আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আত তালাক’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা আত তালাক | Surah At-Talaq | الطّلاق


সূরা আত তালাক’এর বাংলা অনুবাদ

সূরা আত তালাক, মদীনায় অবতীর্ণ আয়াত ১২, রুকু ২

সূরা আত তালাক



রহমান রহীম আল্লাহ তা'আলা র নামে

১. হে নবী (তোমার সাথীদের বলো), যখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের তালাক দাও (বা দিতে ইচ্ছা করো), তখন তাদের ইদ্দতের (অপেক্ষার সময়টুকুর) প্রতি (লক্ষ্য রেখে) তালাক দিয়ো, ইদ্দতের যথার্থ হিসাব রেখো এবং (এ ব্যাপারে) আল্লাহ তা'আলা কে ভয় করো, যিনি তোমাদের মালিক প্রভু, ইদ্দতের সময় (কোনো অবস্থায়ই) তাদের নিজেদের বসতবাড়ি থেকে বের করে দিয়ো না, (এ সময়) তারা নিজেরাও যেন তাদের ঘর থেকে বের হয়ে না যায়, তবে যদি তারা কোনো জঘন্য অশ্লীলতা (- জাতীয় অপরাদ) নিয়ে আসে (তাহলে তা ভিন্ন কথা, ইদ্দতের ব্যাপারে) এগুলোই হচ্ছে আল্লাহর সীমারেখা; যে ব্যক্তি আল্লাহর এ সীমারেখা অতিক্রম করে, সে (মূলত এটা দ্বারা) নিজের ওপরই নিজে যুলুম করলো; তুমি তো জানো না এর পর আল্লাহ তা'আলা হয়তো (পুনরায় তোমাদের মাঝে সহৃদয়তার কোনো) একটা পথ বের করে দেবেন।

২. অতঃপর যখন তারা তাদের (ইদ্দতের) সেই নির্ধারিত সময়ে (-র শেষে) উপনীত হয়, তখন তাদের হয় সম্মানজনক পন্থায় (বিয়ে বন্ধনে) রেখে দেবে, না হয় সম্মানের সাথে তাদের আলাদা করে দেবে এবং (উভয় অবস্থায়ই) তোমাদের মধ্য থেকে দুজন ন্যায়পরায়ণ লোককে তোমরা সাক্ষী বানিয়ে রাখবে, (সাক্ষীদেরও বলো), তোমরা শুধু আল্লাহর জন্যেই (এ) সাক্ষ্য দান করবে; যারা আল্লাহ তা'আলা ও শেষ বিচার দিনের ওপর ঈমান আনে, তাদের সবাইকে এর দ্বারা উপদেশ দেয়া হচ্ছে। যে ব্যক্তি আল্লাহ তা'আলা কে ভয় করে, আল্লাহ তা'আলা তার জন্যে (সংকট থেকে বের হয়ে আসার) একটা পথ তৈরী করে দেন,

৩. এবং তিনি তাকে এমন রেযেক দান করেন যার (উৎস) সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই; যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তার জন্যে আল্লাহ তা'আলা ই যথেষ্ট; (কেননা) আল্লাহ তা'আলা তাঁর নিজের কাজটি পূর্ণ করেই নেন; আল্লাহ তা'আলা প্রতিটি জিনিসের জন্যেই একটি পরিমাণ ঠিক করে রেখেছেন ।

৪. তোমাদের স্ত্রীদের মাঝে যারা ঋতুবতী হওয়ার ব্যাপারে নিরাশ হয়ে গেছে, তাদের (ইদ্দতের) ব্যাপারে তোমাদের কোনো সন্দেহ থাকলে (তোমরা) জেনে রেখো, তাদের ইদ্দতের সময় হচ্ছে তিন মাস, (এ তিন মাসের বিধান) তাদের জন্যেও, যাদের এখনও ঋতুকাল শুরুই হয়নি; গর্ভবতী নারীর জন্যে ইদ্দতকাল হচ্ছে তার সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত; (বস্তুত) কেউ যদি আল্লাহকেই ভয় করে, তাহলে আল্লাহ তা'আলা ও (বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিয়ে) তার জন্যে তার প্রত্যেক ব্যাপার সহজ করে দেন ।

৫. (তালাক ও ইদ্দতের ব্যাপারে) এ হচ্ছে আল্লাহ তা'আলা র আদেশ, যা তিনি (মেনে চলার জন্যেই) তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন; অতঃপর যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে চলে, তিনি তার গুনাহখাতাকে (তার হিসাব থেকে) মুছে দেবেন এবং তিনি তার পুরস্কারকেও বড়ো করে দেবেন ।

৬. (ইদ্দতের এ সময়ে) তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী তাদের সে ধরনের বাড়িতে থাকতে দিয়ো, যে ধরনের বাড়িতে তোমরা নিজেরা থাকো, কোনো অবস্থায়ই তাদের ওপর সংকট সৃষ্টি করার মতলবে তাদের কষ্ট দিয়ো না; আর যদি তারা সন্তানসম্ভবা হয়, তাহলে (ইদ্দতের নিয়ম অনুযায়ী) তারা সন্তান প্রসব না করা পর্যন্ত তাদের খোরপোষ দিতে থাকো, (সন্তান জন্মদানের পর) যদি তারা তোমাদের সন্তানদের (নিজেদের) বুকের দুধ খাওয়ায়, তাহলে তোমরা তাদের পারিশ্রমিক আদায় করে দেবে এবং (এ পারিশ্রমিকের অংক ও সন্তানের কল্যাণের ব্যাপারটা) ভালোভাবে নিজেদের মধ্যে ন্যায়সংগত পন্থায় সমাধান করে নেবে, যদি তোমরা একে অন্যের সাথে জেদ করো, তাহলে অন্য কোনো মহিলা এ সন্তানকে দুধ খাওয়াবে;

৭. বিত্তশালী ব্যক্তি তার সংগতি অনুযায়ী (স্ত্রীদের) খোরপোষ দেবে; আবার যে ব্যক্তির অর্থনৈতিক সংগতি সীমিত করে রাখা হয়েছে সে ব্যক্তি ততোটুকু পরিমাণই খোরপোষ দেবে যতোটুকু আল্লাহ তা'আলা তাকে দান করেছেন; আল্লাহ তা'আলা যাকে যে পরিমাণ সামর্থ্য দান করেছেন তার বাইরে কখনো (কোনো) বোঝা তার ওপর তিনি চাপান না; (আল্লাহর ওপর নির্ভর করলে) আল্লাহ তা'আলা (তাকে) অচিরেই অভাব অনটনের পর সচ্ছলতা দান করবেন।

৮. কতো জনপদের মানুষরাই তো নিজেদের মালিক ও তাঁর রসূলের নির্দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলো, অতঃপর আমি তাদের কাছ থেকে (সে জন্যে) কঠিন হিসাব আদায় করে নিয়েছি এবং আমি ওদের কঠোর শাস্তি দিয়েছি।

৯. এরপর তারা ভালো করেই তাদের কৃতকর্মের শাস্তি ভোগ করলো, মূলত তাদের কাজের পরিণাম ফল ( ছিলো ) চরম ক্ষতি।

১০. আল্লাহ তা'আলা (পরকালে) তাদের জন্যে এক কঠিন আযাব প্রস্তুত করে রেখেছেন, অতএব (হে মানুষ), তোমরা যারা জ্ঞানসম্পন্ন, তোমরা যারা আল্লাহ তা'আলার ওপর ঈমান এনেছো, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, আল্লাহ তা'আলা তোমাদের কাছে তাঁর উপদেশবাণী নাযিল করেছেন,

১১. (তিনি আরো পাঠিয়েছেন) তাঁর রসূল, যে তোমাদের আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমুহ পড়ে শোনায়, যাতে করে সে (রসূল) তোমাদের সেসব লোকদের যারা ঈমান এনেছে এবং ভালো কাজ করেছে, তাদের (জাহেলিয়াতের) অন্ধকার থেকে (হেদায়াতের) আলোতে নিয়ে আসতে পারে; তোমাদের যে কেউই আল্লাহর ওপর ঈমান আনে এবং ভালো কাজ করে, আল্লাহ তা'আলা তাকেই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন ( এমন এক জান্নাতে), যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে। সেখানে তারা অনন্তকাল ধরে অবস্থান করবে; এমন লোকের জন্যে অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা উত্তম রেযেকের ব্যবস্থা করে রেখেছেন ।

১২. আল্লাহ তা'আলা যিনি এ সাত আসমান ও তাদের অনুরূপ সংখ্যক যমীন সৃষ্টি করেছেন; (আবার) উভয়ের মাঝখানে (যা কিছু আছে তাদের জন্যে) তাঁর নির্দেশ জারি হয়, যাতে করে তোমরা একথা অনুধাবন করতে পারো, (আকাশ পাতালের) সকল কিছুর ওপর তিনিই (একক) ক্ষমতাবান এবং তাঁর জ্ঞান (এ সৃষ্টিলোকের) প্রতিটি বস্তুকেই পরিবষ্টেন করে রেখেছে ।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url