কুরআনের গল্পঃ সাদ্দাদের বেহেস্ত নির্মাণ ও হযরত হুদ (আঃ)-কে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার পরিণাম



সাদ্দাদের বেহেস্ত


আদের দুই পুত্র ছিল। এক জনের নাম ছিল শাদীদ আর অন্য জনের নাম ছিল সাদ্দাদ। শাদীদ একাধারে সাত শত বছর রাজত্ব করার পরে ইন্তেকাল করে। তারপরে সাদ্দাদ সিংহাসন লাভ করে। তার রাজ্য ছিল বিশাল। পৃথিবীর স্থল ভাগের অধিকাংশ জায়গা ছিল তার রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। ধন-দৌলত, অর্থ-সম্পদ ছিল প্রচুর। রাজ্যের সকল মানুষ সুখ সাচ্ছন্দে বসবাস করত। রাজা সাদ্দাদ ছিল অহংকারী। ধন-দৌলতের প্রাচুর্যে তাকে বেপরোয়া বানিয়ে ছিল। যার ফলে ধর্ম-কর্ম বলতে তার কাছে কিছুই ছিল না। বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে চলত এবং দেশের বহু স্থানে বিলাস ভবন নামে অনেক সুউচ্চ ইমারত তৈরি করেছিল। প্রমোদ কানন নামে বহু সুশোভিত পুষ্পকানন সাজিয়ে অসংখ্য দাস-দাসী দ্বারা উহার পরিচর্যা করত। তার দাস-দাসীর সংখ্যা নিরূপণ করা ছিল সাধ্যাতীত ব্যাপার। দেশরক্ষী বাহিনীর নামে অশ্বারোহী, পদাতিক ও নৌবাহিনী ছিল কয়েক লক্ষ। তার প্রহরার জন্য সর্বদা বিশ হাজার সৈন্য মোতায়েন থাকত।

সাদ্দাদকে হুদ (আঃ)-এর একত্ববাদের দাওয়াত


হযরত হুদ (আঃ)-এর প্রতি আল্লাহ তা'য়ালার নির্দেশ হল সাদ্দাদকে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছানোর জন্য। হযরত হুদ (আঃ) আল্লাহ তা'য়ালার নির্দেশ ক্রমে সাদ্দাদের নিকট পৌঁছে বললেন, হে রাজা সাদ্দাদ। তোমাকে আল্লাহ তা'য়ালা এক হাজার বছর হায়াত দান করেছেন। অসংখ্য ধন-দৌলত দান করেছেন। অগণিত দাস-দাসী তুমি লাভ করেছ। সর্বোপরি তোমাকে আল্লাহ তা'য়ালা অশেষ সুখ-শক্তি দান করেছেন। ইতোপূর্বে আর কোন রাজা বাদশাহকে যা দান করেননি। এখন সে মহান আল্লাহ তা'য়ালার শোকর আদায়ের নিমিত্তে তার একত্ববাদে আস্থা স্থাপন করে ইমানদারদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। তাহলে আল্লাহ তোমাকে আরো সম্পদ বাড়িয়ে দিবেন। তোমার সুখ-শান্তি অধিক করে দিবেন। এমন কি কিয়ামতের দিন তোমার কোন হিসাব নিকাশ নেয়া হবে না। সরাসরি তুমি বেহেস্ত লাভ করতে পারবে। যা সাধারণ ভাবে কারো ভাগ্যে মিলবে না । একমাত্র তোমার জন্যই আমি এ সুসংবাদ দিতে এসেছি এবং আমি তোমার জিম্মাদার হিসেবে কিয়ামতের দিন সর্বক্ষণ তোমার কাছে থাকব। অতএব তুমি মুক্ত মনে একবার পাঠ কর লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

সাদ্দাদের বেহেস্ত নির্মাণের ঘোষণা


সাদ্দাদ নবীর কথা শুনে কোন রকম প্রভান্বিত হল না বরং সে নবীকে বলে দিল, হে হুদ! তুমি আমাকে পরকালের লোভ দেখাচ্ছ। অত দূরের সুখ-শান্তি লাভ করতে পারব কি পারব না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। সেখানের সুখ-শান্তি তোমরাই ভোগ কর। আমি এখানে আল্লাহর বেহেস্তের ন্যায় একখানি বেহেস্ত তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেখবে সেটা তোমার খোদার বেহেস্তের চাইতে কোন অংশে কম হবে না। অতএব অযথা কথা বলে আমার সময় নষ্ট কর না। তুমি তোমার গরীব উম্মতদেরকে নিয়ে তোমার খোদার বেহেস্ত লাভের আশায় থাক। আমার কাছে আর দ্বিতীয়বার এসো না। নবী সাদ্দাদের কথায় বিরক্ত না হয়ে অনেকবার তাকে বলল। সাদ্দাদ শেষ পর্যন্ত তার সম্মুখ থেকে চলে গেল। একদিন পর সাদ্দাদ তার রাজ্যের সকল রাজা, আমির ও বনিকদেরকে জরুরি ভিত্তিতে রাজ দরবারে ডেকে পাঠাল। সকলে রাজার জরুরি ঘোষণা শুনে রাজ দরবারে হাজির হল।

সাদ্দাদের অধীনে তখন প্রায় এক হাজার রাজা ছিল। তারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত শাসনকর্তা ছিল। আমীরের সংখ্যা ছিল প্রায় পাঁচ হাজার। আমীরেরা জমিদারদের ন্যায় নির্দিষ্ট এলাকার সর্বেসর্বা ছিল। সকলে মহারাজা সাদ্দাদকে নিয়মিত খাজনা, ওশর ও ভ্যাট প্রদান করত। বনিকের সংখ্যা নির্ণয় সম্ভব ছিল না। কারণ দেশের অধিকাংশ লোক ধনী ও সম্পদশালী ছিল। এ সব উঁচুমানের লোকদের ডেকে সাদ্দাদ বলল, আমি আমার রাজ্যের সর্বেোত্তম স্থানে এক সুখময় বেহেস্ত তৈরি করতে চাই। নবীগণ আল্লাহ তা'য়ালার বেহেস্ত সম্বন্ধে যেরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত ও আরামদায়ক বেহেস্তের কথা আলোচনা করে থাকেন ঠিক তদ্রুপ বেহেস্ত তৈরি করাই আমার একান্ত আশা। অতএব আপনারা এ ব্যাপারে আমাকে সর্বত্তম সাহায্য সহানুভূতি প্রদান করবেন। এ ব্যাপারে কেউ অমনযোগী থাকলে আমি তাকে শাস্তি দেব এবং তার ধন-সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নেব। এ ব্যাপারে প্রাথমিক অবস্থায় দেশে যত স্বর্ণ, রৌপ্য, মণি-মুক্তা, জহরত, পান্না আছে তা সমুদয় সংগ্রহ করে বেহেস্ত তৈরির কাজে ব্যবহার করতে হবে। এ ব্যাপারে আপনারা সকলে আন্তরিকভাবে এ কাজে সহযোগিতা করবেন বলে আশা রাখি। সর্বপ্রথম উত্তম জায়গা নির্বাচন করুন। তারপরে দেশ-বিদেশী কারিকর ও প্রকৌশলী খবর দিয়ে একটি প্লান বা নকশা তৈরি করুন। আগামী সাত দিনের মধ্যে আনুসঙ্গিক প্রস্তুতি সমাধা করে অষ্টম দিনে ভিত্তিপ্রস্তর করতে হবে। আপনারা প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে নিন। আমার নিকট থেকে প্রয়োজনীয় টাকা পয়সা নিয়ে নিন। আজকের এ বৈঠকে সমস্ত খুটিনাটি বিষয় আলোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। অযথা সময় নষ্ট করা যাবে না। এখন আপনারা এ ব্যাপারে আপনাদের মন্তব্য পেশ করুন।

সাদ্দাদের বেহেস্ত নির্মাণ


রাজা, আমির ও বনিকগণ 'মারহাবা' বলে একবাক্যে সাদ্দাদের কথা সমর্থন করল। অতঃপর তারা পাঁচ সদস্যের এক শক্তিশালী কমিটি গঠন করে নিল। তারপর তাদের সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্বন্ধে এক বিশদ ফিরিস্তি তৈরি করে নিজ নিজ কাজ সকলে বুঝে নিল। একদিন পরে রাজ্যের সবচেয়ে সুন্দর মনোরম ও নাতিশীতোষ্ণ এলাকা নির্বাচন করে সেখানে বেহেস্ত তৈরির কাজ আরম্ভ করে দিল।

ওদিকে দেশ ব্যাপী স্বর্ণ, রৌপ্য, মণি-মুক্তা সংগ্রহের কাজে জোর চেষ্টা আরম্ভ হল। বিদেশী কারিকর ও প্রকৌশলীদের আমদানি করা হল। নিজস্ব পদ্ধতিতে পাথর কাটা, মাটি খনন ও ভাল কাঠ, লোহা সংগ্রহ জনিত আনুসঙ্গিক যত কাজ তা অতি দ্রুত অগ্রসর হতে আরম্ভ হ'ল। রাজা, আমির-ওমরা ও বনিক-ব্যবসায়ীরা সকলে ব্যক্তিগত সমস্ত কাজ ছেড়ে দিয়ে বেহেস্ত তৈরির কাজে আত্মনিয়োগ করল। সারা দেশব্যাপী ভীষণ তোলপাড় আরম্ভ হয়ে গেল। দেশবাসী সকলে মহা উল্লাসের সাথে এ কাজের প্রতি সমর্থন জানাল, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এসে কর্মস্থল পরিদর্শন করতে শুরু করল।

দেশবাসীর পক্ষ থেকে সাদ্দাদের নিকট বেহেস্ত তৈরির এ পূণ্য কাজে আর্থিক ও কায়িক অংশ গ্রহনের আবেদন জানান হল। সাদ্দাদ জনগনের আবেদন মঞ্জুর করে তাদের দান গ্রহণের মঞ্জুরী দিলেন। ফলে একদিনেই তহবিলে কয়েক কোটি টাকা জমা হয়ে গেল এবং অসংখ্য মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের ক্ষেত্রে নাম তালিকা ভুক্ত করল। এককথায় বেহেস্ত তৈরির ক্ষেত্রে দেশবাসীর আন্তরিকতার অভাব ছিল না।

সাদ্দাদের বেহেস্তের আকার


মহা ধুমধামের সাথে বেহেস্ত তৈরির কাজ আরম্ভ হল। চল্লিশ গজ মাটি খনন করে মুল্যবান পাথর দ্বারা ভিত্তি স্থাপন করা হল। নিচের ভিত খুব মজবুত করে গাঁথা হল। কয়েক হাজার মানুষ সকাল সন্ধ্যা কাজ আরম্ভ করে দিল। সেখানে পচিশ মাইল দীর্ঘ ও দশ মাইল প্রস্থ ছিল বেহেস্তের প্রধান ইমারতের এরিয়া। এর বাইরে ছিল নদ-নদী, পুষ্পকানন এ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য চতুর্গুণ বরাদ্ধকৃত এলাকা। যাতে একজন অশ্বারোহীর পক্ষে একদিনে বেহেস্তের চার পাশ ঘুড়ে আসা সম্ভব ছিল না।

সাদ্দাদের বেহেস্তে কি কি ছিল


বেহেস্তের নির্মাণ কাজ একাধারে মাসের পর মাস, বছরের পরে বছর বিরাম হীনভাবে চলতে লাগল। শেষ দিকে দিবা-রাত্র কাজ চলত। রাতে দশ হাজার লোক কাজ করত এবং দিনের বেলায় বিশ হাজার লোক কাজ করত। নদ-নদী, লেক, পার্ক, পাহাড়, ঝর্ণা থেকে আরম্ভ করে সুশোভিত বাগ-বাগিচা, নহর, ফোয়ারা কিছুই আর বাকি ছিল না। ইমারত ছিল স্বর্ণ ও রৌপ্যের ইট দ্বারা তৈরি । বহুতলা ইমারত ভিতর দিকে ছিল মুণিমুক্তা দ্বারা মোজাইক করা। বিভিন্ন ইমারত বিভিন্ন কায়দায় নির্মিত ছিল। বিভিন্ন কক্ষের সৌন্দর্য ছিল বিভিন্ন রকমের। আতর, গোলাপ রক্ষিত ছিল বিরাট বিরাট পুকুরে। শরবত, মধু, দুধ ও শরাব ছিল নদী ভর্তি। ফল-ফলাদী ছিল বাগান ভর্তি। বিভিন্ন রঙ্গের পুষ্প বিভিন্ন রকম সোভা বর্ধনকারী পদ্ধতিতে রোপন করা হয়েছিল। এক কথায় আল্লাহ তা'য়ালার বেহেস্তের বর্ণনায় যা কিছু তাদের জানা ছিল তার সবই সেখানে সমাবেশ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এমনকি হুর ও গেলমানের নামে বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য সুন্দরী রমনী ও সুন্দর বালকদিগকে সেবক সেবিকা হিসেবে সেখানে নিয়োগ করা হল।

সাদ্দাদের বেহেস্ত নির্মাণের সময়সীমা


একাধারে সাড়ে তিন বছর যাবত চেষ্টা প্রচেষ্টার পরে সাদ্দাদের বেহেস্ত নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হল। এ সময় হযরত হুদ (আঃ) সাদ্দাদের নিকট এসে হেদায়েতের বাণী তাকে শুনিয়েছেন। সাদ্দাদ বেহেস্ত তৈরির অহঙ্কারে নবীকে তুচ্ছ ভেবে কয়েক বার বলেছে তোমার খোদার কাল্পনিক বেহেস্তে আমি যেতে চাই না। আমি বাস্তব বেহেস্তে বসবাস করব। তখনকার দৃশ্য তোমাকে ডেকে দেখিয়ে দেব। নবী তার উত্তরে বলেছিলেন এত অর্থ ব্যয়, সময় ব্যয় ও শ্রম ব্যয় করে যে বালাখানা তুমি তৈরি করছ তাতে প্রবেশ করার ভাগ্য তোমার নাও হতে পারে। আল্লাহ তা'য়ালা যদি তোমার উপর বিরূপ হন তাহলে তোমার বেহেস্ত গমনের পূর্বে মৃত্যুও আসতে পারে। তখন তোমার এ দাম্ভিকতার কি স্বার্থকতা থাকবে। সাদ্দাদ এ সব কথার প্রতি কোন গুরুত্ব না দিয়ে বার বার বলত আমাকে তোমার খোদা কিছুই করতে পারবে না। বরং আমার কার্য দেখে তোমার খোদা লজ্জিত হয়ে পালিয়ে যাবে। তখন তার সাথে তোমার কোন যোগাযোগ আর সম্ভব হবে না। তখন তুমি আমার নিকট ধর্ণা দিতে বাধ্য হবে। নবী সাদ্দাদের কথায় খুবই বিষণ্ন হলেন এবং ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বিদায় নিলেন।

সাদ্দাদের বেহেস্ত দর্শনে গমণ


সাদ্দাদের বেহেস্তের যাবতীয় কার্য সম্পন্ন হবার পরে একদিন সে তার বেহেস্তে গমনের তারিখ দেশবাসীকে জানিয়ে দিল। নির্দিষ্ট তারিখে লক্ষ লক্ষ মানুষ বেহেস্তের কাছে এসে জমায়েত হল। সাদ্দাদ কয়েক হাজার সৈন্য নিয়ে অশ্বারোহণ করে বেহেস্তের প্রথম গেটে এসে চতুর্দিকে তাকিয়ে দেখল। অতঃপর সেখানে কয়েক হাজার সৈন্য রেখে সম্মুখে অগ্রসর হল। দ্বিতীয় গেটে পৌঁছে চতুর্দিক তাকিয়ে দেখল এবং আনন্দ উপভোগ করল। সেখানে কয়েক হাজার সৈন্যরেখে তৃতীয় গেটের দিকে অগ্রসর হল। তৃতীয় গেটে পৌঁছে চতুর্দিক তাকিয়ে দেখল এবং আনন্দ উপভোগ করল। সেখানে কয়েক হাজার সৈন্য রেখে ৪র্থ গেটের দিকে অগ্রসার হল। সেখানেও কয়েক হাজার সৈন্য রেখে ৫ম গেটের দিকে রওয়ানা করল। এভাবে সাতটি গেট পার হয়ে মাত্র দুইজন সেবক নিয়ে যখন বেহেস্তের প্রধান প্রাসাদের ফটকে এসে দাঁড়াল, তখন দেখল একজন বিশাল আকৃতির মানুষ বেহেস্তের গেটে দণ্ডায়মান। সাদ্দাদ লোকটিকে জিজ্ঞেস করল, তুমি কে? এখানে কেন দাঁড়িয়েছ? লোকটি উত্তর দিল, আমি মালেকুল মউত। আমি আল্লাহর হুকুমে তোমার জীবন সংহারের উদ্দেশ্যে এখানে এসেছি। সাদ্দাদ লোকটির কথা শুনে একটু চিন্তিত হল। হযরত হুদ (আঃ) তাকে এ ধরনের মৃত্যুর একটি ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন। তাই তার হাত পা কাঁপতে শুরু হল। তবুও সে চিৎকার দিয়ে বলল, ভাই মালেকুল মউত! তুমি যদি বাস্তবিকই আমার জীবন সংহারের উদ্দেশ্যে এখানে এসে থাক তাহলে একটু সময় অপেক্ষা কর । আমি আমার দীর্ঘ দিনের সাধনার বেহেস্তখানা এক বার ঘুরে দেখে আসি, তার পরে তুমি আমার জান কবজ কর। মালেকুল মউত বলল, সে সুযোগ দানের অধিকার আমার নেই। তুমি সে বিষয় মহান আল্লাহর দরবারে আরজি পেশ করে দেখতে পার। তিনি যদি তোমাকে সুযোগ দেন তবে দীর্ঘ কয়েক বছরের সুযোগও দিতে পারেন। আর যদি না দেন তাহলে আমার যে হুকুম সে অনুসারে আমি তোমার জান নিয়ে নিব।

বেহেস্ত দর্শনের আগেই সাদ্দাদের মৃত্যু


তখন সাদ্দাদ আল্লাহ তা'য়ালার কাছে বলল, হে আসমানের খোদা! আমি যে বেহেস্ত তৈরি করেছি তা তোমার সৃষ্ট বেহেস্তের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। এখন তুমি আমার প্রতি ও আমার বেহেস্তের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে যদি মালাকুল মউত দ্বারা আমার জান কবজ কর তাহলে মানুষ চিরদিন তোমাকে পরশ্রীকাতর বলে জানবে এবং তুমি যে ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে এ কাজটি করলে তা প্রচার হয়ে যাবে। অতএব আমি তোমাকে ঈর্ষার বশতর্থী না হবার জন্য অনুরোধ করছি। এ কথা বলে সাদ্দাদ এক পা ঘোড়ার পৃষ্ঠের রেকাবের উপর এবং অন্য পা বেহেস্তের দরজায় রাখল। তখন মালেকুল মউত সাদ্দাদের জান কবজ করে চলে গেল। সাদ্দাদের বেহেস্ত দর্শনের আশা চিরদিনের জন্য শেষ হয়ে গেল ।

সাদ্দাদের বেহেস্তের শেষ পরিণাম


কথিত আছে সাদ্দারে মৃত্যুর পরক্ষণে আকাশ থেকে এক ভীষণ আওয়াজ হয়। সে আওয়াজে সাদ্দাদের বেহেস্ত এলাকা উল্টিয়ে গিয়ে সমস্ত ইমারত, অট্টালিকা ও উপস্থিত জনতা, সৈন্য সামন্ত ও লোক লস্কর চিরদিনের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। পৃথিবীর কোন মানুষ আর সাদ্দাদের বেহেস্ত এলাকার কোন চিহ্ন দেখতে পায়নি।


(এই লেখাটি আলহাজ্ব মাওলানা লুৎফুল আলম রচিত ও ছারছীনা প্রকাশনী হতে প্রকাশিত “কুরআনের শ্রেষ্ট কাহিনী” গ্রন্থ অবলম্বনে তৈরী করা হয়েছে)


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url