আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আন-নুর’র বাংলা অনুবাদ | সূরা আন-নুর | Surah An-Nur | سورة النور



সূরা আন-নুর’র বাংলা অনুবাদ


সূরা আন-নুর মদীনায় অবতীর্ণ আয়াত ৬৪, রুকু ৯

সূরা আন-নুর’র বাংলা অনুবাদ



রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে

১. (এটি একটি) সুরা, আমিই নাযিল করেছি এবং আমিই (এতে বর্ণিত বিধানসমূহ) ফরয করেছি, আমিই এতে (পরিষ্কার করে আমার) আয়াতসমূহ নাযিল করেছি, যাতে করে তোমরা (এর থেকে) শিক্ষা গ্রহণ করতে পারো ।

২. (এ বিধানসমুহের একটি হচ্ছে,) ব্যভিচারিণী নারী ও ব্যভিচারী পুরুষ (সংক্রান্ত বিধানটি । এদের ব্যাপারে আদেশ হচ্ছে), তাদের প্রত্যেককে তোমরা একশ'টি করে বেত্রাঘাত করবে, আল্লাহর দ্বীনের (আদেশ প্রয়োগের) ব্যাপারে ওদের প্রতি কোনো রকম দয়া যেন তোমাদের পেয়ে না বসে, যদি তোমরা আল্লাহ তায়ালা ও পরকালের ওপর ঈমান এনে থাকো, (তাহলে) মোমেনদের একটি দল যেন তাদের এ শাস্তি প্রত্যক্ষ করার জন্যে (সেখানে মজুদ) থাকে।

৩. (আল্লাহর হুকুম হচ্ছে,) একজন ব্যভিচারী পুরুষ কোনো ব্যভিচারিণী মহিলা কিংবা কোনো মোশরেক নারী ছাড়া অন্য কোনো ভালো নারীকে বিয়ে করবে না। অপরদিকে একজন ব্যভিচারিণী মহিলা কোনো ব্যভিচারী পুরুষ কিংবা কোনো মোশরেক পুরুষ ছাড়া অন্য কোনো ভালো পুরুষকে বিয়ে করবে না, সাধারণ মোমেনদের জন্যে এ (বিয়ে)- কে হারাম করা হয়েছে ।

৪. (অপরদিকে) যারা (খামাখা) সতী সাধ্বী নারীদের ওপর (ব্যভিচারের) অপবাদ আরোপ করবে এবং এর সপক্ষে চার জন সাক্ষী হাযির করতে পারবে না, তাদের আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং (ভবিষ্যতে) আর কখনো তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবে না, কেননা এরা হচ্ছে (নিকৃষ্ট) গুনাহগার,

৫. অবশ্য যেসব ব্যক্তি এ (অন্যায়ের) পর তাওবা করে এবং (নিজেদের) শুধরে নেয় (তাদের কথা আলাদা, আল্লাহ তায়ালা তাদের মাফ করে দেবেন), আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই ক্ষমাশীল ও বড়ো দয়ালু।

৬. আর যারা নিজেদের স্ত্রীদের ওপর (ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ করে, অথচ নিজেরা ছাড়া তাদের কাছে (অপবাদের পক্ষে) অন্য কোনো সাক্ষীও মজুদ থাকে না, সে অবস্থায় এটাই হবে তাদের সাক্ষ্য যে, তারা আল্লাহর নামে চার বার শপথ করে বলবে, অবশ্যই (এ অভিযোগের ব্যাপারে) সে সত্যবাদী ।

৭. (এরপর) পঞ্চম বার (শপথ করার সময়) বলবে, মিথ্যাবাদীর ওপর যেন আল্লাহ তায়ালার লানত (নাযিল) হয়।

৮. কোনো স্ত্রীর ওপর থেকেও (এভাবে আনীত অভিযোগের) শাস্তি রহিত করা হবে যদি সেও চার বার আল্লাহর নামে কসম করে বলে যে, এ (পুরুষ) ব্যক্তিটি হচ্ছে আসলেই মিথ্যাবাদী,

৯. (অতপর সেও) পঞ্চম বার (শপথ করার সময়) বলবে, সে (অভিযোগকারী ব্যক্তিটি) সত্যবাদী হলে তার (অভিযুক্তের) ওপরও আল্লাহর অভিশাপ নেমে আসুক!

১০. (হে মোমেনরা,) যদি তোমাদের ওপর আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া না থাকতো (তাহলে তোমরা এসব কিছু থেকে মাহরুম থেকে যেতে), অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা হচ্ছেন মহান তাওবা গ্রহণকারী এবং প্রবল প্রজ্ঞাময়!

১১. যারা এ (নবী পরিবার সম্পর্কে) মিথ্যা অপবাদ নিয়ে এসেছে, তারা তো (ছিলো) তোমাদের একটি (ক্ষুদ্র) দল, এ বিষয়টি তোমরা তোমাদের জন্য খারাপ ভেবো না, বরং (তা হচ্ছে) তোমাদের জন্যে (একান্ত) কল্যাণকর, এদের মধ্যে প্রতিটি ব্যক্তি যে যতোটুকু গুনাহ করেছে (সে ততোটুকুই তার ফল পাবে), আর তাদের মধ্যে যে সবচাইতে বেশী (এ কাজে অংশ গ্রহণ করেছে, তার জন্যে আযাবও রয়েছে অনেক বড়ো।

১২. যদি এ (মিথ্যা ঘটনা)-টি শোনার পর মোমেন পুরুষ ও মোমেন নারীরা নিজেদের ব্যাপারে একটা ভালো ধারণা পোষণ করতো! কতো ভালো হতো যদি (তারা একথা) বলতো, এটা হচ্ছে এক নির্জলা অপবাদ মাত্র!

১৩. (যারা অপবাদ রটালো) তারাই বা কেন এ ব্যাপারে চার জন সাক্ষী হাযির করলো না, যেহেতু তারা (প্রয়োজনীয় চার জন) সাক্ষী হাযির করতে পারেনি, তাই আল্লাহ তায়ালার কাছে তারাই হচ্ছে মিথ্যাবাদী।

১৪. (হে মোমেনরা,) যদি দুনিয়া ও আখেরাতে তোমাদের ওপর আল্লাহ তায়ালার দয়া অনুগ্রহ না থাকতো, তাহলে (একজন নবী পত্নীর) যে বিষয়টির তোমরা চর্চা করছিলে, তার জন্যে এক বড়ো ধরনের আযাব এসে তোমাদের স্পর্শ করতো,

১৫. তোমরা এ (মিথ্যা)-কে নিজেদের মুখে মুখে প্রচার করছিলে, নিজেদের মুখ দিয়ে এমন সব কথা বলে যাচ্ছিলে যে ব্যাপারে তোমাদের কোনো কিছুই জানা ছিলো না, তোমরা একে একটি তুচ্ছ বিষয় মনে করছিলে, কিন্তু তা ছিলো আল্লাহ তায়ালার কাছে একটি গুরুতর বিষয়।

১৬. তোমরা যখন ব্যাপারটা শুনলে তখন সাথে সাথেই কেন বললে না যে, আমাদের এটা মোটেই সাজে না যে, আমরা এ ব্যাপারে কোনো কথা বলবো, আল্লাহ তায়ালা অনেক পবিত্র, অনেক মহান | সত্যিই (এ ছিলো) এক গুরুতর অপবাদ!

১৭. আল্লাহ তায়ালা তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন, তোমরা যদি (সত্যিই) মোমেন হও তাহলে কখনো এরূপ আচরণের পুনরাবৃত্তি করো না।

১৮. আল্লাহ তায়ালা (তাঁর) আয়াতসমূহ স্পষ্ট করে তোমাদের সামনে বিবৃত করেন এবং আল্লাহ তায়ালা (সবকিছু) জানেন, তিনি বিজ্ঞ, কুশলী।

১৯. যারা মোমেনদের মাঝে (মিছে অপবাদ রটনা করে) অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্যে রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি, আল্লাহ তায়ালা (সব কিছু) জানেন, আর তোমরা (কিছুই) জানো না।

২০. (হে মোমেনরা,) যদি তোমাদের ওপর আল্লাহ তায়ালার দয়া ও অনুগ্রহ না থাকতো (তাহলে একটা বড়ো ধরনের বিপর্যয় ঘটে যেতো), অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা বড়োই দয়ালু ও স্নেহপ্রবণ!

২১. হে মানুষ, তোমরা যারা ঈমান এনেছো, কখনো শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না, তোমাদের মধ্যে যে কেউই শয়তানের পদাংক অনুসরণ করে (সে যেন জেনে রাখে), সে (অভিশপ্ত শয়তান) তো তাকে অশ্লীলতা ও মন্দ কাজেরই আদেশ দেবে, যদি তোমাদের ওপর আল্লাহ তায়ালার দয়া ও অনুগ্রহ না থাকতো, তাহলে তোমাদের মধ্যে কেউই কখনো পাক পবিত্র হতে পারতো না, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা যাকে চান তাকে পবিত্র করেন এবং আল্লাহ তায়ালা (সব কিছু) শোনেন, তিনি (সব কিছু জানেন।

২২. তোমাদের মধ্যে যারা (দ্বীনী) মর্যাদা ও (পার্থিব) ঐশ্বর্যের অধিকারী, তারা যেন (কখনো এ মর্মে) শপথ না করে যে, তারা (তাদের গরীব) আত্মীয় স্বজন, অভাবগ্রস্থ এবং যারা আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় হিজরত করেছে তাদের কোনোরকম সাহায্য করবে না, বরং তাদের উচিত তারা যেন তাদের ক্ষমা করে দেয় এবং তাদের দোষত্রুটি উপেক্ষা করে, তোমরা কি এটা চাও না যে, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের গুনাহ মাফ করে দিন, আল্লাহ তায়ালা ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু

২৩. যারা সতী-সাধ্বী নারীদের প্রতি (ব্যভিচারের) অপবাদ আরোপ করে, যারা (এ অপবাদের ব্যাপারে) কোনো খবরই রাখে না, (সর্বোপরি) যারা ঈমানদার, (তাদের প্রতি অপবাদ আরোপকারী) এসব মানুষদের জন্যে দুনিয়া ও আখেরাতের উভয় স্থানেই অভিশাপ দেয়া হয়েছে, (উপরন্ত) তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর আযাব,

২৪. সেদিন তাদের ওপর (স্বয়ং) তাদের জিহ্বাসমূহ, তাদের হাতগুলো ও তাদের পাগুলো তাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে।

২৫. সেদিন আল্লাহ তায়ালা তাদের যথার্থ প্রাপ্য পুরোপুরি আদায় করে দেবেন এবং তারা জেনে নেবে যে, আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন সুস্পষ্ট সত্য ।

২৬. (জেনে রেখো,) নষ্ট নারীরা হচ্ছে নষ্ট পুরুষদের জন্যে, নষ্ট পুরুষরা হচ্ছে নষ্ট নারীদের জন্যে, (আবার) ভালো নারীরা হচ্ছে ভালো পুরুষদের জন্যে, ভালো পুরুষরা হচ্ছে ভালো নারীদের জন্যে, (মোনাফেক) লোকেরা (এদের সম্পর্কে) যা কিছু বলে তারা তা থেকে পাক পবিত্র, (আখেরাতে) এদের জন্যেই রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রেযেক।

২৭. হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে সে ঘরের লোকদের অনুমতি না নিয়ে ও তার বাসিন্দাদের প্রতি সালাম না করে কখনো প্রবেশ করো না, (নৈতিকতা ও শালীনতার দিক থেকে) এটা তোমাদের জন্যে উত্তম (পন্থা, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের এসব বলে দিচ্ছেন), যাতে করে তোমরা (কথাগুলো) মনে রাখতে পারো ।

২৮. (ঘরের দরজায় গিয়ে) যদি তোমরা কাউকে সেখানে না পাও, তাহলে সেখানে প্রবেশ করো না, যতোক্ষণ না তোমাদের (ঘরে ঢোকার) অনুমতি দেয়া হবে, যদি (কোনো অসুবিধার কথা জানিয়ে) তোমাদের বলা হয় তোমরা ফিরে যাও, তাহলে তোমরা অবশ্যই (বিনা দ্বিধায়) ফিরে যাবে, এটা তোমাদের জন্যে উত্তম, তোমরা (যখন) যা কিছু করো, আল্লাহ তায়ালা সে সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত থাকেন।

২৯. তবে যেসব ঘরে কেউ বসবাস করে না, যেখানে তোমাদের কোনো মাল সামানা রয়েছে, তেমন কোনো ঘরে প্রবেশে তোমাদের কোনো পাপ নেই, (কেননা) আল্লাহ তায়ালা জানেন যা কিছু তোমরা প্রকাশ করো আবার যা কিছু তোমরা গোপন করো।

৩০. (হে নবী,) তুমি মোমেন পুরুষদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে (নিম্নগামী ও) সংযত করে রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহকে হেফাযত করে, এটাই (হচ্ছে) তাদের জন্যে উত্তম পন্থা, (কেননা) তারা (নিজেদের চোখ ও লজ্জাস্থান দিয়ে) যা করে, আল্লাহ তায়ালা সে সম্পর্কে পূর্ণাংগভাবে অবহিত রয়েছেন।

৩১. (হে নবী, একইভাবে) তুমি মোমেন নারীদেরও বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নিম্নগামী করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাযত করে, তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে না বেড়ায়, তবে তার (শরীরের) যে অংশ (এমনিই) খোলা থাকে (তার কথা আলাদা), তারা যেন তাদের বক্ষদেশ মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে রাখে, তারা যেন তাদের স্বামী, তাদের পিতা, তাদের শ্বশুর, তাদের ছেলে, তাদের স্বামীর (আগের ঘরের) ছেলে, তাদের ভাই, তাদের ভাইর ছেলে, তাদের বোনের ছেলে, তাদের (সচরাচর মেলামেশার) মহিলা, নিজেদের অধিকারভুক্ত সেবিকা দাসী, নিজেদের অধীনস্থ (এমন) পুরুষ যাদের (মহিলাদের কাছ থেকে) কোনো কিছুই কামনা করার নেই, কিংবা এমন শিশু যারা এখনো মহিলাদের গোপন অংগ সম্পর্কে কিছুই জানে না (এসব মানুষ ছাড়া তারা যেন) অন্য কারো সামনে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, (চলার সময়) যমীনের ওপর তারা যেন এমনভাবে নিজেদের পা না রাখে যে সৌন্দর্য তারা গোপন করে রেখেছিলো তা (পায়ের আওয়াযে) লোকদের কাছে জানাজানি হয়ে যায়, হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, (ত্রুটি বিচ্যুতির জন্যে) তোমরা সবাই আল্লাহর দরবারে তাওবা করো, আশা করা যায় তোমরা নাজাত পেয়ে যাবে।

৩২. তোমাদের মধ্যে যাদের স্ত্রী নেই, তোমরা তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করো, (একইভাবে) তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা ভালো মানুষ তাদেরও (বিয়ে শাদীর ব্যবস্থা করো), যদি তারা অভাবী হয়, (তাহলে) আল্লাহ তায়ালা (অচিরেই) তাঁর অনুগ্রহ দিয়ে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন, আল্লাহ তায়ালা প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ,

৩৩. যাদের বিয়ে (করে ব্যয়ভার বহন) করার সামর্থ নেই, আল্লাহ তায়ালা তাদের নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে, তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস দাসীদের ভেতর যারা (মুক্তির কোনো অগ্রিম লিখিত) চুক্তি লিখিয়ে নিতে চায়, তোমরা তাদের তা লিখে দাও, যদি তোমরা তাদের (এ চুক্তির) মধ্যে কোনো ভালো (সম্ভাবনা) বুঝতে পারো, (তাহলে) আল্লাহ তায়ালা তোমাদের যে সম্পদ দান করেছেন তা থেকে তাদের মুক্তির সময় (মুক্তহস্তে) দান করবে, তোমাদের অধীনস্থ দাসীদের যারা সতী সাধ্বী থাকতে চায়, নিছক পার্থিব ধন সম্পদের আশায় কখনো তাদের ব্যভিচারের জন্যে বাধ্য করো না, যদি তোমাদের কেউ তাদের (এ ব্যাপারে) বাধ্য করে, (তাহলে তারা যেন আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, কারণ) তাদের এ বাধ্য করার পরেও (তাওবাকারীদের প্রতি) আল্লাহ তায়ালা (হামেশাই) ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু ।

৩৪. (হে মোমেনরা,) আমি তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ নাযিল করেছি, আরো উদাহরণ (হিসেবে) পেশ করেছি তোমাদের আগে (দুনিয়া থেকে) চলে গেছে তাদের (ঘটনাগুলো), পরহেযগার লোকদের জন্যে (তা হচ্ছে শিক্ষণীয়) উপদেশ ।

৩৫. আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন আসমানসমূহ ও যমীনের নূর, তাঁর এ নূরের উদাহরণ হচ্ছে তা যেমন একটি তাকের মতো, তাতে একটি প্রদীপ (রাখা) আছে, প্রদীপটি (আবার) স্থাপন করা হয়েছে (স্বচ্ছ একটি) কাচের আবরণের ভেতর, কাচের আবরণটি হচ্ছে উজ্জ্বল একটি তারার মতো তা প্রজ্বলিত করা হয় পবিত্র যয়তুন গাছ (নিসৃত তেল) দ্বারা, যা (শুধু) পূর্ব দিকের (সূর্যের আলো থেকেই আলোকপ্রাপ্ত) নয়, পশ্চিম দিকের (সূর্যের আলোকপ্রাপ্তও) নয়, (বরং এটি সব সময়ই প্রজ্বলিত থাকে), আবার এর তেল এতো পরিষ্কার, (দেখলে) মনে হয়, তা বুঝি নিজে নিজেই জ্বলে ওঠবে, যদি আগুন তাকে (ততোক্ষণে) স্পর্শও না করে থাকে, (আর যদি আগুন স্পর্শ করেই ফেলে তাহলে তা হবে) নূরের ওপর (আরো) নূর, আল্লাহ তায়ালা তাঁর এ নূরের দিকে যাকে চান তাকেই হেদায়াত দান করেন, আল্লাহ তায়ালা (এভাবে) মানুষদের (বোঝানোর) জন্যে নানা উপমা পেশ করে থাকেন, আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বিষয় সম্পর্কেই সম্যক অবগত আছেন,

৩৬. (এসব ব্যক্তিদের পাওয়া যাবে) সে ঘরসমূহে, যার মধ্যে আল্লাহ তায়ালার সম্মান মর্যাদা উন্নীত করা এবং (তাতে) তাঁর নিজের (পবিত্র) নাম স্মরণ করার জন্যে সবাইকে আদেশ দিয়েছেন, সেসব জায়গাসমূহে সকাল সন্ধ্যা (এরা) আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে,

৩৭. তারা এমন লোক ব্যবসা বাণিজ্য যাদের কখনো আল্লাহ তায়ালা থেকে গাফেল করে দেয় না-না বেচাকেনা তাদের আল্লাহ তায়ালার স্মরণ, নামায প্রতিষ্ঠা ও যাকাত আদায় করা থেকে গাফেল রাখতে পারে, তারা সেদিনকে ভয় করে যেদিন তদের অন্তর ও দৃষ্টিশক্তি ভীতবিহ্বল হয়ে পড়বে ।

৩৮. যারা নেক কাজ করে আল্লাহ তায়ালা তাদের যথার্থ উত্তম পুরস্কার দেবেন, তিনি তাঁর অনুগ্রহে তাদের যা পাওনা তার চাইতেও বেশী দান করবেন, (মূলত) আল্লাহ তায়ালা যাকে চান তাকে অপরিমিত রেযেক দান করেন।

৩৯. (অপর দিকে) যারা আল্লাহ তায়ালাকে অস্বীকার করে তাদের (দৈনন্দিন) কার্যকলাপ মরুভূমিতে মরীচিকার মতো (একটি প্রতারণা), পিপাসার্ত মানুষ (দূরে থেকে) তাকে পানি বলে মনে করলো, পরে যখন সে তার কাছে এলো তখন সেখানে পানির (মতো) কিছুই সে পেলো না, (এভাবে প্রতারণা ও মরীচিকার জীবন শেষ হয়ে গেলে) সে শুধু আল্লাহ তায়ালাকেই তার পাশে পাবে, অতপর তিনি তার পাওনা পূর্ণমাত্রায় আদায় করে দেবেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা ত্বরিত হিসাব গ্রহণে সক্ষম ।

৪০. কিংবা (তাদের কর্মকান্ডের উদাহরণ হচ্ছে) অতল সমুদ্রের অভ্যন্তরস্থ গভীর অন্ধকারের মতো, অতপর তাকে একটি বিশাল আকারের ঢেউ এসে ঢেকে (আরো অন্ধকার করে) দিলো, তার ওপর আরো একটি ঢেউ (এলো), তার ওপর (ছেয়ে গেলো কিছু) ঘন কালো মেঘ, এক অন্ধকারের ওপর (এলো) আরেক অন্ধকার, যদি কেউ (এ অবস্থায়) তার হাত বার করে, (আঁধারের কারণে) তার তা দেখার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না, বস্তুত আল্লাহ তায়ালা যার জন্যে কোনো আলো বানাননি তার জন্যে তো (কোথাও থেকে) আলো থাকবে না।

৪১. (হে মানুষ,) তুমি কি (ভেবে) দেখোনি, যতো (সৃষ্টি) আসমানসমূহ ও পৃথিবীতে আছে, তারা (সবাই) আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, আর পাখীকুল যারা পাখা বিস্তার করে (আকাশে ওড়ে চলেছে), তারা সবাইও (এ কাজ করে চলেছে,) তিনি তার সৃষ্টির প্রত্যেকের প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণার পদ্ধতি জানেন, এরা যে যা করছে আল্লাহ তায়ালা তা সম্যক অবগত রয়েছেন।

৪২. (মূলত) আসমানসমূহ ও যমীনের যাবতীয় সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহরই জন্যে, (সব কিছুকে) তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে।

৪৩. তুমি কি দেখো না, আল্লাহ তায়ালাই (এ) মেঘমালা সঞ্চালিত করেন, অতপর তিনি তাকে (তার টুকরোগুলোর) সাথে জুড়ে দেন, তারপর তাকে স্তরে স্তরে সাজিয়ে (পুঞ্জীভূত করে রাখেন), অতপর এক সময় তুমি মেঘের ভেতর থেকে বৃষ্টি (-র ফোঁটাসমূহ) বেরিয়ে আসতে দেখবে, (আরো দেখবে) আসমানের শিলাস্তর থেকে তিনি শিলা বর্ষণ করেন এবং যার ওপর চান তার ওপর তা বর্ষণ করেন, (আবার) যাকে চান তাকে তিনি তার (আঘাত) থেকে অব্যাহতিও দেন, মেঘের বিদ্যুত ঝলক (চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দেয়), মনে হয় তা বুঝি দৃষ্টি (- শক্তিকে এক্ষুণি) নিষ্প্রভ করে দিয়ে যাবে,

৪৪. আল্লাহ তায়ালাই রাত ও দিনের পরিবর্তন ঘটান, অবশ্যই অন্তরদৃষ্টিস্থপন্ন মানুষদের জন্যে এর মাঝে (আল্লাহ তায়ালার কুদরতের) অনেক শিক্ষা রয়েছে।

৪৫. আল্লাহ তায়ালা বিচরণশীল প্রতিটি জীবকেই পানি থেকে পয়দা করেছেন, অতপর তাদের মধ্যে কিছু চলে তার বুকের ওপর ভর দিয়ে, কিছু চলে দুপায়ের ওপর, (আবার) কিছু চলে চার (পা)-এর ওপর (ভর করে), আল্লাহ তায়ালা যখন যা চান তখন তাই পয়দা করেন, অবশ্যই তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।

৪৬. আমি অবশ্যই (হেদায়াতের কথা) সুস্পষ্ট করার আয়াতসমূহ নাযিল করেছি, আর (এর মাধ্যমে) আল্লাহ তায়ালা যাকে চান তাকে সহজ সরল পথে পরিচালিত করেন।

৪৭. (যারা মোনাফেক) তারা বলে, আমরা আল্লাহ তায়ালা ও রসূলের ওপর ঈমান এনেছি এবং আমরা তাঁর আনুগত্য করি| (অথচ) এর একটু পরেই তাদের একটি দল আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের আদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, (বস্তুত) ওরা আসলে মোমেন নয়।

৪৮. যখন ওদের (সত্যি সত্যিই) আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের দিকে আহ্বান করা হয়, যাতে করে (আল্লাহর রসূলের পক্ষ থেকে) তাদের পারস্পরিক (বিরোধের মীমাংসা করা যায়, তখন তাদের একটি দল পাশ কেটে সরে পড়ে।

৪৯. যদি এ (বিচার ফয়সালার) বিষয়টা তাদের সপক্ষে যায়, তাহলে তারা একান্ত বিনীতভাবে তাঁর কাছে ছুটে আসে,

৫০. এদের অন্তরে কি (কুফরের কোনো) ব্যাধি আছে, না এরা (রসূলের নবুওতের ব্যাপারে) সন্দেহ পোষণ করে, অথবা এরা কি ভয় করে, আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসুল ওদের প্রতি কোনো রকম অবিচার করবেন? (আসলে তা নয়,) বরং তারা নিজেরাই হচ্ছে যালেম।

৫১. (অপর দিকে) ঈমানদার লোকদের যখন তাদের পারস্পরিক বিচার ফয়সালার জন্যে আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের দিকে আহ্বান জানানো হয়, তখন (খুশী মনেই) তারা বলে, হ্যাঁ, আমরা (আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের আদেশ) শোনলাম এবং তা (যথাযথ মেনেও নিলাম, বস্তুত এরাই হচ্ছে সফলকাম ব্যক্তি।

৫২. যারা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে এবং তাঁর নাফরমানী (করা) থেকে বেঁচে থাকে, তারাই হচ্ছে সফলকাম।

৫৩. (হে নবী,) এ (মোনাফেক) লোকেরা আল্লাহ তায়ালার নামে শক্ত কসম খেয়ে বলে (আমরা তোমার এতোই অনুগত যে), তুমি যদি আদেশ করো তাহলে আমরা (ঘরবাড়ী ছেড়ে) অবশ্যই তোমার সাথে বেরিয়ে যাবো | (হে নবী,) তুমি বলো, তোমরা (বেশী) শপথ করো না, (তোমাদের) আনুগত্য (আমার তো) জানাই (আছে), তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তায়ালা তা ভালো করেই জানেন ।

৫৪. (হে নবী,) তুমি (এদের আরো) বলো, তোমরা আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য করো, আনুগত্য করো আল্লাহর রসূলের (হ্যাঁ), তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও (তাহলে জেনে রেখো), আল্লাহ তায়ালার দ্বীন পৌছানোর যে দায়িত্ব তার ওপর দেয়া হয়েছে তার জন্যে সে দায়ী, (অপরদিকে আনুগত্যের) যে দায়িত্ব তোমাদের ওপর দেয়া হয়েছে তার জন্যে তোমরা দায়ী, যদি তোমরা তার কথামতো চলো তাহলে তোমরা সঠিক পথ পাবে, রসুলের কাজ হচ্ছে (আল্লাহ তায়ালার কথাগুলো) ঠিক ঠিক মতো পৌঁছে দেয়া।

৫৫. তোমাদের মধ্যে যারা (আল্লাহ তায়ালার ওপর) ঈমান আনে এবং (সে অনুযায়ী) নেক কাজ করে, তাদের সাথে আল্লাহ তায়ালা ওয়াদা করেছেন, তিনি যমীনে তাদের অবশ্যই খেলাফত দান করবেন যেমনিভাবে তিনি তাদের আগের লোকদের খেলাফত দান করেছিলেন, (সর্বোপরি) যে জীবন বিধান তিনি তাদের জন্যে পছন্দ করেছেন তাও তাদের জন্যে (সমাজে ও রাষ্ট্রে) সুদৃঢ় করে দেবেন, তাদের ভীতিজনক অবস্থার পর তিনি তাদের অবস্থাকে (নিরাপত্তা ও শান্তিতে বদলে দেবেন, (তবে এ জন্যে শর্ত হচ্ছে) তারা শুধু আমারই গোলামী করবে, আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না, এরপরও যে (এবং যারা) তাঁর নেয়ামতের নাফরমানী করবে তারাই গুনাহগার (বলে পরিগণিত হবে) ।

৫৬. (হে মুসলমানরা,) তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা করো, যাকাত দাও, রসূলের আনুগত্য করো, আশ করা যায় তোমাদের ওপর দয়া (ও অনুগ্রহ) করা হবে।

৫৭. কাফেরদের ব্যাপারে কখনো একথা ভেবো না যে, তারা যমীনে (আমাকে) অক্ষম করে দিতে পারবে, তাদের ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম, (আর) কতো নিকৃষ্ট এ ঠিকানা!

৫৮. হে (মানুষ,) তোমরা যারা ঈমান এনেছো (মনে রেখো), তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস দাসীরা এবং তোমাদের মধ্য থেকে যারা এখনো বয়োপ্রাপ্ত হয়নি, তারা যেন তিনটি সময়ে তোমাদের (কাছে আসার জন্যে) অনুমতি চেয়ে নেয় (সে সময়গুলো হচ্ছে), ফজর নামাযের আগে, দুপুরে যখন তোমরা (কিছুটা আরাম করার জন্যে) নিজেদের পরিধেয় বস্তু (শিখিল করে) রাখো এবং এশার নামাযের পর। (মূলত) এ তিনটি (সময়) হচ্ছে তোমাদের পর্দা অবলম্বনের (সময়), এগুলো ছাড়া (অন্য সময়ে আসা যাওয়ার ব্যাপারে) তোমাদের ওপর কোনো দোষ নেই, না এতে তাদের জন্যে কোনো রকমের দোষ আছে, (কেননা) তোমরা তো প্রায়ই একে অপরের কাছে সব সময়ই যাতায়াত করে থাকো, আল্লাহ তায়ালা এভাবেই (নিজের) নির্দেশগুলো তোমাদের জন্যে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, (বস্তুত) আল্লাহ তায়ালা মহাজ্ঞানী, তিনি প্রবল প্রজ্ঞাবান।

৫৯. তোমাদের (নিজেদের) সন্তানরাও যখন বয়োপ্রাপ্ত হয়ে যায় তখন তারা যেন (তোমাদের কামরায় প্রবেশের আগে) সেভাবেই অনুমতি নেয়, যেভাবে তাদের আগে (বড়োরা) অনুমতি নিতো, আল্লাহ তায়ালা এভাবেই তাঁর আয়াতসমূহকে তোমাদের কাছে খুলে খুলে বর্ণনা করেন, আল্লাহ তায়ালা (সব কিছু) জানেন, তিনি পরম কুশলী বটে।

৬০. বৃদ্ধা নারী, যাদের এখন আর কারো বিয়ের (বন্ধনে আসার) আশা নেই, তাদের ওপর কোনো দোষ নেই, যদি তারা তাদের (শরীর থেকে অতিরিক্ত) কাপড় খুলে রাখে, (তবে শর্ত হচ্ছে) তারা সৌন্দর্য প্রদর্শনকারী হবে না, (অবশ্য) এ (অতিরিক্ত কাপড় খোলা) থেকেও যদি তারা বিরত থাকতে পারে তা (তাদের জন্যে) ভালো, আল্লাহ তায়ালা (সব কিছু) শোনেন, আল্লাহ তায়ালা (সব কিছু জানেন ।

৬১. যে ব্যক্তি অন্ধ তার ওপর কোনো (বিধি নিষেধের) সংকীর্ণতা নেই, যে পঙ্গু তার ওপর কোনো (বিধি নিষেধের) সংকীর্ণতা নেই, যে ব্যক্তি অসুস্থ তার ওপরও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই এবং তোমাদের নিজেদের ওপরও কোনো দোষ নেই যদি তোমরা তোমাদের নিজেদের ঘর থেকে কিছু খেয়ে নাও, একইভাবে এটাও তোমাদের জন্যে দূষণীয় হবে না, যদি তোমরা তোমাদের পিতা (পিতামহের) ঘরে, মায়েদের ঘরে, ভাইদের ঘরে, বোনদের ঘরে, চাচাদের ঘরে, ফুফুদের ঘরে, মামাদের ঘরে, খালাদের ঘরে, (আবার) এমন সব ঘরে যার চাবি তোমাদের অধিকারে রয়েছে, কিংবা তোমাদের বন্ধুদের ঘরে (কিছু খাও), অতপর এতেও কোনো দোষ নেই যে, (এসব জায়গায়) তোমরা সবাই একত্রে খাবে কিংবা আলাদা আলাদা খাবে, তবে যখনি (এসব) ঘরে প্রবেশ করবে তখন একে অপরের প্রতি সালাম করবে, এটা হচ্ছে আল্লাহর কাছ থেকে (তাঁরই নির্ধারিত) কল্যাণময় এক পবিত্র অভিবাদন, এভাবেই আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্যে তাঁর আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যাতে করে তোমরা বুঝতে পারো।

৬২. (খাঁটি ঈমানদার ব্যক্তি তো হচ্ছে তারা,) যারা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসুলের ওপর ঈমান আনে, কখনো যদি তারা কোনো সমষ্টিগত ব্যাপারে তার সাথে একত্রিত হয় তাহলে যতোক্ষণ তারা তার কাছ থেকে অনুমতি চাইবে না, ততোক্ষণ তারা (সেখান থেকে) কেউ সরে যাবে না, (হে নবী) যারা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের ওপর বিশ্বাস করে, যদি তারা কখনো তাদের নিজেদের কোনো কাজে (বাইরে যাবার জন্যে) তোমার কাছে অনুমতি চায়, তাহলে তুমি যাকে ইচ্ছা তাকে অনুমতি দিয়ো এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে এদের গুনাহ মাফের জন্যে দোয়া করো, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু ।

৬৩. (হে মুসলমানরা,) যখন নবী তোমাদের ডাকে, তখন তাঁর ডাককে পারস্পরিক ডাকের মতো মনে করো না, আল্লাহ তায়ালা সেসব লোকদের ভালো করেই জানেন যারা (নিজেদের) আড়াল করে (নবীর) সামনে থেকে (নানা অজুহাতে) সরে যায়, সুতরাং যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের এ ব্যাপারে ভয় করা উচিত, তাদের ওপর (এ বিরুদ্ধাচরণের জন্যে এ দুনিয়ায়) কোন বিপর্যয় এসে পড়বে কিংবা (পরকালে) কোনো কঠিন আযাব এসে তাদের গ্রাস করে নেবে।

৬৪. (হে মানুষ, তোমরা) জেনে রেখো, আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহ তায়ালার জন্যে (নিবেদিত), তোমরা যে (অবস্থার) ওপর আছো, আল্লাহ তায়ালা তা ভালো করেই জানেন, যেদিন মানুষ সবাই তাঁর দিকেই প্রত্যবর্তিত হবে, সেদিন তিনি তাদের সবকিছুই জানিয়ে দেবেন, যা কিছু তারা (দুনিয়ায়) করতো | আল্লাহ তায়ালা সব বিষয়েই ওয়াকেফহাল।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url