আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আল হাক্কাহ’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা আল হাক্কাহ | Surah Al Haqqah | الحآقّة
সূরা আল হাক্কাহ’এর বাংলা অনুবাদ
সূরা আল হাক্কাহ, মক্কায় অবতীর্ণআয়াত ৫২, রুকু ২
সূরা আল হাক্কাহ
রহমান রহীম আল্লাহ তা'আলার নামে
১. একটি অনিবার্য সত্য (ঘটনা)!
২. কি সেই অনিবার্য সত্য (ঘটনা)?
৩. তুমি কি জানো সেই অনিবার্য সত্য ঘটনাটা আসলেই কি?
৪. আ'দ ও সামূদ জাতির লোকেরা মহাপ্রলয় (সংক্রান্ত এমনি একটি সত্য ঘটনা)-কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলো ।
৫.(পরিণামে দাম্ভিক) সামূদ গোত্রের লোকদের এক প্রলয়ংকরী বিপর্যয় দ্বারা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
৬. আর (শক্তিশালী গোত্র) আদকে ধ্বংস করা হয়েছে প্রচন্ড এক ঝঞ্ঝাবায়ুর আঘাতে,
৭. একটানা সাত রাত ও আট দিন ধরে তিনি তাদের ওপর দিয়ে এ প্রচন্ড বায়ু প্রবাহিত করে রেখেছিলেন, (তাকালে) তুমি (সে) জাতিকে দেখতে পেতে, তারা যেন মৃত খেজুর গাছের কতিপয় অন্তসারশূন্য কান্ডের মতো উপুড় হয়ে পড়ে আছে!
৮. তুমি কি দেখতে পাচ্ছো তাদের একজনও কি এ গযব থেকে রক্ষে পেয়েছে?
৯. (দাম্ভিক) ফেরাউন, তার আগের কিছু লোক এবং উপড়ে ফেলা জনপদের অধিবাসীরাও (একই) অপরাধ নিয়ে (ধ্বংসের মুখোমুখি) এসেছিলো,
১০. এরা সবাই (নিজ নিজ যুগে) তাদের মালিকের পক্ষ থেকে যারা রসূল হয়ে এসেছে তাদের অবাধ্যতা করেছে, ফলে আল্লাহ তা'আলা (এ বিদ্রোহের জন্যে) তাদের কঠোরভাবে পাঁকড়াও করলেন ।
১১. (নবী নূহের সময়) যখন পানি (তার নির্দিষ্ট) সীমা অতিক্রম করলো, তখন আমি তোমাদের (বাঁচানোর জন্যে) নৌকায় উঠিয়ে নিয়েছিলাম,
১২. যেন তোমাদের জন্যে আমি তাকে একটি শিক্ষামূলক ঘটনা বানিয়ে রাখতে পারি, তাছাড়া উৎসাহী কানগুলো যেন এ (বিষয়)-টা (পরবর্তী মানুষদের জন্যে) স্মরণ রাখতে পারে।
১৩. অতঃপর যখন শিংগায় ফুঁ দেয়া হবে (তা হবে প্রথমবারের) একটি মাত্র ফুঁ,
১৪. আর (তখন) ভূমন্ডল ও পাহাড় পর্বত (স্বস্থান থেকে) উঠিয়ে নেয়া হবে, অতঃপর উভয়টাকে একবারেই (একটা আরেকটার ওপর ফেলে) চূর্ণবিচূর্ণ করে (লন্ডভন্ড করে) দেয়া হবে,
১৫. (ঠিক) সেদিনই (সে) মহাঘটনাটি সংঘটিত হবে,
১৬. এবং আকাশ ফেটে পড়বে, অতঃপর সেদিন তা বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে,
১৭. ফেরেশতারা (আল্লাহর আদেশ পালন করার জন্যে) আকাশের প্রান্তে অবস্থান করবে; আর (তাদেরই) আট জন ফেরেশতা তোমার মালিকের আরশ" তাদের ওপর বহন করে রাখবে;
১৮. সেদিন (আল্লাহ তা'আলর সামনে) তোমাদের পেশ করা হবে, তোমাদের কোনো কিছুই (সেদিন) গোপন থাকবে না ।
১৯. সেদিন যার আমলনামা তার ডান হাতে দেয়া হবে সে (খুশীতে লোকজনকে ডেকে) বলবে, তোমরা (কে কোথায় আছো এসো) এবং আমার (আমলনামার) পুস্তকটি পড়ে দেখো ।
২০. হ্যাঁ, আমি জানতাম আমাকে একদিন এমনি হিসাব নিকাশের সামনাসামনি হতে হবে,
২১. অতঃপর (বেহেশতের উদ্যানে) সে (চির) সুখের জীবন যাপন করবে,
২২.(সে উদ্যান হবে) আলীশান জান্নাতের মধ্যে,
২৩. এর ফলমূল (তাদের) নাগালের মধ্যেই ঝুলতে থাকবে।
২৪.(আল্লাহর পক্ষ থেকে অভিনন্দনপূর্ণ ঘোষণা আসবে,) অতীতে যা তোমরা (কামাই) করে এসেছো তারই পুরস্কার হিসেবে (আজ) তোমরা (প্রাণভরে এগুলো) খাও এবং তৃপ্তি সহকারে পানীয় গ্রহণ করো।
২৫.(আর সে হতভাগ্য ব্যক্তি), যার আমলনামা সেদিন তার বাম হাতে দেয়া হবে, (দুঃখ ও অপমানে) সে বলবে, কতো ভালো হতো যদি (আজ) আমাকে কোনো রকম আমলনামাই না দেয়া হতো,
২৬. আমি যদি আমার হিসাব (-এর খাতাটি) না-ই জানতাম,
২৭. হায়! (আমার প্রথম) মৃত্যুই যদি আমার জন্যে চূড়ান্ত নিষ্পত্তিকারী (বিষয়) হয়ে যেতো!
২৮. আমার ধন সম্পদ ও ঐশ্বর্য (আজ) কোনো কাজেই লাগলো না,
২৯. (আজ) আমার সব কর্তৃত্ব (ও ক্ষমতা) নিঃশেষ হয়ে গেলো,
৩০.(এ সময় জাহান্নামের প্রহরীদের প্রতি আদেশ আসবে, যাও) তোমরা তাকে পাঁকড়াও করো, এরপর তার গলায় শেকল পরিয়ে দাও,
৩১. অতঃপর তাকে জাহান্নামের (জ্বলন্ত) আগুনে প্রবেশ করাও
৩২. এবং তাকে সত্তর গজ শেকল দিয়ে বেঁধে ফেলো;
৩৩. কেননা, সে কখনো মহান আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেনি,
৩৪. সে কখনো দুস্থ অসহায় লোকদের খাবার দেয়ার জন্যে (অন্যদের) উৎসাহ দেয়নি;
৩৫. (আর এ কারণেই) আজকের এ দিনে তার (প্রতি দয়া দেখানোর) কোনো বন্ধু নেই,
৩৬. (ক্ষতনিসৃত) পুঁজ ছাড়া (আজ তার জন্যে দ্বিতীয়) কোনো খাবারও এখানে থাকবে না,
৩৭. একান্ত অপরাধী ব্যক্তিরা ছাড়া অন্য কেউই (আজ) তা খাবে না।
৩৮. তোমরা যা কিছু দেখতে পাও আমি তার শপথ করছি,
৩৯. (আরো শপথ করছি) সেসব বস্তুর যা তোমরা দেখতে পাও না,
৪০. নিঃসন্দেহে এ কেতাব একজন সম্মানিত রসূলের (আনীত) বাণী,
৪১. এটা কোনো কবির কাব্যকথা নয়; যদিও তোমরা খুব কমই বিশ্বাস করো,
৪২. এটা কোনো গণক কিংবা জ্যোতিষীর কথাও নয়; যদিও তোমরা খুব কমই বিবেক বিবেচনা করে চলো;
৪৩.(মূলত) এ কেতাব বিশ্বজগতের মালিক আল্লাহ তা'আলার কাছ থেকেই (তাঁর রসূলের ওপর) নাযিল করা হয়েছে।
৪৪. রসূল যদি এ (গ্রন্থ)-টি নিজে বানিয়ে আমার নামে চালিয়ে দিতো,
৪৫. তবে আমি অবশ্যই শক্তভাবে তার ডান হাত ধরে ফেলতাম,
৪৬. অতঃপর আমি তার কণ্ঠনালী কেটে ফেলে দিতাম,
৪৭. আর (সে অবস্থায়) তোমাদের কেউই তাকে তাঁর থেকে বাঁচাতে পারতো না!
৪৮. (সত্যি কথা হচ্ছে,) আল্লাহ তা'আলাকে যারা ভয় করে, এ কেতাব তাদের জন্যে উপদেশ বৈ কিছু নয়!
৪৯. আমি ভালো করেই জানি, তোমাদের একদল লোক হবে এ (কেতাব)-কে মিথ্যা সাব্যস্তকারী ।
৫০. এটি তাদের জন্যে গভীর অনুতাপ ও হতাশার কারণ হবে, যারা (আল্লাহ তা'আলা কে) অস্বীকার করে। ৫১. নিঃসন্দেহে এ মহাগ্রন্থ এক অমোঘ সত্য।
৫২. অতএব (হে নবী, এমনি একটি গ্রন্থের জন্যে) তুমি তোমার মহান মালিকের নামের পবিত্রতা বর্ণনা করো।
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url