যে কাজগুলো আপনার জন্য নিষিদ্ধ (৩৩) || রাতে ফল বা ফসল কাটা || কবরের উপর কোন নাম ফলক লেখা ||







পুরুষের জন্য জাফরান সুগন্ধি ব্যবহার

কোন পুরুষের জন্য জাফরান সুগন্ধি ব্যবহার করা
আনাস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَتَزَعْفَرَ الرَّجُلُ

‘‘রাসূল (সা.) যে কোন পুরুষকে (তার শরীরে কিংবা কাপড়ে) জাফরান সুগন্ধি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন’’।[1]
[1] (বুখারী, হাদীস ৫৮৪৬ মুসলিম, হাদীস ২১০১)

অনুমতি ছাড়া দু,জনের মাঝে বসে পড়া

যে কোন দু’ ব্যক্তির মাঝে তাদের অনুমতি ছাড়া বসে পড়া
’আমর বিন্ শু’আইব্ তাঁর পিতা থেকে তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন:

نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَجْلِسَ الرَّجُلُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ إِلاَّ بِإِذْنِهِمَا

‘‘রাসূল (সা.) যে কাউকে দু’ ব্যক্তির মাঝে তাদের অনুমতি ছাড়া বসতে নিষেধ করেছেন’’।[1]
[1] (বায়হাক্বী, হাদীস ৫৬৮৫ ত্বাবারানী/আওসাত্ব, হাদীস ৩৬৫২)

কথায় ব্যস্ত অথবা ঘুমন্ত মানুষের পেছনে নামায পড়া

যে ব্যক্তি কথায় ব্যস্ত অথবা ঘুমন্ত এমন কারোর পেছনে নামায পড়া
’আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আববাস্ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُصَلَّى خَلْفَ الْـمُتَحَدِّثِ وَالنَّائِمِ

‘‘রাসূল (সা.) কোন ঘুমন্ত ব্যক্তি ও যে এখন কথা বলছে এমন কারোর পেছনে নামায পড়তে নিষেধ করেছেন’’।[1]
তবে অন্য কোথাও জায়গা না পেলে প্রয়োজনে যে কোন ঘুমন্ত ব্যক্তিকে সামনে রেখেও রাত্রি বেলায় নফল নামায পড়া যায়।

’আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنْ اللَّيْلِ وَأَنَا مُعْتَرِضَةٌ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْقِبْلَةِ كَاعْتِرَاضِ الْجِنَازَةِ

‘‘নবী (সা.) রাত্রি বেলায় নফল নামায পড়তেন ; অথচ আমি তিনি ও তাঁর ক্বিব্লার মাঝে মৃত ব্যক্তির ন্যায় লম্বা হয়ে শুয়ে থাকতাম’’।[2]
[1] (আবু দাউদ, হাদীস ৬৯৪ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৯৬৯)
[2] (ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৯৬৬)

কবরের উপর কোন নাম ফলক লেখা

কবরের উপর কোন নাম ফলক বা এমন কিছু লেখা
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُكْتَبَ عَلَى الْقَبْرِ شَيْءٌ

‘‘রাসূল (সা.) কবরের উপর কোন কিছু লিখতে নিষেধ করেছেন’’।[1]
[1] (ইবনু মাজাহ্, হাদীস ১৫৮৫)

পিয়াজ ও রসুন জাতীয় দুর্গন্ধযুক্ত কিছু খাওয়া

পিয়াজ ও রসুন জাতীয় দুর্গন্ধযুক্ত কোন কিছু খাওয়া
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ أَكْلِ الْبَصَلِ وَالْكُرَّاثِ فَغَلَبَتْنَا الْـحَاجَةُ فَأَكَلْنَا مِنْهَا فَقَالَ: مَنْ أَكَلَ مِنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ الْمُنْتِنَةِ فَلَا يَقْرَبَنَّ مَسْجِدَنَا ، فَإِنَّ الْـمَلَائِكَةَ تَأَذَّى مِمَّا يَتَأَذَّى مِنْهُ الْإِنْسُ

‘‘রাসূল (সা.) পিয়াজ ও কুর্রাস্ (দুর্গন্ধযুক্ত এক জাতীয় উদ্ভিদ) খেতে নিষেধ করেছেন। জাবির (রা.) বলেনঃ একদা আমরা প্রয়োজনের তাগিদে তা খেলে রাসূল (সা.) আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেনঃ কেউ এ জাতীয় দুর্গন্ধযুক্ত উদ্ভিদ খেলে সে যেন আমাদের মসজিদের নিকটবর্তীও না হয়। কারণ, ফিরিশ্তাগণ সে জিনিসেই কষ্ট পান যে জিনিসে কষ্ট পায় মানুষ’’।[1]

তবে প্রয়োজনে এগুলোকে ভালোভাবে সিদ্ধ করে কিংবা পাকিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

’উমর (রা.) একদা জুমার খুতবায় এক পর্যায়ে বলেন:

ثُمَّ إِنَّكُمْ أَيُّهَا النَّاسُ تَأْكُلُونَ شَجَرَتَيْنِ لَا أَرَاهُمَا إِلَّا خَبِيثَتَيْنِ هَذَا الْبَصَلَ وَالثُّومَ لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا وَجَدَ رِيحَهُمَا مِنْ الرَّجُلِ فِي الـْمَسْجِدِ أَمَرَ بِهِ فَأُخْرِجَ إِلَى الْبَقِيعِ فَمَنْ أَكَلَهُمَا فَلْيُمِتْهُمَا طَبْخًا

‘‘হে মানব সকল! তোমরা এমন দু’টি উদ্ভিদ খাচ্ছো যা আমি নিকৃষ্ট বলেই মনে করি। তা হলোঃ পিয়াজ ও রসুন। আমি রাসূল (সা.) কে এমন কাজও করতে দেখেছি যে, তিনি মসজিদে কারো থেকে এগুলোর দুর্গন্ধ পেলে তাকে বাকী’ কবরস্থানের দিকে বের করে দেয়ার নির্দেশ দিতেন। সুতরাং কেউ এগুলো খেলে সে যেন তা ভালোভাবে পাকিয়ে খায়’’।[2]
[1] (মুসলিম, হাদীস ৫৬৪)
[2] (মুসলিম, হাদীস ৫৬৭ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৩৪২৬)

মাথার চুল আঁচড়ানোয় ব্যস্ত থাকা

নিয়মিতভাবে প্রতিদিন মাথার চুলগুলো আঁচড়ানো নিয়ে ব্যস্ত থাকা
আব্দুল্লাহ্ বিন্ মুগাফ্ফাল (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ التَّرَجُّلِ إِلَّا غِبًّا

‘‘রাসূল (সা.) কাউকে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে চুল আঁচড়ানোয় ব্যস্ত থাকতে নিষেধ করেছেন। তবে একদিন পরপর তা করবে’’।[1]
[1] (তিরমিযী, হাদীস ১৭৫৬)

রাতে ফল বা ফসল কাটা

রাতের বেলায় কোন ফল বা ফসল কাটা
জা’ফর বিন্ মুহাম্মাদ (রাহিমাহুল্লাহ্) তাঁর পিতা থেকে তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন:

نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْـجَدَادِ بِاللَّيْلِ ، وَالْـحَصَادِ بِاللَّيْلِ

‘‘রাসূল (সা.) রাত্রি বেলায় কোন ফল বা ফসল কাটতে নিষেধ করেছেন’’।[1]
উক্ত হাদীস বর্ণনাকারী জা’ফর (রাহিমাহুল্লাহ্) বলেনঃ আমার ধারণা এ নিষেধাজ্ঞা এ জন্যই যে, যেন কাটার সময় গরিবরা উপস্থিত থেকে কিছু সাদাকা পেতে পারে।
[1] (বায়হাক্বী, হাদীস ৭৭৬০)

কুরআন নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হওয়া

কুরআন মাজীদ নিয়ে কারোর সাথে যে কোনভাবে ঝগড়ায় লিপ্ত হওয়া
আবু সা’ঈদ্ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْجِدَالِ في الْقُرْآنِ

‘‘রাসূল (সা.) কুর’আন মাজীদ নিয়ে কারোর সাথে যে কোনভাবে ঝগড়ায় লিপ্ত হতে নিষেধ করেছেন’’।[1]

আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

لاَ تُجَادِلُوا فِي الْقُرْآنِ فَإِنَّ جِدَالاً فِيهِ كُفْرٌ

‘‘তোমরা কুর’আন নিয়ে পরস্পর ঝগড়া করো না। কারণ, কুর’আন নিয়ে ঝগড়া করা নিশ্চয়ই কুফরি’’। (ত্বায়ালিসী, হাদীস ২২৮৬ বায়হাক্বী/শু’আবুল্-ঈমান, হাদীস ২২৫৭)
[1] (স্বা’হীহুল-জা’মি’, হাদীস ৬৮৭৩)


একজন মুসলিম হিসেবে যে কাজগুলো আপনার জন্য নিষেধ- এর সকল পর্ব এখান থেকে পড়ুনঃ
১ম পর্ব    ২য় পর্ব    ৩য় পর্ব    ৪র্থ পর্ব    ৫ম পর্ব    ৬ষ্ট পর্ব    ৭ম পর্ব    ৮ম পর্ব    ৯ম পর্ব    ১০ম পর্ব    ১১তম পর্ব    ১২তম পর্ব    ১৩তম পর্ব    ১৪তম পর্ব    ১৫তম পর্ব  ১৬তম পর্ব    ১৭তম পর্ব    ১৮তম পর্ব    ১৯তম পর্ব    ২০ম পর্ব    ২১তম পর্ব    ২২তম পর্ব    ২৩তম পর্ব    ২৪তম পর্ব    ২৫তম পর্ব    ২৬তম পর্ব    ২৭তম পর্ব     ২৮তম পর্ব    ২৯তম পর্ব    ৩০ম পর্ব    ৩১তম পর্ব    ৩২তম পর্ব    ৩৩তম পর্ব    ৩৪ম পর্ব



****************************************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url