আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আশ শোয়ারা’র বাংলা অনুবাদ | সূরা আশ শোয়ারা | Surah Ash Shura | سورة الشورى‎‎


সূরা আশ শোয়ারা’র বাংলা অনুবাদ


সূরা আশ শোয়ারা মক্কায় অবতীর্ণ আয়াত ২২৭, রুকু ১১

সূরা আশ শোয়ারা


রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে



১. ত্বা-লীম, মীম।

২. এগুলো হচ্ছে সুস্পষ্ট গ্রন্থের (কতিপয় ) আয়াত ।

৩. (হে নবী,) কেন তারা ঈমান আনছে না (সে দুঃখে) মনে হচ্ছে তুমি তোমার জীবনটাই ধ্বংস করে দেবে।

৪. (অথচ) আমি চাইলে এদের ওপর আসমান থেকে (এমন) একটি নিদর্শন নাযিল করতে পারি, (যা দেখে) তাদের গর্দান তার দিকে ঝুঁকে পড়বে ।

৫. যখনি দয়াময় আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে এদের কাছে কোনো (নতুন) উপদেশ আসে তখনি তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় ।

৬. এরা যেহেতু (আল্লাহর আযাব) অস্বীকার করেছে, (তাই) অচিরেই তাদের কাছে সে (আযাবের) প্রত্যক্ষ বিবরণ এসে হাযির হবে, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রূপ করতো!

৭. এরা কি যমীনের দিকে নযর করে দেখে না! আমি কতো কতো ধরনের উৎকৃষ্ট জিনিসপত্র তাতে উৎপাদন করাই।

৮. নিশ্চয়ই এর মাঝে (ছড়িয়ে) আছে (আমার সৃষ্টি কৌশলের নানা) নিদর্শন; কিন্তু তাদের অধিকাংশ মানুষ তা বিশ্বাসই করে না ।

৯. তোমার মালিক অবশ্যই পরাক্রমশালী ও পরম দয়াল ।

১০. (হে নবী, তুমি তাদের সে সময়কার কাহিনী শোনাও,) যখন তোমার মালিক মুসাকে ডাকলেন (ইসলামের দাওয়াত নিয়ে) সে যেন যালেম জাতির কাছে যায়।

১১. ফেরাউনের জাতির কাছে; তারা কি (আমার ক্রোধকে) ভয় করে না?

১২. সে বললো, হে আমার মালিক, আমি আশংকা করছি তারা আমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করবে;

১৩. (তা ছাড়া) আমার হৃদয়ও সংকীর্ণ হয়ে আসছে, আমার জিহবাও ( ভালো করে) কথা বলতে পারে না, এমতাবস্থায় (আমার সাহায্যের জন্যে) তুমি হারুনের কাছেও নবুওত পাঠাও।

১৪. (তা ছাড়া) আমার ওপর তাদের (আগে থেকেই একটা) অপরাধ (জনিত অভিযোগ) আছে, তাই আমি ভয় করছি, এখন তারা (সে অভিযোগে) আমাকে মেরেই ফেলবে,

১৫. আল্লাহ তায়ালা বললেন, না, (তা) কখনো হবে না, আমার আয়াত নিয়ে তোমরা উভয়েই (তার কাছে) যাও, আমি তো তোমাদের সাথেই আছি, আমি সবকিছুই শুনতে পাই।

১৬. তোমরা দু'জন যাও ফেরাউনের কাছে, অতপর তোমরা তাকে বলো, আমরা সৃষ্টিকুলের মালিক আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত রসুল,

১৭. তুমি বনী ইসরাঈলদের আমাদের সাথে যেতে দাও!

১৮. (ফেরাউন এসব শুনে) বললো, হে মুসা, আমরা কি তোমাকে আমাদের তত্ত্বাবধানে রেখে লালন পালন করিনি? তুমি কি তোমার জীবনের বেশ কয়টি বছর আমাদের মধ্যে অতিবাহিত করোনি?

১৯. (তখন) তোমার যা কিছু করার ছিলো তা তুমি (ঠিকমতোই) করেছো, তুমি তো (দেখছি ভারী) অকৃতজ্ঞ মানুষ!

২০. সে বললো (হ্যাঁ), আমি তখন সে কাজটি একান্ত না জানা অবস্থায় করে ফেলেছি;

২১. অতপর যখন আমি তোমাদের কাছ থেকে (প্রতিশোধের ব্যাপারে) ভয় পেয়ে গেলাম তখন আমি তোমাদের এখান থেকে পালিয়ে গেলাম, তারপর আমার মালিক আমাকে (বিশেষ) জ্ঞান দান করলেন এবং আমাকে রসুলদের দলে শামিল করলেন।

২২. আর তুমি তোমার (রাজপরিবারের) সে অনুগ্রহ, যা তুমি (আজ) আমার ওপর রাখার প্রয়াস পেলে, (তার মূল কারণ এটাই ছিলো) যে, তুমি বনী ইসরাঈলদের নিজের গোলাম বানিয়ে রেখেছিলে ;

২৩. ফেরাউন বললো, সৃষ্টিকূলের মালিক (আবার) কে?

২৪. সে বললো, তিনি হচ্ছেন আসমানসমূহ ও যমীনের এবং এ উভয়ের মধ্যবর্তী স্থানে যা কিছু আছে তার সব কিছুর মালিক; (কতো ভালো হতো) যদি তোমরা (এ কথাটা) বিশ্বাস করতে!

২৫. ফেরাউন তার আশেপাশে যারা (বসা) ছিলো তাদের বললো, তোমরা কি শোনছো (মুসা কি বলছে)?

২৬. সে বললো, তিনি তোমাদের মালিক এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও মালিক।

২৭. ফেরাউন (তার দলবলকে) বললো, তোমাদের কাছে পাঠানো তোমাদের এ রসুল হচ্ছে (আসলেই) এক বদ্ধ পাগল ।

২৮. সে বললো, তিনি পূর্ব পশ্চিম উভয় দিকের মালিক, আরো (মালিক) এদের উভয়ের মাঝখানে যা কিছু আছে সেসব কিছুরও; (কতো ভালো হতো) যদি তোমরা (তা) অনুধাবন করতে!

২৯. সে বললো (হে মুসা), যদি তুমি আমাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে মাবুদ হিসেবে গ্রহণ করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাকে জেলে ভরবো।

৩০. সে বললো, আমি যদি তোমার সামনে (নবুওতের) সুস্পষ্ট কোনো দলীল প্রমাণ হাযির করি তবুও কি (তুমি এমনটি করবে)?

৩১. সে বললো, (যাও) নিয়ে এসো সে দলীল প্রমাণ, যদি তুমি (তোমার দাবীতে) সত্যবাদী হও!

৩২. অতপর সে তার লাঠি (যমীনে) নিক্ষেপ করলো, তৎক্ষণাৎ তা একটি দৃশ্যমান অজগর হয়ে গেলো ।

৩৩. (দ্বিতীয় নিদর্শন হিসেবে) সে (বগল থেকে) তার হাত বের করলো, (সাথে সাথেই) তা দর্শকদের সামনে চমকাতে লাগলো।

৩৪. ফেরাউন তার আশেপাশে উপবৃষ্টি দরবারের বড়ো আমলাদের বললো, এ তো (দেখছি) আসলেই একজন সুদক্ষ যাদুকর!

৩৫. সে তার যাদু (-র শক্তি) দিয়ে তোমাদের দেশ থেকে তোমাদেরই বের করে দিতে চায়, বলো, এখন তোমরা আমাকে (এ ব্যাপারে) কি পরামর্শ দেবে?

৩৬. তারা বললো, (আমাদের মতে) তুমি তাকে ও তার ভাইকে (কিছু দিনের) অবকাশ দাও এবং (এ সুযোগে) তুমি শহরে বন্দরে (যাদুকরদের নিয়ে আসার ফরমান দিয়ে) সংগ্রাহকদের পাঠিয়ে দাও।

৩৭. (তাদের বলে দাও, তারা যেন প্রতিটি সুদক্ষ যাদুকরকে তোমার সামনে এনে হাযির করে।

৩৮. অতপর একটি নির্দিষ্ট দিনে একটি নির্দিষ্ট সময়ে (সত্যি সত্যিই দেশের) সব যাদুকরদের একত্রিত করা হলো,

৩৯. সাধারণ মানুষদের জন্যেও বলা হলো, তারাও যেন (সেখানে তখন) একত্রিত হয়,

৪০. এ আশা (নিয়েই সবাই আসবে) যে, যদি যাদুকররা (আজ) বিজয়ী হয় তাহলে আমরা (মুসাকে বাদ দিয়ে) তাদের অনুসরণ করতে পারবো।

৪১. তারা ফেরাউনের সামনে (এসে) বললো, আমরা যদি (আজ) জয় লাভ করি তাহলে আমাদের জন্যে (পর্যাপ্ত) পুরস্কার থাকবে তো?

৪২. সে বললো, হাঁ (তা তো অবশ্যই), তেমন অবস্থায় তোমরাই তো (হবে) আমার ঘনিষ্ঠ জন!

৪৩. (মোকাবেলা শুরু হয়ে গেলে) মুসা তাদের বললো (হাঁ), তোমরাই (আগে) নিক্ষেপ করো যা কিছু তোমাদের (কাছে) নিক্ষেপ করার আছে!

৪৪. অতপর তারা তাদের রশি ও লাঠি (মাটিতে) ফেললো এবং তারা বললো, ফেরাউনের ইযযতের কসম, আজ অবশ্যই আমরা বিজয়ী হবো।

৪৫. তারপর মুসা তার (হাতের) লাঠি (যমীনে) নিক্ষেপ করলো, সহসা তা (এক বিশাল অজগর হয়ে) তাদের (যাদুর) অলীক সৃষ্টিগুলো গ্রাস করতে লাগলো,

৪৬. অতপর (ঘটনার আকস্মিকতা) যাদুকরদের সাজদাবনত করে দিলো,

৪৭. তারা বললো, আমরা সৃষ্টিকূলের মালিকের ওপর ঈমান আনলাম,

৪৮. (ঈমান আনলাম) মুসা ও হারূনের মালিকের ওপর।

৪৯. (এতে ক্রোধান্বিত হয়ে) সে (ফেরাউন) বললো, (একি!) আমি তোমাদের (কোনো রকম) অনুমতি দেয়ার আগেই তোমরা তার (মালিকের) ওপর ঈমান এনে ফেললে! (আমি বুঝতে পারছি, আসলে) এই হচ্ছে তোমাদের সবচাইতে বড়ো (গুরু), এ-ই তোমাদের সবাইকে যাদু শিক্ষা দিয়েছে, অতিসত্বর তোমরা (তোমাদের অবস্থা) জানতে পারবে; আমি তোমাদের হাত ও পা-বিপরীত দিক থেকে কেটে দেবো, অতপর আমি তোমাদের সবাইকে (একে একে) শূলে চড়াবো,

৫০. তারা বললো, (এতে) আমাদের কোনোই ক্ষতি নেই, (তুমি যাই করো) আমরা তো একদিন আমাদের মালিকের কাছেই ফিরে যাবো,

৫১. আমরা আশা করবো (সেদিন) আমাদের মালিক আমাদের (যাচ সংক্রান্ত) সব গুনাহ খাতা মাফ করে দেবেন, কেননা আমরাই (এ দলের মাঝে) সবার আগে ঈমান এনেছি।

৫২. অতপর আমি মুসার কাছে ওহী পাঠিয়ে বললাম, রাত থাকতে থাকতেই তুমি আমার বান্দাদের নিয়ে (এ জনপদ থেকে) বেরিয়ে যাও, (সাবধান থেকো, ফেরাউনের পক্ষ থেকে) তোমাদের অবশ্যই অনুসরণ করা হবে।

৫৩. ইতিমধ্যে ফেরাউন (সৈন্য জড়ো করার জন্যে) শহরে বন্দরে সংগ্রাহক পাঠিয়ে দিলো,

৫৪. (সে বললো,) এরা তো হচ্ছে একটি ক্ষুদ্র দল মাত্র,

৫৫. এরা আমাদের (অনেক) ক্রোধের উদ্রেক ঘটিয়েছে,

৫৬. (এদের মোকাবেলায়) আমরা হচ্ছি একটি সম্মিলিত সেনাবাহিনী;

৫৭. আমি (ধীরে ধীরে এবার) তাদের উদ্যানমালা ও ঝর্ণাধারাসমূহ থেকে বের করে আনলাম,

৫৮. (বের করে আনলাম) তাদের (সঞ্চিত) ধনভান্ডারসমূহ ও সুরম্য প্রাসাদ থেকে,

৫৯. এভাবেই আমি বনী ইসরাঈলদের (ফেরাউন ও তাদের) লোকজনদের (ফেলে আসা) সে সবের মালিক বানিয়ে দিলাম;

৬০. তারা সুর্যোদয়ের প্রাক্কালেই তাদের পশ্চাদ্ধাবন করলো।

৬১. (এক পর্যায়ে) যখন একদল আরেক দলকে দেখে ফেললো, তখন মুসার সাথীরা বলে ওঠলো, আমরা (বুঝি এখনি) ধরা পড়ে যাবো,

৬২. সে বললো, না কিছুতেই নয়, আমার সাথে অবশ্যই আমার মালিক রয়েছেন, তিনি অবশ্যই আমাকে (এ সংকট থেকে বেরিয়ে যাবার একটা) পথ বাতলে দেবেন।

৬৩. অতপর আমি (এই বলে) মুসার কাছে ওহী পাঠালাম, তুমি তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত হানো, (আঘাতের পর) তা ফেটে (দু'ভাগ হয়ে গেলো এবং এর প্রতিটি ভাগ (এতো বড়ো) ছিলো, যেমন উঁচু উঁচু (একটা) পাহাড়,

৬৪. (এবার) আমি অপর দলটিকে (এ জায়গার) কাছে নিয়ে এলাম,

৬৫. (ঘটনার সমাপ্তি এভাবে হলো,) আমি মুসা ও তার সকল সাথীকে (ফেরাউন থেকে) উদ্ধার করলাম, ৬৬. অতপর আমি অপর দলটিকে (সাগরে) ডুবিয়ে দিলাম;

৬৭. অবশ্যই এ ঘটনার মাঝে (শিক্ষার) নিদর্শন আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশ মানুষ তো আল্লাহ তায়ালার ওপর ঈমানই আনে না।

৬৮. তোমার মালিক অবশ্যই পরাক্রমশালী ও পরম দয়ালু।

৬৯. (হে নবী,) তুমি ওদের কাছে ইবরাহীমের ঘটনাও বর্ণনা করো ।

৭০. যখন সে তার পিতা ও তার জাতির লোকদের (এ মর্মে) জিজ্ঞেস করেছিলো, তোমরা সবাই কার এবাদাত করো?

৭১. তারা বললো, (হাঁ), আমরা মূর্তির এবাদাত করি, নিষ্ঠার সাথেই আমরা তাদের এবাদাতে মগ্ন থাকি।

৭২. সে বললো (বলো তো), তোমরা যখন তাদের ডাকো তারা কি তোমাদের কোনো কথা শুনতে পায়, 

৭৩. অথবা তারা কি তোমাদের কোনো উপকার করতে পারে; কিংবা (পারে কি) তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে? 

৭৪. তারা বললো, (না তা পারে না, তবে) আমরা আমাদের বাপদাদাদের এরূপে এদের এবাদাত করতে দেখেছি, 

৭৫. সে বললো, তোমরা কি কখনো তাদের ব্যাপারটা (একটু) চিন্তা ভাবনা করে দেখেছো যাদের তোমরা এবাদাত করো,

৭৬. তোমরা নিজেরা (যেমনি করছো) তোমাদের আগের লোকেরাও (তেমনি করেছে),

৭৭. (এভাবে যাদের এবাদাত করা হচ্ছে,) তারা সবাই হচ্ছে আমার দুশমন। একমাত্র সৃষ্টিকুলের মালিক ছাড়া (তিনিই আমার বন্ধু),

৭৮. তিনি আমাকে পয়দা করেছেন, অতপর তিনিই আমাকে (অন্ধকারে) চলার পথ দেখিয়েছেন,

৯৮. (বিশেষ করে) যখন আমরা সৃষ্টিকূলের মালিক আল্লাহ তায়ালার সাথে তোমাদেরও (তাঁর) সমকক্ষ মনে করতাম ।

৯৯. (আসলে) এ সব বড়ো বড়ো গুনাহগার ব্যক্তিরাই আমাদের পথভ্রষ্ট করে দিয়েছে।

১০০. (হায়! আজ) আমাদের (পক্ষে কথা বলার) জন্যে কেউই রইলো না,

১০১. না আছে (এমন) কোনো সুহৃদ বন্ধু (যে আল্লাহ তায়ালার কাছে সুপারিশ পেশ করতে পারে?)

১০২. কতো ভালো হতো যদি আমাদের আরেকবার দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হতো, তাহলে অবশ্যই আমরা ঈমানদার হয়ে যেতাম!

১০৩. নিসন্দেহে এ (ঘটনার) মাঝেও (শিক্ষার) নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোক তো ঈমানই আনে না।

১০৪. নিশ্চয়ই তোমার মালিক পরাক্রমশালী ও পরম দয়ালু।

১০৫. নুহের জাতির লোকেরাও (আমার) রসুলদের মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো,

১০৬. যখন তাদেরই ভাই নুহ (এসে) তাদের বললো (হে আমার জাতি), তোমরা কি (আল্লাহ তায়ালাকে) ভয় করো না?

১০৭. নিসন্দেহে আমি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রসুল,

১০৮. অতএব, তোমরা একমাত্র আল্লাহ তায়ালাকেই ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।

১০৯. আমি এ (দাওয়াত পৌঁছানোর) জন্যে তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক দাবী করি না, আমার যা পারিশ্রমিক তা তো রাব্বুল আলামীনের কাছেই (মজুদ) রয়েছে,

১১০. সুতরাং তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো;

১১১. তারা বললো, আমরা কিভাবে তোমার ওপর ঈমান আনবো যখন আমরা দেখতে পাচ্ছি কতিপয় নীচু লোক তোমার আনুগত্য স্বীকার করে নিয়েছে;

১১২. সে বললো, ওরা (কে) কি কাজ করে তা আমার জানার (বিষয়) নয়।

১১৩. তাদের (কাজের) হিসাব গ্রহণ করা (আমার দায়িত্ব নয়, এটা) তো সম্পূর্ণ আমার মালিকের ব্যাপার, (কতো ভালো হতো এ কথাটা) যদি তোমরাও বুঝতে পারতে,

১১৪. এটা আমার কাজ নয় যে, যারা ঈমান আনবে (নম্নিমানের মানুষ হওয়ার কারণে) আমি তাদের আমার কাছ থেকে তাড়িয়ে দেবো,

১১৫. আমি তো একজন সতর্ককারী ছাড়া আর কিছুই নই;

১১৬. তারা বললো, হে নুহ, যদি তুমি (এ কাজ থেকে) ফিরে না আসো, তাহলে তোমাকে পাথর মেরে হত্যা করা হবে।

১১৭. সে বললো, হে আমার মালিক, (তুমি দেখতে পাচ্ছো কিভাবে) আমার জাতি আমাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করলো!

১১৮. তুমি আমার এবং তাদের মাঝে একটা ফয়সালা করে দাও, তুমি আমাকে এবং আমার সাথে যেসব ঈমানদার মানুষরা আছে তাদের (সবাইকে) এদের (ফেতনা) থেকে উদ্ধার করো।

১১৯. (আমি তার এ দোয়া কবুল করলাম,) তাকে এবং তার সংগী সাথী যারা ভরা েেনৗকায় (তার সাথে) আরোহী ছিলো, তাদের (মহাপ্লাবন থেকে) বাঁচিয়ে দিলাম,

১২০. অতপর অবশষ্টি লোকদের আমি ডুবিয়ে দিলাম;

১২১. এ ঘটনার মাঝেও (শিক্ষণীয়) নিদর্শন আছে; কিন্তু এদের মধ্যে অধিকাংশ লোক তো ঈমানই আনে না ।

১২২. অবশ্যই তোমার মালিক, মহাপরাক্রমশালী এবং পরম দয়ালু।

১২৩. আ'দ সম্প্রদায়ের লোকেরাও (তাদের) রসুলদের মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলো ।

১২৪. যখন তাদেরই এক (-জন শুভাকাংখী) ভাই (এসে) তাদের বললো (হে আমার জাতির লোকেরা), এ কি হলো তোমাদের, তোমরা কি (আল্লাহ তায়ালাকে) ভয় করবে না?

১২৫. আমি হচ্ছি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রসূল,

১২৬. অতএব তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো,

১২৭. আমি তো এ (কাজের) জন্যে তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো রব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালার কাছেই (মজুদ) রয়েছে;

১২৮. তোমরা প্রতিটি উঁচুস্থানে স্মৃতি (-সৌধ হিসেবে বড়ো বড়ো ঘর) বানিয়ে নিচ্ছো, যা তোমরা (একান্ত) অপচয় (হিসেবেই) করছো,

১২৯. এমন (নিপুণ শিল্পকর্ম দিয়ে) প্রাসাদ বানাচ্ছো, (যা দেখে) মনে হয় তোমরা বুঝি এ পৃথিবীতে চিরদিন থাকবে,

১৩০. (অপরদিকে) তোমরা যখন কারও ওপর আঘাত হানো, সে আঘাত হানো অত্যন্ত নিষ্ঠুর স্বেচ্ছাচারী হিসেবে, 

১৩১. অতএব তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো,

১৩২. তোমরা ভয় করো তাঁকে যিনি তোমাদের এমন সবকিছু দিয়ে সাহায্য করেছেন যা তোমরা ভালো করেই জানো,

১৩৩. তিনি চতুষ্পদ জন্তু জানোয়ার, সন্তান সন্ততি দিয়ে তোমাদের সাহায্য করেছেন,

১৩৪. (সাহায্য করেছেন সুরম্য) উদ্যানমালা ও ঝর্ণাধারা দিয়ে,

১৩৫. সত্যিই আমি (এসব অকৃতজ্ঞ আচরণের কারণে) তোমাদের জন্যে একটি কঠিন দিনের শাস্তির ভয় করছি,

১৩৬. তারা বললো (হে নবী), তুমি আমাদের কোনো উপদেশ দাও কিংবা না দাও; উভয়টাই আমাদের জন্যে সমান,

১৩৭. (তোমার) এ সব কথা আগের লোকদের নিয়ম নীতি ছাড়া আর কিছুই নয়, 

১৩৮. (আসলে) আমরা কখনো আযাব প্রাপ্ত হবো না,

১৩৯. অতপর তারা তাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করলো, আমিও তাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিলাম, (মূলত) এ (ঘটনা)-র মাঝেও রয়েছে (শিক্ষণীয়) নিদর্শন, (তা সত্ত্বেও) তাদের অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনে না।

১৪০. নিশ্চয় তোমার মালিক পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

১৪১. (এভাবে) সামুদ জাতিও (তাদের) রসুলদের মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলো,

১৪২. যখন তাদেরই (এক) ভাই সালেহ তাদের বলেছিলো (তোমাদের এ কি হলো), তোমরা কি (আল্লাহ তায়ালাকে) ভয় করবে না?

১৪৩. নিসন্দেহে আমি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রসুল,

১৪৪. অতএব তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।

১৪৫. আমি তো তোমাদের কাছে (এ কাজের জন্যে) কোনো রকম পারিশ্রমিক দাবী করছি না, আমার (যা কিছু) পারিশ্রমিক তা তো সৃষ্টিকূলের মালিক আল্লাহর কাছেই (মজুদ) রয়েছে;

১৪৬. তোমরা কি (ধরেই নিয়েছো,) এ (দুনিয়া)-র মাঝে যা কিছু রয়েছে, তার মধ্যে নিরাপদে (বাস করার জন্যে) তোমাদের এমনিই ছেড়ে দেয়া হবে,

১৪৭. নিরাপদ থাকবে (তোমরা) এ উদ্যনামালা ও এ ঝর্ণাধারার মধ্যে?

১৪৮. শস্যক্ষেত্র, (এ) নায়ক ও ঘন গোছাবিশষ্টি খেজুর বাগিচার মধ্যেও (কি তোমরা নিরাপদ থাকতে পারবে),

১৪৯. তোমরা যে নিপুণ শিল্প দ্বারা পাহাড় কেটে রংচং করে বাড়ী বানাও (তাতে কি তোমরা চিরদিন থাকতে পারবে?)

১৫০. (ওর কোনোটাতেই যখন তোমরা নিরাপদ নও তখন) তোমরা আল্লাহ তায়ালাকেই ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো,

১৫১. (সে সব) সীমালংঘনকারী মানুষদের কথা শুনো না,

১৫২. যারা (আল্লাহর) যমীনে শুধু বিপর্যয়ই সৃষ্টি করে এবং কখনো (সমাজের) সংশোধন করে না ।

১৫৩. (এসব শুনে) তারা বললো (হে সালেহ), আসলেই তুমি হচ্ছো একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি,

১৫৪. তুমি তো আমাদেরই মতো একজন মানুষ, যদি তুমি (তোমার দাবীতে) সত্যবাদী হও তাহলে (ভিন্ন কোনো) প্রমাণ নিয়ে এসো!

১৫৫. সে বললো এ উষ্ট্রী (হচ্ছে আমার নবুওতের প্রমাণ), এর জন্যে (কয়ার) পানি পান করার (একটি নির্দিষ্ট ) পালা থাকবে, আর একটি নির্দিষ্ট দিনের পালা থাকবে তোমাদের (পশুদের পানি) পান করার জন্যে,

১৫৬. কখনো একে কোনো রকম দুঃখ ক্লেশ দেয়ার উদ্দেশে স্পর্শও করো না, নতুবা বড়ো (কঠিন) দিনের আযাব তোমাদের পাকড়াও করবে।

১৫৭. অতপর (পায়ের নলি কেটে) তারা সেটিকে হত্যা করলো, তখন (কঠিন শাস্তি দেখে) তারা ভীষণভাবে অনুতপ্ত হলো,

১৫৮. অতপর (আল্লাহ তায়ালার) শাস্তি এসে তাদের গ্রাস করলো, এ (ঘটনা)-র মাঝেও রয়েছে (আল্লাহ তায়ালার বিশেষ) নিদর্শন; কিন্তু তাদের অধিকাংশ মানুষ তো ঈমানই আনে না।

১৫৯. নিসন্দেহে তোমার মালিক মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

১৬০. (একইভাবে) লুতের জাতিও (আল্লাহর) রসুলদের অস্বীকার করেছে,

১৬১. যখন তাদের ভাই লুত এসে তাদের বললো (এ কি হলো তোমাদের), তোমরা কি (আল্লাহর আযাবকে) ভয় করবে না?

১৬২. নিসন্দেহে আমি হচ্ছি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রসুল,

১৬৩. অতএব তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো,

১৬৪. আমি তো এ (কাজের) জন্যে তোমাদের কাছে কোনো বিনিময় চাচ্ছি না, আমার বিনিময় তো সৃষ্টিকুলের মালিক আল্লাহর দরবারেই (মজুদ) রয়েছে;

১৬৫. (এ কি হলো তোমাদের! জৈবিক প্রয়োজন পূরণের জন্যে) তোমরা দুনিয়ার পুরুষগুলোর কাছেই যাও,

১৬৬. অথচ তোমাদের মালিক তোমাদের (এ প্রয়োজনের) জন্যে তোমাদের স্ত্রী সাথীদের পয়দা করে রেখেছেন, তাদের তোমরা পরিহার করে (এ নোংরা কাজে লপ্তি) থাকো; তোমরা (আসলেই) এক মারাত্মক সীমালংঘনকারী জাতি।

১৬৭. তারা বললো, হে লুত, যদি তুমি তোমার এসব (ওয়ায নসীহত) থেকে নিবৃত্ত না হও, তাহলে তুমি হবে বহিষ্কৃতদের একজন।

১৬৮. সে বললো (দেখো), আমি তোমাদের এ নোংরা কাজকে অত্যন্ত ঘৃণা করি;

১৬৯. (এবার লুত আল্লাহ তায়ালাকে বললো,) হে আমার মালিক, তারা যা কিছু করে তুমি আমাকে এবং আমার পরিবার পরিজনকে সে সব (ঘৃণিত কাজ) থেকে বাঁচাও।

১৭০. অতপর আমি লুত ও তার পরিবার পরিজনদের সকলকে উদ্ধার করলাম ।

১৭১. (তার পরিবারের) এক (পাপী) বৃদ্ধাকে বাদ দিয়ে, সে (উদ্ধারের সময়) পেছনেই থেকে গেলো (এবং আযাবে নিমজ্জিত হয়ে গেলো),

১৭২. অতপর অবশষ্টি সবাইকেই আমি সমপূর্ণ ধ্বংস করে দিলাম,

১৭৩. তাদের ওপর আমি (আযাবের) বৃষ্টি বর্ষণ করলাম, (যাদের ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিলো) তাদের জন্যে কতো নিকৃষ্ট ছিলো সেই (আযাবের) বৃষ্টি!

১৭৪. এ (ঘটনা)-র মাঝেও (রয়েছে শিক্ষণীয়) নিদর্শন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই ঈমান আনে না ।

১৭৫. নিসন্দেহে তোমার মালিক মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

১৭৬. আইকা'র অধিবাসীরাও রসুলদের অস্বীকার করেছিলো,

১৭৭. যখন শোয়ায়ব তাদের বলেছিলো (হে আমার জাতি), তোমরা কি (আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করবে না?

১৭৮. নিসন্দেহে আমি হচ্ছি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রসুল,

১৭৯. সুতরাং তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো,

১৮০. (আমি যে তোমাদের ডাকছি) এ জন্যে আমি তোমাদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক দাবী করছি না, (কারণ) আমার পারিশ্রমিক যা, তা তো সৃষ্টিকুলের মালিক আল্লাহ তায়ালার কাছেই মজুদ রয়েছে;

১৮১. (হে মানুষ, মাপের সময়) তোমরা পুরোপুরি মেপে দেবে, (মাপে কম দিয়ে) তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের দলভুক্ত হয়ো না ।

১৮২. (ওযন করার সময়) পাল্লা ঠিক রেখে ওযন করবে,

১৮৩. মানুষদের পাওনা কখনো কম দেবে না এবং দুনিয়ায় (খামাখা) ফেতনা ফাসাদ সৃষ্টি করো না,

১৮৪. ভয় করবে তাঁকে যিনি তোমাদের এবং তোমাদের আগে যারা গত হয়ে গেছে তাদের সবাইকে সৃষ্টি করেছেন;

১৮৫. তারা বললো (হে শোয়ায়ব), তুমি (তো) দেখছি যাদুগ্রস্ত ব্যক্তিদেরই অন্তর্ভুক্ত,

১৮৬. (তুমি কিভাবে নবী হলে?) তুমি তো আমাদেরই মতো মানুষ, আমরা মনে করি তুমি মিথ্যাবাদীদেরই অন্তর্ভুক্ত,

১৮৭, (হ্যাঁ,) তুমি যদি সত্যবাদী হও তাহলে যাও, আসমান (ভেংগে) এর একটি টুকরো আমাদের ওপর ফেলে দাও।

১৮৮. সে বললো, যা কিছু (উদ্ভট দাবী) তোমরা করছো আমার মালিক তা ভালো করেই জানেন,

১৮৯. অতপর তারা তাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করলো, পরিণামে মেঘাচ্ছন্ন দিনের এক ভীষণ আযাব তাদের পাকড়াও করলো, এ ছিলো সত্যিই এক কঠিন দিনের আযাব।

১৯০. এ (ঘটনা)-র মাঝেও (শিক্ষার) নিদর্শন আছে; (কিন্তু) তাদের অনেকেই (এর ওপর) ঈমান আনে না।

১৯১. নিসন্দেহে তোমার মালিক মহাপরাক্রমশালী ও পরম দয়াল।

১৯২. (হে নবী,) অবশ্যই এ (কোরআন)-টি রব্বুল আলামীনের নাযিল করা (একটি গ্রন্থ);

১৯৩. একজন বিশ্বস্ত ফেরেশতা (আমারই আদেশে) এটা নাযিল করেছে,

১৯৪. (নাযিল করেছে) তোমারই মনের ওপর যাতে করে তুমিও সতর্ককারী (নবী)-দের একজন হতে পারো,

১৯৫. (একে নাযিল করা হয়েছে) সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়;

১৯৬. আগের (উম্মতদের কাছে) নাযিল করা কেতাবসমুহে অবশ্যই এটি (উল্লিখিত) আছে।

১৯৭. এটা কি এদের জন্যে দলিল নয় যে, বনী ইসরাঈলের আলেমরাও এর সম্পর্কে পূর্ণ অবগত আছে;

১৯৮. যদি আমি এ (কোরআন)কে (আরবীর বদলে অন্য) কোনো অনারবের ওপর (তার ভাষায়) নাযিল করতাম,

১৯৯. তারপর সে (অনারব) ব্যক্তি তাদের কাছে এসে এটা (কেতাব) পাঠ করতো, অতপর (ভাষার অজুহাত তুলে) এর ওপর তারা (মোটেই) ঈমান আনতো না;

২০০. এভাবেই আমি এ বিষয়টি নাফরমান অপরাধীদের অন্তরে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছি;

২০১. তারা (আসলে) কখনো এর ওপর ঈমান আনবে না, যতোক্ষণ না তারা কোনো কঠিন আযাব (নিজেদের চোখে) দেখতে পাবে,

২০২. আর সে (আযাব কিন্তু) তাদের কাছে আসবে একান্ত আকস্মিকভাবেই, তারা কিছুই টের পাবে না,

২০৩. তখন তারা বলবে, আমাদের কি (কিছু সময়ের জন্যেও) অবকাশ দেয়া হবে না?

২০৪. (অথচ) সে লোকগুলোই (এক সময়) আযাবকে ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিলো!

২০৫. তুমি (এ বিষয়টা) চিন্তা করে দেখেছো কি, যদি আমি তাদের অনেক দিন ধরে (পার্থিব) ভোগবিলাস ভোগ করতেও দিই,

২০৬. তারপর যে (আযাব) সম্পর্কে তাদের ওয়াদা করা হয়েছিলো তা যদি (সত্যিই) তাদের কাছে এসে পড়ে, 

২০৭. তাহলে (এই) যে বৈষয়িক বিলাস তারা ভোগ করছিলো, তা সব কি কোনো কাজে লাগবে?

২০৮. আমি (কাফেরদের) কোনো জনপদই ধ্বংস করিনি যার জন্যে (কোনো) সতর্ককারী (নবী) ছিলোনা,

২০৯. (এ হচ্ছে মূলত সুস্পষ্ট) উপদেশ, আর আমি তো যালেম নই (যে, সতর্ক না করেই তাদের ধ্বংস করে দেবো)।

২১০. এ (কোরআন)টি কোনো শয়তান নাযিল করেনি।

২১১. ওরা এ কাজের যোগ্যও নয়, না তারা তেমন কোনো ক্ষমতা রাখে;

২১২. তাদের তো (ওহী) শোনা থেকেও বঞ্চিত রাখা হয়েছে;

২১৩. অতএব তুমি কখনো আল্লাহ তায়ালার সাথে অন্য কোনো মাবুদকে ডেকো না, নতুবা তুমিও শাস্তিযোগ্য লোকদের দুলভুক্ত হয়ে যাবে ।

২১৪. (হে নবী,) তুমি তোমার নিকটতম আত্মীয় স্বজনদের (আল্লাহ তায়ালার আযাব থেকে) ভয় দেখাও,

২১৫. যে ব্যক্তি ঈমান নিয়ে তোমার অনুবর্তন করবে তুমি তার প্রতি স্নেহের আচরণ করো,

২১৬. যদি কেউ তোমার সাথে নাফরমানী করে তাহলে তুমি তাকে বলে দাও, তোমরা (আল্লাহ তায়ালার সাথে) যে আচরণ করছো তার (পরিণামের) জন্যে আমি কিন্তু (মোটেই) দায়ী নই,

২১৭. (তাদের অবাধ্য আচরণে তুমি মনোক্ষুন্ন হয়ো না, তুমি বরং) সর্বোচ্চ পরাক্রমশালী ও দয়ালু আল্লাহ তায়ালার ওপরই ভরসা করো,

২১৮. যিনি তোমাকে দেখতে থাকেন, যখন তুমি (নামাযে) দাঁড়াও,

২১৯. এবং সাজদাকারীদের মাঝে তোমার ওঠা বসাও (তিনি প্রত্যক্ষ করেন)।

২২০. অবশ্যই তিনি (সব কিছু) শোনেন, (সব কিছুই) জানেন।

২২১. (হে নবী,) আমি কি তোমাকে বলে দেবো, শয়তান কার ওপর (বেশী) সওয়ার হয়?

২২২. (শয়তান সওয়ার হয়) প্রতিটি ঘোর মিথ্যাবাদী ও পাপী মানুষের ওপর,

২২৩. ওরা (শয়তানের কথা) শোনার জন্যে কান পেতে থাকে, আর তাদের অধিকাংশই হচ্ছে (নিরেট) মিথ্যাবাদী;

২২৪. (আর কবিদের কথা!) কবিরা (তো অধিকাংশই হয় পথভ্রষ্ট,) তাদের অনুসরণ করে (আরো) কতিপয় গোমরাহ ব্যক্তি;

২২৫. তুমি কি দেখতে পাও না, ওরা (কল্পনার হাওয়ায় চড়ে) প্রতিটি ময়দানে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ায়,

২২৬. এরা এমন কথা (অন্যদের) বলে যা তারা নিজেরা করে না,

২২৭. তবে যারা আল্লাহর ওপর ঈমান আনে ও (সে অনুযায়ী) নেক কাজ করে এবং বেশী করে আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করে, তাদের কথা আলাদা। তাদের ওপর যুলুম করার পরই কেবল তারা (আত্মরক্ষামূলক) প্রতিশোধ গ্রহণ করে; আর যুলুম যারা করে তারা অচিরেই জানতে পারবে তাদের (একদিন) কোথায় ফিরে যেতে হবে ।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url