কুরআনের গল্পঃ হযরত নূহ (আঃ)-এর উপর তাঁর কওমের অত্যাচার নির্যাতনের কাহিনী


হযরত নূহ (আঃ)-এর কাহিনী


‘হযরত নূহ (আঃ)-এর কাহিনী’ পর্বে আমরা নূহ (আঃ) এর মহা প্লাবনের পূর্বের কাহিনী এবং নূহ (আঃ) এর উপর সীমাহীন অত্যাচারের কাহিনী সমূহ নিয়ে কথা আলোচনা করবো।

নূহ (আঃ) এবং তাঁর নাম


হযরত নূহ (আঃ)-এর প্রকৃত নাম 'শোকর'। তিনি আল্লাহ তা'য়ালার নির্দেশক্রমে কওমকে দ্বীনের দাওয়াত দিতে গিয়ে পদে পদে নির্যাতীত হন। তাঁর উপর ধর্মদ্রোহীদের অত্যাচারের ঘটনা এতই করুণ যা কোন ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এ জন্য জীবনের প্রথম দিকে অধিকাংশ সময় তিনি কেঁদে কাটাতেন। এ জন্য তাকে নূহ নামে সম্বোধন করা হত। 'নূহ' নামের শব্দের অর্থ কান্নাকাটি।

নূহ (আঃ)-এর দাওয়াত সম্পর্কে কুরআনের আয়াত


আল্লাহ তা'য়ালাও তাঁকে নূহ নামে সম্বোধন করে বিভিন্ন নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন-পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা'য়ালা ঘোষণা করে দেন-

 ৭১:১ اِنَّاۤ اَرۡسَلۡنَا نُوۡحًا اِلٰی قَوۡمِهٖۤ اَنۡ اَنۡذِرۡ قَوۡمَکَ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَهُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ   
৭১:২ قَالَ یٰقَوۡمِ اِنِّیۡ لَکُمۡ نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ۙ  
৭১:৩ اَنِ اعۡبُدُوا اللّٰهَ وَ اتَّقُوۡهُ وَ اَطِیۡعُوۡنِ ۙ  
৭১:৪ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ مِّنۡ ذُنُوۡبِکُمۡ وَ یُؤَخِّرۡکُمۡ اِلٰۤی اَجَلٍ مُّسَمًّی ؕ اِنَّ اَجَلَ اللّٰهِ اِذَا جَآءَ لَا یُؤَخَّرُ ۘ لَوۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ   
৭১:৫ قَالَ رَبِّ اِنِّیۡ دَعَوۡتُ قَوۡمِیۡ لَیۡلًا وَّ نَهَارًا ۙ  
৭১:৬ فَلَمۡ یَزِدۡهُمۡ دُعَآءِیۡۤ اِلَّا فِرَارًا  
৭১:৭ وَ اِنِّیۡ کُلَّمَا دَعَوۡتُهُمۡ لِتَغۡفِرَ لَهُمۡ جَعَلُوۡۤا اَصَابِعَهُمۡ فِیۡۤ اٰذَانِهِمۡ وَ اسۡتَغۡشَوۡا ثِیَابَهُمۡ وَ اَصَرُّوۡا وَ اسۡتَکۡبَرُوا اسۡتِکۡبَارًا  
৭১:৮ ثُمَّ اِنِّیۡ دَعَوۡتُهُمۡ جِهَارًا ۙ  
৭১:৯ ثُمَّ اِنِّیۡۤ اَعۡلَنۡتُ لَهُمۡ وَ اَسۡرَرۡتُ لَهُمۡ اِسۡرَارًا ۙ  
৭১:১০ فَقُلۡتُ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ؕ اِنَّهٗ کَانَ غَفَّارًا 

অর্থঃ “আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের প্রতি এ নির্দেশসহ পাঠিয়েছিলাম যে, তুমি তোমার জাতিকে সতর্ক কর তাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক আযাব আসার পূর্বে। (নূহ) বললেন, হে আমার জাতি! আমি তোমাদেরকে স্পষ্টরূপে সতর্ক করছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁকে ভয় কর এবং আমার কথা মান্য কর। তা হলে তিনি তোমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করবেন এবং তোমাদেরকে অবকাশ প্রদান করবেন এক নির্ধারিত প্রতিশ্রুতিকাল পর্যন্ত। নিঃসন্দেহ, আল্লাহ যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যখন তা এসে পৌঁছবে তখন আর অবকাশ দেয়া হবে না, যদি তোমাদের কিছু বোধশক্তি থাকে। তিনি (নূহ) বললেন, হে আমার রব! আমি আমার সম্প্রদায়কে আহ্বান করলাম, দিন-রাত আহ্বান করেছি কিন্তু আমার আহব্বান তাদের পলায়ন প্রবনতাই বৃদ্ধি করেছে। আর আমি যখনই তাদেরকে আহ্বান করেছি যেন আপনি তাদেরকে ক্ষমা করেন, তখনই তারা নিজেদের কর্ণসমূহে আঙ্গুল দিতে লাগল এবং নিজেদের উপর কাপড় মুড়ি দিতে লাগল এবং জিদ করল এবং অত্যন্ত উদ্ধত্য প্রকাশ করল। অনন্তর তাদেরকে ডাকলাম প্রকাশ্যে আবার আমি তাদেরকে উচ্চ স্বরে ডাকলাম এবং চুপি চুপি উপদেশ দিলাম। মোটকথা, আমি তাদেরকে বললাম, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর । নিঃসন্দেহে তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। (সূরা নূহ : ১-১০) 

আল্লাহ পাক বলেন-

৭১:২৩ وَ قَالُوۡا لَا تَذَرُنَّ اٰلِهَتَکُمۡ وَ لَا تَذَرُنَّ وَدًّا وَّ لَا سُوَاعًا ۬ۙ وَّ لَا یَغُوۡثَ وَ یَعُوۡقَ وَ نَسۡرًا 

অর্থঃ আর তারা (সরদাররা) তাদের লোকদের বলেছিল কখনও তোমরা তোমাদের দেব-দেবীদেরকে ত্যাগ করো না। আর ওয়াদ, সুওয়া, ইয়াগুস, ইয়াউক এবং নাসরকে ছেড়ো না। -(সূরা নূহ : ২৩)

পরিশেষে তারা বিরক্ত হয়ে বলতে লাগল, হে নূহ! আর আমাদের সঙ্গে ঝগড়া কলহ না করে আমাদের এ অমান্য করার দরুন তোমার খোদাকে বলে যে আযাব আনয়ন করতে পার, নিয়ে আস। তাদের এ উক্তিটি আল্লাহ পাক নিম্নোক্ত আয়াতে বর্ণনা করেন-

১১:৩২ قَالُوۡا یٰنُوۡحُ قَدۡ جٰدَلۡتَنَا فَاَکۡثَرۡتَ جِدَالَنَا فَاۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ

অর্থঃ “তারা বলতে লাগল, হে নূহ! তুমি আমাদের সাথে বিতর্ক করছ এবং অনেক বেশি বিতর্ক করে ফেলেছ সুতরাং এখন যে সম্বন্ধে তুমি আমাদেরকে ভয় দেখিয়েছ তা নিয়ে আস যদি তুমি সত্যবাদী হও।” (সূরা হূদ: ৩২)

হযরত নূহ (আঃ) তাদের কথা শুনে জবাব দিলেন, আল্লাহর আযাব আমার আয়ত্বে নয়। তা তো তাঁর আয়ত্বেই রয়েছে, যিনি আমাকে রাসূলরূপে পাঠিয়েছেন । তিনি চাওয়া মাত্র সব কিছুই হয়ে যাবে ।

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-

১১:৩৩ قَالَ اِنَّمَا یَاۡتِیۡکُمۡ بِهِ اللّٰهُ اِنۡ شَآءَ وَ مَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِیۡنَ

অর্থঃ হযরত নূহ (আঃ) বললেন, আল্লাহ চাইলে সে আযাব অবশ্যই আনবেন এবং তোমরা ওটাকে ব্যর্থ করতে পারবে না। (সূরা হূদ: ৩৩)

নূহ (আঃ)-এর আয়ু কত বছর ছিল


হযরত নূহ (আঃ) যখন স্বীয় সম্প্রদায়ের লোকদের হেদায়েতের ব্যাপারে সম্পূর্ণরূপে নিরাশ হয়ে পড়লেন এবং তাদের হঠকারিতা তাঁর নিকট স্পষ্ট হয়ে গেল। কুরআনুল কারীমের স্পষ্ট বর্ণনানুয়ায়ী তাঁর সাড়ে নয় শ' বছর অক্লান্ত ও অবিরাম হেদায়াত এবং তাবলীগের প্রতিক্রিয়া তাদের উপর দেখতে না পেয়ে তিনি নিতান্ত পেরেশান হয়ে পড়লেন। এ থেকে বুঝা যায় যে, হযরত নূহ (আঃ) এর আয়ু সাড়ে নয়শ বছর বা তার থেকে বেশি ছিল।

নূহ (আঃ)-এর উপর অত্যাচারের কাহিনী


হযরত নূহ (আঃ) জাতির মধ্যে ঘুরে ঘুরে দ্বীনের দাওয়াত পেশ করতেন। পাহাড়ের উপর উঠে চিৎকার দিয়ে বলতেন, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ উপাস্য নেই। হে কওম! তোমরা আল্লাহর দাওয়াত গ্রহণ করে খাঁটি ঈমানদারের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। মূর্তি পূজার নায় গর্হিত কাজ থেকে তোমরা ফিরে এস। যদি তোমরা এ অন্যায় পথ থেকে ফিরে না আস তাহলে এখানে ও পরকালে ভীষণ শাস্তির সম্মুখীন হবে। সে শাস্তি থেকে তোমাদেরকে কেউ রেহাই দিতে পারবে না ।

হযরত নূহ (আঃ) দ্বীনের দাওয়াত পেশ করতে গিয়ে এ সব কথা এতো জোরে বলতেন যার শব্দ এলাকার সমস্ত ঘরে পৌঁছে যেত। এতে এলাকাবাসী খুব বিরক্ত বোধ করত এবং হযরত নূহ (আঃ)-এর প্রতি ভীষণ ক্ষিপ্ত হত। কেউ কেউ নূহ (আঃ)-এর আওয়াজ শুনে কানে মুখে কাপড় দিয়ে অবজ্ঞা প্রদর্শন করত। কেউ থুথু ফেলে বিরক্তি প্রকাশ করত। আবার কেউ অশ্রাব্য ভাষায় গালি গালাজ করত। কোন কোন এলাকায় গিয়ে তিনি ধর্মদ্রোহীদের হাতে ভীষণ মার খেয়েছেন। কোথাও গিয়ে আটকে পড়েছেন। কোথাও গিয়ে তিনি এত নির্যাতন ভোগ করেছেন যে কোন মানুষের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নয় ।

একদিন হযরত নূহ (আঃ) গোত্রের নিকট দ্বীনের দাওয়াত দিতে গিয়ে ভীষণ আক্রমনের সম্মুখীন হন। তাঁকে বেদম প্রহার করা হয়। তাঁর শরীর রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায়। সমস্ত কাপড়-চোপড় রক্তে ভিজে লাল হয়ে যায়। তারপরও পাষণ্ডরা হযরত নূহ (আঃ)-এর গলায় রশি লাগিয়ে মাটি দিয়ে টানতে থাকে । এমতাবস্থায় তিনি জ্ঞান হারা হয়ে পড়েন। তখন পশুর দল তাঁকে মাঠে ফেলে রেখে চলে যায়। এ সময় হযরত নূহ (আঃ)-এর একজন ভক্ত সে পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি নবীর অবস্থা এরূপ দেখে চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠলেন এবং আল্লাহর দরবারে হাত তুলে বললেন, হে খোদা! তুমি আছ তাঁর প্রমাণ কি? নবীর শরীরের রক্ত মাটিতে প্রবাহিত হচ্ছে আর তুমি নিরবে দেখছ! এ অবস্থা আমাদের বরদাস্ত হয় না। তুমি মহান দয়াময় হয়ে এ দৃশ্য কিভাবে দেখছ?

নবীর যখন জ্ঞান ফিরল তখন দেখেন তাঁর একজন অনুসারী তাঁর পরিচর্যা করছেন এবং আঝোরে কাঁদছেন। তিনি তখন তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, কেঁদ না আল্লাহ তা'য়ালার নিকট মর্যাদাবান হবার এটাই রাস্তা। তিনি এ আঘাতের বিনিময়ে অবশ্যই আমাকে মর্যাদাবান করবেন।

নূহের কওমের জন্য বদ দোয়ার অনুমতি

এ সময় হযরত জিব্রাঈল (আঃ) সেখানে পৌছে বললেন, হে নবী! আল্লাহ তা'য়ালা আপনাকে ছালাম দিয়েছেন এবং আপনি কওমের ধ্বংসের জন্য যে কোন গজব আজাবের দোয়া করবেন তা সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ কবুল করে নিবেন বলে খবর দিয়েছেন ।

আল্লাহর তরফ থেকে নূহকে গাছের ডাল প্রদান


হযরত নূহ বললেন, কওম ধ্বংস হলে আমি কাকে হেদায়েত করব। অতএব আল্লাহ তা'য়ালা যেন আমাকে আরো কিছু দিনের সময় দান করেন। হযরত জিব্রাঈল (আঃ) তাঁর সারা শরীরে হাত বুলিয়ে দিলেন এবং কিছুক্ষণ সেবা করলেন। এতে তিনি অল্প সময়ের মধ্যে কিছুটা সুস্থ হলেন। জিব্রাঈল (আঃ) তখন নবীর হাতে একটি গাছের ছোট একটি কাঁচা ডাল দিয়ে বললেন, এটা আপনি এক জায়গায় পুঁতে রাখুন। এটা অল্প দিনে এক বিরাট গাছে পরিণত হবে। তারপরে কি করতে হবে আল্লাহ তা'য়ালা অবশ্যই আপনাকে জানিয়ে দিবেন। নবী তখন গাছের ডালটি জিব্রাঈল (আঃ)-এর নিকট থেকে গ্রহণ করলেন এবং এক পাহাড়ের পাদদেশে রোপন করলেন ।

পুনরায় নূহ (আঃ) এর দ্বীনের দাওয়াত


এরপরে নবী কয়েক দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠলেন। তিনি পূর্ণ উদ্যম নিয়ে পুনঃ দ্বীন প্রচারের কাজে আত্মনিয়োগ করলেন। কয়েক বছর ধরে বহু দেশ তিনি সফর করলেন। তারপরে যেখানে তিনি কঠিনভাবে নির্যাতীত হয়েছিলেন, সে এলাকায় গিয়ে পৌঁছেন। এবার সেখানে তিনি বিরোধীদের কোন তৎপরতা দেখলেন না। তাই তিনি ঘরে ঘরে কাজ আরম্ভ করলেন। এ সময় অনেক সস্তানের পিতা-মাতা তাঁর কাছে এসে বলল, হে মহাময়! আপনি সত্যিই আল্লাহর নবী তাতে সন্দেহ নেই। কারণ আমাদের এলাকার যে সমস্ত ছেলেরা আপনার সঙ্গে বে-আদবী করেছিল তার অধিকাংশের হাত, পা বিকলাঙ্গ হয়েছে। কারো কথা 'বন্ধ হয়েছে, কারো চক্ষু অন্ধ হয়েছে। আবার কেউ পাগল হয়ে গেছে। অতএব আপনি ওদের মঙ্গলের জন্য আপনার প্রভুর নিকট দোয়া করুন। হযরত নূহ (আঃ) অবিভাবকদের বললেন, হ্যাঁ! আমি ওদের আরোগ্যের জন্য দোয়া করব, তবে আপনারা আল্লাহ তা'য়ালার উপর ঈমান আনুন এবং তার একত্ববাদে বিশ্বাস স্থাপন করে আমাকে তাঁর নবী হিসেবে মেনে নিন। তখন তারা বলল, পূর্ব-পুরুষদের ধর্ম পরিত্যাগ করে নতুন ধর্ম গ্রহণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এটা আমাদের গোত্রের লোকেরা আদৌ সহ্য করবে না। যার পরিণামে আমাদেরকে ভীষণ সংকটের সম্মুখীন হতে হবে এবং গোত্র থেকে বহিষ্কৃত হতে হবে ।

নবী নূহ (আঃ) সেখান থেকে বের হয়ে সম্মুখ দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন এমন সময় একদল ছেলেরা চিৎকার দিয়ে বলল যে, পাগলটা মরেনি, আবার এসেছে, এই বলে নবীর প্রতি পাথর নিক্ষেপ আরম্ভ করল। নবী এবারেও রক্তাক্ত হলেন। 


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url