আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আল আনফালের বাংলা অনুবাদ | সূরা আল আনফাল | Al Anfal | الأنفال


সূরা আল আনফালের বাংলা অনুবাদ


সূরা আল আনফাল, মদীনায় অবতীর্ণ, আয়াত ৭৫, রুকু ১০

সূরা আল আনফাল


রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে


১. (হে মোহাম্মদ,) লোকেরা তোমার কাছে (যুদ্ধলব্ধ ও যুদ্ধে পরিত্যক্ত) অতিরিক্ত (মাল-সামান) সম্পর্কে (আল্লাহ তায়ালার হুকুম) জানতে চাচ্ছে, তুমি (তাদের) বলো, (এ) অতিরিক্ত সম্পদ হচ্ছে (মূলত) আল্লাহ তায়ালার জন্যে এবং (তাঁর) রসূলের জন্যে, অতএব (এ ব্যাপারে) তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো এবং (এ নির্দেশের আলোকে) নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ক সংশোধন করে নাও, আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর রসূলের আনুগত্য করো, যদি তোমরা সত্যিকার (অর্থে) মোমেন হয়ে থাকো।

২. মোমেন তো হচ্ছে সেসব লোক, (যাদের) আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করানো হলে তাদের হৃদয় ক স্পিত হয়ে ওঠে এবং যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং তারা (সব সময়) তাদের মালিকের ওপর নির্ভর করে।

৩. যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদের যা কিছু (অর্থ-সম্পদ) দান করেছি তা থেকে তারা (আমারই পথে) খরচ করে।

৪. (মূলত) এ (গুণসম্পন্ন) লোকগুলোই হচ্ছে সত্যিকার মোমেন, তাদের মালিকের কাছে তাদের জন্যে (বিপুল) মর্যাদা, মা ও সম্মানজনক জীবিকা (-র ব্যবস্থা) রয়েছে।

৫. (সেভাবেই তোমাদের বের হওয়া উচিত ছিলো) যেভাবে তোমার মালিক তোমাকে তোমার বাড়ী থেকে বের করে এনেছেন, অথচ (তখনও) মোমেনদের একদল লোক (ছিলো এ কাজের দারুন অপছন্দকারী।

৬. সত্য (তোমার কাছে) প্রকাশিত হওয়ার পরও এরা তোমার সাথে বিতর্কে লিপ্ত হচ্ছে, (মনে হচ্ছিলো) তারা যেন দেখতে পাচ্ছিলো, ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকেই তাদের ঠেলে দেয়া হচ্ছে।

৭. (স্মরণ করো,) যখন আল্লাহ তায়ালা তোমাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিলেন— দুটি দলের মধ্যে একটি দল তোমাদের (করায়ত্ত) হবে, (অবশ্য) তোমরা (তখন) চাচ্ছিলে (দুর্বল ও) নিরস দলটিই তোমাদের (করায়ত্ত হোক, অথচ আল্লাহ তায়ালা তাঁর 'কথা' দ্বারা সত্য প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছিলেন এবং (এর মাঝ দিয়ে তিনি) কাফেরদের শেকড় কেটে (তাদের নির্মূল করে) দিতে চেয়েছিলেন,

৮. (এর উদ্দেশ্য ছিলো) সত্যকে যেন (তার) সত্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করা যায় এবং বাতিলকে যাতে করে (বাতিলের মতোই) নির্মূল করা যায়, যদিও পাপিষ্ঠরা (একে) পছন্দ করেনি।

৯. (আরো স্মরণ করো,) যখন তোমরা তোমাদের মালিকের কাছে (কাতর কন্ঠে) ফরিয়াদ পেশ করছিলে, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের ফরিয়াদ কবুল করেছিলেন এবং বলেছিলেন, হাঁ, আমি তোমাদের (এ যুদ্ধের ময়দানে) পর পর এক হাজার ফেরেশতা পাঠিয়ে সাহায্য করবো।

১০. আল্লাহ তায়ালা তোমাদের শুভ সংবাদ দেয়া ও তা দিয়ে তোমাদের মনকে প্রশান্ত করার উদ্দেশেই এটা বলেছিলেন, (নতুবা আসল) সাহায্য তো আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকেই আসে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাবান।

১১. (আরো স্মরণ করো,) যখন আল্লাহ তায়ালা তাঁর নিজের প ক্ষ থেকে তোমাদের নিরাপত্তা ও স্ব স্তির জন্যে তোমাদের তন্দ্রায় আচ্ছন্ন করে দিয়েছেন এবং তোমাদের ওপর তিনি আকাশ থেকে বৃষ্টির পানি নাযিল করেছেন, উদ্দেশ্য ছিলো এ (পানি) দ্বারা তিনি তোমাদের ধুয়ে পাক-সাফ করবেন, তোমাদের মন থেকে শয়তানের অপবিত্রতা দূর করবেন, তোমাদের মনে সাহস বৃদ্ধি করবেন, (সর্বোপরি যুদ্ধের ময়দানে) তিনি এর মাধ্যমে তোমাদের কদম মযরত করবেন।

১২. (তাও স্মরণ করো,) যখন তোমার মালিক ফেরেশতাদের কাছে ওহী পাঠিয়ে বললেন, আমি তোমাদের সাথেই আছি, অতএব তোমরা মোমেনদের সাহস দাও (তাদের কদম অবিচল রাখো), অচিরেই আমি কাফেরদের মনে দারুণ এক ভীতির সঞ্চার করে দেবো, অতএব তোমরা (তাদের) ঘাড়ের ওপর আঘাত হানো এবং তাদের (হাড়ের) প্রত্যেক জোড়ায় জোড়ায় আঘাত করো।

১৩. এ (কাজ)-টা এ কারণে যে, এরা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসুলের বিরুদ্ধে মোকাবেলায় নেমেছে, আর যারাই এভাবে আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের বিরোধিতা করে (তাদের জানা উচিত), আল্লাহ তায়ালা আযাব দানে অত্যন্ত কঠোর।

১৪. (হে কাফেররা,) এ হচ্ছে তোমাদের (যথার্থ পাওনা), অতঃপর (ভালো করে) তোমরা এর স্বাদ গ্রহণ করতে থাকো, কাফেরদের জন্যে দোযখের (ভয়াবহ) আযাব তো রয়েছেই।

১৫. হে মোমেন বান্দারা, তোমরা যখন যুদ্ধের ময়দানে কাফেরদের মুখোমুখি মোকাবেলা করবে, তখন কখনো পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে না।

১৬. (জেনে রেখো,) এ (যুদ্ধের) দিন যে ব্যক্তি তার পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে, সে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালার গজব অর্জন করবে, তবে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে কিংবা (নিজ) বাহিনীর সাথে মিলিত হবার উদ্দেশ্য ছাড়া (যদি কেউ এমনটি করে তাহলে), তার জন্যে জাহান্নামই হবে একমাত্র আশ্রয়স্থল, আর জাহান্নাম সত্যিই নিকৃষ্ট জায়গা।

১৭. (যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছে) তাদের তোমরা কেউই হত্যা করোনি, বরং আল্লাহ তায়ালাই তাদের হত্যা করেছেন, আর তুমি যখন (তাদের প্রতি) তীর নিক্ষেপ করছিলে, (মূলত) তুমি নিক্ষেপ করোনি (করেছেন আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং), তিনি নিজের থেকে মোমেনদের উত্তম পুরস্কার দান করে (তাদের বিজয়) দিতে চেয়েছেন, নিসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা (সব কিছু) শোনেন এবং (সব কিছু) জানেন।

১৮. এটা হচ্ছে তোমাদের (ব্যাপারে তাঁর নীতি), অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের ষড়যন্ত্র দুর্বল করে দেন।

১৯. (হে কাফেররা,) তোমরা একটা সিদ্ধান্ত চেয়েছিলে, হাঁ, (আজ) সে সিদ্ধান্ত (কর মুহূর্তটি) তোমাদের সামনে এসে গেছে, যদি এখনও তোমরা (যুদ্ধ থেকে) বিরত হতে চাও, তাহলে তা তোমাদের জন্যে কল্যাণকর হবে, তোমরা যদি (আবার যুদ্ধের জন্যে) ফিরে আসো, তাহলে আমরাও (ময়দানে) ফিরে আসবো, আর তোমাদের বাহিনী সংখ্যায় যতোই বেশী হোক না কেন তা তোমাদের কোনোই উপকারে আসবে না, (কারণ) আল্লাহ তায়ালা ঈমানদারদের সাথেই রয়েছেন।

২০. হে ঈমানদার লোকেরা, তোমরা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করো, কখনো তাঁর কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না, (বিশেষ করে) যখন তোমরা (সব কিছু শুনতেই পাচ্ছো।

২১. তোমরা তাদের মতো হয়ো না যারা (মুখে) বলে, হাঁ, আমরা (নবীর কথা) শোনলাম, কিন্তু তারা আসলে কিছুই শোনে না।

২২. আল্লাহ তায়ালার কাছে (তাঁর সৃষ্টির) নিকৃষ্টতম জীব হচ্ছে সেই বধির ও মূক (মানুষগুলো), যারা (সত্য দ্বীন সম্পর্কে) কিছু বুঝে না।

২৩. আল্লাহ তায়ালা যদি জানতেন, এদের ভেতর (সামান্য) কোনো ভালো (গুণও) অবশিষ্ট আছে, তাহলে তিনি তাদের অবশ্যই (হেদায়াতের কথা) শোনাতেন, (অবশ্য) তিনি তাদের শোনালেও তারা তাকে উপেক্ষাই করতো এবং অন্যদিকে ফিরে যেতো।

২৪. হে ঈমানদার লোকেরা, তোমরা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের ডাকে সাড়া দাও যখন তিনি তোমাদের এমন কিছুর দিকে ডাকেন যা তোমাদের সত্যিকার অর্থে জীবন দান করবে, (এ কথাটা) জেনে রেখো, আল্লাহ তায়ালা মানুষ ও তার হৃদয়ের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান গ্রহণ করেন, (আবার) তোমাদের সবাইকে তাঁর কাছেই জড়ো করা হবে।

২৫. তোমরা (আল্লাহদ্রোহিতার) সেই ফেতনা থেকে বেঁচে থাকো, যার ভয়াবহ শাস্তি_ যারা তোমাদের মধ্যে যালেম শুধু তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, আরো জেনে রাখো, আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত কঠোর শাস্তি প্রদানকারী।

২৬. স্মরণ করো, যখন তোমরা (সংখ্যায়) ছিলে (নিতা স্ত) কম, (এই) যমীনে তোমাদের মনে করা হতো তোমরা অত্যন্ত দুর্বল, তোমরা সর্বদাই এ ভয়ে (আতংকিত) থাকতে যে, কখন (অন্য) মানুষরা তোমাদের ওপর চড়াও হবে, অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তোমাদের (একটি ভূখন্ডে এনে) আশ্রয় দিলেন, তাঁর (একান্ত) সাহায্য দিয়ে তিনি তোমাদের শক্তিশালী করলেন এবং তিনি এ আশায় তোমাদের (বহুবিধ) উত্তম জিনিস দান করলেন যে, তোমরা (আল্লাহর এসব নেয়ামতের) শোকর আদায় করবে।

২৭. হে ঈমানদার বান্দারা, তোমরা আল্লাহ তায়ালা ও (তাঁর রসুলের সাথে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করো না এবং জেনে-শুনে নিজেদের আমানতেরও খেয়ানত করো না। ২৮. জেনে রেখো, তোমাদের মাল-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি হচ্ছে (আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে) পরীক্ষামাত্র, (যে এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে) তার জন্যে আল্লাহ তায়ালার কাছে মহা প্রতিদান রয়েছে।

২৯. হে ঈমানদার লোকেরা, তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় করে চলো, তাহলে তিনি তোমাদের জন্যে (অন্যদের সাথে) পার্থক্য নির্ণয়কারী (কিছু স্বতন্ত্র মর্যাদা) দান করবেন, তিনি তোমাদের গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেবেন, তিনি তোমাদের ক্ষমা করে দেবেন, আল্লাহ তায়ালার দান (আসলেই) অনেক বড়ো।

৩০. (স্মরণ করো,) যখন কাফেররা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিলো, তারা তোমাকে বন্দী করবে অথবা তোমাকে হত্যা করবে কিংবা তোমাকে (আপন ভূমি থেকে) নির্বাসিত করে দেবে, (এ সময় একদিকে) তারা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিলো, (আরেক দিকে) আল্লাহ তায়ালাও (তোমার পক্ষে) কৌশল চালিয়ে যাচ্ছিলেন, আর আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন সর্বোৎকৃষ্ট কুশলী।

৩১. যখন তাদের সামনে আমার কোনো আয়াত পড়ে শোনানো হতো, তখন তারা বলতো, (হাঁ) আমরা একথা (আগেও) শুনেছি, আমরা চাইলে এ ধরনের কথা তো নিজেরাও বলতে পারি, এগুলো তো আগের লোকদের উপকথা ছাড়া আর কিছু নয়।

৩২. তারা যখন বলেছিলো, হে আল্লাহ তায়ালা, (মোহাম্মদের আনীত) কেতাব যদি তোমার কাছ থেকে পাঠানো সত্য হয়, তাহলে (একে অমান্য করার কারণে) তুমি আমাদের ওপর আসমান থেকে পাথর বর্ষণ করো, কিংবা তুমি আমাদের ওপর কোনো কঠিন শাস্তি পাঠিয়ে দাও।

৩৩. আল্লাহ তায়ালা এমন নন যে, তিনি তাদের কোনো আযাব দেবেন, অথচ তুমি (সশরীরে) তাদের মধ্যে (বর্তমান) রয়েছো, আর আল্লাহ তায়ালা এমনও নন যে, কোনো (জাতির) মানুষদের তিনি শাস্তি দেবেন, অথচ তারা (কিছু লোক) তখনও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছে।

৩৪. কেনই বা আল্লাহ তায়ালা (যারা কাফের) তাদের আযাব দেবেন না— যখন তারা আল্লাহর বান্দাদের মাসজিদুল হারামে আসার পথ থেকে নিবৃত্ত করে, অথচ তারা তো (এ ঘরের) অভিভাবকও নয়, এ ঘরের (আসল) অভিভাবক হচ্ছে তারা, যারা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে, কিন্তু তাদের অধিকাংশ মানুষই (এ কথাটা) জানে না।

৩৫. (এ ঘরের পাশে) তাদের (জাহেলী যুগের) নামায তো কিছু শিস দেয়া ও তালি বাজানো ছাড়া আর কিছুই ছিলো না, (এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা তাদের বলবেন,) এখন তোমরা তোমাদের কুফরী কার্যকলাপের জন্যে শাস্তি ভোগ করো।

৩৬. যারা আল্লাহ তায়ালাকে অস্বীকার করেছে এবং যারা নিজেদের ধন-সম্পদ (এ খাতেই) ব্যয় করেছে যে, (এর দ্বারা) মানুষদের আল্লাহ তায়ালার পথ থেকে ফিরিয়ে রাখবে, (এদের জন্যে তুমি ভেবো না,) এরা (এ পথে) ধন- সম্পদ আরো ব্যয় করতে থাকবে, অতঃপর একদিন সে (ব্যয় করা)-টাই তাদের জন্যে মন স্তাপের কারণ হবে, অতঃপর (দুনিয়ার জীবনেও) তারা পরাভূত হবে, আর যারা কুফরী করেছে আখেরাতে তাদের সবাইকে জাহান্নামের পাশে একত্রিত করা হবে।

৩৭. (এভাবেই) আল্লাহ তায়ালা ভালোকে খারাপ থেকে পৃথক করে দেবেন এবং খারাপগুলোর একটাকে আরেকটার ওপর রেখে সবগুলো এক জায়গায় স্তূপীকৃত করবেন, অতঃপর (গোটা স্তূপ) জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন, (মূলত) এ লোকগুলো সেদিন (ভীষণ) ক্ষতিগ্রস্থহবে।

৩৮. (হে মোহাম্মদ,) যারা আল্লাহ তায়ালাকে অস্বীকার করেছে তাদের তুমি বলো, তারা যদি এ থেকে (এখনো) ফিরে আসে, তাহলে তাদের অতীতের সব কিছুই ক্ষমা করে দেয়া হবে, তবে যদি তারা (তাদের আগের কার্যকলাপের দিকে) ফিরে যায়, তাহলে তাদের (সামনে) আগের (জাতিসমূহের ভয়াবহ পরিণামের দৃষ্টান্ত তো (মজুদ) রয়েছেই।

৩৯. (হে ঈমানদার লোকেরা,) তোমরা কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকো, যতোণ না (আল্লাহর যমীনে কুফরীর) ফেতনা বাকী থাকবে এবং দ্বীন সম্পূর্ণভাবে আল্লাহ তায়ালার জন্যেই (নির্দিষ্ট) হয়ে যাবে, (হাঁ,) তারা যদি (কুফুর থেকে) নিবৃত্ত হয়, তাহলে আল্লাহ তায়ালাই হবেন তাদের কার্যকলাপের পর্যবেণকারী।

৪০. (এসব কিছু সত্ত্বেও) যদি তারা সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তোমরা জেনে রাখো, আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন তোমাদের অভিভাবক, কতো উত্তম অভিভাবক আল্লাহ তায়ালা, কতো উত্তম সাহায্যকারী (তিনি)!

৪১. (হে মোমেনরা,) তোমরা জেনে রেখো, যুদ্ধে যে সম্পদ তোমরা অর্জন করেছো, তার এক পঞ্চমাংশ আল্লাহ তায়ালার জন্যে, রসুলের জন্যে, (তাঁর) স্বজনদের জন্যে, এতীমদের জন্যে, মেসকীনদের জন্যে ও পথচারী মোসাফেরদের জন্যে, তোমরা যদি আল্লাহতে বিশ্বাস করো, (আরো) বিশ্বাস করো সে (বিজয়ঘটিত) বিষয়টির প্রতি, যা আমি হক ও বাতিলের চূড়ান্ত মীমাংসার দিন এবং একে অপরের মুখোমুখি হবার দিন আমার বান্দার ওপর নাযিল করেছিলাম; আল্লাহ তায়ালা হচ্ছেন সর্ববিষয়ের ওপর একক ক্ষমতাবান |

৪২. (যুদ্ধক্ষেত্রে) তোমরা ছিলে উপত্যকার নিকট প্রান্তের, তারা ছিলো দুর প্রান্তের, আর (কোরায়শ) কাফেলা ছিলো তোমাদের তুলনায় নিম্নভূমিতে; যদি তোমরা আগেই (এ ব্যাপারে) তাদের সাথে কোনো (অগ্রিম চুক্তির) সন্ধি করতে চাইতে, তাহলে এ সন্ধি বাস্তবায়নে তোমরা অবশ্যই মতবিরোধ করতে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাই ঘটাতে চেয়েছিলেন যা ঘটানো আল্লাহ তায়ালার মঞ্জুর ছিলো (এ জন্যেই তিনি উভয় দলকে রণক্ষেত্রে সামনাসামনি করালেন, যাতে করে), যে দলটি ধ্বংস হবে সে যেন সত্য (মিথ্যা) স্পষ্ট হওয়ার পরই ধ্বংস হয়, আবার যে দলটি বেঁচে থাকবে সেও যেন সত্যাসত্য প্রমাণের ভিত্তিতেই বেঁচে থাকে; নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ ।

৪৩. (আরো স্মরণ করো,) আল্লাহ তায়ালা তোমাকে যখন স্বপ্নে তাদের সংখ্যা কম দেখিয়েছিলেন, (তখন) যদি তিনি তোমাকে তাদের সংখ্যা বেশী দেখাতেন তাহলে অবশ্যই তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলতে এবং এ বিষয়ে তোমরা একে অপরের সাথে বিতর্ক শুরু করে দিতে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা (এটা না করে তোমাদের) নিরাপদ করে দিয়েছেন; কেননা তিনি মানুষের অন্তরে যা কিছু (লুকিয়ে থাকে সে সম্পর্কে সম্যক ওয়াকেফহাল রয়েছেন |

৪৪. (সে সময়ের কথাও স্মরণ করো,) যখন তোমরা (যুদ্ধের ময়দানে) তাদের সামনাসামনি হলে, তখন তোমাদের চোখে তাদের (সংখ্যা) আল্লাহ তায়ালা (নিতান্ত) কম (করে) দেখালেন এবং তাদের চোখেও তিনি তোমাদের (সংখ্যা) দেখালেন কম (এর উদ্দেশ্য ছিলো), যেন আল্লাহ তায়ালা তাই ঘটিয়ে দেখান যা কিছু তিনি (এ ঘটনার মাধ্যমে) ঘটাতে চান; (কেননা) আল্লাহ তায়ালার দিকেই সব কিছুকে ফিরে যেতে হবে ।

৪৫. হে ঈমানদার লোকেরা, কোনো বাহিনীর সাথে যখন তোমরা সামনাসামনি হও, তখন ময়দানে অবিচল থাকবে এবং (বিজয়ের আসল উৎসুক) আল্লাহ তায়ালাকে বেশী বেশী করে স্মরণ করতে থাকবে, আশা করা যায় তোমরা সাফল্য লাভ করতে পারবে |

৪৬. তোমরা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করো, নিজেদের মধ্যে পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ করো না, অন্যথায় তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে এবং তোমাদের প্রতিপত্তি খতম হয়ে যাবে, তোমরা ধৈর্য ধারণ করো; অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।

৪৭. তোমরা (কখনো) তাদের মতো হয়ো না, যারা অহংকার ও লোকদের (নিজেদের শান-শওকত) দেখানোর জন্যে নিজেদের ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং সাধারণ মানুষদের যারা আল্লাহ তায়ালার পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে; (মূলত) তাদের সমুদয় কার্যকলাপই আল্লাহ তায়ালা পরিবেষ্টন করে আছেন ।

৪৮. যখন শয়তান তাদের কাজগুলোকে তাদের সামনে খুব চাকচিক্যময় করে পেশ করেছিলো এবং সে তাদের বলেছিলো, আজ মানুষের মধ্যে কেউই তোমাদের ওপর বিজয়ী হতে পারবে না এবং আমি তো তোমাদের পাশেই আছি, অতঃপর যখন উভয় দল সম্মুখসমরে ঝাঁপিয়ে পড়লো, তখন সে কেটে পড়লো এবং বললো, তোমাদের সাথে আমার কোনোই সম্পর্ক নেই, আমি এমন কিছু দেখতে পাচ্ছি যা তোমরা দেখতে পাও না, আমি অবশ্যই আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করি এবং (আমি জানি) আল্লাহ তায়ালা হচ্ছেন কঠোর শাস্তিদাতা।

৪৯. মোনাফেক ও তাদের দলবল যাদের দিলে (গোমরাহীর) ব্যাধি রয়েছে, যখন তারা বললো, এ লোকদের (মূলত) তাদের (নতুন) দ্বীন (মারাত্মকভাবে) প্রতারিত করে রেখেছে; (সত্য কথা হচ্ছে) যে কোনো ব্যক্তিই (বিপদে-আপদে) আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা করে ( সে বুঝতে পারবে), আল্লাহ তায়ালা প্রবল পরাক্রান্ত ও প্রজ্ঞাময় |

৫০. তুমি যদি (সত্যিই) সেই (করুণ) অবস্থা দেখতে পেতে, যখন আল্লাহর ফেরেশতারা কাফেরদের রূহ বের করে নিয়ে যাচ্ছিলো, ফেরেশতারা (তখন) তাদের মুখমন্ডল ও পৃষ্ঠদেশে (ক্রমাগত) আঘাত করে যাচ্ছিলো (এবং তারা বলছিলো), তোমরা আগুনের আযাব উপভোগ করো |

৫১. (মূলত) এটা হচ্ছে তোমাদের নিজেদেরই উভয় হাতের কামাই, যা তোমরা (আগেই এখানে) পাঠিয়েছিলো, আল্লাহ তায়ালা কখনো তাঁর বান্দার ওপর যুলুম করেন না,

৫২. (এদের পরিণতি হবে,) ফেরাউনের আপনজন ও তাদের পূর্ববর্তী কাফেরদের মতোই; তারা সবাই আল্লাহ তায়ালার আয়াতকে অস্বীকার করেছে, ফলে তাদের গুনাহের দরুন আল্লাহ তায়ালা তাদের পাকড়াও করলেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা শক্তিশালী ও কঠোর শাস্তিদানকারী ।

৫৩. এটা এ কারণে যে, আল্লাহ তায়ালা যখন কোনো জাতিকে কোনো নেয়ামত দান করেন, তিনি ততোক্ষণ পর্যন্ত তাঁর সে নেয়ামত (তাদের জন্যে) বদলে দেন না, যতোক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা (সব কিছু শোনেন, (সব কিছু জানেন,

৫৪. (এরাও হচ্ছে) ফেরাউন, তার স্বজন ও তাদের আগের লোকদের মতো; আল্লাহর আয়াতকে তারা (সরাসরি) মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে, ফলে আমি তাদের (কুফরীর) অপরাধের জন্যে তাদের ধ্বংস করে দিয়েছি এবং ফেরাউনের স্বজনদের আমি ডুবিয়ে দিয়েছি, (মূলত) তারা সবাই ছিলো যালেম |

৫৫. নিশ্চয়ই (আল্লাহর এ) যমীনে (বিচরণশীল) জীবের মধ্যে আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম হচ্ছে তারা, যারা (স্বয়ং এ যমীনের স্রষ্টাকেই) অস্বীকার করে এবং তারা (তাঁর ওপর) ঈমান আনে না।

৫৬. (তারাও এ নিকৃষ্ট লোকদের অন্যতম,) যাদের সাথে তুমি (বাকায়দা) সন্ধিচুক্তি স্বাক্ষর করেছো, অতঃপর তারা প্রতিবার সুযোগ পেয়েই সে চুক্তি ভংগ করেছে এবং (এ ব্যাপারে) তারা (কাউকেই) পরোয়া করেনি ।

৫৭. অতএব, এ লোকদের যদি কখনো তুমি ধরতে পারো, তাহলে তাদের মূল বাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন করে এমনভাবে শাস্তি দেবে, যাতে তাদের পরবর্তী বাহিনী (এ থেকে কিছু) শিক্ষা গ্রহণ করে।

৫৮. যদি কখনো কোনো জাতির কাছ থেকে তোমার এ আশংকা হয় যে, তারা (চুক্তি ভংগ করে) বিশ্বাসঘাতকতা করবে, তাহলে তুমিও (তাদের সাথে সম্পাদিত) চুক্তি একইভাবে তাদের (মুখের) ওপর ছুঁড়ে দাও (তবে তোমরা নিজেরা তা আগে লংঘন করো না ); নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা খেয়ানতকারীদের পছন্দ করেন না।

৫৯. আর কাফেররা যেন কখনোই এমন ধারণা করতে না পারে যে, ওরা (তোমাদের পেছনে ফেলে নিজেরা) এগিয়ে গেছে; (আসলে) তারা (তোমাদের পরাভূত করার কোনো) ক্ষমতাই রাখে না ।

৬০. তাদের (সাথে যুদ্ধের) জন্যে তো তোমরা যথাসাধ্য সাজ-সরঞ্জাম, শক্তি ও ঘোড়া প্রস্তুত রাখবে এবং এ দিয়ে তোমরা আল্লাহর দুশমন ও তোমাদের দুশমনদের ভীত-সন্ত্রস্ত করে দেবে, (এ ছাড়াও কিছু লোক আছে) যাদের পরিচয় তোমরা জানো না, শুধু আল্লাহ তায়ালাই তাদের চেনেন; আল্লাহ তায়ালার পথে তোমরা যা কিছুই ব্যয় করবে, তার পুরোপুরি প্রতিদান তোমাদের (পরকালে) আদায় করে দেয়া হবে এবং তোমাদের ওপর বিন্দুমাত্রও যুলুম করা হবে না ।

৬১. (হে মোহাম্মদ,) তারা যদি সন্ধির প্রতি আগ্রহ দেখায়, তাহলে তুমিও সন্ধির দিকে ঝুঁকে যাবে এবং (সর্বদা) আল্লাহর ওপরই ভরসা করবে; অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা (সব কিছু শোনেন, (সব কিছু দেখেন |

৬২. আর যদি কখনো তারা (সন্ধির আড়ালে ) তোমাকে ধোকা দিতে চায়, তাহলে (তোমার দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হওয়ার কোনো কারণ নেই, কেননা) তোমার (রক্ষার) জন্যে তো আল্লাহ তায়ালাই যথেষ্ট; (অতীতেও) তিনি তাঁর (সরাসরি) সাহায্য ও এক দল মোমেন দ্বারা তোমাকে শক্তি যুগিয়েছেন,

৬৩. আল্লাহ তায়ালা তাদের অন্তরসমূহের মাঝে পারস্পরিক (ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করে দিয়েছেন; অথচ তুমি যদি দুনিয়ার যাবতীয় সম্পদও (এর পেছনে) ব্যয় করতে, তবু তুমি এ মানুষদের দিলগুলোর মাঝে পারস্পরিক ভালোবাসার বন্ধন স্থাপন করতে পারতে না; কিন্তু আল্লাহ তায়ালা এদের মাঝে প্রীতি স্থাপন করে দিয়েছেন; অবশ্যই তিনি পরাক্রমশালী ও বিজ্ঞ কুশলী |

৬৪. হে নবী, তোমার জন্যে এবং তোমার অনুবর্তনকারী মোমেনদের জন্যে তো আল্লাহ তায়ালাই যথেষ্ট |

৬৫. হে নবী, তুমি মোমেনদের যুদ্ধের জন্যে উদ্বুদ্ধ করো (মনে রেখো); তোমাদের মধ্যে বিশ জন লোকও যদি ধৈর্যশীল হতে পারে তাহলে তারা দুশ' লোকের ওপর বিজয়ী হবে, আবার তোমাদের মাঝে (এমন লোকের সংখ্যা) যদি একশ হয় তাহলে তারা এক হাজার লোকের ওপর জয় লাভ করবে, এর কারণ হচ্ছে, তারা এমন জাতি যারা (আল্লাহর শক্তি সম্পর্কে) কিছুই বোঝে না |

৬৬. (এ নিশ্চয়তা দ্বারা) এখন আল্লাহ তায়ালা তোমাদের ওপর থেকে (উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার) বোঝা হালকা করে দিয়েছেন, (যেহেতু) তিনি (একথা) জানেন, তোমাদের মধ্যে কিছু দুর্বলতা রয়েছে; (অতঃপর) তোমাদের মধ্যে যদি একশ' ধৈর্যশীল মানুষ থাকে তাহলে তারা দুশ'র ওপর বিজয়ী হবে, আবার যদি থাকে তোমাদের এক হাজার ধৈর্যশীল ব্যক্তি, তাহলে তারা আল্লাহ তায়ালার হুকুমে বিজয়ী হবে দু'হাজার লোকের ওপর; (জেনে রেখো,) আল্লাহ তায়ালা ধৈর্যশীলদের সাথেই রয়েছেন ।

৬৭. কোনো নবীর পক্ষেই এটা শোভা পায় না যে, সে তার কাছে বন্দীদের আটকে রাখবে, যতোক্ষণ পর্যন্ত সে যমীনে রক্তপাত ঘটাবে এবং (আল্লাহর) শত্রুদের নিপাত না করে দেবে; আসলে তোমরা তো দুনিয়ার (সামান্য) স্বার্থটুকুই চাও, আর আল্লাহ তায়ালা চান (তোমাদের) আখেরাতের কল্যাণ (দান করতে); আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় |

৬৮. যদি (এ ব্যাপারে) আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে পূর্বের কোনো (ফরমান) লেখা না থাকতো, তাহলে (বন্দীদের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে তোমরা) যা কিছু নিয়েছো, তার জন্যে একটা বড়ো ধরনের আযাব তোমাদের পেয়ে বসতো |

৬৯. অতএব যা কিছু তোমরা গনীমত হিসেবে লাভ করেছো, (নিঃসংকোচে) তোমরা তা খাও, (কেননা) তা সম্পূর্ণ হালাল ও পবিত্র, তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো; আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই ক্ষমাশীল ও দয়াল |

৭০. হে নবী, তোমার হাতে যেসব বন্দী রয়েছে, তাদের তুমি বলো, আল্লাহ তায়ালা যদি তোমাদের দিলে ভালো কিছু (গ্রহণের যোগ্যতা আছে বলে) জানতে পান, তাহলে তিনি তোমাদের (ঈমানের) এমন এক কল্যাণ দান করবেন যা তোমাদের কাছ থেকে (মুক্তিপণ হিসেবে) গৃহীত সম্পদের চাইতে অনেক ভালো এবং তিনি তোমাদের (গুনাহসমূহও মাফ করে দেবেন; আল্লাহ তায়ালা ক্ষমাশীল ও দয়াবান |

৭১. আর তারা যদি তোমার সাথে বিশ্বাস ভংগ করতে চায় (তাহলে তুমি ভেবো না), এরা তো এর আগে আল্লাহ তায়ালার সাথেও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং (এ কারণেই) তাদের মধ্য থেকে তিনি তোমাদের বিজয় (ক্ষমতা) দান করেছেন; আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন জ্ঞানবান ও কুশলী |

৭২. নিঃসন্দেহে যারা ঈমান এনেছে (এবং এই ঈমানের জন্যে) হিজরত করেছে, নিজেদের জান-মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জেহাদ করেছে এবং যারা (মোহাজেরদের) আশ্রয় দিয়েছে ও (তাদের) সাহায্য করেছে, তারা সবাই পরস্পরের বন্ধু; (অপরদিকে) যারা ঈমান এনেছে অথচ এখনো হিজরত করেনি, যতোক্ষণ পর্যন্ত তারা হিজরত না করবে ততোক্ষণ পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব তোমাদের ওপর নেই, (তবে কখনো) যদি তারা (একান্ত) দ্বীনের খাতিরে তোমাদের কাছে কোনো সাহায্য চায়, তাহলে তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, (তবে তা) যেন এমন কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে না হয় যাদের সাথে তোমাদের (কোনো রকম) চুক্তি রয়েছে; (বস্তুত) তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তায়ালা তা সব কিছুই দেখেন |

৭৩. যারা কুফরী করেছে তারা একে অপরের বন্ধু, তোমরা যদি (একে অপরকে সাহায্য করার) সে কাজটি না করো, তাহলে (আল্লাহর এ) যমীনে ফেতনা-ফাসাদ ও বড়ো ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি হবে ।

৭৪. যারা ঈমান এনেছে, (এ ঈমানের জন্যে) হিজরত করেছে, নিজেদের জান-মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জেহাদ করেছে এবং যারা (এ হিজরতকারীদের) থাকার জায়গা দিয়েছে এবং (তাদের) সাহায্য করেছে, (মূলত) এরা সবাই হচ্ছে সত্যিকারের মোমেন; এদের জন্যে (আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে) ক্ষমা ও উত্তম জীবিকার ব্যবস্থা রয়েছে।

৭৫. আর যারা পরে ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং তোমাদের সাথে জেহাদ করেছে, তারাও তোমাদের অন্তর্ভুক্ত; যারা আত্মীয়তার বন্ধনে একে অপরের সাথে আবদ্ধ, আল্লাহর কেতাব অনুযায়ী তারাও একে অন্যের (উত্তরাধিকারের বেশী) হকদার, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সব ব্যাপার জানেন |



💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url