আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আর রাহমান’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা আর রাহমান | Surah Ar Rahman | سورة الرحمن



সূরা আর রাহমান’এর বাংলা অনুবাদ

সূরা আর রাহমান, মদীনায় অবতীর্ণ, আয়াত ৭৮, রুকু ৩

সূরা আর রাহমান


 রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে


১. পরম করুণাময় (আল্লাহ তায়ালা),

২. তিনি (তোমাদের) কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন;

৩. তিনি মানুষ বানিয়েছেন, ৪. (ভাব প্রকাশের জন্যে) তিনি তাকে (কথা) বলা শিখিয়েছেন।

৫. সুর্য ও চন্দ্র উভয়ই নির্ধারিত হিসাব মোতাবেক (অবিরাম কক্ষপথ ধরে) চলছে,

৬. যমীনে উৎপাদিত যাবতীয়) লতাপাতা ও গাছগাছড়া (সব) তাঁরই সামনে সাজদাবনত হয়,

৭. আসমান তাকে তিনি সমুন্নত করে রেখেছেন এবং (মহাশূন্যে তার ভারসাম্যের জন্যে) তিনি একটি মানদন্ড স্থাপন করেছেন,

৮. যাতে করে তোমরা কখনো (আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত এই মানদন্ডের) সীমা অতিক্রম না করো ।

৯. ইনসাফ মোতাবেক (তোমরা ওযনের) মানদন্ড প্রতিষ্ঠা করো এবং (ওযনে কম দিয়ে) মানদন্ডের ক্ষতি সাধন করো না ।

১০. (ভূমন্ডলকে) তিনি সৃষ্টিরাজির জন্যে (বিছিয়ে রেখেছেন,

১১. তাতে রয়েছে (অসংখ্য) ফলমূল (আরো রয়েছে) খেজুর, যা (আল্লাহর কুদরতে) খোসার আবরণে (ঢাকা) থাকে,

১২. (আরো রয়েছে) ভূষিযুক্ত শস্যদানা ও সুগন্ধযুক্ত (ফল),

১৩. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে!

১৪. তিনি মানুষকে বানিয়েছেন পোড়ামতো শুকনো ঠনঠনে এক টুকরো মাটি থেকে,

১৫. এবং জ্বিনদের বানিয়েছেন আগুন থেকে,

১৬. অতঃপর (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে!

১৭. (তিনি দুই মওসুমের) দুই উদয়াচলের মালিক এবং (আবার দুই মওসুমের) দুই অস্তাচলেরও মালিক।

১৮. অতঃপর (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে!

১৯. তিনি দুটি সমুদ্রকে (বয়ে চলার জন্যে) ছেড়ে দিয়ে রেখেছেন যেন তা একে অপরের সাথে মিশে যেতে পারে,

২০. (তারপরও) তাদের উভয়ের মাঝে (রয়ে যায় এমন) একটি অন্তরাল যার সীমা তারা কখনো অতিক্রম করতে পারে না,

২১. অতঃপর (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে!

২২. (এ) উভয় (সমুদ্র) থেকে তিনি (মহামূল্যবান) প্রবাল ও মুক্তা বের করে আনেন,

২৩. অতঃপর (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে!

২৪. সমুদ্রে বিচরণশীল পাহাড়সম (বড়ো বড়ো) জাহাজসমূহ তো তাঁরই (ক্ষমতার প্রমাণ),

২৫. অতঃপর (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে! 

২৬. (যমীন ও) তার ওপর যা কিছু আছে তা সবই (একদিন) বিলীন হয়ে যাবে,

২৭. বাকী থাকবে শুধু তোমার মালিকের সত্তা যিনি পরাক্রমশালী ও মহানুভব,

২৮. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নিদর্শন অস্বীকার করবে!

২৯. এই আকাশমন্ডলী ও ভূমন্ডলে যতো কিছু আছে সবাই নিজ নিজ প্রয়োজন তাঁর কাছেই চায়; (আর) তিনি প্রতিদিন (প্রতিমুহূর্ত) কোনো না কোনো কাজে তৎপর রয়েছেন,

৩০. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নিদর্শন অস্বীকার করবে!

৩১. হে মানুষ ও জ্বিন, (এর মাঝেও কিন্তু) আমি তোমাদের (হিসাব নেয়ার) জন্যে অচিরেই সময় বের করে নেবো,

৩২. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নিদর্শন অস্বীকার করবে!

৩৩. হে জ্বিন ও মনুষ্য সম্প্রদায়, যদি আকাশমন্ডল ও ভূমন্ডলের এ সীমারেখা অতিক্রম করার তোমাদের সাধ্য থাকে তাহলে (যাও! অতঃপর) তা অতিক্রম করেই দেখো; (কিন্তু আমার দেয়া বিশেষ) ক্ষমতা ছাড়া তোমরা কিছুতেই (এ সীমা) অতিক্রম করতে পারবে না,

৩৪. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নিদর্শন অস্বীকার করবে!

৩৫. সেদিন তোমাদের উভয় সম্প্রদায়ের ওপর আগুনের স্ফুলিংগ ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাঠানো হবে, তোমরা (কিছুতেই তা) প্রতিরোধ করতে পারবে না,

৩৬. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নিদর্শন অস্বীকার করবে!

৩৭. যখন আসমান ফেটে যাবে অতঃপর তখন তা (লাল) চামড়ার মতো রক্তবর্ণ হয়ে পড়বে,

৩৮. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নিদর্শন অস্বীকার করবে!

৩৯. সেদিন কোনো মানুষ ও জ্বিনের (কাছ থেকে তার) অপরাধ সম্পর্কে (কোনো) কৈফিয়ত) জানতে চাওয়া হবে না,

৪০. অতঃপর (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নিদর্শন অস্বীকার করবে!

৪১. অপরাধীরা তাদের (অপরাধী) চেহারা দিয়ে (সেদিন এমনিই) চিহ্নিত হয়ে যাবে, (অপরাধের নথি তাদের ললাটেই এঁটে থাকবে) এবং তাদের কপালের চুল ও পা ধরে ধরে (হাঁকিয়ে) নেয়া হবে,

৪২. অতঃপর (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নিদর্শন অস্বীকার করবে!

৪৩.(সেদিন তাদের বলা হবে,) এ হচ্ছে সেই জাহান্নাম যাকে (এ) অপরাধী ব্যক্তিরা মিথ্যা বলতো,

৪৪. তারা (সেদিন) তার ফুটন্ত পানি ও জাহান্নামের মাঝে ঘুরতে থাকবে,

৪৫. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নিদর্শন অস্বীকার করবে!

৪৬. যে ব্যক্তি তার নিজের মালিকের সামনে দাঁড়াবার (সময়কে) ভয় করবে, তার জন্যে থাকবে দুটো (সুরমা) বাগিচা,

৪৭. অতঃপর (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে,

৪৮. সে (বাগিচা) দুটোও (আবার) হবে ঘন শাখা প্রশাখা বিশিষ্ট,

৪৯. অতঃপর (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে!

৫০. সেখানে দুটো ঝর্ণাধারা প্রবাহমান থাকবে,

৫১. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে!

৫২. সেখানে প্রতিটি ফল থাকবে (আবার) দু'প্রকারের,

৫৩. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে!

৫৪.(জান্নাতের অধিবাসীরা সেখানে) রেশমের আস্তর দিয়ে মোড়ানো পুরু ফরাশের ওপর হেলান দিয়ে (আয়েশে ) বসবে, (এ সময়) উভয় উদ্যান (ফলসহ তাদের সামনে) ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে,

৫৫. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে!

৫৬. সেখানকার (অগণিত নেয়ামতের) মধ্যে থাকবে আয়তনয়না হুর, যাদের (জান্নাতের) এ (অধিবাসী)-দের আগে কোনো মানুষ কিংবা জ্বিন কখনো স্পর্শও করেনি,

৫৭. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে, 

৫৮. এরা যেন এক একটি প্রবাল ও পদ্মরাগ,

৫৯. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে? 

৬০. (তুমিই বলো,) উত্তম (আনুগত্য) এর বিনিময় উত্তম (পুরস্কার) ছাড়া আর কি হতে পারে?

৬১. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে! 

৬২.(নেয়ামতের) এ দুটো (উদ্যান) ছাড়াও (সেখানে) রয়েছে দুটো (ভিন্ন ধরনের) উদ্যান, 

৬৩. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে! 

৬৪. সে দুটো (বাগিচা হবে চির) সবুজ ও ঘন,

৬৫. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে,

৬৬. সেখানে থাকবে দুটো ঝর্ণাধারা, ফোয়ারার মতো সদা উচ্ছল গতিতে তা অবিরাম বইতে থাকবে, 

৬৭. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে,

৬৮. সেখানে (আরো) থাকবে (রং বেরংয়ের) ফল পাকড়া খেজুর ও আনার,

৬৯. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে, 

৭০. সেখানে থাকবে সৎ স্বভাবের (অনিন্দ্য) সুন্দরী রমণীরা,

৭১. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে,

৭২. (এ) আয়তলোচনা হুররা (রয়েছে) তাঁবুতে (অপেক্ষমাণ অবস্থায়),

৭৩. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে,

৭৪. এদের আগে অন্য কোনো মানুষ কিংবা জ্বিন এদের স্পর্শও করেনি,

৭৫. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে,

৭৬. (জান্নাতের অধিকারী ) এ ব্যক্তিরা সুন্দর গালিচার বিছানা ও সবুজ চাদরের ওপর হেলান দিয়ে বসবে, 

৭৭. অতএব (হে মানুষ ও জ্বিন), তোমরা তোমাদের মালিকের কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে, 

৭৮. কতো মহান তোমার মালিকের নাম, তিনি মহাপ্রতাপশালী ও পরম অনুগ্রহশীল |


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url