আল্লাহর উপর ভরসা (পর্ব-২৬) || বিশ্ব জগতের সৌন্দর্য উপভোগ করুন || লোভ করায় কোন লাভ নেই || কষ্টের মাধ্যমে পাপ ক্ষমা হয় ||





এই পর্বের আলোচ্য বিষয়সমূহঃ

মাটিই ছিল সুফিয়ান সাওরির বালিশ

অতীতের আলেমদের জীবন বিনয় ও নম্রতার শিক্ষায় ভরপুর। হজ্বের মওসূমে সুফিয়ান সাওরি রাতে বিশ্রাম করার আশায় ছোট একটি মাটির ঢিবিকে শিথান বানালেন। লোকজন তাকে বললেন, “আপনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস হওয়া সত্ত্বেও মাটির ঢিবিকে বালিশ বানাচ্ছেন!” তিনি উত্তর দিলেন, “আমার এ বালিশ অবশ্যই খলিফা আবু জাফর মনসুরের বালিশের চেয়ে উত্তম।”

“বলুন, 'আল্লাহ আমাদের জন্য যা লিখে রেখেছেন তা ছাড়া অন্য কোন কিছুই আমাদের ঘটবে না।” (৯-সূরা তাওবাঃ আয়াত-৫১)

গণকের কথা বিশ্বাস করবেন না

দুর্যোগের ভবিষৎবাণী (যা কদাচিৎ ঘটতে পারে) এবং পূর্বকুলক্ষণ (অধিকাংশ সময়েই মিথ্যা) বহু মানুষের মনে ভয়ের সঞ্চার করে। “শয়তান তোমাদেরকে অভাবের ভয় দেখায় এবং তোমাদেরকে (কুকাজ, অবৈধ যৌন ক্রিয়া-কলাপ ও পাপ ইত্যাদি) ফাহেশা কাজ করার জন্য আদেশ করে; অথচ আল্লাহ তোমাদেরকে তার পক্ষ থেকে ক্ষমা ও দানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময় মহাজ্ঞানী।” (২-সূরা আল বাকারাঃ আয়াত-২৬৮)

উদ্বিগ্নতা, অনিদ্রা ও ক্ষত হলো হতাশা ও দুশ্চিন্তার কুফল। একজন আরব কবি বলেছেন- “আমাদেরকে শাস্তি দিবেন না। কারণ, আমরা তো আগেই শাস্তি পেয়েছি, দুশ্চিন্তার মাধ্যমে, যা আমাদেরকে গভীর রাত পর্যন্ত জাগিয়ে রাখে।”

বোকাদের গালিতে মনক্ষুন্ন হবেন না

আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন বলেছেন- “আমার নিকট যেসব বিদ্বেষপূর্ণ ও শক্ৰতাপূর্ণ চিঠি পাঠানো হয়েছে তা আমি কখনো পড়ে দেখেনি, আমি কখনো সেসব চিঠির খাম খুলে দেখিনি এবং সেগুলোর উত্তর দেয়ার ঝামেলা পোহাইনি, আমি যদি এসব বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম তবে আমার জনগণের জন্য কিছু করার সময় আমার থাকত না।”

فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ

“অতএব, (তাদেরকে শাস্তি না দিয়ে বরং) তাদেরকে উপেক্ষা করুন।” (৪-সূরা আন নিসাঃ আয়াত-৬৩)

“অতএব, আপনি তাদেরকে সৌজন্যমূলক ক্ষমা করুন।” (১৫-সূরা হিজরঃ আয়াত-৮৫)

“অতএব, আপনি তাদেরকে উপেক্ষা করুন এবং বলুন ‘সালাম’।” (৪৬-সূরা আল আহকাফঃ আয়াত-৮৯)

দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় আমেরিকার নৌ-বাহিনীর যিনি কমাণ্ডার ছিলেন তিনি খুবই মেধাবী ও রাশভারী লোক ছিলেন এবং ফলে তিনি উল্লেখযোগ্য খ্যাতি অর্জন করেন। যা হোক, তার অধিনস্থদের সাথে তাকে কাজ কারবার করতে হতো এর মধ্যে কিছু লোক এমন ছিল যারা তার প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করত এবং তার পিছনে সর্বদা তাকে গালি-গালাজ করত ও তার সমালোচনা করত। আর ঘটনা যখন এমনই তখন তিনিও এ ব্যাপারে ভালোভাবেই জানতেন যে তারা তার সম্বন্ধে কী বলে। এ ব্যাপারে তিনি মন্তব্য করেন একথা বলে যে, “এখন আমার সমালোচনার প্রতি প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয়েছে। এখন আমি বয়স্ক হয়েছি এবং এ বিষয়ে অবগত আছি যে, কথা মাহাত্ম্যকে ধ্বংস করতে পারে না এবং শক্তিশালী বাধাও সৃষ্টি করতে পারে না।”

একজন আরব কবি বলেছেন- “(আমাকে মৌখিকভাবে আক্রমণ করে) কবির আমার কাছ থেকে কি প্রত্যাশ করে। অথচ আমি বয়সে চল্লিশের সীমা পেরিয়ে গেছি!”

একথা দাবি করা হয়েছে যে, ঈসা (আঃ) বলেছেন যে, “তোমার শক্রকে ভালবাস।”

এ কথার অর্থ এই যে, আপনার শক্রদেরকে আপনার সাধারণ ক্ষমা করা উচিত। এভাবেই আপনি প্রতিশোধ গ্রহণের আশংকা, ঘৃণা ও বিদ্বেষ থেকে মুক্ত হতে পারবেন।

“এবং তারাও যারা মানুষকে ক্ষমা করে; আর আল্লাহ তো অবশ্যই সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১৩৪)

মক্কা বিজয়ের পূর্বে যারা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কষ্ট দিয়েছে ও তার অনেক ক্ষতি করেছে, মক্কার শাসনভার অধিকার করার পর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বলেছেন,

“তোমরা চলে যাও, কেননা তোমরা স্বাধীন।”

“আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই।” (১২-সূরা ইউসুফ : আয়াত-৯২)

“যা অতীত হয়ে গেছে আল্লাহ্ তা ক্ষমা করে দিয়েছেন।” (৫-সূরা মায়িদাঃ আয়াত-৯৫)

বিশ্ব জগতের সৌন্দর্য উপভোগ করুন

আল্লাহর সৃষ্টি রহস্য নিয়ে গবেষণা করে ও এর মূল্যায়ন করে আপনি শান্তি পাবেন। মহান আল্লাহ বলেন- “অতপর আমি তা দিয়ে সুশোভিত বাগান উৎপন্ন করি।” (২৭-সূরা আন নামলঃ আয়াত-৬০)

“বলুন, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা তোমরা দেখ।” (১০-সুরা ইউনুসঃ আয়াত-১০১)

“আমাদের প্রভু হলেন তিনি যিনি প্রত্যেক বস্তুর আকৃতি দান করেছেন অতপর এটাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেছেন।” (২০-সূরা ত্বাহাঃ আয়াত-৫০)

উজ্জ্বল সূর্য, ঝলমলে তারা, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত, গাছ-পালা ফলমূল, বায়ু ও পানি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন।

“অতএব, সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কতইনা বরকতময়।” (২৩-সূরা আল মু'মিনূনঃ আয়াত-১৪)

একজন আরব কবি বলেছেন-

وفِي كلِّ شيءٍ لَهُ آية ٭ تَدُلّ على أنّهُ الواحِدُ

“প্রত্যেক বস্তুর মাঝে তার নিদর্শন আছে, যা ইঙ্গিত করে যে, তিনি এক।”

প্রসিদ্ধ আরব কবি ইলিয়া আবু মাদ্বী বলেছেন-

أيّهذا الشّاكي وما بك داء ٭ كيف تغدو اذا غدوت عليلا
اترى الشّوك في الورود وتعمى ٭ أن ترى فوقها النّدى إكليلا
والذي نفسه بغير جمال ٭ لا يرى في الوجود شيئا جميلا

১. “হে অভিযোগকারী, (তুমি অভিযোগ করছ) অথচ তোমার তো কোন অসুবিধা (অভিযোগের কারণ) নেই, তুমি অসুস্থ হয়ে পড়লে কী করবে? (অথচ তুমি সুস্থ অবস্থায় অভিযোগ করছ!)

২. তুমি কি গোলাপের কাটাই শুধু দেখতে পাচ্ছ? আর ফুলের উপরের মালার মত শিশির বিন্দু দেখতে পাচ্ছ না?!

৩. যে নিজেই অসুন্দর সে প্রকৃতিতে সুন্দর কোন কিছু দেখতে পায় না।

“তারা কি উটের দিকে তাকিয়ে দেখে না যে কীভাবে তা সৃষ্টি করা হয়েছে” (৮৮-সূরা আল গাশিয়াহ: আয়াত-১৭)

আইনস্টাইন বলেছেন যে- যে ব্যক্তি বিশ্ব জগত নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে সে বুঝতে পারে যে, যে সত্তা একে সৃষ্টি করেছেন তিনি মহাজ্ঞানী এবং তিনি ঘুঁটি দিয়ে জুয়া-পাশা খেলছেন না।

الَّذِي أَحْسَنَ كُلَّ شَيْءٍ خَلَقَهُ

যিনি প্রতিটি জিনিসকেই উত্তমরূপে সৃষ্টি করেছেন। (৩২-সূরা আস সাজদাহঃ ৭)

مَا خَلَقْنَاهُمَا إِلَّا بِالْحَقِّ

“আমি এতদুভয়কে অযথা সৃষ্টি করেনি।” (৪৪-সূরা আদ দেখানঃ আয়াত-৩৯) অর্থাৎ আমি এদেরকে পরীক্ষা করার জন্য সৃষ্টি করেছি যে কে অনুগত আর কে অনুগত নয় আর তার পর অনুগতদেরকে পুরস্কার দিতে ও অবাধ্যদেরকে শাস্তি দিতে ।

“তবে কি তোমরা মনে করেছিলে যে আমি তোমাদেরকে অহেতুক সৃষ্টি করেছি?” (২৩-সূরা আল মু'মিনূনঃ আয়াত-১১৫)

এসব আয়াতের অর্থ এই যে, ঐশী জ্ঞান অনুযায়ী সব কিছুই পরিকল্পিত ও পরিমিত। আর যে ব্যক্তিই সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করে সেই বুঝতে পারে যে, একজন শক্তিমান আল্লাহ আছেন যিনি সবকিছুকে টিকিয়ে রাখেন ও সবকিছুর ব্যবস্থাপনা করেন এবং সবকিছু অবস্থার সাথে মিল রেখে হঠাৎ (যখন যেমন তখন তেমন) ঘটে এ কথা ভুল অর্থাৎ সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী পূর্ব নির্ধারিত বিধিমতে ঘটে একথা সত্য।

“সূর্য ও চন্দ্র হিসাবমত চলে।” (৫৫-সূরা আর রাহমানঃ আয়াত-৫)

“সূর্যের সাধ্য নেই যে চন্দ্রের নাগাল পায় আর রাতও দিনকে ছাড়িয়ে যেতে পারে না। প্রত্যেকেই (নিজ নিজ) কক্ষ পথে পরিভ্রমণ করছে।” (৩৬-সূরা ইয়াসিনঃ আয়াত-৪০)

লোভ করায় কোন লাভ নেই

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- “কেউই তার পূর্ণ রিযিক গ্রহণ করার আগে ও মৃত্যুর নির্দিষ্ট সময়ের আগে মারা যায় না।”

অতএব কেন উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর কেনই বা লোভ?

وَكُلُّ شَيْءٍ عِندَهُ بِمِقْدَارٍ

“তার বিধানে সব কিছুই নির্দিষ্ট পরিমাণে আছে।” (১৩-সূরা রা'আদ: আয়াত-৮)

“আর আল্লাহর বিধান হলো সুনির্ধারিত বিধান।” (৩৩-সূরা আল আহযাবঃ আয়াত-৩৮)

কষ্টের মাধ্যমে পাপ ক্ষমা হয়

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- “দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা, বেদনা, ক্লান্তি, অসুস্থতা এমনকি কাটা ফোটার দ্বারাও মু’মিন ব্যক্তির কিছু গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেন।”

এ পুরস্কার শুধু তার জন্যই যে ধৈর্য ধরে, যে তার পুরস্কার শুধু আল্লাহর কাছেই চায়, যে আল্লাহর নিকট অনুতপ্ত হয় এবং যে একথা বুঝে যে তার সকল কাজ একমাত্র পরম করুণাময় আল্লাহর সাথেই সম্পৃক্ত। বিখ্যাত আরব কবি মুতানাব্বি লিখেছেন-

“যতক্ষণ দেহে আত্মা থাকবে ততক্ষণ কালের আবর্তনে যা ঘটবে তা বিরাগ ভাজন হয়েই গ্রহণ করিও।

যা নিয়ে তুমি খুশি থাক তা ক্ষণস্থায়ী। আর দুঃখ বা বিষগ্নতা তোমার হারানো প্রিয়জনকে ফিরিয়ে এনে দিবে না।”

“যা তোমরা হারিয়েছ তা নিয়ে যাতে তোমরা দুঃখ না কর এবং যা তোমরা পেয়েছ তা নিয়ে তোমরা যাতে আনন্দ-ফুর্তি না কর।” (৫৭-সূরা আল হাদীদঃ আয়াত-২৩)

আমাদের জন্য একমাত্র আল্লাহই যথেষ্ট আর তিনি কতইনা উত্তম অভিভাবক

ইব্রাহীম (আঃ)-কে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখন তিনি এ কালিমাحَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ বলেছিলেন এবং এর ফলে আগুন তার জন্য শীতল ও শান্তিদায়ক হয়েছিল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওহুদের যুদ্ধে এ কালিমা পাঠ করেছিলেন আর তাই আল্লাহ তাকে বিজয়ী করেছিলেন। যখন ইব্রাহীম (আঃ)-কে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখন জিব্রাঈল (আঃ) এসে তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আমার কাছ থেকে আপনি কি কিছু চান?” ইব্রাহীম (আঃ) আত্মবিশ্বাসের সাথে উত্তর দিয়েছিলেন, “আপনার কাছ থেকে নয় বরং আল্লাহর কাছ থেকে চাই!”

মূসা (আঃ)-এর পিছন থেকে শক্ররা ধাওয়া করছে আর তার সামনে সাগর; এমন অবস্থায় তিনি বললেন-

كَلَّا إِنَّ مَعِيَ رَبِّي سَيَهْدِينِ

“(আমি ধ্বংস হব!) কক্ষনো নয়, নিশ্চয় আমার সাথে আমার প্রভু আছেন; তিনি আমাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করবেন।” (২৬-সূৱা আশ শেয়ারা: আয়াত ৬২)

সাহাবীগণ বর্ণনা করেছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হিজরতের সময় (পথিমধ্যে) গুহাতে লুকিয়ে ছিলেন তখন আল্লাহর হুকুমে একটি কবুতর ও একটি মাকড়সা এসে গুহার মুখে তাদের বাসা বানিয়ে ফেলল, যা দেখে স্বাভাবিকভাবেই মনে হয়েছিল যে সে গুহাতে কোন লোক প্রবেশ করেনি। আর তাই কাফেররাও বলেছিল যে, “এ গুহাতে মুহাম্মদ প্রবেশ করেনি।”

যারা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন আল্লাহ তাদেরকে রক্ষা করেন। বিখ্যাত আরব কবি আল্লামা বুসরী বলেছেন-

ظنوا الحمام وظنوا العنكبوت علــى ٭ خير البرية لم تنسج ولم تحــــــــــم

وقاية الله أغنت عن مضاعفـــــــــةٍ ٭ من الدروع وعن عالٍ من الأطـــــُم

“সকল সৃষ্টির সেরা সৃষ্টি যেখানে আছেন সেখানে কবুতর ও মাকড়সা বাসা বাঁধতে পারে কাফেররা এমনটা ধারণাও করতে পারেনি।

আল্লাহর রক্ষণাবেক্ষণ তাকে শক্ত বর্ম ও সুউচ্চ দুর্গ থেকে অমুখাপেক্ষী করে দিয়েছিল। (আল্লাহর হেফাজতের কারণে সেগুলোর কোন প্রয়োজন হয়নি)

বিখ্যাত আরব কবি (আহমদ) শাওকী বলেছেন-

وإذا العناية لاحظتك عيونُها ٭ نم فالمحوادث كلّهنَّ أمانُ

যখন আল্লাহর সাহায্যের দৃষ্টি তোমার উপর পড়ে তখন তুমি নিশ্চিন্তে ঘুমাও; কেন না তখন যা কিছু ঘটবে সবই নিরাপদ।”

“কেননা তুমি আমার নজরে আছ।” (৫২-সূরা আত তুরঃ আয়াত-৪৮)

“কেননা আল্লাহ হলেন উত্তম রক্ষক এবং তিনি সর্বাপেক্ষা করুণাময়।” (১২-সূরা ইউসুফঃ আয়াত-৬৪)

দৃষ্টি আকর্ষণঃ একটি কবুতর ও একটি মাকড়সা এসে গুহার মুখে তাদের বাসা বানিয়ে ফেলল এই বর্ণনা সঠিক নয়।

সুখের আসল উপাদান অল্পে তুষ্টি এবং শুকরিয়া আদায়

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি মনের শান্তিতে, সুস্থ দেহে দিবসের পূর্ণ খোরাক নিয়ে রাত কাটাল তাকে যেন গোটা দুনিয়াটা দেয়া হলো।” এ হাদীসটি ইমাম তিরমিয়ী বর্ণনা করেছেন।

এর অর্থ এই যে, কারো যদি যথেষ্ট খাবার থাকে ও নিরাপদে ঘুমানোর জায়গা থাকে তবে তার পৃথিবীর সর্বোত্তম জিনিস আছে। অনেকেই জীবনে এ পর্যায়ে আছে তবুও তারা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তার রাসূলকে বলেন- “আমি আপনার উপর আমার নেয়ামতকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি।” (৫-সূরা ময়িদাঃ আয়াত-৩)

এ আয়াত পড়ার পর আপনার উচিত নিজেকে এ প্রশ্ন করা- নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য কি নেয়ামত পূর্ণ করে দেয়া হয়েছিল? এটা কি দী পার্থিব সম্পদ ছিল? এটা কি দালান-কোঠা-অট্টালিকা ও সোনা-রূপার মালিকানা ছিল?

আল্লাহ যে নেয়ামতের কথা বলছেন তা এসব নয়; কেননা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধনী ছিলেন না।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাটির তৈরি ঘরে ঘুমাতেন। তার ঘরের ছাদ বা চাল খেজুরের ডাল দিয়ে তৈরি ছিল। প্রচণ্ড ক্ষুধার জ্বালায় তিনি মাঝে মাঝে পেটে পাথর বেধে রাখতেন আর এতে ক্ষুধার জ্বালা কিছুটা কমত। তার মাদুর ছিল খেজুর গাছের ডাল যাতে তিনি শয়নকালে তার পার্শ্বদেশে ব্যাথা পেতেন। তিনি তার বর্মখানিকে একটি ইহুদীর নিকট টাকা পরিশোধ করার আগ পর্যন্ত বন্ধক রেখে কিছু গম ক্রয় করেছিলেন। মাঝে মাঝে তিনি একটানা তিনদিন পর্যন্ত একটি পচা খেজুরও খেতে পেতেন না।

“এবং অবশ্যই পরকাল আপনার জন্য দুনিয়ার চেয়ে উত্তম। আর অচিরেই আপনার প্রতিপালক অবশ্যই আপনাকে এমন দান করবেন যার ফলে আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন।” (৯৩-সূরা আদ দোহাঃ আয়াত-৪-৫)


“আল্লাহর উপর ভরসা” শিরোনামের আকর্ষনীয় এই টপিকসের সকল পর্ব এখান থেকে পড়ুন-
১ম পর্ব    ২য় পর্ব    ৩য় পর্ব    ৪র্থ পর্ব    ৫ম পর্ব    ৬ষ্ট পর্ব    ৭ম পর্ব    ৮ম পর্ব    ৯ম পর্ব    ১০ম পর্ব    ১১-তম পর্ব    ১২-তম পর্ব    ১৩-তম পর্ব    ১৪-তম পর্ব    ১৫-তম পর্ব    ১৬-তম পর্ব    ১৭-তম পর্ব    ১৮-তম পর্ব    ১৯-তম পর্ব    ২০-তম পর্ব    ২১-তম পর্ব    ২২-তম পর্ব    ২৩-তম পর্ব    ২৪-তম পর্ব    ২৫-তম পর্ব    ২৬-তম পর্ব    ২৭-তম পর্ব    ২৮-তম পর্ব    ২৯-তম পর্ব    ৩০-তম পর্ব    ৩১-তম পর্ব    ৩২-তম পর্ব    ৩৩-তম পর্ব    ৩৪-তম পর্ব    ৩৫-তম পর্ব    ৩৬-তম পর্ব    ৩৭-তম পর্ব    ৩৮-তম পর্ব 



****************************************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url