আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আল আম্বিয়া’র বাংলা অনুবাদ | সূরা আল আম্বিয়া | Surah Al-Anbiyaa | الأنبياء‎‎



সূরা আল আম্বিয়া’র বাংলা অনুবাদ

সূরা আল আম্বিয়া, মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ১১২, রুকু ৭ 

সূরা আল আম্বিয়া



রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে

১. মানুষের জন্যে তাদের হিসাব নিকাশের মুহুর্তটি একান্ত কাছে এসে গেছে, অথচ তারা এখনো উদাসীনতার মাঝে (নিমজ্জিত হয়ে সত্য) বিমুখ হয়ে আছে,

২. যখন তাদের কাছে তাদের মালিকের কোনো নতুন উপদেশ আসে তখন (মনে হয়) তারা তা শোনছে, কিন্তু তারা (তখনও) নানারকম খেলা ধুলায় নিমগ্ন থাকে,

৩. ওদের মন থাকে সম্পূর্ণ অমনোযোগী; যারা যালেম তারা গোপনে বলাবলি করে, এ তো তোমাদেরই মতো একজন মানুষ ছাড়া আর কিছুই নয়, তোমরা কি (তারপরও তার) যাদুর ফাঁদে ফেঁসে যাবে? অথচ তোমরা তো (সব কিছুই) দেখতে পাচ্ছো!

৪. সে বললো, আমার মালিক (প্রতিটি) কথা জানেন, তা আসমানে থাকুক কিংবা যমীনে, তিনি (সব) শোনেন, (সব) জানেন।

৫. তারা তো বরং (কোরআনের ব্যাপারে) বলে, এগুলো হচ্ছে অলীক স্বপ্নমাত্র, সে নিজেই এসব উদ্ভাবন করেছে, কিংবা সে হচ্ছে একজন কবি, সে (নবী হয়ে থাকলে আমাদের কাছে) এমন সব নিদর্শন নিয়ে আসুক, যা দিয়ে পূর্ববর্তীদের পাঠানো হয়েছিলো।

৬. এদের আগে এমন সব জনপদ আমি ধ্বংস করেছি, তার অধিবাসীরা (এসব নিদর্শন দেখেও) ঈমান আনেনি। (তুমি কি মনে করো) এরা (এখন) ঈমান আনবে?

৭. তোমার পূর্বে আমি মানুষকেই (সব সময় নবী বানিয়ে) তাদের কাছে পাঠিয়েছি, তোমরা যদি না জানো তাহলে (আগের) কেতাবওয়ালাদের কাছে জিজ্ঞেস করো।

৮. আমি তাদের এমন সব দেহাবয়ব দিয়ে পয়দা করিনি যে, তারা খেতে পারতো না, (তা ছাড়া মানুষ হওয়ার কারণে) তারা কেউ (এ দুনিয়ায়) চিরস্থায়ীও হয়নি!

৯. অতপর আমি (আযাবের) ওয়াদা সত্য প্রমাণিত করে দেখালাম, (আযাব যখন এসে গেলো তখন) আমি যাদের চাইলাম শুধু তাদেরই উদ্ধার করলাম, আর সীমালংঘন কারীদের আমি সমূলে বিনাশ করে দিলাম।

১০. (হে মানুষ,) আমি তোমাদের কাছে (এমন একটি) কেতাব নাযিল করেছি, যাতে (একে একে) তোমাদের (সবার) কথাই রয়েছে, তোমরা কি বুঝতে পারো না!

১১. আমি এর আগে কতো জনপদকে ধ্বংস করে দিয়েছি, যা ছিলো (আসলেই) যালেম, তাদের পরে তাদের জায়গায় আমি অন্য জাতির উত্থান ঘটিয়েছি।

১২. এরা যখন আমার আযাব (একান্ত) সামনে দেখতে পেলো তখন সেখান থেকে পালাতে শুরু করলো।

১৩. (আমি বললাম,) তোমরা (আজ) পালিয়ো না, বরং ফিরে যাও তোমাদের সম্পদের কাছে ও তোমাদের বাড়ি ঘরের দিকে যেখানে তোমরা আরাম করছিলে, সম্ভবত তোমাদের (কিছু) জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

১৪. তারা বললো, হায় দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা (সত্যিই) যালেম ছিলাম।

১৫. অতপর তারা এই আহাজারি করতেই থাকলো, যতো ক্ষণ না আমি তাদের সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছি, আমি তাদের কাটা ফসল ও নির্বাপিত আলোকরশ্মি বানিয়ে দিলাম।

১৬. আসমান যমীন ও তাদের মধ্যবর্তী সব কিছু (-র কোনোটাই) আমি খেলতামাশার জন্যে পয়দা করিনি।

১৭. আমি যদি নেহায়াত কোনো খেলতামাশার বিষয়ই বানাতে চাইতাম তাহলে আমি আমার কাছে যা (নিষ্প্রাণ বস্তু) আছে তা দিয়েই (এসব কিছু) বানিয়ে দিতাম।

১৮. বরং আমি সত্যকে মিথ্যার ওপর ছুঁড়ে মারি, অতপর সে (সত্য) এ (মিথ্যা)-র মগয বের করে দেয়, (এর ফলে যা মিথ্যা) তা সাথে সাথেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়; দুর্ভোগ তোমাদের, তোমরা যা কিছু উদ্ভাবন করছো (তা থেকে আল্লাহ তায়ালা অনেক পবিত্র)।

১৯. আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে সবই তো তাঁর (মালিকানাধীন), তাঁর (একান্ত) সা (ফেরেশতা) আছে তারা কখনো তাঁর এবাদাত করতে অহংকার (বোধ) করে না, তারা কখনো
না,

২০. তারা দিবারাত্রি তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে, তারা কখনো কোনো অলসতা করে না।
ন্নিধ্যে যেসব ক্লান্তিও বোধ করে।

২১. এরা কি (আল্লাহ তায়ালার বদলে) যমীনের কোনো কিছুকে মাবুদ বানিয়ে নিচ্ছে? (এরা যাদের মাবুদ বানাচ্ছে) তারা কি এদের পুনরুত্থ্যান ঘটাবে?

২২. যদি আসমান যমীনে আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত আরো অনেক মাবুদ থাকতো, তাহলে (কবেই যমীন আসমানের) উভয়টাই ধ্বংস হয়ে যেতো, এরা যা কিছু বলে, আরশের মালিক আল্লাহ তায়ালা সে সব কিছু থেকে পবিত্র ও মহান!

২৩. তিনি যা কিছু করেন সে ব্যাপারে তাঁকে কোনো প্রশ্ন করা যায় না, বরং তাদেরই (তাদের ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে) প্রশ্ন করা হবে।

২৪. এরা কি আল্লাহ তায়ালা ছাড়া (অন্য কাউকে) মাবুদ বানিয়ে রেখেছে? (হে নবী, তুমি) বলো, তোমরা দলীল প্রমাণ উপস্থিত করো, (এটা) আমার সাথীদের কেতাব এবং (এটা) আমার পূর্ববর্তীদের কেতাব, (পারলে এখান থেকে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করো;) এদের অধিকাংশ (মানুষই প্রকৃত সত্য) জানে না, তাই (সত্য থেকে) এরা মুখ ফিরিয়ে নেয়।

২৫. আমি তোমার আগে এমন কোনো নবী পাঠাইনি যার কাছে ওহী পাঠিয়ে আমি একথা বলিনি যে, আমি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই এবং তোমরা সবাই আমারই এবাদাত করো।

২৬. (এ মূর্খ) লোকেরা বলে, দয়াময় আল্লাহ তায়ালা (ফেরেশতাদের নিজের) সন্তান বানিয়ে নিয়েছেন; তিনি (এসব কথাবার্তা থেকে) অনেক পবিত্র; বরং তারা হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার সম্মানিত বান্দা,

২৭. তারা (কখনো) তাঁর সামনে আগে বেড়ে কথা বলে না, তারা তো তাঁর আদেশ অনুসারেই কাজ করে।

২৮. তাদের সামনে পেছনে যা কিছু আছে তা সবই তিনি জানেন, তারা আল্লাহ তায়ালার সমীপে সেসব লোক ছাড়া অন্য কারো জন্যেই সুপারিশ করে না যাদের প্রতি আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট রয়েছেন, তারা (নিজেরাও সব সময়) তাঁর ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত (থাকে)।

২৯. (যারা অহংকারী) তাদের মধ্যে যদি কেউ একথা বলে, আল্লাহ তায়ালার বদলে আমিই হচ্ছি মাবুদ, তাহলে তাকে আমি এ জন্যে জাহান্নামের (কঠিন) শাস্তি দেবো; (মূলত) আমি যালেমদের এভাবেই শাস্তি দেই।

৩০. এরা কি দেখে না, আসমানসমূহ ও পৃথিবী (এক সময়) ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিলো, অতপর আমিই এদের উভয়কে আলাদা করে দিয়েছি এবং আমি প্রাণবান সব কিছুকেই পানি থেকে সৃষ্টি করেছি, (এসব জানার পরও) কি তারা ঈমান আনবে না?

৩১. আমি যমীনের ওপর সুদৃঢ় পাহাড়সমূহ রেখে দিয়েছি যেন তা ওদের নিয়ে (এদিক সেদিক) নড়াচড়া করতে না পারে, এ ছাড়াও আমি ওতে প্রশস্ত রাস্তা তৈরী করে দিয়েছি যাতে করে তারা (তা দিয়ে নিজ নিজ  গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারে।)

৩২. আমি আকাশকে একটি সুরতি ছাদ হিসেবে তৈরী করেছি, এ (নির্বোধ) ব্যক্তিরা তার নিদর্শনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

৩৩. আল্লাহ তায়ালাই রাত, দিন, সুরুজ ও চাঁদকে পয়দা করেছেন; (এদের) প্রত্যেকেই (মহাকাশের) কপথে সাঁতার কেটে যাচ্ছে।

৩৪. (হে নবী,) আমি তোমার পূর্বেও কোনো মানব সন্তানকে অনন্ত জীবন দান করিনি; সুতরাং আজ তুমি মরে গেলে (তুমি কি মনে করো) তারা এখানে চিরজীবী হয়ে থাকবে?

৩৫. প্রতিটি জীবকেই মরণের স্বাদ গ্রহণ করতে হবে; (হে মানুষ,) আমি তোমাদের মন্দ ও ভালো (এ উভয়) অবস্থার মধ্যে ফেলেই পরীক্ষা করি; অতপর (তোমাদের তো) আমার কাছেই ফিরিয়ে আনা হবে।

৩৬. কাফেররা যখন তোমাকে দেখে তখন (মনে হয়) তারা তোমাকে কেবল তাদের বিদ্রূপের পাত্ররূপেই গ্রহণ করে; তারা (তোমার দিকে ইশারা করে) বলে, এ কি সে ব্যক্তি, যে তোমাদের দেব দেবীদের (মন্দভাবে) স্মরণ করে, অথচ (এরা নিজেরাই) দয়াময় আল্লাহ তায়ালার স্মরণকে অস্বীকার করে।

৩৭. (আসলে) মানুষকে সৃষ্টিই করা হয়েছে তাড়াহুড়ো (করার প্রকৃতি) দিয়ে, অচিরেই আমি তোমাদের আমার (কুদরতের) নিদর্শনগুলো দেখিয়ে দেবো, সুতরাং তোমরা আমার কাছে তাড়াহুড়ো কামনা করো না।

৩৮. তারা বলে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে বলো কেয়ামতের এই ওয়াদা করে (পূর্ণ) হবে?

৩৯. কতো ভালো হতো যদি এ কাফেররা (সে ক্ষণটির কথা) জানতো! (বিশেষ করে) যখন তারা তাদের সামনে ও তাদের পেছন থেকে আসা আগুন কিছুতেই প্রতিরোধ করতে পারবে না, (সে সময়ে) তাদের (কোনো রকম) সাহায্যও করা হবে না।

৪০. (মূলত কেয়ামত) তাদের ওপর আসবে হঠাৎ করে, এসেই তা তাদের হতবুদ্ধি করে দেবে, তখন তাকে তারা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে না, আর না তাদের (এ জন্যে) কোনো অবকাশ দেয়া হবে!

৪১. (হে নবী,) তোমার আগেও অনেক রসূলকে (এভাবে) ঠাট্টা বিদ্রূপ করা হয়েছিলো, পরে (দেখা গেলো) তারা যা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রূপ করেছিলো তাই তাদের পরিবেষ্টন করে নিয়েছে।

৪২. (হে নবী), তুমি এদের জিজ্ঞেস করো, কে তোমাদের দয়াময় আল্লাহ তায়ালার আযাব থেকে রা করবে- তা রাতের বেলায় আসুক কিংবা দিনের বেলায় আসুক, কিন্তু (সে কথা না ভেবে) এরা নিজেদের মালিকের স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে।

৪৩. তবে কি তাদের আরো কোনো মাবুদ আছে যারা আমার (আযাব) থেকে তাদের বাঁচাতে পারবে; তারা তো নিজেদেরই কোনো সাহায্য করতে পারবে না, না তারা আমার কাছ থেকে সেখানে কোনো সাহায্যকারী পাবে!

৪৪ (মূলত) আমি এদের এবং এদের পিতৃপুরুষদের যাবতীয় ভোগসম্ভার দান করে যাচ্ছিলাম এবং এভাবে এদের ওপর দিয়ে (সমৃদ্ধির) এক দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে; এখন কি তারা দেখতে পাচ্ছে না, আমি যমীনকে চারদিক থেকে তাদের ওপর সংকুচিত করে আনছি, তারপরও কি তারা বিজয়ী হবে (বলে আশা করে)?

৪৫. (হে নবী,) তুমি বলো, আমি তো শুধু ওহী দিয়ে তোমাদের (জাহান্নামের) ভয় দেখাই, কিন্তু এই বধিররা ডাক শুনতে পায়না, (বার বার) তাদের সতর্ক করা হলেও (তারা সে সতর্কবাণীর কিছুই শুনতে পায় না)।

৪৬. (অথচ) তোমার মালিকের আযাবের সামান্য কিছু অংশও যদি এদের স্পর্শ করে তখন এরা বলে উঠবে, হায় দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা সত্যিই যালেম ছিলাম!

৪৭. কেয়ামতের দিন আমি ন্যায়বিচারের জন্যে একটি মানদন্ড স্থাপন করবো, অতপর সেদিন কারো (কোনো মানব স নৎদানের) ওপরই কোনো রকম যুলুম হবে না; যদি একটি শস্য দানা পরিমাণ কোনো আমলও (তার কোথাও লুকিয়ে) থাকে, (হিসাবের পাল্লায়) তা আমি (যথার্থই) এনে হাযির করবো, হিসাব নেয়ার জন্যে আমিই যথেষ্ট।

৪৮. অবশ্য আমি মূসা ও হারূনকে (ন্যায় অন্যায়ের) ফয়সালাকারী একটি গ্রন্থ দিয়েছিলাম, পরহেযগার লোকদের জন্যে দিয়েছিলাম (আঁধারে চলার) আলো ও (জীবনে চলার) উপদেশ,

৪৯. (এটা তাদের জন্যে) যারা আল্লাহ তায়ালাকে না দেখেও ভয় করে এবং তারা কেয়ামত সম্পর্কে ভীত সন্ত্রস্ত থাকে।

৫০. আর এ হচ্ছে বরকতপূর্ণ উপদেশ, এটি আমিই নাযিল করেছি, তোমরা কি এর অস্বীকারকারী হতে চাও?

৫১. আমি আগে ইবরাহীমকে ভালোমন্দ বিচারের জ্ঞান দান করেছিলাম এবং আমি সে সম্পর্কে সম্যক অবগত ছিলাম,

৫২. যখন সে তার পিতা ও তার জাতির (লোকদের) বললো, এ (নিষ্প্রাণ) মূর্তিগুলো আসলে কি- যার (এবাদাতের) জন্যে তোমরা শক্ত হয়ে বসে আছো। 

৫৩. তারা বললো, আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের এগুলোর এবাদাত করতে দেখেছি (এর চাইতে বেশী কিছু আমরা জানি না)।

৫৪. সে বললো, (এগুলোর পূজা করে) তোমরা নিজেরা (যেমন আজ) সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত হচ্ছো, (তেমনি) তোমাদের পূর্বপুরুষরাও (গোমরাহীতে নিমজ্জিত ছিলো)।

৫৫. তারা বললো, তুমি কি আসলেই আমাদের কাছে কোনো সত্য নিয়ে এসেছো, না অযথাই (আমাদের সাথে) তামাশা করছো।

৫৬. সে বললো (না, এটা কোনো তামাশার বিষয় নয়), বরং তোমাদের মালিক যিনি, তিনিই আসমানসমূহ ও যমীনের মালিক, তিনিই এগুলো সৃষ্টি করেছেন, আর আমি নিজেই হচ্ছি এ ব্যাপারে সাক্ষীদের একজন।

৫৭. আল্লাহ তায়ালার শপথ, তোমরা এখান থেকে সরে গেলে আমি তোমাদের মূর্তিগুলোর ব্যাপারে একটা কৌশল অবলম্বন করবো।

৫৮. অতপর (তারা চলে গেলে) ওদের বড়োটি ছাড়া অন্য মূর্তিগুলোকে সে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিলো, যাতে করে তারা তার (ঘটনা জানার জন্যে এ বড়োটার) দিকেই ধাবিত হতে পারে।

৫৯. (যখন তারা ফিরে এসে মূর্তিদের এ দুরবস্থা দেখলো,) তখন তারা বললো, আমাদের দেবতাদের সাথে এ আচরণ করলো কে? যে-ই করেছে নিসন্দেহে সে যালেমদেরই একজন।

৬০. লোকেরা বললো, আমরা শুনেছি এক যুবক ওদের সমালোচনা করছিলো, (হ্যাঁ) সে যুবককে বলা হয় ইবরাহীম;

৬১. তারা বললো, (যাও) তাকে সব মানুষের চোখের সামনে এনে হাযির করো, যাতে করে তারা (তার বিরুদ্ধে) সহ্য দিতে পারে।

৬২. (ইবরাহীমকে আনার পর) তারা (তাকে) জিজ্ঞেস করলো, হে ইবরাহীম, তুমিই কি আমাদের মারদগুলোর সাথে এ আচরণ করেছো;

৬৩. (সে বললো,) বরং ওদের বড়োটিই সম্ভবত (এসব কিছু) ঘটিয়েছে, তোমরা তাদেরকেই জিজ্ঞেস করো না. তারা যদি কথা বলতে পারে (তাহলে তারাই বলবে কে তাদের সাথে এ আচরণ করেছে)!

৬৪. (ইবরাহীমের এ অভিনব যুক্তি শুনে) তারা (নিজেরা চিন্তা করে) নিজেদের দিকেই ফিরে এলো এবং একে অপরকে বলতে লাগলো (যালেম তো সে নয়, যে ওটা ভেংগেছে), যালেম তো হচ্ছো তোমরা (যারা এর পূজা করো),

৬৫. অতপর (লজ্জায়) ওদের মাথা অবনত হয়ে গেলো, ওরা বললো (হে ইবরাহীম), তুমি তো (ভালো করেই) জানো, এরা কথা বলতে পারে না।

৬৬. সে বললো, তাহলে তোমরা কেন আল্লাহ তায়ালাকে বাদ দিয়ে এমন কিছুর পূজা করো যারা তোমাদের কোনো উপকারও করতে পারে না, তোমাদের কোনো অপকারও করতে পারে না।

৬৭. ধিক তোমাদের জন্যে এবং আল্লাহ তায়ালাকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদের পূজা করো তাদের জন্যেও; তোমরা কি (এদের এ অক্ষমতাটুকু) বুঝতে পারছো না।

৬৮. (এ সময় রাজার) লোকেরা বললো, একে আগুনে পুড়িয়ে দাও, যদি তোমরা কিছু করতেই চাও তাহলে (আগে গিয়ে) তোমাদের মূর্তিগুলোর প্রতিশোধ গ্রহণ করো।

৬৯. (অপরদিকে) আমি (আগুনকে) বললাম, হে আগুন, তুমি ইবরাহীমের জন্যে শীতল ও শান্তিময় হয়ে যাও,

৭০. ওরা তার বিরুদ্ধে একটা ফন্দি আঁটতে চাইলো, আর আমি (উল্টো) তাদের ক্ষতিগ্রস্ত (ও ব্যর্থ) করে দিলাম, 

৭১. অতপর আমি তাকে এবং (আমার নবী) লূতকে উদ্ধার করে এমন এক দেশে নিয়ে গেলাম, যেখানে আমি দুনিয়াবাসীর জন্যে অনেক কল্যাণ রেখেছি।

৭২. অতপর আমি ইবরাহীমকে (তার ছেলে হিসেবে) ইসহাক দান করলাম; তার ওপর অতিরিক্ত দান করলাম (পৌত্র হিসেবে) ইয়াকুব; এদের সবাইকেই আমি ভালো (মানুষ) বানিয়েছিলাম,

৭৩. আমি তাদের (দুনিয়ার মানুষদের) নেতা বানিয়েছিলাম, তারা আমার নির্দেশ অনুসারে (মানুষকে) সুপথ দেখাতো, নেক কাজ করা, নামায প্রতিষ্ঠা করা ও যাকাত দেয়ার জন্যে আমি তাদের কাছে ওহী পাঠিয়েছি, তারা (সর্বত্রই) আমার আনুগত্য করতো।

৭৪. (ইবরাহীমের মতো) আমি লূতকেও প্রজ্ঞা দান করেছিলাম, তাকেও আমি এমন একটি জনপদ থেকে উদ্ধার করে এনেছি যার অধিবাসীরা অশ্লীল কাজ করতো; সত্যিই তারা ছিলো জঘন্য বদ ও গুনাহগার জাতি,

৭৫. আর আমি তাকে আমার (অপরিসীম) অনুগ্রহের ভেতর প্রবেশ করিয়েছি; নিসন্দেহে সে ছিলো একজন সৎকর্মশীল (নবী)।

৭৬. (হে নবী, তুমি নূহের কাহিনীও তাদের শোনাও,) নূহ যখন আমাকে ডেকেছিলো, (ডেকেছিলো ইবরাহীমেরও) আগে, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম এবং তাকে ও তার পরিবার পরিজনদের আমি এক মহাসংকট থেকে উদ্ধার করেছিলাম,

৭৭. আমি তাকে এমন এক জাতির মোকাবেলায় সাহায্য করেছিলাম যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছিলো; (আসলেই) তারা ছিলো বড়ো খারাপ জাতের লোক, অতপর আমি তাদের সবাইকে (মহাপ্লাবনে) ডুবিয়ে দিয়েছি।

৭৮. দাউদ ও সোলায়মানের ঘটনাও (তাদের শোনাও), যখন তারা একটি ক্ষেতের ফসলের (মোকদ্দমায়) রায় প্রদান করছিলো। (মোকদ্দমাটা ছিলো এমন), রাতের বেলায় (মানুষদের) কিছু মেষ (অন্য মানুষদের ক্ষেতে ঢুকে) তা তছনছ করে দিলো, এই বিচারপর্বটি আমি নিজেও তাদের সাথে পর্যবেণ করছিলাম,

৭৯. অতপর আমি (সঠিক রায় যা-) তা সোলায়মানকে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম, (অবশ্য) আমি তাদের (উভয়কেই) প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দান করেছিলাম, আমি পাহাড় পর্বত এবং পাখ-পাখালিকেও দাউদের অনুগত করে দিয়েছিলাম যেন তারাও (তার সাথে) আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতে পারে; আর আমিই (এ সব কিছু ) ঘটাচ্ছিলাম।

৮০. আর আমি তাকে তোমাদের (যুদ্ধে ব্যবহারের) জন্যে বর্ম বানানো শিক্ষা দিয়েছি, যাতে তোমরা তোমাদের যুদ্ধের সময় (পরস্পরের আক্রমণ থেকে) নিজেদের বাঁচাতে পারো, তারপরও কি তোমরা (আমার) শোকরগোযার হবে না?

৮১. আমি প্রবল হাওয়াকে সোলায়মানের জন্যে বশীভূত করে দিয়েছিলাম, তা তার আদেশে সে দেশের দিকে ধাবিত হতো যেখানে আমি প্রভূত কল্যাণ রেখে দিয়েছি; (মূলত) আমি প্রতিটি বিষয়ের ব্যাপারেই সম্যক অবগত আছি।

৮২ শয়তানদের মাঝে (তার) কিছু (জ্বিন অনুসারী) তার জন্যে (সমুদ্রে) ডুবুরীর কাজ করতো, তার জন্যে এ ছাড়াও এরা বহু কাজ আঞ্জাম দিতো, তাদের রব তো আমিই ছিলাম,

৮৩. (স্মরণ করো,) যখন আইয়ূব তার মালিককে ডেকে বলেছিলো (হে আল্লাহ), আমাকে এক কঠিন অসুখে পেয়ে বসেছে, (আমায় তুমি) নিরাময় করো, (কেননা) তুমিই হচ্ছো দয়ালুদের সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু,

৮৪. অতপর আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম, তার যে কষ্ট ছিলো তা আমি দূর করে দিলাম, তাকে (যে শুধু) তার পরিবার পরিজনই ফিরিয়ে দিলাম (তা নয়); বরং তাদের (সবাইকে) আমার কাছ থেকে বিশেষ দয়া এবং আমার বান্দাদের জন্যে উপদেশ হিসেবে আরো সমপরিমাণ (অনুগ্রহ) দান করলাম।

৮৫. (আরো স্মরণ করো,) ইসমাঈল, ইদ্রীস ও ফুল কিফলের (কথা), এরা সবাই (আমার) ধৈর্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত,

৮৬. আমি তাদের আমার রহমতের মধ্যে দাখিল করলাম, কেননা তারা ছিলো নেককার মানুষদের দলভুক্ত।

৮৭. আর (স্মরণ করো) 'যন্ত্রন' (-এর কথা), যখন সে রাগ করে নিজের লোকজনদের ছেড়ে বের হয়ে গিয়েছিলো, সে মনে করেছিলো আমি (বুঝি) তাকে ধরতে পারবো না (অতপর আমি যখন তাকে সত্যি সত্যিই ধরে ফেললাম), তখন সে (মাছের পেটের) অন্ধকারে বসে আমাকে (এই বলে) ডাকলো, হে আল্লাহ তায়ালা, তুমি ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই, তুমি পবিত্র, তুমি মহান, অবশ্যই আমি সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছি,

৮৮. অতপর আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম এবং তাকে (তার মানসিক) দুশ্চিন্তা থেকে আমি উদ্ধার করলাম; আর এভাবেই আমি আমার মোমেন বান্দাদের সব সময় উদ্ধার করি।

৮৯. আর (স্মরণ করো,) যাকারিয়া (-র কথা), যখন সে তার মালিককে ডেকে বলেছিলো, হে আমার মালিক, তুমি আমাকে একা (নিসন্তান করে) রেখে দিয়ো না, তুমিই হচ্ছো উৎকৃষ্ট মালিকানার অধিকারী,

৯০. অতপর আমি তার জন্যেও সাড়া দিয়েছিলাম, তাকে দান করেছিলাম (নেক সন্তান) ইয়াহইয়া এবং তার (মনের আশা পূরণের) জন্যে আমি তার স্ত্রীকে (বন্ধ্যাত্বমুক্ত করে সমপূর্ণ) সুস্থ ( সন্তান ধারণোপযোগী) করে দিয়েছিলাম; (আসলে) এ লোকগুলো (হামেশাই) সৎকাজে (একে অন্যের সাথে) প্রতিযোগিতা করতো, তারা আমাকে আশা ও ভীতির সাথে ডাকতো; তারা সবাই ছিলো আমার অনুগত (বান্দা)।

৯১. (স্মরণ করো সেই পুণ্যবতী নারীকে,) যে নিজ সতীত্ব রক্ষা করেছিলো, অতপর তার মধ্যে আমি আমার প ক্ষ থেকে এক (বিশেষ সম্মানী) আত্মা ফুঁকে দিলাম, এভাবে আমি তাকে এবং তার পুত্রকে দুনিয়াবাসীর জন্যে এক নিদর্শন বানিয়ে দিয়েছিলাম।

৯২. (যাদের কথা আমি বললাম,) এ হচ্ছে তোমাদেরই স্বজাতি, এরা সবাই একই জাতি, আর আমি (এদের) তোমাদের সবাইর মালিক, অতএব তোমরা আমারই গোলামী করো।

৯৩. (কিন্তু পরবর্তী সময়ে) তারা নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ করে নিজেদের (দ্বীনের) বিষয়কে টুকরো টুকরো করে ফেললো (অথচ) সর্বশেষে এদের সবাইকে (এক হয়ে) আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে।

৯৪. কোনো ব্যক্তি যদি মোমেন অবস্থায় কোনো নেক কাজ করে তাহলে তার (সৎপথে চলার এ) প্রচেষ্টাকে কিছুতেই অস্বীকার করা হয় না, অবশ্যই আমি তার জন্যে (তার প্রতিটি কাজকে) লিখে রাখি।

৯৫. এটা কখনো সম্ভব নয় যে, যে জাতিকে আমি একবার ধ্বংস করে দিয়েছি তারা আবার (তাদের ধ্বংস পূর্ব অবস্থায়) ফিরে আসবে-

৯৬. এমনকি যখন (কেয়ামতের নিদর্শন হিসেবে) ইয়াজুজ ও মা'জুজকে ছেড়ে দেয়া হবে এবং ওরা প্রতিটি উচ্চভূমি থেকে (পতংগের মতো) নীচের দিকে বেরিয়ে আসতে থাকবে।

৯৭. এবং (কেয়ামতের ব্যাপারে আমার) অমোঘ প্রতিশ্রুতি আসন্ন হয়ে আসবে, (তখন) তা আসতে দেখে যারা (এতোদিন) একে অস্বীকার করেছিলো তাদের চু স্থির হয়ে যাবে; (তারা বলবে) হায়, কতোই না দুর্ভোগ আমাদের, আমরা এ (দিনটি) সম্পর্কেই উদাসীন ছিলাম, বরং আমরা সত্যিই ছিলাম (বড়ো) যালেম!

৯৮. (তখন তাদের বলা হবে,) তোমরা এবং তোমাদের সে সব কিছু, যাদের তোমরা আল্লাহর বদলে মাবুদ বানাতে, সবাই জাহান্নামের ইন্ধন হবে; (আজ) তোমাদের সবাইকেই সেখানে পৌঁছতে হবে।

৯৯. তারা যদি সত্যিই মাবুদ হতো যাদের তোমরা গোলামী করতে, তাহলে আজ তারা কিছুতেই (জাহান্নামে) প্রবেশ করতো না; (উপাস্য উপাসক) সবাই তাতে চিরকাল ধরে অবস্থান করবে।

১০০. এদের জন্যে সেখানে শুধু শাস্তির ভয়াবহ চীৎকারই (শুধু অবশিষ্ট) থাকবে, (এ চীৎকার ছাড়া) তারা সেখানে (অন্য) কিছুই শুনতে পাবে না।

১০১. (অপরদিকে) যাদের জন্যে আমার কাছ থেকে (অন নদ) কল্যাণ নির্ধারিত হয়ে আছে, অবশ্যই তাদের (জাহান্নাম ও) তার (আযাব) থেকে (অনেক) দ রে রাখা হবে,

১০২. তারা (তাদের সুখের ঘরে বসে ভয়াবহ চীৎকারের) ক্ষিণতম শব্দও শুনতে পাবে না, তাদের জন্যে তো (বরং সেখানে) তাদের মন যা চায় তাই (হাযির) থাকবে, (তাও থাকবে আবার) চিরকাল ধরে,

১০৩. (জাহান্নামের) বড়ো ভীতি তাদের (সেদিন মনে) কোনো রকম দুশ্চি নৎদার সৃষ্টি করতে পারবে না, (সেদিন) ফেরেশতারা তাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলবে; তোমাদের সাথে যে ওয়াদা করা হয়েছিলো, এ হচ্ছে তোমাদের সে (ওয়াদা পূরণের) দিন।

১০৪. (এটা এমন একদিন) যেদিন আমি আসমানসমূহকে গুটিয়ে নেবো, ঠিক যেভাবে কেতাবসমূহ গুটিয়ে ফেলা হয়; যেভাবে আমি একদিন এ সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবেই আমি আবার এর পুনরাবৃত্তি ঘটাবো, এটা (এমন এক) ওয়াদা, (যা) পালন করা আমার ওপর জরুরী; আর এ কাজ তো আমি করবোই।

১০৫. আমি যবুর কেতাবেও এ উপদেশ উল্লেখের পর (দুনিয়ার কর্তৃতের ব্যাপারে পরিষ্কার করে আমার) এ কথা লিখে দিয়েছি, (একমাত্র) আমার যোগ্য বান্দারাই (এ) যমীনের (নেতৃত্ব করার) অধিকারী হবে।

১০৬. এ (কথার) মধ্যে (আমার) এবাদাতগোয়ার বান্দাদের জন্যে সত্যিই এক (মহা) পয়গাম (নিহিত) আছে; 

১০৭. (হে নবী,) আমি তো তোমাকে সৃষ্টিকূলের জন্যে রহমত বানিয়েই পাঠিয়েছি।

১০৮. তুমি (এদের) বলো, আমার ওপর এই মর্মে ওহী পাঠানো হয়েছে যে, তোমাদের মারদ একজনই, তোমরা কি (তাঁর) অনুগত বান্দা হবে না?

১০৯. (হ্যাঁ,) তারা যদি তোমার কথা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তুমি বলো, আমি তোমাদের (জান্নাতের সুখবর দেয়ার পাশাপাশি আযাবের ব্যাপারেও) একই পরিমাণ সতর্ক করছি, আমি (নিজেও) একথা জানি না, যে (আযাবের) ওয়াদা তোমাদের কাছে করা হচ্ছে তা (আসলেই) কি খুব কাছে, নাকি তা (অনেক) দূরে?

১১০. একমাত্র তিনিই জানেন যা কিছু উচ্চ স্বরে বলা হয় এবং তিনিই জানেন যা কিছু তোমরা ( অন্তরে) গৌপন করো।

১১১. আমি জানি না, (অবকাশের) এ (সময়টুকু) হতে পারে তোমাদের জন্যে এক পরীক্ষা (মাত্র, কিংবা হতে পারে) সুনির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্যে (তোমাদের) কিছু মাল সম্পদ (দান করা)।

১১২. (সর্বশেষে) সে বললো, হে আমার মালিক, তুমি (এদের ব্যাপারটা) ন্যায়ের সাথে মীমাংসা করে দাও; (হে মানুষ,) তোমরা (আল্লাহ সম্পর্কে) যা কিছু কথা বানাচ্ছো, সেসব (কিছুর অনিষ্টের) ব্যাপারে একমাত্র আমাদের মালিক দয়াময় আল্লাহ তায়ালার কাছেই আশ্রয় চাওয়া যেতে পারে।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url