম ধরে সমাজে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের সমাধি রচনা করতে চেয়েছে। ইহুদী প্রাচ্যবিদ গোল্ড তাসিহর ওরিয়েন্টালিজম বা প্রাচ্যবিদ্যার জন্ম দিয়ে ইসলামী আদর্শের ক্ষতির ভিত্তি তৈরী করেছে।

ইহুদী সামইউল যুইমার মুসলিম বিশ্বে খৃস্টানদেরকে উস্কানি দিয়ে খৃস্টান মিশনারী তৎপরতা শুরু করায়। এর ফলে অনেক মুসলমান খৃস্টান ষড়যন্ত্রের শিকার হয়। তার লক্ষ্য ছিলঃ খৃস্টানদেরকে দিয়ে মুসলমানদেরকে শায়েস্তা করা।

ইহুদী থিওডোর হার্জল 'ইহুদী রাষ্ট্র' নামে একটা বই লিখে মধ্যপ্রাচ্য সংকট সৃষ্টি করেছে। সেই বইতে ইহুদী রাষ্ট্রের কল্পিত মানচিত্র অংকন করে ইহুদীদেরকে উৎসাহিত করেছে। তার মৃত্যুর পর ইসরাইল নামক যে রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা মুসলমানদের জন্য তথা বিশ্বের শান্তির জন্য হুমিকস্বরূপ।

তথ্যসূত্র:
২৯. Palestine, The Land of Prophethood, R Garudy France * The Case of Israel, A Study of Political Zionism, R. Garaudy, France, English edition, 1983.


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url