আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আল ইখলাস’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা আল ইখলাস | Surah Al Ikhlas | سورة الإخلاص


সূরা আল ইখলাস

সূরা আল ইখলাস, মক্কায় অবতীর্ণ আয়াত ৪, রুকু ১

সূরা আল ইখলাস’এর পরিচয়


সূরা নং : ১১২
রুকু সংখ্যা : ১
সূরার নাম : সূরা ইখলাস
সূরার অর্থ : নিষ্ঠা ও নির্ভেজাল
আয়াত সংখ্যা : ৪
সিজদা সংখ্যা : ০
শব্দ সংখ্যা : ১৫
শ্রেণী : মাক্কী
অক্ষর সংখ্যা : ৫৭
পারার সংখ্যা :৩০

সূরা আল ইখলাস’এর  নামকরণ


ইখলাস শুধু এ সূরাটির নামই নয় ,এখানে আলোচ্য বিষয়বস্তুর শিরোনামও । কারণ , এখানে খালেস তথা নির্ভেজাল তাওহীদের আলোচনা করা হয়েছে। কুরআন মজীদের অন্যান্য সূরার ক্ষেত্রে সাধারণত সেখানে ব্যবহৃত কোন শব্দের মাধ্যমে তার নামকরণ করতে দেখা গেছে। কিন্তু এ সূরাটিতে ইখলাস শব্দ কোথাও ব্যবহৃত হয়নি। কাজেই এর এ নামকরণ করা হয়েছে এর অর্থের ভিত্তিতে। যে ব্যক্তি এ সূরাটির বক্তব্য অনুধাবন করে এর শিক্ষার প্রতি ঈমান আনবে , সে শিরক থেকে মুক্তি লাভ করে খালেস তাওহীদের আলোকে নিজেকে উদ্ভাসিত করবে।

সূরা আল ইখলাস’এর শানে নুযুল


একবার কিছু মুশরিকরা নবী মুহাম্মদ (সঃ) এর কাছে আল্লাহর বংশ পরিচয় জানতে চাইলো। আল্লাহ সম্পর্কে তারা নানাধরণের আপত্তিকর কথা বলতে লাগলো। কোনো কোনো রেওয়ায়েতে আছে যে, তারা জানতে চাইলো আল্লাহ কিসের তৈরী? স্বর্ণ-রুপা নাকি অন্যকিছুর। তখন সূরা ইখলাস নাজিল করে আল্লাহ নিজেই এর উত্তর দিলেন। 

সূরা আল ইখলাস’এর ফজিলত


এ সূরার বহু ফযীলত রয়েছে। তন্মধ্যে নিমে কয়েকটির উল্লেখ করা হলোঃ

এক. এর ভালবাসা জান্নাতে যাওয়ার কারণ; হাদীসে এসেছে, জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে এসে আরয করলঃ আমি এই সূরাটি খুব ভালবাসি। তিনি বললেনঃ এর ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে দাখিল করবে। [মুসনাদে আহমাদ: ৩/১৪১, ১৫০]

দুই. এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশ। হাদীসে এসেছে, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তোমরা সবাই একত্রিত হয়ে যাও। আমি তোমাদেরকে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ শুনাব। অতঃপর যাদের পক্ষে সম্ভব ছিল, তারা একত্রিত হয়ে গেলে তিনি আগমন করলেন এবং সূরা এখলাস পাঠ করে শুনালেন। তিনি আরও বললেন, এই সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান। [মুসলিম: ৮১২, তিরমিযী: ২৯০০] এ অর্থে হাদীসের সংখ্যা অসংখ্য।

তিন. বিপদাপদে উপকারী। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তা তাকে বালা-মুসীবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে যথেষ্ট হয়। [আবু দাউদ: ৫০৮২, তিরমিযী: ৩৫, ৭৫, নাসায়ী: ৭৮৫২]

চার. ঘুমানোর আগে পড়ার উপর গুরুত্ব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হে উকবা ইবনে আমের আমি কি তোমাকে এমন তিনটি উত্তম সূরা শিক্ষা দিব না। যার মত কিছু তাওরাত, ইঞ্জীল, যাবুর এবং কুরআনেও নাযিল হয়নি। উকবা বললেন, আমি বললাম, অবশ্যই হ্যাঁ, আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গ করুন। উকবা বলেন, তারপর রাসূল আমাকে ‘কুল হুয়াল্লাহু আহাদ, কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক, কুল আউযু বিরাব্বিন নাস’ এ সূরাগুলো পড়ালেন, তারপর বললেন, হে উকবা! রাত্রিতে তুমি ততক্ষণ নিদ্রা যেয়ো না, যতক্ষণ সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস না পাঠ কর। উকবা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ সেদিন থেকে আমি কখনও এই আমল ছাড়িনি। [মুসনাদে আহমাদ: ৪/১৪৮, ১৫৮-১৫৯]

পাঁচ. এ সূরা পড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিয়মিত আমল ছিল। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বিছানায় ঘুমানোর জন্য যেতেন তখন তিনি তার দু হাতের তালু একত্রিত করতেন তারপর সেখানে ‘কুল হুয়াল্লাহু আহাদ, কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক এবং কুল আউযু বিরাব্বিন নাস’ এ তিন সূরা পড়ে ফুঁ দিতেন, তারপর এ দু হাতের তালু দিয়ে তার শরীরের যতটুকু সম্ভব মসেহ করতেন। তার মাথা ও মুখ থেকে শুরু করে শরীরের সামনের অংশে তা করতেন। এমনটি রাসূল তিনবার করতেন। [বুখারী: ৫০১৭, আবু দাউদ: ৫০৫৬, তিরমিযী: ৩৪০২]

এটিকে মহানবী (সাঃ) কুরআনের এক তৃতীয়াংশ বলে ঘোষণা দিয়েছেন এবং তা রাত্রে পড়ার জন্য সকলকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। (বুখারী তাওহীদ অধ্যায়, ফাযায়েলে কুরআন ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ পরিচ্ছেদ)

 এক সাহাবী (রাঃ) নামাযের প্রতি রাকআতে অন্যান্য সূরার সাথে এই সূরাটিকেও নিয়মিত পড়তেন। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, আমি ঐ সূরাটিকে ভালোবাসি। এর ফলে নবী (সাঃ) তাঁকে বললেন, ‘‘ঐ সূরার প্রতি তোমার ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। (বুখারী তাওহীদ অধ্যায়,আযান অধ্যায়, দুটি সূরাকে একই রাকআতে জমা করে পড়ার পরিচ্ছেদ, মুসলিম শরীফ মুসাফিরীনদের নামায অধ্যায়) এই সূরাটির অবতীর্ণের কারণ হিসাবে বলা হয় যে, মক্কার মুশরিকরা যখন নবী (সাঃ)-কে বলল, হে মুহাম্মাদ! তোমার রবের বংশতালিকা বর্ণনা কর। তখন তার জওয়াবে মহান আল্লাহ এই সূরাটি অবতীর্ণ করেন। (মুসনাদে আহমাদ ৫/১৩৩-১৩৪ নং)


সূরা আল ইখলাস’এর বাংলা অনুবাদ



রহমান রাহীম আল্লাহ তা'আলার নামে

১. (হে মোহাম্মদ,) তুমি বলো, তিনিই আল্লাহ, তিনি এক একক,

২. তিনি কারোই মুখাপেক্ষী নন,

৩. তাঁর থেকে কেউ জন্ম নেয়নি, আর তিনিও কারো থেকে জন্ম গ্রহণ করেননি,

৪. আর তাঁর সমতুল্য দ্বিতীয় কেউ-ই নেই ।



💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url