আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা সোয়াদ’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা ছোয়াদ | Surah Saad | سورة ص‎‎


সূরা সোয়াদ’এর বাংলা অনুবাদ


সূরা সোয়াদ, মক্কায় অবতীর্ণ আয়াত ৮৮, রুকু ৫

সূরা সোয়াদ



রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে

১. সোয়াদ, উপদেশভরা (এ) কোরআনের শপথ (তুমি অবশ্যই আল্লাহ তায়ালার একজন রসুল );

২. কিন্তু কাফেররা (এ ব্যাপারে) ঔদ্ধত্য ও গোঁড়ামিতে (ডুবে) আছে।

৩. এদের আগে আমি কতো জনপদকে ধ্বংস করে দিয়েছি, (আযাব আসার পর) তারা (সাহায্যের জন্যে) আর্তনাদ করেছে, কিন্তু সে সময় তাদের পালানোর কোনো উপায় ছিলো না ।

৪. এরা এ কথার ওপর আশ্চর্যবোধ করেছে যে, তাদের কাছে তাদেরই মাঝ থেকে একজন সতর্ককারী (নবী) এলো, (নবীকে দেখে) কাফেররা বললো, এ হচ্ছে একজন যাদুকর, মিথ্যাবাদী,

৫. সে কি অনেক মাবুদকে একজন মাবুদ বানিয়ে নিয়েছে? এটা তো এক আশ্চর্যজনক ব্যাপার ছাড়া কিছুই নয়।

৬. তাদের সর্দাররা এই বলে (মজলিস) থেকে সরে পড়লো, যাও, তোমরা তোমাদের দেবতাদের (এবাদাতের) ওপরই ধৈর্য ধারণ করো, নিশ্চয়ই এর (দাওয়াতের) মধ্যে কোনো অভিসন্ধি (লুকানো) রয়েছে ।

৭. আমরা তো এসব কথা আগের বিধান (খৃস্টবাদ)-এর মধ্যে শুনিওনি, (আসলে) এ একটি মনগড়া উক্তি ছাড়া আর কিছুই নয়,

৮. আমাদের মধ্যে সে-ই কি একমাত্র ব্যক্তি, যার ওপর উপদেশসমুহ নাযিল হলো; (মুলত) ওরা তো আমার (নাযিল করা) উপদেশ (এ কোরআন)-এর ব্যাপারেই সন্দিহান, (আসলে) তারা (তখনও) আমার আযাবের স্বাদ আস্বাদনই করেনি;

৯. (হে নবী,) তাদের কাছে কি তোমার মালিকের অনুগ্রহের ভান্ডার পড়ে আছে, যিনি মহাপরাক্রমশালী ও মহান দাতা,

১০. আসমানসমুহ ও যমীনের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর (ওপর) আছে কি তাদের কোনো সার্বভৌমত্ব? থাকলে তারা সিঁড়ি লাগিয়ে আসমানে আরোহণের ব্যবস্থা করুক।

১১. অন্য বহু বাহিনীর মতো এ বাহিনীও পরাজিত হবে ।

১২. এদের পূর্বেও রসুলদের (এভাবে) মিথ্যাবাদী বলেছিলো, নুহ, আদ ও কীলক বিশিষ্ট ফেরাউনের জাতি,

১৩. সামুদ, লুত সম্প্রদায় এবং বনের অধিবাসীরাও; (তারা তাদের স্ব স্ব নবীকে মিথ্যাবাদী বানিয়েছে, প্রভাব প্রতিপত্তির দিক থেকে বড়ো বড়ো) দল তো ছিলো সেগুলোই।

১৪. ওদের প্রত্যেকেই রসুলদের মিথ্যাবাদী বলেছে, ফলে আমার (আযাবের) ফয়সালা (ওদের ওপর) প্রযোজ্য হয়ে গেলো ।

১৫. এরা অপেক্ষা করছে এক মহা গর্জনের, (আর) তখন কারো কিন্তু কোনো অবকাশ থাকবে না।

১৬. এ (নির্বোধ) লোকেরা বলে, হে আমাদের মালিক, হিসাব কেতাবের দিনের আগেই আমাদের পাওনা তুমি মিটিয়ে দাও!

১৭. (হে নবী,) এরা যেসব কথাবার্তা বলে, তুমি এর ওপর ধৈর্য ধারণ করো এবং (এ জন্যে) আমার শক্তিমান বান্দা দাউদকে স্মরণ করো, সে ছিলো আমার প্রতি নিবিষ্ট।

১৮. আমি পর্বতমালাকে তার বশীভূত করে দিয়েছিলাম, (তাই) এগুলোও সকাল সন্ধ্যায় তার সাথে (সাথে) আমার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতো,

১৯. (অনুরূপ) পাখীকুলকেও (তার বশীভূত করে দিয়েছিলাম), তারা (তার পাশে) জড়ো হতো, (এদের) সকলেই (যেকেরে) তার অনুসারী ছিলো ।

২০. আমি তার সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং (সে সাম্রাজ্য চালাবার জন্যে) তাকে প্রজ্ঞা ও সর্বোত্তম বাগ্মিতার শক্তি দান করেছিলাম।

২১. (হে নবী,) তোমার কাছে কি (সে) বিবদমান লোকদের কাহিনী পৌঁছেছে? যখন ওরা (উভয়ই) প্রাচীর টপকে (তার) এবাদাতখানায় প্রবেশ করলো,

২২. যখন তারা দাউদের সামনে হাযির হলো তখন সে এদের কারণে (একটু) ভীত হয়ে পড়লো, ওরা বললো (হে আল্লাহর নবী), আপনি ভীত হবেন না, আমরা হচ্ছি বিবাদমান দুটো দল, আমাদের একজন আরেকজনের ওপর যুলুম করেছে, অতএব আপনি আমাদের মাঝে ন্যায়বিচার করে দিন, ( কোনো রকম) নাইনসাফী করবেন না, আমাদের সহজ সরল পথ দেখিয়ে দিন।

২৩. (আসলে) এ হচ্ছে আমার ভাই। এর কাছে নিরানব্বইটি দুম্বা আছে, আর আমার কাছে আছে (মাত্র) একটি | (এ সত্ত্বেও) সে বলে, আমাকে তোমার এ (দুম্বা)-টিও দিয়ে দাও, সে কথায় কথায় আমার ওপর বল প্রয়োগ করে।

২৪. ( বিবাদের বিবরণ শুনে) সে বললো, এ ব্যক্তি তোমার দুম্বাটি তার দুম্বাগুলোর সাথে যুক্ত করার দাবী করে তোমার ওপর যুলুম করেছে; (আসলে) যৌথ (বিষয় আশয়ের) অংশীদাররা অনেকেই একে অন্যের ওপর (এভাবে) যুলুম করে, (যুলুম) করে না কেবল সে সকল লোকেরা, যারা (আল্লাহ তায়ালার ওপর) ঈমান আনে এবং নেক কাজ করে, (যদিও) এদের সংখ্যা নিতান্ত কম; দাউদ বুঝতে পারলো, (তাকে পরিশুদ্ধ করার জন্যে এ কাহিনী দ্বারা এতোক্ষণ ধরে) আমি তাকে পরীক্ষা করছিলাম, (মুল ঘটনা বুঝতে পেরে) অতঃপর সে তার মালিকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলো এবং (সে) পরাক্রমশালী আল্লাহ তায়ালার সামনে সাজদায় লুটিয়ে পড়লো এবং সে (আমার দিকে) ফিরে এলো।

২৫. অতঃপর আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম, অবশ্যই আমার কাছে তার জন্যে উচ্চ মর্যাদা ও সুন্দরতম আবাসস্থল রয়েছে।

২৬. (আমি দাউদকে বললাম,) হে দাউদ, আমি তোমাকে (এই) যমীনে (আমার) খলিফা বানালাম, অতএব তুমি মানুষদের মাঝে ন্যায়বিচার করো এবং কখনো নিজের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করো না, তেমনটি করলে এ বিষয়টি তোমাকে আল্লাহ তায়ালার পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে; (আর) যারাই আল্লাহ তায়ালার পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে (গোমরাহ হয়ে) যায়, তাদের জন্যে অবশ্যই (জাহান্নামের) কঠিন শাস্তি রয়েছে, কেননা তারা মহাবিচারের (এ) দিনটি ভুলে গেছে।

২৭. আমি আসমান যমীন এবং এ উভয়ের মধ্যবর্তী স্থানে যা কিছু আছে তার কোনো কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করিনি; এটা তো সেসব (মুর্খ) লোকদের ধারণা, যারা সৃষ্টিকর্তাকেই অস্বীকার করে, আর যারা (এভাবে) অস্বীকার করেছে তাদের জন্যে জাহান্নামের দুর্ভোগ রয়েছে;

২৮. যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে, আমি কি তাদের সেসব লোকের মতো করে দেবো যারা যমীনে বিপর্যয়কারী (সেজে বসে আছে), অথবা আমি কি পরহেযগার লোকদের গুনাহগারদের মতো (একই দলভুক্ত) করবো?

২৯. আমি এ মোবারক গ্রন্থটি তোমার ওপর নাযিল করেছি, যাতে করে মানুষ এর আয়াতসমুহের ব্যাপারে চিন্তা গবেষণা করতে এবং জ্ঞানবান লোকেরা (তা থেকে) উপদেশ গ্রহণ করতে পারে;

৩০. আমি দাউদকে (ছেলে হিসেবে) সোলায়মান দান করেছি; সে ছিলো (আমার) উত্তম একজন বান্দা; সে অবশ্যই ছিলো (তার মালিকের প্রতি) নিষ্ঠাবান;

৩১. এক অপরাহ্নে যখন তার সামনে (দ্রুতগামী ও) উৎকৃষ্ট (কয়েকটি) ঘোড়া পেশ করা হলো,

৩২. (তখন) সে বললো, আমি তো আমার মালিকের স্মরণ ভুলে (এদের) প্রীতিতে মজে গিয়েছিলাম, (এদিকে) দেখতে দেখতে সুর্যও প্রায় ডুবে গেছে।

৩৩. (নামাযের কথা চিন্তা না করে সে বললো, কোথায় সে ঘোড়া) সেগুলো আমার সামনে নিয়ে এসো; (এগুলো আনা হলে) সেগুলোর পা ও গলদেশসমুহে (স্নেহের হাত বুলিয়ে দিলো (এবং এদের ভালোবাসায় নামায ভুলে যাওয়ার জন্যে দুঃখ প্রকাশ করলো)।

৩৪. আমি (নানাভাবেই) সোলায়মানকে পরীক্ষা করেছি, (একবার) তার সিংহাসনের ওপর একটি নিষ্প্রাণ দেহও আমি রেখে দিয়েছিলাম (যাতে করে সে আমার ক্ষমতা বুঝতে পারে), অতঃপর সে (আরো বেশী) আমার দিকে ফিরে এলো।

৩৫. সে (আরো) বললো, হে আমার মালিক, (যদি আমি কোনো ভুল করি) তুমি আমাকে ক্ষমা করো, তুমি আমাকে এমন এক সাম্রাজ্য দান করো, যা আমার পরে আর কেউ কোনোদিন পাবে না, তুমি নিশ্চয়ই মহাদাতা।

৩৬. (সে অনুযায়ী) তখন আমি বাতাসকেও তার অধীন করে দিলাম, তা তার ইচ্ছানুযায়ী (অবাধে তাকে নিয়ে) সেখানেই নিয়ে যেতো যেখানেই সে যেতে চাইতো,

৩৭. জ্বিনদেরও (তার অনুগত বানিয়ে দিলাম), যারা ছিলো প্রাসাদ নির্মাণকারী ও (সমুদ্রের) ডুবুরী,

৩৮. শৃঙ্খলিত অন্যান্য (আরো) অনেককেও (আমি তার অধীন করে দিয়েছিলাম)।

৩৯. (আমি বললাম,) এ সবই হচ্ছে আমার দান, এ থেকে তুমি (অন্যদের) কিছু দাও কিংবা নিজের কাছে রাখো, (এর জন্যে তোমাকে) কোনো হিসাব দিতে হবে না ।

৪০. অবশ্যই তার জন্যে আমার কাছে রয়েছে উঁচু মর্যাদা ও সুন্দর নিবাস,

৪১. (হে নবী,) তুমি আমার বান্দা আইয়ুবের কথা স্মরণ করো। যখন সে তার মালিককে ডেকে বলেছিলো (হে আল্লাহ), শয়তান তো আমাকে যন্ত্রণা ও কষ্টে ফেলে দিয়েছে;

৪২. আমি বললাম, তুমি তোমার পা দিয়ে ভূমিতে আঘাত করো (যমীনে আঘাত করার পর যখন পানির একটি কূপ বেরিয়ে এলো, তখন আমি আইয়ুবকে বললাম), এ হচ্ছে (তোমার) পরিষ্কার করা ও পান করার (উপযোগী) পানি৷

৪৩. আমি তার সাথে তার পরিবার পরিজন ও তাদের সাথে একই পরিমাণ অনুগ্রহ দান করলাম, এটা ছিলো আমার পক্ষ থেকে রহমত এর নিদর্শন ও জ্ঞানবান মানুষদের জন্যে উপদেশ।

৪৪. আমি তাকে বললাম, তুমি তোমার হাতে এক মুঠো তৃণলতা নাও এবং তা দিয়ে (তোমার স্ত্রীর শরীরে মৃদু ) আঘাত করো, তুমি কখনো শপথ ভঙ্গ করো না; নিঃসন্দেহে আমি তাকে ধৈর্যশীল পেয়েছি; কতো উত্তম বান্দা ছিলো সে; সে ছিলো আমার প্রতি নিবেদিত!

৪৫. (হে নবী,) তুমি আমার বান্দাদের (মধ্যে) ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবকে স্মরণ করো, ওরা (সবাই) ছিলো শক্তিশালী ও সুক্ষ্মদর্শী।

৪৬. আমি একটি বিশেষ ব্যাপার, (এই) পরকাল দিবসের স্মরণ 'গুণের' কারণে তাদের (নেতৃত্বের জন্যে) নির্দিষ্ট করে নিয়েছিলাম,

৪৭. অবশ্যই এরা সবাই ছিলো আমার কাছে মনোনীত উত্তম বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত ।

৪৮. (হে নবী,) তুমি আরো স্মরণ করো ইসমাঈল, ইয়াসা' ও যুল কিফলের কথা; এরাও সবাই ভালো মানুষের অন্তর্ভুক্ত ছিলো;

৪৯. এ (বিবরণ) হচ্ছে একটি (মহৎ) দৃষ্টান্ত; অবশ্যই পরহেযগার লোকদের জন্যে উত্তম আবাসের ব্যবস্থা রয়েছে, 

৫০. (সে উত্তম আবাস হচ্ছে) চিরস্থায়ী এক জান্নাত, যার দরজা (হামেশাই) তাদের জন্যে উন্মুক্ত থাকবে,

৫১. সেখানে তারা আসীন হবে হেলান দিয়ে, সেখানে তারা পর্যাপ্ত পরিমাণ ফলমুল ও পানীয় সরবরাহের আদেশ দেবে |

৫২. তাদের পাশে (আরো) থাকবে আনতনয়না, সমবয়স্কা তরুণীরা।

৫৩. (হে ঈমানদাররা,) এ হচ্ছে সেসব (নেয়ামত) যা বিচার দিনের জন্যে তোমাদের প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে । ৫৪. এ হচ্ছে আমার দেয়া রেযেক, যা কখনো নিঃশেষ হবে না,

৫৫. এ তো হলো (নেককারদের পরিণাম, অপরদিকে) বিদ্রোহী পাপীদের জন্যে থাকবে নিকৃষ্টতম ঠিকানা,

৫৬. জাহান্নাম, যেখানে তারা গিয়ে প্রবেশ করবে, কতো নিকৃষ্ট নিবাস এটি!

৫৭. এ হচ্ছে (তাদের পরিণাম,) অতএব তারা তা আস্বাদন করুক, (আস্বাদন করুক) ফুটন্ত পানি ও পুঁজ,

৫৮. (তাদের জন্যে রয়েছে) এ ধরনের আরো (বিভৎস) শাস্তি ;

৫৯. (যখন দলপতিরা) অনুসারীদের জাহান্নামের দিকে আসতে দেখবে (তখন বলবে), এ হচ্ছে (আরেকটি) বাহিনী, (যারা) তোমাদের সাথে (জাহান্নামে) প্রবেশ করার জন্যে ( ধেয়ে আসছে (আল্লাহ তায়ালার অভিসম্পাত তাদের ওপর), তাদের জন্যে কোনো রকম অভিনন্দনের ব্যবস্থা এখানে নেই; এরা জাহান্নামে গিয়ে পতিত হবে।

৬০. তারা (দলপতিদের) বলবে, বরং তোমাদের ওপরও (আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুরূপ অভিসম্পাত, আজ এখানে) তোমাদের জন্যেও তো কোনো অভিনন্দন নেই। তোমরাই তো আমাদের এ (মহা) বিপদের সম্মুখীন করেছো, কতো নিকৃষ্ট (তাদের) এ আবাসস্থল!

৬১. (যারা এদের অনুসরণ করেছে) তারা বলবে, হে আমাদের মালিক, যে ব্যক্তি (আজ) আমাদের এ দুর্গতির সম্মুখীন করেছে, জাহান্নামে তুমি তার শাস্তি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দাও।

৬২. তারা (আরো) বলবে, একি হলো আমাদের, (আজ জাহান্নামে) আমরা সেসব মানুষদের দেখতে পাচ্ছি না কেন, যাদের আমরা দুনিয়ায় খারাপ লোকদের দলে শামিল (মনে) করতাম;

৬৩. তবে কি আমরা তাদের অহেতুকই ঠাট্টা বিদ্রূপের পাত্র মনে করতাম, না (আমাদের) দৃষ্টিশক্তি তাদের কিছুই দেখতে পাচ্ছে না ।

৬৪. জাহান্নামীদের (নিজেদের মাঝে) এ বাকবিতন্ডা (সেদিন) হবে অবশ্যম্ভাবী।

৬৫. (হে নবী, এদের) বলো, আমি তো (জাহান্নামের) একজন সতর্ককারী মাত্র, আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, তিনি একক, তিনি মহাপরাক্রমশালী,

৬৬. (তিনি) আসমান ও যমীনের মালিক, (মালিক তিনি) এ দুয়ের মাঝে যা কিছু আছে তারও, তিনি প্রচুর ক্ষমতাশালী ও মহা ক্ষমাশীল।

৬৭. (তাদের) তুমি বলো, এ (কেয়ামত) হচ্ছে মুলত একটি বড়ো ধরনের সংবাদ,

৬৮. আর তোমরা (কিনা) এ থেকেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছো ।

৬৯. (হে নবী, তুমি বলো,) আমার তো ঊর্ধ্বজগত ও তার বাসিন্দা (ফেরেশতা)-দের সম্পর্কে কোনো জ্ঞানই ছিলো না, (বিশেষ করে) যখন তারা (মানুষ সৃষ্টির বিষয় নিয়ে আল্লাহ তায়ালার সাথে) বিতর্ক করছিলো ।

৭০. (এ তো) আমাকে ওহী করে ( জানিয়ে) দেয়া হয়েছে, আমি হচ্ছি (তোমাদের জন্যে) একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।

৭১. (স্মরণ করো,) যখন তোমার মালিক ফেরেশতাদের বলেছিলেন, আমি মাটি থেকে মানুষ বানাতে যাচ্ছি।

৭২. যখন আমি তাকে বানিয়ে সম্পূর্ণ সুঠাম করে নেবো এবং ওতে আমার ( কাছ থেকে) জীবনের সঞ্চার করবো, তখন তোমরা তার প্রতি সাজদাবনত হবে ।

৭৩. অতঃপর ফেরেশতারা সবাই (তাকে) সাজদা করলো,

৭৪. একমাত্র ইবলীস ছাড়া; সে অহংকার করলো এবং সে কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলো।

৭৫. আল্লাহ তায়ালা বললেন, হে ইবলীস, তোমাকে কোন জিনিসটি তাকে সাজদা করা থেকে বিরত রাখলো; যাকে আমি স্বয়ং নিজের হাত দিয়ে বানিয়েছি, তুমি কি এমনিই ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে, না তুমি কোনো উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন কেউ?

৭৬. সে বললো (হাঁ), আমি তো তার চাইতে শ্রেষ্ঠ; তুমি আমাকে আগুন থেকে বানিয়েছো আর তাকে বানিয়েছো মাটি থেকে।

৭৭. তখন আল্লাহ তায়ালা বললেন, তুমি এখান থেকে এখনি বের হয়ে যাও, কেননা তুমি হচ্ছো অভিশপ্ত,

৭৮. তোমার ওপর আমার অভিশাপ থাকবে শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত ।

৭৯. সে বললো, (হ্যাঁ আমি বেরিয়ে যাচ্ছি, তবে) হে আমার মালিক, তুমি আমাকে সেদিন পর্যন্ত অবকাশ দাও যেদিন সব মানুষদের (দ্বিতীয় বার) জীবিত করে তোলা হবে ।

৮০. আল্লাহ তায়ালা বললেন (হ্যাঁ, যাও), যাদের অবকাশ দেয়া হয়েছে তুমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত,

৮১. অবধারিত সময়টি আসার সে নির্দিষ্ট দিন পর্যন্ত (তুমি থাকবে)।

৮২. সে বললো (হ্যাঁ), তোমার ক্ষমতার কসম (করে আমি বলছি), আমি তাদের সবাইকেই বিপথগামী করে ছাড়বো,

৮৩. তবে তাদের মধ্যে যারা তোমার একনিষ্ঠ বান্দা তাদের ছাড়া।

৮৪. আল্লাহ তায়ালা বললেন, (এ হচ্ছে) চুড়ান্ত সত্য, আর আমি এ সত্য কথাটাই বলছি,

৮৫. তোমার ও তোমার অনুসারীদের সবাইকে দিয়ে আমি জাহান্নাম পূর্ণ করবোই।

৮৬. (হে নবী,) তুমি বলো, আমি এ কাজের জন্যে তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক দাবী করছি না, না যারা লৌকিকতা করে আমি তাদের দলের লোক!

৮৭. এ (কোরআন) হচ্ছে সৃষ্টিকুলের (মানুষদের) জন্যে একটি উপদেশ মাত্র ।

৮৮. কিছুকাল পর (কেয়ামত সংঘটিত হলে) তোমরা অবশ্যই তার (সত্যতা) সম্পর্কে জানতে পারবে ।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url