আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আন্ নাহলের বাংলা অনুবাদ | সূরা আন্ নাহল | Surah An-Nahl | سورة النحل



সূরা আন্ নাহলের বাংলা অনুবাদ


সূরা আন্ নাহল, মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ১২৮, রুকু ১৬

সূরা আন্ নাহল



রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে

১. (এ বুঝি) আল্লাহ তায়ালার (আযাবের) আদেশ এসে গেলো! অতপর (হে কাফেররা), এর জন্যে তোমরা (মোটেই) তাড়াহুড়ো করো না; তিনি মহিমান্বিত, এ (যালেম) লোকেরা তাঁর সাথে (অন্যদের) যে (ভাবে) শরীক করে, তিনি তার থেকে অনেক ঊর্ধ্বে।

২. তিনি ওহী দিয়ে তাঁর আদেশবলে তাঁর যে বান্দার ওপর চান ফেরেশতাদের পাঠান, মানুষদের সতর্ক করে দাও, আমি ছাড়া দ্বিতীয় কোনো মাবুদ নেই, অতএব তোমরা আমাকেই ভয় করো।

৩. তিনি আসমানসমূহ ও যমীনকে যথাবিধি তৈরী করেছেন; তারা যাদের (তাঁর সাথে) শরীক করে তিনি তার চাইতে অনেক ঊধের্ব।

৪. তিনি (ক্ষুদ্র একটি) শুক্রকণা থেকে (যে) মানুষ তৈরী করেছেন- (আশ্চর্যের ব্যাপার!) সে (এখানে এসে স্বয়ং তার স্রষ্টার সাথেই) প্রকাশ্য বিতর্ককারী বনে গেলো!

৫. তিনি চতুস্পদ জানোয়ার পয়দা করেছেন, তোমাদের জন্যে ওতে শীত বস্ত্রের উপকরণ (সহ) আরো অনেক ধরনের উপকার রয়েছে, (সর্বোপরি) তাদের কিছু অংশ তোমরা তো আহারও করে থাকো,

৬. তোমরা যখন গোধূলিলগ্নে ওদের ঘরে ফিরিয়ে আনো, আবার প্রভাতে যখন ওদের (চারণভূমিতে) নিয়ে যাও, তখন এর মাঝে তোমাদের জন্যে (নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপকরণ থাকে,

৭. তোমাদের (পণ্য সামগ্রীর) বোঝাও তারা (এমন দূর-দুরান্তের) শহরে ( বন্দরে) নিয়ে যায়, যেখানে প্রাণান্তকর কষ্ট ব্যতিরেকে তোমরা (কোনোদিনই সেসব পণ্য নিয়ে) পৌঁছতে পারতে না; অবশ্যই তোমাদের মালিক তোমাদের ওপর স্নেহপরায়ণ ও পরম দয়াল,

৮. (তিনি) ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা (সৃষ্টি করেছেন), যাতে তোমরা আরোহণ করো, (এ ছাড়া তাতে) শোভা (বর্ধনের ব্যবস্থাও) রয়েছে; তিনি আরো এমন (অনেক ধরনের জন্তু-জানোয়ার) পয়দা করেছেন, যার (পরিমাণ ও উপযোগিতা) সম্পর্কে তোমরা (এখনও পর্য ন্ত) কিছুই জানো না।

৯. আল্লাহ তায়ালার ওপরই ( নির্ভর করে মানুষদের) সরল পথ নির্দেশ করা, (বিশেষ করে) যেখানে (অন্য পথের মধ্যে) কিছু বাঁকা পথও রয়েছে, তিনি যদি চাইতেন তাহলে তিনি তোমাদের সবাইকেই সরল পথে পরিচালিত করতে পারতেন ।

১০. তিনিই আসমান থেকে তোমাদের জন্যে পানি বর্ষণ করেন, তার কিছু অংশ হচ্ছে পান করার আর (কিছু অংশ এমন, সেখানে) তা দ্বারা গাছপালা (জন্মায়) যাতে তোমরা (জন্তু-জানোয়ারদের) প্রতিপালন করো।

১১. সে (পানি) দ্বারা তিনি তোমাদের জন্যে শস্য উৎপাদন করেন- যায়তুন, খেজুর ও আংগুর (সহ) সব ধরনের ফল (জন্মান), অবশ্যই এর মাঝে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে (অনেক) নিদর্শন রয়েছে।

১২. তিনি তোমাদের (সুবিধার জন্যে রাত, দিন ও চাঁদ সুরুজকে নিয়ন্ত্রিত করে দিয়েছেন; নত্ররাজিও তাঁর আদেশে নিয়ন্ত্রণাধীন (রয়েছে), অবশ্যই এর মাঝে তাদের জন্যে (প্রচুর) নিদর্শন রয়েছে যারা বোধশক্তিসম্পন্ন,

১৩. রং বে-রংয়ের আরো অনেক বস্তুও (তিনি তোমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন করেছেন), যা পৃথিবীর বুকে তিনি তোমাদের জন্যেই সৃষ্টি করে রেখেছেন; অবশ্যই এসব (কিছুর) মাঝে সেসব জাতির জন্যে নিদর্শন রয়েছে যারা (এসব থেকে নসীহত গ্রহণ করে।

১৪. তিনিই সমুদ্রকে (তোমাদের) অধীনস্থ করে দিয়েছেন, যেন তার মধ্য থেকে তোমরা তাজা মাছ খেতে পারো এবং তা থেকে তো তোমরা (মণিমুক্তার গহনাও আহরণ করো, যা তোমরা পরিধান করো, তোমরা দেখতে পাচ্ছো, কিভাবে ওর বুক চিরে জলযানগুলো এগিয়ে চলে, যেন তোমরা এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ (রেযেক) সন্ধান করতে পারো, (সর্বোপরি) তোমরা যেন তাঁর (নেয়ামতের) কৃতজ্ঞতা আদায় করো।

১৫. তিনিই যমীনের মধ্যে পাহাড়সমূহ রেখে দিয়েছেন, যাতে করে যমীন তোমাদের নিয়ে (এদিক সেদিক) ঢলে না পড়ে, তিনিই নদী ও পথঘাট বানিয়ে দিয়েছেন, যাতে করে তোমরা (সব জায়গা দিয়ে নিজেদের) গন্তব্যস্থলে পৌঁছুতে পারো,

১৬. (তিনি তোমাদের জন্যে) বিভিন্ন (ধরণের) চিহ্ন সৃষ্টি করেছেন, (তা ছাড়া) নত্রের (অবস্থান) দ্বারাও তারা পথের দিশা পায়।

১৭. অতপর (তোমরাই বলো,) যিনি (এতো কিছু) সৃষ্টি করেন তিনি কি (করে) তার মতো (হবেন) যে কিছু সৃষ্টিই করতে পারে না; তোমরা কি (এ থেকে) কোনো উপদেশ গ্রহণ করবে না?

১৮. তোমরা যদি (তোমাদের ওপর) আল্লাহ তায়ালার নেয়ামতগুলো গণনা করতে চাও, তাহলে কখনো তা গণনা (করে শেষ) করতে পারবে না; নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা অসীম ও পরম দয়ালু।

১৯. তোমরা যা কিছু গোপন রাখো আর যা কিছু প্রকাশ করো, আল্লাহ তায়ালা তা সবই জানেন।

২০. আল্লাহ তায়ালাকে বাদ দিয়ে এরা কার্যসিদ্ধির জন্যে যাদের ডাকে, তারা তো নিজেরা কিছুই পয়দা করতে পারে না, বরং তাদেরই সৃষ্টি করা হয়;

২১. সেগুলো তো হচ্ছে (কতিপয়) মৃত (বস্তু), জীবিত কিছু নয়, (অথচ) তাদের (এটুকুও) বোধ নেই যে, তাদের কখন আবার উঠিয়ে আনা হবে।

২২. (হে মানুষ,) তোমাদের মাবুদ তো একজন (তিনি ছাড়া দ্বিতীয় কোনো মাবুদ নেই), অতপর যারা পরকালের ওপর ঈমান আনে না তাদের অ ন্তরসমূহ (এমনিই সত্য) অস্বীকারকারী হয়ে পড়ে এবং এরা নিজেরাও হয় (দারুণ) অহংকারী।

২৩. নিসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা জানেন, এরা যা কিছু গোপন করে এবং যা কিছু প্রকাশ করে, অহংকারীদের পছন্দ করেন না।
তিনি কখনো

২৪. যখন এদের (এ মর্মে) জিজ্ঞেস করা হয়, তোমাদের মালিক কি ধরনের জিনিস নাযিল করলেন, তখন তারা বলে, তা তো আগের কালের উপকথা (ছাড়া আর কিছুই নয়)।

২৫. ফলে শেষ বিচারের দিন এরা নিজেদের (পাপের) ভার পূর্ণমাত্রায় বহন করবে, (এরা সেদিন) তাদের (পাপের) বোঝাও (বহন করবে) যাদের এরা জ্ঞান (-ভিত্তিক প্রমাণ) ছাড়া গোমরাহ করে দিয়েছিলো; (সেদিন) ওরা যা বহন করবে তা কতো নিকৃষ্ট !

২৬. এর আগেও (অনেক) মানুষ (দ্বীনের বিরুদ্ধে) চক্রান্ত করেছিলো, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাদের (পরিকল্পনার সমগ্র) ইমারত তার ভিত্তিমূল থেকে নির্মূল করে দিয়েছিলেন, তার পর তাদের (এ চক্রান্তরূপী) ইমারতের ছাদ তাদের ওপরই ধসে পড়লো এবং তাদের ওপর এমন (বহু) দিক থেকেই আযাব এসে আপতিত হলো, যা তারা কল্পনাও করতে পারেনি।

২৭. কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা অতপর ওদের (আরো বেশী পরিমাণে) লাঞ্ছিত করবেন, তিনি (তাদের) জিজ্ঞেস করবেন, কোথায় আমার সেসব শরীক যাদের ব্যাপারে তোমরা মানুষদের সাথে বাকবিতন্ডা করতে? যাদের (সঠিক) জ্ঞান দেয়া হয়েছিলো তারা (সেদিন) বলবে, অবশ্যই যাবতীয় অপমান লাঞ্ছনা ও অকল্যাণ (আজ) কাফেরদের ওপরই (আপতিত হবে),

২৮. এরা হচ্ছে তারা, ফেরেশতারা (এমন অবস্থায়) যাদের মৃত্যু ঘটায় যখন তারা নিজেদের ওপর যুলুম করতে থাকে, অতপর তারা আত্মসমর্পণ করে (এবং বলে), আমরা তো কোনো মন্দ কাজ করতাম না; (ফেরেশতারা বলবে) হাঁ, তোমরা যা কিছু করতে আল্লাহ তায়ালা সে সম্পর্কে সম্যক অবহিত রয়েছেন।

২৯. সুতরাং (আজ) জাহান্নামের দরজাসমূহ দিয়ে তোমরা (আগুনে) প্রবেশ করো, সেখানে তোমরা চিরদিন থাকবে, অহংকারীদের আবাসস্থল কতো নিকৃষ্ট!

৩০. (অপরদিকে) পরহেযগার ব্যক্তিদের বলা হবে, তোমাদের মালিক (তোমাদের জন্যে) কি নাযিল করেছেন; তারা বলবে, (হাঁ, এ তো হচ্ছে) মহাকল্যাণ; যারা নেক কাজ করে তাদের জন্যে এ দুনিয়ায়ও কল্যাণ রয়েছে, আর পরকালের ঘর তো হচ্ছে (আরো) উৎকৃষ্ট কল্যাণ; পরহেগার ব্যক্তিদের (এ) আবাস কতো সুন্দর!

৩১. চিরস্থায়ী এক জান্নাত- যাতে তারা প্রবেশ করবে, যার পাদদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে, (উপরন্তু) সেখানে তারা যা কিছুই কামনা করবে তাই তাদের জন্যে (সরবরাহের ব্যবস্থা) থাকবে; এভাবেই আল্লাহ তায়ালা পরহেগার ব্যক্তিদের (তাদের নেক কাজের) প্রতিফল দান করেন,

৩২. এরা হচ্ছে তারা, ফেরেশতারা যাদের পবিত্র অবস্থায় মৃত্যু ঘটাবে, তারা (তাদের উদ্দেশে) বলবে, তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক, (দুনিয়ায়) তোমরা যে আমল করতে তারই কারণে আজ তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করো।

৩৩. (হে নবী, তুমি কি মনে করো,) ওরা (শুধু এ জন্যেই) অপেক্ষা করছে যে, তাদের কাছে (একদিন) ফেরেশতা নাযিল হবে, কিংবা তোমার মালিকের পক্ষ থেকে কোনো (আযাবের) হুকুম আসবে; এদের আগে যারা এসেছিলো তারা এমনটিই করেছে; (এদের ওপর আযাব পাঠিয়ে) আল্লাহ তায়ালা কোনো যুলুম করেননি, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর যুলুম করেছে।

৩৪. অতপর তাদের ওপর তাদের (মন্দ) কাজের শাস্তি আপতিত হলো, (এক সময়) সে আযাব তাদের পরিবেষ্টন করে নিলো, যা নিয়ে তারা (হামেশা) ঠাট্টা বিদ্রূপ করে বেড়াতো।

৩৫. মোশরেকরা বলে, যদি আল্লাহ তায়ালা চাইতেন তাহলে আমরা তো তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কিছুর এবাদাত করতাম না- না আমরা, না আমাদের বাপ দাদারা (অন্য কারো এবাদাত করতো), আমরা (তাঁর অনুমতি ছাড়া) কোনো জিনিস হারামও করতাম না; একই ধরনের কাজ তাদের পূর্ববর্তী লোকেরাও করেছে, (আসলে) রসূলদের ওপর সুস্পষ্ট বাণী পৌঁছে দেয়া ছাড়া আর কোনো (অতিরিক্ত) দায়িত্ব কি আছে?

৩৬. আমি অবশ্যই প্রত্যেক জাতির কাছে রসুল পাঠিয়েছি, যাতে করে (তাদের কাছে সে বলতে পারে,) তোমরা এক আল্লাহ তায়ালার এবাদাত করো এবং আল্লাহ তায়ালার বিরোধী শক্তিসমূহকে বর্জন করো, সে জাতির মধ্যে অতপর আল্লাহ তায়ালা কিছু লোককে হেদায়াত দান করেন, আর কতেক লোকের ওপর গোমরাহী চেপে বসে গেলো; অতএব তোমরা (আল্লাহর) যমীনে পরিভ্রমণ করো তারপর দেখো, যারা (রসূলদের) মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তাদের কি (ভয়াবহ পরিণাম হয়েছিলো!

৩৭. (হে নবী,) তুমি এদের হেদায়াতের ওপর যতোই আগ্রহ দেখাওনা কেন (এরা কখনো হেদায়াত পাবে না ), কেননা আল্লাহ তায়ালা যাকে গোমরাহ করে দিয়েছেন তাকে তিনি সৎপথে পরিচালিত করবেন না, আর এমন লোকদের (আযাব থেকে বাঁচানোর) জন্যে কোনো সাহায্যকারীও নেই!

৩৮. এরা আল্লাহ তায়ালার নামে শক্ত (ধরনের) শপথ করে বলে, যে ব্যক্তির মৃত্যু হয়ে যায় তাকে আল্লাহ তায়ালা কখনো (দ্বিতীয় বার) উঠিয়ে আনবেন না; (হে নবী, তুমি বলো,) হাঁ, (অবশ্যই এটা) তাঁর সত্য ওয়াদা, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তো জানে না,

৩৯. (এটা তিনি) এ জন্যে (করবেন), যে বিষয়ে এরা মতবিরোধ করতো, (কেয়ামতের দিন) তাদের জন্যে তিনি তা স্পষ্ট করে বলে দেবেন এবং যারা (আজ) অস্বীকার করে তারাও (এ কথাটা) জেনে নেবে, তারা সত্যি সত্যিই ছিলো মিথ্যাবাদী।

৪০. আমি যখনই কোনো কিছু (ঘটাতে চাই, তখন সে বিষয়ে আমার বলা কেবল এটুকুই হয় যে, 'হও' অতপর তা (সংঘটিত) হয়ে যায়।

৪১. (স্মরণ রেখো,) যারা আল্লাহর পথে হিজরত করেছে (বিশেষ করে ঈমান আনার কারণে) তাদের ওপর যুলুম হওয়ার পর, আমি অবশ্যই তাদের এ পৃথিবীতেই উত্তম আশ্রয় দেবো; আর আখেরাতের পুরস্কার- তা তো (এর থেকে) অনেক বেশী শ্রেষ্ঠ। (কতো ভালো হতো) যদি তারা কথাটা জানতো!

৪২. যারা (বিপদে) ধৈর্য ধারণ করে এবং যারা আল্লাহর ওপর নির্ভর করে (তাদের জন্যে আখেরাতে অনেক পুরস্কার রয়েছে)।

৪৩. (হে নবী,) আমি তোমার আগেও (এ) মানুষদের মধ্য থেকেই (কিছু ব্যক্তিকে) রসুল বানিয়ে প্রেরণ করেছি- যাদের ওপর আমি ওহী পাঠিয়েছি, অতএব, যদি তোমরা না জানো তাহলে কেতাবধারীদের জিজ্ঞেস করো,

৪৪. (এ সব নবীকে) আমি সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণ ও কেতাব সহকারে পাঠিয়েছি, (একইভাবে আজ) তোমার কাছেও কেতাব নাযিল করেছি, যাতে করে যে (শিক্ষা) মানুষদের জন্যে তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, তুমি তা তাদের সুস্পষ্টভাবে বোঝাতে পারো, যেন তারা (নিজেরাও একটু) চিন্তা ভাবনা করে।

৪৫. যারা (আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে হীন চক্রান্ত করে, তারা কি এ বিষয়ে নিশ্চিত (ও নিরাপদ) হয়ে গেছে যে, আল্লাহ তায়ালা (এ জন্যে) তাদের ভূগর্ভে ধসিয়ে দেবেন না, কিংবা এমন কোনো দিক থেকে তাদের ওপর আযাব এসে আপতিত হবে না, যা তারা কখনো চিন্তাও করতে পারেনি!

৪৬. কিংবা তাদের তিনি (এমন সময়) পাকড়াও করবেন, যখন তারা চলাফেরা করতে থাকবে, এরা কখনোই তাঁকে (তাঁর কোনো কাজে) অক্ষম করে দিতে পারবে না,

৪৭. অথবা (এমন হবে যে, প্রথমে) তিনি তাদের (কিছুদূর) চলার (অবকাশ) দেবেন, অতপর পাকড়াও করবেন, অবশ্যই তোমার মালিক একান্ত স্নেহশীল ও পরম দয়ালু।

৪৮. এরা কি আল্লাহ তায়ালা যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তার প্রতি লক্ষ করে না যে, তার ছায়া আল্লাহর সামনে সাজদাবনত অবস্থায় (কখনো) ডান দিক থেকে (কখনো) বাঁ দিক থেকে (তাঁরই উদ্দেশে) ঢলে পড়ে, এরা সবাই তাঁর সামনে অক্ষমতা প্রকাশ করে যাচ্ছে।

৪৯. যা কিছু আছে আসমানসমূহে এবং এ যমীনে বিচরণশীল যা কিছু আছে, আছে যতো ফেরেশতাকুল, তারা সবাই আল্লাহকে সাজদা করে যাচ্ছে, এদের কেউই (নিজেদের) বড়াই (যাহির) করে না।

৫০. (উপরন্তু) তারা ভয় করে তাদের মালিককে, যিনি (তাদের ওপর) পরাক্রমশালী, তাঁর পক্ষ থেকে তাদের যা আদেশ করা হয় তা তারা (বিনীতভাবে) পালন করে।

৫১. (হে মানুষ,) আল্লাহ তায়ালা বলছেন, তোমরা (আনুগত্যের জন্যে) দু'জন মাবুদ গ্রহণ করো না, মাবুদ তো শুধু একজন, সুতরাং তোমরা আমাকেই ভয় করো।

৫২. আকাশমন্ডলী ও যমীনের (যেখানে) যা কিছু আছে তা সবই তাঁর জন্যে, জীবন বিধানকে তাঁর অনুগত করে দেয়াই কর্তব্য; (এরপরও কি) তোমরা আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করবে।

৫৩. নেয়ামতের যা কিছু তোমাদের কাছে আছে তা তো আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকেই এসেছে। অতপর তোমাদের যদি কোনো দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করে তখন (তা দূর করার জন্যে) তাঁকেই তোমরা বিনীতভাবে ডাকতে শুরু করো,

৫৪. অতপর আল্লাহ তায়ালা যখন তা দূরীভূত করে দেন, তখন তোমাদেরই এক দল লোক তাদের মালিকের সাথে অন্যদের শরীক বানিয়ে নেয়,

৫৫. যাতে করে আমি তাদের যা (নেয়ামত) দান করেছি তারা তা অস্বীকার করতে পারে; সুতরাং (কিছুদিনের জন্যে এ জীবনটা) তোমরা ভোগ করে নাও, অচিরেই তোমরা (এ অকৃতজ্ঞতার পরিণাম) জানতে পারবে।

৫৬. আমি ওদের যা কিছু রেযেক দান করেছি তার একাংশকে ওরা এমন সবার জন্যে নির্ধারণ করে নেয়; যারা (মূলত) জানেও না (রেযেকের উৎসমূল কোথায়?) আল্লাহ তায়ালার শপথ, তোমরা (তাঁর সম্পর্কে ) যে মিথ্যা অপবাদ দিতে সে সম্পর্কে অবশ্যই তোমাদের প্রশ্ন করা হবে!

৫৭. এ (মোশরেক) ব্যক্তিরা কন্যা সন্তানদের আল্লাহর জন্যে নির্ধারণ করে, (অথচ) আল্লাহ তায়ালা এসব (কিছু) থেকে অনেক পবিত্র, মহিমান্বিত, ওরা নিজেদের জন্যে তাই কামনা করে যা তারা পছন্দ করে।

৫৮. অথচ যখন এদের কাউকে কন্যা (জন্ম) হওয়ার সুখবর দেয়া হয়, তখন (দুঃখে ব্যথায়) তার মুখ কালো হয়ে যায় এবং সে অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট হয়,

৫৯. যে বিষয়ে তাকে সুসংবাদ দেয়া হয়েছিলো তার মনের কষ্টের কারণে সে (তার) জাতির লোকদের কাছ থেকে আত্মগোপন করে থাকতে চায় (ভাবতে থাকে); সে কি এ (সদ্যপ্রসূত কন্যা সন্তান)-কে অপমানের সাথে রাখবে, না তাকে মাটিতে পুঁতে ফেলবে? ভালোভাবে শুনে রাখো, (আসলে কন্যা সন্তান সম্পর্কে ) ওরা যা সিদ্ধান্ত করে তা অতি নিকৃষ্ট!

৬০. (বস্তুত) যারা আখেরাত দিবসের ওপর ঈমান আনে না, তাদের জন্যে এ ধরনের নিকৃষ্ট পরিণামই রয়েছে, আর আল্লাহ তায়ালার জন্যেই সর্বশ্রেষ্ঠ পরিণাম, তিনি মহাপরাক্রমশালী ও প্রবল প্রজ্ঞাময়।

৬১. আল্লাহ তায়ালা মানুষদের তাদের নাফরমানীর জন্যে যদি (সাথে সাথেই) পাকড়াও করতেন, তাহলে এ (যমীনের) বুকে কোনো (একটি বিচরণশীল) জীবকেই তিনি ছেড়ে দিতেন না, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাদের এক বিশেষ সময়সীমা পর্যন্ত অবকাশ দেন, অতপর যখন (অবকাশের) সে সময় তাদের সামনে এসে হাযির হয়, তখন তারা (যেমন) মুহূর্তকালও বিলম্ব করতে পারে না, (তেমন) তাকে তারা একটুখানি এগিয়েও আনতে পারে না।

৬২. এরা আল্লাহ তায়ালার জন্যে সে বিষয়টি প্রস্তাব করে যা স্বয়ং তারা (নিজেদের জন্যেও) পছন্দ করে না, তাদের জিহ্বা তাদের জন্যে মিথ্যা কথা বলে যে, (পরকালে) তাদের জন্যেই সব কল্যাণ রয়েছে; (অথচ) তাদের জন্যে সেখানে থাকবে (জাহান্নামের) আগুন এবং তারাই (সেখানে) সবার আগে নিক্ষিপ্ত হবে।

৬৩. (হে নবী,) আল্লাহর শপথ, তোমার আগেও আমি জাতিসমূহের কাছে নবী পাঠিয়েছিলাম, অতপর শয়তান তাদের (খারাপ) কাজসমূহ তাদের জন্যে শোভনীয় করে দিয়েছিলো, সে (শয়তান) আজো তাদের বন্ধু হিসেবেই (হাযির) আছে, তাদের (সবার) জন্যেই রয়েছে কঠোর আযাব।

৬৪. (হে নবী,) আমি তোমার ওপর (এ) কেতাব এ জন্যেই নাযিল করেছি যেন তুমি তাদের সামনে সে বিষয়সমূহ সুস্পষ্ট করে পেশ করতে পারো, (যে বিষয়ের মধ্যে) তারা মতবিরোধ করেছে, বস্তুত এ (কেতাব) হচ্ছে ঈমানদার লোকদের জন্যে হেদায়াত ও (আল্লাহ তায়ালার) অনুগ্রহস্বরূপ।

৬৫. আল্লাহ তায়ালা আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতপর (একবার) মুর্দা হয়ে যাওয়ার পর সে পানি দিয়ে তিনি যমীনকে জীবিত করে তোলেন; অবশ্যই এতে (আল্লাহর কুদরতের) বহু নিদর্শন রয়েছে সে জাতির জন্যে, যারা (আল্লাহর কথা কান দিয়ে) শোনে।

৬৬. অবশ্যই তোমাদের জন্যে গৃহপালিত জন্তু জানোয়ারের মাঝে (প্রচুর) শিক্ষার বিষয় রয়েছে, তাদের উদরস্থিত (দুর্গন্ধময়) গোবর ও (নাপাক) রক্তের মধ্য থেকে নিসৃত (পানীয়) খাঁটি দুধ আমিই তোমাদের পান করাই, পানকারীদের জন্যে (এটি) বিশুদ্ধ ও সুস্বাদু।

৬৭. খেজুর এবং আংগুর ফলের মধ্যেও (শিণীয় বিষয় রয়েছে), তা থেকে তোমরা নেশাকর (হারাম) জিনিস যেমন বের করে আনছো, তেমনি (তা থেকে হালাল এবং) উত্তম রেযেকও তোমরা লাভ করছো, নিসন্দেহে এতে (আল্লাহর কুদরতের) অনেক নিদর্শন আছে তাদের জন্যে, যারা জ্ঞানসম্পন্ন সম্প্রদায়ের লোক।

৬৮. তোমার মালিক মৌমাছিকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, পাহাড়ের (গায়ে) গাছে (-র ডালে) এবং (অন্য কিছুর ওপর যা তোমরা বানাও তার ওপর নিজেদের থাকার ঘর নির্মাণ করো,

৬৯. তারপর প্রত্যেক ফল থেকে (রস আহরণ করে তা) খেতে থাকো, অতপর তোমার মালিকের (নির্ধারিত) পথ ধরে পূর্ণ আনুগত্যের সাথে (সেদিকে) এগিয়ে চলো; (এভাবে) তার পেট থেকে রং বেরঙের পানীয় (দ্রব্য) বের হয়, যার মধ্যে মানুষদের নিরাময়ের ব্যবস্থা রয়েছে; (অবশ্য) এতেও নিদর্শন রয়েছে সে সম্প্রদায়ের জন্যে, যারা (আল্লাহর এ সৃষ্টি বৈচিত্র্য নিয়ে) চি ন্তা করে।

৭০. আল্লাহ তায়ালাই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, অতপর তিনিই তোমাদের মৃত্যু দেবেন। তোমাদের কোনো ব্যক্তি (এমনও হবে যে, সে) বৃদ্ধ বয়সের দুর্বলতম স্তর পর্য ন্ত পৌঁছে যাবে, এতে করে (কৈশোরে এবং যৌবনে কোনো বিষয়ে) জানার পর সে (পুনরায়) অজ্ঞ হয়ে যাবে, আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই সর্বজ্ঞ, (তিনিই) সর্বশক্তিমান।

৭১. আল্লাহ তায়ালা তোমাদের কাউকে কারো ওপর রেযেকের ব্যাপারে প্রাধান্য দিয়ে রেখেছেন, অতপর যাদের (এ ব্যাপারে) শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে তারা (আবার) তাদের অধীনস্থ দাস দাসীদের নিজেদের সামগ্রী থেকে কিছুই দিতে চায় না, (তাদের আশংকা হচ্ছে, এমনটি করলে) এ ব্যাপারে তারা উভয়েই সমান (পর্যায়ের) হয়ে যাবে; তবে কি এরা আল্লাহর এ নেয়ামত অস্বীকার করে?

৭২. আল্লাহ তায়ালাই তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জোড় পয়দা করেছেন এবং তোমাদের এ যুগল (দম্পতি) থেকে তিনি তোমাদের পুত্র পৌত্রাদি সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি তোমাদের উত্তম রেযেক দান করেছেন; তারপরও কি এরা বাতিলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবে আর আল্লাহর নেয়ামত অবিশ্বাস করবে?

৭৩. এবং এরা কি আল্লাহ তায়ালাকে বাদ দিয়ে তাদের (বানানো মাবুদদের) গোলামী করবে, যাদের আকাশমন্ডলী ও যমীনের (কোথাও) থেকে কোনো প্রকারের রেযেক সরবরাহ করার কোনো ক্ষমতা নেই।

৭৪. সুতরাং (হে মানুষ,) তোমরা আল্লাহ তায়ালার কোনো সদৃশ দাঁড় করিয়োনা, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা (সব কিছু) জানেন, তোমরা কিছুই জানো না।

৭৫. আল্লাহ তায়ালা (এখানে অপরের) অধিকারভুক্ত একটি দাসের উদাহরণ দিচ্ছেন, যে (নিজে থেকে) কোনো কিছুই করার মতা রাখে না- (উদাহরণ দিচ্ছেন) এমন ব্যক্তির (সাথে), যাকে আমি আমার পক্ষ থেকে উত্তম রেযেক দান করেছি এবং সে তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে চলেছে; (তোমরা কি মনে করো) এরা উভয়েই সমান? (না কখনো নয়,) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্যে; কিন্তু এদের অধিকাংশ মানুষই কিছু জানে না।

৭৬. আল্লাহ তায়ালা আরো দু'জন মানুষের উদাহরণ দিচ্ছেন, তাদের একজন হচ্ছে মূর্খ- সে কোনো কিছুই নিজে থেকে করতে (বা বলতে) পারে না, সে (সব সময়) নিজের মনিবের ওপর বোঝা হয়ে থাকে, যেখানেই তাকে সে পাঠায় না কেন, সে কোনো ভালো কিছু নিয়ে আসতে পারে না; এ (অক্ষম) ব্যক্তিটি কি সমান হতে পারে সে ব্যক্তির, যে (নিজে মুর্খ তো নয় বরং) সে অন্য মানুষদের ন্যায় কাজের আদেশ দিতে সক্ষম, (সর্বোপরি ) যে ব্যক্তি সহজ সরল পথের ওপর আছে!

৭৭. আসমানসমূহ ও যমীনের যাবতীয় গায়েব (সংক্রান্ত জ্ঞান) একমাত্র আল্লাহর জন্যেই (নির্দিষ্ট রয়েছে), কেয়ামতের ব্যাপারটি তো (তাঁর কাছে) চোখের পলকের চাইতে (বেশী) কিছু নয়, বরং তা তার চাইতেও নিকটবর্তী; আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই সর্ববিষয়ের ওপর শক্তিমান।

৭৮. আল্লাহ তায়ালা তোমাদের মায়ের পেট থেকে (এমন এক অবস্থায়) বের করে এনেছেন যে, তোমরা (তার) কিছুই জানতে না, অতপর তিনি তোমাদের কান, চোখ ও দিল দিয়েছেন, যাতে করে তোমরা শোকর আদায় করতে পারো।

৭৯. এরা কি পাখীটির দিকে তাকিয়ে দেখে না? যে আকাশের শূন্যগর্ভে (সহজে) বিচরণ করছে, আল্লাহ তায়ালা ছাড়া এমন কে আছে যিনি এদের (শূন্যের মাঝে) স্থির করে ধরে রাখেন, অবশ্যই এ (ব্যবস্থাপনার) মাঝে ঈমানদার সম্প্রদায়ের জন্যে অনেক নিদর্শন রয়েছে।

৮০. আল্লাহ তায়ালাই তোমাদের জন্যে তোমাদের ঘরগুলোকে (শান্তির) নীড় বানিয়েছেন, তিনিই তোমাদের জন্য পশুর চামড়া দিয়ে (তাঁরর হালকা) ঘর বানাবার ব্যবস্থা করেছেন, যাতে তোমরা ভ্রমণের দিনে তা সহজভাবে (বহন) করে নিতে পারো, আবার কোথাও অবস্থান নেয়ার সময়ও (তা ব্যবহার করতে পারো), ওদের পশম, ওদের লোম, ওদের কেশ থেকে তিনি একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্যে তোমাদের অনেক ব্যবহার (উপযোগী) সামগ্রী বানাবার ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন।

৮১. আল্লাহ তায়ালা যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তা থেকে তিনি তোমাদের জন্যে ছায়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, তিনিই তোমাদের জন্যে পাহাড়ের মাঝে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন, তিনি (আরো) ব্যবস্থা করেছেন তোমাদের জন্যে পরিধেয় বস্ত্রের, যা তোমাদের ( প্রচন্ড) তাপ থেকে রক্ষা করে, (আরো) ব্যবস্থা করেছেন (এমন) পরিধেয়সমূহের যা তোমাদেরকে তোমাদের সমস্যা সংকট থেকে বাঁচিয়ে রাখে; এভাবেই তিনি তোমাদের ওপর তাঁর নেয়ামতসমূহ পূর্ণ করে দেন, যাতে করে তোমরা তাঁর অনুগত (বান্দা) হতে পারো।

৮২. যদি তারা (সত্য থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে (তুমি জেনে রেখো, তাদের কাছে) সুস্পষ্ট বক্তব্য পৌঁছে দেয়াই হচ্ছে তোমার একমাত্র দায়িত্ব।

৮৩. এ (সব) লোকেরা আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত ভালো করেই চেনে, অতপর তারা তা অস্বীকার করে, (আসলে) ওদের অধিকাংশ (মানুষ)-ই হচ্ছে অকৃতজ্ঞ।

৮৪. (স্মরণ করো,) যেদিন আমি প্রতিটি সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে এক একজন সাক্ষী উঠিয়ে আনবো, অতপর কাফেরদের কোনো রকম (কৈফিয়ত দেয়ার) অনুমতি দেয়া হবে না- না তাদের (সেদিন) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে কোনো সুযোগ দেয়া হবে।

৮৫. (সেদিন) যখন যালেমরা আযাব দেখতে পাবে (তখন চীৎকার করে তা থেকে বাঁচার চেষ্টা করবে), কিন্তু (কোনো চীৎকারেই) তাদের ওপর থেকে শাস্তি লঘু করা হবে না, না (এ ব্যাপারে) তাদের কোনোরকম অবকাশ দেয়া হবে।

৮৬. মোশরেক ব্যক্তিরা যাদের আল্লাহর সাথে শরীক করেছিলো, (সেদিন) যখন তারা সেসব লোকদের দেখবে, তখন বলবে, হে আমাদের মালিক, এরাই তো আমাদের সেসব শরিক লোক- যাদের আমরা তোমার বদলে ডাকতাম, অতপর সে (শরীক কিংবা মোশরেক) ব্যক্তিরা উল্টো তাদের ওপরই অভিযোগ নিক্ষেপ করে বলবে, না, (আসলে) তোমরাই হচ্ছো মিথ্যাবাদী,

৮৭. তখন এ (মোশরেক) ব্যক্তিরা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করবে, যা কিছু কথা তারা উদ্ভাবন করতো (সেদিন) তা নিষ্ফল হয়ে যাবে।

৮৮. যারা কুফরী করেছে এবং (অন্য মানুষদেরও) আল্লাহর পথ থেকে বাধা দিয়েছে, আমি (সেদিন) তাদের আযাবের ওপর আযাব বৃদ্ধি করবো, এটা হচ্ছে তাদের (সেই) অশান্তি ও ফাসাদের শাস্তি, যা তারা (দুনিয়ায়) করে এসেছে।

৮৯. (সেদিনের কথাও স্মরণ করো,) যেদিন আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মধ্যে স্বয়ং তাদেরই মধ্য থেকে তাদের ওপর একজন সাক্ষী উত্থিত করবো এবং এ লোকদের ওপর আমি তোমাকেও সাক্ষীরূপে নিয়ে আসবো; আমি তোমার ওপর কেতাব নাযিল করেছি, মুসলমানদের জন্যে এ কেতাব হচ্ছে (দ্বীন সম্পর্কিত) সব কিছুর ব্যাখ্যা, (আল্লাহর) হেদায়াত ও মুসলমানদের জন্যে (জান্নাতের) সুসংবাদস্বরূপ।

৯০. অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্তীয় স্বজনকে দান করার নির্দেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসৎ কাজকর্ম ও সীমালংঘনজনিত সব কাজ থেকে নিষেধ করেন, তিনি তোমাদের (এগুলো মেনে চলার) উপদেশ দেন, যাতে করে তোমরা এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারো।

৯১. যখন তোমরা (নিজেদের মধ্যে) আল্লাহর নামে কোনো অংগীকার করো, তখন তা পূর্ণ করো এবং (একবার) এ (শপথ)-কে পাকাপোক্ত করে নেয়ার পর তা ভংগ করো না, কেননা (এ শপথের জন্যে) তোমরা আল্লাহকে অভিভাবক বানিয়ে নিয়েছো; অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা জানেন তোমরা (কখন কোথায়) কি করো।

৯২. তোমরা কখনো সেই নারীর মতো হয়ো না, যে অনেক পরিশ্রম করে নিজের জন্যে কিছু) সুতা কাটলো, কিন্তু পরে তা (নিজেই) টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেললো; তোমরা তো তোমাদের পারস্পরিক ব্যাপারে (নিজেদের) শপথগুলো ধোকা প্রবঞ্চনার উদ্দেশে ব্যবহার করো, যাতে করে (তোমাদের) এক দল আরেক দল থেকে অগ্রগামী হয়ে যেতে পারে; (আসলে) আল্লাহ তায়ালা এ বিষয়টি দিয়ে তোমাদের পরীক্ষা নেন মাত্র; (তা ছাড়া) তোমরা যেসব বিষয়ে মতবিরোধ করছো, কেয়ামতের দিন অবশ্যই তিনি তা (সবার সামনে) প্রকাশ করে দেবেন।

৯৩. আল্লাহ তায়ালা যদি চাইতেন তাহলে তোমাদের সবাইকে এক জাতি বানিয়ে দিতে পারতেন, তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে বিভ্রান্ত করেন আবার যাকে ইচ্ছা তাকে সৎপথে পরিচালিত করেন; তোমরা কি করতে সে সম্পর্কে তোমাদের অবশ্যই প্রশ্ন করা হবে।

৯৪. তোমরা তোমাদের শপথগুলো পরস্পরকে প্রবঞ্চনা করার উদ্দেশে গ্রহণ করো না, (এমন করলে মানুষের) পা একবার স্থির হওয়ার পর পুনরায় পিছলে পড়ে যাবে এবং আল্লাহর পথ থেকে মানুষদের বাধা দেয়ার কারণে (এ দুনিয়ায়ও) তোমাদের শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করতে হবে, আর (আখেরাতেও) তোমাদের জন্যে থাকবে কঠোর আযাব।

৯৫. তোমরা আল্লাহর (নামে) অংগীকারকে (দুনিয়ার) সামান্য স্বার্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়ো না; (সততা ও বিশ্বস্ততার পুরস্কার) যা আল্লাহর কাছে আছে তা তোমাদের জন্যে অনেক উত্তম, যদি তোমরা জানতে!

৯৬. যা কিছু (সহায় সম্পদ) তোমাদের কাছে আছে তা (একদিন) নিশেষ হয়ে যাবে, অপরদিকে আল্লাহর কাছে (এর) যা (বিনিময়) আছে তা (হামেশাই) বাকী থাকবে; (সে আশায়) যারা ধৈর্য ধারণ করেছে এবং (ভালো কাজ) করেছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাদের (সেসব) কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেবেন।

৯৭. (তোমাদের) পুরুষ কিংবা নারীর মধ্যে যে ব্যক্তিই কোনো নেক কাজ করবে এমতাবস্থায় যে, সে হবে যথার্থ মোমেন, তাহলে অবশ্যই তাকে আমি দুনিয়ার বুকে পবিত্র জীবন যাপন করাবো এবং আখেরাতের জীবনেও তাদের (দুনিয়ার) জীবনের কার্যক্রমের অবশ্যই উত্তম বিনিময় দান করবো।

৯৮. অতপর তোমরা যখন কোরআন পড়তে শুরু করবে তখন বিতাড়িত শয়তানের (ওয়াসওয়াসা) থেকে আল্লাহর
কাছে আশ্রয় চাও।

৯৯. যারা (আল্লাহর ওপর) ঈমান আনে এবং (যাবতীয় কার্যকলাপে) তাদের মালিকের ওপর ভরসা করে, তাদের ওপর (শয়তানের) কোনোই আধিপত্য নেই।

১০০. তার সব আধিপত্য তো তাদের ওপরই (চলে), যারা তাকে বন্ধু (ও অভিভাবক) হিসেবে গ্রহণ করেছে, (উপরন্তু) যারা তাঁর (আল্লাহর) সাথে শরীক করেছে।

১০১. (হে নবী,) আমি যখন এক আয়াত পরিবর্তন করে তার জায়গায় আরেক আয়াত নাযিল করি- (অথচ) আল্লাহ তায়ালা যা কিছু নাযিল করেন তা তিনি ভালো করেই জানেন- তখন তারা বলে, তুমি তো এগুলো এমনিই নিজ থেকে বানিয়ে নিচ্ছো; (আসলে) তাদের অধিকাংশ মানুষই (আল্লাহর সূক্ষ রহস্য) জানে না।

১০২. তুমি তাদের বলো, হাঁ এ (কোরআন)-কে জিবরাঈল (ফেরেশতা) তোমার মালিকের কাছ থেকে ঠিকভাবেই নাযিল করেছে, যাতে করে যারা আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছে তাদের তিনি সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন, (সর্বোপরি) এটা যেন হয় অনুগত বান্দাদের পথনির্দেশ ও (জান্নাতের সুসংবাদবাহী।

১০৩. (হে নবী,) আমি ভালো করেই জানি (এরা তোমার ব্যাপারে কি বলে), এরা বলে, এ (কোরআন) তো একজন মানুষ (এসে) এ ব্যক্তিকে পড়িয়ে দিয়ে যায়; (অথচ) যে ব্যক্তিটির দিকে এরা ইংগিত করে তার ভাষা আরবী নয়, আর এ (কোরআন) হচ্ছে সুস্পষ্ট আরবী ভাষা।

১০৪. (আসল কথা হচ্ছে,) যারা আল্লাহর আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে না, আল্লাহ তায়ালাও তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করেন না, আর তাদের জন্যেই মর্মান্তিক আযাব রয়েছে।

১০৫. নিজের পক্ষ থেকে কথা বানানো (কখনো নবীর কাজ হতে পারে না, বরং এটা) হচ্ছে তাদের কাজ, যারা আল্লাহর আয়াতের ওপর ঈমান আনে না, (আসলে) এরাই হচ্ছে মিথ্যাবাদী।

১০৬. যে ব্যক্তি একবার ঈমান আনার পর কুফরী করে, যদি তাকে (কুফরী বাক্য উচ্চারণ করতে) বাধ্য করা হয়, অথচ তার অন্তর ঈমানের ওপরই সন্তুষ্ট থাকে (তাহলে আল্লাহ তায়ালা তা হয়তো মাফ করে দেবেন), কিন্তু যে তার অ ন্তরকে কুফরীর জন্যে (সদা) উন্মুক্ত করে রাখে তাদের ওপর আল্লাহর গযব, তাদের জন্যেই রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।

১০৭. এটা এ জন্যে যে, তারা দুনিয়ার জীবনকে আখেরাতের ওপর প্রাধান্য দিয়েছে, আল্লাহ তায়ালা কখনো কাফের সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন না।

১০৮. এরাই হচ্ছে সেসব লোক যাদের অন্তরে, (যাদের) কানে ও (যাদের) চেখের ওপর আল্লাহ তায়ালা সিল এঁটে দিয়েছেন, (আসলে) এরা সবাই (ভয়াবহ আযাব সম্পর্কে ) গাফেল।

১০৯. নিশ্চয়ই ওরা আখেরাতে (ভীষণ) ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

১১০. (এর বিপরীত) যারা (ঈমানের পথে) নির্যাতিত হওয়ার পর হিজরত করে, অতপর (আল্লাহর পথে) জেহাদ করে এবং (বিপদে) ধৈর্য ধারণ করে (হে নবী), অবশ্যই তোমার মালিক এ (পরীক্ষা)-র পর তাদের প্রতি অসীম ও পরম দয়ালু (হবেন)।

১১১. (স্মরণ করো,) যেদিন প্রত্যেক ব্যক্তিই আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তি প্রদর্শন করতে ( এগিয়ে আসবে, প্রত্যেক ব্যক্তিকেই (কানাকড়ি হিসাব করে) তার কৃতকর্মের প্রতিফল আদায় করে দেয়া হবে এবং তাদের (কারো) ওপর কোনো রকম অবিচার করা হবে না।

১১২. আল্লাহ তায়ালা এমন একটি জনপদের উদাহরণ (তোমাদের সামনে) উপস্থাপন করছেন, যা ছিলো নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত, (সেখানে) চারদিক থেকে তাদের কাছে প্রচুর পরিমাণ রেযেক আসতো, অতপর (এক পর্যায়ে) তারা আল্লাহর নেয়ামত অস্বীকার করলো, ফলে তারা যে আচরণ করে বেড়াতো তার শাস্তি হিসেবে আল্লাহ তায়ালা তাদের ক্ষুধা ও ভীতির পোশাক পরিয়ে শাস্তি দিলেন।

১১৩. অবশ্যই তাদের কাছে তাদেরই মধ্য থেকে একজন রসূল এসেছিলো, অতপর তারা তাকে অস্বীকার করলো, (পরিশেষে আল্লাহর) আযাব তাদের যুলুম করা অবস্থায় পাকড়াও করলো!

১১৪. আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্যে যা কিছু পবিত্র ও হালাল রেযেক দিয়েছেন তোমরা তা আহার করো, যদি তোমরা একান্তভাবে তাঁরই গোলামী করো, তাহলে (এ জন্যে) আল্লাহ তায়ালার নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো।

১১৫. তিনি তো তোমাদের ওপর (শুধু) মৃত (জন্তু), রক্ত এবং শুয়োরের গোশতই হারাম করেছেন, (আরো হারাম করেছেন) এমন জানোয়ার যার ওপর (যবাই করার সময়) আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কারো নাম নেয়া হয়েছে, কিন্তু যদি কাউকে (এর কোনো একটার জন্যে) বাধ্য করা হয়- সে যদি বিদ্রোহী কিংবা সীমালংঘনকারী না হয়, তাহলে (সে যেন জেনে রাখে), আল্লাহ তায়ালা অসীম ও পরম দয়ালু।

১১৬. তোমাদের জিহ্বা আল্লাহ তায়ালার ওপর মিথ্যা আরোপ করে বলেই কখনো একথা বলো না যে, এটা হালাল ও এটা হারাম, (জেনে রেখো,) যারাই আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করে, তারা কখনোই সাফল্য লাভ করতে পারবে না।

১১৭. (তাদের জন্যে এটা পার্থিব জীবনের) সামান্য কিছু সামগ্রী (মাত্র, পরকালে) তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর আযাব।

১১৮. (হে নবী,) ইহুদীদের ওপর আমি সেসব কিছু হারাম করেছি যা ইতিপূর্বে আমি তোমার কাছে বর্ণনা করেছি, (এগুলো হারাম করে) আমি তাদের ওপর কোনো অবিচার করিনি, বরং তারা (আমার আদেশ না মেনে) নিজেরাই নিজেদের ওপর অবিচার করেছে।

১১৯. অতপর অবশ্যই তোমার মালিক (তাদের ওপর দয়া করেছেন) যারা অজ্ঞতাবশত কোনো গুনাহের কাজ করলো, অতপর (অন্যায় বুঝতে পেরে) তাওবা করলো এবং (সে অনুযায়ী) নিজেদের সংশোধনও করে নিলো (হে নবী,) তোমার মালিক অবশ্যই এরপর তাদের জন্যে (হবেন) অসীম ও পরম দয়ালু।

১২০. নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিলো একটি উম্মত (-এর সমমর্যাদাবান, সে ছিলো) আল্লাহর একান্ত অনুগত ও একনিষ্ঠ (বান্দা), সে কখনো মোশরেকদের অ ন্তর্ভুক্ত ছিলো না,

১২১. (সে ছিলো) আল্লাহ তায়ালার নেয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তায়ালা তাকে (নরওতের জন্যে) বাছাই করেছেন এবং তাকে তিনি সরল পথে পরিচালিত করেছেন।

১২২. আমি তাকে দুনিয়াতেও (প্রচুর) কল্যাণ দান করেছি, আর পরকালেও সে নিসন্দেহে নেক মানুষদের অন্তরভুক্ত (হবে),

১২৩. অতপর (হে নবী) আমি তোমার ওপর ওহী পাঠালাম যে, তুমি একনিষ্ঠভাবে ইবরাহীমের মিল্লাত অনুসরণ করো; আর সে কখনো মোশরেকদের দলভুক্ত ছিলো না।

১২৪. শনিবার (পালন করা) তো কেবল তাদের জন্যেই (বাধ্যতামূলক) করা হয়েছিলো, যারা এ (বিষয়টি) নিয়ে (অযথা) মতবিরোধ করেছে; অবশ্যই তোমার মালিক কেয়ামতের দিন তাদের মাঝে সে সব বিষয়ে মীমাংসা করে দেবেন, যেসব বিষয়ে সেখানে তারা মতবিরোধ করতো।

১২৫. (হে নবী,) তুমি তোমার মালিকের পথে (মানুষদের) প্রজ্ঞা ও সদুপদেশ দ্বারা আহ্বান করো, (কখনো তর্কে যেতে হলে) তুমি এমন এক পদ্ধতিতে যুক্তিতর্ক করো যা সবচাইতে উৎকৃষ্ট পন্থা; তোমার মালিক (এটা) ভালো করেই জানেন, কে তাঁর পথ থেকে বিপথগামী হয়ে গেছে, (আবার) যে ব্যক্তি (হেদায়াতের) পথে রয়েছে তিনি তার সম্পর্কে ও সবিশেষ অবহিত আছেন।

১২৬. যদি তোমরা কাউকে শাস্তি দাও তাহলে ঠিক ততোটুকু শাস্তিই দেবে যতোটুকু (অন্যায়) তোমাদের সাথে করা হয়েছে; অবশ্য যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ করো তাহলে (জেনে রেখো,) ধৈর্যশীলদের জন্যে তাই হচ্ছে উত্তম।

১২৭. (হে নবী,) তুমি (নির্যাতন নিপীড়নে) ধৈর্য ধারণ করো, তোমার ধৈর্য (সম্ভব হবে) শুধু আল্লাহ তায়ালার সাহায্য দিয়েই, এদের (আচরণের) ওপর দুঃখ করো না, এরা যে সব ষড়যন্ত্র করে চলেছে তাতে তুমি মনোক্ষুন্ন হয়ো না।

১২৮. অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা তাদের সাথে রয়েছেন যারা (জীবনের সর্বত্র) আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে চলে, (সর্বোপরি) তারা হবে সৎকর্মশীল।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url