আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আন নামল’র বাংলা অনুবাদ | সূরা আন নামল | Surah An-Naml | سورة النمل



সূরা আন নামল’র বাংলা অনুবাদ


সূরা আন নামল মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৯৩, রুকু ৭

সূরা আন নামল’র বাংলা অনুবাদ



রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে

১. ত্বা-সীন] এগুলো হচ্ছে কোরআনেরই আয়াত এবং সুস্পষ্ট কেতাব (-এর কতিপয় অংশ),

২. ঈমানদারদের জন্যে (এটা হচ্ছে) হেদায়াত ও সুসংবাদবাহী (গ্রন্থ),

৩. (তাদের জন্যে,) যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত আদায় করে, (সর্বোপরি) কেয়ামত দিবসের ওপর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে।

৪. যারা শেষ বিচারের দিনের ওপর ঈমান আনে না, তাদের জন্যে তাদের যাবতীয় কর্মকান্ড আমি (সুন্দর) শোভন করে রেখেছি, ফলে তারা উদ্ভ্রান্তের মতো (আপন কর্মকান্ডের চারপাশে) ঘুরে বেড়ায়;

৫. এরাই হচ্ছে সেসব লোক যাদের জন্যে রয়েছে (জাহান্নামের) কঠিন আযাব, আর পরকালেও এ লোকেরা ভীষণ ক্ষতির সম্মুখীন হবে ।

৬. (হে নবী,) নিশ্চয়ই প্রবল প্রজ্ঞাময় সর্বজ্ঞ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তোমাকে (এ) কোরআন দেয়া হয়েছে ।

৭. (স্মরণ করো,) যখন মুসা তার পরিবারের লোকজনদের বলেছিলো, অবশ্যই আমি আগুন (সদৃশ কিছু) দেখতে পেয়েছি; সেখান থেকে আমি এক্ষুণি তোমাদের কাছে হয় (পথঘাটের ব্যাপারে) কোনো খোঁজ খবর কিংবা (তোমাদের জন্যে) একটি অংগার নিয়ে আসবো, যাতে করে তোমরা (এ ঠান্ডার সময়) আগুন পোহাতে পারো ।

৮. অতপর সে যখন (আগুনের) কাছে পৌঁছলো, তখন তাকে (অদৃশ্য থেকে) আওয়ায দেয়া হলো, বরকতময় হোক সে (নুর), যা এ আগুনের ভেতর (আলোকিত হয়ে) আছে, বরকতময় হোক সে (মানুষ) যে এর আশেপাশে রয়েছে; সৃষ্টিকুলের মালিক আল্লাহ তায়ালা কতো পবিত্র প্রশংসিত ।

৯. (আওয়ায এলো,) হে মুসা, আমিই হচ্ছি আল্লাহ তায়ালা, মহাপরাক্রমশালী ও প্রবল প্রজ্ঞাময় ।

১০. হে মুসা, তুমি তোমার (হাতের) লাঠিটা (যমীনে) নিক্ষেপ করো; অতপর সে যখন তাকে দেখলো, তা যমীনে (জীবিত) সাপের মতো ছুটাছুটি করছে, তখন সে (কিছুটা ভীত হয়ে) উল্টো দিকে দৌড়াতে লাগলো, পেছনের দিকে ফিরেও তাকালো না (তখন আমি বললাম); হে মুসা (ভয় পেয়ো না), আমার সামনে (নবী) রসুলরা কখনো ভয় পায় না,

১১. হ্যাঁ, (যদি) কেউ কখনো কোনো অন্যায় করে (তাহলে তা ভিন্ন কথা), অতপর সে যদি অন্যায়ের পর তার বদলে (পুনরায়) নেক আমল করে, তাহলে (সে যেন জেনে রাখে), আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।

১২. (হে মুসা, এবার) তুমি তোমার হাত দুটো তোমার জামার (ব্লক) পকেটের ভেতর ঢুকিয়ে দাও, (বের করে আনলে দেখবে) কোনো রকম দোষত্রটি ব্যতিরেকেই তা উজ্জ্বল হয়ে বেরিয়ে এসেছে। (এ মোজেযাগুলো সে) নয়টি নিদর্শনেরই অন্তর্গত, যা ফেরাউন ও তার জাতির জন্যে আমি (মুসার সাথে) পাঠিয়েছিলাম; ওরা অবশ্যই ছিলো একটি গুনাহগার জাতি |
১৩. অতপর যখন তাদের কাছে আমার উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ হাযির হলো তখন তারা বললো, এ তো হচ্ছে স্পষ্ট যাদু,

১৪. তারা যুলুম ও ঔদ্ধত্যের কারণে তার সবকিছু প্রত্যাখ্যান করলো, যদিও তাদের অন্তর এসব (নিদর্শন) সত্য বলে গ্রহণ করে নিয়েছিলো; অতপর (হে নবী), তুমি দেখে নাও, (আমার যমীনে) বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের কি পরিণাম হয়েছিলো!

১৫. আমি অবশ্যই দাউদ এবং সোলায়মানকে (দ্বীন দুনিয়ার) জ্ঞান দান করেছিলাম; তারা উভয়েই বললো, যাবতীয় তারীফ আল্লাহ তায়ালার, যিনি তাঁর বহু ঈমানদার বান্দার ওপর আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন ।

১৬. (দাউদের মৃত্যুর পর) সোলায়মান দাউদের উত্তরাধিকারী হলো, (উত্তরাধিকার পেয়ে) সে (তার জনগণকে) বললো, হে মানুষরা, আমাদেরকে (আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে) পাখীদের বুলি (পর্যন্ত) শেখানো হয়েছে, (এ ছাড়াও) আমাদেরকে (দুনিয়ার) প্রতিটি জিনিসই দেয়া হয়েছে; এ হচ্ছে (আল্লাহ তায়ালার এক সুস্পষ্ট অনুগ্রহ ।

১৭. সোলায়মানের (সেবার) জন্যে মানুষ, জ্বিন ও পাখীদের মধ্য থেকে এক (বিশাল) বাহিনী সমবেত করা হয়েছিলো, এরা আবার বিভিন্ন বুযহে সুবিন্যস্ত ছিলো ।

১৮. (সোলায়মান একবার অভিযানে বের হলো,) তারা যখন পিপীলিকা (অধ্যুষিত) উপত্যকায় পৌঁছালো, তখন একটি স্ত্রী পিপীলিকা (তার স্বজনদের) বললো, হে পিপীলিকার দল, তোমরা (দ্রুত) নিজ নিজ গর্তে ঢুকে পড়ো, (দেখো) এমন যেন না হয়, সোলায়মান ও তার বাহিনী নিজেদের অজান্তে তোমাদের পায়ের নীচে পিষে ফেলবে।

১৯. তার কথা শুনে সোলায়মান একটু মৃদু হাসি হাসলো এবং বললো, হে আমার মালিক, তুমি আমাকে তাওফীক দাও যাতে করে (এ পিপীলিকাটির ব্যাপারেও আমি অমনোযোগী না হই এবং) আমাকে ও আমার পিতামাতাকে তুমি যেসব নেয়ামত দান করেছো, আমি যেন (বিনয়ের সাথে) তার কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারি, আমি যেন এমন সব নেক কাজ করতে পারি যা তুমি পছন্দ করো, (অতপর) তুমি তোমার অনুগ্রহ দিয়ে আমাকে তোমার নেককার মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করে নাও।

২০. (একবার) সে তার পাখী (বাহিনী) পর্যবেক্ষণ (করতে শুরু করলো এবং (এক পর্যায়ে) বললো (কি ব্যাপার), 'হুদহুদ' (নামক পাখীটা) দেখছি না যে! অথবা সে কি (আজ সত্যিই) অনুপস্থিত?

২১. হয় সে (এই অনুপস্থিতির) কোনো পরিষ্কার ও সংঘত কারণ নিয়ে আমার কাছে হাযির হবে, না হয় তাকে আমি (অবহেলার জন্যে) কঠিন শাস্তি দেবো, অথবা (বিদ্রোহ প্রমাণিত হলে) তাকে আমি হত্যাই করে ফেলবো।

২২. (এ খোঁজাখুঁজির পর) বেশী সময় অতিবাহিত হয়নি, সে (পাখীটি ছুটে এসে) বললো (হে বাদশাহ), আমি এমন এক খবর জেনেছি, যা তুমি এখনো অবগত হওনি, আমি তোমার কাছে 'সাবা' (জাতি)-র একটি নিশ্চিত খবর নিয়ে এসেছি (আমার অনুপস্থিতির এ হচ্ছে কারণ)।

২৩. আমি সেখানে এক রমণীকে দেখেছি, তাদের ওপর সে রাজত্ব করছে (দেখে মনে হলো), তাকে (দুনিয়ার) সব কয়টি জিনিসই (বুঝি) দেয়া হয়েছে, (তদুপরি) তার কাছে আছে বিরাট এক সিংহাসন ।

২৪. আমি তাকে এবং তার জাতিকে (এমন অবস্থায়) পেলাম যে, তারা আল্লাহ তায়ালাকে বাদ দিয়ে সুর্যকে সাজদা করছে, (মূলত) শয়তান তাদের (এসব পার্থিব) কর্মকান্ড তাদের জন্যে শোভন করে রেখেছে এবং সে তাদের (সৎ) পথ থেকেও নিবৃত্ত করেছে, ফলে ওরা হেদায়াত লাভ করতে পারছে না,

২৫. (শয়তান তাদের বাধা দিয়েছে.) যেন তারা আল্লাহ তায়ালাকে সাজদা করতে না পারে, যিনি আসমানসমূহ ও যমীনের (উদ্ভিদসহ সব) গোপন জিনিস বের করে আনেন, (তিনি জানেন) তোমরা যা কিছু গোপন করো এবং যা কিছু প্রকাশ করো।

২৬. আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই, তিনিই হচ্ছেন মহান আরশের অধিপতি।

২৭. (এটা শুনে) সে বললো, হ্যাঁ, আমি এক্ষুণি দেখছি, তুমি কি সত্য কথা বলেছো, না তুমি মিথ্যাবাদীদের একজন!

২৮. তুমি আমার এ চিঠি নিয়ে যাও, এটা তাদের কাছে ফেলে আসো, তারপর তাদের কাছ থেকে (কিছুক্ষণের জন্যে) সরে থেকো, অতপর তুমি দেখো তারা কি উত্তর দেয়?

২৯. (সোলায়মানের চিঠি পেয়ে সাবা জাতির) মহিলা (সম্রাজ্ঞী পারিষদদের ডেকে) বললো, হে আমার পারিষদরা, আমার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পাঠানো হয়েছে,

৩০. তা (এসেছে) সোলায়মানের কাছ থেকে এবং তা (লেখা হয়েছে) রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে,

৩১. (চিঠির বক্তব্য হচ্ছে,) তোমরা আমার অবাধ্যতা করো না এবং আনুগত্য স্বীকার করে তোমরা আমার কাছে হাযির হও।

৩২. (চিঠি পড়ে) সে (রাণী) বললো, হে আমার পারিষদরা, আমার (এ) বিষয়ে তোমরা আমাকে একটা অভিমত দাও, আমি তো কোনো ব্যাপারেই চূড়ান্ত কোনো আদেশ দেই না, যতোক্ষণ না তোমরা (সে সদ্ধিান্তের পক্ষে) সাক্ষ্য প্রদান না করো।

৩৩. তারা বললো (একথা ঠিক), আমরা অনেক শক্তিশালী ও কঠোর যোদ্ধা, কিন্তু (তারপরও সোলায়মানের সাথে বিদ্রোহের ঝুঁকি নেয়ার ব্যাপারে) সন্ধিান্ত গ্রহণের (চূড়ান্ত) ক্ষমতা তো তোমারই হাতে, অতএব চিন্তা করে দেখো, (এ পরিস্থিতিতে) তুমি আমাদের কি আদেশ দেবে?

৩৪. সে (রাণী) বললো, রাজা বাদশাহরা যখন কোনো জনপদে (বিজয়ীর বেশে) প্রবেশ করে তখন তা তছনছ করে দেয়, সেখানকার মর্যাদাবান ব্যক্তিদের অপদস্থ করে ছাড়ে, আর এরাও (হয়তো) তাই করবে।

৩৫. আমি বরং (সরাসরি হ্যাঁ কিংবা না কোনোটাই না বলে) তার কাছে কিছু তোহফা পাঠিয়ে দেখি দূতেরা কি (জবাব) নিয়ে আসে!

৩৬. সে (দূত হাদিয়া নিয়ে) যখন সোলায়মানের কাছে এলো তখন সে বললো, তোমরা কি এ ধন সম্পদ (পাঠিয়ে তা) দিয়ে আমাকে সাহায্য করতে চাও? (অথচ) আল্লাহ তায়ালা যা কিছু আমাকে দিয়েছেন তা (তিনি) তোমাদের যা দিয়েছেন তার তুলনায় অনেক উৎকৃষ্ট, তোমরা তোমাদের এ উপঢৌকন নিয়ে এতোই উৎফুল্লবোধ করছো!

৩৭. তোমরা (বরং এগুলো নিয়ে) তাদের কাছেই ফিরে যাও (যারা তোমাদের পাঠিয়েছে এবং গিয়ে তাদের বলো), আমি অবশ্যই ওদের মোকাবেলায় এমন এক বাহিনী নিয়ে হাযির হবো, (তাদের যা আছে) তা দিয়ে যার প্রতিরোধ করার শক্তি ওদের নেই এবং আমি অবশ্যই তাদের সে জনপদ থেকে লাঞ্ছিতভাবে বের করে দেবো, (পরিণামে) ওরা সবাই অপমানিত হবে।

৩৮. সে (নিজের মন্ত্রণা) পরিষদকে বললো, হে আমার পারিষদরা, তারা আমার কাছে আত্মসমর্পণ করতে আসার আগেই তার (গোটা) সিংহাসন আমার কাছে (তুলে) নিয়ে আসতে পারে এমন কে (এখানে) আছে ?

৩৯. বিশাল (বপুবিশষ্টি) এক জ্বিন দাঁড়িয়ে বললো, তোমরা বর্তমান স্থান থেকে উঠবার আগেই আমি তা তোমার কাছে নিয়ে আসবো, এ বিষয়ের ওপর আমি অবশ্যই বিশ্বস্ত ক্ষমতাবান।

৪০. আরেক জ্বিন যার কাছে আল্লাহ তায়ালার কেতাবের (কিছু বিশেষ) জ্ঞান ছিলো, (দাঁড়িয়ে) বললো (হে বাদশাহ), তোমার চোখের (পরবর্তি) পলক তোমার দিকে ফেলার আগেই আমি তা তোমার কাছে নিয়ে আসবো; (কথা শেষ না হতেই) সে যখন দেখলো তা (সিংহাসন সব কিছুসহ) তার সামনেই দাঁড়ানো, তখন সে বললো, এ তো হচ্ছে (আসলেই) আমার মালিকের অনুগ্রহ; এর মাধ্যমে তিনি আমার পরীক্ষা নিতে চান (এর মাধ্যমে তিনি দেখতে চান), আমি কি শোকর আদায় করি, না না-শোকরী করি; (মূলত) যে ব্যক্তি (আল্লাহ তায়ালার) কৃতজ্ঞতা আদায় করে সে (তো) করে তার নিজের কল্যাণের জন্যেই, আর যে ব্যক্তি (তা) প্রত্যাখ্যান করে (সে যেন জেনে রাখে), তোমার মালিক সব ধরনের অভাব থেকে মুক্ত ও একান্ত মহানুভব।

৪১. সে বললো, তোমরা (এবার) তার সিংহাসনের আকৃতিটা একটু বদলে দাও, আমরা দেখি সে সত্যিই তা টের পায় কিনা, না সেও তাদের দলে শামিল হয়ে যায়, যারা পথের দিশা পায় না।

৪২. অতপর (যখন) সে (রাণী) এলো (তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো), তোমার সিংহাসন কি (দেখতে) এমন ধরনের (ছিলো)? সে বললো হ্যাঁ, (মনে হয়) এ ধরনেরই (ছিলো, আসলে) এ ঘটনার আগেই আমাদের কাছে সঠিক জ্ঞান এসে গেছে এবং আমরা (সে মর্মে) আত্মসমর্পণও করেছি।

৪৩. তাকে যে জিনিসটি (ঈমান আনতে এ যাবত) বাধা দিয়ে রেখেছিলো; তা ছিলো আল্লাহ তায়ালাকে বাদ দিয়ে অন্যের গোলামী করা; তাই (এতো দিন পর্যন্ত) সে ছিলো কাফের সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।

৪৪. (অতপর) তাকে বলা হলো, যাও, এবার প্রাসাদে প্রবেশ করো, সে যখন (প্রাসাদের আয়নাসম বারান্দা) দেখলো তখন তার মনে হলো, এ যেন (স্বচ্ছ জলাশয়) এবং (এটা মনে করেই) সে তার উভয় হাঁটু পর্যন্ত কাপড় টেনে তুলে ধরলো; (তার এ আচরণ দেখে) সে (সোলায়মান) বললো, এটি হচ্ছে স্ফটিক নির্মিত প্রাসাদ; সে (মহিলা) বললো, হে আমার মালিক, আমি (এতোদিন) আমার নিজের ওপর যুলুম করে এসেছি, আজ আমি (আনুগত্যের স্বীকৃতি দিয়ে) সোলায়মানের সাথে আল্লাহ রব্বুল আলামীনের ওপর ঈমান আনলাম।

৪৫. আমি সামুদ জাতির কাছে তাদের ভাই সালেহকে পাঠিয়েছিলাম (সে বলেছিলো), তোমরা আল্লাহ তায়ালার এবাদাত করো, (এ আহ্বানের সাথে সাথে) তার (জাতির) লোকেরা (মোমেন ও কাফের এই) দু'দলে বিভক্ত হয়ে পরস্পর বিতর্কে লপ্তি হয়ে গেলো ।

৪৬. (সে বললো, একি হলো তোমাদের!) তোমরা কেন (ঈমানের) কল্যাণের পরিবর্তে (আযাবের) অকল্যাণ ত্বরান্বিত করতে চাইছো, কেন তোমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছো না, (এতে করে) তোমাদের ওপর অনুগ্রহ করা হতে পারে।

৪৭. তারা বললো, আমরা তোমাকে এবং তোমার সাথে যারা আছে তাদের সবাইকে আমাদের দুর্ভাগ্যের কারণ হিসেবেই (দেখতে) পেয়েছি; (এ কথা শুনে) সে বললো, (আসলে) তোমাদের শুভাশুভ সবই তো আল্লাহ তায়ালার এখতিয়ারে; (মূলত) তোমরা এমন এক দলের লোক যাদের (আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে) পরীক্ষা করা হচ্ছে।

৪৮. সে শহরে ছিলো (নেতা গোছের) এমন নয় জন লোক, যারা আমার যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়াতো, সংশোধনমূলক কোনো কাজই তারা করতো না।

৪৯. (একদিন) তারা (একজন আরেকজনকে) বললো তোমরা আল্লাহর নামে সবাই কসম করো যে, আমরা রাতের বেলায় তাকে ও তার (ঈমানদার) সাথীদের মেরে ফেলবো, অতপর (তদন্ত এলে) আমরা তার উত্তরাধিকারীকে বলবো, তার পরিবার-পরিজনকে হত্যা করার সময় আমরা তো (সেখানে) উপস্থিত ছিলামই না, আমরা অবশ্যই সত্য কথা বলছি।

৫০. তারা (যখন সালেহকে মারার জন্যে এ) চক্রান্ত করছিলো, (তখন) আমিও (তাকে রক্ষা করার জন্যে এমন এক) েেকৗশল (বের) করলাম, যা তারা (বিন্দুমাত্রও) বুঝতে পারেনি।

৫১. (হে নবী, আজ) তুমি দেখো, তাদের চক্রান্তের কী পরিণাম হয়েছে, আমি তাদের এবং তাদের জাতির সবাইকে ধ্বংস করে দিয়েছি।

৫২. (চেয়ে দেখো,) এ হচ্ছে তাদের ঘরবাড়ি, তাদেরই যুলুমের কারণে তা (আজ) মুখ থুবড়ে পড়ে আছে; অবশ্য এ (ঘটনার) মাঝে জ্ঞানবান মানুষদের জন্যে (শিক্ষার অনেক) নিদর্শন রয়েছে ।

৫৩. যারা আল্লাহ তায়ালার ওপর ঈমান এনেছে এবং (আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করেছে, আমি তাদের (আমার আযাব থেকে) মুক্তি দিয়েছি।

৫৪. আর (এক নবী ছিলো) লুত, যখন সে তার জাতিকে বললো, তোমরা কেন অশ্লীল কাজ নিয়ে আসো, অথচ তোমরা (এর পরিণাম) ভালো করেই দেখতে পাচ্ছো!

৫৫. তোমরা কি (তোমাদের) যৌনতৃপ্তির জন্যে নারী বাদ দিয়ে পুরুষদের কাছেই আসবে? (মূলত) তোমরা হচ্ছো একটি মূর্খ জাতি।

৫৬. তার জাতির লোকদের কাছে এছাড়া আর কোনো উত্তরই ছিলো না যে, লুত পরিবারকে তোমাদের এ জনপদ থেকে বের করে দাও, কেননা এরা কয়েকজন (আসলেই) বেশী ভালো মানুষ |

৫৭. (পরিশেষে) আমি তাকে ও তার পরিবার-পরিজনকে (আযাব থেকে) উদ্ধার করলাম, তবে তার সঙ্গীকে নয়, তাকে আমি পেছনে পড়ে থাকা (আযাবে নিমজ্জিত) মানুষদের সাথে শামিল করে দিয়েছিলাম।

৫৮. অতপর (যারা পেছনে রয়ে গেছে) তাদের ওপর আমি (গযবের) বৃষ্টি নাযিল করলাম, যাদের ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিলো তাদের জন্য এ বৃষ্টি, (যা সেদিন) ভীত সন্ত্রস্ত এ জাতির (ওপর) পাঠানো হয়েছিলো কতোই না নিকৃষ্ট ছিলো!

৫৯. (হে নবী,) তুমি বলো, সমস্ত তারীফ একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্যেই এবং (যাবতীয়) শান্তি তাঁর সেসব নেক বান্দার জন্যে, যাদের তিনি বাছাই করে নিয়েছেন; (আসলে) কে শ্রেষ্ঠ আল্লাহ তায়ালা? না এরা (তাঁর সাথে) যাদের শরীক করে?

৬০. অথবা তিনি (শ্রেষ্ঠ)- যিনি আসমানসমূহ ও যমীন পয়দা করেছেন এবং আসমান থেকে তোমাদের জন্যে পানি বর্ষণ করেছেন, (আবার) তা দিয়ে ( যমীনে) মনোরম উদ্যান তৈরী করেছেন, অথচ তার (একটি ক্ষুদ্র) বৃক্ষ পয়দা করারও তোমাদের ক্ষমতা নেই; (বলো, এসব কাজে) আল্লাহ তায়ালার সাথে অন্য কেউ মাবুদ আছে কি? বরং তারা হচ্ছে এমন এক সম্প্রদায়, যারা অন্যকে আল্লাহ তায়ালার সমকক্ষ সাব্যস্ত করছে!

৬১. কিংবা তিনি (শ্রেষ্ঠ)- যিনি যমীনকে (সৃষ্টিকূলের) বসবাসের উপযোগী করেছেন, (আবার) তার মাঝে মাঝে প্রবাহিত করেছেন অসংখ্য নদীনালা, (যমীনকে সুদৃঢ় করার জন্যে) তার মধ্যে পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, দুই সাগরের মাঝে (মিষ্টি ও লোনা পানির) সীমারেখা সৃষ্টি করে দিয়েছেন; (বলো, এসব কাজে) আল্লাহ তায়ালার সাথে আর কোনো মাবুদ আছে কি? কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোক (এ সত্যটুকুও) জানে না;

৬২. অথবা তিনিই (শ্রেষ্ঠ)- যিনি কোনো বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির ডাকে সাড়া দেন, যখন (নিরুপায় হয়ে) সে তাঁকেই ডাকতে থাকে, তখন (তার) বিপদ আপদ তিনি দুরীভূত করে দেন এবং তিনি তোমাদের এ যমীনে তাঁর প্রতিনিধি বানান; (এসব কাজে) আল্লাহ তায়ালার সাথে আর কোনো মারদ কি আছে? (আসলে) তোমরা কমই উপদেশ গ্রহণ করে থাকো;

৬৩. কিংবা তিনি (শ্রেষ্ঠ)- যিনি তোমাদের জলে স্থলের (গহীন) অন্ধকারে পথ দেখান, যিনি তাঁর অনুগ্রহ (-সম বৃষ্টি) বর্ষণের আগে তার সুসংবাদ বহন করার জন্যে বাতাস প্রেরণ করেন; (এ সব কাজে) আল্লাহর সাথে অন্য কোনো মাবুদ কি আছে? আল্লাহ তায়ালা অনেক মহান, ওরা যা কিছু তাঁর সাথে শরীক করে তিনি তার চাইতে অনেক ঊর্ধ্বে;

৬৪. অথবা তিনি (শ্রেষ্ঠ)- যিনি (গোটা) সৃষ্টিকে (প্রথম বার) অস্তিত্বে আনয়ন করে (মৃত্যুর পর) তা আবার সৃষ্টি করবেন, কে তোমাদের আসমান ও যমীন থেকে রেযেক সরবরাহ করছেন? আছে কি কোনো মাবুদ আল্লাহর সাথে (এসব কাজে)? তাদের তুমি বলো (হে নবী), যদি তোমরা (তোমাদের দাবীতে) সত্যবাদী হও তাহলে (তার সপক্ষে) তোমাদের কোনো প্রমাণ নিয়ে এসো।

৬৫. (হে নবী,) তুমি বলো, আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে, এদের কেউই অদৃশ্য জগতের কিছু জানে না; তারা এও জানে না, কবে তাদের আবার (কবর থেকে) উঠানো হবে!

৬৬. (মনে হচ্ছে,) আখেরাত সম্পর্কে এদের জ্ঞান নিশেষ হয়ে গেছে। (না, আসলে তা নয়,) বরং তারা (এ ব্যাপারে) সন্দেহে (নিমজ্জিত হয়ে) আছে, কিন্তু তারা সে সম্পর্কে (জেনে বুঝেই) অন্ধ হয়ে আছে ।

৬৭. যারা আল্লাহ তায়ালাকে অস্বীকার করে তারা বলে, আমরা ও আমাদের বাপদাদারা (মৃত্যুর পর) যখন মাটি হয়ে যাবো, তখনও কি আবার আমরা (কবর থেকে) উত্থিত হবো!

৬৮. এমন (ধরনের) ওয়াদা তো আমাদের সাথে এবং এর আগে আমাদের বাপ-দাদাদের সাথেও করা হয়েছিলো, (আসলে) এগুলো ভিত্তিহীন কথা ছাড়া আর কিছুই নয়। যা পূর্ববর্তীদের থেকে বর্ণিত হয়ে আসছে।

৬৯. (হে নবী,) তুমি বলো, তোমরা (আল্লাহর) যমীনে সফর করো এবং দেখো অপরাধীদের পরিণাম কি (ভয়াবহ) হয়েছে?

৭০. তুমি ওদের (কোনো) কাজের ওপর দুঃখ করো না, যা কিছু ষড়যন্ত্র ওরা তোমার বিরুদ্ধে করুক না কেন (তাতেও) মনোক্ষুণ্ন হয়ো না !

৭১. তারা বলে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে বলো, (আযাবের) ওয়াদা কখন আসবে!

৭২. (হে নবী,) তুমি বলো, (আযাবের) যে বিষয়টি তোমরা ত্বরান্বিত করতে চাচ্ছো তার কিছু অংশ সম্ভবত তোমাদের পেছনে এসে দাঁড়িয়ে আছে!

৭৩. অবশ্যই তোমার মালিক মানুষদের প্রতি অত্যন্ত দয়াবান, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই (আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহের) শোকর আদায় করে না।

৭৪. যা কিছু তাদের মন গোপন করে, আর যা কিছু তা বাইরে প্রকাশ করে, তোমার মালিক তা ভালো করেই জনেন।

৭৫. আসমান ও যমীনে এমন কোনো গোপন রহস্য নেই যা (আমার) সুস্পষ্ট গ্রন্থে (লিপিবদ্ধ নেই।

৭৬. অবশ্যই এ কোরআন বনী ইসরাঈলদের ওপর তাদের এমন অনেক কথা প্রকাশ করে দেয়, যার ব্যাপারে তারা (একে অপরের সাথে) মতভেদ করে থাকে।

৭৭. নিসন্দেহে এ (কোরআন) হচ্ছে ঈমানদারদের জন্যে (আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে) হেদায়াত ও রহমত।

৭৮. (হে নবী,) তোমার মালিক নিজ প্রজ্ঞা অনুযায়ীই এদের মাঝে মীমাংসা করে দেবেন, তিনি পরাক্রমশালী, তিনি সর্বজ্ঞ,

৭৯. অতএব (হে নবী, সর্বাবস্থায়ই) তুমি আল্লাহ তায়ালার ওপর নির্ভর করো; নিসন্দেহে তুমি সুস্পষ্ট সত্যের ওপর (প্রতিষ্ঠিত) রয়েছো |

৮০. তুমি মৃত লোকদের কখনো (কিছু) শোনাতে পারবে না, বধিরকেও তোমার আওয়ায শোনাতে পারবে না, (বিশেষ করে) যখন তারা (তোমাকে দেখে) মুখ ফিরিয়ে নেয় ।

৮১. (একইভাবে) তুমি অন্ধদেরও (তাদের) গোমরাহী থেকে সঠিক পথের ওপর আনতে পারবে না; তুমি তো শুধু তাদেরই (তোমার কথা) শোনাতে পারবে, যারা আমার আয়াতসমূহের ওপর ঈমান আনে এবং সে অনুযায়ী (আল্লাহ তায়ালার কাছে) আত্মসমর্পণ করে।

৮২. (শুনে রাখো,) যখন আমার প্রতিশ্রুত সময় তাদের ওপর এসে পড়বে, তখন আমি মাটির ভেতর থেকে তাদের জন্যে এক (অদ্ভুত) জীব বের করে আনবো, যা (অলৌকিকভাবে) তাদের সাথে কথা বলবে, মানুষরা (অনেকেই আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে না ।

৮৩. (সেদিনের কথা ভাবো,) যেদিন আমি প্রতিটি উম্মত থেকে এক একটি দলকে এনে জড়ো করবো, যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, অতপর তাদের বিভিন্ন দলে উপদলে ভাগ করে দেয়া হবে।

৮৪. এমনি করে ওরা যখন (আল্লাহ তায়ালার সামনে) হাযির হবে, তখন (আল্লাহ তায়ালা তাদের) জিজ্ঞেস করবেন, তোমরা কি আমার আয়াতসমূহকে (শুধু এ কারণেই) অস্বীকার করেছিলে এবং তোমাদের (সীমিত) জ্ঞান দিয়ে তোমরা সে (আয়াতের মর্ম) পর্যন্ত পঁৗেছুতে পারোনি, (বলো, তার সাথে) তোমরা (আর কি) কি আচরণ করতে ?

৮৫. যেহেতু এরা (দুনিয়ার জীবনে নানা ধরনের) যুলুম করেছে, (তাই আজ) এদের ওপর (আযাবের) প্রতিশ্রুতি পুরো হয়ে যাবে, অতপর এরা (আর) কোনো রকম উচ্চবাচ্যও করতে পারবে না।

৮৬. এরা কি দেখেনি, আমি রাতকে এ জন্যেই তৈরী করেছি যেন তারা তাতে বিশ্রাম করতে পারে, (অপরদিকে জীবিকার প্রয়োজনে) দিনকে বানিয়েছি আলোকোজ্জ্বল; অবশ্যই এর (দিবারাত্রির পার্থক্যের) মাঝে তাদের জন্যে অনেক নিদর্শন রয়েছে, যারা আল্লাহ তায়ালার ওপর ঈমান আনে।

৮৭. যেদিন শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে, যারা আসমানসমূহে আছে এবং যারা যমীনে আছে, তারা সবাই সেদিন ভীত সনস্ত হয়ে পড়বে, তবে (তাদের কথা) আলাদা যাদের আল্লাহ তায়ালা (এ থেকে বাচাতে) চাইবেন; সবাই সেদিন তাঁর সামনে অবনমিত অবস্থায় হাযির হবে ।

৮৮. (হে মানুষ, আজ) তুমি পাহাড়কে দেখতে পাচ্ছো, তুমি মনে করে নিয়েছো তা অনড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে; (কিন্তু কেয়ামতের দিন) এ পাহাড়গুলোই মেঘের মতো উড়তে থাকবে, এটা আল্লাহ তায়ালারই সৃষ্টির শৈল্পিক নিপুণতা, যিনি প্রতিটি জিনিস মযরত করে বানিয়ে রেখেছেন; তোমরা যা কিছু করছো অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সেসব ব্যাপারে সম্যক অবগত আছেন ।

৮৯. (সেদিন) যে ব্যক্তি কোনো নেক কাজ নিয়ে (আমার সামনে) হাযির হবে তাকে উৎকৃষ্ট (প্রতিফল) দেয়া হবে, এমন ধরনের লোকেরা (সেদিনের) ভীতিকর অবস্থা থেকেও নিরাপদ থাকবে।

৯০. (অপরদিকে) যে ব্যক্তি কোনোরকম মন্দ কাজ নিয়ে আসবে, তাদের (সেদিন) উল্টো করে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে, (জাহান্নামের প্রহরীরা তাদের বলবে); তোমরা যা কিছু করতে তার বিনিময় এ ছাড়া আর কি তোমাদের দেয়া যাবে ?

৯১. (হে নবী, তুমি বলো,) আমাকে তো শুধু এটুকুই আদেশ দেয়া হয়েছে যেন আমি এ (মক্কা) নগরীর (আসল) মালিকের এবাদাত করি, যিনি একে সম্মানিত করেছেন, সব কিছ তার জন্যে (নিবেদিত), আমাকে (এও) হুকুম দেয়া হয়েছে যেন আমি (তাঁরই আদেশের সামনে) আত্মসমর্পণ করি,

৯২. আমি যেন কোরআন তেলাওয়াত করি, অতপর যে ব্যক্তি হেদায়াতের পথ অনুসরণ করবে সে তো তা করবে তার নিজের (মুক্তির) জন্যেই, আর যে ব্যক্তি (এরপরও) গোমরাহ থেকে যাবে, (তাকে শুধু) তুমি (এটুকু) বলো, আমি তো কেবল (তোমার জন্যে জাহান্নামের) একজন সতর্ককারী মাত্র!

৯৩. তুমি আরো বলো, সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্যেই, অচিরেই তিনি তোমাদের এমন কিছু নিদর্শন দেখাবেন, যা (দেখলে) তোমরা তা সহজেই চিনে নেবে; তোমরা যা কিছু আচরণ করছো আল্লাহ তায়ালা সে সম্পর্কে মোটেই বেখবর নন।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url