আল কুরআনের বাংলা অনুবাদ | সূরা আত তূর’এর বাংলা অনুবাদ | সূরা আত তূর | Surah At Tur | وَالطُّورِ


সূরা আত তূর’এর বাংলা অনুবাদ

সূরা আত তূর, মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৪৯, রুকু ২

সূরা আত তূর


রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে


১. শপথ তূর (পাহাড়)-এর,

২. শপথ (পাহাড়ী উপত্যকায় অবতীর্ণ) লিখিত গ্রন্থের

৩.(যা রক্ষিত আছে) উন্মুক্ত পত্রে।

৪. শপথ বায়তুল মামুর'-এর,

৫. শপথ সমুন্নত ছাদ (আকাশ)-এর,

৬. (আরো) শপথ উদ্বেলিত সমুদ্রের,

৭. তোমার মালিকের আযাব অবশ্যই সংঘটিত হবে,

৮. তা প্রতিরোধ করার কেউই থাকবে না,

৯. যেদিন আসমান ভীষণভাবে আন্দোলিত হতে থাকবে,

১০. পাহাড়সমূহ দ্রুত গতিতে চলতে থাকবে;

১১. (সেদিন) দুর্ভোগ হবে (একে) মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদের,

১২. যারা তামাসাচ্ছলে অর্থহীন খেলাধূলা করছিলো ।

১৩. যেদিন তাদের ধাক্কা মারতে মারতে জাহান্নামের আগুনের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে; ১৪. (তাদের বলা হবে) এ হচ্ছে সেই (দোযখের আগুন, যাকে তোমরা অস্বীকার করতে!

১৫. এটাকে কি (তোমাদের চোখে) যাদু (মনে হয়)? না তোমরা আজ দেখতে পাচ্ছো না?

১৬. (যাও, তোমরা এতে জ্বলতে থাকো,) অতঃপর (এখানে বসে) তোমরা ধৈর্য্য ধারণ করো কিংবা না করো, কার্যত তা তোমাদের জন্যে সমান কথা; তোমাদের (ঠিক) সে (ধরনের) বিনিময়ই আজ প্রদান করা হবে, যে (ধরনের) কাজ তোমরা করতেসূরা আত তূর।

১৭. (অপরদিকে) যারা আল্লাহকে ভয় করেছে, তারা অবশ্যই (আজ) জান্নাতের (সুরমা) উদ্যানে ও (অফুরন্ত ) নেয়ামতে অবস্থান করবে,

১৮. তাদের মালিক তাদের যা দেবেন তাতেই তারা সন্তুষ্ট হবে, তাদের মালিক তাদের জাহান্নামের কঠোর আযাব থেকে বাঁচিয়ে দেবেন।

১৯. (তাদের আরো বলা হবে, দুনিয়ায়) তোমরা যেমন আমল করতে তার বিনিময়ে (পরিতৃপ্তির সাথে আজ এখানে) পানাহার করতে থাকো,

২০. তারা সারিবদ্ধভাবে পাতা আসনে হেলান দেয়া অবস্থায় সমাসীন হবে, আর আমি সুন্দর সুন্দর চোখবিশিষ্ট সুন্দর হুরের সাথে তাদের মিলন ঘটিয়ে দেবো।

২১. যে সব মানুষ নিজেরা আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছে এবং তাদের সন্তানরাও এ ঈমানের ব্যাপারে তাদের অনুবর্তন করেছে, আমি (সেদিন জান্নাতে) তাদের সন্তান সন্ততিদের তাদের (নিজ নিজ পিতা মাতার) সাথে মিলিয়ে দেবো, আর এ জন্যে আমি তাদের (পিতা মাতার) পাওনার কিছুই হ্রাস করবো না, (বস্তুত) প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজ নিজ কর্মফলের হাতে বন্দী হয়ে আছে ।

২২. (জান্নাতে) আমি তাদের এমন (সব ধরনের) ফলমূল ও গোশত (দিয়ে আহার্য) পরিবেশন করবো যা তারা পেতে চাইবে।

২৩. সেখানে তারা একে অপরের কাছ থেকে পেয়ালা ভরে ভরে পানীয় নিতে থাকবে, সেখানে কোনো অর্থহীন কথা (ও কাজকর্ম) থাকবে না এবং কোনো রকম অপরাধও থাকবে না।

২৪. তাদের চারপাশে তাদের (সেবার) জন্যে নিয়োজিত থাকবে কিশোর দল, যারা এক একজন হবে যেন লুকিয়ে রাখা মুক্তা ।

২৫. তারা একজন আরেকজনের দিকে চেয়ে (তাদের দুনিয়ার জীবনের) কথাবার্তা জিজ্ঞেস করতে থাকবে।

২৬. তারা (তখন) বলবে হ্যাঁ, আমরা তো আগে আমাদের পরিবারের মাঝে (সব সময় জাহান্নামের) ভয়ে জীবন কাটাতাম।

২৭.(আর এ কারণেই আজ) আল্লাহ তায়ালা আমাদের ওপর (এ সব নেয়ামত দিয়ে) অনুগ্রহ করেছেন, (সর্বোপরি ) তিনি আমাদের (জাহান্নামের) গরম আগুনের শাস্তি থেকেও রক্ষা করেছেন ।

২৮. আমরা আগেও আল্লাহ তায়ালাকে ডাকতাম, (আমরা জানতাম) তিনি অনুগ্রহশীল ও দয়ালু।

২৯. অতএব (হে নবী, মানুষদের) তুমি (এ দিনের কথা) স্মরণ করাতে থাকো, আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে তুমি কোনো গণক নও, আবার তুমি কোনো পাগলও নও (তুমি হচ্ছো তাঁর বাণী বহনকারী একজন রাসূল );

৩০. তারা কি বলতে চায়, এ ব্যক্তি একজন কবি এবং সে কোনো দৈব দুর্ঘটনায় পতিত হোক আমরা সে অপেক্ষাই করছি।

১৭. (অপরদিকে) যারা আল্লাহকে ভয় করেছে, তারা অবশ্যই (আজ) জান্নাতের (সুরমা) উদ্যানে ও (অফুরন্ত ) নেয়ামতে অবস্থান করবে,

১৮. তাদের মালিক তাদের যা দেবেন তাতেই তারা সন্তুষ্ট হবে, তাদের মালিক তাদের জাহান্নামের কঠোর আযাব থেকে বাঁচিয়ে দেবেন।

১৯. (তাদের আরো বলা হবে, দুনিয়ায়) তোমরা যেমন আমল করতে তার বিনিময়ে (পরিতৃপ্তির সাথে আজ এখানে) পানাহার করতে থাকো,

২০. তারা সারিবদ্ধভাবে পাতা আসনে হেলান দেয়া অবস্থায় সমাসীন হবে, আর আমি সুন্দর সুন্দর চোখবিশিষ্ট সুন্দর হুরের সাথে তাদের মিলন ঘটিয়ে দেবো।

২১. যে সব মানুষ নিজেরা আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছে এবং তাদের সন্তানরাও এ ঈমানের ব্যাপারে তাদের অনুবর্তন করেছে, আমি (সেদিন জান্নাতে) তাদের সন্তান সন্ততিদের তাদের (নিজ নিজ পিতা মাতার) সাথে মিলিয়ে দেবো, আর এ জন্যে আমি তাদের (পিতা মাতার) পাওনার কিছুই হ্রাস করবো না, (বস্তুত) প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজ নিজ কর্মফলের হাতে বন্দী হয়ে আছে।

২২. (জান্নাতে) আমি তাদের এমন (সব ধরনের) ফলমূল ও গোশত (দিয়ে আহার্য) পরিবেশন করবো যা তারা পেতে চাইবে।

২৩. সেখানে তারা একে অপরের কাছ থেকে পেয়ালা ভরে ভরে পানীয় নিতে থাকবে, সেখানে কোনো অর্থহীন কথা (ও কাজকর্ম) থাকবে না এবং কোনো রকম অপরাধও থাকবে না।

২৪. তাদের চারপাশে তাদের (সেবার) জন্যে নিয়োজিত থাকবে কিশোর দল, যারা এক একজন হবে যেন লুকিয়ে রাখা মুক্তা ।

২৫. তারা একজন আরেকজনের দিকে চেয়ে (তাদের দুনিয়ার জীবনের) কথাবার্তা জিজ্ঞেস করতে থাকবে।

২৬. তারা (তখন) বলবে হ্যাঁ, আমরা তো আগে আমাদের পরিবারের মাঝে (সব সময় জাহান্নামের) ভয়ে জীবন কাটাতাম।

২৭.(আর এ কারণেই আজ) আল্লাহ তায়ালা আমাদের ওপর (এ সব নেয়ামত দিয়ে) অনুগ্রহ করেছেন, (সর্বোপরি ) তিনি আমাদের (জাহান্নামের) গরম আগুনের শাস্তি থেকেও রক্ষা করেছেন।

২৮. আমরা আগেও আল্লাহ তায়ালাকে ডাকতাম, (আমরা জানতাম) তিনি অনুগ্রহশীল ও দয়ালু।

২৯. অতএব (হে নবী, মানুষদের) তুমি (এ দিনের কথা) স্মরণ করাতে থাকো, আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে তুমি কোনো গণক নও, আবার তুমি কোনো পাগলও নও (তুমি হচ্ছো তাঁর বাণী বহনকারী একজন রাসূল);

৩০. তারা কি বলতে চায়, এ ব্যক্তি একজন কবি এবং সে কোনো দৈব দুর্ঘটনায় পতিত হোক আমরা সে অপেক্ষাই করছি।'

৩১. তুমি (তাদের) বলো, হ্যাঁ, তোমরাও অপেক্ষা করো, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করবো;

৩২. ওদের জ্ঞান বুদ্ধিই কি ওদের এসব বলতে বলে, না (আসলে) ওরা (একটি) সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়!

৩৩. (অথবা) এরা কি বলতে চায়, সে (রাসূল) নিজেই (কোরআনের) এ কথাগুলো রচনা করে নিয়েছে, (সত্য কথা হচ্ছে) এরা ঈমান আনে না,

৩৪. তারা (নিজেদের কথায়) যদি সত্যবাদী হয় তবে তারাও এ (কোরআনে)-র মতো কিছু একটা (রচনা করে) নিয়ে আসুক না!

৩৫. তারা কি কোনো স্রষ্টা ছাড়া এমনি এমনিই সৃষ্টি হয়ে গেছে, না তারা (বলে যে, তারা) নিজেরাই (নিজেদের) স্রষ্টা;

৩৬. না তারা নিজেরা এ আকাশমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছে? (আসল কথা হচ্ছে, এরা (আল্লাহ তায়ালার এ সৃষ্টি েেকৗশলে) বিশ্বাসই করে না;

৩৭. তাদের কাছে কি তোমার মালিকের (সম্পদের) ভান্ডার পড়ে আছে, না তারা নিজেরা ( সে সম্পদের) পাহারাদার (সেজে বসেছে);

৩৮. অথবা তাদের কাছে (আসমানে উঠার মতো) কোনো সিঁড়ি আছে, যাতে আরোহণ করে তারা (আসমানের অধিবাসীদের) কথা শুনে আসে? তাহলে তারা (আসমান থেকে) শোনা বিষয়ের ওপর সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ এনে হাযির করুক;

৩৯. অথবা (তোমরা কি আসলেই মনে করো যে,) সব কন্যা সন্তানগুলো আল্লাহ তায়ালার জন্যে আর তোমাদের ভাগে থাকবে শুধু ছেলেগুলো!

৪০. কিংবা তুমি কি (আল্লাহর বিধানসমূহ পৌঁছানোর বিনিময়ে) তাদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক দাবী করছো, যা তাদের কাছে (দুর্বিসহ) জরিমানা বলে মনে হচ্ছে;

৪১. অথবা তাদের কাছে রয়েছে অদৃশ্য (জ্ঞানের এমন) কিছু যা তারা লিখে রাখছে;

৪২. না (এর কোনোটাই নয়), এরা (আসলে) তোমার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করার ফন্দি আঁটতে চায়; (অথচ) যারা আল্লাহ তায়ালাকে অস্বীকার করে তারাই (পরিণামে) ষড়যন্ত্রের শিকারে পরিণত হয়;

৪৩. আল্লাহ তায়ালার বদলে এদের কি অন্য কোনো মাবূদ আছে? আল্লাহ তায়ালা তো এদের (যাবতীয়) শেরেকী কর্মকান্ড থেকে পবিত্র।

৪৪. যদি (কখনো) এরা দেখতে পায়, আসমান থেকে (মেঘের) একটি টুকরো ভেংগে পড়ছে, তাহলে (তাকে এরা আল্লাহর কোনো নিদর্শন মনে না করে) বলবে, এ তো হচ্ছে পুঞ্জীভূত এক খন্ড মেঘ মাত্র!

৪৫. (হে নবী,) তুমি এদের ছেড়ে দাও এমন সময় পর্যন্ত যখন তারা সে দিনটি স্বচক্ষে দেখে নেবে যেদিন তারা হুশ জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়বে,

৪৬. সেই (সর্বনাশা) দিনে তাদের কোনো ষড়যন্ত্র (ও ফন্দি)-ই কোনো কাজে লাগবে না এবং সেদিন তাদের কোনো রকম সাহায্যও করা হবে না;

৪৭. যারা যুলুম করেছে তাদের জন্যে এ ছাড়াও (পার্থিব জীবনে) এক ধরনের আযাব রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।

৪৮. (হে নবী,) তুমি তোমার মালিকের সিদ্ধান্ত আসা পর্যন্ত ধৈর্য্য ধারণ করো, তুমি (অবশ্যই) আমার চোখের সামনে আছো, তুমি যখন (শয্যা ত্যাগ করে) উঠো তখন তুমি প্রশংসার সাথে তোমার মালিকের মাহাত্ম্য ঘোষণা করো,

৪৯. রাতের একাংশেও তুমি তাঁর তাসবীহ পাঠ করো, আবার (রাতের শেষে) তারাগুলো অস্তমিত হবার পরও (তাঁর মাহাত্ম্য ঘোষণা করো)।


💖💝Thanks for being with Mohammadia Foundation. Pls Stay with us always💝💖

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url