যে কাজগুলো আপনার জন্য নিষিদ্ধ (০৪) || গালির প্রত্যুত্তরে গালি দেওয়া || নিজ ঘরে নফল নামায না পড়া ||





একজন মুসলিম হিসাবে যে কাজগুলো আপনার জন্য নিষিদ্ধ

(চতূর্থ পর্ব)

  • বিচারের সময় উভয় পক্ষের কথা মনোযোগ সহকারে না শুনা
  • যার সম্পদ হালাল তার দেয়া খাদ্য-পানীয় গ্রহণের সময় তা হালাল কি না জিজ্ঞাসা করা
  • “হে আল্লাহ্! আপনি যদি চান তা হলে আমাকে ক্ষমা করুন’’ এমন দো’আ করা
  • খারাপ স্বপ্ন দেখে তা কাউকে বলা
  • মেহমান হয়ে এসে নামাযের ইমামতি করা
  • গালির প্রত্যুত্তরে গালি দেওয়া
  • মহামারী দেখা দিলে সেখান থেকে বের হওয়া এবং বাইরে থাকলে প্রবেশ করা
  • একটি মাত্র কাপড় থাকলে নামাযের সময় তা পুরো শরীরে পেঁচিয়ে পরা
  • হাঁচির উত্তর না দেয়া
  • নিজ ঘরে নফল নামায না পড়া

বিচারের সময় উভয় পক্ষের কথা মনোযোগ সহকারে না শুনা

’আলী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

إِذَا جَلَسَ إِلَيْكَ الْـخَصْمَانِ فَسَمِعْتَ مِنْ أَحَدِهِمَا فَلاَ تَقْضِ لِأَحَدِهِمَا حَتَّى تَسْمَعَ مِنَ الْآخَرِ ؛ كَمَا سَمِعْتَ مِنَ الْأَوَّلِ ؛ فَإِنَّكَ إِذَا فَعَلْتَ ذَلِكَ تَبَيَّنَ لَكَ الْقَضَاءُ

‘‘যখন তোমার সামনে বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষ বসবে তখন তুমি তাদের এক পক্ষের কথা শুনে বিচার করবে না যতক্ষণ না তুমি দ্বিতীয় পক্ষের কথা শুনো যেমনিভাবে শুনেছিলে প্রথম পক্ষ থেকে। কারণ, তখনই তোমার সামনে বিচারের ব্যাপারটি সুস্পষ্ট হয়ে যাবে’’।[1]

আলী (রা.) থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসূল (সা.) আমাকে বিচারক হিসেবে ইয়েমেনে পাঠাচিছলেন। তখন আমি বললাম: হে আল্লাহ্’র রাসূল! আপনি আমাকে বিচারক হিসেবে পাঠাচ্ছেন ; অথচ আমি অল্প বয়সের একজন যুবক এবং বিচার কার্য সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞান নেই। তখন রাসূল (সা.) বললেন:

إِنَّ اللهَ سَيَهْدِيْ قَلْبَكَ وَيُثَبِّتُ لِسَانَكَ ، فَإِذَا جَلَسَ بَيْنَ يَدَيْكَ الْـخَصْمَانِ ؛ فَلاَ تَقْضِيَنَّ حَتَّى تَسْمَعَ مِنَ الْآخَرِ ؛ كَمَا سَمِعْتَ مِنَ الْأَوَّلِ ؛ فَإِنَّهُ أَحْرَى أَنْ يَتَبَيَّنَ لَكَ الْقَضَاءُ ، قَالَ: فَمَا زِلْتُ قَاضِيًا أَوْ مَا شَكَكْتُ فِيْ قَضَاءٍ بَعْدُ

‘‘আল্লাহ্ তা’আলা তোমার অন্তরকে সঠিক পথে পরিচালিত করবেন এবং তোমার জিহবাকে দৃঢ় করবেন। যখন তোমার সামনে উভয় পক্ষ উপস্থিত হবে তখন তুমি দ্রুত বিচার করবে না যতক্ষণ না তুমি দ্বিতীয় পক্ষ থেকে তাদের কথা শুনো যেমনিভাবে শুনেছিলে প্রথম পক্ষ থেকে। কারণ, তখনই তোমার সামনে বিচারের ব্যাপারটি সুস্পষ্ট হয়ে যাবে। হযরত ’আলী (রা.) বলেন: তখন থেকেই আমি বিচারক অথবা তিনি বললেন: অতঃপর আমি আর বিচারের ক্ষেত্রে কখনোই কোন সন্দেহের রোগে ভুগিনি’’।[2]
[1] (স্বা’হীহুল-জা’মি’, হাদীস ৫৮৩)
[2] (আবু দাউদ, হাদীস ৩৫৮২ তিরমিযী, হাদীস ১৩৩১)

যার সম্পদ হালাল তার দেয়া খাদ্য-পানীয় গ্রহণের সময় তা হালাল কি না জিজ্ঞাসা করা

আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمْ عَلَى أَخِيْهِ الْـمُسْلِمِ ، فَأَطْعَمَهُ مِنْ طَعَامِهِ ؛ فَلْيَأْكُلْ ، وَلاَ يَسْأَلْهُ عَنْهُ ، وَإِنْ سَقَاهُ مِنْ شَرَابِهِ فَلْيَشْرَبْ مِنْ شَرَابِهِ ، وَلاَ يَسْأَلْهُ عَنْهُ

‘‘যখন তোমাদের কেউ তার কোন মুসলিম ভাইয়ের নিকট মেহমান হয় এবং সে তাকে কিছু খেতে দেয় তখন সে যেন তা খেয়ে নেয়। উপরন্তু সে যেন তাকে উক্ত খাদ্য হালাল না কি হারাম এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা না করে। তেমনিভাবে উক্ত মুসলিম ভাই যদি তাকে কোন কিছু পান করতে দেয় সে যেন তা পান করে নেয়। উপরন্তু সে যেন তাকে উক্ত পানীয় হালাল না কি হারাম এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা না করে’’।[1]
[1] (আহমাদ্ ২/৩৯৯ ’হাকিম ৪/১২৬ আবু ইয়া’লা, হাদীস ৬৩৫৮ খতীব ৩/৮৭-৮৮)

“হে আল্লাহ্! আপনি যদি চান তা হলে আমাকে ক্ষমা করুন’’ এমন দো’আ করা

আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

لاَ يَقُوْلَنَّ أَحَدُكُمْ: اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ إِنْ شِئْتَ ، اللَّهُمَّ ارْحَمْنِيْ إِنْ شِئْتَ ، لِيَعْزِمْ فِيْ الدُّعَاءِ ، فَإِنَّ اللهَ صَانِعٌ مَا شَاءَ ، لاَ مُكْرِهَ لَهُ

‘‘তোমাদের কেউ যেন কখনোই দো’আর মধ্যে এ কথা না বলে: হে আল্লাহ্! আপনার ইচ্ছে হলে আমাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ্! আপনার ইচ্ছে হলে আমাকে দয়া করুন। বরং সে যেন নিশ্চিতভাবে দো’আ করে। কারণ, আল্লাহ্ তা’আলা যা চান তাই করেন। তাঁকে কোন কাজে বাধ্য করার কেউই নেই’’।[1]

অন্য বর্ণনায় রয়েছে,

إِذَا دَعَا أَحَدُكُمْ فَلاَ يَقُلْ: اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ إِنْ شِئْتَ ، وَلَكِنْ لِيَعْزِمِ الْـمَسْأَلَةَ، وَلْيُعَظِّمِ الرَّغْبَةَ ، فَإِنَّ اللهَ لاَ يَتَعَاظَمُهُ شَيْءٌ أَعْطَاهُ

‘‘তোমাদের কেউ দো’আ করার সময় এমন যেন না বলে: হে আল্লাহ্! আপনার ইচ্ছে হলে আমাকে ক্ষমা করুন। বরং আল্লাহ্ তা’আলার নিকট কেউ কোন কিছু চাইলে সে অবশ্যই নিশ্চিতভাবে চাবে এবং বড়ো আশা রাখবে। কারণ, আল্লাহ্ তা’আলা কাউকে কোন কিছু দিলে তিনি উহাকে বড়ো মনে করেন না’’।
[1] (মুসলিম, হাদীস ২৬৭৯)

খারাপ স্বপ্ন দেখে তা কাউকে বলা

আবু সা’ঈদ্ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

إِذَا رَأَى أَحَدُكُـمْ الرُّؤْيَا يُحِبُّهَا ، فَإِنَّهَا مِنَ اللهِ ، فَلْيَحْمَدِ اللهَ عَلَيْهَا ، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا ، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْـرَهُ ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لِأَحَدٍ ، فَإِنَّهَا لَنْ تَضُرَّهُ

‘‘তোমাদের কেউ কোন ভালো স্বপ্ন দেখলে তা অবশ্যই আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ থেকে। অতএব সে যেন এ ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলার প্রশংসা করে এবং তা কাউকে বলে। আর যদি সে এর বিপরীত তথা খারাপ স্বপ্ন দেখে তা হলে তা অবশ্যই শয়তানের পক্ষ থেকে। অতএব সে যেন উহার অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় কামনা করে এবং তা কাউকে না বলে। কারণ, এ জাতীয় স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না’’।[1]

ভালো স্বপ্ন দেখলে তা শুধুমাত্র প্রিয়জনকেই বলবে এবং খারাপ স্বপ্ন দেখলে শয়তান ও তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় চাবে এবং তিন বার থুতু ফেলবে। উপরন্তু তা কাউকে বলবে না।

আবু ক্বাতাদাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ আমি কখনো কখনো খারাপ স্বপ্ন দেখে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়তাম। অতঃপর আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন:

الرُّؤْيَا الْـحَسَنَةُ مِنَ اللهِ ، فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يُحِبُّ فَلاَ يُحَدِّثْ بِهِ إِلاَّ مَـنْ يُحِبُّ ، وَإِذَا رَأَى مَا يَكْرَهُ فَلْيَتَعَوَّذْ بِاللهِ مِنْ شَرِّهَا وَمِنْ شَـرِّ الشَّيْطَانِ ، وَلْيَتْفِلْ ثَلاَثًا ، وَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا أَحَدًا ، فَإِنَّهَا لَنْ تَضُرَّهُ

‘‘ভালো স্বপ্ন আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ ভালো স্বপ্ন দেখলে সে যেন তা শুধুমাত্র তার প্রিয়জনকেই বলে। আর যদি সে খারাপ স্বপ্ন দেখে তা হলে সে যেন তার ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় কামনা করে এবং তিনবার থুথু ফেলে। উপরন্তু তা কাউকে না বলে। কারণ, এ জাতীয় স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না’’।[2]
[1] (বুখারী, হাদীস ৬৯৮৫, ৭০৪৫)
[2] (বুখারী, হাদীস ৭০৪৪)

মেহমান হয়ে এসে নামাযের ইমামতি করা

আবু আত্বিয়্যাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: মালিক বিন্ ’হুওয়াইরিস্ (রা.) প্রায়ই আমাদের মসজিদে আসতেন। একদা তাঁরই উপস্থিতিতে নামাযের ইক্বামাত দেয়া হলে আমি তাঁকে বললাম: সামনে বাড়ুন। নামায পড়িয়ে দিন। তিনি আমাকে বললেনঃ তোমাদের কাউকে নামায পড়াতে বলো। অতঃপর আমি নামায না পড়ানোর কারণ একটু পরেই বলছি। আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন:

مَنْ زَارَ قَوْمًا ؛ فَلاَ يَؤُمَّهُمْ ، وَلْيَؤُمَّهُمْ رَجُلٌ مِنْهُمْ

‘‘কেউ কারোর নিকট মেহমান হলে সে যেন তাদের ইমামতি না করে। বরং তাদের কেউই যেন তাদের ইমামতি করে’’।[1]

আবু মাস্’ঊদ্ বদরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

وَلاَ تَؤُمَّنَّ الرَّجُلَ فِيْ أَهْلِهِ وَلاَ فِيْ سُلْطَانِهِ ، وَلاَ تَجْلِسْ عَلَى تَكْرِمَتِهِ فِيْ بَيْتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ

‘‘তুমি কারোর ঘরে কিংবা তার অধীনস্থ জায়গায় তার অনুমতি ছাড়া কোন নামাযের ইমামতি করবে না। তেমনিভাবে তুমি কারোর ঘরে তার সম্মানজনক সুনির্দিষ্ট বসার জায়গায় তার অনুমতি ছাড়া বসবে না’’।[2]
[1] (আবু দাউদ, হাদীস ৫৯৬)
[2] (মুসলিম, হাদীস ৬৭৩ আবু দাউদ, হাদীস ৫৮২)

গালির প্রত্যুত্তরে গালি দেওয়া

আব্দুল্লাহ্ বিন্ উমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

إِذَا سَبَّكَ رَجُـلٌ بِمَا يَعْلَمُ مِنْكَ ، فَلاَ تَسُبَّهُ بِمَا تَعْلَمُ مِنْهُ ، فَيَكُوْنَ أَجْـرُ ذَلِكَ لَكَ ، وَوَبَالُهُ عَلَيْهِ

‘‘তোমাকে কেউ তার জানা তোমার কোন ব্যাপার নিয়ে গালি দিলে তুমি তাকে তোমার জানা তার কোন ব্যাপার নিয়ে গালি দিও না। তা হলে তুমি এর সাওয়াব পাবে এবং সে এর পরিণাম ভুগবে’’।[1]
[1] (স্বা’হীহুল-জা’মি’, হাদীস ৫৯৪)

মহামারী দেখা দিলে সেখান থেকে বের হওয়া এবং বাইরে থাকলে প্রবেশ করা

উসামাহ্ বিন্ যায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী (সা.) ইরশাদ করেন:

إِذَا سَمِعْتُمْ بِالطَّاعُوْنِ بِأَرْضٍ فَلاَ تَدْخُلُوْهَا ، وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوْا مِنْهَا

‘‘যখন তোমরা কোন এলাকায় মহামারীর কথা শুনবে তখন সেখানে আর প্রবেশ করবে না। আর যদি তোমরা নিজেই মহামারীর এলাকায় অবস্থান করে থাকো তা হলে সেখান থেকে আর বের হবে না’’।[1]

মহামারীর এলাকায় ধৈর্য ও সাওয়াবের আশায় অবস্থান করলে একজন শহীদের সাওয়াব পাওয়া যায়।

’আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি রাসূল (সা.) কে মহামারী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন:

إِنَّهُ عَذَابٌ يَبْعَثُهُ اللهُ عَلَى مَنْ يَشَاءُ ، وَأَنَّ اللهَ جَعَلَهُ رَحْمَةً لِلْمُؤْمِنِيْنَ ، لَيْسَ مِنْ أَحَدٍ يَقَعُ الطَّاعُوْنُ فَيَمْكُثُ فِيْ بَلَدِهِ صَابِرًا مُحْتَسِبًا يَعْلَمُ أَنَّهُ لاَ يُصِيْبُهُ إِلاَّ مَا كَتَبَ اللهُ لَهُ إِلاَّ كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ شَهِيْدٍ

‘‘মহামারী হচ্ছে এক ধরনের আযাব যা আল্লাহ্ তা’আলা যাদের নিকট চান পাঠিয়ে থাকেন। আর তা মু’মিনদের জন্য হবে রহমত স্বরূপ। কোন এলাকায় মহামারী দেখা দিলে কেউ যদি সেখানে ধৈর্য ধরে সাওয়াবের আশায় অবস্থান করে এ কথাটুকু মনে করে যে, যা আল্লাহ্ তা’আলা তার ভাগ্যে লিখে রেখেছেন তাই ঘটবে তা হলে সে একজন শহীদের সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে’’।[2]
[1] (বুখারী, হাদীস ৫৭২৮ মুসলিম, হাদীস ২২১৮)
[2] (বুখারী, হাদীস ৩৪৭৪, ৫৭৩৪, ৬৬১৯)

একটি মাত্র কাপড় থাকলে নামাযের সময় তা পুরো শরীরে পেঁচিয়ে পরা

আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فِيْ ثَوْبٍ وَاحِدٍ فَلْيَشُدَّهُ عَلَى حَقْوَيْهِ ، وَلاَ تَشْتَمِلُوْا كَاشْتِمَالِ الْيَهُوْدِ

‘‘যখন তোমাদের কেউ এক কাপড়ে নামায পড়ে তখন সে যেন তা তার কোমরেই বেঁধে নেয়। সে যেন তা ইহুদিদের ন্যায় পুরো শরীরে পেঁচিয়ে পরিধান না করে’’।[1]

অন্য বর্ণনায় রয়েছে,

إِذَا كَانَ لِأَحَدِكُمْ ثَوْبَانِ ؛ فَلْيُصَلِّ فِيْهِمَا ، فَإِنْ لَمْ يَكُـنْ إِلاَّ ثَوْبٌ وَاحِدٌ ، فَلْيَتَّزِرْ بِهِ ، وَلاَ يَشْتَمِلْ اشْتِمَالَ الْيَهُوْدِ

‘‘তোমাদের কারোর নিকট দু’টি কাপড় থাকলে সে যেন উভয় কাপড় পরেই নামায পড়ে। আর যদি তার নিকট একটিমাত্র কাপড় থাকে তা হলে সে যেন তা নিম্ন বসন হিসেবেই পরিধান করে। ইহুদিদের ন্যায় সে যেন তা পুরো শরীরে পেঁচিয়ে পরিধান না করে’’।[2]
[1] (স্বা’হীহুল-জা’মি’, হাদীস ৬৫৬)
[2] (আবু দাউদ, হাদীস ৬৩৫)

হাঁচির উত্তর না দেয়া

আবু মূসা আশ্’আরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ فَحَمِدَ اللهَ فَشَمِّتُوْهُ ، فَإِنْ لَمْ يَحْمَدِ اللهَ فَلاَ تُشَمِّتُوْهُ

‘‘তোমাদের কেউ হাঁচি দিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ বললে তোমরা তার উদ্দেশ্যে (‘’ইয়ারহামুকাল্লাহ্’’) বলবে। আর যদি সে ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ না বলে তা হলে তোমরা তার উদ্দেশ্যে (‘ইয়ারহামুকাল্লাহ্’) বলবে না’’।[1]

কেউ বার বার হাঁচি দিলে তার উত্তরে ’ইয়ারহামুকাল্লাহ্’ বলতে হয় না।

সালামাহ্ বিন্ আল-আকওয়া’ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা রাসূল (সা.) এর নিকট জনৈক ব্যক্তি হাঁচি দিলে তিনি তার উত্তরে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ্’ বললেন। সে আবারো হাঁচি দিলে রাসূল (সা.) বললেন: লোকটির সর্দি হয়েছে।

আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ فَلْيُشَمِّتْهُ جَلِيْسُهُ ، فَإِنْ زَادَ عَلَى ثَلاَثٍ فَهُوَ مَزْكُوْمٌ ، وَلاَ يُشَمَّتُ بَعْدَ ذَلِكَ

‘‘তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে তার পাশে বসা লোকটি যেন (‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’’) বলে এর উত্তর দেয়। আর যদি সে তিন বারের বেশি হাঁচি দেয় তা হলে তার সর্দি হয়েছে। তাই এরপর আর উত্তর দিতে হবে না’’।[2]
[1] (মুসলিম, হাদীস ২৯৯২)
[2] (সিল্সিলাতুল-আ’হাদীসিস্ব-স্বাহীহাহ্, হাদীস ১৩৩০)

নিজ ঘরে নফল নামায না পড়া

আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

لاَ تَجْعَلُوْا بُيُوْتَكُمْ قُبُوْراً ، وَلاَ تَجْعَلُوْا قَبْرِيْ عِيْداً ، وَصَلُّوْا عَلَيَّ ؛ فَإِنَّ صَلاَتَكُمْ تَبْلُغُنِيْ حَيْثُ كُنْتُمْ

‘‘তোমরা নিজেদের ঘরগুলোকে কবর বানিও না। বরং তোমরা তাতে নফল নামায, কোর’আন তিলাওয়াত ও দো’আ ইত্যাদি করিও এবং আমার কবরকে মেলা বানিও না। তাতে বার বার নির্দিষ্ট সময়ে আসার অভ্যাস করো না। বরং তোমরা সর্বদা আমার উপর সালাত ও সালাম পাঠিও। কারণ, তোমাদের সালাত ও সালাম আমার নিকট অবশ্যই পৌঁছুবে। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন’’।[1]

নফল নামায নিজ ঘরে পড়াই সর্বোত্তম।
যায়েদ্ বিন্ সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

أَفْضَلُ الصَّلاَةِ صَلاَةُ الْـمَرْءِ فِيْ بَيْتِهِ إِلاَّ الْـمَكْتُوْبَةَ

‘‘সর্বোত্তম নামায হচ্ছে কোন ব্যক্তির তার ঘরে নামায পড়া। তবে ফরয নামায নয়’’।[2]
[1] (আবু দাউদ, হাদীস ২০৪২ আহ্মাদ্ : ২/৩৬৭)
[2] (স্বা’হীহুল-জা’মি’, হাদীস ১১১৭)


একজন মুসলিম হিসেবে যে কাজগুলো আপনার জন্য নিষেধ- এর সকল পর্ব এখান থেকে পড়ুনঃ
১ম পর্ব    ২য় পর্ব    ৩য় পর্ব    ৪র্থ পর্ব    ৫ম পর্ব    ৬ষ্ট পর্ব    ৭ম পর্ব    ৮ম পর্ব    ৯ম পর্ব    ১০ম পর্ব    ১১তম পর্ব    ১২তম পর্ব    ১৩তম পর্ব    ১৪তম পর্ব    ১৫তম পর্ব  ১৬তম পর্ব    ১৭তম পর্ব    ১৮তম পর্ব    ১৯তম পর্ব    ২০ম পর্ব    ২১তম পর্ব    ২২তম পর্ব    ২৩তম পর্ব    ২৪তম পর্ব    ২৫তম পর্ব    ২৬তম পর্ব    ২৭তম পর্ব     ২৮তম পর্ব    ২৯তম পর্ব    ৩০ম পর্ব    ৩১তম পর্ব    ৩২তম পর্ব    ৩৩তম পর্ব    ৩৪ম পর্ব



****************************************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url