আল আকসার ইতিকথা-১৩ | আল আকসা ও হাইকালে সুলাইমানী | মসজিদে আকসা নিয়ন্ত্রণ | সিউনিমেন্ট আন্দোলন

আল আকসা মসজিদের ইতিকথা শীর্ষক এই প্রবন্ধগুলো এ এন এম সিরাজুল ইসলামের লেখা “আল আকসা মসজিদের ইতিকথা” গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। সুন্দর তথ্যবহুল এই গ্রন্থটি বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত।

মসজিদে আকসার ধ্বংস্তূপের ওপর হাইকালে সুলাইমানী নির্মাণ করতে চায় ইহুদীরা


এখন আমরা ইহুদীদের মধ্যে যে সকল সংস্থা মসজিদে আকসা ধ্বংস করে সেখানে হাইকালে সুলাইমানী নির্মাণ করতে চায়, সে সকল সংস্থা সম্পর্কে আলোচনা করবো।

জোশ ইমুনিয়াম

জোশ ইমুনিয়াম-এর অর্থ হচ্ছে, ঈমান সংস্থা। এর অপর নাম হচ্ছে, যায়নবাদ সংস্কার আন্দোলন। এই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন মোশে লেভাঞ্জার। সংস্থার উদ্দেশ্য হল, অধিকৃত জর্দান নদীর পশ্চিম তীর ও গাজ্জায় ইহুদী বসতি স্থাপন করা এবং মসজিদে আকসার ধ্বংস্তূপের ওপর হাইকালে সুলাইমানী নির্মাণ করা। সংস্থাটি নিজ লক্ষ্য অর্জনে সহিংস তৎপরতায় বিশ্বাসী। এটি ইসরাইল সরকারের সমর্থনপুষ্ট।

ইয়াশিফাত আত্রিত কোহানিন

এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন প্রথম ফিলিস্তিনী হাখাম ইব্রাহাম ইয়াতাসহাক কোল। তার অনুসারীরা বিশ্বাস করে যে, তারা হাইকালের দিকে রওনাকারী মিছিলের অগ্রপথিক। তারা হাইকাল পাহাড়ে ইহুদীদের উপাসনা সংক্রান্ত ফতোয়া প্রকাশের আগ পর্যন্ত সেখানে যাওয়া থেকে বিরত থাকত। ১৯৮৫ খৃঃ সেই ফতোয়া প্রকাশিত হয়। তাদের কাছে হাইকাল পুনঃনির্মাণের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন রয়েছে। হাইকাল পুনঃনির্মাণের উদ্দেশ্যে তারা সেমিনার-সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠান করে থাকে ।

মসজিদে আকসা নিয়ন্ত্রণ সংস্থা

এই সংস্থা মসজিদে আকসা জয় করে তার উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তাই তারা প্রকাশ্যে মসজিদে আকসা ধ্বংস করার ঘোষণা দিচ্ছে এবং তথাকথিত ইসরাইলী ভূখণ্ড থেকে সকল মুসলমানকে বিতাড়িত করার শ্লোগান দিচ্ছে। তাদের ঘোষিত আরেকটি লক্ষ্য হল, আল-খলীল শহর থেকে মসজিদে ইবরাহীমকে ধ্বংস করে শহরের চূড়ান্ত ইহুদীকরণ এবং তাকে ইহুদী উপাসনালয়ে রূপান্তরিত করা। ইতিমধ্যে আল- খলীল শহরে ইহুদী সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং মসজিদে ইবরাহীমির এক- তৃতীয়াংশের উপর ইহুদী উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। তাদের উপাসনালয়ের নামকরণ করা হয়েছে মাকফের উপাসনালয়। এই সংস্থার আধ্যাত্মিক গুরু হচ্ছে, ইয়াসরাইল আরিয়েল এবং হাখাম করন।

সিউদাস শিসন

এটি একটি সমাজকল্যাণ সংস্থার আকারে প্রতিষ্ঠিত। এর আর্থিক যোগান আসে ইসরাইলের শিক্ষামন্ত্রণালয়, জেরুজালেম পৌরসভা ও ইসরাইলী সেনাবাহিনীর কাছ থেকে। সংস্থার উদ্দেশ্য হল, ইহুদীদের নিকট হাইকাল ও জেরুজালেম সম্পর্কে গভীর জ্ঞান দান। এ ছাড়া সেনাবাহিনীকেও এ ব্যাপারে জ্ঞান দান তাদের প্রধান কর্মসূচী। তারা ধর্মীয় স্থানসমূহে পবিত্র সফর করে থাকে। তারা শুধু হায়েতে মাবকীর কাছে ইহুদীদের উপাসনায় সন্তুষ্ট নয়।

আল-হার হাশেম গোষ্ঠী

এর অর্থ হল, 'আল্লাহর পাহাড়ের দিকে।' এই গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য হল হাইকাল পুনঃনির্মাণ করা। সংস্থার প্রধান হল জারশন স্যালমন। সংস্থার অনুসারীদের একটা অংশ ১৪/৮/১৯৮৭ তারিখে মসজিদে আকসায় ইহুদী প্রার্থনা আদায় করে।

হাতহাইয়া দল

এর অর্থ হল ইহুদী পুনর্জাগরণ দল। এটি একটি অধার্মিক সংস্থা হওয়া সত্ত্বেও মসজিদে আকসার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী। তাদের মতে, এর ফলে ইসরাইলের শক্তি ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। ইসরাইলী পার্লামেন্ট নেসেটে ঐ দলের সদস্য রয়েছে। এটি একটি ধর্মনিরপেক্ষ দল হওয়া সত্ত্বেও দলের নেতা ইউভাল নেমান বলেছেন, আমি লজ্জা-শরম ছাড়াই বলছি, আমি লেবাননের দিকে তাকিয়ে আছি। কেননা, লেবানন ইসরাইলের অংশ ও পুনরুত্থানের ভূমি ।

ওমানা হাইকাল দল

এই দলের লোকেরা বোরাক দেয়ালের আঙিনায় ইহুদী উপাসনার ব্যবস্থা করে। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্মসূত্র ইহুদী স্টানলী ঙ্গ গোল্ডফোট এই দলের নেতা। তিনি একটি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে জড়িত আছেন ।

পবিত্র হাইকাল সংস্থা

৫ জন বাইবেলিস্ট খৃস্টান এই সংস্থা কায়েম করেছে। তাদের উদ্দেশ্য হল, মসজিদে আকসাকে ধ্বংস করার চক্রান্তে সহযোগিতা করা।

পিটার সংস্থা

এই সংস্থা মসজিদে আকসার আঙিনায় ইহুদী প্রার্থনার ওপর জোর দেয় । তারাও মসজিদে আকসাকে ধ্বংস করতে আগ্রহী।

মুকুট পুনঃপ্রতিষ্ঠা সংস্থা

এই সংস্থার চরমপন্থী ও গোঁড়া যুবকেরা জেরুজালেমের বিভিন্ন ঘর-বাড়ী ও সম্পত্তির মালিকানা জবরদখল করে তাতে ইহুদী মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যেমন মসজিদে আকসার চারদিক থেকে মুসলিম সম্পত্তি ও ঘড়-বাড়ী উচ্ছেদ করা সম্ভব হয় এবং মসজিদে আকসার ইহুদীকরণ সহজতর হয় ।

হাশমু নাইম সংস্থা

এই সংস্থার প্রধান লারনার সন্ত্রাসবাদী হিসেবে পরিচিত এবং সংস্থার সদস্যরা সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাসী। সামরিক সেবা থেকে অবসর গ্রহণের পর তারা বল প্রয়োগ করে মসজিদে আকসার আঙিনা দখলের জন্য চেষ্টা চালায়। ১৯৮২ সালে তারা সাখরা গম্বুজ বিস্ফোরণের ব্যর্থ চেষ্টা করে। বিস্ফোরণের আগে বিস্ফোরক পরিবহন গাড়ীটাকে চিহ্নিত করা সহজ হয়। ফলে তাদের ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দেয়া হয় ।

সিউনিমেন্ট আন্দোলন বা নতুন যায়নবাদ

১৯৮৩ খৃঃ সাবেক ইসরাইলী সামরিক বাহিনী প্রধান রাফাইল ইতান এই সংস্থাটি গঠন করে। সেনাপতির দায়িত্ব পালনকালে ইতান চরম আরব ও মুসলিম বিদ্বেষী বলে প্রমাণিত হয়েছে। 

ওমানা আন্দোলন

এর অর্থ হল সচিবালয় আন্দোলন। এটি একটি ইহুদী ধর্মীয় আন্দোলন। যার উদ্দেশ্য হল ইহুদী বসতি স্থাপন করা। এই আন্দোলনের সদস্যরা ইহুদী ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তারা ইহুদীদের মধ্যে এই ধারণা দিয়ে বেড়ায় যে, মাসীহর আগমনের মাধ্যমে মুক্তি আসবে এবং মাসীহর আগমন আসন্ন। তারা তাওরাতের সাথে সংঘর্ষমূখর যে কোন কিছুর বিরোধীতার আহ্বান জানায়। তারা অধিকৃত আরব এলাকায় ইহুদী বসতি বন্ধের ঘোর বিরোধী।

ইহুদা গোত্র

তারা লাফতা গোষ্ঠী নামে অধিক পরিচিত। তাদের কাছে সামরিক শক্তি ও সম্ভার রয়েছে এবং একবার তারা বিস্ফোরক দ্রব্যের মাধ্যমে মসজিদে আকসা ও সাখরা উড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল।

কাখ আন্দোলন

কাখ আন্দোলন-এর অর্থ হল, ‘এইভাবে বন্দুক দিয়ে'। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে মার্কিন ইহুদী হাখাম মায়ের কাহানা। সে ইসরাইলী নেসেটের সদস্য ছিল। সে তালমুদের বক্তব্য অনুযায়ী ফিলিস্তিন থেকে মুসলমানদেরকে শক্তি প্রয়োগ করে উচ্ছেদের পক্ষপাতি। তার মতে ফিলিস্তিন শুধু ইহুদীদেরই আবাসভূমি। অধিকৃত আরব এলাকার মুসলিম নেতৃবৃন্দের প্রতি এই সংস্থা হুমকী পাঠায়। ১১/৪/১৯৮২ খৃঃ এই সংস্থার সদস্যরা মসজিদে উপর আক্রমণ করে কয়েকজন মুসলমানকে শহীদ করে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বক্তৃতার সময় মায়ের কাহানাকে গুলী করে হত্যা করা হয়। 

হাইকাল পাহাড় তহবিল সংস্থা

এটি একটি ইহুদী-খৃস্টান সংগঠন যা মসজিদে আকসার এলাকাকে ইহুদীকরনের জন্য প্রকাশ্যে আহ্বান জানায়। ১৯৮৩ সাল আমেরিকায় ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এ সংস্থা জেরুজালেমে তার কেন্দ্রীয় অফিসের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের খৃস্টানরা এই সংস্থার অর্থ যোগান দেয়। ক্যালিফোর্নয়ার প্রখ্যাত ধনী টেরি প্রজেনহোভার এই সংস্থার সভাপতি। ২৩/১/১৯৮৩ খৃঃ ইসরাইলের দাফার পত্রিকা লিখেছে, ইয়াহুদা ও সামেরায় ইহুদী বসতি নির্মাণের জন্য সংস্থা লক্ষ লক্ষ ডলার সাহায্য দিয়েছে। হাইকালে সুলাইমানী পুনঃনির্মাণ সংস্থার মূল লক্ষ্য।

আসমাউত আন্দোলন

এটি একটি চরমপন্থী ধর্মীয় আন্দোলন। এটিও জোশ ইমুনিয়াম সংস্থার অনুরূপ লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নির্ধারণ করেছে।

মোয়ালুন ইবাদতগাহ আঙিনা আন্দোলন

এই সংস্থার মূল লক্ষ্য হল, মসজিদে আকসা ও সাখরার ভূমিসহ পার্শ্ববর্তী ভূমিগুলো জবরদখল করা এবং সেই জায়গায় ইহুদী এবাদতগাহ নির্মাণ করা।

সাইউরি তেসিওন লীগ

এটি ইহুদী ধর্মীয় স্কুলের অধীন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সংস্থার মূল উদ্দেশ্য হইল ইহুদী সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য ইহুদীদেরকে ইহুদী ইবাদতখানা ও জেরুজালেম সম্পর্কে গভীর জ্ঞান দান করা।

ইহুদী সেনাবাহিনীর মধ্যকার গোপন সংস্থা

এই সংস্থার লক্ষ্য উদ্দেশ্য আগে পরিষ্কারভাবে জানা না গেলেও ১৯৮৪ খৃঃ দেখা গেছে, ইসরাইলী বিমান বাহিনী মসজিদে আকসাকে ধ্বংস করার উদ্যোগ নিয়েছিল। ইসরাইলের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছে, এই সংস্থার অধিকাংশ সদস্য পরিচিত ইহুদী ধর্মীয় দলসমূহের সদস্য নয়। শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তারা মসজিদে আকসাকে ধ্বংস করতে চায়।

ক্রিশ্চিয়ান যায়নবাদ

ক্রিশ্চিয়ান যায়নবাদ হচ্ছে খৃস্টবাদের ক্রমবর্ধমান একটি মারাত্মক ধারা। উনিশ শতকে আমেরিকান নাগরিক সাইরাস স্কোফিল্ড বাইবেলে ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর যে ব্যাখ্যা করেন, তা থেকেই স্কোফিল্ড বাইবেল, আজকের যুগের সর্বাধিক জনপ্রিয় বাইবেল, যা সর্বত্র রেফারেন্স বাইবেল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ৩৪ স্কোফিল্ড তার ব্যাখ্যায় বলেছেন, যীশুখৃস্ট অর্থাৎ হযরত ঈসা (আঃ) সে পর্যন্ত পৃথিবীতে পুনরায় প্রত্যাবর্তন করবেন না, যে পর্যন্ত না আগে কিছু ঘটনা সংঘটিত হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হচ্ছে, জেরুজালেমে ইহুদীদের প্রত্যাবর্তন ও এর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ, হাইকালে সুলাইমানী পুনঃনির্মাণ এবং সবশেষে আরমাগেদ্দন (হারমাজদু) যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া। আরমাগেদ্দন ধর্মতত্ত্বে বিশ্বাসী অধিকাংশ লোক, বাইবেলের স্কোফিল্ড ব্যাখ্যা অনুযায়ী মনে করে, ফিলিস্তিন হচ্ছে, ইহুদীদের জন্য আল্লাহর নির্বাচিত ভূমি। আমেরিকা, বৃটেন, ইটালীসহ খৃস্টান বিশ্বের বহু লোক স্কোফিল্ড বাইবেল অনুসরণ করে। একমাত্র আমেরিকার ১ কোটি থেকে ৪ কোটি খৃস্টান স্কোফিল্ড বাইবেলের অনুসারী। তাদের মতে, ইসরাইল কি করে তা নিয়ে মাথা ব্যথার কিছু নেই। ঈশ্বর চায় বলেই ইসরাইল ঐ সকল ঘটনা ঘটাচ্ছে। ৩৫

তাদের মতে, অন্যান্য লোকদেরও উচিত, লেবাননে ইসরাইলী আগ্রাসন এবং এর ফলে ১ লাখ ফিলিস্তিনীর হতাহত হওয়া, ইরাকের পারমাণবিক চুল্লীর উপর ইসরাইলের বোমা বর্ষণ, ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনীদের হাড়গোড় ভেঙে বিকল করে দেয়া, ফিলিস্তিনী শিশুদেরকে গুলী করে হত্যা করা, তাদের বাড়ী-ঘর ভেঙে দেয়া এবং তিন হাজার বছরের পুরাতন আবাসভূমি ফিলিস্তিন থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা সহ ইসরাইলের এ জাতীয় সকল মানবতা-বিরোধী কাজের প্রতি সমর্থন জানানো। ৩৬

তাই দেখা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্রিশ্চিয়ান যায়নবাদীরা বিভিন্ন দেশে ইসরাইলী স্বার্থের অনুকূল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভূমিকা পালন করে।

ইসরাইল ও ইহুদীদের কোন অন্যায় নেই। অন্যায় হচ্ছে অ-ইহুদীদের। ইহুদীরা ঈশ্বরের প্রিয় জাতি, আর অন্যরা অপ্রিয় জাতি।

যাই হোক, ইসরাইলের প্রতি তথাকথিত ধর্মীয় আবেগ-অনুভূতির কারণে আমেরিকাসহ খৃস্টান বিশ্বের বিরাট জনগোষ্ঠী ইসরাইলের প্রতি যে অযৌক্তিক ও অবৈজ্ঞানিক সমর্থন জানাচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য। কেননা, একজন লেখকের লেখায় মাত্রাতিরিক্ত উৎসাহিত হয়ে সেটাকে ধর্মের অংশ মনে করা স্বয়ং সেই ধর্মেরই দুর্বলতা এবং অন্তঃসারশূন্যতার প্রমাণ। মূল ধর্মগ্রন্থে এ জাতীয় সমর্থনের কথা থাকলে হয়তো সেটাকে একটা যুক্তি হিসেবে দাঁড় করানো যেত। কিন্তু স্কোফিল্ডের মনগড়া ব্যাখ্যায় কিভাবে তথাকথিত সভ্য ও শিক্ষিত খৃস্টান বিশ্ব ইহুদী ইসরাইলীদের সকল অন্যায়কে ন্যায় বলে মেনে নিচ্ছে তা চিন্তা করলেও গা শিউরে উঠে। তাও ১৯ শতকের মাথায় এসে ঐ ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে।

গ্রেস হালসেল লিখেছেন, ক্রিশ্চিয়ান যায়নবাদ শুধু আরব ও ফিলিস্তিনী জনগণের জন্যই হুমকি নয়, বরং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্যও হুমকিস্বরূপ। কেননা, ইসরাইল এমন এক দস্যু জাতি যাদের দ্বারা আজ আমরা পরিচালিত। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক কোন নীতি নেই; ইসরাইল যা বলে এ বিষয়ে তাই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি । ৩৭

গ্রেস হালসেল তাঁর বইতে আরো বলেছেন, আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মৌলবাদী নামে খ্যাত খৃস্টানসহ আরো বহু খৃস্টানকে দেখেছি, তারা ইহুদীদের হুমকির ব্যাপারে সচেতন। এই খৃস্টানরা মনে করে, যীশুখৃস্ট ছিলেন মানবতার বাহক, ঈশ্বরের শান্তির বাণী আনয়নকারী, ভ্রাতৃত্ব, ভালবাসা ও সম্প্রীতির প্রবক্তা। তাই ইসরাইলের হত্যা, নির্যাতন, বহিষ্কার, বাড়ীঘর উচ্ছেদসহ যাবতীয় অমানবিক ও বর্বর তৎপরতাকে কিছুতেই সমর্থন করা যায় না। কেননা, তা যীশুর শিক্ষা-বিরোধী।

আগেই পরিষ্কার হয়ে গেছে, ইহুদীদের সাথে খৃস্টানরাও মসজিদে আকসা এবং সাখরা ধ্বংস করার অভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং সেই স্থানে হাইকাল তৈরির স্বপ্নে বিভোর রয়েছে। 

তথ্যসূত্র:
৩৪. Prophecy & Politics by Grace Halsell, U.S.A. 
৩৫. Prophecy & Politics by Grace Halsell, U.S.A. 
৩৬. Prophecy & Politics by Grace Halsell, U.S.A.
৩৭. Prophecy & Politics by Grace Halsell, U.S.A.


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url